[ক্যাডেট কলেজ সিস্টেম নিয়ে আজহার ও মাহবুবের পোস্টের প্রেক্ষিতে আর সেখানে রিলেটেড কিছু কমেন্ট প্রসঙ্গে কিছু কথা মাথায় এলো। এই ভাবনা গুলোতে অন্য দিক দিয়ে দেখার চেষ্টা করা হয়েছে। যে কোন জিনিস নিয়ে হৈ চৈ করার আগে বিষয়গুলোকে সুনির্দিষ্টভাবে দেখা দরকার।]
আমরা যখন ক্লাশ নাইনে ছিলাম আমাদের মাঝে খুব জনপ্রিয় একজন স্যার ছিলেন – মুশফিক স্যার। ক্যাডেট কলেজ নিয়ে অনেক স্থায়ী স্মৃতির মাঝে এই স্যারের স্মৃতি সদা অমলিন। তার কারণ সেই বয়সে শিক্ষক হিসাবে বন্ধুসুলভ একজনকেই ছেলেমেয়েরা অগ্রাধিকার দেয়।আর স্যার ছিলেন অসম্ভব মিশুক। তার ক্লাশগুলো আমদের সেই সময়কার একাডেমিক ব্লকীয় দুর্যোগে শান্তির হিমেল পরশ বুলাতো। শুধু তাই নয় স্যার আমাদের সাথে গেমস টাইমে অংশ নিতেন একদম নিজেদের বন্ধুদের মত করেই। আমরা খেলার আগে গেমস শুরু করার আগে যে দল কাগজে কলমে ঠিক করতাম তাতে এক দলে স্যারকে রাখা হতো– স্যারের আগমনটা এতোটাই অবশ্যম্ভাবী ছিল।জগতের অনেক সুন্দর জিনিসের মত স্যারের সাথে কাটানো সময়টাও আমাদের ক্ষণস্থায়ী হয়েছিল। তবে যাবার আগে স্যার আমাদের স্পষ্ট করে কিছু বলেননি শুধু বুঝতে পেরেছিলাম আমাদের সথে তার ফ্রিনেসটাই তার দ্রুত বিদায়ের কারন। আর স্যারের শেষ কথাটা আমার এখনও কানে বাজে, যারা ক্ষমতা পাবার উপযুক্ত না এমন লোক ক্ষমতা পেলে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেন।
মুশফিক স্যারের কথাটা বলার কারণ হচ্ছে আমি নিজে মনে করি ক্যাডেট কলেজ অথরিটি সবসময় ক্যাডেট আর শিক্ষকদের মাঝে দূরত্ব তৈরি করতে চেয়েছে। যারা এই বাইরে গিয়েছেন তারা কখনও টিকতে পারেননি অথবা টিকে থাকার জন্য তাদেরকে নিজেদের বদলাতে হয়েছে। বদলের উদাহরন দিতে মন চায় না। তবু একটু বলি, কলেজ থেকে বের হবার অনেক পরে আমি কলেজে গিয়ে নিজের পারসোনাল ফাইল দেখেছিলাম। তাতে আমর নামে অবজারভেশন শীট পাঠানো স্যারদের নাম স্বাক্ষর দেখে ভয়াবহভাবে আৎকে উঠেছি। যে সব শিক্ষকদের চিরকাল এত সম্মান করেছি তারা আমার অজান্তে এভাবে আমার নামে অভিযোগ করেছেন!!!
কিছুদিন আগে পত্রিকায় একজন এক্স ক্যাডেটের লেখা পড়ি একজন স্যারকে নিয়ে। চমৎকার এক স্যারের চেহারা ভেসে উঠে পড়ার সময়। কিন্তু অবাক হয়ে লক্ষ্য করি যে শিক্ষকের কথা বলা হয়েছে তাকে আমি চিনি। তবে শিক্ষক হিসাবে না। একজন বিরক্তিকর জরিমানীকারী ডিসিপ্লিনের বুলি ছড়ানো প্রিন্সিপাল হিসাবে। তিনি আমাদের রফিক কায়সার। তার মাঝেকার ব্যাক্তিসত্তা (যেটা ঐ ভাইয়ার লেখায় পাই) আমাদের কাছে প্রাকাশিত হয়নি কখনও। তার প্রশাসক রূপটি তার শিক্ষক রূপটিকে হারিয়ে দিয়েছে চিরদিনের জন্য।
এবার বলি মাইনুদ্দিন স্যারের কথা। প্রথমদিন তিনি যখন আমাদের ক্লাশে এলেন নিজেকে আমাদের কাছে ভালো প্রমাণের প্রানান্তকর প্রচেষ্টা ছিল তার। সেই সুযোগে আমদের একজন সহজ ভাবে মন্তব্য করেন, স্যার আপনি হয়তো নিজেকে আলাদাভাবে ভালো বলতে চাইছেন। এটা এখন পর্যন্ত সত্য। কিন্তু দুসপ্তাহ গীবতখানায় (স্টাফ লাউঞ্জকে আমরা এই নামে ডাকতাম) আমাদের নামে কুমন্ত্রণা শুনলেই আপনার মাথা ওয়াশ হয়ে যাবে। পরের ঘটনা হয়তো আমাদের জুনিয়র ব্যাচগুলো আমার চেয়ে ভালো বলতে পারবে যতদূর শুনেছি সেটা তিনি ক্যাডেটদের জন্য খুব বেশি স্বস্তিদায়ক ছিলেন না।
এতক্ষণ বললাম জুনিয়র টিচারদের কথা। আবার জুনিয়র টিচারদের কথা এটুকু বলেই শেষ হয় না। আরো কিছু ঘটনার স্মৃতিচারণ করি। একদিন ডিনার সেরে একাডেমিক ব্লকে আসছি। হঠাৎ করেই আমার এক বন্ধু আমাকে একটি সুইচ দেখিয়ে বলল সেটা অফ করলে এক পুডিং। একদিকে পুডিং প্রাপ্তির সম্ভাবনা অন্যদিকে এর পিছনে সুপ্ত মজা লাভ দুয়ের উদ্দেশ্যেই আমি করে ফেললাম। আবার সাথে সাথে জ্বালিয়ে দিলাম। ঘটনা হলো সেটা ছিলো আমাদের পাশের ভূগোল গ্যালারিতে চারুকলার দেবব্রত স্যারের কাজ করার টেবিলের লাইটের সুইচ। আমি কাজটি করার আগেই আরো কয়েকবার একই কায়দায় স্যারকে বিরক্ত করা হচ্ছিল। এবার সয়ারের বিরক্তি তীব্রতায় পৌছলো। নখদন্তহীন সিংহের মত আমাদের ফর্মে এসে ফাঁকা আস্ফালন করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারলেন না।
আরেকটা ঘটনা কেতাবউদ্দিন স্যারকে নিয়ে। স্যারের ভয়েসে একটু প্রবলেম ছিল। তিনি কথা বলার ফাঁকে বিশেষ ভঙ্গিতে বলতেন, হ, কি?সিনিয়র হয়ে গেছো। আমরা মোটামুটি সুযোগ পেলেই (দূর থেকে অথবা কারেন্ট যাওয়া রাতে ব্লকে) তাকে দেখে তাঁর ভঙ্গি নকল করে , হ , কি সিনিয়র হয়ে গেছো বলা শুরু করতাম। আমাদের তখনকার ছোট অপরিণত মন হয়তো বুঝতে শিখায়নি কোন মানুষের শারীরিক কোন অসংগতি নিয়ে ঠাট্টা করাটা কত বড় জঘন্য কাজ কিংবা অযথা বিরক্ত করার মজায় আমরা ভুলে যাই তাদের মাঝেকার মানুষটির কথা।
এবার কাহিনীটি ফানি নাকি সিরিয়াস সেটা বুঝা কঠিন। ঐ দুই বিশেষণের চাইতে আতঙ্কজনক শব্দটাই মাথাই আসে। ঘটনাটা আমাদের তৌফিককে নিয়ে। ঘটনাটা তৌফিকের জবানিতে এমন,”ইন্টার হাউস বাস্কেটবল কম্পিটিশানের দিন ছিল সেটা। রেফরি ছিলেন এডু স্যার। আমি ছিলাম আমার টিমের প্রাইম রিবাউন্ডার। স্যার একটা ফাউলে ফ্রিথ্রো দিয়েছিলেন। একটা না দুটো জানতে আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম, one or two? স্যার শুনলেন, why not two? সাথে সাথে মাঠ থেকে বের করে দিলেন। স্টাফের তত্ত্বাবধানে পাংগা খাইলাম ম্যাচ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত। পরে অবশ্য স্যারকে বুঝিয়ে বলেছিলাম কি হয়েছিল। স্যারের উপর আমার রাগ নাই, অনেস্ট একটা ভুল বুঝাবুঝি ছিল সেটা। ম্যাচে আমি ইনজুরডও হয়েছিলাম, ইনজুরি নিয়েই খেলেছিলাম সেকেন্ড হাফ। পাংগা খাওয়া শেষে হাসপাতাল গেলাম। নামাজ পড়ি নাই ওইদিন, পায়ে ব্যান্ডেজ করে ফিরে আসছিলাম ব্লকে প্রেপের জন্য। নিচে ডিউটি মাস্টার ফকরউদ্দিন স্যার বললেন উপরে
স্টাফলাউঞ্জে গিয়ে ওইদিনে বেয়ারা মকবুল আংকেলকে ডেকে দিতে। মকবুল আংকেলকে ডাকতে ঢুকলাম স্টাফ লাউঞ্জে, উনি ফ্রিজে পানি রাখছিলেন। গরমের দিন ছিল, ফ্রিজের পানি দেখে উনার কাছ থেকে চেয়ে নিয়েই পানি খেয়েছিলাম। স্টাফ লাউঞ্জের জানলা দিয়ে সেটা দেখে ফেলেন প্রেপ ডিউটিরত এক স্যার। উনার ব্যাপারটা পছন্দ হয় নাই। আমাকে দিয়ে বন্ড লিখালেন এবং তৎকালীন ভিসি বিশ্বাস স্যারের কাছে ঘটনা ফরোয়ার্ড করলেন। বিশ্বাস স্যার আমাকে বলেছিলেন, তুমি পানি খেয়েছো আমার কোন সমস্যা নাই। পানি দেখেছো, তৃষ্ণার্ত ছিলে, খেয়ে নিয়েছো। কিন্তু তুমি তোমার শিক্ষককে কনভিন্স করতে পারলে না? উনি একজন সিনিয়ার টিচার, উনি কেসটা আমাকে দিয়েছেন। আমি তোমাকে ক্ষমা করতে পারি না।
তো দুইটা ইডি খেয়ে সেযাত্রা পানি খাবার প্রায়শ্চিত্ত করেছিলাম। এর বছরখানেক পরে আই ইউ টি-তে বিশ্বাস স্যারের ছেলে, আমার বন্ধুর সাথে কথা হচ্ছিল কলেজ নিয়ে। ও তথ্য দিল, ঐ সিনিয়ার টিচার নাকি স্টাফ লাউঞ্জে বলেছিলেন আমি যে পানিতে বিষ মেশাতে যাইনি তা কে বলবে। অবশ্য কাহিনীর এই অংশটুকু একটু সাবধানে প্রসেস করাই ভালো হবে মনে হয়। বিশ্বাস স্যার স্টাফ লাউঞ্জে শুনে ছেলেকে বলেছিলেন, বন্ধু আমাকে বলেছে। এই এতোগুলো লেয়ার পাড়ি দিয়ে আসল ঘটনা কি ছিল সেটা ফার্স্ট হ্যান্ড একাউন্ট ছাড়া বুঝতে চেষ্টা করা উচিত হবে না। “ঘটনার সত্যতা যদি (স্টাফ লাউঞ্জের ঘটনা) যদি ২০% সত্যও হয় ব্যাপারটা শিউরে উঠার মত।এসব ভয়ঙ্কর মেন্টালিটির লোকগুলো যখন ক্ষমতাধর ভিপি ভা প্রিন্সিপাল হবে তখনকার অবস্থা ভেবে শিউরে উঠতে হয়।
আমার উপরের ঘটনাগুলি যদি কারও ধৈর্যের ব্যাঘাত ঘটায় তবে আমি দুঃখিত। তবে ঘটনাগুলোর কোনটাই মিথ্যা না। আর ঘটনাগুলো নেহায়েত স্মৃতিচারণের জন্য লেখা নয়। আমার নিজের ভাবনা যেই ঘটনা গুলোকে বিশ্লেসণ করে পরিচালিত হয় তার কিছু উদাহরণ দেয়া মাত্র। খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে ক্যাডেট কলেগের স্যাররা সিনিয়রিটি বাড়ার সাথে সাথে ক্যাডেট বিরোধী ভাব চরমভাবে প্রকাশ পেতে থাকে (যাদের প্রকাশ পায় না তাদের স্যালুট, আমি শুধু জেনারেল প্রবণতা বুঝাচ্ছি )।
সিনিয়র হওয়ার সাথে সাথে স্যারদের মাঝে যে বিরূপ মনোভাব তৈরি হয় কিংবা আরো পরিষ্কার করে বললে তাদের মাঝে যে হতাশা তৈরি হয় তার পিছনের কারণ গুলো বিবেচনা করার চেষ্টা করি।
