নোটঃ ফেসবুকে প্রকাশিত। মুঠোফোনের বাংলায় অভ্যস্ত নই বলে বানান ভুল আছে। ঠিক করতে পারছি না। দুঃক্ষিত।
বছর পাচ ছয়েক আগে মামা কোরবানী ঈদের পর একটা খাসী কিনে আনলেন। পরের বছর ঈদে কোরবানী করবেন বলে। খাসী উনি পালন করা শুরু করলেন এমন ভাবে যেন খাসী নয় উনার আরেকটা সন্তান বড় করছেন। মামী নাম দিয়ে দিলেন পুটু। আমি বাড়িতে গিয়ে দেখলাম পুটু শুধু সাদা ভাত খায় না, যে কোন তরকারী দিয়ে মাখিয়ে দিতে হয়। মামী অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে সে দায়িত্ব পালন করতেন। নিজের প্লেট থেকে আলাদা করে খাবার দিতেন। আর পুটু সেই খাবার খেয়ে আয়েশ করে সেখানেই শুয়ে পড়ত। রাতে গোয়ালে না ঘুমিয়ে ঘুমাত মামা মামীর বিছানায়। ইচ্ছামত যেখানে খুশি, জায়গা দখল করে। কেউ উঠাতে গেলেই শিং তেড়ে আসত। মামা মামী ক্ষান্ত দিয়ে ওর পাশে বিছানায় একটু জায়গা করে নিয়ে ঘুমাতেন। রাতে পুটুর হিসু করতে হলে উঠে বাইরে গিয়ে হিসু করে তারপর এসে আবার ঘুম। আর হ্যা দিনের বেলাতেও ও ফ্যান ছাড়া ঘুম হতো না। অতিথি আসলে দেখা যেত সোফাও দখল হয়ে আছে। মামী বাইরে গেলে পিছে পিছে সর্বক্ষণ পুটু ঘুরঘুর করত।
এরমধ্যেই ঈদ চলে আসল। আমার ধার্মিক মামা ঘোষনা করলেন, পুটুকে কোরবানী করা হবে। সংসদ হলে প্রধান মন্ত্রি মামাকে বিরোধী দলের তোপের মুখে পদত্যাগই করতে হত। সবাই এক বাক্যে ‘না’। সে বছর মামা বাজার থেকে কিনেই কোরবানী করলেন। পরের বছর আবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। বিরোধী দল এবার একটু নমনীয়। পুটুকে কোরবানী করা হবে না। বাজারে বিক্রি করে আসতে হবে। মামাও রাজী। পুটুকে গোসল করে বাজারে নিয়ে যাবার দিন সম্ভবত প্রথম গলায় দড়ি পড়েছিল। হাটে যাবার পর বাসায় কান্নাকাটি। মামা বিরক্ত হয়ে পুটুকে নিয়ে আবার বাসায় আসলেন। সেবারো মামা বাজার থেকে কিনে কোরবানী করলেন।
তৃতীয়বারের মত মামার ঘোষনা। এবার আর বিরোধীদল তেমন গাইগুই করছে না। কোরবানীর সময় পুটুকে গলায় ধরতেই পুটু সরল বিশ্বাসে প্রতিদিন কার মত সুরসুর করে চলে আসে। মাটিতে শোয়ানোর পর ও পুটুর চিৎকার চেচামেচি কিছুই নেই। গলায় ছুরি চালানোর পূর্ব মুহূর্তে বার কয়েক চিৎকার দিয়েই শান্ত।
বাসার ভেতরে তখন বিষাদের ছায়া। কেউ কোরবানী দেখতেও বাইরে যায় না। মাংস আসে মামী রান্না করেন আর চোখের জল ফেলেন। মাংস রান্না হয়ে গেলে কেউ আর তা খায় না। কোন ভাবেই কাউকেই এই মাংস খাওয়াতে পারলেন না মামা। একাই উদরপূর্তি করতে থাকলেন। আর মামীর শোক দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে।
পুটু নামে একটা গল্প ও ছিলো ছোটদের বইয়ে।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
কিন্তু পাঠ্যবইয়ের গল্পে ছিল সুখস্মৃতি। পুটু প্রাণে বেঁচে যায়। কিন্তু বাস্তব বড়ই নির্দয়। তাই পুটুর প্রাণ কেড়ে নেয়া হলো! 🙁
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
পাঠ্যবই এর পুটুর কাহিনী ছিলো এক ঈদের।
পরের ঈদে বা তার পরের ঈদে তাকে ছুরির নিচে শুতে হয়েছিলো তো বটেই।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
এমনও হতে পারে যে ঈদের আগেই বা পরেই হয়তো তাকে ছুরির নিচে শুতে হয়েছিলো।
:thumbup:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
জ্বি ভাই। ক্লাস থ্রি কি ফোরের বইয়ে ছিল। 🙂
মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য
ভাল লেগেছে
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
ধন্যবাদ 🙂
মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য
আমাদের সময় ক্লাস ফোরে এই গল্পটা ছিল... তখন তো তখনকার বোধ দিয়ে পড়েছিলাম... এখন কেন যেন অন্যরকম একটা তাৎপর্যের আভাস পাচ্ছি...
মুক্তি হোক আলোয় আলোয়...
ভালো লাগলো ।
🙂
মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য
রিডমিক কি বোর্ড ব্যবহার করলে বানান জানতেও হয় না। দুঃখ প্রকাশ করলেও মাফ পাবি না x-(
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
এইটা তো মনে হয় রিদমিক দিয়েই টাইপ করেছিলাম। 🙁 এইবারের মত ভাই। 🙁
মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য
সেটিংস চেক করে দেখিস, উল্লুক!
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
😛
মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য
এবার ঠিক হইছে ?
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
"কোন ভাবেই কাউকেই এই মাংস খাওয়াতে পারলেন না মামা"
"আর মামীর শোক দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে"
- মানুষের মন!
🙁
মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য