সিসিবিতে দুদক ও সংসদীয় কমিটি নিয়ে বিতর্ক করতে করতে শেষ পর্যন্ত একটা লেখা তৈরি হয়ে গেল। ০৮ মে, ২০০৯ প্রথম আলোতে লেখাটি প্রকাশিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্নীতি দমনের নামে কাউকে নাজেহাল বা হয়রানি করা দুর্নীতি দমন কমিশনের কাজ নয়। ইতোপূর্বে যা হয়েছে তা যেন না হয়। দুর্নীতির নামে অন্যায়ভাবে, অযাচিতভাবে কাউকে যেন হয়রানি করা না হয়।
এটা গতকাল সোমবারের একটা খবর। মন্ত্রিসভার বৈঠকে শেখ হাসিনা এমন মন্তব্য করেছেন বলে তার প্রেস সচিব সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। এ নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যায় যাবো না। কেউ যদি প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে মামলা করা বা তদন্ত করা বা তাদের জেলে পোরার ব্যবস্থা করাকে তিনি নাজেহাল বা হয়রানি মনে করেন কিনা; তার উত্তরে তিনি কি বলবেন জানিনা। আমি অবশ্য শেখ হাসিনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত নই। সেটা আমার আগের লেখায় রায়হান রশিদের মন্তব্যের জবাব দেওয়ার সুযোগ নিয়ে প্রকাশ করছি।
দুদক সম্পর্কে মুক্তাঙ্গনে রায়হান রশিদের মন্তব্য বেশ দেরিতে পড়লাম। আসলে এই বিষয়ে তার আর আমার অবস্থান পরস্পরবিরোধী। আমি আমার যুক্তিগুলো এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের দুঃসাহস দেখতে চাই শিরোনামে মূল লেখায় এবং ওই পোস্টে নানা মন্তব্যে প্রকাশ করেছি। আমি সেখানে বলেছি, দুদকের মতোই স্বাধীন প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন, মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক। তাদের আর্থিক জবাবদিহিতা যদি মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক আর কাজের জবাবদিহিতা যদি আদালত ও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল নিশ্চিত করে, তাহলে দুদককে কেন সংসদীয় কমিটির কাছে জবাবদিহি হতে হবে?
আগের লেখায় এক মন্তব্যে আমি বলেছি : দুদকের আর্থিক স্বাধীনতা আইনে আছে। আর তার আর্থিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক। আইন প্রয়োগে অন্যায় বা ভুল করলে আদালতে তার বিচার আছে। দুদকের চেয়ারম্যান বা কমিশনার কারো বিরুদ্ধে কোনো অসদাচরণ বা দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে রাষ্ট্রপতি বিষয়টি তদন্ত বা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে পাঠাতে পারেন। সুতরাং প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি হিসাবে দুদকের কোনো জবাবদিহিতা নেই, এমন মনে করার কোনো কারণ নেই। দুর্নীতি দমনে স্বাধীন এই প্রতিষ্ঠানটির জবাবদিহিতার বিষয়টি কোনোভাবেই সংসদীয় কমিটির হাতে যায় না বা যেতে পারে না। যেতে দেওয়াও উচিত হবে না। সেরকম কিছু হলে আমরা শেষ হয়ে যাবো।
দুদক সম্পর্কে রায়হান আমার লেখায় তার মন্তব্যে বলেছিল,
১) জবাবদিহিতার সংস্কৃতি এবং তার প্রয়োজনীয়তা যেটা মূল বিতর্ক থেকে অজান্তে বাইরে ছিটকে পড়ছে;
২) দুদকের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতার স্বরূপ নিয়ে সুধী মহলে বিভ্রান্তি;
৩) সাবেক দুদক প্রধানের জবাবদিহিতার দায়।
এক এক করে রায়হানের তোলা প্রশ্নের জবাব দিই। অবশ্যই আমি দুদকের কেউ না বা তার মুখপাত্র না। দুর্নীতির স্বরূপ আমরা এদেশে দেখেছি। দুর্নীতিবাজদের দাপটও কম দেখিনি। তাই এরকম একটা স্বাধীন প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নিজের পুরো শক্তি নিয়ে দাঁড়াতে চাই। আর সে কারণেই এসব প্রশ্নের জবাব দেওয়ার দায়টা অনুভব করছি।
১) দুদক জবাবদিহিতায় নেই, এ নিয়ে এতোদিন বিতর্কের পরও যদি রায়হান তাই মনে করে তাহলে আমার আর কিছু বলার নেই। এ বিষয়ে আমি এই লেখাতেও শুরুতেই আমার অবস্থান পরিস্কার করেছি।
২) দুদকের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা নিয়েও আমার মধ্যে কোনো বিভ্রান্তি নেই। আমি বরং মনে করি একে আরো শক্তিশালী কিভাবে করা যাবে সেটা আলোচনা করা দরকার। ব্যক্তি হিসাবে দুদক প্রধান বা কোনো কমিশনার অসৎ হলে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল আছে। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠানে যদি দলীয় লোক বসে তাহলে কি করবো? দলীয় লোক যে নিয়োগকর্তা দলের প্রতি অনুগত হয় তা নিয়ে কোনো সন্দেহ আছে? সংসদীয় কমিটিও তো তারই পক্ষ নেবে! কারণ এখানেও ক্ষমতাসীন দল বা জোটের সংখ্যাগরিষ্টতা থাকে। আমি বরং মনে করি আমাদের জন্য বিপদ হচ্ছে দলীয়করণের সম্ভাবনা। ২০০৪ সালে বেগম খালেদা জিয়া বিচারপতি সুলতান হোসেন খানকে নিয়োগ দিয়েছিলেন। তার আমলে দুদকের ক্লীবত্ব (শব্দটা নিয়ে আমি নিজেও নিশ্চিত নই) আমরা দেখেছি। এখন দেখছি শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলাগুলো গায়েব করে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দলীয় লোক বসালে এই কাজটা যে সহজ হবে সেটা বলাই বাহুল্য।
৩) সাবেক দুদক প্রধানের জবাবদিহিতার বিষয়টি আমার কাছে পরিস্কার নয়। তিনি কি দুর্নীতি করেছেন? অসদাচরণের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে? সাবেক দুদক প্রধান কি অন্যায় করেছেন সেটা রায়হান স্পষ্ট বললে জবাব দেওয়া সহজ হতো। িতিন বা দুদক কি কোনো সৎ লোকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন? এই বিষয়টি নিয়ে পরে আমার কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছি।
মুক্তাঙ্গনে রায়হান লিখেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুদক এর কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে নানা ধরণের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পরায়নতার অভিযোগ উঠেছে, এবং সে সব নিয়ে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা বিভিন্ন ব্লগে লেখাও হয়েছে গত দু’বছর। বিবেকবান মানুষদের মধ্যে এমন কে আছেন যিনি এই সব অভিযোগকে উড়িয়ে দিতে পারেন?
জবাবে আমি বলি, ব্লগে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লেখা কেন এ নিয়ে পুরো ব্লগ প্রকাশ করা যেতে পারে। কিন্তু রায়হান বা আমি কি সেটাকেই গুরুত্ব দেবো, নাকি সত্যটা জানার চেষ্টা করবো? দুদক নিয়ে গত তিন সপ্তাহে যেসব লেখালেখি হয়েছে, তাতে যারা বিষয়গুলোর গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করেছে, তাদের জানা থাকার কথা- দু’বছরের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুদকের বাইরে আরো একাধিক কমিটি ও সংস্থা দুর্নীতি নিয়ে কাজ করেছে। মেজর জেনারেল (অব.) মতিনের টাস্কফোর্স এবং প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা এদের অন্যতম। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পরায়ন কাজের সঙ্গে শেষোক্তরা জড়িত ছিল, দুদক নয়। একথা দুদক প্রধান দায়িত্বে থাকাকালে নানাভাবে প্রকাশ করেছেন। কথিত দুর্নীতিবাজদের তালিকার কোনোটি দুদক প্রকাশ করেনি। কোথা থেকে আসতো আমরা জানি। তিনি সেসবের বিরুদ্ধে লড়েছেন। যেটা সাধারণ ব্লগাররা জানে না। রায়হানের ভাষায় সুশীল সমাজের কুশীলবদের কেউ কেউ জানেন।
হ্যা হাসান মশহুদ চৌধুরীর চাপের মুখে এক সময় টাস্কফোর্স নিস্ক্রিয় হয়ে যায়। টাস্কফোর্স অনেক মামলার দায় দুদকের ওপর চাপাতে চেয়েছিল। কিন্তু হাসান মশহুদ দুদকের তদন্ত ছাড়া তাদের কোনো মামলা নিজেদের ঘাড়ে নেননি। নাইকো কেলেংকারি তদন্ত না করতে, কোকোর বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচার, ওয়ারিদ কেলেংকারি তদন্ত না করতে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার চাপ তিনি উপেক্ষা করেছেন। শেষ তিন মাসে মহাজোট সরকার দুদকের কাজে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে থাকে। যার এক পর্যায়ে তিনি পদত্যাগ করেন।
আমি বরং বিষ্মিত হয়েছি, উনি এভাবে হাল ছেড়ে দেওয়ায়। হয়তো ভেতরের বাস্তবতা উনি আমাদের চেয়ে ভালো জানেন। তাই পন্ডশ্রম করতে রাজি হননি।
আইনজীবীদের পেছনে দুদকের ১৩ কোটি টাকা ব্যয় নিয়ে রাজনীতিবিদদের মতো রায়হানও প্রশ্ন তুলেছ দেখে কিছুটা অবাক হয়েছি। দুদকের ওয়েবসাইটে মামলার পরিস্থিতি নিয়ে যে বিবরণ দেওয়া আছে তাও বেশ পুরনো। ২০০৮-এর ০১ সেপ্টেম্বর শেষ আপডেট করা হয়েছে। সেখানে ১,১৪৬টি (এক হাজার একশ ছেচল্লিশ) মামলার কথা আছে। এই হিসাবে এক একটা মামলায় গড়ে আইনজীবীর পেছনে ব্যয় =১,১৩,৪৩৮/- (এক লাখ তের হাজার চারশ আটত্রিশ) টাকা। হিসাবটা কি খুব অস্বাভাবিক মনে হয়? হয়তো কোনো মামলায় আইনজীবীর পেছনে দুদকের ব্যয় হয়েছে ১৫/২০ লাখ টাকা আবার কোনোটায় কয়েক হাজার। (আমি এই হিসাব ধারণার ওপর বলছি)। কিন্তু আমরা কি কখনো বের করতে পারবো বসুন্ধরার শাহ আলম বা বেক্সিমকোর সালমান তার মামলায় কতো টাকা ব্যয় করেছেন? তাদের মামলার পেছনে দুদক কি হাজার টাকার আইনজীবী নিয়োগ করলে ভালো করতো?
