লেখকঃ অধ্যাপক গোলাম জিলানী নজরে মোরশেদ
সূত্রঃ ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে পাক বাহিনীর হামলার বিবরণ; ‘বাংলাদেশে গণহত্যা’, বাংলার বাণী – বিশেষ সংখ্যা; ১৯৭২
স্বাধীনতাউত্তর বাংলাদেশের আর পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের মত ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজেও কাজ চলছে পূর্ণোদ্যমে, ছাত্রদের পদভারে কলেজ আজ সরগরম। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যা বর্বর পাক বাহিনী তাচ্ছিল্যভরে নষ্ট করে দিয়েছিল, তা এক এক করে জোগাড় করা হচ্ছে। কলেজের শ্রী বৃদ্ধির জন্য নিরলস চেষ্টা চলছে। সবই একদিন হয়ত হবে। আর সব অভাবই হয়ত একদিন পূরণ হবে। কিন্তু পূরণ হবে না কয়েকটি নিবেদিত প্রাণের অভাব, এরা ফিরে আসবেন না। এরা হচ্ছেন অধ্যাপক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনজুরুর রহমান, অধ্যাপক হালিম খান, মালী আবদুস সাত্তার, চৌকিদার গাজী ও চৌকিদার সইজদ্দীন।
এদের মর্মান্তিক মৃত্যুর কাহিনী বলতে গেলে আরও একটু গোড়া থেকে শুরু করতে হয়। ২৫ তারিখের রাতে ঢাকার বুকে ইয়াহিয়ার সৈন্যবাহিনীর হত্যাযজ্ঞের খবর যখন ঝিনাইদহ পৌঁছুল তখন ঝিনাইদহের জনসাধারণের সাথে সাথে ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের সকল শ্রেণীর কর্মচারীরাও দেশের জন্য সংগ্রাম করার বলিষ্ঠ শপথ নিল। সেই সময় বর্তমান প্রবন্ধকার, অধ্যাপক আবদুল হালিম খান (মরহুম) ও অধ্যাপক শফিকুল্লার (বর্তমানে ক্যাপ্টেন) নেতৃত্বে ক্যাডেট কলেজ প্রতিরক্ষা দল গড়ে তোলা হল এবং ঝিনাইদহের সে সময়কার এসডিপি ও জনাব মাহবুবউদ্দীন (বর্তমানে মেজর ও বাংলাদেশ সরকারের সরাষ্ট্র দফতরের ডেপুটি সেক্রিটারি) এর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। (ইনি প্রথমে ঝিনাইদহ প্রতিরক্ষা বাহিনী গড়ে তুলে চুয়াডাঙ্গাস্থ সাবেক ইপিআর এর মেজর আবু ওসমানের নির্দেশ মত কাজ করছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত হন ও পরে মুজিবনগর থেকে মেজর পদে উন্নীত হন।)
এরপর ৩০শে মার্চ গভীর রাতে কুষ্টিয়া থেকে পাক বাহিনীর ২৫ বেলুচ রেজিমেন্টের এক কোম্পানি সৈন্য যখন অতি সন্তর্পনে ঝিনাইদহের নিরীহ নিরপরাধ জনসাধারণের উপর তাদের হিংস্র নখরাঘাতের জন্য মারণাস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ধীরে ধীরে এগুচ্ছিল তখন ঝিনাইদহে শুধু ক্যাডেট কলেজের মুষ্টিমেয় সংগ্রামী বীর ছাড়া আর কেউ ছিল না। এরাই রাত দুটোয় তাদের অগ্রগতিকে প্রতিহত করে। এরপর এই হানাদার দলকে বাংলার যে বীর সৈনিকরা নিমূল করে তাদের অধিকাংশই ছিল এ কলেজের কর্মচারী।
এরপর ১লা এপ্রিল যখন যশোহর থেকে আগত সৈন্যরা নতুন করে ঝিনাইদহ দখলের ব্যর্থ চেষ্টা করে তখন তাদেরকে ঝিনাইদহের ছ’মাইল দূরে বিষয়খালিতে যে বাধা দেওয়া ও পর্যদুস্ত করা হয় তাতেও ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের শিক্ষক ও অন্যান্য কর্মচারীদের দান অপরিসীম। শুধু যুদ্ধ করাই নয়, নতুনদের শিক্ষা দেওয়া, সংবাদ সরবরাহ, মুক্তিবাহিনীর রসদ যোগানোর দায়িত্ব নেয় এ কলেজের কর্মচারীরা। ৫ শত মুক্তিযোদ্ধার ভাবার তৈরী করার ভারও নেয় এই কলেজের কর্মচারীরা। অবশ্য সে সব কথার অবতারণা অন্যত্র করা যাবে।