চাকুরি হিসাবে ক্যাডেট কলেজের শিক্ষকের চাকুরি যে খুব লোভনীয় এমন দাবি করা অযৌক্তিক হবে। কারন বেতন ভাতা মিলয়ে তারা অন্যান্য যে সুযোগ সুবিধা ভোগ করেন তা পর্যাপ্ত নয়। তার সাথে মানসিকভাবে তাদেরকে সবসময় এক ধরণের টর্চারের মাঝে থাকতে হয়। একদম নন আর্মি পারসন হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে প্রায় ক্যাডেট জীবনের মত একটি জীবনে অভ্যস্ত হতে হয়। আমি নিজে অনুভব করি কোম্পানির কাজে অফিস টাইমের বাইরে কাজ করাটা কতটুকু বিরক্তিকর। সেখানে ক্যাডেট কলেজের একজন শিক্ষককে কোন রকম ওভার টাইম ছাড়াই ক্যাডেটদের সাথে গেমস টাইমে মাঠে থাকতে হয় , রাতে পালাক্রমে প্রেপে পাহারা দিতে হয় আর ডিউটি মাস্টারের মত উটকো কাজ করতে হয়। সোজা কথায় তাদের নিজেদের কাজ করার মত ব্যাক্তি স্বাধীনতা কতটুকু অবশিষ্ট থাকে টা ভেবে দেখাটা জরুরি। অর্থাৎ শিক্ষক হিসাবে একজন ব্যাক্তিকে মূল্যায়ন করা হয় শুধু শিক্ষক হিসাবে নয় বরং শিক্ষক ও প্রশাসক দুই হিসাবে। মজার ব্যাপার হলো ক্লাশে দুই লাইন খারাপ পড়ালে তার চাকুরির সমস্যা হবে না বরং তার প্রশাসনিক জবের একটু এদিক ওদিক পাওয়া গেলে তাকে জবাব দিহি করতে হবে। এমনকি যিনি যট বেশি প্রশাসক হিসাবে দক্ষতা দেখাবেন তার পদোন্নতির সম্ভাবনা ততো বেশি। শুধু তাই নয় উপরওয়ালার কাছে পিঠ চাপড়ানি পেতে কিংবা এই পথে দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে চাইলে তাদেরকে প্রশাসনিক দক্ষতা দেখিয়ে ক্যাডেটদেরকে বাঁশের উপর রাখতে হবে। অনেক শিক্ষকই এই সিস্টেমের সাথে বেশিদিন তাল মেলাতে পারেন না বরং তাল মেলাতে গিয়ে উভয় সংকটে পড়েন। হয় তাকে ক্যাডেটদের প্রতি ভালো হতে হবে অথবা অথরিটির প্রিয় পাত্র হতে হবে। যারা ২য় পথ বেছে নিতে পারেন না সিস্টেম তাকে অপসারন করে কিংবা তিনি সিস্টেম ছাড়তে বাধ্য হন। ফলে ক্যাডেট প্রিয় টিচার যারা ক্যাডেটদের ভালো মন্দের প্রতি সহানুভূতিশীল তাদের বিদায় ঘটে বেশ শুরুতেই। তারপরে যারা থাকেন তারা হয় ক্যাডেটদের সামনে ছদ্মবেশ নিয়ে থাকেন অথবা ক্যাডেটদের ঠ্যাঙানো অথরিটির প্রিয় পাত্র হয়ে থাকেন। এমতাবস্থায় তাদের মাঝেকার মানসিক চিন্তাভাবনাগুলো সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত হয়।সাধারণ অথরিটি আর অথরিটিতে বাস করা মানুষগুলোর মাঝে সেই সম্পর্ক তৈরি হয় যা ব্যক্তি মানুষ আর সাধারণ মানুষের মত। অথরিটি সিস্টেম এখানে স্বৈরাচারী হয়ে উঠে। তার নিজের মত করে সে তার মাঝেকার লোকগুলোকে ( এডু ভিপি প্রিন্সু) সাজিয়ে নেয়। তাই ক্যাডেট কলেজের এই প্রশাসনিক পদগুলি স্বৈরাচারী হতে থাকে সিস্টেমের চাপেই। ক্যাডেটদের কাজগুলোও সিস্টেম তার ডিফাইনড পথে পরিচালিত করে। এ দুয়ের সমন্বয়ে শিক্ষক আর ছাত্রদের সম্পর্ক হতে থাকে ক্রমশ তিক্ত। তার সাথে সিস্টেম ডিফাইনড ভাবে ক্যাডেটদের বয়সের দোষের উচ্ছাসের নানা ফু্র্তিগুলো দ্বারা ক্রমশ আহত হতে থাকেন শিক্ষকরা। আর তাদের মাঝে ও জমা হতে থাকে ক্ষোভ। আর তার সাথে ক্যাডেটদের জন্য তাদের এত ত্যাগ তিতিক্ষার ( সিস্টেম সম্ভবত তাদের এভাবেই ভাবায়) পরেও তাদের আচরণে তারা ক্যাডেটদেরকে ভাবতে থাকেন খুবই খুবই জঘন্য কিছু। এই প্রক্রিয়ার মাঝে বেরিয়ে আসেন একজন বিশু কিংবা একজন রফিক যারা তাদের ক্ষোভের প্রয়োগ করেন ক্ষমতায়।
একদিকে শিক্ষকদের বঞ্চনা অন্যদিকে ক্যাডেটদের বালকসুলভ চপলতা আর আর সিস্টেমের ক্রদ্ধতা সমস্যাকে ঘনীভূত করে। আপাত ভাবনা এতটুকু। এ থেকে মুক্তির উত্তরণের উপায় খুঁজে পাই না। আর সব কিছু আলোচনার আগে আমাদের ক্যাডেট কলেজের উদ্দেশ্য কি সেটা পরিষ্কার হওয়াটাও জরুরি। এখনকার জনপ্রিয় মতানুযায়ী ছেলেমেয়েদের ভালো ফলাফলের সামাজিক নিরাপত্তার জন্যই প্যারেন্টসা (সবাই না হয়তো ) ক্যাডেট কলেজের দ্বারস্থ হন। আর সিস্টেম নিয়ন্ত্রিতহয় ক্যাডেটদের প্যারেন্টসের চাহিদা দ্বারা। তাই একজন আবু সাঈদের হাত হতে কোমলমতি ক্যাডেটদের বাঁচাতে আমাদের চিন্তাভাবনা আরো সামগ্রিক হওয়া দরকার। আর এদের চেহারা তুলে আনতে গেলে আসলে টোটাল সিস্টেমের খুঁত হয়তো বেরিয়ে আসবে। যেটা সিস্টেম নিজে কখনও চাইবে না। অতএব এইচ কিউ তে যদি বিশুদের নামে কমপ্লেইন করা হয় সেটা ব্যুমেরাং হয়েই ফেরত আসবে।
( লিখতে লিখতে অনেক কিছুই লিখে ফেলেছি। আমার পুরা লেখাতে আমি টিচারদের সাইকো আচরণের কারণ খুঁজে গিয়েছি। আপাতত ছোট মাথায় আর কিছু আসছে না। )
সহমত আমিন ভাই, লেখাটা অনেক বিশ্লেষণপূর্ণ। জেনারেল প্রবণতার ভিতর থেকে কিছু bug কে বের করে আনতে পারার বিষয়টি আসা উচিত। চিহ্নিত কিছু মানুষের জন্যে পুরা সিস্টেমের দোষ হওয়া উচিত না, কারণ কলেজে আমরা ঘৃণা করি এরকম চরিত্রের চেয়ে প্রচন্ড ভালোবাসি, এরকম মানুষের সংখ্যাই বেশি।
শেষ কথাতে যেখানে সহমত হলা সেখানেই আবার নতুন ভাবনার খোরাক আসে।
সিস্টেমের দোষ হওয়া উচিত না ?? একটু বলি চিহ্নিত মানুষ পরিচালিত হয় সিস্টেম দ্বারা। আর তাদের মাঝেকার স্যাডিজমগুলাকে প্রমোট করে সিস্টেমই। এই ব্যাপারগুলা নিয়ে কথা বলতে গেলে আরো গোড়াতে যেতে হবে।
আমিন, দিলা তো আমার ব্লগের একটা আইডিয়া মাইরা। যাহোক, তোমার কাহিনী বর্ণনায় কিছু ভুল আছে। কমিউনিকেশান পড়তে গিয়ে মেসেজের ডিসটর্শন কিভাবে হয় পড়েছিলাম, এইখানেও তাই হয়েছে। খুবই স্বাভাবিক অবশ্য এটা। নিজে যেহেতু উপস্থিত আছি সেহেতু আমার ঘটনাটা আমিই বলি।
ইন্টার হাউস বাস্কেটবল কম্পিটিশানের দিন ছিল সেটা। রেফরি ছিলেন এডু স্যার। আমি ছিলাম আমার টিমের প্রাইম রিবাউন্ডার। স্যার একটা ফাউলে ফ্রিথ্রো দিয়েছিলেন। একটা না দুটো জানতে আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম, one or two? স্যার শুনলেন, why not two? সাথে সাথে মাঠ থেকে বের করে দিলেন। স্টাফের তত্ত্বাবধানে পাংগা খাইলাম ম্যাচ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত। পরে অবশ্য স্যারকে বুঝিয়ে বলেছিলাম কি হয়েছিল। স্যারের উপর আমার রাগ নাই, অনেস্ট একটা ভুল বুঝাবুঝি ছিল সেটা। ম্যাচে আমি ইনজুরডও হয়েছিলাম, ইনজুরি নিয়েই খেলেছিলাম সেকেন্ড হাফ। পাংগা খাওয়া শেষে হাসপাতাল গেলাম। নামাজ পড়ি নাই ওইদিন, পায়ে ব্যান্ডেজ করে ফিরে আসছিলাম ব্লকে প্রেপের জন্য। নিচে ডিউটি মাস্টার ফকরউদ্দিন স্যার বললেন উপরে
স্টাফলাউঞ্জে গিয়ে ওইদিনে বেয়ারা মকবুল আংকেলকে ডেকে দিতে। মকবুল আংকেলকে ডাকতে ঢুকলাম স্টাফ লাউঞ্জে, উনি ফ্রিজে পানি রাখছিলেন। গরমের দিন ছিল, ফ্রিজের পানি দেখে উনার কাছ থেকে চেয়ে নিয়েই পানি খেয়েছিলাম। স্টাফ লাউঞ্জের জানলা দিয়ে সেটা দেখে ফেলেন প্রেপ ডিউটিরত এক স্যার। উনার ব্যাপারটা পছন্দ হয় নাই। আমাকে দিয়ে বন্ড লিখালেন এবং তৎকালীন ভিসি বিশ্বাস স্যারের কাছে ঘটনা ফরোয়ার্ড করলেন। বিশ্বাস স্যার আমাকে বলেছিলেন, তুমি পানি খেয়েছো আমার কোন সমস্যা নাই। পানি দেখেছো, তৃষ্ণার্ত ছিলে, খেয়ে নিয়েছো। কিন্তু তুমি তোমার শিক্ষককে কনভিন্স করতে পারলে না? উনি একজন সিনিয়ার টিচার, উনি কেসটা আমাকে দিয়েছেন। আমি তোমাকে ক্ষমা করতে পারি না।
তো দুইটা ইডি খেয়ে সেযাত্রা পানি খাবার প্রায়শ্চিত্ত করেছিলাম। এর বছরখানেক পরে আই ইউ টি-তে বিশ্বাস স্যারের ছেলে, আমার বন্ধুর সাথে কথা হচ্ছিল কলেজ নিয়ে। ও তথ্য দিল, ঐ সিনিয়ার টিচার নাকি স্টাফ লাউঞ্জে বলেছিলেন আমি যে পানিতে বিষ মেশাতে যাইনি তা কে বলবে। অবশ্য কাহিনীর এই অংশটুকু একটু সাবধানে প্রসেস করাই ভালো হবে মনে হয়। বিশ্বাস স্যার স্টাফ লাউঞ্জে শুনে ছেলেকে বলেছিলেন, বন্ধু আমাকে বলেছে। এই এতোগুলো লেয়ার পাড়ি দিয়ে আসল ঘটনা কি ছিল সেটা ফার্স্ট হ্যান্ড একাউন্ট ছাড়া বুঝতে চেষ্টা করা উচিত হবে না।
আরো একটা ব্যাপার, স্যারেরও একটা বক্তব্য থাকতে পারে পুরো ঘটনাটা নিয়ে। সেটা না শুনেও সিদ্ধান্তে আসা উচিত হবে না।
শেষ একটা কথা বলি, ১৬ বছর বয়েসী একজন (কি বলব? তরুণ না কিশোর?) হিসাবে আমি বোধহয় একটু ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি আশা করতেই পারতাম। সেটা পাইনি, তবে বর্তমানের ১৬ বছর বয়েসীরা বা তারও কম বয়েসের ছেলেপেলে যদি এই কনসিডারেশানটা পায় তবে কিন্তু খারাপ হয় না। শিক্ষককে দেখে ১০ বছর আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাটার জন্য ঘৃনায় আমার মুখ বেঁকে যাবে এটা কারোরই কাম্য না। ঐ ঘটনাটা ভুলে যাওয়ার মতো উদার আমি হতে পারি নাই, হিউম্যানলি পসিবলও না মনে হয়।
আমিনের বিবরণ আর আমার জবানে ঘটনার পার্থক্য থেকে আরেকটা জিনিসও কিন্তু উঠে এলো। ব্লগে যদি কেউ বলে ওমুকের কাছে এটা শুনেছি, আমাদের সবসময়ই উচিত হবে কশনের সাথে মেসেজটা প্রসেস করা।
😀 😀 😀
মুখে মুখে কথা বদল হয়। নিজেরে দিয়াই খুব ভালো মত টের পাইলাম।
একটা ঘটনা কই। ঐ মামুন আল মাহমুদ স্যারের কাছেই শোনা। কোন কম্পিটিশনের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে কোন এক ব্যাটলিয়ান বা কিছু হবে, তাদের ৪২০ জন বসে ছিল। প্রথম জনের কানে কানে বলা হলো, কালকে ম্যাচ জিতলে গরু জবাই করে খাওয়া হবে। তারপর বলা হলো কানে কানে পাস করতে। এভাবে পাস করা শেষ হলো শেষ জন যা শুনল তা হলো, কালকে ম্যাচ জিততে না পারলে আমাদের গরুর মত জবাই করা হবে।
তৌফিক আমার ডিসটর্টেড গল্পটা আপাতত তোমার জবানিতে প্রতিস্থাপন করে দিলাম।
কাম্য নয় এই কথাটা ইউটোপীয়। আমি নিশ্চিত আমাদের প্রতি অনেক আচরণের জন্য অনেক শিক্ষককেই আমি কখনো ক্ষমা করতে পারবো না।
ভালো করছ। 🙂
একটা ট্রেনিং এক্সারসাইজে লাইন বেঁধে যাবার সময় প্লাটুন কমান্ডার হুড়ো দিলে আমাদের একজন বলেছিল Faster Faster, সেটা অনুদিত হয়েছিল Basterd হিসেবে 😛
Life is Mad.
😀 😀
:khekz: :khekz: :khekz:
আমিন ভাই, :salute:
ভয়াবহ সুন্দর ও বিশ্লেষনধর্মী একটা পোষ্ট হইসে...সবাই সুন্দরভাবে জিনিসটাকে বিশ্লেষন করে পোষ্টটাকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলুক এই কামনা থাকল।
আমার কথাগুলো বলে যাই..
