বোকা বাঙ্গালী বলছি-১

আমি বোকা বাঙ্গালীদের দলে। মৌসুমী বিপ্লবীদের দলে আছি কিনা জানি না। আমিও বোকা বাঙ্গালীদের মতই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছি।কত কমেন্ট পড়ল সেটা নিয়ে প্রতিযোগিতায় নেমেছি বলে মনে হয় না।  ব্লগ লেখার মত পড়াশুনা, জ্ঞান কোনোটাই নাই তাই ব্লগ লিখি না (বলতে পারেন লিখতে পারি না)। কিন্তু সব ব্লগ পড়ার চেষ্টা করেছি। আপনাদের মত আমিও  আপ্লুত হয়েছি এই ভেবে যে, আমরা সচেতন হচ্ছি। যদিও খুব বেশি লেখালেখি বা জন আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে এটি আমি বলতে পারবো না যতটা সৃষ্টি হয়েছিল আবু গারাইব কারাগারের নির্যাতন কিংবা দেশীয় এডাল্ট ক্লিপ বের হবার পর। আমি মোটামুটি মফস্বল শহরে গিয়ে দেখেছি তারা বিষয়টি জানেইনা। জানবে কোত্থেকে? তারা তো রুটি রুজির জন্য প্রানান্তকর চেষ্টায় ব্যস্ত। আমাদের মত কিছু বোকা বাঙ্গালীর মত সারাক্ষন মনিটরে আটকে থাকার সময় কোথায়? যারা আটকে থাকে তারাই দায়িত্ব মনে করছেন ভাবনাটি ছড়িয়ে দেবার। প্রথমে ঢাকা কেন্দ্রিক, পরে সারা বাংলাদেশ ব্যাপী এটি এই সচেতেনতা ব্যাপক হারে, বিস্তৃত আকারে প্রমোট করা।

এই প্রসঙ্গে আবার একটু পরে আসছি। মানুষের বিক্ষোভে ফেটে পড়ার জন্য বা দ্রুত পরিবর্তনের জন্য কিছু ইস্যুর দরকার হয়। বা পুর্বের জমানো ক্ষোভ প্রকাশ করার জন্য কোন ইস্যুর দরকার হয়। যেমন ধরুন, ’৭০ এর প্রলয়ঙ্কর ঘুর্ণিঝড় পরবর্তী পাকিস্তান সরকারের দৃষ্টিকটু উদাসীনতার ফল নির্বাচনে পড়েছিল বলেই ঘটনার প্রেক্ষাপটে আজকের শ্বাধীন বাংলাদেশ। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলে স্বাধীন বাংলাদেশের ধারনা আরো সময়সাপেক্ষ হত বলেই আমার ধারনা। ’৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নূর হোসেনের মৃত্যু নতুন এক জোয়ার সৃষ্টি করেছিল। সর্বশেষ তিউনিসিয়ায় মোহাম্মাদ বুয়াজিজি নামের ২৬ বছরের যুবকের  মৃত্যুর ঘটনা তো পুরো আরব বিশ্বের একনায়কতন্ত্রকেই কাপিয়ে দিল। লিবিয়া, মিশরে ক্ষমতার রদবদল হয়েছে। সিরিয়ায় এখনো রক্তের বন্যা বইছে। তার মানে এই নয় যে এই নির্দিষ্ট এক একটি ঘটনাই প্রত্যেকটি বিপ্লবী আন্দোলনের মূল নিয়ামক। এই ঘটনাগুলো আন্দোলনকে নতুন বেগ দেয় মাত্র। প্রত্যেকটি  আন্দোলনের পিছনে রাজনৈতিক স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা, দারিদ্র্য, দূর্নীতি এবং বেকারত্ব থেকে মুক্তি পাবার আকাঙ্ক্ষা প্রবল ভাবে কাজ করে। দীর্ঘ দিনের নিপীড়ন থেকে সৃষ্ট ক্ষোভ প্রকাশ এবং মুক্তি পাবার আকাঙ্খাই হাজার হাজার মানুষকে রাস্তায় নামিয়ে আনে। একদিনের ঘটনা সেই আকাঙ্ক্ষাকে উস্কে দেয়।