এখন মূল প্রসঙ্গে আসা যাক। এরপর জয়-পরাজয়ের মাঝে চললো কিছুদিন। কখনও মুক্তিবাহিনী যশোহরের দিকে এগিয়ে যায় আবার পিছিয়ে আসে। এদিকে হানাদার বাহিনী প্রতিদিনই বিমানযোগে যশোহরে প্রচুর গোলাবারুদ অস্ত্রশস্ত্র ও নতুন সৈন্য সমাবেশ করে ফেলল। সে সময় মেজর আবু ওসমান সাহেবের নির্দেশে ক্যাপ্টেন মাহবুবউদ্দীন মুক্তিবাহিনীকে close up করে ভারতে চলে গেলেন। ঝিনাইদহ পড়ে রইল অরক্ষিত অবস্থায়। পাক বাহিনী ফাঁকা মাঠ পেয়ে বীরদর্পে ঝিনাইদহে প্রবেশ করলো ১৬ই এপ্রিল।
এ সময় এ মহতি প্রতিষ্ঠান ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের অন্যান্য সবাই প্রাণের মায়ায় কলেজ ত্যাগ করে চলে গেলেও কয়েকটি প্রাণী কলেজ ত্যাগ করেনি। সম্ভবতঃ এ প্রতিষ্ঠানের মায়ায়। এ প্রতিষ্ঠানের সব কিছুকে অক্ষত রাখার জন্যই তাদের এ ব্যর্থ চেষ্টা। এদেরই একজন চৌকিদার গাজী হলেন হানাদার বাহিনীর হাতে নিহত প্রথম বীর সৈনিক। অধ্যক্ষ কর্নেল রহমান তাকে নিজে সাইকেল দিয়ে পাঠিয়েছিলেন ঝিনাইদহের অবস্থা দেখে আসতে। কর্তব্যনিষ্ঠ এ মহাপ্রাণ লোকটি তার দায়িত্ব পালন করতে যখন জিনাইদহ শহরের দিকে এগুচ্ছিলেন, তখন হানাদার কাহিনীর নির্মম বুলেট এসে তার বক্ষ বিদীর্ণ করে দেয়। তার প্রাণহীন দেহ গড়িয়ে পড়ে ক্যাসেল ব্রিজের তলায়, পরে বর্বর বাহিনী তার পবিত্র দেহ আরও বহু দেশপ্রেমিক বাঙ্গালীর পবিত্র দেহের সাথে রাস্তা তৈরীর কাজে লাগায়। আজও ক্যাসেল ব্রিজের রাস্তা খুঁড়লে অনেক কঙ্কাল পাওয়া যাবে।
এরপর ঐদিন বেলা চারটার দিকে হানাদার বাহিনী কলেজে ঢুকে অধ্যক্ষ কর্নেল রহমান (মরহুম), অধ্যাপক আবদুল হালিম খান (মরহুম), ইলেকট্রিশিয়ান মোহাম্মদ আলী ও অধ্যক্ষের বাবুর্চী আবুল ফজলকে ধরে নিয়ে যায়। আর্মির একজন সিনিয়র অফিসারকে সামান্যতম সম্মানও তারা দেখায়নি। অন্যান্যদের সাথে তাকেও তারা হাত বেঁধে নিয়ে যায়। বিভিন্ন ক্যাম্পে বিভিন্ন লোকের কাছে তারা লাঞ্ছিত হন। এদেরকে এরা নির্মমভাবে প্রহার করে। এরপর প্রহসন স্বরূপ অধ্যক্ষ ও অধ্যাপকের হাতের বাঁধন খুলে দিয়ে পাশের ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়, তদানিন্তন যশোহর গ্যারিসন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার দুররানির কাছে। ব্রিগেডিয়ার তাদের চা পরিবেশন সারেন। মৌখিক ভদ্রতাও দেখালেন ও সর্বোপরি ক্ষমা প্রদর্শন করে তাদের রাত বারটায় কলেজ গেটে পৌঁছে দেওয়ালেন। ক্লান্ত অবসন্ন ক্ষুধার্ত চারটি প্রাণী কলেজে এসে সে রাতের জন্য মসজিদে আশ্রয় নিলেন। পরের দিনটা ভালই কাটল।
এরপর এলো ১৮ই এপ্রিল। কলেজে মাত্র চারটি প্রাণী আছেন- অধ্যক্ষ, অধ্যাপক হালিম খান, বাবুর্চী আবুল ফজল ও হসপিটাল অ্যাটেনডেন্ট শামসুল আলম। চারিদিক জনপ্রাণীহীন, খাঁ খাঁ করছে। একটা থমথমে ভাব। মাঝে মাঝে এ স্তব্ধতা ভেঙ্গে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া সড়কে দ্রুতগামী আর্মির গাড়ির আওয়াজ। একটা অমঙ্গলের ছাপ যেন চারদিকে বিরাজ করছে। সবেমাত্র অধ্যক্ষ কর্নেল রহমান ও অধ্যাপক হালিম খান দুপুড়ের খাবার খেয়ে অধ্যক্ষের বাংলোর উপরের তলায় বিশ্রামের জন্য গেছেন। যাবার সময় হসপিটাল অ্যাটেনডেন্টকে তাদের দুজনার জন্য ঔষধ আনতে বলে গেছেন (আগের দিনের প্রহারের ফলে তাদের দুজনারই নাক-মুখ ফুলে গিয়েছিল ও কানে ব্যথা হয়েছিল)। হসপিটাল অ্যাটেনডেন্ট সবেমাত্র সাইকেলে করে অধ্যক্ষের বাংলোর গেট পার হয়ে কিছু দূর গেছে। এমন সময় পেছনে ১ নম্বর গেট ভেঙ্গে কয়েকটা আর্মি ট্রাক কলেজে ঢুকে পড়ে এবং অধ্যক্ষের বাংলোর দিকে এগিয়ে যায়।