শিক্ষকদের মনস্তাত্ত্বিক দিকটিতে আপনার বিশ্লেষণের সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত।যে কেউ কয়দিন থাকলেই বলে দিতে পারবে..ক্যাডেটদের মাঝে জনপ্রিয় শিক্ষক আর অথরিটির মাঝে জনপ্রিয় শিক্ষক সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস(কিছু ব্যাতিক্রম বাদে)।আবার ক্যাডেটদের মাঝে জনপ্রিয় শিক্ষকও যে শুদ্ধ শিক্ষক তাও কিন্তু না।দ্যাখেন,একদিন তাস খেইলা স্যারের কাসে ধরা খাওয়ার পরও স্যার ছেড়ে দিসিল বলে রুমে আইসাই স্যারকে বস ঘোষণা করসিলাম..যদিও ক্লাসে পড়ানোতে উনি মোটেও বস ছিলেন না।আর ক্যালেজ কলেজে ক্যাডেটদের সাথে স্যারদেরও অলরাউন্ডার হতে হয়..নইলে বেল থাকেনা।...একাডেমিক্যালি স্কলার(থিওরেটিক্যালি) একটা মানুষকে একাডেমিকসের সাথে সাথে অন্য সব বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হলে তো সমস্যা...প্লাস,কিশোর বয়সের ছেলেদের সাথে তাল মিলিয়ে চলাও একটা ব্যাপার....এইক্ষেত্রে পূর্বট্রেনিং বা প্রস্তুতি বা মানসিকভাবে খুব পরিণত না হলে সে সিক হতে বাধ্য।এত কথা বলে লাভ নেই...কিছু সমাধান খুজি,
১.ক্যাডেট কলেজে শিক্ষকতার পেশাটিকে আকর্ষণীয় করে তোলা
২.এরপর উপযুক্ত( আবারও বলি উপযুক্ত) শিক্ষক নিয়োগ
৩.তাদের অতি অবশ্যই যথাযথ মানসিক ট্রেনিং
৪.প্রশাশন ও একাডেমিক কাজগুলোকে আলাদা করে সেইভাবে শিক্ষকদের নিয়োগ দেয়া(এইটা নিয়ে একটু কনফিউশন আসে)
এবং অতি অবশ্যই অথরিটি কর্তৃক ক্যাডেটদের যৌক্তিক দাবীগুলোর যথাযথ মূল্যায়ন...
আমাদের সময়ে দেখসিলাম..একজন ভালো অ্যাডজুটেন্ট বা একজন ভালো প্রিন্সিপাল কিভাবে পুরো কলেজ ও ক্যাডেটদের বদলে দিতে পারে....আসল হচ্ছে ক্যাডেটদের ভালো কাজকে ভালো বলে এপ্রিশিয়েট করা আর খারাপ কাজকে খারাপ বুঝতে শিখানো..এর বেশি দরকার হয় বলে মনে হয়না.. কিন্তু এইটা করতে গিয়েই কর্তৃপক্ষ যে নাটকগুলা করে তার জন্যই সব সমস্যা তৈরী হয়।
াওনেক ধন্যবাদ বন্য লম্বা ও সুচিন্তিত কমেন্ট করার জন্য। সমস্যার পয়েন্ট টা মোটামুটি সবার চিন্তা এখদিক দিয়ে গেলেও সমাধানের পথটা একটু কঠিন। কারণ প্রথম কথা হলো ক্যাডেট কলেজের উদ্দেশ্য দশকে দশকে বদলে গিয়েছে। আমি জেনেছি এক স্যারের কাছ থেকেই আশির দশকে তার এক ক্যাডেট কলেজের ছত্রের উদ্দেশ্য ছিলো প্রেসিডেন্ট হওয়া। অর্থাৎ ক্যাডেট কলেজ থেকে আর্মি তারপর চীফ অফ স্টাফ তারপরে প্রেসিডেন্ট। এই চিন্তাটা অসুস্থ সেটা এখন আমরা এখন মনে করতে পারি কিন্তু আশির দশকে সেটা ছিলো বাস্তবতা।
ক্যাডেট কলেজের উদ্দেশ্য সবদিকে দক্ষ একজন চৌকষ আর্মি অফিসার বানানো। (আগে অন্তত টাই ছিলো। ) । কিন্তু আমাদের সময় থেকে আর্মিতে পরীক্ষা দেয়া অপশনাল করা হয়েছে। এতে আর্মি তে ক্যাডেটদের উপস্থিতি আগের চেয়ে কমে যাবার কথা(আমি জানি না আসলে কী হয়েছে)। কারণ ডিসিশনটা অবশ্যই সমকালীন চাহিদা অনুযায়ী হয়েছে। এর ফলে এখন ক্যাডেট কলেজের উদ্দেশ্য কী দাড়ালো। আমার নিজের কাছে ক্যাডেট হিসাবে যখন উপলব্ধি করতে যাই আমার প্রাপ্তি গুলোকে চিন্তা করি সেটা ব লতে গেলে সেটা কে উদ্দেশ্য হিসাবে আধুনিক(!) কোন পিতামাতা মেনে নিতে চাইবেন না।
তোমার সলুশন গুলোতে মোটামুটি একমত, তবে তার আগে ক্যাডেট কলেজ কী উদ্দেশ্য কাদের জন্য পরিচালিত হবে এর উত্তর বের করা জরুরি।
আশির দশক?? :bash: :bash: 😮 😮 😮
আমার একাধিক বন্ধুর মুখেও জীবনের এই লক্ষ্যের কথা শুনেছি।
🙂
দারুন বিশ্লেষণ আমিন ভাই। বিশ্বের অন্য বিশ্বমানের বোর্ডিং স্কুলগুলোর সাথে ক্যাডেট কলেজের একটি মৌলিক পার্থক্য আছে। সেখানে একজন পেশাদার সাইকোলজিস্ট দায়িত্ব পালন করে থাকেন। মানসিক টানাপোড়েনের এ দিকগুলি তারা হ্যান্ডেল করে থাকেন। এবিষয়ে খুব দ্রুত এগিয়ে আসা জরুরী।
বিশ্বামনের বোর্ডিং স্কুলগুলোর সাথে আমাদের ক্যাডেট কলেজগুলোর গুণগত ও উদ্যেশ্যগত কিছু পার্থক্যও আছে। তাই না?
সানাউল স্যার ক্লাসে একটা কথা বলতেন-কখনো যদি তোমাদের অভিশাপ দেই তাহলে বলব-ক্যাডেট কলেজের টিচার হয়ে আসো।
আমার মনে হয় এই বক্তব্যটা সিস্টেমের ভয়াবহ দিক এক কথায় প্রকাশ করে দেয়।
মাই গড......
Life is Mad.
মারাত্মক বিশ্লেষণধর্মী লেখা ভাই। আপ্নের পোষ্টটা পড়ে যেটুকু মাথায় আসল তাতে করে ক্যাডেট কলেজে কোনরকম স্বাভাবিক পরিবেশ আছে বা ছিলো বলে মনে হয় না।
ক্যাডেট কলেজের ভিতরে থাইক্যা বুঝ নাই ??? 🙂
ভাই,লেখাটা খুবই সুন্দর ও বিশ্লেষনমূ্লক।
ক্যাডেট কলেজের স্যারদের যে পরিমান প্রেশারে থাকতে হয়,অন্য কোথাও স্যাররা এতটা প্রেশারে থাকেন কিনা আমার জানা নেই। একই সাথে তাদের মাথায় থাকে প্রমশনের চিন্তা। সব মিলিয়ে একটা নেগেটিভ আউটপুট আসা অস্বাভাবিক কিছু না। আমার মনে হয়,স্যারদের শুধুমাত্র পড়াশোনা রিলেটেড বেপারগুলাতেই ইনভল্ভড রাখা উচিত। অন্যান্য বেপার,যেমন ডিউটি মাস্টার,মেস ওআইসি ইত্যাদি ক্ষেত্রে তাদের তাদের ইনভল্ভমেন্ট কমানো উচিত। রাতে হাউসগুলাতে ডিউটি করার জন্য স্টাফ বা এই টাইপের কাউকে দায়িত্ব দেয়া উচিত(এভাবে অন্যান্য ক্ষেত্রেও)। তাহলে স্যাররা একটু রিল্যাক্স থাকতে পারবেন। এরফলে ক্যাডেটরাও কিছুদিক দিয়ে লাভবান হবে। যেমন, ক্যাডেট-স্যার সম্পর্ক সহনীয় পর্যায়ে পৌছাবে। স্যার মাত্রই ক্যাডেটদের বাই ডিফল্ট শত্রু ভাবা থেকে বিরত থাকবেন ইত্যাদি।
আর বিশু বা রফিক টাইপ স্যারদের বেপারে যেটা বলতে চাই, স্যাডিস্টটাইপ লোক যেকোন জায়গাতেই থাকতে পারে। আমাদের বুয়েটেও এধরনের লোক আছেন। কিন্তু ক্যাডেট কলেজের মত আর কোথাও স্যারদের স্টুডেন্টদের উপর এতটা প্রভাব নেই। ক্যাডেট কলেজগুলাতে সুধু ক্যাডেটদের মেন্টালিটি,গ্রোথ এগুলা নিয়েই চিন্তা ভাবনা করা হয়। HQ র উচিত স্যারদের মেন্টালিটি নিয়েও চিন্তা করা। কআর বন্য ভাই যেটা বলসেন,স্যারদের এভালুয়েশনের বেপারটা ইফেকটিভ করা খুবই জরুরি।
আমার লেখাটা বেশ ভালো মতই বুঝা গেছে দেইখ্যা ভালো লাগতেসে। সমস্যার সমাধান গুলো চিন্তা করতে গেলে ব্যাপারগুলো বেশ কম্পিকেটেড হয়ে যায়।তবে তোমার শেষ কথাটা বেশ ভালো লাগলো। স্যারদের গ্রোথ মেন্টালিটি এই ব্যাপারগুলো নজিয়ে চিন্তা করা জরুরি। আড়েকটা ব্যাপারও জরুরি সেটা কি কেউ ভাবছে?
অফটপিক : তুমি তো দেখি আমার রশীদ হলের ছুডু ভাই। নেক্সট যেদিন বুয়েটে আসি (আগামী সপ্টাহে মে বি) আমার থেকে খাইয়া নিও। তোমার পোস্টের বেসিসে এত বড় রামারণ রচনা কইরা ফেইলা বড়ই ভালো লাগিতেছে।
এই সপ্তাহ থেকেই খাওয়া বাদ দিব কিনা চিন্তা করতেসি... :goragori:
যেই নাচ দিতাছ ........ ডরায়ছি.....