নিজেকে আমি বিবেকবানই মনে করি। ওয়ান-ইলাভেন যখন সামনে চলে এলো তখন এর চেয়ে ভালো কোনো বিকল্প না পেয়ে তাকে সর্বতোভাবে সমর্থন করেছি। এ নিয়ে আমি অনুতপ্ত নই। পরিবর্তনের সূচনা হোক চেয়েছিলাম। হয়তো কারো কাছে মনে হতে পারে, কলাগাছের কাছে ফল হিসাবে আম চেয়েছিলাম। কিন্তু যারা তখন এর বিরোধীতা করেছিল তাদের স্বরূপ তো জানি। দলবাজরা আমাকে বা এরকম সবাইকে গালি দিয়েছে। সুশীল সমাজ শব্দটাকে গালির প্রতিশব্দ বানিয়েছে। তাতেও লজ্জা পাইনি। কারণ আমি তো অসৎ নই, আমার কোনো ব্যক্তিস্বার্থ ছিল না, নিজের কোনো প্রাপ্তিযোগ ছিল না বা সে আশায় অতীতেও থাকিনি, ভবিষ্যতেও থাকবো না। আমি কারো উদ্দেশ্য পূরণে ব্যবহৃত হইনি। নিজে যেটা ভালো মনে করেছি সেটাকে ভালো বলেছি, মন্দকে বলেছি মন্দ।
পরিবর্তন কিছুটা হচ্ছিল। কিন্তু ধরে রাখা গেল না। কেন গেল না সেটা একটা বড় শিক্ষা আমার জন্য, দেশের সবার জন্য। হয়তো আমরা পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত না। সে নিয়ে এখানে আর নয়, পৃথক লেখা হতে পারে।
প্রথম আলোতে ০৮ মে, ২০০৯ প্রকাশিত লেখাটি লিংক থেকে পড়তে সমস্যা হলে এখানে ইমেজ আকারে দেয়া আছে। পড়তে পারেন।
:salute: :salute:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
:salute:
:salute:
আকাশ, মাসরুফ, রবিন : তোমাদেরও শুভেচ্ছা। তবে শুধু স্যালুট নয়, মন্তব্য চাই। কেন সমর্থন করো বা করো না, সেটা ব্যাখ্যা করলে আলোচনা ভালো হয়। আমাদের ভাবনার জগতটাও প্রসারিত হয়। আগামীতে সুচিন্তিত মন্তব্য চাই।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
আসলে বাস্তবতাটা কেউ গভীরে গিয়ে দেখছেন না বা হিসেবটা বুঝতে ভুল করছেন। আমাদের আইনজীবীরা নাগরিক ফোরাম/সেমিনারগুলিতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার কথা বললেও দুদকের মামলা পরিচালনার জন্যে রাজি হননি, অন্তঃত প্রথম সারির কেউই হননি। মধ্যম সারির যে ১৬ জন আইনজীবীকে দুদক মামলা পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিল, তাদেরও রাজি করাতে হয়েছে বিপুল অঙ্কের পারিশ্রমিক দিয়ে। (যদিও ১,১৪৬টি মামলার পেছনে ১৩ কোটি টাকা ব্যয় খুব বেশি অস্বাভাবিক নয় আমার কাছে )। এই বিষয়টির স্বচ্ছতা নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আওয়ামী লীগ-বিএনপির এতো বাঘা বাঘা নেতার বিরুদ্ধে একযোগে লড়তে অল্প টাকায় আইনজীবীরা দাঁড়িয়ে যাবেন, এমন পরিস্থিতি বাংলাদেশে সৃষ্টি হয়নি।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
রাজনীতিবিদরা ১৩ কোটি টাকার বিষয়টাকে এমনভাবে বারবার নিয়ে আসছে যেন দুদক কর্তারা এই টাকা মেরে খেয়েছেন। নিজেরা যেটা করে অন্যকেও তাই নিয়ে সন্দেহ করে!! আমি তো বরং মনে করি সালমান-সোহেল রহমান, সাকাচৌ, শাহ আলম, তারেক-কোকো-গিয়াস মামুন, ফালু, হেলাল, ওবায়দুল কাদের, জলিলসহ চোরচোট্টাদের জেলে ঢোকানোর জন্য দুদক যদি আরো কোটি কোটি টাকা খরচ করে তাতেও আপত্তি করবো না। আমি মনে করি, এদেশে আমার মতো সংখ্যাগরিষ্ট মানুষ চোর-দুর্নীতিবাজ-লুটেরাদের জেলেই দেখতে চাই। ধন্যবাদ কামরুল আমার অনুভূতি বোঝা এবং এ নিয়ে মতামত দেওয়ার জন্য।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
দুটি বিষয় একটি মামলায় আইনজীবি কি ধরণের পারিশ্রমিক নিবেন নির্ধারণ করে- প্রথমত, কত টাকার ডিস্পিউট, দ্বিতীয়ত ক্লায়েন্ট কতটা আর্থিক সঙ্গতিসম্পন্ন। এটা স্থান, কাল, পাত্র নির্বিশেষে। যেমন পল ম্যাক্কার্টনিকে তার বিবাহ-বিচ্ছেদ মামলায় যত খরচ করতে হয়েছে নিঃসন্দেহে সেটা একটি সাধারণ বিবাহ-বিচ্ছেদ মামলার চেয়ে বেশী কেননা, প্রথমত সেটা ছিল একটি ৩০ মিলিয়ন পাউন্ডের ডিস্পিউট, ৩০ মিলিয়ন পাউন্ডের জন্য তাকে ২-৩ মিলিয়ন আইনজীবিকে দিতে হবে এটা স্বাভাবিক; দ্বিতীয়ত, এই টাকাটা দেওয়ার সামর্থ পল ম্যাক্কার্টনি রাখে। এবার আসা যাক বাংলাদেশের ব্যাপারে- বাংলাদেশে আরও একটি ব্যাপার জড়িত হয়ে যায়, সেটা হলো, বাংলাদেশে রাজনৈতিক মামলায় সবসময়ই আইনজীবি অনেক অনেক বেশী পারিশ্রমিক নিয়ে থাকে। এটা কেন বিস্তারিত আলোচনার করতে গেলে আলাদা একটা পোস্ট হয়ে যাবে। আমার মা একজন আইনজীবি, যদিও পেশা্র সাথে জড়িত অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ব্যাপারগুলো নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়না- তারপরও ব্যাপারটাতে একটু ইনসাইট দিতে পারবো। যতদিন এটা গাজীপুর জেলা জজ কোর্টে ছিলো, আমার মা ছিলো আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলার ডিফেন্ডেন্ট পক্ষের আইনজীবি। যেহেতু, আমাদের মধ্যে পেশাগত টাকা-পয়সা বিষয়ক কথা হয় না- উপরোক্ত অনুমিতিগুলো যে, সামর্থবানের কাছ থেকে বেশী পারিশ্রমিক নেওয়া, রাজনৈতিক মামলায় বেশী পারিশ্রমিক নেওয়া, গুরুত্বপুর্ণ মামলায় বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া- এগুলোর উপ ভিত্তি করে আমি অনুমান করতে পারি, তার নেওয়া টাকার অংকটা ছিল সানাউল্লাহ ভাই বর্ণিত এক লক্ষ টাকা থেকে কয়েকগুন বেশী, বেশ কয়েকগুন বেশী। বস্তুত, আমরা যদি এই কনসেনসাসে পৌছতে পারি যে একটি রাজনৈতিক মামলায় একলক্ষের দেড বা দুইগুন টাকাও ট্রাঞ্জেক্ট হয়ে থাকে আমরা বোধহয় বলতে পারবো দুদক কোন অস্বচ্ছ ট্রানজেকশন করেনি। এটা গেলো ডিফেন্ডেন্টের কথা, কিন্তু প্লেইন্টিফও কি একই অর্থ খরচ করে থাকে?
প্লেইন্টিফ বা আমাদের আলোচনায় এখানে দুদক আইনজীবির পেছনে কত খরচ করবে এটাও নির্ধারিত হবে একই অনুমিতি দ্বারা যে কত টাকার ডিস্পিউট। বলাই বাহুল্য প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বা আমলাদের বিরুদ্ধে এক একটা দুর্নীতির মামলা হবে কয়েক কোটি টাকার ডিসপিউট। এবং যেহেতু সেই দুর্নীতিবাজ আর্থিক সঙ্গতিসম্পন্নও, তাই মামলা জিতলে সরকার ড্যামেইজ পাবে যদি ধরি এক কোটি টাকাই, আর আইনজীবি যদি ধরি এর আকাঙ্খিত ড্যামেইজের ১০% পারিশ্রমিক নিবে তাহলে সেটা হয় ১০ লক্ষ টাকা যা সানাউল্লাহ ভাই বর্ণিত এক লক্ষ টাকা থেকে ১০ গুন বেশী।
এটা দেখে আমার মনে হয়েছে যে, দুদকের মামলাপ্রতি এক লক্ষ টাকা খরচ খুবই মিনিমাইজড একটা খরচ, দুদককে কাজ করতে হয়েছে এই কস্ট মিনিমাইজেইশনের লক্ষ্যে। এটার জন্য তাদের একটা বাহবা প্রাপ্য আছে। সন্দেহ যে কেউ করতে পারে, স্কেপটিসিজম প্রসঙ্গশনীয়। কিন্তু, বাংলাদেশের মত একটা দেশে, প্রথমত যেখানে একটি দাবী ফিজিকাল এভিডেন্স ও রিজনড লজিক দ্বারা সমর্থিত হওয়া অপ্রয়োজনীয় এমনকি সমর্থিত হলে স্থানভেদে মাঝেমাঝে এটা অমার্জনীয় অপরাধ হিসেবে গন্য- বলাই বাহুল্য স্কেপটিসিজমও আমরা অভিনবভাবে অপব্যাবহার করবো। সানাউল্লাহ ভাইয়ের পোস্টকে অভিনন্দন। অনেক কিছু বলার ছিলো, হতাশাতেই সব পর্যবসিত হচ্ছে দুদকের নতুন নীতিমালা দেখে।
নতুন নীতিমালাগুলো যে উদ্দেশ্যমূ্লক এই ব্যাপারটা এতই obvious যে আমার কথা বলা মুড অফ্ হয়ে গেছে।
অর্ণব, ত্রিমিতা : নতুন সংশোধনীর বিষয়গুলো নিয়ে আরো জানতে হবে। তাই এ নিয়ে এখনি কোনো মন্তব্য করছি না। আইনজীবীর বিষয়টিকে কিছু রাজনীতিক যেভাবে ইস্যু বানিয়েছে তাতে অনেকে হয়তো ভেড়া হয়েছে, আমি হইনি। হয়তো কাছ থেকে বিষয়গুলো দেখেছি, জেনেছি বলেই।
হতাশা? হ্যা আমাকেও মাঝে-মধ্যে গ্রাস করে, তবে তাতে ডুবে যাই না। আশার আলো না থাকলে বাঁচবো কি করে?