এই দলটি আসছিল কুষ্টিয়া থেকে। এদের অধিনায়ক ছিল ১২ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন ইকবাল। এই নরপিশাচের আদেশে জওয়ানরা অধ্যক্ষকে, অধ্যাপক হালিম খানকে, বাবুর্চী আবুল ফজলকে ঘর থেকে বের করে গেটের নিচে বসায়। হানাদার বাহিনীর সাথে ছিল তাদের চর কয়েকজন বিহারী। এদের মধ্যে সব চাইতে বেশী উদ্যোগী ছিল ঝিনাইদহে টম্যাটো নামে পরিচিত বিহারীটি। এই নরপিশাচ অধ্যাপক হালিম খান ও অধ্যক্ষ কর্নেল রহমানের নামে তার পরিবারবর্গ নিধনের মিথ্যে অপবাদ দেয়। আর এই মিথ্যে অপবাদের উপর ভিত্তি করেই ক্যাপ্টেন ইকবাল তার ও তার অনুচরদের হাতে ছেড়ে দেয় অধ্যাপক হালিম খানের প্রতিশ্রুতিশীল জীবনকে। অধ্যক্ষের বাংলোর পেছন দিকে এরা অসহায় হালিম খানকে নিয়ে বেয়নেট আর তলোয়ারের নির্মম আঘাতের পর আঘাত হানতে থাকে। অধ্যক্ষ এক সময় গর্জ উঠলেন, “Don’t torture him, if you want to kill him, better shoot.” তাদের এই নির্মম আঘাতে এক সময় এই নির্ভীক দেশপ্রেমিকের বিশাল দেহ এই দেশের পবিত্র ভূমিতে লুটিয়ে পড়ে।
তারপর চলে এ হত্যাযজ্ঞের আর এক অধ্যায়। অধ্যক্ষকে ঐ একই অপবাদ দেওয়া হয়। তারপর নরপিশাচ ক্যাপ্টেন ইকবালের সাথে কর্নেলের কথা কাটাকাটি হয়। কর্নেল বললেন, “আমি আর্মি অফিসার, আমাকে এমনি মারা অন্যায়। আমার অপরাধের বিচার একমাত্র সামরিক আদালতই করতে পারে।” প্রশ্ন করলেন, “একজন আর্মি কর্নেল একজন ক্যাপ্টেনের কাছ থেকে সে মর্যাদা পেতে পারে, আমাকে দেওয়া হচ্ছে না কেন?”
কিন্তু এ নরপিশাচদের কাছে সকল যুক্তিই বৃথা গেলো। সিংহ-হৃদয় মহাপুরুষ মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হলেন, হাত থেকে খুলে দিলেন ঘড়ি, পকেট থেকে বের করে দিলেন নিজের ও কলেজের চাবি যা এতোদিন ছিল তার দায়িত্বে। নিজের চোখে দেখলেন একজন সিপাই তারই চোখের সামনে থেকে তারই ঘড়ি তুলে নিয়ে নিজের হাতে পরে ঘড়ি পরা হাতটা কেমন লাগে তাই-ই লোলুপ দৃষ্টিতে নেড়ে-চেড়ে দেখছে। দেখলেন জোয়ানরা উল্লাসের সাথে তার দামী জিনিসপত্র ও কলেজের মূল্যবান জিনিসপত্র ট্রাকে তুলছে। এই মহাপুরুষের কোনর ভাবান্তর হলো না, আত্মপক্ষ সমর্থনের চেষ্টা করলেন না, করলেন না করুণা ভিক্ষা, অমুল্য ধন প্রাণ ভিক্ষাও চাইলেন না। শুধু চাইলেন পাঁচ মিনিটের সময়। তারপর ধীর পদক্ষেপে এগিয়ে গেলেন বাংলোর সামনের লনে। বসলেন গিয়ে গোলাপ গাছের পাশে, কি যেন বিড় বিড় করে পড়লেন, বোঝা গেল না- শুধু ঠোট নড়া দখে বোঝা গেল, তারপর হাত তুলে আল্লার কাছে যেন কি ফরিয়াদ করলেন, মোনাজাত শেষ করে বললেন, “I am ready.” এর পর কয়েক সেকেন্ড নিস্তব্ধতা, নিস্তব্ধতা ভাঙ্গালো গুড়ুম গুড়ুম গুড়ুম তিনটি আওয়াজে। নরপিশাচ মানব জাতির কলঙ্ক ইয়াহিয়ার সৈনিক ইকবালের স্টেনগানের তিনটি গুলি এক এক করে এ পবিত্র দেহে বিদ্ধ হলো। শরীরটা ঢলে পড়ল। আর শোনা গেল একটি মাত্র ক্ষীণ স্বর, “মা আয়েশা, তোকে দেখে যেতে পারলাম না।”
