একঃ
জীবনে প্রথমবার বই কিনেছিলাম ঊনিশশো নব্বইয়ের ডিসেম্বরে -বড় আপার বার্ষিক পরীক্ষা শেষে। ‘বর্ণ পরিচয়’ নামের সে বইয়ের প্রথম বাক্যটায় আঙুল রেখে বড় আপা বলতো- “বল্। অ-তে অজগর। অজগরটি আসছে তেড়ে।” আমি বড় আপার আঙুল রাখা ছবিটায় তাকাতাম- দেখতাম, বিদঘুটে একটা সাপ অ-এর দিকে ছুটে যাচ্ছে। মনে হতো, সেই বিদঘুটে অজগর অ-এর গায়ে এক্ষুণি আঘাত করবে। অ-এর জন্য আমার মন কেমন করে উঠলে বড় আপাকে বলতাম, “আপা, এই সাপটা কি অ-কে খেয়ে ফেলবে?” বড় আপা হাসতো। বলতো, “অক্ষর কি কেউ খেতে পারে, বোকা ছেলে?
বর্ণমালার বইটা কেনার পর থেকে আমার দিন কাটতো তাকে নিয়েই। শব্দ কিংবা বাক্য শিখতে তখন অনেক বাকি, তাই আমি শুধু অ আ ই উ-এর দিকে তাকিয়ে থাকতাম। এরই মাঝে বড় আপা অ-আ থেকে শুরু করে ক-খ সবাইকে আমার হৃদয়ে গেঁথে দেবার জন্য নতুন এক পদ্ধতি আবিস্কার করে ফেললো। বললো, “প- তে পুকুর। পুকুর পাড়ে একা একা যেতে নেই। দ- তে দাদু। দাদুর সব কথা শুনতে হয়। ব- তে বৃষ্টি। বৃষ্টতে ভিজলে অসুখ করবে।” বড় আপার এ পদ্ধতি আমার খুব মনে ধরে যায়। সকালে ঘুম থেকে জাগবার পর থেকে রাত পর্যন্ত আমি চারপাশে শুধু অক্ষর খুঁজি- বর্ণ খুঁজি আর বাক্য বানাই। র- তে রেলগাড়ি। রেলগাড়ি কত্ত লম্বা! দ- তে দুপুর। দুপুর বেলা না ঘুমালে মা বকবে। ব- তে বিকেল। বিকেলে খেলতে যাবার সময় যখন দাদু বলতো, “সন্ধ্যার আগে বাড়ি ফিরিস।” তখন আমি মনে মনে বলতাম, সন্ধ্যা হয় স- তে। আইসক্রিম মানে আ, কাগজের নৌকো মানে ক, ভাত মানে ভ, ভূত মানে ভ, পাশের বাড়ির যে মেয়েটা আমার খেলনা বন্দুকটা পুকুরে ছুঁড়ে ফেলেছিল- সেই শিউলি মানে শ! এভাবে বাংলা বর্ণমালার প্রত্যেকটা অক্ষর আমার ভীষণ আপন হয়ে যায়।
এক একদিন যখন ছোট চাচার বুড়ো আঙুল ধরে নদীর ধারে বেড়াতে যাই, আমি বলি- “চাচা, জানো নদী কী দিয়ে হয়?” ছোট চাচা না জানার ভান করতো। বলতো,” কী দিয়ে?” আমি বলতাম, “এটাও জানো না। নদী হয় ন-তে।” ছোট চাচা হেসে বলতো, “তুই সব জানিস? বলতো এ- তে কী হয়?” আমি ভেবে বলতাম, “এ-তে এরোপ্লেন। এরোপ্লেনটা যাচ্ছে ওড়ে। এ তে…. এ তে….”
এরপর বছর কয়েক পরে একদিন জানতে পারলাম, এ- তে একুশ। একুশে ফেব্রুয়ারি!
দুইঃ
সেবার আমাদের স্কুলে একুশে ফেব্রুয়ারিতে একটা দেয়াল পত্রিকা প্রকাশিত হলো। মূলত সেই দেয়াল পত্রিকার জন্য লেখা তৈরি করতে গিয়ে আমি মনেপ্রাণে একুশকে প্রথমবারের মতন অনুভব করেছিলাম। বাবা যেদিন বুঝিয়ে বললেন, বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারিতে কী হয়েছিল, সেদিন খুব শীত পড়ছিল- মনে আছে। বাবার কাছ থেকে একুশের গল্প শুনতে শুনতে অনেক রাত হয়ে আসে- মা আমাকে ঘুমোনের জন্য ডাকতে এলে আমার মনে হলো- মা আমাকে যে ভাষায় ঘুমাবার জন্য রোজ ডাকে সে ভাষার জন্য কিছু মানুষ নিজেদের প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছিল!