এই ওয়েবসাইট থেকে জানা থেকে জানা যায় যে, এখনকার টেলিভিশন দর্শকদের একটি বড় অংশই হলো তরুনরা। এবং তারা খুবই ধৈর্যহীন গোছের। তারা টেলিভিশন দেখার অর্ধেক সময়ই চ্যানেল ঘুরিয়ে সময় কাটায়। আমার মনে হয় এই তরুনরাই কিন্তু ইন্টারনেট ব্যবহার করে, ব্লগিং করে এবং আপনাদের ভাষায় ফেসবুক বিপ্লবী। ব্যঙ্গ করেই বলেন আমরা এটা জানি। হয়তো আপনারা মনে মনে গারবেজ বলে গালিও দেন। আমার কেনো জানি মনে হয় আমাদের মতই তরুনরা তিউনিসিয়া, লিবিয়া, মিশরে, সিরিয়ায় থাকে। তরুনদের ধর্ম তো বিশ্বব্যাপী এক। তাদেরকেও কি ফেসবুক বিপ্লবী বলে ব্যঙ্গ করা হয়? সচেতন মানুষ মাত্রই স্বীকার করবেন এই আন্দোলন গুলোতে মানুষ জমায়েত এবং তথ্য প্রবাহের জন্য ফেসবুক, টুইটার, মাই স্পেস এর মত সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলো্র অবদান ছিলো। সেই সাথে ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে তরুনদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মত। সেই আপনাদের ভাষায় ফেসবুক বিপ্লবীরাই। দয়া করে সফলদের ব্যঙ্গ করবেন না।

আবারো অন্য দিকে দৃষ্টিপাত করি। বহুজাতিক কোম্পানীগুলোর দিকে দৃষ্টি দিলে দেখবো তাদের মানব সম্পদ অনেক বেশী এবং দক্ষ, বিভিন্ন দেশে উৎপাদন কারখানা থাকার কারনে ভ্যাট, আমদানী- রপ্তানী করের ঝামেলা কম বা নাই বললেই চলে, সস্তায় শ্রমিক নিয়োগ, বেশী পূজি, উন্নত প্রযুক্তি এবং মুদ্রার বিনিময় মানের তারতম্য ইত্যাদি সুবিধার কারনে তারা অনেক কম খরচে বেশি পন্য উৎপাদন করতে এবং অনেক লম্বা হাত থাকার কারনে বাজার জাতকরন অনেক সহজেই করতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা বহুজাতিক কোম্পানীগুলোর সাথে তাদের সরকারের সহযোগিতার হাত থাকে। বৈদেশিক সরকারকে প্রভাবিত করার মত শক্তি তাদের থাকে। হুন্দাই এর সবচে বড় উদাহরণ। যমুনা সেতু রক্ষনাবেক্ষন নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সাথে সৃষ্ট ঝামেলার অবসান করেছে কোরিয়া সরকার নিজে। শুধুমাত্র বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত্ব আন্তর্জাতিক আদালতে যাবার হুমকির কারনে। যেসব কোম্পানী একটি রাষ্ট্রের সাথে দরকষাকষির ক্ষমতা রাখে তার সাথে আর যাই হোক কোনভাবেই বৈদেশিক বাজার ধরা সম্ভব নয় ছোট অর্থনীতির কোম্পানিগুলর জন্য। যেখানে নিজের দেশের বাজারই বহুজাতিক কোম্পানীগুলোর দখলে থাকে। আর বাজার না থাকলে, বাজারে পন্যের চাহিদা না থাকলে মুনাফা আসবে না, মুনাফা না থাকলে যথেষ্ট বিনিয়োগ হবে না, পন্যের মানও ভাল হবে না । আর আমরা বোকা বাঙ্গালীদের মত আমজনতা কষ্টের টাকায় ভালো পন্য কিনতে বহুজাতিক কোম্পানীগুলোর দোকানেই দৌড়াব। এভাবেই বহুজাতিক কোম্পানীগুলোর তুলনায় দূর্বল দেশী পন্য গুলো বাজার সৃষ্টি করতে পারে না। যার কারনে আমাদের দেশী পন্য ব্যবহারে আমাদের এত অনীহা।