আপ্নে ইরাম? 🙁 দেখা হইল খাওয়াইলেন্না আর জুনিয়র পুলাপাইনরে ডাইকা ডাইকা খাওয়াইতেসেন...চিকিবাজী ছাইড়া দ্যান x-(
কি কইলি ?? :grr: :grr:
মাঠের মধ্যে খাওয়াইতে হইলে তো ফ্রন্ট রোল ছাড়া আর কিছু ছিলো না 🙂
আইচ্ছা তুইও আসিস। একটা বুয়েট সিসবিয়ান গেট টুগেদার কইরা ফেলামু নে।
বুয়েট সিসিবিয়ান কেন?সিসিবি ফ্রন্টে এইরকম সাম্প্রদায়িকতার তীব্র প্রতিবাদ করছি,তয় গেস্ট হিসেবে নসু সিসিবিয়ান আমাকে দাওয়াত দিলে প্রতিবাদ উঠাই নিমু 😛
আমিন, তোর বিশ্লেষনটা বেশ ভালো লাগলো। সিস্টেম নিয়ে বিতর্ক আমাদের অনেকদিনের। পর্যাপ্ত সুবিধার অভাবে ভাল ভাল শিক্ষক থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ক্যাডেট কলেজ গুলো। শিক্ষকদের সুবিধা বৃদ্ধি আর তাদের স্বাধীনভাবে শিক্ষাদানের ক্ষমতা প্রদানের মাধ্যমেই এই সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হবে বলে আশা করা যায়।
এর সাথে সাথে কলেজের প্রিন্সিপাল পোষ্টটি শিক্ষকদের ভিতর থেকে না নিয়ে শুধুমাত্র আর্মড ফোর্সেস থেকে নেওয়া জরুরি। একজন ভাল প্রিন্সিপাল ও ভাল এ্যাডজুটেন্টই পারে পুরা কলেজের চেহারা পালটে দিতে।
একজন ভাল প্রিন্সিপাল ও ভাল এ্যাডজুটেন্টই পারে পুরা কলেজের চেহারা পালটে দিতে। প্রচন্ডভাবে সহমত।
:thumbup:
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
একজন ভাল প্রিন্সিপাল ও ভাল এ্যাডজুটেন্টই পারে পুরা কলেজের চেহারা পালটে দিতে।
:hatsoff:
:thumbup: :thumbup: :thumbup:
হাসান ডোন্ট টেক ইট আদারওয়াইজ, তোর কি এডু হবার সম্ভাবনা আছে কাছে পিঠে? 🙂
মনে হয় না দোস্ত। পোস্টিং এর উপর আসলে আমাদের হাত নেই... আল্লাহ ভরসা।
এই কথাটার সাথে আমি একমত নই।
ক্যাডেট কলেজে একজন প্রিন্সিপালকে যেমন এডমিনিস্ট্রেটিভ কাজ করতে হয় তেমনি ক্যাডেটদের পড়াশোনা, স্যোসাল ও কালচারাল বিষয়গুলি নিয়েও ভাবতে হয়।একজন সিভিলিয়ান প্রিন্সিপাল যেমন পিটি করতে কতটুকু পেইন হয় এটা বুঝবে না তেমনি কোন জিনিসের একাডেমিক,সামাজিক বা কালচারাল ভেল্যু একজন সামরিক প্রশাসক কখনও একজন সিভিলিয়ান স্কলার এর চেয়ে বেশি বুঝবে না।
এর মানে এই নয় যে আমি আর্মি পারসানদের ছোট করে দেখছি।আমার অর্থ হচ্ছে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে সিভিলিয়ানরাই বেটার আর আর্মি চীফ হিসেবে সামরিক ব্যক্তিগণ।
প্রশাসনিক আর একাডেমিক+ETC এর সুষম সমন্নয় হয় না বলেই ক্যাডেট কলেজে এই ধরনের সমস্যা বিদ্যমান।
তোর পয়েন্ট ঠিকাছে-এরকম হার্ডলাইনে আসলে কোনকিছু সীমাবদ্ধ করা যায়না-ব্ল্যাক আর হোয়াইট লাইনের মাঝামাঝি একটা গ্রে লাইনও থাকা দরকার।তবে অভিজ্ঞতা বলে-সিভিল প্রিন্সিপালরা পেইন বেশি দেয় x-(
আরাফাত, আমি এই বিষয়ে একমত হতে পারছি না। নিচে আমিনের কমেন্টের মত আমাকেও বলতে হচ্ছে আর্মি মানে শুধু প্রশাসক নয়, এডুকেশন কোর থেকে প্রিন্সিপাল হলে লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই। বরং শতকরা ৮০ ভাগ সিভিল প্রিন্সিপাল সর্বময় ক্ষমতা হাতে পেয়ে তার অপব্যাবহার করে থাকেন।
একটা কথা সেটা হলো, ক্যাডেট কলেজ গুলোর একাডেমিক ব্যাপারগুলোর সর্বময় কর্তা ভিপি আর প্রশাসনের এডজুটেন্ট। তাদেরকে পরিচালনা করার জন্য প্রিন্সিপাল। এই আইডিয়াটাই মনে হয় ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রেএ প্রইন্সিপাল সিহাবে আমি আর্মি পারসোনকে প্রেফার করি। আর্মি মানে কমান্ডো কোর্স করা জাদরেল কেউ --- এই ধারণা থেকে বের হতে হবে। আর্মির এডুকেশন কোরের লোকরা পড়ালেখার ব্যাপার বুঝেন না এটা আমার মনে হয় না। আমরা সেভেনে প্রয়াত শ্রদ্ধেয় মকবুল স্যারকে পাই। আমার ব্যক্তিগত অভিমত তিনি প্রশাসক হিসাবে না একাডেমিক পরিচালনার ক্ষেত্রেও ভালো অবদান রেখেছিলেন। তাকে দেখে দেখেছি হঠাৎ করে ক্লাশের মাঝে সার প্রাইজ ভিজিটে চলে আসতে। সন্তর্পনে তিনি চলে আসতেন কোন রকম ফর্মালিটি ছাড়া। এ জিনিসটা আমার ভালো লাগতো কারণ এর দ্বারা তিনি একাডেমিক ব্লকের ত্রু পিকচার দেখতে পেতেন যা আামদের সিভিল প্রিন্সিপাল রইসউদ্দিন স্যারের মাঝে কখনও দেখিনি যার ধ্যান জ্ঞান ছিল ক্যাডেটদের সুযোগ সুবিধা কমিয়ে অথরিটির কাছে টাকা জমা দিয়ে নিজের ইমপ্রেশন কামানো।
আমি আমার দেখা থেকে বললাম। তবে আমার দেখাই শেষ কথা নয়। সবার মতামত জানার আগ্রহে রইলাম।
সিভিল প্রিন্সিপাল মনে হয় হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া আর কারো পারফরম্যান্স ভাল হইছে বলে শুনি নাই।আমাদের লেঃ কর্নেল আবুল কাশেম স্যারও ভিজিটে আসতেন,ক্যাডেটের রেজাল্ট ভালো করানোর জন্য জান দিয়ে দিতেন।আমি সেভেনের দুধের বাচ্চা অবস্থায় সরাসরি উনাকে প্রেপটাইমে পড়তে থাকা একটা প্যাসেজের ইংরেজি শব্দের অর্থ জিজ্ঞাসা করছিলাম-উনি নিজে ডিকশনারি দেখে সেটার অর্থ আমাকে জানিয়েছিলেন।একটা প্রিন্সিপালকে ক্লাস সেভেনের ছেলে যে সরাসরি কিছু জিজ্ঞাসা করতে পারেনা এই জিনিসটা উনি বিশ্বাস করতেননা।একবিন্দু বাড়িয়ে বলছিনা-উনি কলেজে থাকতে পিতার অভাব বুঝতে পারতামনা-এতটাই স্নেহ করতেন তিনি আমাদেরকে।আফসোস-বেশিদিন পাইনাই উনাকে... 🙁
আমাদের ভিপি হিসেবে রইস উদ্দিন ছিলেন। আসলে ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও যে ধান ভাঙ্গে এতেই বুঝা যায়। এই ফৌজদারহাটে জরিমানা সিস্টেম চালু করছে। আর অনেক ট্র্যাডিশন নষ্ট করছে আমাদের সময়ে। যাই হোক, তার জরিমানার ব্যাপারটা জানতে পাইরা মেজাজটা অনেক দিন পর খারাপ হইল। x-( (সম্পাদিত)
- খুবই ভালো লেগেছে তোমার বিশ্লেষন (পাঁচতারা)। নিচে অনেক বড় বড় কমেন্ট দেখলাম। ওদের যুক্তির ভিড়ে আমার প্রাথমিক অনুভূতি হারিয়ে যাবার আগেই তাই অভিনন্দন জানিয়ে গেলাম।
(এখন থেকে ৪/৫ বছর পর সমাজবিজ্ঞানে পিএইচডি করতে চাইলে আওয়াজ দিও 🙂 )
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মাহমুদ ভাই, আপনি কেন এটাকে বিশ্লেষণ বলছেন? আমি যতটুকু বুঝেছি, আমিন একটা থিওরি দাঁড় করিয়েছে। এই থিওরির ক্রেডিবিলিটি আছে, কোন সন্দেহ নাই। আমার পছন্দও হইছে থিওরিটা। কিন্তু ও তো কোন ডেটা গেদার করে সেইগুলার বিশ্লেষণ করে নাই। এই থিওরিকে ভেরিফাই করার জন্য ডেটা গেদার করলে তারপর নাহয় বিশ্লেষণ হবে। থিওরি কথাটাও মনে হয় ভুল হচ্ছে এখানে, হাইপোথেসিস বলা যায়। আমিনের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা পুরো পপুলেশন সাইজের কাছে কণামাত্র। সমাজবিজ্ঞানে কেমনে রিসার্চ ডিজাইন করে আমার জানা নাই। আপনিই ভালো বলতে পারবেন। একটু পরিষ্কার কইরেন বস। 🙂
আপনি দেখি সুপারভাইজার হইতে চান। শুভকামনা রইল। :grr:
অফটপিকঃ আমার মনে হয় বিভিন্ন বিষয়ের এক্সপার্টদের স্কিলগুলা বেসিক লেভেলে একই। এইকারণেই মনে হয় হাইয়ার স্টাডিজে ফিল্ডের সীমারেখাটা অস্পষ্ট হয়ে যায়। সামনের ফেব্রুয়ারী থেকে ডক্টরেট শুরু করব। দোয়া রাইখেন বস। 🙂
@তৌফিক
ভালো পয়েন্ট ধরেছো।
আমিনের এই ব্যাপারটাকে আমি বিশ্লেষণই বলবো, কিছু প্রাথমিক তথ্য থেকে হাইপোথিসিস গঠন। আমিন এখানে আমাদের মাঝে প্রচলিত 'ব্যক্তিগত মানসিকতা বা নৈতিকতাই দায়ী' এই সাধারণতত্ত্বের (Ethno-method) বিপরীতে বাস্তব তথ্যের আলোকে তার হাইপোথিসিস উপস্থাপন করেছে যা' আমাদের ঐ সাধারণতত্ত্বের বিপরীতে।
- যে প্রকৃয়া আমিন অনুসরণ করেছে, সেটাকে সামাজিক বিজ্ঞানে Groounded Theory Approach বলা হয়। এই নিয়ে অন্য কোথাও আলাপ করা যাবে সময়+সুযোগ হলে।
পিএইচডি প্রোগ্রাম শুরুর আগেই অভিনন্দন।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
🙁 আমারো পিএইচডি করতে মঞ্চায়-তয় ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজে-ইকোনমিক্স পইড়া হাঁপায় গেছি...
কি কস ডেভেলাপমেন্ট স্টাডিজ তো মজার সাবজেক্ট যতটুকু বুঝলাম তোর লুকার পার্টানার এর কাছ থেকে।
😮 ইব্রাদা আমার লুকার পার্টনার এইডাও জাইনা গেছেন!! 😮
আরও অনেক কিছুই জাইনা গেছি 😉
সম্মানিত বোধ করছি মাহমুদ ভাইয়ের কমেন্টে। আমি এই বিশ্লেষণের মূল ভাবনাগুলো পেয়েছিলাম মাহমুদ ভাইয়ের একটা পোস্টের কন্টেন্ট ধরে। তার সাথে এই বিষয়ে আমাদের কলেজের দুজন বা তিনজন স্যারের নাম বলছি না তাদের, কিছু অনুভূতি শোনার সুযোগ হয়েছিল। সাথে আজহার মাহবুবের পোস্টের লিংক ধরে শিক্ষক চরিত্রের একটা কার্ভ তৈরি করে এই বিশ্লষণটুকু করেছি।
আসলেই সম্ভব হলে আমার অনেকই আগ্রহ আছে। 🙂
আপাতত মাহমুদ ভাইয়ের একজন স্টুডিয়াস ছাত্র হিসাবেই গর্বিত বোধ করছি।
@ আমিন,
পারলে ফুকোর Bio-politics নিয়ে কিছু পাইলে পড়ে দেখো, মজা পাবে।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ষময় আমার হাতে এখন আছে অল্প বিস্তর।
খোঁজ লাগাইতেছি।
ব্যাখা বা হাইপোথিথিস ভালো লেগেছে। 🙂
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ব্যাখ্যা বা হাইপোথিসিস 😛
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ধন্যবাদ ফয়েজ ভাই। অনেকদিন পরে আপ্নেরে দেখলাম। 🙂
তোমার বিশ্লেষনটা খুব ভালো লাগল আমিন।
ধন্যবাদ বস।
মাহবুব ভাই রে লেখাটা আমি পড়েছি এবং সেখানে সবার কমেন্টস পড়েছি কিছু কমেন্টস ছিল ভাইয়ার লেখার পক্ষে কিছু হালকা বিপক্ষে।
আমি এখন আমার সময়ের কলেজের কিহু কথা বলতে চাই আমাদের সময় সবচেয়ে বড় ত্রাস ছিলেন আমাদের এয়াডজুটেন্ট মেজর নুরুল আলম, মুস্তাফিজ স্যার এই দুইজন স্যার বাদে বাকি শিক্ষকদের কথা আমি বলবে তাদের মাঝে কিছু স্যার ছিলেন ক্যাডেট এর জন্য খুব ভাল।
এই ভালো মানে এরকম না যে তারা আমাদের ইন্ডিসিপ্লিন কাজের জন্য আমাদের সাপোর্ট করতেন। বরং তারা একটু অন্য ধাচে আমাদের এইসব ইন্ডিসিপ্লিন কাজের জন্য নিষেধ করতেন।
আমি আমার একটি লেখায় মেজর নুরুল আলম স্যার এর সম্পর্কে কিছু কথা লিখেছিলাম। তবে আমি বলবো আমার দেখা অন্যতম কয়েকজন খারাপ লোকের মাঝে নুরুল আলম স্যার একজন। এখন ব্যাপারটা এমন দেখাতে পারে যে আমার কোনো অধিকার নাই যে একজন শিক্ষককে অপমান করে কিছু লিখা যে কিনা শুধু তার দায়িত্ব পালন করেছেন। আমি এটা মেনে নিলাম কিন্তু তাহলে উনি যে আমাদের পেরেন্টসকে অপমান করতেন তাদের ডেকে এনে যাতা ব্যাবহার করতেন, আমাদের ফ্যামিলি, বাবা-মা, থেকে শুরু করে সবাইকে অপমান করতেন তার অধিকার তাকে কে দিয়েছে। যে একজন পেরেন্টস কে সম্মান করতে যানেনা তার তো সম্মান পাওয়ার কথা না। সে সেটা চাইতেও পারেনা। মেজর নুরুল আলম কিংবা আবু সাঈদ স্যার যারা ক্যাডেটদের বাবা-মা নিয়ে খারাপ কথা বলতে আটকাতেন না তাদের কোন ধরণের সম্মান আমরা দেখাতে পারি।
একজন কলেজ গেইমস প্রিফেক্টকে পুরো কলেজের সামনে স্ল্যাপ করে কি সে ক্যাডেটদের কাছ থেকে সম্মান আশা করতে পারে?? জুনিয়র প্রিফেক্টদের কন্টিজেন্ট এর পিছনে লাথি দিয়ে কোন সম্মান সে আশা করতে পারে ? বাবার সমান হাউজ বেয়ারাকে কলার ধরে ঝাড়ি মেরে কি সে তার দায়িত্ব পালন করছেন নাকি ক্ষমতার অপব্যাবহার করছেন??
একটা নাইন/টেন এর ছেলেকে পায়ের কেডস দিয়ে মাথায় চেপে ধরে সেই ক্যাডেট এর কাছ থেকে কি আশা করে??