সে শীতের রাতে বাইরে কুয়াশার তুচ্ছ আবরণ ভেঙে চাঁদটা উঁকি দিচ্ছিল। বিছানায় শুয়ে আমি অনেক রাত পর্যন্ত জানালার বাইরে তাকিয়ে ছিলাম। যে চ- তে চাঁদ- যে ক- তে কুয়াশা যে শ- তে শীত যে ব- তে বাবা যে ম- তে মা- যে অক্ষরগুলো- যে বর্ণমালা আমার হৃদয়েরও খুব কাছে বাস করে তাঁদের সম্মান তাঁদের অধিকার রক্ষার জন্য অসামান্য কিছু মানুষ নিজেদের রক্ত বিসর্জন দিয়েছিল!
সে রাতে বাইরে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আমার হঠাৎ মনে হয়েছিল- জানালার শিকগুলোর পেছনে ঐ চাঁদটা রক্ত বর্ণ ধারণ করেছে- যেন একটা শহীদ মিনার আমার চোখের সামনে গড়ে উঠলো মাথা উঁচু করে। কুয়াশা ভেদ করে আমি যেন দেখতে পাই ভার্সিটিতে পড়ুয়া আমার দাদাভাইয়ের বয়েসী কয়েকজন মানুষ হাত মুঠো করে স্লোগান দিচ্ছে “রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই!” আর হায়েনার মতন ভযংকর কিছু লোক তাঁদের দিকে বন্দুক তাক করে আছে। কিন্তু স্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে চলা মানুষগুলোর চোখে মুখে কোন ভয়ের চিহ্ন নেই। কী অদ্ভূত সাহস তাদের চোখে! আমার বর্ণমালার জন্য কী ভয়ানক ভালোবাসা তাদের কণ্ঠে!
তিনঃ
ভাষা আন্দোলনের আজ ষাট বছর পেরিয়ে যাচ্ছে, সময়ের হিসেবে খুব একটা দীর্ঘ কি? জানি না। তবে অনেক বদলে গেছে সবকিছু।
যে অনুষ্ঠানের শুরু হয় “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি দিয়ে” সে অনুষ্ঠানের অলংকরণের জন্য আমরা এখন ভিনদেশী কিছু প্রাণী ভাড়া করে নিয়ে আসি- হায়েনাদের সেই কুৎসিত ভাষার মতনই অপর এক ভাষায় চিৎকার করবে বলে। হায়েনাদের সেই কুৎসিত ভাষার সহোদরা এক ভাষায় আমাদের তরুণ তরুণীরা পরস্পরকে প্রেমের বার্তা পাঠায়। স্কুলের সামনে আড্ডা দেবার সময় আমাদের নারীরা পরস্পরকে বলে, “ভাবী। আপনার মেয়েটা কী সুইট করে হিন্দী বলে।” যে ভাবীদের এ কথা বলা হলো তাদের মুখে গর্বের হাসি ফুটে ওঠে “হুঁ। ঠিক তাই। আমিও তো মাঝে মধ্যে ওর সাথে হিন্দীতে আটকে যাই।” আমাদের বেতার টেলিভিশনে রবীন্দ্রসংগীত হয়ে যায় “ট্যাগোর সং” কথোপকথনের মাঝখানে দুই একটা ইংরেজি বাক্য জুড়ে দিয়ে আমরা তৃপ্তির হাসি দিই- “দেখেছ? আমিও কম ফ্যালনা নই!”