এরপর প্রাণ ভরে লুটে নিল কলেজের দামী দামী জিনিসপত্র, বাধা দেবার কেউ রইল না। তারপর তারা যখন উল্লাস করতে করতে দুই নম্বর গেট দিয়ে বের হচ্ছিল, সে সময় তাদের নজরে পড়লো গেটে কর্তব্যরত মালী সাত্তারের উপর। তাকে তারা ধরে নিয়ে ড্রেনের পাশে দাঁড় করিয়ে পর পর দুটো গুলি করে হত্যা করলো। গুলি দুটো তার দেহ ভেদ করে দেয়ালে বিদ্ধ হল, তার দেহ এলিয়ে পড়লো ড্রেনের মধ্যে। এত করেও ওরা শাস্তি পেল না। আশেপাশের গ্রামে খুঁজতে লাগল কলেজের চাকুরে কে কোথায় আছে। এমনি এক গ্রাম থেকে ধরে নিয়ে আসল হতভাগ্য চৌকিদার সইজদ্দীনকে। তাকে ধরে নিয়ে এসে কলেজের সামনে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া সড়কের পুলের তলায় দাঁড় করিয়ে গুলি করল। তার প্রাণহীন দেহ পুলের তলায় পানিতে পড়ে গেল।
এমনি কত অজানা লোকের রক্তের স্রোতের উপর ভেসে স্বাধীনতার তরী আমাদের কাছে নতুন জীবনের সাওগাত নিয়ে এসেছে। এদের রক্ত বিফল যায়নি। যেতে পারে না। কেননা স্বাধীনতার রক্তকে উন্নত ও সজীব রাখতে সারের প্রয়োজন হয়। আর সে সার হচ্ছে অত্যাচারীর ও অত্যাচারিতের তাজা উষ্ণ লাল রক্ত।
*****
এ বছরের ৮ই জানুয়ারি “একাত্তরের কর্নেল মনজুরুর রহমান” নামে একটি ব্লগ দিয়েছিলাম। সে লেখাটি ছিল আলী মাহমেদের ব্লগ থেকে নেয়া। আলী মাহমেদ তার লেখার সূত্র হিসেবে দিয়েছিলেন “বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ, অষ্টম খন্ড, পৃষ্টা: ৬০৫-৬০৮”। এই লেখাটাও সে সম্পর্কে। তবে এটার সূত্র ভিন্ন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলীলপত্রের একটি তিন খণ্ডের সংকলন আছে। সেখানেই বাংলার বাণীর মূল লেখাটি স্থান পেয়েছে। সেখান থেকেই আমি তুলে দিলাম।
বীর শহীদদের :salute: :salute: ।
Life is Mad.
:salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute:
"আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"
ঝিনাইদাহ ক্যাডেট কলেজের মেজর(অবঃ) কামরুল হাসান ভুইয়ার লেখা বই "জনযুদ্ধের গনযোদ্ধা"। সবাইকে এই বইটি পড়ে দেখার জন্য অনুরোধ করলাম। মুক্তিযুদ্ধ একদম মাঠ পর্যায়ে কেমন ছিল তা এই বইয়ে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া ওনার সম্পাদিত আরও একটা বই আছে "স্বাধীনতা" নামে। বইটির ৩ টি খন্ড আছে।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমার পড়া সেরা বইগুলির একটি। আমারো অনুরোধ যারা পড়েননি বইটি পড়ার জন্য। কামরুল ভাই সরাসরি ২ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন খালেদ মোশারফের নেতৃত্বে। কাছ থেকে দেখেছেন একেবারে সাধারন মানুষের মুক্তিযুদ্ধ ।পড়তে পড়তে আমি নিজে অনেকবার হু হু করে কেঁদেছি।
বইমেলায় কামরুল ভাইয়ের সাথে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক্ষন কথা বলেছি প্রানখুলে। আমাদের প্রজন্ম যারা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নানা ভুল কিছু শুনে আসছি তারা অন্ততপক্ষে তার মতো কয়েকজনের সাথে আড্ডা দিয়ে জানতে পারি মুক্তিযুদ্ধের আসল গল্প।
কামরুল ভাইয়ের অন্য একটি বইও আমি সবাইকে পড়তে বলবো "বিজয়ী হয়ে ফিরবো নইলে ফিরবোই না"
আগ্রহীরা আমার কাছ থেকে বইদুটি নিতে পারেন।
কামরুল ভাই, বই দুইটার ইলেকট্রনিক ভার্সন করা যায় না?
বইগুলা কোথা থাইকা কিনতে পাওয়া যাইব কন তো?