আমার মনে হয় আবু সাঈদ স্যার যে ব্যাবহার গুলো ক্যাডেটদের সাথে করে শুধু ব্লগের লেখা উপহার পাচ্ছেন সেই ব্যাবহার যদি তিনি ঢাকা কলেজ কিংবা তিতুমির কলেজের ছাত্রের সাথে করতেন তাহলে তিনি কি উপহার পেতেন তা আপনারা একটু ভেবে দেখবেন। আমরা ভুল করে আবু সাঈদ স্যার কিংবা মেজর আলম স্যারের লাথি খাই আর বাইরের কোনো স্কুল কিংবা কলেজের একজন শিক্ষক ছাত্রের নকল ধরে তাকে বহিস্কার করার কারণে লাথি খেয়েছেন। পেপারে এরকম অনেক কাহিনী দেখতে পারবেন।
রায়হান ভাইরা যখন কলেজে ছিলেন তখন ভাইয়ারা দেখেছেন মেজর নুরুল আলমের শাস্তি ওনাদের ব্যাচের জয় ভাইকে বেত দিয়ে মেরে পিঠ কেটে ফেলেছিলেন। আমি শুনেছি যে পরে কোন স্যার সেটা দেখে কান্নাকাটি করেছিলেন। রোদের মধ্যে যখন পিটি সু পড়ে দাড়ানো যেতনা তখন আলম স্যার খালি গায়ে ফ্রন্ট্রোল দেয়াতেন।
তখন যদি ক্যাডেট কলেজ ব্লগ থাকতো তাহলে হয়তোবা ক্যাডেট কলেজ ব্লগের মাধ্যমে তা আমরা কাউকে জানাতে পারতাম। আমার আম্মা পরে যখন যেনেছিলেন যে আমার মাথা বাস্কেটবল খেলতে গিয়ে ফাটেনাই বরং আলম স্যার এর কেডস এর ডলা খেয়ে ফেটেছে তখন আম্মা এটা রিপোর্ট করতে চেয়েছেন তখন কিছু পেরেন্টস বললেন যেন আম্মা এটা না করে কারণ তাহলে আমার উপর আরো সমস্যা হবে তাই আর আম্মা কাউকে বলেনাই
আমরা আমাদের কলেজের গল্প করার সাথে কলেজের যেই সমস্যা গুলো আছে ক্যাডেটরা বর্তমানে যেই সমস্যা গুলো ফেইস করছে সেগুলো দূর করার চেষ্টাও করতে পারি।
এখানে অনেক আর্মির/নেভি/এয়ারফোর্স এর ভাইয়ারা আছেন তাদের সাহায্য নিয়ে আমরা অনেক পদক্ষেপ নিতে পারব চেষ্টা করলে।
কি আশ্চর্য,এগুলো তো ভয়াবহ ব্যাপার!ক্যাডেটের বাদ দিলাম,একটা ছাত্রের মাথায় কেডস দিয়ে চেপে ধরতে পারে যে-সে কি মানুষ? এরা তো বরাহশাবকেরও অধম!আমি দুঃখিত,"ইমেজ" এর কথা বলে এগুলো এড়িয়ে যাবার কোন উপায় নেই। বাইরের সভ্য কোন দেশ হলে এই লোকের ট্রায়াল হবার কথা শিশু নির্যাতনের অপরাধে।
ভাল বলেছ, নাজমুল। মেজর আলম স্যারকে নিয়ে একটা লেখা দিব, তবে আরও কিছুদিন পরে। তবে উনার মত এডজুট্যান্ডদের ব্যাপারে একটা কথা বলব যে "ক্যাডেট কলেজটাকে উনি মাদ্রাসা আর নিজেকে "বেত হাতে হুজুর" ভেবেছিলেন ।"
দুঃখিত নাজমুল তোমার কমেন্টের উত্তর দিতে দেরি করার জন্য।
তোমার জন্য সহানুভূতি। একজন এক্স ক্যাডেটের এ ধরণের আচরণ মেনে এয়া যায় না। কিন্তু কথা হচ্ছে জাস্টিস ডিলেইড জাস্টিস ডিনাইড। সেটাই সমস্যা।
🙁
একদম খাঁটি কথা।
:thumbup: :thumbup: :thumbup:
তরুন প্রজন্মের হাত দিয়ে এরকমভাবে আমাদের দেশের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে লেখা বেড়িয়ে আসছে দেখতে বেশ ভালো লাগে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
নিজের প্রশংসা শুনে ভালো লাগলো । কিন্তু আমার কথা হইল শান্তাপুরা কি অতরুন প্রজন্ম ?
হা হা হা ... মাঝেমধ্যে মনে হয় আমাদের প্রজন্ম (তোমাদের থেকে দশ + করো) থেকে তোমরা এতো বেশি দেশপ্রেমিক কেন? নাকি এটা নিউমিডিয়ার কল্যান? মানুষজনদের সংগঠিত করতে পারছে। ২০+ যা করা যায় ৩০+ ঠিক সেভাবে শুরু করা যায় না। এটা অবশ্য খুব সাধারন ভাবনা।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আমাদের প্রজন্মের সাথে আপনাদের প্রজন্মের মাঝে কিছু বেসিক পার্থক্য তৈরি হয়ে গেছে এর কারণটা আমি বুঝেছিলাম আমার মত করে। মাহমুদ ভাইয়ের কোন এক পোস্টে ( খুব সম্ভবত পোস্ট মর্ডানিজম নিয়ে যে পোস্ট টা এসেছিল) জিনিসগুলোর ভিজুয়ালাইজেশন এসেছিলো।
আপাতত এটুকু বলি আশির দশক আর নব্বইয়ের দশক এই দুই দশকের মাঝখানে আামদের সোসাইটির মাঝে বড় ধরণের ট্রানজিশন ঘটেছে যার পরবর্তী দশকে আরো প্রমোটেড হয়েছে। তবে দেশপ্রেমিক শব্দটাতে একটু আপত্তি জানাচ্ছি কারণ তাতে জেনারালাইজেশনের সম্ভাবনা থাকে বরং বলা যায় জাতীয়তাবাদের প্রসার ঘটেছে কিন্তু এর বাই প্রডাক্ট হিসাবে ডান ধারাগুলোর বিকাশও হয়েছে প্রবল (ভালো খারাপের কোন প্রশ্ন তুলছি না)। আমার এই ভাবনার সমর্থনে আমি বলতে পারি আশির দশকে এখনকার মত শিক্ষিত শিবির ছিল না। মিডিয়া জগতের প্রসারকে আপনি কারণ হিসাবে দেখিয়েছেন ষেটা ঠিক আছে কিন্তু সেটাও কিন্তু আমাদের তথা বিশ্বের ট্রানজিশনের বাই প্রডাক্ট। আমার ভাবনাটুকু বললাম। তবে আমার ধারণাতে ভুল থাকার সম্ভাবনাই বেশি কারণ এই বিষয়ে একাডেমিক লেখাপড়া আমার একদম নেই। নিজের উপলব্ধি থেকে কথাগুলো বলা।
ক্যাডেট কলেজ শিক্ষা ব্যবস্থার যে সকল দিক কোন দিনই আমি মেনে নিতে পারিনি, তা হল:
১. এখানে ক্যাডেটদের "শিশু/কিশোর" হিসেবে দেখা হয় না, বরং তাকে cadet (A cadet is a trainee officer in the military) হিসেবে দেখা হয়।
২. "অপরাধকে লুকাতে পারাই অপরাধীর প্রকৃত সাফল্য" কিংবা "সবার সামনে শারিরীক শাস্তিই অপরাধ/ভুল শোধরানোর একমাত্র পথ "- ক্লাস সেভেন থেকেই এই মনোভাব গড়ে তোলা।
৩. শিক্ষকের সাথে ১০০% ব্ন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছাড়া কোন শিক্ষার্থী প্রকৃত শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না, আর ক্যাডেট কলেজে এর পুরো উল্টো চিত্র। ক্যাডেট কলেজ শিক্ষকের ভূমিকা "রাখাল"এর মত যেখানে ক্যাডেট হচ্ছে "পালের গরু"; রাখাল গরুকে মালিকের নির্দেশনা মত treat করে। (শিক্ষকদের প্রতি পূর্ণ সম্মান এবং তাদের অপারগতা মাথায় রেখেই বলছি)
৪.ক্যাডেট কলেজ শিক্ষা ব্যবস্থায় "মনের উন্নয়ন/ মানসিকতা বিকাশ" এর খুব বিশেষ গুরূত্ব নেই, কেবল "বাহ্যিক উন্নয়ন/ মানুষের চোখে 'ভাল ছেলে' হওয়া" কে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
৫. ক্যাডেট কলেজগুলোতে একজন শিশুর মানসিকতার পূর্ণ বিকাশের সুযোগ নেই, কারণ ক্যাডেট কলেজে আশেপাশের মানুষের সাথে ক্যাডেটদের সম্পর্ককে (মেস বেয়ারা-ক্যাডেট কিংবা এ ধরণের) অথরিটি খুবই বাজে চোখে দেখে। আর যে পরিবশে মানুষের সাথে সম্পর্ক রাখা অপরাধ, সে পরিবেশ কখনোই একটা শিশুকে "মানুষ" হতে দেয় না।
৬. জোর করে নিয়ম পালনে বাধ্য করার মাঝে কোন স্বার্থকতা নেই, প্রকৃত স্বার্থকতা প্রকৃত শিক্ষায়। "দ্বার বন্ধ করে মিথ্যাটাকে রুখি, সত্য বলে তবে আমি কোথা দিয়ে ঢুকি?" আর তাই ক্যাডেট কলেজে "খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি ... ..."
যাই হোক, পরিশেষে এটুকু বলব, "কেবল মাত্র সুযোগ্য আর্মি অফিসার গড়ে তোলার জন্যে" হাজার হাজার টাকা দিয়ে ক্যাডেট কলেজ চালানো আমাদের মত দেশের জন্য "হাতি পোষা"র মত; তবে "দেশকে কিছু প্রকৃত মূল্যবোধ সম্পন্ন নাগরিক উপহার দেয়ার জন্যে" সরকারি অর্থায়নে ক্যাডেট কলেজের মত প্রতিষ্ঠাণ অবশ্যই প্রয়োজন। অর্থাৎ সময় এসেছে ক্যাডেট কলেজ সিস্টেমে পরিবর্তন আনার এবং এর "লক্ষ্য ও উদ্দোশ্য" পুন:নির্ধারনের।
[এখানে প্রকাশিত মন্তব্য একান্তই আমার ব্যক্তিগত মতামত, আর একজনের সাথে অন্যজনের মতের অমিল থাকতেই পারে।]
তীব্র দ্বিমত আছে কিছু অংশে-সময় করে লিখব আশা করি...
আমিও।
তুমি আগে বলো, দেখি আমার দ্বিমতগুলোর সাথে মিলে কি না। 🙂
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ভাই তারিক লাইন গুলো কি যথেষ্ট ভাইবা বলছো।
তোমার কমেন্টে তোমার মাঝেকার কিছু দিক ফুটে উঠেছে যেগুলো আমার ভালো লেগেছে। কিন্তু তারপরেও সমস্যার জায়গা আমার কাছে যেগুলো ষেটা কোট করলাম।এটা নিয়ে একটু ভাবো।
আমিন ভাই,
আমার ঐ লাইনগুলোর সারমর্ম হচ্ছে "সময় এসেছে ক্যাডেট কলেজ সিস্টেমে পরিবর্তন আনার এবং এর “লক্ষ্য ও উদ্দোশ্য” পুন:নির্ধারনের।"
"... ...“কেবল মাত্র সুযোগ্য আর্মি অফিসার গড়ে তোলার জন্যে” ... ..." আর্মি অফিসার তৈরির জন্যে বিশ্বে "ক্যাডেট কলেজ সিস্টেম" খুব বেশি দেশে পরিচালিত হয়নি, কিংবা প্রয়োজনও হয়নি। (আর্মি অফিসার তৈরির জন্যে Military Academy আছে।) তবে বিশ্বের অনেক দেশেই সরকারি অর্থে পরিচালিত অধিকতর সুবিধা-সম্বলিত "শিক্ষা প্রতিষ্ঠান" আছে। বর্তমানে ক্যাডেট কলেজে "শিক্ষা" ততটা গুরুত্বের সাথে দেখা হয়না, যতটা গুরুত্বের সাথে দেখা হয় "পিটি/প্যারেড/শারিরীক শিক্ষা/গেমস ... ..." কে। ক্যাডেট কলেজ ক্যাডেটদের "শেখানো"তে গুরুত্ব দেয় না, গুরুত্ব দেয় resultএ। আর বর্তমান সময়ে তরুন কোন ভাল শিক্ষক ক্যাডেট কলেজে চাকরি করতে চান না, কারণ সেখানে শিক্ষকের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নেই (শিক্ষকের সুযোগ বলতে কেবল বাসস্থান আর রেশন নয়)। specially HSC লেভেলে বর্তমানে ক্যাডেট কলেজের শিক্ষার মান "standard" এর চেয়ে অনেক নিচে। ক্যাডেটরা যে ভাল result করে তার অনেকটাই নিজেদের চেষ্টায়। যা হোক, এভাবে ২/১ লাইন লিখে লিখে বিক্ষিপ্ত ভাবনাগুলো নিয়ে অলোচনা করা যাবে না, তার চেয়ে বরং আমার ভাবনাগুলো নিয়ে সুযোগ করে একসময় পোস্ট দেব, তখন বিস্তারিত লেখা যাবে ।
আমি বুঝতে পারছি তোমার ভাবনাগুলো। কিন্তু তোমার ভাবনাগুলোর মাঝে কিছুটা কন্ট্রাডিকশন আছে মনে হয়েছে বলেই লাইন গুলো কোট করেছিলাম।
এবার বলি, শিক্ষা শেখানো রেজাল্ট এই ব্যাপারে আমার দ্বিমত নেই। কিন্তু এই সমস্যা শুধু ক্যাডেট কলেজের না বরং আমাদের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার গণ্ডিবদ্ধতার উদাহরণ।
অন্যান্য দেশে ক্যাডেট কলেজ আছে কি? এর উত্তর আমার জানা নেই। তবে অধিক সুবিধাপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে - যা তুমি বলেছ। তার মানে হচ্ছে তুমি ক্যাডেট কলেজকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাতারে ফেলতে চাও। কিন্তু আমি যতদূর জানি ক্যাডেট কলেজগুলো শিক্ষা ও সামরিক মন্ত্রনালয় থেকে সাহায্য প্রাপ্ত। অতএব এর থেকে সামরিক খাতে কিছু আউটপুট যাওয়াটা দরকার অথবা সামরিক খাত থেকে অর্থায়ন বন্ধজ করা দরকার। আরেকটা ব্যাপার যেটা বিশ্বের অন্যান্য দেশে যেখানে অধিক সুবিধা প্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে সেখানে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নুন্যতম সুবিধা প্রাপ্ত। কিন্তু আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কি সেটা পায়/ যদি না পায় শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে ক্যাডেট কলেজের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠাটা অযৌক্তিক নয়?