আমি এখন মাঝে মধ্যে কুয়াশায় জানালার পিঠে চাঁদ নিয়ে বানানো আমার কৈশোরের সেই শহীদ মিনারের কাছে যাই। দেখি বায়ান্নর সে শহীদেরা- যারা হাসিমুখে মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছিল বাংলাকে ভালোবেসে, তাঁদের মুখরেখায় আজ কী গভীর এক কষ্ট খেলা করে। আমার লজ্জা হয় খুব। বলি, “রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার- আমাদের ক্ষমা করে দিন। আপনাদের পবিত্র রক্তে ভেজা যে বাংলা ভাষা- তার মর্যাদা আমরা রাখতে পারছি না। ”
শীতের রাতে জানালার বাইরে কুয়াশার দিকে তাকিয়ে আমি রফিক সালাম বরকত জব্বার শফিউলদের বেদনাহত মুখ দেখতে পাই। আমার মনে হয়- বোকা ছেলেটা খুব একটা ভুল বলেনি সেদিন তার বড় আপাকে- বর্ণ পরিচয় বইয়ের প্রথম পৃষ্ঠার দিকে তাকিয়ে।
এক বিদঘুটে ভিনদেশি অজগর আমার দুঃখিনী বর্ণমালার দিকে ক্রমশ তেড়ে আসছে।
এই ছেলেটা দীর্ঘ ২ বছর পর আসল। একে কি আরেকবার পাঙা দেওয়া যায় না।
খুব সুন্দর লাগছিল প্রথম দিকে। তিনে এসে আর ভাল লাগল না। যত ভাল লেখাই হোক বিষয়টা এতটা সত্যি ভাল লাগার কোন উপায় নেই।
অজগর কে রোখার উপায় নেই??
তপু ভাই, দুই বছর পর পর যদি এমন একটা করে লেখা দেয়, তাহলে ঠিকাছে, তাইই সই 😀
স্যাম ম্যাডাম যখন দুই বছর পর পর লেখার সার্টিফিকেট দিয়াই দিল- তখন আর সমস্যা কী? দুই বছর পর পরই লিখুম। 😀
অসাধারন ::salute:: ::salute::
এ অজগরকে রোখার দায়িত্ব আমাদের সকলের, প্রয়োজনে :gulli:
"আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"
ধন্যবাদ।
চমৎকার লাগলো ভাইয়া। ::salute::
ধন্যবাদ
:thumbup: ::salute::
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
ধন্যবাদ.
মহিব: এতো কম লিখো কেন তুমি? অভিবাদন তোমাকে। ::salute::
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
লেখা আসে না। 🙁
২০১০ এর পরে এটা প্রথম পোস্ট। পাঙ্গা লাগানো দরকার ছিলো। 🙂
লেখাটা অদ্ভুত সুন্দর। অদ্ভুত প্রকাশ। ব্যাপার হইলো বাস্তবতা এতটা চেপে বসেছে এখন শুধু লেখায় মুগ্ধতাতে আর অভিভূত হই না। আমাদের জাতিগত হীনমন্যতা দেখে বলার ভাষা পাই না। যখন আমার নিজের আশেপাশে বিজাতীয় ভাষায় উদ্ভট প্রয়োগ দেখি যখন নিজেদের ভালো লাগায় বাংলাকে লুন্ঠিত হতে দেখি, তখনও চুপ করে থাকি ভদ্রতার খাতিরে। রূঢ়ভাবে কখনৈ বলা হয় না সত্যটা। আমার মনে হয় সেই অজগরকে থামাতে এই অপ্রিয় কথাগুলোকে একচুয়াল লাইফে বলার প্র্যাকটিস করতে হবে।
লেখা প্রিয়তে গেলো।
সেটাই।
কিন্তু একুশে ফেব্রুয়ারি চলে গেলে কথাগুলা আস্তে আস্তে ঝাপসা হয়ে আসবে।
🙁
অবশেষে ঘরে ফিরিলেন :hug:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
হঠাৎ করেই আজকে এই লাইনগুলো চোখে পড়লোঃ
লোডশেডিং-এর রাতে আমি হাঁটি... সিগারেটের তীব্রতা শেষ হয়ে আসে একসময়...
চাঁদের আলোর সর যাদের জন্য- এই রাস্তায় নেমে আসে...সেইসব
শিশুরা হাতে রিং চিপসের টুকরো নিয়ে লুকোচুরি খেলে...
বাবা'র বুড়ো আঙুল ধরে হেঁটে চলা সেই রাত আবার আমার চোখে আসে...
তিন টাকা দিয়ে কিনে দেওয়া একটা রিং চিপস...
আমি আর আমার ছোটবোনের পৃথিবী পাওয়া...
লোডশেডিং-এর রাত আবার শেষ হয়ে আসে...
সেইসব শিশুদের দিকে তাকিয়ে আমি বুঝে যাই...
তিন টাকা দিয়ে পৃথিবী পাওয়া আমার হবে না... আর কোনদিন।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
কই পাইলা এইসব ফালতু লাইন? 🙂
কামব্যাক এমনই হতে হয়!