প্রিন্সিপালের কাছ থেকে প্রথমে বইটার কথা শুনেছিলাম। ৪ বছর হয়ে গেল, অথচ বইটা আজও পড়া হয়নি। কামরুল ভাই বইটা রেডি রাইখেন। আমি নেক্সট দিলাম...
অবশ্য পাঠ্য দুটি বই। ইলেকট্রনিক ভার্সন সম্ভবতঃ অনলাইন কোথাও দেখেছিলাম জনযুদ্ধের গনযোদ্ধা বইটার। মনে করতে পারছিনা। খুঁজে দেখতেছি। আরেকটা বই পড়ছিলাম, সম্ভবতঃ গেরিলা থেকে সম্মুখযুদ্ধ লেখকের নাম মনে করতে পারছিনা দেখে লজ্জিত বোধ করছি। সেইরকম একটা বই :boss:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
গেরিলা থেকে সম্মুখযুদ্ধে পড়ে পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। লেখক মাহবুব আলম। পড়ার পর মনে হয়েছিল, এই বই থেকেই বাংলাদেশের "ব্যান্ড অফ ব্রাদার্স" করা সম্ভব।
আমার একটা আউলা ঝাউলা ফ্যান্টাসি আছে। ঢাকার আর্বান গেরিলাদের নিয়া একটা ছবি বানামু। :shy:
আরেকটা ফ্যান্টাসি হইল ক্লাস ফাইভ অথবা সিক্সে থাকতে একটা ব্যাটলের কথা পড়ছিলাম, মুক্তিযোদ্ধারা একটা বনে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ছিল। তাদের ঘেরাও দিয়ে রাখছিল পাকবাহিনী। তিনদিন পরে ক্ষুধা তৃষ্ণায় কাতর মুক্তিযোদ্ধারা সীমিত ফায়ারপাওয়ার দিয়েই সেই অবরোধ গুড়িঁয়ে দিয়েছিলেন। যুদ্ধ শেষে আশেপাশের গাঁয়ের মানুষ নাকি তাদের কাঁধে করে বয়ে নিয়ে গিয়েছিল খাওয়াতে, এতটাই ক্লান্ত আর দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন তারা। এই কাহিনীটা নিয়ে খুব ভালো একটা সিনেমা বানানো যায়।
আমি ভীতু ধরনের মানুষ, জীবনে নিশ্চয়তা দরকার। তাই নিশ্চিত পথগুলোই বেছে নিয়েছি সবসময়। আমার এই ফ্যান্টাসি কখনোই বাস্তবে রুপ নেবে না, আমি জানি।
কামরুল ভাই, যখন সিনেমা বানাবেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সিনেমা বানাবেন। আমরা টিকেট কেটে দেখব। :dreamy: :dreamy: :dreamy:
যারা একাত্তর দেখেনি, একাত্তরে যাদের জন্ম হয়নি বা একাত্তরে যারা ছিল শিশু, তাদের কাছে আমাদের অঙ্গীকার আছে। আমাদের, আমরা যারা একাত্তরকে প্রত্যক্ষ করেছি সরাসরি, অস্ত্র হাতে লড়েছি ঘরের এবং বাইরের শত্রুর বিরুদ্ধে, আমাদের দায়িত্ব তাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের কাহিনী শোনাবার।
একাত্তরের আগস্ট মাস। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী তাদের বাংলাদেশী সহযোগীদের নিয়ে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করছে, লুট করছে সম্পদ, অত্যাচার করছে নিষ্ঠুর ভাবে। শত্রু তাদের এই স্থানীয় দোসরদের নিয়ে গঠন করল রাজাকার বাহিনী। কিছু কিছু প্রাণী আছে যাদের হাত, পা, নাক, মুখ, চোখ, কান, মাথা সবই দেখতে মানুষের মতো; কিন্তু এরা মানুষ নয়, এরা পশু।
এরা এই অত্যাচার, হত্যা, লুটতরাজ করত ইসলাম রক্ষার নামে মিথ্যা কথা বলে। ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং ইসলাম নাজিল হয়েছে মানুষের ওপর পশুদের ওপর নয়।....