এই বহুজাতিক কোম্পানীগুলোর মতই চরিত্র ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলোর। (এগুলোও বহুজাতিক কোম্পানীই)। ভারতে ৫১৫ টিরও বেশি চ্যানেল এবং ১৫০ টি পে চ্যানেল আছে। এদের বাজার হচ্ছে প্রায় ১৫০ কোটি মানুষের। আরো নির্দিষ্ট ভাবে বললে ৪১৫ মিলিওন মানুষ টিভি দেখে এবং ৬২ মিলিওন ক্যাবল সংযোগ আছে। যা পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম টেলিভিশন বাজার। স্যাটেলাইট চ্যানেলের সম্প্রচার বাংলাদেশে সম্প্রচারের বহু আগে থেকেই। সুতরাং খুব স্বাভাবিক দৃষ্টিতে বললে ভুল হবে না যে, তাদের অনুষ্ঠানের মান যে ভাল হবে। (আমি এখন ডিসকভারী, নিও দেখা বন্ধ করত্তে পারি নাই)

পক্ষান্তরে বাংলাদেশের মাত্র কয়েক বছরে এই ক্ষেত্রে যে উন্নতি তা চোখে পড়ার মত। আমাদের মানতে হবে আমাদের বাজার খুব বড় নয় যে বানিজ্যের খুব স্বাভাবিক নিয়মে আমাদের দেশীয় চ্যানেলের অনুষ্টানের মান ভাল হবে বা ভারতীয় চ্যানেলের মানের তুলনায় বাজারে জায়গা করে নিতে পারব। তারপরও যে খুব খারাপ অনুষ্টান হচ্ছে তা আমি মানতে নারাজ। ভারতে বাংলাদেশের চ্যানেলের সম্প্রচার করতে না দেয়াই এর সবচে বড় প্রমান।

যদি আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে বাজারের স্বাভাবিক নিয়মে চলি তাহলে কখনই এই ব্যবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে পারব না। বাংলাদেশ সরকার কোনদিনই ভারতীয় চ্যানেল বন্ধ করতে পারবে না, (কেননা তখন আবার চোখ রাঙ্গানি দেখতে হতে পারে) আমরা ভাল (নিক্কৃষ্ট) বিনোদনের জন্য ভারতীয় চ্যানেল দেখতে থাকব আর ভারতীয় পন্যের বাজার সৃষ্টি করতে থাকব। আমাদের দেশ থেকে ব্যবসা করে ফায়দাও লুটবে আবার আমার দেশের মানুষও মারবে তা তো মেনে নেয়া যায় না। আর বিদেশী পন্য বর্জন কর্মসুচির ফল কি হতে পারে তার প্রমান দিয়ে গেছেন মহাত্মা গান্ধী।

এইবার আসি আবার আগের প্রসঙ্গে। ফেসবুক বিপ্লবি প্রসঙ্গে। মানুষের কাছে তথ্য প্রবাহের সবচেয়ে ভাল মাধ্যম কি? গণমাধ্যম। যেটাকে আমরা ম্যাস মিডিয়া(mass media) বলি। একটি চ্যানেলে বা খবরের কাগজে কোন খবর প্রকাশিত, প্রচারিত হলে সারা দেশ নয় শুধু পৃথিবীর মানুষ জানতে পারে। আমি জানি না কোন চ্যানেল বা কাগজ আমাদের এই পন্য বর্জন কর্মসুচির খবর প্রকাশ করবে। কেননা প্রত্যেকটি চ্যানেল বা কাগজে ভারতীয় পন্যের বিজ্ঞাপন থাকে। এক্ষেত্রে বিকল্প মিডিয়া নামে একটি নতুন ধারণা এসেছে। ব্লগ, ফেসবুক, টুইটার এর সমন্বয়ই এই বিকল্প মিডিয়া। হয়তো ইলেক্ট্রিক বা প্রিন্ট মিডিয়ার মত এত শক্তিশালী নয় কিন্তু ফেলে দেবার মতও ফেলনা নয়। এই বিকল্প মিডিয়া এতটাই শক্তিশালী যে প্রত্যেকটি দেশের সরকার একে নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করছে। কয়েকদিন আগেও ভারত সরকার ফেসবুক, গুগল, ইউ টিউব সহ কয়েকটি জনপ্রিয় সাইটকে সরকার বিরোধী বক্তব্য প্রত্যাহার করতে বলেছে। চীন কোরিয়ায় কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত। এমনকি আমাদের দেশেও ফেসবুক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, ব্লগার দের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের সাহায্যার্থে আরো ব্লগার মাঠে নেমেছেন, আন্দোলনের মুখে ছেড়েও দিয়েছে পুলিস। এই ফেসবুক , ব্লগ বিপ্লবীদেরই কাজ এগুলো। তারা প্রমান করেছে প্রয়োজন হলে তারা মাঠে নেমেও কাজ করতে প্রস্তুত। বানিজ্যমেলায় তাদের সরব উপস্থিতি তার উজ্জ্বল প্রমান।