চেগুয়েভারার মতো স্বপ্ন দেখেই চলি। জানি একদিন তা বাস্তব হবেই।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
সংশোধিত দুর্নীতি দমন কমিশন আইন দেখে আমি চূড়ান্ত রকমের হতাশ।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বলেছেন, 'দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরো কার্যকর ও শক্তিশালী করার জন্যই দুদক আইনের সংশোধনী আনা হয়েছে।' কিন্তু কার্যত আমরা দেখছি (যে কেউ সংশোধনী গুলি একবার পড়লেই বুঝতে পারবেন আসল উদ্দেশ্য) একে অকেজো এবং মেরে ফেলার প্ল্যান করা হয়েছে।
১। দুদক আইনের আগের ধারায় যে খানে তদন্ত কথাটি ছিলো সেখানে সেটি বাদ দিয়ে অনুসন্ধান কথাটি যোগ করা হয়েছে ।
২। দুদক কারো বিরুদ্ধে কোন দুর্নীতির অনুসন্ধান করতে গেলে সে ক্ষেত্রে সরকার বা কোন বিশেষজ্ঞকে রাখার বিধান রাখা হয়েছে।
৩। দুদকের মামলায় কেউ জামিন চাইলে তাকে জামিন দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
৪। সংশোধিত দুদক আইনে তাদের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করার সুযোগ দেয়া হয়েছে।
৫। গ্রেফতারের ক্ষমতা সহ দুদকের কিছু ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে ।
৬। বর্তমান আইনে সরকারের যে কোন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের যে কোন সময়ে যে কোন অপরাধের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন ডেকে নিতে পারে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারে। দুদকের সেই ধারাটিও বাতিল করা হয়েছে।
৭। দুর্নীতি দমন কমিশন স্বাধীন এবং একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়ার কারণে কমিশনের দায়ের করা কোন মামলা বাতিলের এখতিয়ার সরকারের ছিল না। কিন্তু এখন সরকার চাইলেই যেকোন মামলা বাতিল করে দিতে পারে।
মোটকথা সরকার দুদককে শক্তিশালী করার কথা বললেও আসলে এটিকে আরো দুর্বল করা হয়েছে। সংশোধিত আইনে দুদককে সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হলো।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
হা...হা...হা......... কামরুল। এটা রাজনীতিকদের কাছে আমাদের পরম আকাঙ্খিত নয়? নিজেদের লুটপাট-দুর্নীতি রক্ষা করতে নখদন্তহীন দুদকই তাদের দরকার।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
কামরুল : প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, দুদক আইনের সংশোধনী প্রস্তাবগুলো ইতিবাচক। এসব প্রস্তাব দুদকের কাছ থেকেই এসেছে। প্রথম আলোর প্রতিবেদন পড়লে তাই মনে হয়। এখানে লিংক দিলাম।
মন্ত্রিসভার সংশোধনী নিয়ে পত্রিকা-পত্রিকায় প্রতিবেদনে পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। প্রথম আলোর যে প্রতিবেদক প্রতিবেদনটি করেছেন তিনি আমাকে সন্ধ্যায় জানিয়েছেন, দুদক এসব সংশোধনীতে সন্তুষ্ট। বিষয়টা পুরো প্রকাশ্য হলে তখন এ নিয়ে আলোচনা সঠিক হবে মনে হচ্ছে।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
লাবলু ভাই
আপনার দেয়া লিঙ্কটা পড়লাম। একই সঙ্গে আজ সন্ধ্যা থেকে সবগুলি টিভি চ্যানেলে এই খবরটার আপডেট দেখছিলাম। সেখানেও বিভিন্ন পক্ষের আইনজীবীরা নানান মত দিচ্ছেন। কেউ বলছেন সন্তুষ্ট, কেউ বলছেন দুদকে সরকারের খবরদারি বাড়ানো হয়েছে।
নাগরিক সমাজের লোকজনও ভিন্ন ভিন্ন মত দিচ্ছেন।
আপনার কথা ঠিক। দুদক নিজের বলছে ওরা আপাতত সন্তুষ্ট।
এই নিয়ে আজ রাতের টক শো গুলিতেও নিশ্চয়ই অনেক কথা বার্তা হবে। সেগুলো শোনার অপেক্ষায় আছি।
দুদক নিজে যেহেতু বলছে তারা সন্তুষ্ট , সেহেতু আমার মনে হয় আপাতত সংশোধনী আইনগুলি নিয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত দেখাটাই ভালো।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
হায়রে আমার দেশ। 😕
রাজনীতিবিদ দের হাতে জিম্মি বাংলাদেশ কবে মুক্ত হবে? 😡
সানা ভাই কে :salute:
:salute: :salute:
নির্বাচন পরবর্তী আশাপ্রদ কিছু এখনো হয়নি, সে ধারা এখনো বজায় আছে । থ্যাংকু সরকার, থ্যাংকু রাজনীতিবিদেরা, ভালই দিয়ে যাচ্ছেন ।
জমজমাট একটা ডিবেট দেখার আশা করছি। রায়হান ভাইয়াও নিশ্চয় যুক্তির ঝুলি নিয়ে আসবেন।
এবার জমবে খেলা সিসিবিতে। :thumbup: :thumbup:
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
পোষ্টটাকে ষ্টিকি করা দরকার, কারন ধোয়াশা এই ব্যাপারটা পরিস্কার হওয়া দরকার আমাদের কাছে। দূর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ গড়া আমাদের অঙ্গীকার হোক। হোক আরও আলোচনা, যাতে আমরা বুঝতে পারি আমরা দূদকের কোন ভূমিকাকে সমর্থন করব।
নিজের বিবেকের কাছে পরিস্কার থাকতে চাই।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ধন্যবাদ ফয়েজ পোস্ট স্টিকি করার প্রস্তাবের কারণে, একইসঙ্গে তোমার মন্তব্যের জন্য।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
এই পোষ্টে সানা ভাইয়ের অবস্থানটা পুরোপুরি স্পষ্ট হয়েছে। আমারো অবস্থানও এরকমই।
পোষ্টটা কি ষ্টিকি করা যায়?
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
সংশোধিত দুর্নীতি দমন কমিশন আইন দেখে আমিও চূড়ান্ত রকমের হতাশ। এখন মনে হয় বিশ্লেষণ করা দরকার এমন হলো কেনো...
দুদক মোটামুটি ভাবে দেশের দূর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও ক্ষেত্রগুলো সফল ভাবে চিহ্নিত করতে পেরেছে। এই বিষয়টাই দুদক থেকে আমাদের প্রাপ্তি। চারপাশে যারা আছেন তাঁদের অনেকেই বক্তব্যের সাথে একমত।
আমি বিগত ২ বছরে কিছুটা লেখাপড়া, কিছুটা কথাবার্তা আর কিছুটা আশেপাশে তাকিয়ে দেখে দুইটি সৎ পেশা আবিষ্কার করেছি, যেহেতু দুদক এই দুই পেশার কারো বিরুদ্ধে মামলা করেনি।
১. প্রতিরক্ষা বাহিনী (ব্রিগ. হান্নান শাহ পেশাজীবী হিসেবে যে অভিযুক্ত হননি সেটা মনে হয় আমরা বুঝি)
২. সাংবাদিক (জনকন্ঠ পত্রিকার মালিক/সম্পাদক ও পেশাজীবী হিসেবে অভিযুক্ত হননি)
আমার শুধু একটা কথাঃ একচক্ষু ভালো উদ্যোগ কিন্তু সফল হয়না।
আমি ছোটবেলা থেকে 'নিয়ত' (উদ্দেশ্য) ব্যপারটাকে খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখতে শিখেছি। কিছু একটা করতে গেলেই শুনতে হতো "আগে নিয়ত ঠিক করে আসো"।
কেনো জানি আমার মনে হচ্ছে একটা প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান নেতৃত্বের অভাবে (চৌকষপূর্ণ নেতৃত্ব প্রয়োজন ছিলো) নষ্ট হয়ে গেলো। ব্যক্তিগত সততা ও আন্তরিকতা যথেষ্ট না, এই কাজে আরো কিছু দক্ষতা দরকার।
সানা ভাই, আপনার লেখা আমি খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ি। এই নিয়ে ৩য় বার বসলাম লিখতে, আগের ২বার বিদ্যুৎ বাবাজী মাঝপথে বাগড়া দিয়ে চলে গেলো। আপনার একটা honest opinion দিন প্লিজ, দুদকের উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম কি সম্পূরক ছিলো?
বনের রাজাকে ধরা হয়েছিল এ তো খুব ভাল কথা কিন্তু কাস্টমস বা পুলিশ ক্যাডারের সমধিক অসৎ লোকগুলোর গায়ে কিন্তু সে মাপের আঁচড় লাগেনি।
মজার তথ্য-বন ক্যাডার ওই দুটি ক্যাডারের মত দেশের দৈনন্দিন জীবন অচল করতে সক্ষম নয়।
প্লিজ কেউ ভাববেন না যে বনরাজ ধরা পড়ায় আমি "ভাতিজাসুলভ" কষ্ট পেয়েছি।তবে দুদকের এ অসংগতি তাদের উদ্যেগকে কালিমালিপ্ত করে বৈকি।
বনের রাজাকে কি দুদক ধরেছিল? আমার কেন যেন মনে হচ্ছে না। আসলেই ভুলে গেছি... 🙁
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
আকাশ ভাই,বনের রাজাকে দুদক ধরুক বা না ধরুক সেটা মূল প্রশ্ন নয়।আমার হয়ত ভুল হয়েছে।কিন্তু ভয়াবহভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত অনেক খাতেই যে দুদক কিছুই করেনি এটা মনে হয় অতি বড় সমর্থকও মানবেন।
বিঃদ্র-সানা ভাই,দুদক সাফল্য লাভ করুক এটা আপনার মত আমারো কাম্য,আমি শুধু সাদা চোখে যা দেখেছি তুলে ধরলাম।ভুল হলে ঠিক করে দেবেন প্লিজ।
ঠগ বাছতে গা উজাড় হয়ে যাবার ভয়েই হয়তো 🙁
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
🙁 🙁 তা যা বলেচেন দাদা।তবে সত্যি বলযি(উচ্চারণ্টা ঐরকম কইরাই করে)-বড় চোরকে রেখে ছোট চোরকে ধরার কাহিনী কিন্তু আচে মাইরি 😛
একটা তথ্য দিয়ে যাই কোন এক পরিসংখ্যানে (খুব সম্ভবত ট্রান্সপারেন্সি-র ২০০০ সালে) দেখা গিয়েছিল বাংলাদেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ প্রতিষ্ঠান হলো পুলিশ, তারপরে কাস্টমস। এদের কেউ ধরা খায়নি দেখে অবাক হলাম। (আমার বাপেও বাংলাদেশ কাস্টমসে... 🙁 )
জনগনের সেবক পুলিশ ভাইদের মধ্য থেকে ৩ জনকে দুদকের লিস্টে দেখা যাচ্ছে, এগুলো মনে হয় স্যাম্পল।
১. সেবক বড় ভাইঃ Shahidullah Khan, Ex AIG of Police
২. সেবক মেঝো ভাইঃ Md. Mozibul Huq, Ex Police Super
৩. সেবক ছোটো ভাইঃ Golum Azam, ex-Police Constable
১ ও ২ নং সেবক ভাইয়েরা ভাবী সহ লিস্টে নাম লেখাইতে পারসেন।
কাস্টমস এর কাউরে দেখলামনা... চিন্তার বিষয় 😕
রেশাদ ভাই, আপনার সাথে প্রথম কথা হচ্ছে। ব্লগে স্বাগতম।
বাপের মুখ থেকে শোনা একটা গল্প শেয়ার করি। আব্বা কাজ করেন তখন পুরান ঢাকায়। বাজারে তখন চিনির দাম অগ্নিমূল্য, ইন্ডিয়ার চিনি দিয়ে চলছে কোনরকম। এ রকম সময় ৫ ট্রাক চিনি ধরা পড়লো যেগুলা ঢাকায় আসতেছিল। চোরাচালানির চিনি। আব্বা ছিলেন রেইডের লিড অফিসার। ট্রাকগুলা নিয়ে গুদামে গিয়ে পেপার ওয়ার্ক তৈরী করছেন মামলা করার জন্য, এমন সময় বসের ফোন। তৎকালীন অর্থমন্ত্রী স্বয়ং চিনির মালিক। সুতরাং ট্রাকগুলোকে ছেড়ে দিতে হলো।
🙁 🙁 আমার বাপ ফরেস্টে ছিলেন,আর আমার "ইয়ে"র মা কাস্টমসে 🙁 🙁
তৌফিক ভাই,সম্পর্কে তাইলে আপনে আমার "বেয়াই" হন মনে হয় 😛
জামাই হওয়ার এতো শখ???? 😡
:(( এইখানে জামাই আইলো কই থিকা :((
সানা ভাই পিটাইব ধইরা, ব্লগের আলোচনা বাদ দিয়া বিতলামি শুরু করছস?
