অন্ধকার টানেল থেকে হঠাৎ নিজেকে আবিস্কার করি এক রেল স্টেশনে। সিঙ্গেল লাইন। পুব পশ্চিমে লম্বা। দক্ষিণে প্লাটফর্ম কিন্তু টিকিট ঘর বা যাত্রী ছাউনি নেই। নামফলকও নেই। সম্ভবত জরুরি প্রয়োজনে এখানে ট্রেন থামে। রেললাইনে স্লিপার দেখা যায় না। রেল বাদে বাকি স্থান ব্রকোলি রঙা পাথর বসিয়ে ঢাকা। স্টেশন থেকে উত্তরে নামার ঢালু পথ। তার শুরুতেই পূর্ব দিকে উত্তর-দক্ষিণে লম্বালম্বি একটি পুরোনো রেলের বগি। একটি বড় টবের মতো ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিস্তারিত»নিঃশব্দ বিভাজন
ছিন্নমস্তা শঙ্খ জোড়ার বিনুনি কাটা,
শিরদাঁড়ার পথে ওঠে হিংসার জহর।
অবশ করা নীল বেদনার আকাশ।
ইত্যবসরে কারও শাটার ক্লিক,
অবকাশ যাপন যাত্রার সুযোগ।
যদিও আছে, তবুও মনে করো নেই
আমার কোন সহোদর সহোদরা।
আর সব থাক; নয় মাস অবস্থান,
দৌড়াদৌড়ি শেখা পর্যন্ত স্তন্যদান।
বোমা কিংবা আগুনঝরা দিন-রাত
নিরাপদ থাকতে এবং রাখতে,
এদিক-সেদিক সতর্কতার সাথে
বুকে আগলে রেখে পলায়ন
শুধু এটুকুই তো সব নয়;
বাস্তবিক ব্যস্ততা
বাস্তবিক ব্যস্ততার
বিবর্ণ বিবরে
শৃঙ্খলিত
বিশৃঙ্খল সময়,
দীর্ঘসূত্রিতা আর কালক্ষেপণে
পণ্ড।
আপসে আর পণ্য মূল্যবোধে
টিকে যাওয়া
সততার অহমে
নিত্য পিষ্ট
অহমের সততা।
সমাজ-সংসারের
দায়হীন নিরপেক্ষতার
দায়,
জন্ম দেয়
শুধু হতাশার।
মিরপুর, ৩০ জুন, ২০০৩
বিস্তারিত»স্মৃতি অমলিন (১)
এটিকে বলা যায়, একটি প্রাগৈতিহাসিক পোস্ট। এখনকার ছেলেমেয়েদের কাছে এর কিছু কথা বিস্ময়কর মনে হতে পারে। কথাগুলো ১৯৬২-৬৭ সালের দিকের আমার জীবনের অভিজ্ঞতার কথা।
খুব ছোটবেলা থেকেই (৭/৮ বছর) আমাদের বাসায় কোন অতিথি এলে আমি খুব খুশি হ’তাম। আমরা যেহেতু ঢাকায় থাকতাম, দেশের বাড়ি থেকে কোন আত্মীয় স্বজন ঢাকায় কোন কাজে আসলে সাধারণতঃ আমাদের বাসাতেই উঠতেন। এতে আম্মার উপর অবশ্য বেশ চাপ পড়তো,
বিস্তারিত»আরব মরুর বুকে জীবিকার সন্ধানে যাওয়া পলিমাটির বঙ্গ ব-দ্বীপের কর্মঠ ছেলেদের নিয়ে কিছু কথা
২৪ মে ২০২৫ থেকে ২৪ জুন ২০২৫, গত এই একটি মাস পবিত্র হজ্জব্রত পালনের উদ্দেশ্যে মক্কা-মদীনায় অবস্থান করেছিলাম। প্রথমে গিয়েছিলাম রাসুল (সাঃ) এর শহর মদীনা শরীফে। সেখানে ৮ দিন অবস্থান করার পর চলে এসেছিলাম আজিজিয়া শহরে। আজিজিয়া থেকেই ০৫ জুন ২০২৫ তারিখে হজ্জের অবশ্যপালনীয় আনুষ্ঠানিকতাগুলো পালনের উদ্দেশ্যে মিনায় চলে গিয়েছিলাম, সেখান থেকে আরাফাত এবং মুযদালিফায় অবস্থান করার উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে যাত্রা করেছিলাম। সেসব অবশ্যপালনীয় আনুষ্ঠানিকতাগুলো পালনের পর মক্কা শরীফে এসে হারাম শরীফের নিকট একটি হোটেলে উঠেছিলাম।