ধরুন ফেসবুক , ব্লগ বিপ্লবীদের কথামত আপনি ভারতীয় চ্যানেল দেখা বন্ধ করলেন এবং সকল ভারতীয় পন্য ক্রয় করা থেকে বিরত থাকলেন। এক বছর পর যখন তারা দেখবে ভাল অঙ্কের টাকা তাদের পকেটে ঢুকেনি এ বছর তখন তারা অবশ্যই চিন্তা করবে। কেন? উত্তর খুজতে তাদের বেশি দূর যেতে হবে না। পরিবর্তনটি এভাবেই আসবে বলে আমার বিশ্বাস।

ঘরের শত্রু বিভীষন বলে একটি প্রবাদ আছে। আমাদের দেশে এই কথাটি অত্যন্ত পরিচিত। ’৭১ এ তারা রাজাকার সেজেছে। ’১২ তে তাদের কি বলে সম্বোধন করব? প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন কোন এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবার জন্য। তার এই আগমনের প্রতিবাদে ছাত্র রা শাহবাগ আর চারুকলার রাস্তায় শুয়েছিলেন, তাকে যেতে না দেবার জন্য। ফলস্বরূপ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান গাড়ি থেকে নামলেন এবং ছাত্রদের সাথে কথা বলে অনুষ্ঠানে যোগ না দিয়েই চলে গিয়েছিলেন। ভিন্ন মতের প্রতি কি শ্রদ্ধা ! আজ এমন একটি ঘটনা ঘটলে পুলিসের আগে ছাত্রদল, ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা রক্তের বন্যা বইয়ে দিত। তারা ততটুকুই সহ্য করবে যতটুকুতে তাদের নেতার স্বার্থে আঘাত না লাগে।

এই সব ব্লগ, ফেসবুকের উপর তাদের কঠোর নজরদারি আছে বলে সরকার থেকে হুমকি দেয়া হয়েছে জেনে অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছি। গোয়েন্দা বাহিনীর লোকজন নাকি ডেকে ডেকে সাবধান করছে। অবস্থা সেই আশির দশকের চেয়ে ভয়ঙ্কর। সবাই এগিয়ে যায়, আমরা বোধ হয় পিছিয়ে যাচ্ছি। ভারতীয় পন্য বর্জন কার্যক্রমের বক্তব্য অত্যন্ত পরিস্কার।

“আমাদের মুল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হচ্ছি বারবার। আমরা কোন ভাবেই সরকারের প্রতিপক্ষ না, বা দেশের সার্বভৌমত্ব হারায় এমন কিছুই করব না। আমাদের প্রধান লক্ষ্য মানুষকে দেশে তৈরী পন্য ব্যাবহারে অনুপ্রানীত করা, সবার আর্থিক সঙ্গতির দিকে খেয়াল করে আর যেগুলার অল্টারনেটিভ দেশে প্রস্তুত হয়। দ্বিতীয় লক্ষ্য হল, সীমান্তে ভারতীইয় বর্বরতার প্রতিবাদে ভারতীয় পন্য বর্জন করতে শেখা। আমাদের পাবলিক মার্কেটের অনেককিছুই এখন ভারতীয়দের দখলে, সেখান থেকে আমাদের নিজের পায়ে দাড়ানো। আর নিজে স্বনির্ভর হলে আসলে এসব বিদেশী পন্যের পরোয়া কেউ এমনিতেই করবে না।‘

 

১,৮৮০ বার দেখা হয়েছে

১৬ টি মন্তব্য : “বোকা বাঙ্গালী বলছি-১”

  1. রুহুল (১৯৯২-১৯৯৮)

    মাহমুদুল তোমার লেখা পড়লাম।

    তুমি আমার মূল কথাটা মিস করে গেছ। আমি কোথাও বলিনি যে এই অনলাইন বিপ্লব খারাপ। কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত অনলাইন বিপ্লব কোন গঠনমূল্ক কাজে লাগাইনি...শুধুমাত্র স্ট্যাটাস দিয়ে নৈতিক দায় শেষ করেছি।