রেশাদ : আমি যতদূর জানি দুদকের দায়িত্ব নেওয়ার পর হাসান মশহুদ যে কৌশল নিয়ে এগোতে চেয়েছিলেন তা তেমনটা পারেননি্। তিনি শ শ মামলা করার পক্ষে ছিলেন না। প্রথম পর্যায়ে অল্প কিছু বড় দুর্নীতিবাজ ধরে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার পক্ষে ছিলেন তিনি। কিন্তু টাস্কফোর্স ও প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার তৎকালীন কর্তারা বিশেষ বিশেষ মহলকে বাদ দিয়ে অনেকটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে অনেক কাজ করেন। যার দায় দুদককে নিতে হয়।
এ কারণে হয়তো সামরিক বাহিনীসহ আরো কিছু পেশার লোকজন তাদের তালিকার বাইরে থেকে যায়। সংবাদপত্র মালিকদের ঘুম হারাম করে দিয়েছিল টাস্কফোর্স ও গোয়েন্দা সংস্থা। কোনো মালিক সম্ভবত বাদ ছিল না। সাংবাদিকরা প্রথম দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সমর্থন দিলেও এ কারণে শেষ পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে চলে যায়। এমনকি সাংবাদিকদের বড় অংশই দুর্নীতিবাজদের পক্ষে প্রকাশ্য অবস্থান নেন।
কেউ বলতে পারো, তাহলে হাসান মশহুদ দায়িত্ব নিলেন কেন? হয়তো স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি পারবেন। তিনি দায়িত্ব না নিলে ময়লা পরিস্কার করার দায় কাউকে না কাউকে তো নিতেই হতো। ড. ইউনূসের মতো তিনি বলেননি, "অন্যের ময়লা পরিস্কার করার দায়িত্ব আমি নেব কেন?"
জানো তো, ড. ইউনূসকেই ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব প্রথম দেওয়া হয়েছিল। তিনি জবাবে ওই কথা বলেছিলেন। তিনি রাজি না হওয়ায় ড. ফখরুদ্দিনকে ওই প্রস্তাব দেওয়া হলে তিনি রাজি হন। শর্ত ছিল ২০০৮-এর ৩১ ডিসেম্বরের পর কিছুতেই যাওয়া যাবে না। সেরকম চেষ্টা হলে তিনি পদত্যাগ করবেন। ড. ফখরুদ্দিন নিজের মতো করে অনেক কিছুই করতে পারেননি। তবে প্রথম শর্তটা তিনি রক্ষা করেছেন।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
Sl: 23.
Name: Munshi Anwarul Islam, Ex Chief Conservator of Forest
Offence: Misuse of power
Conviction: 31.1.08 • 3 Years Conviction (Rigorous Imprisonment)
http://www.acc.org.bd/verdicts.php
ওয়েবসাইট থেকে বন খাদকের তথ্য পাওয়া গেলো। একটা ব্যাপার, দুদক কাউকে ধরেনা, ধরার কথা না, এটা পুলিশের কাজ। তবে বনখাদকের বিরুদ্ধে মামলার কাজটা দুদকের করা বলে মনে হলো ওয়েব থেকে।
ওই লিস্ট থেকে ১১২ জন দুর্নীতিবাজ ব্যক্তির নাম ধাম পাওয়া যায়, কেউ কি তাদের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে আলোকপাত করবেন???
আমার মনে হয় এই বনের রাজার কথাই বলা হচ্ছিলো, ভুলে আমি আরেকজন বন খাদকের তথ্য দিয়েছি।
Sl: 66.
Name: Mohammad Osman Goni, Ex Chief Conservator
Forest
Offence: Amassing wealth beyond known source of income
through corrupt practices amounting to Tk 1.16 Crore
Conviction: 5.06.08 • 12 Years Conviction (Rigorous Imprisonment) • Fined Tk . 10.00 Lac
Name: Mrs.Goni (Wife of Mohammad Osman Goni)
Offence: Abetting corrupt practices of the spouse
Conviction: • 3 Years Conviction (Rigorous Imprisonment)
• Fined Tk . 1 Lac • Forfeited Tk.4.6 Crore & 270 Gram Gold
আমি অতশত বুঝি না। দেশে দুর্নীতি থামানোর জন্য কাউকে না কাউকে উদ্যোগ নিতে হতো, দুদক সেটা নিয়েছিল। দুদকের ছোট খাট ভুল আমি এ কারণে ধরবো না, বড় ধরনের ভুল হলে অন্য কথা। পোস্টটা পড়েছিলাম অনেক আগেই, সবার মন্তব্যও ফলো করছিলাম। পড়ার সময়ই একটা কথা মাথায় ঘুরছিল, এখন বলে ফেলি।
১৩ কোটি টাকা- এই টাকা দিয়ে অনেক কিছু করা যেত, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের কষ্টার্জিত এই টাকা খরচ করা হয়েছে দুর্নীতি দমনে। আমার তাতে কোন আপত্তি নাই। কিন্তু কাজটা যে অর্ধেক করে থামিয়ে দেয়া হল, তাতে দুর্নীতি দমন হলো কি? মাঝখান থেকে দুর্নীতিবাজদের কালো টাকা যেটা জনগণের থেকে তারা মেরে খেয়েছে এবং সরকারের টাকা যেটা জনগণের কাছ থেকে ট্যাক্স হিসাবে নিয়েছে- সব গেলো আইনজীবিদের পকেটে। কৃষক, রিক্সাওয়ালাদের পাতের ভাত কয় দানা কমলো তাতে, হিসাব করার প্রয়োজন বোধ হয় নাই। মাঝখান থেকে দুর্নীতিবাজরা একটা আশ্বাস পেয়ে গেল, এই পোড়ার দেশে সাধারণ মানুষের ... যতই মারা হোক না কেন, তাদের কেউ ফুলের টোকাটাও দেবে না। বাংলার মানুষও সেইরকম, যারা মারলো, তাদের মার্কার উপরেই ভোটটা মেরে দিয়ে আসল। হায়রে গণতন্ত্র!!!
একটা চরিত্রগত সমাস্যা হয়ে গেছে আমাদের সবকিছুতেই আমরা দুর্নীতির গন্ধ পাই। আমরা সবকিছুকেই মিথ্যা বলা শিখে গেছি, তাই আর সত্যকে খুজে পাইনা। দুর্নীতিমুক্ত সমাজ কোথাও নেই, দুর্নীতি পিছনের কারন গুলো দেখতে হবে। ইতি বাচক দুর্নীতি বলতে এজতা বস্তু আছে। আর সেতা কিন্তু আমরা মনি রত্নমের গুরু ছিনেমায় দেখতে পাই। অনেকে হয়ত বলবেন ওটা ত ভাই ছিনেমা। বাস্তব নয়। কিন্তু চিনেমাটি কিন্তু বাস্তব ব্যাক্তিকে কেন্দ্র করে নির্মিত হয়েছে। আর বর্তমান শেয়ার এ্যান্ড ডিবেঞ্চার এর যুগে কূনো দুর্নীতি শূধুমাটড়ো একজন কে লাভবান বা খতিগ্রস্থ করেনা। এর সাথে অসংখ্য লোক জরিত। আর যখন কুনো দুর্নীতিতে কম লক খতিগ্রস্থ হয় বেশী লক লাভবান হই তাকে আমরা ইতিবাচক দুর্নীতি positive corruption বলতে পারি।
তা তুই আমাদের দেশের কিছু পজিটিভ দূর্নীতির উধাহরন দিয়ে দিস, তুলনা করে দেখতে হবে যে সেই দূর্নীতির কারনে কম লোকের ক্ষতি আর বেশি লোকের লাভ হয়েছে... খুব সহজে খুজে পাবি বলে মনে হয় না...
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
সবধরনের ব্যাবসায়ীর দুর্নীতি হল ইতিবাচক দুর্নীতি
😮 😮 😮 এইটা কি শুনাইলি...
ব্যবসায়িদের দূর্নীতির কারনে অল্প লোক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে আর বেশি লোক লাভবান হচ্ছে? তুই নিশ্চিত?
আমার তো মনে হয় ব্যবসায়িদের দূর্নীতির কারনে জনসাধারন আরো বেশি প্রতক্ষ্য ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
না, তুই কি জানিশ বসুন্ধরা গ্রুপ ১ লাখ লোকের কর্ম সংস্থান করে। ১ লাখ লোক মানে শুধু ১ লাখ লোক নয় ১ লাখ পরিবার। ১ লাখ পরিবার মানে ৬ লাখ লোক। তাছারাও এর ফলে বাইরের টাকার তারল্য অনেক কমে গেছে। এ রকম মাল্টি লেভেল ব্যাবসায়ী না থাকলে আমাদের অর্থনীতি আরও বৈদেশিক সাহায্য নির্ভর রাষ্ট্রে পরিণত হত। অথবা বিদেশী বিনিয়োগ এর জন্য হা করে চাতক পাখির মত করে বসে থাকতে হত।
মাসুদ : সব দুর্নীতিরই কিছু সুফল আছে! সীমান্ত চোরাচালানে আরো বেশি লোক জড়িত! আমরা সীমান্ত খুলে দিলে তো মনে হয় কোটি লোকের কর্মসংস্থান হবে। অবৈধ বা কালো টাকা বাজারে যায়, অর্থনীতি সচল থাকে। তাহলে ওরা কি দোষ করলো?