.... একাত্তরের সেই পশুরা অনেকেই আজো আমাদের মধ্যে আছে। দেখতে এখনো ওরা ভালো মানুষ। কিন্তু পশু তো পশুই। এদের নির্মূল করার যুদ্ধে আমরা জিততে পারিনি। এ ব্যর্থতা আমাদের। আমাদের সন্তানরা কিন্তু পরাজিত হতে পারবে না। তাদের জিততেই হবে। শুধু বেঁচে থাকার জন্য নয়, এ দেশ, এ পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখার জন্যও। অন্যায় এবং অসত্যের বিরুদ্ধে এ যুদ্ধে হেরে যাবার কোনো অবকাশ নেই। তারা যখন বড় হবে, এই পশুগুলো বেঁচে থাকবে না হয়তো। কিন্তু পরম্পরায় এদের অনুসারী, অনুগামীরা বেঁচে থাকবে। কোনোভাবেই আমাদের সন্তানরা হারতে পারবে না। জিততেই হবে তাদের, কেননা এই যুদ্ধে রানার-আপ নেই, পরাজিত হলে এই পশুরা আমাদের গৌরবময় স্বাধীনতার ইতিহাস কলঙ্কিত করে ফেলবে। যেদিন আমাদের মৃত্যু ঘণ্টা বাজবে, সেদিন আমাদের যেন চোখে পানি নিয়ে চোখ বন্ধ করতে না হয়। আমরা তাকিয়ে আছি সেই অবিমিশ্র দিগন্তের দিকে।
(জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা : মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া; পৃঃ ৫১-৫৩)
আরেকটা বই আমি পড়তে বলবো সবাইকে...... "গেরিলা থেকে সম্মুখ যুদ্ধে" (দুই খণ্ডে লেখা )
-মাহবুব আলম।
বাঙালি যোদ্ধার যুদ্ধের গল্প সবচেয়ে ভালো এবং সৎভাবে শুনিয়েছেন উনি।
কামরুল ভাই, একটা লিস্ট করে ফেলেন না এই বইগুলার। আমাদের মতো নাদানদের বড় উপকার হয়। 🙂
তৌফিক, জেনোসাইড বাংলাদেশ এর আর্কাইভটা চমৎকার। দেখতে পারিস।
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
কাইউম ভাই, অসংখ্য ধন্যবাদ। বুকমার্ক দিয়ে রাখলাম।
আনিসুল হকের এই লেখাটা কেউ পড়ছেন?
বইটির লেখক মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব আলম।
বইটি অসাধারন!
মুহাম্মদ, অনেক ভাল লাগছে তোমাদের এইসব লেখার মাধ্যমে অনেক না জানা কাহিনী জানতে পারছি। লেখাটা পোষ্ট করার জন্য ধন্যবাদ।
সকল শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি :salute:
কর্নেল রহমানের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করার সৌভাগ্য যে কজনের হয়েছে আমি তাদের একজন।কতটা দায়িত্বশীল হলে একজন মানুষ নিশ্চিত মৃত্যুর কথা জেনেও নিজের কলেজ ত্যাগ করতে অস্বীকার করতে পারেন তা আমার মত ক্ষুদ্রপ্রাণের পক্ষে বোঝা অসম্ভব।তখনকার ভিপি প্রিন্সিপান এম এম রহমান স্যারকে কলেজ ছাড়ার কথা বললে তিনি যে উত্তর দিয়েছিলেন সেটি হচ্ছে
এম এম রহমান স্যার শুধু জেসিসির ক্ষুদ্র গণ্ডিতে আবদ্ধ নন-তাঁর আত্মত্যাগ আমাদের বর্তমান ১২ টি ও ভবিষ্যত সবগুলো ক্যাডেট কলেজের জন্যে আদর্শ স্বরূপ।
কর্নেল এম এম রহমান স্যারের আদর্শে উজ্জীবিত হাজার হাজার দেশ-অন্তপ্রাণ ক্যাডেট বেরিয়ে আসুক সব ক্যাডেট কলেজ থেকে-বুক ভরে বিজয়ের নিনে আজ এই প্রত্যাশা করি।
বি দ্রঃ কর্ণেল এম এম রহমান স্যারের এই উক্তি সে সময়ের ভিপি স্যারের কাছ থেকে আমাদের সময়ের ভিপি রফিক নওশাদ স্যার শুনেছিলেন।আমরা ক্লাস এইট বা নাইনে থাকতে জুনিয়র ক্লাস সেভেনের ট্যালেন্ট শো তে একটি নাটিকা ছিল কর্নেল রহমান স্যারকে নিয়ে।সেটার পর্যালোচনা করতে গিয়ে রফিক নওশাদ স্যার এ কথাগুলো বলেছিলেন।একটি দুটি শব্দ এদিক ওদিক হলেও মূল ভাব যে এক সে বিষয়ে আমি নিঃসন্দেহ।
পুনশ্চঃ ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের প্রিন্সিপাল বাংলোর প্রাঙ্গনে কর্নেল এম এম রহমান স্যারের কবর অবস্থিত।কলেজ ছেড়ে যাবার আগের দিন গার্ডেন পার্টিতে সবার সঙ্গে ছাড়াও প্রিন্সিপাল স্যারের সাথে যশোর ক্যান্টনমেন্টে যাবার সময় ব্যক্তিগতভাবে বেশ কয়েকবার আমার এ কবর দেখার সুযোগ হয়েছে।ভাইয়ারা,প্লিজ কেউ এটাকে অন্যভাবে নেবেন না-এই কবরকে ঘিরে আমার ব্যক্তিগত কিছু অনুভূতি আজ সবার সাথে ভাগাভাগি করি।কলেজ প্রিফেক্ট হিসেবে আমি সবসময় চেষ্টা করতাম আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাসম্ভব ঠিকভাবে পালন করতে।আজ বিব্রতভাবে স্বীকার করছি-মাঝে মাঝে যে কিছুটা অহংবোধ কাজ করতনা তা নয়।কিন্তু যখনই আমি এই কবরের পাশে যেতাম(যশোর যাবার জন্য মাইক্রোবাস ছাড়ত প্রিন্সিপালের বাংলো থেকে),আমার সব অহমিকা,ত্রিতারকা খচিত এপুলেট আর ক্রস বেল্টে ঢাকা ক্যাডেটীয় যে অভিজাত্যবোধ-তা যেন কর্পুরের মত কোথায় উধাও হয় যেত।মনে হত আশে পাশেই এক জোড়া কঠোর চোখ আমাকে দেখছে আর জানতে চাইছে-ইয়েস ক্যাডেট,য়ু আর গিভেন দা রেসপনসিবিলিটি টু আপহোল্ড দা প্রেস্টিজ অফ দিস কলেজ-ফর হুইচ আই হ্যাভ স্যাক্রিফাইসড মাই লাইফ।আর য়ু ডুইং ইট প্রোপারলি?