বিস্তারিত»কুয়াকাটার ডায়েরি
সাগরকন্যার ডাক –
ঝাঁকি খেতে খেতে পথ
তেপান্তরের মাঠ
আঙ্গুলের কলম –
বালিতে লেখা যত নাম
মুছে দেয় ঢেউ
ছোট্ট ছেলেটা
ছোটে ভেজা বালিতে –
দরিয়ার গর্জন
বালির উপর
আঁইশের নকশা কাটা –
কাঁকড়ার বাচ্চা
সমুদ্রের গর্জন –
জিও ব্যাগের উপর
আছড়ে পড়ে ঢেউ
সাগরের ঢেউ
তাদেরও আবেগী করে –
আতিথেয়তা
আমাদের বাসায় একজন ডমেস্টিক এইড একটানা প্রায় ৭/৮ বছর কাজ করেছিলেন। তার নাম মর্জিনা বেগম। তিনি বয়স্কা ছিলেন, তবে তার সঠিক বয়সটা তিনি অনুমান করেও বলতে পারতেন না। শুধু এটুকু বলতে পারতেন যে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি অনেক ছোট ছিলেন, সে সময়ের কোন স্মৃতি তার মনে নেই। বছর পরিক্রমায় তখন তার মেয়ের ঘরে নাতি নাতনিও আছে বলে তিনি জানিয়েছিলেন। তাই আমরা ধরে নিয়েছিলাম, তখন তার বয়স হয়তো পঞ্চাশ হবে,
বিস্তারিত»নিউ ইয়র্কের পথে…. ২
হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল। গ্যাংওয়ের একেবারে শেষ মাথায় লাইন করে দাঁড়িয়ে ছিল ক্যাথে প্যাসিফিক এর কয়েকজন গ্রাউন্ড স্টাফ। তারা যাত্রীদের বোর্ডিং পাস চেক করে করে একেকজনের বাম বাহুতে একেক রঙের একেকটি স্টিকার লাগিয়ে দিচ্ছিল। আবার কারও হাতে কিছুই লাগাচ্ছিল না। পরে আরেকটু নিবিড়ভাবে লক্ষ্য করে বুঝলাম, তারা যাত্রীদেরকে মোট তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করে নিচ্ছিলঃ এক,
বিস্তারিত»তিনটি আধুনিক উপকথা
সিংহভাগ
সিংহ, গরু, ছাগল আর ভেড়া মিলে অনেকগুলো পশু শিকার করেছে। গরু৷ ছাগল ও ভেড়াকে সিংহ বুঝালো শিকার করে জড়ো করে রাখা সমস্ত পশুই সিংহের প্রাপ্য। এটাকেই সিংহভাগ বলে। এমন সময় দৃশ্যপটে হাজির হলো তিনটে শেয়াল।
তাদের একজন বললো, ” আমি এই শিকারের তিন ভাগের এক ভাগ জরিমানা করলাম। কারণ সিংহ মশাইয়ের শিকারের লাইসেন্স নাই।”
আরেক শেয়াল বললো, ”
বিস্তারিত»শিক্ষকের ডায়রি (পর্ব ১৫) – কমিউনিকেশনের বৃষ্টিনামা
২৯ মে ২০২৫
শিক্ষকের ডায়রি: পর্ব-১৫
কমিউনিকেশনের বৃষ্টিনামা
১। ফেনিতে জয়েন করার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিশেষ করে ইংলিশ ডিপার্টমেন্টের) ছেলেমেয়েদের প্রফেশনাল সফট স্কিলসে গ্রুমিঙের দিকে নজর দেয়া শুরু করেছি; এক্ষেত্রে, অনেকটা নয়,বরং পুরোটাই বলা চলে ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো। তবে কিছু ছাত্রছাত্রী তাদের সফট স্কিলস ডেভলাপমেন্টের বিষয়ে বেশ আগ্রহী। তাদের নিয়েই শুরু হলো ইংলিশ ক্লাবের তত্বাবধানে কমিউনিকেশন এবং প্রেজেন্টেশন স্কিলসের বিষয়ে ধারাবাহিক সেশন।
বিস্তারিত»শিক্ষকের ডায়রিঃ পর্ব ১৪ – দ্যা শো মাস্ট গো অন