প্রকৃত মূল্যবোধ সম্পন্ন এই পয়েন্টেও আমি একমত। কিন্তু শুধু তার জন্য সরকারি অর্থায়ন বৈধ অথচ আর্মি অফিসার বানানো হাতি পোষা এই ব্যাপারটা কন্ট্রাডিকটরি।
আমার জানা ছিল না। যদি তাই হয় সেটাতো কখনও খারাপ মনে হয় না। পিটি প্যারেড গেমস শারীরীক শিক্ষার আল্টিমেট আউটপুট কিন্তু শুধু সুঠাম দেহ গঠন নয় বরং আইকিউ লেভেল ডেভেলাপ করা।
আপাতত এই টুকু সময় করে আবার বলছি এসে।
এমন একটি বিষয় নিয়ে ব্লগে আলোচনা চলছে যেখানে অংশগ্রহন না করে থাকতে পারছি না। না হলে বিশাল দৌড়ের উপর আছি, পুরো জানুয়ারী মাসই থাকবো। তাই ক্ষুদ্র করে কিছু বলে যাই।
আমাদের অনেকেরই ঘটনা একই, সেটা এত বছর পরেও, বা যে কোন কলেজেই হোক না কেন। মধ্য যুগীয় পন্থায় শাস্তি দেওয়াটি আমাদের সংস্কৃতির সাথেই ছিল। এটা যে শুধু ক্যাডেট কলেজে তা নয়, বাহিরের অনেক স্কুলেও শিক্ষকের বেত দিয়ে মারা বা শারীরিক ভাবে মারের প্রচলন ছিল। এটা আস্তে আস্তে কমে এসেছে। এখন সে রকম হলেই এটি পত্রিকার নিউজ হয়।
ক্যাডেট কলেজেও আগের তুলনায় কমে এসেছে এটা। কিন্তু যেটা বেড়েছে তা হল মনস্তাত্বিক শাস্তি। এই শাস্তিও যে শারীরিক শাস্তির তুলনায় কোন অংশে কম নয় সে সম্পর্কে ধারনা খুব কম মানুষেরই আছে। আমার মতে অনেকেই একমত হবে যে আমরা নিজেদের শাস্তিকে সহজেই নিতে পারি। কিন্তু যেটা পারিনা, পারিনি এবং পারবো না তা হল আমার জন্য বাবা/মা দেরকে অপমান। এই কাজটুকুই কিছু প্রিন্সিপাল করেছেন। তাঁরা শুধু মানসিক শাস্তি আমাদের দেননি তাঁরা সেটা দিয়েছেন আমাদের বাব/মা দেরও। এ গুলো সম্ভব হয়েছে কারণ আমার মতে এই ব্যাপারে কোন নীতিমালা নেই। সবচেয়ে বড় কথা হল আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা মধ্যযুগীয় সর্বক্ষেত্রে। এখানে ভাল নম্বরের পেছনে দৌড়ানোর জন্য ছাত্রদেরকে শুধু মুখস্থ করানো হয়। শিক্ষকরাও কোন প্রশ্ন পছন্দ করেন না। যা হোক এই সমস্যার সহজ কোন সমাধান নেই। নীতিমালা একদিনে তৈরী হয় না, বা হবে না। আবার নীতিমালা না থাকলে যে যার মত করেই কলেজ চালাবে। সিসিবির পক্ষ থেকে যদি কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে কিছু করা যায় সেটার সাথে আছি, থাকবো। আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা শুধু ক্যাডেট কলেজ নয়, সর্বক্ষেত্রেই বিশেষ প্রয়োজন। আর ক্যাডেট কলেজ যদি এ ক্ষেত্রে অগ্রনী ভূমিকা রাখে তবে সেটাতো আরো ভাল। তবে প্রাক্তন ক্যাডেট সংগঠন থেকে ক্যাডেট কলেজের নীতিমালা সংশোধনের কোন উদ্যোগ শুনিনি। বরং উল্টোটাই হয়েছে। প্রাক্তন ক্যাডেট যখন এডজুটেন্ট হয়েছে তিনি আরো খারাপ হয়েছে সেটার সংখ্যাই বেশী। কর্তৃপক্ষে যারা যায় তাঁরা কেন যেন কোন পরিবর্তন চায় না। পরিবর্তনকে সবাই এক রকম ভয় পায়। তাই আশা কম।
মোস্তফা ভাই, আপনার সুচিন্তিত মতামতের জন্য ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্যটা আমি পড়ে অনেকক্ষণ ভাবলাম। আপনার কথাগুলো চমৎকার। কিন্তু মধ্যযুগীয় কথাটার অত্যাধিক ব্যবহার ভালো লাগলো না। আপনি যে অর্থে বলছেন এটা সেটা শুধরাতে গেলে বিষয়টা আরো ভাস্ট হয়ে আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। আপাতত দেশের সার্বিক বিষয়টা বাদ দেই বরং।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে তারিক মাহমুদ (২০০১-০৭) এর উপরের কমেন্ট বেসিস আলোচনা করতে পছন্দ করবো। ক্যাডেট কলেজের উদ্দেশ্য কী হওয়া উচিত কিংবা সে উদ্দেশ্যের পথে কিভাবে চলতে পারে? এ ব্যাপারে আপনার মতামত প্রত্যাশা করছি।
ঠিক তোমার কথা। আমি সার্বিক চিত্রটিই তুলে ধরেছি এবং সেটি পরিবর্তন দু'এক প্রজন্মে সম্ভব নয়। আর সার্বিক চিত্রটি বাদ দিলে আমি মূল সমস্যাটিও কিছুটা আলোকপাত করেছি। সেটি হল মনস্তাত্বিক শাস্তি। কিন্তু মনস্তাত্বিক শাস্তি কতদূর পর্যন্ত দেওয়া যাবে সে সম্পর্কে কোন গবেষনা বা নীতিমালা আমাদের হাতে নেই। পাশ্চাত্য দেশেগুলোতে তা আছে। আমরা পাশাচাত্যের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে সেই ভাল জিনিসটুকু নিতে পারি। এখানে একজন শিক্ষককে বলা আছে তিনি কিভাবে একজন ছাত্রকে শিক্ষা প্রদান করবেন। ছাত্র যদি অমনোযোগী হয় তাও বলা আছে কিভাবে সেটাকে ট্যাকল করবেন। এই সব নীতিমালা একদিনেই তৈরী হয়নি। তাঁরাও আমাদের মত মধ্যযুগীয় পদ্ধতি হতে বের হয়ে বর্তমান পদ্ধতিতে গিয়েছে। এই ব্যাপারগুলো একটু বিস্তারিত পড়লে বা জানালে তুমি নিজেই সমাধানে পৌছতে পারবে। আমি আপাতত এর বেশি বলতে পারছি না সময়ের অভাবে। আর যদিও এটি আমাদের সার্বিক সমস্যা তারপরও বলেছি ক্যাডেট কএলেজ দিয়েই আমাদের যাত্রা শুরু হতে পারে। আমিতো মনে করি যেকোন ভাল নুতন পদ্ধতি প্রয়োগ করার জন্য ক্যাডেট কলেজ হতে পারে সবচেয়ে মাধ্যম। এখানে ফলাফলটি একদম ভালভাবে বুঝা যাবে।
শারীরিক শিক্ষা, বা কালচারাল শিক্ষা সব কিছুরই দরকার আছে একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য। তবে এখানে একটি দার্শনিকই প্রশ্ন চলে আসে, যেটার সমাধান জরুরী। প্লেটো থেকে শুরু করে রুশো/মার্ক্স বা সেই সময়কার দর্শনে বিশ্বাস ছিল মানুষকে প্রকৃত শিক্ষার মাধ্যমে একজন শিশুকে গড়ে নেওয়া সম্ভব। অর্থাৎ তুমি চাইলে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে, নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি শিশুকে গড়ে নিতে পারবে। চিন্তাটি ছিল এরকম যে একটি শিশুর মন হল কাঁদামাটির মত। তুমি এক চাইলে ইচ্ছেমত গড়ে নিতে পারবে। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞান বা দর্শন সেটা আর মনে করে না। এখনও নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাঝ দিয়েই শিশুকে নৈতিকতা, শারীরিক, কালচারাল শিক্ষার মাঝ দিয়েই বড় করা হয়, কিন্তু মনোযোগ দেওয়া হয় বেশি শিশুর নিজের ভেতরটিকে বের করে আনার দিকে। অর্থাৎ শিশুর উপর কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেয়ে উচিত শিশুর নিজস্বতাকে বের করে আনা। এটা আমাদের অনেক বাবা/মাই বুঝেন না বা বুঝতে চায় না। থ্রি ইডিয়টস ছবির মূলবিষয়ও সেটা। আমাদের ক্যাডেট কলেজেও আমাদের উপর কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলে। আমরা যারা সেই চাপানোকে মানতে চাইনা তারাই সমস্যায় পড়েছি। যারা সেটাকে মেনে নিয়েছে তারা সুখেই ছিল।
তোমার প্রশ্নের সহজ উত্তর হল, কর্তৃপক্ষকে আধুনিক শিক্ষা প্রদান পদ্ধতি উপলদ্ধি করতে হবে। সে মোতাবেক নীতিমালা তৈরী করতে হবে। একজন ১২-১৮ বছরের কিশোরের চোখ দিয়ে তাঁদের দেখতে হবে। এই বয়সের বাচ্চাদের এ রকম হোস্টেল ভিক্তিক পদ্ধতিতে পড়ানো যায় কিনা, গেলে তাঁদের কি কি সুবিধে দিলে তাঁরা হোমলি ফিল করবে সেটা চিন্তা করতে হবে। অর্থাৎ সম্পূর্ণ একটি মনস্তাত্বিকবিদের চোখ দিয়ে দেখতে হবে। আমার মতে একজন মনস্তাত্বিক গবেষক দিয়ে পুরো ব্যবস্থাটিকে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। আর বাবা/মা দের অপমান করা একটি শিশুর ভুলের (বা অপরাধের) জন্য সেগুলো সম্পূর্ণ প্রকার বন্ধ করা উচিৎ। নীতিমালা নির্ধারণে অভিবাবকদের অংশগ্রহনও একটি বিষয় হতে পারে।
ক্যাডেট কলেজের উদ্দেশ্য কি হওয়া উচিৎ বা আদৌ এর থাকার প্রয়োজন আছে কিনা সে অন্য ইস্যু। সে বিষয়ে পরে কখনো সময় নিয়ে আলোচনা করা যাবে। সিষ্টেম যাই হোক এখন পর্যন্ত তা দেশের মাঝে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ এবং সেখান থেকে যারা বের হয় তাঁরা আত্মনির্ভরশীল হয়ে বের হয়। আমার চোখে এটাই সেরা পাওয়া। আর একজন আত্মনির্ভরশীল যুবক অন্য যে কারো তুলনায় এগিয়ে থাকবে, এবং সেটাই হয়। আমিও মাসরুফের মত বলতে পারি আমার নিজের ক্যাডেট কলেজে যাওয়া না হলে আমার জীবনও অন্যরকম হতো নিঃসন্দেহে। কলেজে যাওয়াতে আমি অন্তত আমার বাসার তুলনায় উন্নত পরিবেশ পেয়েছি , যা আমাকে নুতন ভাবে চিন্তা করতে শিখিয়েছে। এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। কিন্তু সে পরিবেশই আদর্শ তা নয়। এখানে আরো উন্নতি করারা সুযোগ ক্যাডেট কলেজের রয়েছে।
আমার নিজের সন্তানদের ক্যাডেট কলেজে দিব কিনা, সেটি একটি বিশাল প্রশ্ন আমার কাছে। সময় তা বলে দিবে। আমি হয়ত দিব। কিন্তু আমার ভয় - আমার ছেলে/মেয়ে যদি কৈশরের চপলতায় কোন ভুল করে (কলেজের দৃষ্টিতে অন্যায়), এবং কলেজ আমাকে সে কারণে কোন কৈফিয়ত দাবী করে তবে আমার বাবা/মার মত আমি মেনে নিতে পারবো না। আমার বাবা/মা রা পারেননি কারণ তাঁদের সীমাবদ্ধতা ছিল। উনাদের অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা, মানসিক সীমাবদ্ধতা ছিল। কিন্তু আমার এর কোনটাই নেই। আর সে কারণে আমার সন্তানকে যদি কলেজ থেকে বের করেও দেয় আমি সেটাই মেনে নিব, কিন্তু অন্যায়ের সাথে আপোষ করতে পারবো না। আমার ভয় এখানেই। তাই মাঝে মাঝে চিন্তা হয়, সে রকম কিছু হবার চেয়ে একদম শুরু থেকে না দেওয়াই ভাল। যা হোক সেটা সময়ই বলে দিবে। আমার চিন্তা, কলেজে দিব। তারপর দেখা যাবে। বলবো না বলেও অনেক কিছুই বলে ফেললাম। যাই এবার পড়ি 😛 ।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া সুচিন্তিত সুন্দর মন্তব্যের জন্য। শেষের দুইটার ব্যাপারে আপনার সাথে আমার মত পুরোপুরি মিলে গেল। ক্যাডেট কলেজ দরকার আছে কী নেই তার চেয়ে আমি যে আজ এই আমি আছি এর মূলে ক্যাডেট কলেজের অনেক অবদান। আড় ছেলেমেয়েকে দেবার ব্যাপারে বললে আমি বলবো সেটা নির্ভর করে তার এডাপরিবিলিটির উপর।মানুষের সাথে গ্রুপে সবাই যে চলতে পারে না তার উদাহরণ পেয়েছি আমার আপন ছোট ভাইকে একটি হোস্টেল বদ্ধ জীবনে দিয়ে। সেখানকার নোংরা সিস্টেম আমার মাথা নষ্ট করে দেবার উপক্রম করেছে।
আর আপনার উপরের কথাগুলো সামরাইজ করলে যা দাড়ায় তার সাথে আমি নিজে আরো কিছু যোগ করি। ক্যাডেট কলেজে ছাত্র এবং শিক্ষক দুই নিয়োগেই কর্তৃপক্ষকে শার্প হতে হবে। মেন্টাল টর্চারের ব্যাপারটা কমাতে হলে বন্য যে কথাটা বলেছে টিচার্স এভুলুয়েশন বাই স্টুডেন্ট জরুরি। যেহেতু ক্যাডেট কলেজের সুযোগ সুবিধা মোটামুটি ইন্টারন্যাশনাল মানের তাই এক্ষেত্রে সেই নীতি বিবেচনায় আনা যায়। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে কতটুকু উইথস্ট্যান্ড করে সেটাও হবে ইন্টারেস্টিং।