    আমার লেখার উদ্দেশ্য ছিল এতা বোঝানো যে ভারতের (আরো অনেক রাষ্ট্র) চাইতে অনেক বড় শ্ত্রু আমাদের নেতারা। গত বিশ বছরে চোরেরা দুইটা দলে ভাগ হয়ে জোটবদ্ধ হয়েছে। তাদেরকে যে কেউ কিনতে পারে/তারা যেকোন কিছু বেচে দিতে পারে...আমাদের উচিৎ তাদের বিরুদ্ধে একত্র হওয়া।

    আজ ভারত, কাল শেয়ার বাজার, পরশু আওয়ামীলীগ, তরশু বিএনপি করে হবে না। আমাদের সংগঠিত হতে হবে। তা না হলে ভারত আজকে বর্জন কর, কালকে দেখবা বার্মা গুলি প্র্যাকটিস করা শুরু করেছে।

    আমাদের মূল সমস্যা টা থেকে মুক্তি পেতে হবে। আস্বীকার করার উপায় নাই যে আমরা আমাদের নেতৃত্ব সংগঠিত চোরদের দিয়ে দিয়েছি। তোমার কি মত?

    জবাব দিন
    • নাজমুল (০২-০৮)

      রুহুল ভাই, ফেসবুকে রাজা ভাই নামে একজন ভাইয়া, একটা গ্রুপ খুলেছে, তারা প্রতিদিন টুইটারে বিভিন্ন সেলিব্রেটিদের মেসেজ পাঠায় এইসব কাহিনী জানিয়ে।

      আমাদের দেশের যারা অভিনয় করে, কিংবা ক্রিকেট প্লেয়ার তারা কিন্তু মানুষকে জানাতে পারে।
      অবশ্য তাদের পক্ষে সম্ভব হবেনা কারণ ফেসবুকে লিখলেই নাকি গোয়ান্দা ধরে 🙁

      জবাব দিন
  2. মাহমুদুল (২০০০-০৬)

    আমি ভাল লিখতে পারি না। তারপরও কষ্ট করে লেখাটা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

    ব্লগ, ফেসবুক জনপ্রিয় হবার পর সবার একজ়োট হবার মত ফুয়েলিং ইস্যু আমি এই প্রথম দেখলাম। আমার অভিজ্ঞতা কম। আমার ভুলও হতে পারে ভাইয়া।

    আমার লেখার শেষ অংশে আমি এ ধরনের কার্যক্রমের সমসাময়িক বিপদসমূহের কথা বলছি। তাই বলে আমরা এই প্রজন্ম যে রাজনীতি বিমূখ হয়ে থাকব তা নয়। তবে বড় একটি জোট ছাড়া এখনি আমরা দেশের রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করি তাহলে সরকারি বাহিনীর নির্যাতন ছাড়াও দলীয় পেটোয়া বাহিনীর দ্বারা নিগৃহীত হবার সম্ভাবনাও বেশি। সেজন্য আমাদের একটু কৌশলী হতে হবে।
    তবে আমি অবশ্যই একমত যে, ঘরের শত্রু বিভীষন। আমাদের প্রথমে সেই শত্রু গুলোকে সরানো উচিত। কিন্তু সেটি এই মুহুর্তে সম্ভব নয় বলেই আমার বিশ্বাস।


    মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য

    জবাব দিন
  3. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    মাহমুদুল - তোমার লেখাটার প্রতিটি লাইন বাই লাইন পড়লাম। কে বললো তুমি ব্লগ লিখতে পারো না? খুবই ভাল লেখ। লেখা চালিয়ে যেও।
    যখন একটা গঠনমূলক বিপ্লব শুরু হয় তখন অনেক প্রতিমন্তব্যই আসতে পারে। ঠিক যেমন একাত্তরে রাজাকাররা বলেছিল+ভেবেছিল পাকিস্তানের সাথে পারা যাবে না। তখন এক বাংগালির আবেগ আর দেশপ্রেমই এই দেশকে স্বাধীন করেছিল। ঠিক তেমনি এখনও স্বদেশী পন্যের ব্যবহারকে অনেকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করবে। আমাদের দেশের নেতারা খারাপ - ঠিক আছে বুঝলাম। কিন্তু এসব নেতাদের ব্যাক করে কারা? কিম্বা শেখ মুজিব বা জিয়ার মতো বলিষ্ঠ নেতারা কেন বেশিদিন বাঁচতে পারে না? এই দেশে দীর্ঘজীবি নেতা হতে গেলে হাসিনা-খালেদার মতো হতে হয়। তাতে পাকিস্তান কিম্বা ভারত দুপক্ষই নিশ্চিত হয় যে আর যাই হোক দেখটার কোন উন্নতি হবে না।


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন
  4. আসাদুজ্জামান (১৯৯৬-২০০২)
    আমাদের মূল সমস্যা টা থেকে মুক্তি পেতে হবে। আস্বীকার করার উপায় নাই যে আমরা আমাদের নেতৃত্ব সংগঠিত চোরদের দিয়ে দিয়েছি। তোমার কি মত?