মুখে নুন পড়া জোঁকের মত কোথায় পালাত আমার সেই অহংবোধ!
ভেবেছিলাম এই এতদিন পর সেই বোধটা থাকবেনা।কিন্তু ২০০৭ সালের রিইউনিয়নে স্যারের কবরের পাশ দিয়ে পিচের রাস্তায় পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে সেই কঠোর চোখের অদৃশ্য উপস্থিতি আবারো জীবন্ত হয়ে উঠল আমার অন্তরে।
এই কঠোর চোখের অদৃশ্য উপস্থিতি ছড়িয়ে পড়ুক সকল ক্যাডেটের আত্মায়-আমার অক্ষমতা ঢেকে যাক তাদের উদ্ভাসিত সাফল্যে-বিজয় দিবসে এই আমার প্রাণের বাসনা।
সাবাশ মাসরুফ ভাই। ঝিনাইদহের ছেলেরা তাদের ইতিহাসকে যথাযোগ্য সম্মান করতে পেরেছে। আপনাকে দেখে আমার অন্তত তা-ই মনে হচ্ছে।
পুরনো চারটি ক্যাযেট কলেজেই মুক্তিযুদ্ধের সময় কি ঘটেছিল তা নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা হলে খুব ভাল হয়। সেরকম গবেষণায় এ ধরণের লেখাগুলো খুব কাজে আসবে। আপনি এই লেখায় অনেক নতুন তথ্য যোগ করেছেন, উপলব্ধির কথা লিখেছেন। এটাও একসময় কাজে লাগবে।
এফসিসিতে পাকিস্তানীদের ক্যাম্প ছিলো শুনেছি। নিশ্চিত কিছু জানিনি। [আসলে বলতে হয় জানার চেষ্টা করিনি 🙁 ] কলেজে এটাও প্রচলিত ছিলো যে যুদ্ধ শেষে ভারতীয় বাহিনী আমাদের সফিস্টিকেটেড এবং বেশ উন্নত ল্যাব/ইন্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টগুলোর অনেক মেশিনারিস লুটপাট এবং ধ্বংস করে দিয়ে যায়। তবে এটাও শোনা ঘটনা। সত্যতা যাচাই করিনি কখনো। দায় স্বীকার করছি। তবে তথ্যগুলো জোগাড় এবং যাচাই করে শিঘ্রি কিছু শেয়ার করার চেষ্টা করছি।
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
অপেক্ষায় থাকলাম
চমতকার অনুভূতি মাসরুফ। তোমার কথায় চোখে পানি এসে গেলো।
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
সাজিদ ভাই,
অনেক দিন পর...কেমন আছেন ভাই???অনেক অনেক কথা মনে পড়ে গেল আপনাকে নিয়ে.....