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
কামব্যাক একটু খারাপ হয়ে গেল- বুঝলাম। 🙂
:boss:
🙂
তোমার লেখার প্রশংসা করবো না, সম্ভবত এটা তুমিও জানো এবং শুনতে শুনতে নিশ্চুই বিরক্ত হয়ে গেছো যে তোমার লেখা কত সুন্দর। 🙂 পরিবারের সুখী সুখী সময়গুলো যেভাবে লেখায় তুলে আনো এবং রিলেট করো তা নিঃসন্দেহে আইসক্রীম খাওয়ার দাবীদার করে তোলে তোমাকে।
ভাষার ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তায় আছি। ভাষা পরিবর্তন হবেই। আমরা যতই শুদ্ধ করে কথা বলি না কেন, নোয়াখলীর মানুষ তো পানি কে হানি বলবেই। এটা 'দোষ', না 'কৃতিত্ব' এটা নিয়ে ব্যাপক চিন্তায় আছি। আর আমি যেভাবে খাইসি, গেসি বলি, সেটা শুনলে আসাদুজ্জামান নূর হার্ট এটাক করবেন। ঠিক আমি যেমন হার্ট এটাক করি আমার ছোট ভাই যখন বলে, 'লইয়া যাইসস'।
ডিজুস পোলাপান নিয়ে আজকাল বড় ভয়ে থাকে সবাই, কিন্তু ঈশ্বরচন্দ্র যখন ছোট গল্প লেখা শুরু করেছিলেন তখন তিনি তদানীন্তন ডিজুস ছিলেন, রবীন্দ্রনাথও ছিলেন তখনকার সমসাময়িক ডিজুস, বঙ্কিমচন্দ্র রবীন্দ্রনাথের লেখা দেখে নাক কুঁচকাতেন প্রথম দিকে।
তাহলে আসলে মানদন্ডটা কোথায়?
আজকে একজন স্ট্যাটে কিছু ইংরেজী শব্দ ব্যবহার করেছেন, বাংলা হরফেই, তাকে আরেকজন এসে উপদেশ দিলো শব্দগুলো অনুবাদ করে বাংলা শব্দ ব্যবহার করতে। স্পষ্টতই হিপোক্রেসী লাগল। আজকে ২১ না হয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি হলে এই কথা আসতও না।
এটা নাহয় ছোট হিপোক্রেসী, যেটা সহজেই ধরে ফেলা যায়। কিন্তু আমি নিজেই যে হিপোক্রেসী থেকে বেরোতে পারছি না। আমি আসলে গ্লোবাল না লোকাল? আমি কোনদিন চন্দ্রবিন্দু, ভূমি শোনা বন্ধ করতে পারব না, আমি আসলে রবীন্দ্রনাথকেও ছাড়তে পারব না। কিন্তু আমার পাশের বাসার মহিলা হিন্দী সিরিয়াল দেখলে আমার ব্রহ্মতালু জ্বলে ওঠে।
আবার সেই মহিলার রুচি তৃপ্ত করে, এমন কোন 'বাংলাদেশী' পণ্য আমি তাকে দিতে পারছি না। এমন সিনেমা আমি তাকে দেখাতে পারছি না যাতে করে তার হালকা সময় কাটে। এটা নিয়ে শান্তাপার বোধহয় কিছু লেখা আছে, তাতে আরও বিশদ করে সমস্যাটা তুলে ধরা।
তারপর বাণিজ্যিক পণ্যের কথা, দেশীয় পণ্য হিসেবে কষ্ট করে হলেও টেলিটক ব্যবহার করেছি বহু বছর। কিন্তু একটা সময় এসে আর পারা গেল না। ফোনে যদি কথাই না শোনা যায় তাহলে দেশপ্রেম ধুয়ে তো আর পানি খাবো না। পহেলা মার্চের ভারত বন্ধ থেমে আছে বাংলাদেশের দুকোটি ফেইসবুক ইউজারদের মাঝে। কোটি কোটি মানুষ থাকে ভারত বাংলাদেশ বর্ডারে, যারা এই কনসেপ্ট কোনদিন বুঝবেনা, যেমন আমরা বুঝবনা তাদেরটা। কারণ তারা কম পয়সার ভারতীয় শাড়িই পড়বে, বাংলাদেশী শাড়ি পরতে বললে অবাক হয়ে তাকিয়ে বলবে, 'কিন্তু তার যে দাম বেশী?'