    রূহুল ভাই, নানাবিধ কারনে আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব অনেকটা কলা গাছের মত। গোড়া থেকে কেটে দেন, ওখানে আবার যেটার জন্ম হবে তা কলা গাছই। আমরা ইচ্ছা করলেই এইদেশের রাজনীতিকে ইংগ-মার্কিন-ভারত বলয় থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবো না। তাদের এক বড় বাজার হচ্ছে এই দেশের ১৬ কোটি মানুষ। আমি ইনিয়ে বিনিয়ে অনেকবার বলেছি যে, দাসপ্রথার এই আধুনিক সংস্করনকে কেউ হাতছাড়া করবে না। তাই দেশের উন্নয়নের এবং সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার রাজনৈতিক আদর্শ এখানে প্রতিষ্ঠিত করা অনেক কঠিন। কারন যতটা না বাইরের ষড়যন্ত্র তার চেয়ে বেশী এই জাতির মৌলিকত্বের অভাব। মানে সংকর জাতি হওয়ার কারনেই আমাদের মধ্যে সারভাইভ করার প্রবনতা অত্যন্ত বেশী, এবং দুঃখের বিষয় হচ্ছে সেই প্রবনতা শুধুমাত্র নিজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। সুতরাং আমরা যতদিন আমাদের জাতিগত দোষগুলো ত্যাগ করতে না সক্ষম হব, বিভিন্ন নৈতিক ও মানবিক গুনাবলীর সম্মিলন এবং উৎকর্ষ সাধন না করতে পারবো এবং চারিত্রিকভাবে দৃঢ় হতে না পারবো, ততদিন আমাদের নেতৃত্ব কলাগাছের মত চোর উৎপাদন করেই যাবে।

    আর সেজন্য প্রথম পাঠ হতে পারে অবশ্যই, ভারতীয় পন্য বর্জনের পরিবর্তে স্বদেশী পন্য কিনে হও ধন্য। হোক না ব্রিটিশ আমলে ভারতীয় স্বদেশী আন্দোলনের মূলমন্ত্র, ভালকে গ্রহন করাই ভাল মানসিকতার পরিচয়।

    আর মাহমুদকে বলতে চাই যে, এই গনজাগরনকে পজিটিভলি মোটিভেট করা উচিত। মানে কোন দেশের প্রতি বিদ্বেষমূলক বা প্রতিশোধমূলকভাবে নয় বরঞ্চ নিজের দেশের স্বার্থ সংরক্ষনমূলক পজিটিভ স্লোগান হতে পারে। এর অনেক অনেক ভালো দিক আছে। রাজনীতির একটা বড় ব্যাপার হচ্ছে সবাইকে কনভিন্স করতে পারা।

    জবাব দিন
  5. রুহুল (১৯৯২-১৯৯৮)

    শিশির,

    আমি শুরু করতেই বলছি। ১ দিনে হবেনা। কিন্তু হবে। হবে না ধরে নিলে কখনো হবে না। আমরা না করে অন্য একজন করে দিবে সেটা ভাবলেও হবে না।

    কমেন্ট ভাল হয়েছে।

    জবাব দিন
  6. রেজা শাওন (০১-০৭)

    চরম লেখা হইছে।

    বাংলাদেশ হচ্ছে ইস্যুর দেশ। ইস্যু আসে ইস্যু যায়, সকল ইস্যু থেকে যায়। এভাবে হবে না। পরিবর্তন আনতে হলে, অবশ্যই সেটা দীর্ঘমেয়াদী কোন পরিকল্পনার ফসল হতে হবে। হুট হাট হবে না।

    জবাব দিন
  7. ’৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নূর হোসেনের মৃত্যু নতুন এক জোয়ার সৃষ্টি করেছিল।

    নূর হোসেন ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগঠিত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে নিহত হন।

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।