বসুন্ধরার কর্মসংস্থানের তথ্যটা বড় বেশি করে দেখানো। তবে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য এটা কোনো যুক্তি নয়। আজ সময় নেই হাতে। কাল আমার বক্তব্য দেবো।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
চল আমরা বসুন্ধরা গ্রুপকে আমরা একটা ফ্রি চিট দিয়ে দেই দূর্নীতির, আর একটা পুরষ্কারও দিয়ে দেই।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
শুদু বসুন্ধরা কেন এস আলম গ্রুপ, পি এইচ ,.........।।যাই হোক ইনশাআল্লাহ ১ সপ্তাহ পর এই দিনে এই দুর্নীতি নিয়েই লিখব। সামান্য মন্তব্য এ কিছু হবে না। প্রশ্ন আর বেরে যাচ্ছে।
মাসুদ : তোমার লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
আর হা আমার বলার আগে দেখি মাস্রুফ বলে দিয়েছে।
:))
পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিলো কোনো বিদেশী বাংলায় লিখছে... ভাইয়া তোমার বানান ঠিক করো...
positive corruption সম্ভবত নতুন ধারণা, কোথাও এ বিষয়ে scholarly article পেলামনা।
তবে আমার ধারণাঃ এটা একটা oxymoron
ভাইয়া corruption এর "ভাল" দিক নিয়ে development economics এর ক্লাসে আমাদের স্যার পড়িয়েছিলেন ২ বছর আগে।এটা পুঁজিবাদী একটা ধারণা যেখানে দক্ষতা বৃদ্ধির উপায় হিসেবে দেখা হয়।তখন খুব অবাক লেগেছিল বলে মনে পড়ছে।
-এইসব লেকচার শোনার সময় আমার মনে হইছিল আমার গাঞ্জা-খাওয়া নিয়ে রিসার্স করার জন্য হুদাই আমি গাঁওগেরামের মাজারে মাজারে ঘুরতে গেছিলাম :grr: :grr:
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
🙁 ভাইয়া,পুরোপুরি যুক্তিহীন কিন্তু মনে হয়নি আমার কাছে।"corruption works as the lubricant in the screeching wheel of a corrupt government"-এটা ব্যাখ্যা করার আগে অবশ্য বলেছিলেন"I guess some of you are confused-well,this is a class of economics,not ethics.I think keeping that in mind will help"
অ ট-আপনেকে ডাউট দেওয়ার সাহস করিনাই কিন্তু বস :frontroll:
ঠিক। কিন্তু যুক্তি ভালো না মন্দ হিসেবে বিবাচিত হবে তা আবার নির্ভর করে কোন 'সামাজিক প্রেক্ষাপটে' সেটা উপস্থাপন করা হল তার উপর।-
যাই হোক, মনে হচ্ছে 'development' নিয়ে কিছু একাডেমিক লেখা দিতে হবে। পড়ছি এখন সেটাই 🙂 । চার সপ্তাহ পরে লিখা শুরু করমু, আরো ৭/৮টা বই বাকি আছে :(( :((
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
বানান টা আমার একটু সমস্যা আছে। তা না হলে আমার সকল রেজাল্ট আমার আরো ভাল হত। যাই হোক আমি বলার আগে মাসরুফ বলে দিয়েছে। আপনি মনে হয় পজিটিভ ডিসক্রিমিনেশন এর নাম শুনেছেন এটা ল তে আছে। ঠিক এমন করে এটাও গঠন করা হয়েছে। আর আজকের আমাদের সময় পত্রিকায় এই পসিটিভ করাপশন এর কথা বলেছে যদিও তারা সরাসরি পসিটিভ করাপশন কে টার্ম হিসাবে ব্যাবহার করেনি।
এই দেশে বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা নিয়েও আমার যথেষ্ঠ সন্দেহ আছে।এখানে বিচারকরাই সরাসরি দূর্নীতির সাথে জড়িত থাকে।
বিচার বিভাগ আলাদাকরনের নামে এখন বিচারকরা সরাসরি ঘুষ খেতে পারেন।এমনকি আইনজীবি কোনটা বিএনপির,আর কোনটা লীগের সেটাও কোর্ট এলাকায় ট্যাগ করা।কারো নামে অস্ত্র মামলা হলে কোর্টের দিনে খেলনা পিস্তল এনে কোর্টে দেখানো হয়,এমন নজিরও আছে।এইসব খবর আমার বাবা প্রত্যক্ষ করেছেন,কারন তিনি আইন বিভাগে(DU) চাকরি করেন,আর তাঁর বিভাগের সুবোধ(!) ছাত্ররাই উকিল হয়ে অনেক সময় এই কাজগুলো করে থাকে।
একদিকে ৬০টা অফিসার হত্যার মামলা ঝুলে থাকে,অন্যদিকে দুদক সংশোধন করা হয়,তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিলুপ্তির ব্যবস্থা নেয়া হয়,বেগম জিয়ার বাড়ি বরাদ্দ বাতিলের রায় ঝুলিয়ে রাখা হয়।এটাই প্রমাণ করে এই দেশে সৎ,যোগ্য লোকের মুল্যায়ন নেই।যতদিন না এই দেশের নেতাদের :gulli2: :gulli2: করে মারা না হবে,এই দেশ ততদিন পর্যন্ত দুর্নীতিমুক্ত হবে না।
দুর্নীতিবাজদের বিচারের নামে নাতক করেও খুব একটা লাভ হবে না,তারা আইনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে আসবেই।তাই :gulli2: :gulli2: ছাড়া তাদের কোন বিকল্প শাস্তি নেই।দেশকে যারা সম্পুর্নরূপে ধ্বংস করে দিচ্ছে,তাদের জন্য এটাই প্রাপ্য।
প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই সানাউল্লাহ ভাইকে গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় আলোচনার সুযোগ করে দেয়ার জন্য। এই মুহুর্তে ভীষণ ব্যস্ততার কারণে সানা ভাইয়ের এই পোস্টের আলোচনায় এখনই অংশগ্রহণ করতে পারছি না বলে দুঃখ প্রকাশ করছি। সানা ভাইয়ের এই আলোচনাটা গভীর মনযোগ দাবী করে তাই সংক্ষেপে 'কিছু একটা' লিখে দেয়ার লোভ আপাতত সংবরণ করছি। সময় বের করেই যত শিগগির সম্ভব এই আলোচনায় অংশগ্রহণের আশা রাখি। মুক্তাঙ্গনে ছাপানো আমার মূল মন্তব্য- যেটির পরিপ্রেক্ষিতে সানাউল্লাহ ভাইয়ের এই পোস্ট, সেটির একটি কপি তুলে দিচ্ছি আপাতত। এটি তাদের জন্য যারা এখনো পড়েননি সেটা; অনুরোধ থাকবে পড়ে দেখার। আর যারা পড়েছেন, তারাও আরেকবার একটু চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন, তাহলে ভবিষ্যত আলোচনার জন্য জরুরী কিছু সাধারণ বিষয়ের সাথে আমাদের যোগাযোগটা আরেকটু নিবিড় হয়। আপাতত শুধু একটি কথাই বলে শেষ করছি: কোথাও যেন আমাদের কমিউনিকেশনে একটা ফাঁক তৈরী হয়েছে, ব্যার্থতা হয়তো আমারই। আশা করছি শিগগিরই সেটার সমাধান করা যাবে। আমার মূল মন্তব্যটি নিচে তুলে দেয়া হল। সানা ভাইকে আবারও ধন্যবাদ।
----------------
১.
সাম্প্রতিক কালে দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক প্রধান জেনারেল হাসান মশহুদ চৌধুরীকে সংসদীয় কমিটির সামনে তলব করা নিয়ে বেশ বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। দুদক প্রধান দাবী করছেন একটি স্বাধীন কমিশনের প্রধান হিসেবে তাঁকে সংসদীয় কমিটির তলব পাঠানোর কোন এখতিয়ার নেই। অন্য দিকে সংসদীয় কমিটি দুদক প্রধানের এই আচরণকে সংসদের অবমাননা বলে অভিহিত করছে। দুদক প্রধানের অবস্থান অকুন্ঠ সমর্থন লাভ করছে সুশীল সমাজের একটি অন্যতম অংশের। কাকতালীয়ভাবে এটি ঠিক সেই অংশ যাঁরা গত দু'বছরের অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিভিন্ন ধরণের কর্মকান্ডকে (যেমন: মাইনাস টু, কিংস পার্টি গঠন, due process এবং rule of law এর অবমাননা, তদন্তকারী কর্তৃপক্ষের হেফাজতে নির্যাতন ইত্যাদি) প্রত্যক্ষ এবং মৌন সমর্থন দিয়ে এসেছিল। আবার, দুদক প্রধানের অবস্থানকে যারা সমালোচনা করছেন তাদের অন্যতম হচ্ছে রাজনৈতিক মহলের সেই অংশটি যাঁরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিভিন্ন দুর্নীতিবিরোধী কর্মকান্ডের কারণে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বা নাজেহাল হয়েছিলেন, ন্যায্য কিংবা অন্যায্য যেভাবেই হয়ে থাকুন না কেন। তাই স্বাভাবিকভাবেই সংসদীয় কমিটির এই তলবকে অনেকে প্রতিহিংসাপ্রসূত পদক্ষেপ বলে মনে করছেন। অন্যদিকে দুদক প্রধান এবং তার সমর্থনকারীদের একাংশ সংসদীয় কমিটির তলব এড়াতে শুরু থেকেই আইনের বিভিন্ন ধারা উদ্ধৃত করে আসছেন। আমরা যারা সাধারণ জনগণ, তারা স্বাভাবিকভাবেই এসব দেখে বিভ্রান্ত। এ বিষয়ে তাই কিছু বিচ্ছিন্ন ভাবনা তুলে ধরছি নিচে। [সংসদীয় কমিটি বিষয়ে বেশ কিছু দিন আগের একটি পোস্টে ("সরকারের জবাবদিহিতা নিয়ে কিছু ভাবনা (২): সংসদীয় কমিটি") কিছু আলোচনা করা হয়েছিল, সেটিও পড়ে নেয়া যেতে পারে এই প্রসঙ্গে]।
২.
দুদক প্রধান বনাম সংসদীয় কমিটির এই পুরো বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে যেটি উদ্বেগজনক মনে হয়েছে আমার কাছে তা হল দুই পক্ষই (এবং তাদের সমর্থকগণ) আইনের ধারা নিয়ে এক ধরণের ইঁদুর বেড়াল খেলে চলেছেন। এই সব নন্দী-ভৃঙ্গি লড়াইয়ে মূল যে বিষয়গুলো ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে সেগুলো হল: জবাবদিহিতার প্রয়োজনীয়তা, জবাবদিহিতার সংস্কৃতি এবং জনগণের জানবার অধিকার। দুদক এর মত এতখানি জনগুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠেছে, সত্য হোক মিথ্যা হোক, সেগুলো অত্যন্ত গুরুতর। এ ধরণের প্রশ্ন যখন উঠে তখন তার জবাব তো কাউকে না কাউকে দিতেই হবে। কাউকে না কাউকে তো দায়িত্ব নিতেই হবে এবং জনগণকে সঠিক উত্তর দিয়ে সন্তুষ্ট করতে হবে। যে কারণে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যখন কোন রেল দুর্ঘটনা ঘটে তখন আমরা আশা করি যোগাযোগ মন্ত্রী পদত্যাগ করে তার দায়িত্ব স্বীকার করবেন। সেখানে দুর্ঘটনার জন্য মন্ত্রী আদৌ দায়ী ছিলেন কিনা কিংবা ঠিক কতটা দায়ী ছিলেন, সে সব সুক্ষাতিসুক্ষ আইনগত প্রশ্ন অবান্তর। প্রজাতন্ত্রের কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হতে হলে দায় স্বীকারের এই সব সাধারণ মানদন্ডের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হবে প্রশ্নের সম্মূখীন হয়ে উত্তর প্রদানের মাধ্যমে, খুঁটিনাটি আইনের ধারার পেছনে লুকোনোর চেষ্টা করে নয়। দুদক এর মত এমন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারের কাছ থেকে গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতা সংস্কৃতির প্রতি এই সাধারণ শ্রদ্ধাবোধটুকু আমরা আশা করি। যদি ধরেও নিই, সংসদীয় কমিটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাকে হয়রানী করার চেষ্টা করছে আজ, তবুও আমরা আশা করি তিনি সৎসাহসের সাথে সে সব মোকাবিলা করবেন; এবং জনগণের কাছে তাঁর ভূমিকা স্পষ্ট করবেন। এটি এখন আর তাঁর "ব্যক্তিগত" বিষয়ের মধ্যে পড়েনা; এটি এখন একটি পুরো প্রতিষ্ঠানের integrity এবং গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই দুদক প্রধানের উচিত হবে না সেখান থেকে হাত গুটিয়ে নেয়া। কারণ, শেষ বিচারে তাঁর দায় কোন আদালত, কমিটি, প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠীর কাছে নয়; তাঁর দায় দেশের আপামর জনগণের কাছে। এখানে তিনি জর্জ গ্যালাওয়ের দৃষ্টান্ত থেকেও শিক্ষা নিতে পারেন চাইলে। মার্কিন সিনেট কমিটি যখন বৃটিশ সাংসদ গ্যালাওয়েকে তলব পাঠিয়েছিল (বানোয়াট বলে কথিত) বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরে, গ্যালাওয়ে কিন্তু সেই কমিটির মুখোমুখিই হয়েছিলেন কোন ভনিতা না করে। তিনি কোন ধরণের আইনের ধারার পেছনে লুকোনোর চেষ্টা করেননি। এখানে উল্লেখ্য, একজন বৃটিশ নাগরিক হিসেবে গ্যালাওয়ের কিন্তু মার্কিন সিনেটের মুখোমুখি হবার কোন আইনগত বাধ্যবাধকতা ছিল না, তবুও তিনি মুখোমুখি হয়েছিলেন। সেটি করে এক দিক থেকে তিনি যেমন নিজের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো খন্ডন করে অবস্থান স্পষ্ট করেছিলেন জনগণের সামনে, অন্য দিকে অভিযোগকারী মার্কিন সিনেট কমিটির অযোগ্যতা এবং অসদুদ্দেশ্যও উম্মোচন করেছিলেন বিশ্বের সামনে। নীচের ভিডিওটি দেখুন:
[উপরের ভিডিও ক্লিপটি কাজ না করলে এখানে অথবা এখানে দেখুন। মার্কিন সিনেট শুনানীর ট্রান্সক্রিপ্ট পড়তে হলে এখানে অথবা এখানে দেখুন]।
৩.