সবশেষে আপনাকে আবারও ধন্যবাদ আমার এই পোস্ট টা পড়ে মূল্যবান মতামত দেয়ার জন্য।
একটু দৌড়ের উপরে আছি বিসিএস পরীক্ষা নিয়ে(চান্স না পাওয়া পর্যন্ত মনে হয় আপনারা আমাকে নিয়মিত পেশাদার বিসিএস পরীক্ষার্থী হিসেবেই দেখবেন!) তাই খালি একটা বিষয় উল্লেখ করি।
বাংলাদেশের ক্যাডেট কলেজগুলো মূলতঃ ব্রিটিশ ইটন কলেজের মডেলে তৈরি করা।কিন্তু একটা ব্যাপারে তাদের সাথে আমাদের বি-শা-ল পার্থক্য রয়েছে এবং এই পার্থক্যের কারণে বাংলাদেশি ক্যাডেট কলেজগুলোকে আমি পৃথিবীর বুকেই অনন্য বলব।সেটি হচ্ছে-ক্যাডেট কলেজে পড়তে হলে শুধু মেধা হলেই চলে-একটা ছেলের বাপ দেশের রাজা নাকি সেটা বিবেচ্য বিষয় না।আর ইটন কলেজ জাতীয় প্রতিষ্ঠানে ছেলেকে পড়াতে হলে যে কতগুলো ক্যাটাগরি আছে সেগুলোর অন্যতম হচ্ছে বাবা বিলিওনিয়ার হতে হবে/অথবা বাবা হাই অফিশিয়াল হতে হবে/নাইট বা ডিউক টাইপ বনেদী পরিবার থেকে আসতে হবে।রাজা রাজড়ারা কয়েক পুরুষ ধরে এই ইটন কলেজে পড়াশোনা করে আসছেন-নিজের ছেলেকে ফকিন্নির পোলার সাথে মিশতে দেখলে তারা অসন্তুষ্ট হবেন-এই কথাটা ইটনের ভর্তি প্রক্রিয়ার সাথেই যুক্ত।স্কলারশিপে কিছু ছেলে ঢোকে হয়তো কিন্তু তার পরেও মূল ছেলেপেলেরা কিন্তু সেই সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মানো ছেলেপিলেরাই।ইটনের শিক্ষা-পদ্ধতি নিঃসন্দেহে বিশ্বের অন্যতম সেরা,তবে ইটনের ছেলেপেলেরা সেই দেশের সবচাইতে মেধাবী হিসেবে আসে নাকি মেধা,এবং সেইসাথে আবশ্যকীয়ভাবে পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড দুটোর সমন্বয়ে আসে এটা ভেবে দেখার মত।
এবার আসি বাংলাদেশের ক্যাডেট কলেজে।বেশি দূরে যাবনা-আমার প্রাণপ্রিয় এক বন্ধুর বাবা ছিলেন আমি ক্যাডেট কোচিং যেখানে করতাম সেখানে যিনি চেয়ার টেবিল মুছতেন তাঁর গ্রামদেশীয় আত্মীয়।অসম্ভব মেধাবি আমার এই বন্ধুটি আর কদিন পর দেশের নামকরা একটি সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক হিসেবে আমেরিকায় পিএইচডি করতে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে।ক্যাডেট কলেজের প্ল্যাটফর্ম আমার এই বন্ধুকে দিয়েছে নিজের ভাগ্য সম্পূর্ণ বদলিয়ে ফেলবার সুযোগটুকু-যেটি বাইরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়লে কতটুকু সম্ভব হত তা নিয়ে ও নিজে যথেষ্ট সন্দেহ পোষণ করে।বাংলাদেশের ক্যাডেট কলেজগুলোতে এরকম ক্যাডেটের সংখ্যাই কিন্তু বেশি-ইটনে যেখানে বিলিয়নিয়ারের ছেলেকে "ডিসিপ্লিন্ড জেন্টেলম্যান" বানানো হয় ,সেখানে আমাদের ক্যাডেট কলেজে শূণ্য হাতে আসা মেধাবী ছেলেটিকে জীবনের স্রোত ১৮০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে নেবার সুযোগ দেয়া হয়।
এরকম একটি প্রতিষ্ঠানকে 'শ্বেতহস্তী' বলবার আগে আরেকটু ভেবে চিন্তে বলাটা মনে হয় জরুরি ছিল।এগুলো বলবেন ডঃ জাফর ইকবাল টাইপ সুশীলেরা(দুঃখিত,স্যারকে অন্য কারণে শ্রদ্ধা করলেও ঢালাওভাবে ক্যাডেটদের নিয়ে মন্তব্য করবার কারণে উনাকে একবার মেইল দিয়েছিলাম-এবং তিনি তাঁর বক্তব্য কিন্তু পরিবর্তনও করেছিলেন-যদিও শেষে "তালগাছটা আমার" টাইপ কমেন্ত ছিল।আগ্রহি পাঠক "৫০খানা ক্যাডেট কলেজ" শীর্ষক ব্লগটি পড়ে দেখতে পারেন)।একজন ক্যাডেটের মুখ থেকে এই জাতীয় মন্তব্য বেরিয়ে আসা সত্যিই দুঃখজনক।
আলোচনা আরেকটু হোক। আমি পরে বলতাসি আমার কথা। তবে তারিকের কথার যে জায়গাটতে তুই আপত্তি দেখতাছস সেটা বলার আগে ওর পুরো বক্তব্য বুঝা দরকার।
আমিন ভাই, ক্যাডেট কলেজের উদ্দেশ্য যে শুধু সামরিক বাহিনীর অফিসার তৈরি করা না-এইটা ২০০৩ সালে জেসিসির রিইউনিয়নে তৎকালীন জিওসি মেজর জেনারেল মুনিরুজ্জামান এবং বুয়েটের আর্কিটেকচার ডিপার্ট্মেন্টের চেয়ারম্যান দেইলি স্টারে "চিন্তিত' ছদ্মনামে লেখা বড়ভাই(নাম এই মুহূর্তে মনে নাই) দুজন তাঁদের বক্তৃতায় পরিষ্কার বলেছিলেন।ক্যাডেট কলেজের উদ্দেশ্য "to produce worthy leaders of society who have physical fitness of a military person and mental keenness of an intellectual-people who would lead in their respective area and progress the nation through this"
ক্যাডেট কলেজ শ্বেতহস্তী কিনা এইটা নিয়া সুশীলদের সাথে তর্ক করতে করতে আমি সিক এন্ড টায়ার্ড-তাই একজন ক্যাডেটের মুখে এই কথা শুনে নিজেকে সামলাইতে পারিনাই।সরি বস!
স্যালুট। এর চেয়ে সুন্দরভাবে আর বলা যায় না।
তবে শ্বএথস্তী প্রসঙ্গটা তারিক যেভাবে বলছে তুই মনে হয় ঠিক সেইভাবে নিস নাই। তারিকের কমেন্ট টা পড়। সে ক্যাডেট কলেজকে শ্বেত হস্তী বলে নাই বলছে শ্বেথস্তী যদি ......., এখন ঐ ডট ডট জায়গা গুলোতে আমার সমস্যা আর তোর সমস্যা মনে হয় প্রথম লাইনে। বুঝাইতে পারছি।
বি কুল ম্যান। 😀
লাউড এন্ড কিলিয়ার 😀
তয় বস,আমার মাথায় ইট্টূ সমিস্যা আছে- ক্যাডেট কলেজের বদনাম(অকারণে) শুনলে আগেই মনে হয় দেই দুইডা ঢিশিম কইরা-পরে কথা।কুন দিন এইডার জন্য বিপদে পরুম... 🙁 🙁
(তারিক অবশ্য অকারণে কয়নাই-দুই লাইন মিলায় পড়লে বুঝা যায়।থেঙ্কু বস!)
@মাসরুফ ভাই & আমিন ভাই
সেমিস্টার প্রায় শেষের দিকে, তাই আপাতত খুব দৌড়ের ইপর আছি, কিছুদিন পরে বিস্তারিত একটা পোস্ট দেব ভাবছি, তবে আপাতত কিছু বিষয় আর একটু মন্তব্য করছি ... ...
০. আমি ১০/১৫ বছর আগে ক্যাডেট কলেজ নয়, বরং বর্তমান সময়ের ক্যাডেট কলেজ নিয়ে কথা বলছি। আর গত ১০/১৫ বছরে দেশ তথা পৃথিবী অনেক দূর এগিয়ে গেছে।
১. আমিও ক্যাডেট কলেজের কাছে অনেক অনেক ঋণী, I love my college more than i can express ... ... সুতরাং ক্যাডেট কলেজ সম্পর্কে নেগেটিভ কমেন্ট আমারও সহ্য হয় না, কিন্তু ব্লগে আমি বোধ হয় সেই ব্যাক্তি যে কারনে-অকারনে ক্যাডেট কলেজ নিয়ে "বাজে মন্তব্য" করি। আসলে আমি ক্যাডেট কলেজের নামে "বাজে মন্তব্য" নয়, বরং বর্তমান সময়ে ক্যাডেট কলেজ পরিচালনা পদ্ধতির পুন:গঠনের প্রয়োজনীতার ব্যাপারে মন্তব্য করি ...
২.
এগুলো বাস্তবে হলে আমার কোন দু:খ ছিল না, কিন্তু বর্তমান সময়ের ক্যাডেটদের সাথে কথা বললে জানতে পারবেন কলেজে "ডিফেন্সে" যোগদানের জন্য যতটা কাউন্সিলিং করা হয়, অন্য কোন কিছু হওয়ার জন্যে তার একবিন্দুও করা হয় না। এর মানে কি এই নয় যে, ক্যাডেট কলেজের প্রাকটিকাল উদ্দেশ্য হচ্ছে "আর্মির জন্যে ready করা", কিন্তু সেখানে by product হিসেবে অন্যান্য কিছুও পাওয়া যেতে পারে ... ... আর এখানেই আমার "শ্বেতহস্তী" প্রসঙ্গ। জনগনের হাজার হাজার টাকা ব্যয় করে যে প্রতিষ্ঠান চালানো হয় , বর্তমানে সেখানে HSC'লেভেলে শিক্ষার মান standard এর চেয়ে অনেক অনেক নিচে। এর কারণ কি ? কারণ অথরিটি একাডেমিক শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়নি। বর্তমান সময়ে HSC তে ক্যাডেট কলেজের Teaching Quality "standard" এর চেয়ে অনেক নিচে। আর তাইতো ছুটিতে private tutorএর কাছে পড়া বর্তমান সময়ের ক্যাডেটদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় হয়ে দাড়িয়েছে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে উন্নয়ন বলতে English Version করা। দু:খের বিষয় হচ্ছে এটাও "লোক দেখানো উন্নয়ন", কারণ Teacher দের সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত না করে শিক্ষার্থীদের উপর এ রকম একটি সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়ার মানে কী??? বর্তমান সময়ের ক্যাডেট কাছে খোঁজ নিলে জানতে পারবেন, কলেজে HSC লেভেলে শিক্ষকদের class teaching এর মান কেমন । [শিক্ষকদের প্রতি পূর্ণ সম্মান রেখেই বলছি] তাই লোক দেখানো উন্নয়নের জন্য "হাতি পুষে" লাভ কী ? একজন all-rounder (আমাদের অর্থাৎ Cadet দের এটাই বলা হয় যে তারা শুধু পড়াশুনায় নয়, সবদিকে সেরা ) যদি আসল জায়গাই কাঁচা থাকে তাহলে অন্য সব দিকে boss হয়ে লাভ কী ??? ক্যাডেট কলেজতো আসল জায়গাটায়ই ক্যাডেটদের পিছিয়ে দিচ্ছে ???
৩. “দেশকে কিছু প্রকৃত মূল্যবোধ সম্পন্ন নাগরিক উপহার দেয়ার জন্যে” সরকারি অর্থায়নে ক্যাডেট কলেজের মত প্রতিষ্ঠাণ অবশ্যই প্রয়োজন। মন্তব্যের ব্যাখ্যা:
আমাদের মত গরীব দেশে মেধার অভাব নেই, আছে সুযোগএর অভাব, আর ক্যাডেট কলেজ নি:সন্দেহে অনেক গরীব-মেধাবী ছেলেদের সেই "সুযোগ" করে দেয়। কিন্তু আমি চাই ক্যাডেট কলেজগুলোতে সেই সুযোগকে আরও সম্প্রসারিত করার জন্যে এর সিস্টেমে যুগোপযোগী এবং দেশের চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তন আসুক তাতে ক্যাডেট কলেজ "ক্যাডেট কলেজ" নামে থাকুক কিংবা এর নাম পরিবর্তন হোক, আর্মি দ্বারা পরিচালিত হোক কিংবা না হোক- তাতে আমার কোন আপত্তি নেই।
এখনো হয়ত আমার বক্তব্য পুরোপুরি পরিস্কার হয়নি, পরে সময় করে একটা পোস্ট দেব। আপনাদের গঠনমূলক আলোচনার জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
আমিন ভাই, এবার আশা করি আপনার কথাগুলো বলবেন ... ...
[এখানে প্রকাশিত মন্তব্য একান্তই আমার ব্যক্তিগত মতামত, আর একজনের সাথে অন্যজনের মতের অমিল থাকতেই পারে।]
এ হে। আজকে তোমাকে দেখার কারণেই তোমার এই কমেন্টের কথা মনে হইলো। আগে দেখছিলাম। রিপ্লাই দিতে ভুলে গেছি।
তবে তোমার পোস্টের জন্যই অপেক্ষায় রইলাম। সেখানেই তোমার সাথে বিস্তারিত আলোচনা হবে। তবে মনে হচ্ছে তোমার আমার মাঝে পার্থক্যের জায়গাটা হলো আমরা ক্যাডেট কলেজের দুটি ভিন্ন জেনারেশনের প্রতিনিধিত্ব করি।
পারলে আওয়াজ দিও। আমি মাঝে মাঝে বুয়েটে যাই। সমানাসামনি আরো ভালো আড্ডা দেয়া যাবে।
ওকে আমিন ভাই ... ... সামনে পিএল, জমিয়ে আড্ডা দেয়া যাবে ... ... আমি নজরুলে থাকি, রুম ৩০৮। আর আপনার mail address দিয়েন, মেইল করে মোবাইল নং জানায়া দিব। অথবা আমারে মেইল করে আপনার মোবাইল নং টা দিয়েন।
mdtarik[at]ইয়াহু.কম
আর আমরাতো আসলেই ক্যাডেট কলেজের দু্ই জেনারেশনের প্রতিনিধত্ব করি, তাই কিছু মতের অমিল থাকবেই। যাই হোক, ব্লগে ক্যাচাল বেড়ে যাচ্ছে, তাই আমি আর বিতর্কিত বিষয়গুলোতে আপাতত পোস্ট দিতে চাই না। নিজেদের মাঝে সরাসরি কথ হবে , সেটাই ভাল। আপনার কমেন্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ ... ...