দুর্দান্ত মন্তব্য। :clap:
খাইসি, গেসি, পড়সি বললে আমার সমস্যা নাই। সমস্যা হইলো খাইসি হ্যায়, গেসি হ্যায় কিংবা পড়সি হ্যায়-তে। (আসল হিন্দী জানি না। আমার কাছে হিন্দী মানেই লাস্টে 'হ্যায়' জাতীয় কিছু একটা থাকে। এখানে হিন্দীটা বুঝাইতে চাইলাম।) 🙂
আরেকটা জায়গায় সমস্যা আছে। সেটা হইলো- "আধ ঘন্টা পরে আসবো।" কে যখন আমরা অকারণে "হাফ এন আওয়ার পরে আসবো" বানিয়ে দেই। (সম্পাদিত)
যথারথ বলেছ সামিয়া
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
সিসিবির পাতা খুলে মহিবের নামও দেখা গেল 😮 😮 😮
তোমার লেখা সবসময়ের মতোই দূর্দান্ত লাগলো। ঐ বিদ্ঘুটে বিদেশি অজগরকে দোষ আমি দেই না, দোষ আমাদের নিজেদের। আমাদের একদল অজগরকে আপ্যায়ন করে জাতে উঠার চেষ্টা করছে, আরেক দল আমাদের বর্ণমালাকে ধীরে ধীরে আরো অসুস্থ, রুগ্ন করে বাকিদেরকে ঐ অজগরের দিকেই ঠেলে দিচ্ছে।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
দোষ আসলেই- আমাদের।
হেই মহিব, আছো টাছো কেমন? চট্টগ্রাম ছাড়ছি অনেক দিন আগে, থাকার সময়ই দেখা করতে পারিনাই আর তো এখন? কি কর-টর? শুনলাম ইউনিতে ক্লাস নিচ্ছ, মাস্টার্সের প্ল্যান নাই?
একটা ভালো ইউনির ডিগ্রী নিয়ে রাখ, বাইরে থাকতে না চাইলেও, কাজে দিবে। এখন বুঝতে পারি।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
দোয়া কইরেন। দেখি কপালে কী আছে।
মহিব তোমার লেখাটা খুব সুন্দর হয়েছে। তোমার আবেগটাও মূল্যবান। পাশাপাশি সামিয়ার কথাগুলোও বিবেচনা করতে হবে। ভাষা, সংস্কৃতি, দর্শন সবকিছুই চলমান। বাংলা ভাষা একদিনে বাংলা ভাষা না, হাজার হাজার বছরের প্রবাহ এই ভাষাকে বর্তমানের অবস্থানে এনে দিয়েছে। দেশীয় ও সংস্কৃত ভাষার সন্মিলনে সৃস্টি হয়েছে নতুন একটি ভাষা - বাঙলার আদিরূপ। পরবর্তিতে এখানে যুক্ত হয়েছে আরও অনেক বিদেশী শব্দ। কয়েক হাজার ফার্সী শব্দের আগমনে আমাদের ভাষার দৈন্য বৃদ্ধি পায়নি বরং পেয়েছে সমৃদ্ধি।
বিষয়টা ঠিক এখানে নয়। বাইরে থেকে গ্রহণ করায় কোন বাধা নেই। তবে তার গ্রহণযোগ্যতাটি বিবেচনা করতে হবে। সবকিছুরই একটি সীমারেখা থাকে, সেই সীমারেখাটি ঠিক করতে হবে।
বাইরে থেকে মানুষ তখন নেয়- যখন তার নিজের থাকে না- যখন বাইরেরটা প্রয়োজন পড়ে এবং যখন বাইরেরটা তার কাছে যা আছে সেটার চেয়ে ভালো। কিন্তু সম্পূর্ণ বিনা প্রয়োজনে বাইরেরটা নেয়ার দরকার আছে বলে মনে করি না। 🙂 (সম্পাদিত) (সম্পাদিত)
হুম
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
🙂 .