দুদকের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলছেন সবাই। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর যে ধারাগুলো বারবার উদ্ধৃত হচ্ছে, এবার সেগুলোর দিকে নজর ফেরানো যাক একে একে। আইনটির ধারা-২৪ এ সাধারণভাবে বলা রয়েছে:
পত্র পত্রিকায় সুশীল সমাজের কুশীলবদের লেখা পড়ে মনে হচ্ছে কোথাও যেন আমাদের বোঝার কিছু ভুল রয়ে যাচ্ছে এই ধারাটির মর্মার্থ অনুধাবনে। দুদক-কে যে Freedom/Independence দেয়া হয়েছে আইন দ্বারা, তাকে কোনো বিচারেই absolute বলা যায় না; 'যা ইচ্ছে তাই করবার" স্বাধীনতা এটা নয়। আর, Absolute independence বলে আসলেই কি কিছু আছে? উল্টো, এই ধারাটির ভেতরেই দুদকের স্বাধীনতার বিপরীতে অন্তত দু'টো সীমারেখা টেনে দেয়া হয়েছে। ব্যাখ্যা করছি:
প্রথমত: বলা হয়েছে, দুদক কমিশনাররা শুধু তাদের ততটুকু কর্মকান্ডের জন্যই স্বাধীনতা ভোগ করবেন, যতটুকু তাদের দায়িত্ব ("discharging their duties under this Act") পালনের সাথে সরাসরি জড়িত। আজকে দুদকের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠেছে, তাতে এই ইঙ্গিত স্পষ্ট যে - দুর্নীতি দমন ছাড়াও অন্যান্য উদ্দেশ্য জড়িত ছিল দুদকের কর্মকান্ডের পেছনে। এই সব "অন্যান্য উদ্দেশ্য"কে কি আইন সংক্রান্ত দায়িত্বপালন বলা যায় নাকি বলা উচিত? তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুদক এর কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে নানা ধরণের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পরায়নতার অভিযোগ উঠেছে, এবং সে সব নিয়ে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা বিভিন্ন ব্লগে লেখাও হয়েছে গত দু'বছর। বিবেকবান মানুষদের মধ্যে এমন কে আছেন যিনি এই সব অভিযোগকে উড়িয়ে দিতে পারেন? আর যে মুহুর্তে দুদকের পদক্ষেপের পেছনে আইন সংক্রান্ত দায়িত্বপালন ছাড়াও 'অন্য' উদ্দেশ্য মূর্ত হয়, আমার বিবেচনায় সে মুহুর্তেই দুদক কর্মকর্তারা তাদের আইনলব্ধ স্বাধীনতা হারান; কারণ কোন বিচারেই এটি অনাদি অনন্ত absolute স্বাধীনতা নয়। এটি দুদক এর legitimacy'রও প্রশ্ন।
দ্বিতীয়ত: যে মুহুর্তে আইন দ্বারা নির্দিষ্টকৃত "subject to its terms" এর বাইরে গিয়ে দুদক কর্মকর্তারা কাজ করবেন, সে মুহুর্তেই তারা আসলে আইন ভঙ্গ করেন। যে আইনটি ভঙ্গ করা হয় সেই একই আইনের সুরক্ষা কি আইন-ভঙ্গকারী দাবী করতে পারে? আমার তো মনে হয়না। এখানে দ্রষ্টব্য: দুদকের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আমি এখনো "অভিযোগ" শব্দটি ব্যবহার করছি। প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত সব অভিযোগই কেবল অভিযোগ। কিন্তু সেটি প্রমাণিত কিংবা তদন্তকৃত হবে কোন্ প্রক্রিয়ায়? নাকি কোনকালেই এই সব অভিযোগের তদন্ত হবার দরকার নেই? নিচে ধারা-১০(৩) এর আলোচনায় সে সীমাবদ্ধতার কথা বিস্তারিত বিধৃত হয়েছে। সেই আলোকে এখন কেউ কি দয়া করে জানাতে পারেন কোন্ প্রক্রিয়ায় দুদকের বিরুদ্ধে সে সব অভিযোগগুলো জনগণ খতিয়ে দেখবে? সুশীল কুশীলবরা অনেক কিছুই বলছেন, কিন্তু এই বিষয়ে কেন যেন তারা কিছুই বলছেন না স্পষ্ট করে।
৪.
দুদক কমিশনারদের অপসারণ সংক্রান্ত (দুদক আইন ২০০৪ এর) যে বিশেষ ধারাটি সবাই উদ্ধৃত করছেন কমিশনারদের স্বাধীনতার বিষয়টিকে বোঝাতে গিয়ে, সেটি হল ধারা ১০(৩)। সেখানে বলা হয়েছে:
অর্থাৎ, দুদক আইনের ধারা ১০(৩) অনুযায়ী দুদক কমিশনারদের অপসারণের জন্য সে ধরণের পদ্ধতিই অনুসরণ করতে হবে, যা সুপ্রীম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ক্ষেত্রে অনুসৃত হয়ে থাকে। এই বিধানটি অত্যন্ত বিভ্রান্তিকর। এডিবি'র টেকনিক্যাল এসিসট্যান্স টীম এই বিধানটির বিষয়ে শুরু থেকেই তাদের সংশয় এবং দ্বিমত প্রকাশ করে আসছিল [সূত্র: ADB TA – BAN 37017]। তাঁরা মত দিয়েছিল - এই ধারাটির ফলে জবাবদিহিত/অপসারণমূলক পদক্ষেপ বাস্তবায়নে আরও বেশী সমস্যার সৃষ্টি হবে (যার প্রমাণ বর্তমানের এত সব বিতর্ক)। এডিবি'র কারিগরি সহায়তা টীমের বক্তব্য থেকে সরাসরি উদ্ধৃত করছি:
এডিবি'র কারিগরি সহায়তা টীম দুদক সৃষ্টিকারী আইনটির বিষয়ে আরও সুপারিশ করেছিল:
এডিবি'র মতামতের সাথে আমি একমত পোষণ করি। যাঁরাই দুদক প্রধানের অপসারণের পদ্ধতিকে সুপ্রীম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের সাথে তুলনা করতে আগ্রহী, মনে হয় না তাঁরা বিষয়টা যথেষ্ট গভীরভাবে বিবেচনা করছেন। কারণ, ত্রুটিপূর্ণ আইন দ্বারা সৃষ্ট পদ্ধতিগত জটিলতার কারণে ধারা ১০(৩) এর বিধানটি বাস্তবায়ন বা প্রয়োগের সহজ কোন উপায় আমার অন্তত চোখে পড়ছে না। তার মানে কি দুদক কমিশনারগণ সব ধরণের জবাবদিহিতা থেকে মুক্ত থাকবেন? এটা কোন্ ধরণের বিধান বা তার ব্যাখ্যা? দুদক কি আইনের উর্দ্ধে? কিংবা দুদক সৃষ্টিকারী আইন কি দেশে জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের উদ্দেশ্যের চেয়েও বেশী অগ্রাধিকার পাওয়ার দাবী রাখে? আমার মনে হয় না।
৫.
দুদকের স্বাধীনতার আরেকটি অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ হল আর্থিক স্বাধীনতা। দুদক আইনের ধারা-২৫ এ বলা হয়েছে:
এটা ঠিক যে দুদকের ব্যয় সংক্রান্ত বিষয়ে কোন পূর্ব অনুমোদন লাভের দরকার নেই। কিন্তু কোন বিচারেই এটিও কিন্তু কোন absolute freedom না। এই স্বাধীনতাটুকু দেয়া হয়েছে কেবল দুদক এর কর্মকান্ডকে সহজতর করার লক্ষ্যেই। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে এটি দুদকের পক্ষে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় করার লাগামহীন লাইসেন্স। সে ধরণের লাইসেন্স দুদক প্রধান কেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির কোন পদধারীরই নেই বলে জানি, যদি আমার জানায় কোন ভুল না থাকে। জনগণের অর্থ অপচয়ের অভিযোগ যদি কারও বিরুদ্ধে ওঠে, সেখানে আইনের কোন ধারাই তাকে জবাবদিহিতার দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেয় না। কারণ, দুদক কর্মকর্তাদের জন্য এটি এক দিক থেকে যেমন বড় মাপের স্বাধীনতা, আরেক দিক থেকে গুরুতর দায়ভারও বটে; এই দু'টো চলে হাত ধরাধরি করে, সেটা মনে হয় আমরা সকলেই জানি ও মানি। আর এটা তো বলাই বাহুল্য যে গত দু'বছরে দুদকের কার্যক্রম নিয়ে ইতোমধ্যে অনেক অভিযোগই উঠেছে। যেমন: দক্ষতার অভাব, তদন্ত প্রক্রিয়ায় due process এর অভাব, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দুদকের ক্ষমতার অপব্যবহার, তদন্ত হেফাজতে নির্যাতন, মামলাগুলোতে অত্যন্ত সাধারণ/মৌলিক পর্যায়ের ত্রুটিবিচ্যুতি ইত্যাদি। এই সব ত্রুটি বিচ্যুতি ইচ্ছাকৃত না অনিচ্ছাকৃত ছিল, তা বিধাতাই জানেন। এর প্রত্যক্ষ ফলাফল আমরা দেখেছি দুর্নীতি দমন মামলাগুলোর বেহাল অবস্থার মধ্য দিয়ে, এমনকি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় থেকেই। এখন ১৩ কোটি টাকা যদি দুদক এর আইনজীবিদের পেছনে অযথা অপচয় করার অভিযোগ উঠে থাকে, আমরা জনগণ তো স্বাভাবিকভাবেই দুদকের মামলাঘটিত কর্মকান্ডের বিস্তারিত "রিপোর্ট কার্ড" দেখতে চাইতেই পারি। যদি জনগণ জানতে চায় এত টাকা ব্যয় করার পরও দুদকের কর্মকান্ড কেন ও কিভাবে অশ্বডিম্ব প্রসব করলো, তাহলে সেটা কি খুব অন্যায্য জিজ্ঞাসা হবে? আমি বিশ্বাস করি না দুদক প্রধানকে আইন সেই সব প্রশ্নের উত্তর প্রদান থেকে দায়মুক্তি দিয়েছে।
৬.