দ্যা শো মাস্ট গো অনঃ ২৬ মে ২০২৫
গত দুদিন থেকে আমাদের নব্য টিন এজার কন্যা আরিশার জ্বর। আমি তখন সেই মুহূর্তে ঢাকাতেই ছিলাম। রবিবারে আমার ছুটি ছিল, আর শনিবার ছুটি নিয়েছিলাম। ঈদের সময়ে কিছুটা লম্বা ছুটি হবে বলে পরপর তিন শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকছে। রবিবার সকালে আরিশা তেমন ভাল বোধ না করাতে ভোর সকালে রেডি হয়েও স্কুলে যাবে কি যাবে না তা নিয়ে দোটানায় ছিল;
বিস্তারিত»আরক্তিম আপেল, সোমত্ত নারী, জ্বলন্ত চাঁদ
“তিনি একজন কবি যিনি দার্শনিক তত্ত্বের চেয়ে বরং মৃত্যুর কাছাকাছি, বুদ্ধির চেয়ে বরং দুঃখের যন্ত্রণার কাছাকাছি, কালির চাইতে বরং রক্তের কাছাকাছি” — পাবলো নেরুদা সম্পর্কে এমনটিই বলেছিলেন ফেদেরিকো গার্থিয়া লোর্কা।
১৯৭১ সালে নোবেল বিজয়ী নেরুদাকে “আচ্ছন্ন করে তাঁর জন্মভূমি— অত্যাচারিত দিগ্বিজয়ীদের দ্বারা যে ভূমি ধর্ষিত হয়েছে বারংবার। নিজেকে তিনি নির্বাসিত করেছেন, অসংখ্যবার নির্যাতিত হয়েছেন, কিন্তু কখনো থামেন নি। অত্যাচারিতের সহযাত্রী তো সারা পৃথিবী জুড়েই।
বিস্তারিত»আদিম অরণ্যের কাছাকাছি
১
উগান্ডার এন্টেবি বিমানবন্দর থেকে লেক ভিক্টোরিয়ার বিস্তীর্ণ জলরাশির উপর দিয়ে আমাদের উড়িয়ে নিয়ে এল ছোট্ট আন্তনভ বিমানটি। ১০ অক্টোবর ২০০৯ সাল। কঙ্গোর মাটিতে প্রথম পা রাখলাম। আমার কর্মস্থল ইতুরি জেলার বুনিয়া শহরে। শহর বলতে তেমন আর আছেই বা কী! চল্টা ওঠা রানওয়ে সম্বল করে জীর্ণদশার একটি এয়ারপোর্ট। বুড়ো দারাস সাপের মতো প্রশস্ত কাঁচা রাস্তা। একটি কি দু’টি পুরনো বেলজিয়ান ধাঁচের বাংলো। আর রিলিফের নতুন টিনে ছাওয়া অসংখ্য ছাপরার বস্তি।
পুরোনো ঢাকার কড়চা
১।
পুরোনো ঢাকা- আসলে কত পুরোনো? ফরাশগঞ্জ লাল কুঠির সামনে দাঁড়িয়ে কথাটা ভাবছিলাম। অনেকেই হয়তো তড়িৎ জবাব দেবেন, কেন? চারশো বছর! এই চারশো বছরটাও একেবারে কম নয়, আমার চতুর্দশ পূর্বপুরুষেরো আগেকার কথা। আজকের পৃথিবীর অনেক ভারি ভারি শহরের চেয়েও আগের। আমি এখানে সবিনয়ে দ্বিমত করবো। এই ‘চারশো বছর’ কথাটা আসলে এসেছে সুবাদার ইসলাম খাঁ এর সূত্রে, যখন নাকি প্রবল প্রতাপ মোঘল সম্রাটের সুবাদার ইসলাম খাঁ এখানে সুবে বাংলার রাজধানী স্থাপন করেছিলেন।
বিস্তারিত»রাতকুমারী
একদিন সকালে মানুষেরা বর্জ্য-দুষিত আখ্যা দিয়ে তাদের রাতকুমারী নদীটাকে নিংড়ে তুলে রকেট লঞ্চারে বসিয়ে আকাশের দিকে ছুড়ে দিয়ে চাঁদে পাঠিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। তাকে ওরা আর চায় না। মেঘেরা রাতকুমারীকে চাঁদে যেতে না দিয়ে তাদের কোলে আটকে রাখে। সেখান থেকেই রাতকুমারী প্রায়ই বৃষ্টি হয়ে মানুষদের ভেজায়।
বিস্তারিত»