এক এর শেষ পারা'র পর যখন গেলঃ
... একেবারে :duel:
মন্তব্য করার আগে পর পর চারটে ক্লিক করেছি - রেট, প্রিয়, Like আর Share :boss:
🙂 🙂
ভাল লেখা। যদিও কিছুটা ভিন্নমত।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। 🙂
মাঝে মাঝে মনে হয় সালাম, বরকত, রফিক...দের কপাল ভাল যে ৬০ বছর এখনো আমরা তাঁদের কথা, তাঁদের আত্মত্যাগের কথা মনে করে রেখেছি... 🙁
আজো '৫২ এর ভাষা সৈনিকদের, '৭১ এর মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা হয় নি। রাজাকারদের বিচার চলছে কচ্ছপের গতিতে...সাক্ষীই নাকি পাওয়া যাচ্ছে না!! '৭৫, '৮১, '৯০ কাউকে কিছু শেখাতে পারে নি...আজো নাকি...
রাজনীতিবিদদের ভুল ত্রুটি আমরা পাঁচ বছরের বেশি মনে রাখতে পারি না...আর তারা তো তাদের কথা পাঁচ দিনও মনে রাখতে পারেন না! পিলখানার মতন ঘটনা ভুলতে আমাদের দুই/তিন বছরের বেশি লাগে না...এরপর ধরুন...ধরুন...না ছেড়ে দিন, কি আরো বলতে চাচ্ছিলাম-ভুলে গেছি...
মহিব, আরেকটু কম গ্যাপ দিয়ে নিয়মিত লিখিস না কেন??
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
এই বাংলাদেশই আমাদের নিয়তি হয়তো। 🙁
অসাধারণ। ঝরঝরে উপস্থাপনা। প্রিয়তে রাখলাম।
চাঁদ ও আকাশের মতো আমরাও মিশে গিয়েছিলাম সবুজ গহীন অরণ্যে।
ধন্যবাদ..
যাক ফিরছিস তাইলে!!!
লেখালেখিটারে চালু রাখ। তোর কাছে অনেক অনেক প্রত্যাশা...............
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
ধন্যবাদ। 🙂
সামিয়ার মতন আমিও মনে করি, যুগের সাথে সাথে ভাষার রুপ পরিবর্তন হবেই। আগের দিনে শীতকাল আসলেই পিঠা বানানোর ধুম পরে যেত মায়েরদের মধ্যে। এখন ধুম পরে পিঠা উৎসবের। বাংলা ভাষারও রূপ-প্রকৃতি প্ররিবর্তন হচ্ছে ও হবে, তবে "পিঠা উৎসব" করার মত অবস্থা যেন করা না লাগে।
আর একটা জিনিস আমি মুহিবের মতনই খুব ভয় পেয়েছিলাম, যখন হঠাত করে আমার চার বছর বয়সী মেয়ে একদিন বলে উঠল, "মা, তুম মুঝকো কিু ইত্না মুস্কিল মে ডাল দেতিহো"।
ইংরেজী স্কুলগুলোতে আজকাল ইংরেজী ও বাংলার পাশাপাশি ফ্রেঞ্চ সিখানো হয়, ও'লেভেলে ফ্রেঞ্চ ভাষাটাকে সাবজেক্ট হিসেবেও নেয় অনেকে। ভাষা জানতে কোন মানা নাই, আর অন্য ভাষা জানবে, তাতে আমার কোন সংকীর্ণতা নাই, কিন্তু এমন আগ্রাসন আমি মেনে নিতে পারলাম না। সবাই আমাকে খুব ছোটমনের ভাবলেও ভাবতে পারেন, কিন্তু সেদিন থেকে আমার বাসায় হিন্দি সব চ্যানেল বন্ধ।
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
অনেকদিন পর মহিব... নস্টালজিক হয়ে গেলাম... পরের লেখা পাওয়ার জন্য যেন আবার আগামী একুশে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে না হয়। 😀
ভারতের অনেকগুলো প্রদেশই মনে হয় হিন্দির চাপে নিজের ভাষা হারাতে বসেছে। ওদিকে আবার ইংরেজির চাপে স্বয়ং হিন্দি ভাষার অবস্থাই কতোটা ঠিক আছে জানি না। আমার তো মনে হয়, উপমহাদেশের কোন একটা ভাষার যদি চলিত, লেখ্য সর্বক্ষেত্রে শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ থাকে তাহলে সেটা বাংলা ভাষা। আমাদের শিক্ষা মাধ্যম বাংলা হওয়াটা খুব বড় একটা পাওয়া (যদিও দুঃখের বিষয় যে ক্যাডেট কলেজগুলো ইংরেজি সংস্করণ হয়ে গেছে)।
তোরা নিয়মিত লিখলে অজগর এই বাংলাকে আর খেতে পারবে না...