দুদকের আর্থিক স্বাধীনতার বিপরীতে আরেকটি বিষয়ও দুদক আইনে স্পষ্টভাবে বলা রয়েছে। দুদক আইন ২০০৪ এর ধারা-২৫(২) এ কম্পট্রোলার এবং অডিটর জেনারেলকে দুদকের ব্যায় সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন এবং হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা দেয়া আছে। বলা আছে:
আবার অন্য দিকে সংসদের Standing Committee on Public Accounts কে (পক্ষান্তরে জাতীয় সংসদকে) ক্ষমতা দেয়া রয়েছে উপরোক্ত কম্পট্রোলার এবং অডিটর জেনারেল কর্তৃক পেশকৃত যাবতীয় হিসাব প্রতিবেদনকে নিরীক্ষন করার যতক্ষণ পর্যন্ত না সংসদীয় কমিটি সে সব বিষয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হয় [অনুচ্ছেদ-২৩৩; সংসদীয় কার্যবিধি]। অনুচ্ছেদটিতে বলা হয়েছে:
সুতরাং, এই দু'টো আইনের বিধান পর্যালোচনার পর, যুক্তির সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী এটি স্পষ্ট যে সংসদীয় কমিটির অধিকার রয়েছে দুদকের ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তোলার, এবং (কার্যবিধির অনুচ্ছেদ-২৩৩ অনুযায়ী) এটি কমিটির আইন প্রদত্ত দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। আর্থিক জবাবদিহিতা বিষয়ে সমীকরণটি এরকম:
তবে এখানে উল্লেখ্য, ব্যক্তিগতভাবে আমি হয়তো কিছুটা স্বস্তি অনুভব করতাম যদি দুদক প্রধানকে পাঠানো তলবটি Public Undertaking Committee'র পরিবর্তে Public Accounts Committee'র পক্ষ থেকে পাঠানো হত। তাতে মনে হয় না বিতর্কের আর কোন অবকাশ থাকতো।
৭.
সুজন কর্ণধার বদিউল আলম মজুমদার সংসদীয় কমিটির ভূমিকাকে একীভূত "জজ, প্রসিকিউটর ও জুরির" ভূমিকা হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করে সমালোচনা করেছেন (এ বি এম মূসাকে উদ্ধৃত করে)। এখানে বদিউল মজুমদারের ধারণাগত বিভ্রান্তিটি চোখে পড়ার মত। সংসদীয় কমিটি কোন বিচারিক প্রতিষ্ঠান না। দেশে দেশে এই জাতীয় কমিটিগুলো মূলতঃ প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে জনসমক্ষে মুক্ত তদন্তের কাজটি সম্পন্ন করে থাকে, যার উদ্দেশ্যই থাকে: সত্য উদঘাটন এবং জনগণকে অবহিতকরণ। এ ধরণের কমিটির রায় দেয়া (judgement অর্থে) কিংবা শাস্তি দেয়ার মত কোন Executive ক্ষমতা নেই, কেবলমাত্র উপদেশ কিংবা সুপারিশ পেশ করা ছাড়া। সুতরাং, ন্যাচারাল জাস্টিস এর ধারণা থেকে উদ্ভুত "জাজ জুরি প্রসিকিউটর" তুলনাটির প্রয়োগ এখানে প্রাসঙ্গিক বলে আমি মনে করি না। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই বিতর্কে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মলয় ভৌমিকের অবস্থানটা আমার কাছে অনেক বেশী যুক্তিগ্রাহ্য মনে হয়েছে, সেটিও পড়ে নেয়া যেতে পারে এখান থেকে।
৮.
সাবেক দুদক প্রধানের স্বাধীনতাজাত সুরক্ষার কথাটি বারবার বলা হচ্ছে। পদে আসীন থাকা অবস্থায় সেটির কিছু যৌক্তিকতা থাকলেও থাকতে পারতো। কিন্তু পদত্যাগ করার পর দেশের আর দশজন সাধারণ নাগরিকের একজন হিসেবে সেই সুরক্ষা তাঁর রয়েছে কিনা সেটি অত্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ। এই বিষয়ে কয়েকদিন আগে অন্য একটি আভ্যন্তরীন প্লাটফর্মের ইমেইল গ্রুপে আমার দেয়া একটি মন্তব্য উদ্ধৃত করছি (সময়াভাবে অনুবাদ করা গেলনা বলে অগ্রীম ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি):
ধন্যবাদ।
রায়হান ভাই,
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এই আলোচনায় একটা ভিন্ন মাত্রা যোগ করার জন্য। কারণ আমার মনে হয়েছে যে, ব্যক্তিগতভাবে আমরা সবাই দূর্নীতির বিনাশ চাইলেও 'ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান-আইন' এর বিষয়ে আমাদের চিন্তাভাবনাগুলোয় প্যাচ লেগে যাচ্ছে আমাদের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের কারণে। আপনার উত্থাপিত পয়েন্টগুলো আশা করছি এই প্যাচ খুলতে সহায়ক হবে।
আফসোস, আমার কাছে দূদক সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য নাই; পত্রিকায় যা পাই, তাও প্রায় সবই ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ দ্বারা প্রভাবিত, যা প্রায়শঃই কন্ট্রাডিকটোরি (কপিরাইটঃসুজন কর্ণধার বদিউল আলম মজুমদার)।
- দেখি, সিসিবি'র আলোচনা থেকে কি পাওয়া যায়।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
রায়হানের বক্তব্য : একজন বৃটিশ নাগরিক হিসেবে গ্যালাওয়ের কিন্তু মার্কিন সিনেটের মুখোমুখি হবার কোন আইনগত বাধ্যবাধকতা ছিল না, তবুও তিনি মুখোমুখি হয়েছিলেন। সেটি করে এক দিক থেকে তিনি যেমন নিজের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো খন্ডন করে অবস্থান স্পষ্ট করেছিলেন জনগণের সামনে, অন্য দিকে অভিযোগকারী মার্কিন সিনেট কমিটির অযোগ্যতা এবং অসদুদ্দেশ্যও উম্মোচন করেছিলেন বিশ্বের সামনে।
আমার বক্তব্য : জর্জ গ্যালাওয়ে একজন রাজনীতিক। তিনি এর মধ্য দিয়ে নিজের রাজনীতিকে বিশ্বের সামনে আনার সুযোগ নিয়েছিলেন। দুদক কোনো রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান নয়। এর নির্বাহীরা জনপ্রতিনিধি নন। জনমতের দিকে তাকিয়ে বা জনতুষ্টির জন্য তারা কাজ করেন না। দুদক প্রধান সংসদীয় কমিটিতে রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছেন বা সংসদীয় কমিটির স্বরূপ উম্মোচনে যুদ্ধে নেমেছেন; এটা কল্পনা করতেই বিষ্মিত হচ্ছি! এতোটা নিচে এই প্রতিষ্ঠানকে নামানো বোধ হয় ঠিক হবে না।
রায়হানের বক্তব্য : এডিবি’র মতামতের সাথে আমি একমত পোষণ করি।
আমার বক্তব্য : আমি দ্বিমত পোষণ করি। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের ক্ষমতা যথেষ্ট স্পষ্ট। একে সক্রিয় করা হলেই কাজ হবে। এক্ষেত্রে এডিবির যুক্তি বরং আমার কাছে অস্বচ্ছ। এডিবি যে সিলেকশন কমিটির কথা বলছে তাকে নিয়োগ দেবে সরকার। তাহলে তো পুরো বিষয়টা সরকারের পছন্দ-অপছন্দের উপর চলে যাবে। সেটা কি যথার্থ হবে?
রায়হানের বক্তব্য : এটা ঠিক যে দুদকের ব্যয় সংক্রান্ত বিষয়ে কোন পূর্ব অনুমোদন লাভের দরকার নেই। কিন্তু কোন বিচারেই এটিও কিন্তু কোন absolute freedom না। এই স্বাধীনতাটুকু দেয়া হয়েছে কেবল দুদক এর কর্মকান্ডকে সহজতর করার লক্ষ্যেই। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে এটি দুদকের পক্ষে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় করার লাগামহীন লাইসেন্স। সে ধরণের লাইসেন্স দুদক প্রধান কেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির কোন পদধারীরই নেই বলে জানি, যদি আমার জানায় কোন ভুল না থাকে। জনগণের অর্থ অপচয়ের অভিযোগ যদি কারও বিরুদ্ধে ওঠে, সেখানে আইনের কোন ধারাই তাকে জবাবদিহিতার দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেয় না।
আমার বক্তব্য : কে বললো এটা লাগামহীন ব্যয়ের লাইসেন্স? অপচয় বা দুর্নীতির প্রশ্ন ওঠলে মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক আছে কি জন্য? ওই দপ্তর অডিট আপত্তি জানালে সেটা কতদূর যায় তা সম্ভবত তোমার জানা নেই। এটাকে কেন তোমার জবাবদিহিতা মনে হয় না, আমি জানি না। তোমার বক্তব্য পেলে বুঝতে পারবো। নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশনের আর্থিক জবাবদিহিতা তো এই দপ্তরই নিশ্চিত করে। তাহলে দুদকের বেলায় আপত্তি কেন?