অসাধারণ মুহাম্মদ। নিজেরই খারাপ লাগছে ইতিহাসের এই গৌরবের অধ্যায় সম্পর্কে জানতাম না। পোস্টটা প্রিয়তে রাখলাম। তোমার জন্য টুপি খোলা অভিবাদন :hatsoff:
শহীদ কর্নেল মনজুরুর রহমানকে :salute:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
মুহম্মদ,
ক্যাডেট কলেজের কোন এক ম্যাগাজিনে রফিক নওশাদ স্যারের একটি বড় আকারের প্রবন্ধ ছিল-"মুক্তিযুদ্ধে ক্যাডেট কলেজ"।এটি সে বছর সেরা প্রবন্ধের মর্যাদাও পেয়েছিল।রফিক নওশাদ স্যারের সাথে যোগাযোগ করে প্রবন্ধটি এ ব্লগে ছাপানোর চেষ্টা করব খুব শীঘ্রি।এ মুহূর্তে বিচ্ছিন্ন কিছু তথ্য মনে পড়ছে-
*রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের দ্বিতীয় ইনটেকের কলেজ অধিনায়ক ক্যাডেট মোশাররফ এতই বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেছিলেন যে তাঁকে সেই বয়েসেই একটি প্লাটুন অধিনায়কের মর্যাদা দেয়া হয়েছিল।তাঁর অধীনে নিয়মিত বাহিনীর সৈন্য্রা যুদ্ধ করত।
*ঝিনাইদহের একটি ব্রিজ এ্যামবুশ করতে সেখানকার প্রভাষক জনাব ইমাম(পুরো নাম এবং কোন বিষয় পড়াতেন সেটি মনে নেই)এতই দক্ষতা প্রকাশ করেছিলেন যে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তাঁকে ক্যাপ্টেন পদমর্যাদা দেয়া হয় এবং সেনাবাহিনীতে যোগদানের অনুরোধ করা হয়।
রফিক নওশাদ স্যারের এ প্রবন্ধটি এরকম রুদ্ধশ্বাস অনেক তথ্যে ঠাসা।মানুষ বা প্রশাসক হিসেবে রফিক নওশাদ স্যার যেমনই হোন না কেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে তাঁর চেতনা এবং ক্যাডেটদের মাঝে তা ছড়িয়ে দেবার যে উদ্যেগ-এটি উপেক্ষা করা মানে সত্যের অপলাপ করা।তিনি আসার পর আমাদের লাইব্রেরিতে আলাদা করে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার খোলা হয় এবং বেছে বেছে অনেক দুষ্প্রাপ্য কিছু বই আনা হয়।আর এ কারণে অন্তত এই একটি বিষয়ে আমি তাঁকে অসম্ভব শ্রদ্ধা করি।
যত দ্রুত সম্ভব প্রবন্ধটি জোগাড় করে সিসিবিতে ছাপানোর চেষ্টা করব।
সবাইকে আবারো মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।
ধন্যবাদ মুহাম্মদ.........অনেক অনেক
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
মুহাম্মদ, অসাধারন তোমার একাগ্রতা।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
সম্মান জানাই বীর শহীদের প্রতি :salute:
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আমরা যারা ঝিনাইদহে পড়েছি, আমাদের একটা চর্চা আছে। আমরা প্রতি বছর কর্নেল রহমান স্যারের মৃত্যুবার্ষিকী অত্যন্ত সম্মানের সাথে পালন করে থাকি। এছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে (যেমন রি-ইউনিয়ন ইত্যাদি) আমরা প্রথম দিনেই সমবেত হই স্যারের সমাধিস্থল প্রিন্সিপাল বাংলোতে। অন্তরের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা জানাই আমাদের এই না-দেখা মহান দেশপ্রেমিক, কলেজ-প্রেমিক সর্বকালের সেরা প্রিন্সিপালকে। তাঁর আত্মত্যাগ প্রতিটি মানুষের জন্য আজীবন অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। আমরা গর্বিত তিনি আমাদের প্রিন্সিপাল ছিলেন, এবং আমাদের কলেজের মাটির প্রতি অসামান্য ভালবাসায় ওই মাটিতেই শুয়ে আছেন।
কর্নেল রহমান স্যারের এই topic টা পোস্ট করার জন্য এবং এতে অসাধারণ কিছু মন্তব্য করার জন্য সবাইকে (বিশেষ করে মুহাম্মদ, কামরূল আর মাসরুফ কে) জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।
জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা : মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া ai boiti ki bhabe pabo ,
ami banglai lekhar chesta korechi , dukhito parchina
অসাধারণ পোস্ট। শহীদ কর্নেল মনজুরুরকে :salute:
আমরা তোমাদের ভুলবো না.....
স্যালুট সকল মুক্তিযোদ্ধাকে, সকল শহীদকে...
আমার প্রিয় স্যারের লেখাটি পড়ে খুব ভাল লাগল, আরো ভাল লাগল এটা জেনে যে লেখাটি স্থান পেয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলীলপত্রের একটি তিন খণ্ডের সংকলননে।
:boss: :boss: :boss: :salute: :salute: :salute:
::salute:: ::salute:: ::salute::
::salute:: ::salute:: ::salute::
এই গুরুত্বপূর্ণ লেখাটি অনেকদিন পরে ছোখে পড়ল। খারাপ লাগছে আগে কেন চোখে পড়েনি। কর্ণেল রহমান স্যারের কথা আগেও পড়েছি ও শুনেছি। এবার বিস্তারিত পড়লাম। লেখাটি খুব ভালো হয়েছে।
আমাদের প্রিয় শিক্ষক শফিকুল ইসলাম স্যার (ইংরেজী)-ও জেসিসি-র এক্স ক্যাডেট ও একজান বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে তিনি ক্লাস ইলেভেনের ছাত্র ছিলেন। তার মুখেও কর্নেল রহমান স্যারের কথা শুনেছি।
বিভিন্ন ক্যাডেট কলেজ থেকে অনেক ক্যাডেট ও শিক্ষক মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।
কর্নেল রহমান স্যারের মত বীরেরা এদেশের সন্তান ছিলেন ভাবতেই গর্ব বোধ হয়।
স্যালুট
-আলীম হায়দার.1312.
::salute:: ::salute:: ::salute:: ::salute:: ::salute::