তারিক,
তোমার মন্তব্য এইবার পুরাপুরি বুঝতে পারলাম।দ্বিমত করার প্রশ্নই ওঠেনা।এইচ এস সি লেভেলের সমস্যাটা আমাদের সময়েই ছিলো-তোমাদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে আর প্রকট হচ্ছে।
সময় করে আরো লিখো-প্রতীক্ষায় থাকলাম।
ধন্যবাদ মাসরুফ ভাই ... ... তবে আপাতত এ বিষয়ে পোস্ট দিতে চাই না , ব্লগে বিতর্কিত বিষয় বেড়ে গেছে । তাই কিছুদিন পরে সময় করে বিস্তারিত পোস্ট দিব। কেননা, এধরনের স্পর্শকাতর বিষয়গুলোতে বিস্তারিত না লিখলে লেখকের মন্তব্য পুরোটা বোঝা যায় না।
আর আমিন ভাইয়ের মতামতগুলো জানতে ইচ্ছা করছে। ইনি খালি 'বলি, বলব ...' করে আমাদের দিয়ে সব বলিয়ে নিলেন। এখন নিজে ডজিং মারতেছে, মনে হয়, শীতের মধ্যে বেশি type করতে ইচ্ছে করছে না ... ... আমিন ভাই, ঠিক না ... ... ...
আমিন ভাই, আপনার কথাগুলো জানতে ইচ্ছে করছে , ... ... ....
কথাগুলি বলবো বলে গত উইকেন্ড পুরাটা রাখছিলাম, কিন্তু আমি মোবাইল থেকে নেট ইউস করি তো, ডাটা কেবলের সমস্যায় ঢুকতে পারলাম না। (এইটা কিন্তু কোন কজ না। ) সানাউল্লাহ ভাইয়ের পোস্ট টা দেখে নতুন আরো কিছু ভাববার খোরাক পেলাম।
যেহেতু আমার মতামত জানতে চাইছো তাই একটু একটু করে বলার চেষ্টা করি। আপাতত এই পোস্টের অনেক কথাই যেহেতু তুমি সানা ভাইয়ের পোস্টে কোট করেছো সেখানেই আলোচনায় যোগ দেই। এর বাইরে কিছু বাদ থাকলে আমারে আওয়াজ দিয়ো। আমার মেইল এড্রেস হলো amin1861@yahoo.com
আমিন ভাই, অনেক বিশ্লেষণপূর্ণ একটা লেখা...
প্রিয়তে। :thumbup: :thumbup:
আমিন,
লেখাটা অনেক ভাল হয়েছে। অনেক ভিতরের সমস্যা গুলো তুমি কিছু ঘটনার সাহায্যে তুলে ধরেছ। ভাল লাগছে এই ভেবে আমরা অনেকেই এগুলো নিয়ে ফীল করছি। আশা করি এক সময় কাজ হবে।
চালিয়ে যাও...
ভাল থেকো।
ধন্যবাদ ভাইয়া। আসলে পোস্টের চাইতেও এর ভিতরে মন্তব্যের ঘরে সবার কিছু মূল্যবান আলোচনাই এই পোস্টের সার্থকতা।
কিছু চমৎকার প্রস্তাবনাও উঠে আসছে। সেই বেসিসে আমরা আসলে এগিয়ে যেতে পারি ক্যাডেট কলেজ সিস্টেম মডিফিকেশনের জন্য প্রক্রিয়া বদ্ধ উপায়ে।
ভালো থাকবেন।
তোমার সাথে আমি একমত। আমি মন্তব্য গুলো পড়েছি। কিছু ভাল সাজেশনস ছিল।
হ্যাঁ, তোমার মত আমিও ভাবছি, আমাদের ক্যাডেট কলেজের প্রতিটি ব্যাপার নিয়ে ( ভর্তি পরীক্ষা থেকে শুরু করে, কলেজ থেকে বের হওয়া পর্যন্ত যত ইভেন্টস আমাদের করতে হয়, তার বাস্তবতা, আর ডেভলপমেন্ট প্ল্যান নিয়ে আলোচনা করা দরকার)। হয়ত তাহলে ওভারওল একটা পিকচার পাওয়া যাবে। (সম্পাদিত)
এপিক একটা পোস্ট ! প্রত্যেকটা কমেন্ট পড়লাম। এখানে এখনো অনেক আলোচনার অবকাশ আছে..
ক্যাডেট কলেজে টিচার এবং ক্যাডেট দের মধ্যে '' Tom and Jerry " সম্পর্ক টা পরিবর্তন করা জরুরী । উপরে সবাই সমস্যা নিয়েই আলোচনা করলেন । সমাধান নিয়ে আলোচনা খুব কম ই হয়েছে ।
যাই হোক আমার মতে টিচার দের প্রশাসমিক কাজ থেকে অব্যাহতি দেয়া উচিত । ডিসিপ্লিন ঠিক রাখতে চাইলে কয়েকজন স্টাফ বেশি রাখা হোক । ডিসিপ্লিন অনেক ভালো হবে ।
১। হাউজ গুলোতে হাউজ মাস্টার , হাউজ টিউটর এর বদলে প্রত্যেক হাউজে একজন করে ক্যাপ্টেন বা লেফটেন্যান্ট র্যাঙ্ক এর অফিসার দেয়া যেতে পারে ।সাথে প্রত্যেক হাউজে দুইজন করে আর্মি স্টাফ। এর বেশি কিছু তো লাগবে না । আর এ্যাডজুটেন্ট তো আছেই ই ।
২। টিচার দের হাউজ ডিউটি , প্রেপ ডিউটি , কলেজ ডিউটি মাস্টার ডিউটি, এসব থেকেও অব্যাহতি দিতে হবে ।
৩। টিচারদের জন্য নিয়মিত ভাবে একাডেমিক এবং সাইকোলজিকাল ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা যেতে পারে ।
আশা করি এভাবে কিছুটা হলেও টিচার দের কষ্ট লাঘব হবে। তবে হ্যা , ইসরাইল হক টাইপ কিছু টিচার আছে যারা প্রশাসনিক কাজ পছন্দ করে । তাদের ব্যাপারে আমি নো কমেন্টস... :no:
প্রিয় আমিন,
অনেক সময় নিয়ে তোমার লেখা এবং মতামতগুলা পড়লাম । নিঃসন্দেহে বিশ্লেষণধর্মী লেখাটার জন্য তোমার ধন্যবাদ প্রাপ্য ( ধন্যবাদ হিসাবে RCC তে তোমার একটা স্পেশাল ডিনারের দাওয়াত থাকলো )। ক্যাডেট কলেজকে বিভিন্ন মাত্রায় দেখার সুযোগ হয়েছে আমার, এই সিস্টেমের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে ঃ
১। একজন ক্যাডেটকে ঠিক কি ভাবে কিংবা কি হিসাবে গড়ে তুলতে চাই সেটা সম্পর্কে আমাদের কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্য না থাকা।
(কারণ সমরিক বাহিনীতে সকলের যাওয়ার আগ্রহ হবে সেটা চিন্তা করার কোন কারণ নয়)
২। দেশ থেকে ছেঁকে নিয়ে আসা সব চেয়ে মেধাবী ছেলেমেয়েগুলো মেধার প্রতি সুবিচার করতে না পারা।
৩। বয়সন্ধি কালের কিশোর/কিশোরীদের গড়ে তোলার ব্যাপারে কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকা। (যেটা যেকোন আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য খুব জরুরী)
৪। ক্যাডেট কলেজ সিষ্টেম ভালো শিক্ষকদের আকৃষ্ট করতে পারছেনা (এখানে বেতন কাঠামোই সবচেয়ে বেশী দায়ী)।
৫। আমরা এক্স ক্যাডেট এসোসিয়েশন গুলোর কলেজের প্রতি দায়বদ্ধতা বাড়ানোর আরও অনেক সুযোগ রয়েছে।
এছাড়াও আরও অনেক কিছু আছে যেখানে হয়তো তোমার সাথে আমার মতামত সম্পূর্ণ মিলবে না ... সেসব না হয় কোন একদিন চা এর কাপে আলোচনা হবে ...।
তবে আমি নিশ্চিত যে তোমার মতো এক্স ক্যাডেটদের যদি কলেজর প্রতি চিন্তা, লেখনী এবং দায়বদ্ধতা অব্যাহত থাকে তাহলে আমরা হয়তো অনাগত ক্যাডেটদের জন্য আরও ভালো কিছু রেখে যেতে পারবো ।
মোবাশ্শির
সালাম ভাইয়া। আমি যদি ভুল করে না থাকি তবে আপনি বর্তমানে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের এডজুট্যান্ট। আপনার ব্যাচমেটকে নিয়ে লেখা আবেগ ধরে দেয়া একটি পোস্টও আগে পড়েছিলাম। আপনার বিভিন্ন গঠনমূলক উদ্যোগে সামিল না হতে পারলেও শ্রদ্ধা করেছি মন থেকেই। আপনার মন্তব্যে তাই সম্মানিত বোধ করলাম। আপনি যে সময় নিয়ে ধৈর্য ধরে এত বড় লেখা এবং কমেন্টস্ট্রীম পড়েছেন সেজন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। সেই সাথে দেখলাম আমার কলেজের দুই ছোট ভাইও বছর দুয়েক আগে মন্তব্য রেখে গিয়েছিলো। নানা ব্যস্ততায় ভারচুয়ালে টাইম দেয়া হয় না বলেই হয়তো চোখ এড়িয়ে গেছে।
কিছু ক্ল্যারিফিকেশন দরকার। এই পোস্ট লেখার সময়কাল আজ থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর আগে। এই সময়কালে গঙ্গা যমুনায় অনেক জল বয়ে গেছে। সেই সময়ের ক্লাশ সেভেন এখন ক্লাশ টুয়েলভ হয়ে গেছে। আমার নিজের বয়সও বেড়েছে চিন্তার ভিউ পয়েন্টেও পরিবর্তন এসেছে। এই পোস্ট আজকে পড়ে আমার মনে হয়েছে, পোস্টে আগি যেসব নাম ব্যবহার করেছি তা ব্যবহার করা অনুচিত হয়েছে। আসলে যখন এ পোস্ট লেখা হয় তখন সিসিবি আমাদের ঘরোয়া আড্ডার মতনই ছিলো। তাই ক্যাজুয়ালি অনেক কিছুই বলে ফেলেছি। আর এই পোস্ট টা ছিলো মূলত আরসিসির একটি দুঃখজনক ঘটনার প্রতিক্রিয়া পোস্ট।
তবে এখন লিখলে হয়তো আরো ফরম্যাল ও একাডেমিক ওয়েতে এপ্রোচ করতাম। তবে আপনার কথাটাও ভালো লেগেছে। মূলত এক্স ক্যাডেট এসোসিয়েশন গুলোর দায়বদ্ধতা বাড়ানো একটা ভালো পদ্ধতি হতে পারে। অবশ্যই ক্যাডেট কলেজ কীভাবে চলবে তাতে তাদের কোন প্রভাব থাকবে না, তবে কলেজের সামগ্রিক মান উন্নোয়নের পদক্ষেপ নিতে কর্মকান্ড বাড়াবার কথা তারা ভাবতেই পারে।
কলেজে স্যারদের সাথে ক্যাডেটদের সম্পর্ক এখন কেমন জানি না। তবে আমরা সবাই এ ব্যাপারে এই আখোচনায় একই লাইনে ছিলাম যে শিক্ষকতার পেশাকে আরো আকর্ষণীয় করতে হবে।
আগেই বলেছি দ্বিমত এই লেখার সাথে আমার নিজেরই হয়তো আছে আজ পাঁচ বছর পরে (মূল সুরে নয় অবশ্যই), তাই মত দ্বৈততা থাকতেই পারে। বরং এই লেখার মূলভাবটায় আপনার পয়েন্ট অফ ভিউ আমার চেয়ে আরো ক্লিয়ার কারণ আপনি একেবারে প্রত্যক্ষভাবে ক্যাডেট অথরিটি দুই নিয়ে কাজ করেছেন।
দেশের বাইরে থাকায় আড্ডার আমন্ত্রণ এখনই নিতে পারলাম না (দেশে থাকলে নেক্সট যেদিন স্পেশাল ডিনার হইত চলে আসতাম)। তবে স্পেশাল ডিনার না হোক, এই বিষয়ে আপনার সাথে সামনাসামনি কথা বলতে পারব কখনো এমন আশা রাখি।
নিরন্তর শুভকামনা।
আমিন তোমার উত্তরের জন্য ধন্যবাদ।
আমি আসলে খুব আগ্রহ নিয়ে এই ধরনের লেখাগুলা পড়ি। কারণ এর ভেতর থেকে আমাদের প্রশাসনিক দুর্বলতাগুলা বুঝা যায়। আমার মনে হয় যে কাঠামোগত উন্নয়ন এর জন্য আগে দুর্বলতাগুলা চিহ্নিত করা জরুরী। কিছু কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা করি কিন্তু সেটাতে কতোটুকু লাভ হবে সেটা বলা মুশকিল।
ভালো থেকো .....
🙂 🙂 🙂 🙂
তোমার মন্তব্য পড়ছি ক'দিন ধরে, আমিন। এবার তোমার তরতাজা একটি লেখা পড়তে মন চাইছে, ভাইয়া!
ওয়েলকাম ব্যাক টু সিসিবি 😀
আপনার সাথে মনে হয় আগে ব্লগে ইন্টারএ্যাকশন হয় নি। সালাম আপু।
আমি আসলে কখনোই হারিয়ে যাইনি সিসিবি থেকে। তবে কিছু বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতেই ফেসবুক ব্লগ ইত্যাদিতে বেশি সময় দেওয়া থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করি। সিসিবিতে সব সময়েই চোখ কান খোলা রাখি।
অনেক কাল থেকেই খুব স্বতঃস্ফুর্তভাবে লেখা হয় না। অনভ্যাসে বিদ্যানাশ হয়ে যাবার মত অবসথা।
কমেন্টে আপনার আন্তরিকতাটুকু সাদরে গৃহীত হল। সিসিবির সিনিয়রদের প্রশ্রয়েই আবজাব লেখার সাহস করি। চেষ্টা করবো একটা কিছু লেখবার জন্য।
শুভকামনা।