রায়হানের বক্তব্য : আর্থিক জবাবদিহিতা বিষয়ে সমীকরণটি এরকম: সংসদীয় কমিটি > কম্পট্রোলার/অডিটর জেনারেল > দুদক
আমার বক্তব্য : মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের প্রতিবেদন সংসদীয় কমিটি দেখতে বা পরীক্ষা করতে পারে বলে দুদককে তোমার সংসদীয় কমিটির অধীন মনে হলো? সংবিধানের ১২৮ (৪) অনুচ্ছেদ কি বলে? সংবিধান বলছে : এই অনুচ্ছেদের (১) দফার অধীন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে মহা হিসাব-নিরীক্ষককে অন্য কোন ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষের পরিচালনা বা নিয়ন্ত্রণের অধীন করা হইবে না। আর (১) অনুচ্ছেদ বলছে : মহা হিসাব-নিরীক্ষক প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাব এবং সকল আদালত, সরকারি কর্তৃপক্ষ ও কর্মচারির সরকারি হিসাব নিরীক্ষা করিবেন ও অনুরূপ হিসাব সম্পর্কে রিপোর্ট দান করিবেন এবং সেই উদ্দেশ্যে তিনি কিম্বা সেই প্রয়োজনে তাঁহার দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত যে কোন ব্যক্তির দখলভুক্ত সকল নথি, বহি, রসিদ, দলিল, নগদ অর্থ, ষ্ট্যাম্প, জামিন, ভান্ডার বা অন্য প্রকার সরকারি সম্পত্তি পরীক্ষার অধিকারী হইবেন। অর্থাৎ মহা হিসাব-নিরীক্ষক নিজেও সংসদীয় কমিটির অধীন কোনো সংস্থা নন। কারণ সংসদ বা সংসদীয কমিটির হিসাবও মহা হিসাব-নিরীক্ষক দেখতে পারেন। এখানেই সংবিধান বা আইনে সংসদ বা কমিটিকেও মহা হিসাব-নিরীক্ষকের পরীক্ষা থেকে দায়মুক্তি দেয়নি।
আর সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটির এ বিষয়ে ক্ষমতা কি? কার্যপ্রণালী বিধির ২৩৮ (খ) বিধি বলছে : সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ সম্পর্কে মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কোন রিপোর্ট থাকিলে তাহা পরীক্ষা করা।
এ ব্যাপারে আমার কথা প্রথমত, দুদক কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়। আর দ্বিতীয়ত, যদি ধরেও নিই দুদক সরকারি প্রতিষ্ঠান তাহলেও সংসদীয় কমিটি শুধুই মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের প্রতিবেদন পরীক্ষা করতে পারবে- এর বেশি নয় কিছুতেই।
রায়হানের বক্তব্য : সাবেক দুদক প্রধানের স্বাধীনতাজাত সুরক্ষার কথাটি বারবার বলা হচ্ছে। পদে আসীন থাকা অবস্থায় সেটির কিছু যৌক্তিকতা থাকলেও থাকতে পারতো। কিন্তু পদত্যাগ করার পর দেশের আর দশজন সাধারণ নাগরিকের একজন হিসেবে সেই সুরক্ষা তাঁর রয়েছে কিনা সেটি অত্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ।
আমার বক্তব্য : দুদক প্রধানকে কি কারণে কমিটিতে তলব করা হচ্ছে? দুদক প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালনের জন্য? নাকি সাধারণ নাগরিক হিসাবে তার কোনো কাজের জন্য? রায়হান তোমাকে এখানে অযৌক্তিক মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে কোনো কারণে ব্যক্তি হিসাবে হাসান মশহুদের প্রতি কোনো ক্ষোভ তোমার আছে। একজন রাষ্ট্রপতি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, বিচারপতি যে কারণে অবসর বা পদত্যাগের পর সাধারণ নাগরিক হয়েও তার দায়িত্ব পালনকালের কাজের জন্য আইনী সুরক্ষা পান; একই কারণে দুদক প্রধান বা কমিশনাররা সেই সুরক্ষা পাবেন। নইলে কোনো আত্মমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি এই দায়িত্ব নিতে আগ্রহী হবেন না। এখানে ব্যক্তি প্রধান নয়, প্রতিষ্ঠানটা গুরুত্বপূর্ণ। বিচারপতি সুলতান হোসেন খানকে কোনো সংসদীয় কমিটি কি কখনো ডেকেছে? তিনি তো দুর্নীতি দমনে কিছুই করেননি মাসে মাসে বেতন নেওয়া ছাড়া।
এসব কারণেই মলয় ভৌমিকের লেখা বা যুক্তি আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি।
আপাততঃ এই থাক। তোমার বক্তব্য পেলে আমার যুক্তিগুলো তুলে ধরতে আরো সুবিধা হবে। সময়-সুযোগ করে জানিও।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
ভাবছি পেশা হিসাবে ওকালতি মনে হয় খারাপ না। দূদক বলি বা দূর্নীতিবাজ, সবাই তার কাছেই হাজিরা দেয়। তার তারা প্যাটে তালি দিয়া পয়সা কামায়।
এই এক ব্যারিষ্টার রফিক, তিনি তারেকের মামলা করেন, খালেদা জিয়ার মামলা করেন, শেখ হাসিনার উকিলও তিনি, এমনকি শুনেছি এরশাদ চাচ্চুও নাকি তার মক্কেল। এত পয়সা ওলা মক্কেল পাইয়াও খায়েশ মিটে নাই, এক টক-শো নাকি সাক্ষাৎকারে দূদকের মামলা সাজানোর দূর্বলতা কথা বলতে গিয়ে বলেছিলেন, "আমাকে দিয়ে দেখুক না, কিভাবে ঝুলাতে হয় দেখিয়ে দিব"।
বক্তব্য মনে হয় সরে গেল মূল পোষ্ট থেকে। কিন্তুক উকিল না হইতে পাইরা একটু খারাপি লাগে ঈদানীং 😀
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
আমিতো সাংবাদিক না হইলে উকিল হইতাম!! পেশা দুইটার কামাই-রোজগার পুরা উল্টা। একটাতে কিচ্ছু নাই, আরেকটায় লারেলাপ্পা!!
ব্যারিস্টার রফিক একটা আপাদমস্তক দুনম্বর উকিল। সব দুনম্বরী লোকের আইনজীবী তিনি। মামলা নিষ্পত্তি নয়, ঝুলিয়ে রাখাটা তাঁর কাজ। উনার পেশাগত অসাধুতা নিয়ে প্রথম আলোর প্রথম দিকে এক প্রতিবেদন করেছিলাম। মানহানির মামলা করেছিল আমার বিরুদ্ধে, এখনও ঝুলে আছে। তবে পরে তিনি ওই মামলা নিয়ে আর আগাননি।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
এনারে দুই নম্বর বললে রেটিং ঠিক হবেনা ভাইয়া, তের চৌদ্দ নাম্বার হইতে পারে। বারোর আগে তো আসেই না।
আপনার নামে মামলা আছে জাইন্না খুব খুশি খুশি লাগতেছে। আমার নামেও একটা মামলা আছে। কে করছে কমু না, ভাবমুর্তির সংকটে পইড়া যামু। 😀
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
কৌতুহল জাগাইয়া দিলা। কেডা? আগের কোনো :just: ফ্রেন্ড না তো? কিম্বা :just: ফ্রেন্ডের বাবা!! :dreamy: :dreamy: :dreamy:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
😀 😀
না ভাইয়া কর্পোরেট মামলা। কোম্পানীর সংগে আরও কয়েকজন, তার মধ্যে আমিও আছি
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
যাক, নিশ্চিন্ত হইলাম!! 😀
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
ব্যারিস্টার রফিক সাহেব লোকটার নীতি, মূল্যবোধ বলতে কিছু আছে বলে আমার অন্তঃত মনে হয় না।
এদেশের স্বীকৃত সব বড় বড় দুর্নীতিবাজদের আইনজীবী উনি। অপরাধীদের আইনের ফাঁক দিয়ে বের করে আনায় তার মতো সিদ্ধহস্ত আর কেউ নেই। গত দুই বছরে উনার উপার্জনকৃত অর্থের হিসেব নেয়া দরকার আছে বলেও মনে করি।
টিভিতে তাকে দেখলেই আমার ঘৃনায় বমি চলে আসে।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
এখন মানব সেবায়ও নাম লিখিয়েছেন।
ব্যক্তিগত পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি আর্থিক অনুদানের মাধ্যমে এখন উনি আহসানিয়া ক্যান্সার হাসপাতাল গভার্নিং বডির চেয়ারম্যান
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
ফয়েজ ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করছে *খী সা*য়ান্ত 😀
ওই ব্যারিষ্টার ব্যাটার আবার মান আছে নাকি???
দুদক সম্পর্কে বেশী কিছু জানি না। আর এ বিষয়ক খবরগুলো নিয়মিত ফলোও করা হয়নি। এজন্যই বস্তুনিষ্ঠ মন্তব্য করতে পারলাম না। তবে আমি অবশ্যই চাই দেশে দুর্নীতি কমে আসুক। রাজনীতিবিদদের সদিচ্ছা না থাকায়ই দুদকের প্রয়োজন পড়ছে। দুদক স্বাধীন থাকুক, দেশের দুর্নীতি দমনে ভাল ভূমিকা রাখুক এটাই চাই।
লাবলু ভাই, আপনার লেখাটা খুব ভাল লেগেছে। মন্তব্যগুলো থেকেও অনেক কিছু জানলাম। দুদকে আনা পরিবর্তনগুলোও এখন পর্যন্ত নেতিবাচক মনে হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ নিয়ে আরও ব্লগ পড়ার আশা রইল।
দুদক নিয়ে লাবলু ভাইয়ের লেখাটির পরিমার্জিত ভার্সান আজ প্রথম আলোতে এসেছে
দুর্নীতি দমন কমিশনের সৎসাহস দেখতে চাই
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
ধন্যবাদ কাইয়ুম, প্রকাশিত লেখাটি লিংক করে দেয়ার জন্য। লেখালেখির অভ্যাসে আমার ফিরে আসার পুরো কৃতিত্ব সিসিবি ও এর সব সদস্যের। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
আজকে আপনার লেখা প্রথম আলোতে দেখে লাফাইতে লাফাইতে বাড়ির সবাইকে দেখায়া পার্ট নিছি যে ইনি আমাদের চেয়ে বয়েসে অনেক বড় ভাই-আপনার ইন্টারভিঊ সেইদিন টিভিতে দেখাইতেছিল,রবিন ভাইয়ের কাছ থিকা জাইনা আমার পিচ্ছি বোন শুদ্ধা একসাথে দেখছি :shy: :shy:
😀 😀 😀 (কপিরাইট : কামরুল)
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
লাবলু ভাই
জামাই কিন্তু আপনার রেলের চাক্কায় তেল দিতেছে। পিছলাইয়া যাইয়েন না ;;;
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
x-( x-( x-(
আমারে তেল দিয়া লাভ কি? আমার তো অতো ছোট বিবাহযোগ্য শালী নাই, মেয়েও নাই!! আর বাকি থাকে খাওয়া-দাওয়া! ওরে তো পরবর্তী সিসিবি গেট টুগেদার থেকে ব্যান করা হয়েছে। অন্যরা অভিযোগ করতাছে ওর লাইগ্যা নাকি কেউ খাওন পায় না!! B-)
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
সানা ভাই,আপনার শালিকার ও দরকার নাই(ওইটা কামরুল ভাইয়ের ডিপার্টমেন্ট,আজকেও উনি কইতেছিল যে উনার আব্বা কইছে-"কই রিটায়ার করার পর সবাই নাতি নাতনির মুখ দেখে তোর তো বিয়া শাদির কুনু লক্ষণ নাই) আর মেয়েরও দরকার নাই(ছি!ভাতিজির দিকে কুনজর দিবো ক্যান...নাউজুবিল্লাহ)-বাকি থাকে খাওয়া, আর সেইটাই সবচেয়ে ইম্পর্ট্যান্ট-পিলিজ লাগে সেইটা থিকা আমারে বঞ্চিত কইরেন নাআআআআআআআ......ওইদিন খাওয়া শর্ট পড়ছে মূলত সায়েদ ভাইয়ের জন্য(বস মযালাদিন আসে না তাই উনার নামে চালায় দিলে কেউ কিছু কইব না)...আইস্ক্রিম তো উনি একাই সাবাড় করছেন...
বয়েজ এন্ড গার্লস,দেখছেন সানা ভাই কি মহৎ, আমারে নেক্সট গেটটুগেদারে এক্সত্রা খাওয়ানর জন্য আপনেদের চাঁদা দিতে কইছে...(মানে এইটা একটা সাজেশন হইতে পারে আরকি...) 😀
আর ইয়ে,সানা ভাইরে রেলের চাক্কায় তেল দিতে কিন্তু আজকেই আমার আর কামরুল ভাইয়ের সাথে দেখা হইছে এমন একজন এই ব্লগেই আছেন...নাম বইলা ফাঁসিতে ঝুলতে চাই না... :frontroll:
সহমত,
অভিযোগের সত্যতার তদন্ত কমিটির প্রধান আমি হইতে চাই।উনার ক্ষেত্রেও আমি চাই......