আমরা যে হুজুগে বাঙালি তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বাঙালির হুজুগ নিয়ে গল্প কেচ্ছারও শেষ নেই। শেষ হবেও না। সৈয়দ মুজতবা আলীর গাঁজা নিয়ে একটা মজার গল্প আছে। অনেকেই পড়েছেন হয়তো। যারা পড়েননি তাদের জন্য স্মৃতি থেকে একটু তুলে দিচ্ছি। দেশভাগের পর কোন এক নিয়মের গ্যাড়াকলে পড়ে তৎকালীন পূর্ব বঙ্গ থেকে ভারতে গাঁজা রপ্তানি বন্ধ। (সাধুসন্ন্যাসীদের আবার এই মহার্ঘ বস্তুটি না হলে চলে না। আমাদের লাল মিয়া ওরফে সুলতানের নাকি দৈনিক ৫০০ টাকার গাঁজা লাগতো। এতেই প্রমাণিত গাঁজা সৃষ্টিশীলতার আতুড় ঘর। সৃষ্টিশীলতার আরো বেশ কিছু স্থান আছে বৈকি। যেমন কবিদের আব্বাহুজুর বোদলেয়ার মারা গেছেন সিফিলিসে; জীবন কাটিয়েছেন বেশ্যাপাড়ায়। আমাদের এক মহান কবি, যিনি কিনা মুসলমানদের কবি হিসাবে অধিকতর পরিচিত; (আমি ইচ্ছা করেই তার নাম উহ্য রাখলাম নয়তো তার আসলেই সিফিলিস হয়েছিলো কিনা কিংবা হয়ে থাকলে যেই ডাক্তার তার পরীক্ষা করেছেন সেই সার্টিফিকেট হাজির করতে হবে) এই রাজরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সার্টিফিকেট মানে চরিত্র সনদ আরেকজন দিয়ে থাকেন বিগত দশক ধরে তিনি হলেন প্রিয় তসলিমা নাসরিন। তসলিমা আবার আমাদের আরেক কবির সিফিলিস আছে সেই প্রমাণ পেয়েছেন তাদের বাসর রাতে। হায়রে রুদ্রর ও তবে সিফিলিস ছিল; আর বিয়ের রাতে তা উপহার দিলেন প্রিয়তমা পত্নীকে। যদিও দুষ্টজনেরা বলেন বিয়ের আগেই রুদ্র আর তসলিমা বেশ ঘনিষ্ঠভাবে চলাফেরা করতেন। আমি জানিনা তারা কি বুঝিয়েছেন সেই ঘনিষ্ঠতার মানে??? তবে নারীবাদীরা প্লিজ (সিলেটিরা এক্ষেত্রে বলে তুমার আল্লার দুহাই লাগে) আমি কোনো খারাপ মানে করছি না বা তসলিমার নামে কোন অপবাদের চেষ্টা করছিনা। তিনি নিজেই তার ক, খ, গ, ঘ, ঙ তে বিস্তারিত বলেছেন তিনি কার কার সাথে শুয়েছেন আর কে কে তার সাথে শুতে চেয়েছেন। অবশ্য আমি জানিনা কোন লেখিকা তার সাথে শুতে চেয়েছেন কিনা!!! আমাদের বন্ধুমহলে এখন খুব ঘটা করে চরিত্র সনদ বিলি করা হচ্ছে; দাবিকারীরা বলছেন জেমস বন্ড দ্বারা সত্যায়িত। আমার যদি কোনদিন চরিত্র সনদ লাগে তবে তা হবে তসলিমা নাসরিন দ্বারা সত্যায়িত।
অনেকক্ষণ বাদরের লাফ দিলাম। এবার মুজতবা আলীতে ফেরত যাই। গাঁজা রপ্তানি বন্ধ হওয়াতে গুদামে গাঁজা জমে আছে মণকে মণ। নতুন গাঁজা উৎপাদিত হয়ে, প্রস্তুত হয়ে গুদামে ঢোকার অপেক্ষায়। বাধ্য হয়ে পুরানো গাঁজা নষ্ট করে ফেলতে হবে। কোনো কারণে আলী সাহেব সেখানে উপস্থিত ছিলেন। খুব সম্ভব দায়িত্বরত অফিসার তার আত্মীয় (ভাই?) ছিলেন। আলী সাহেবকে বললেন, চল দেখবি। জীপে করে যথাস্থানে গিয়ে দেখলেন পুরানো গাঁজা জড় করে রাখা হয়েছে পোড়ানোর জন্য। সমগ্র গ্রামবাসীও (নারী, শিশু, যুবক, বৃদ্ধ) হাজির হয়েছে অগ্ন্যুৎসবে যোগ দিতে। মজা শুরু হোলো আগুন লাগানোর পর। বাতাস যেদিকে যায় সমগ্র গ্রামবাসী সেইদিকে দৌড়ায়। বেশিক্ষণ আলী সাহেবের পক্ষে সেখানে অবস্থান করা হয়ে ওঠেনি। তবে ফেরার সময় তিনি জীপে করে ফিরে এসেছেন নাকি হাতির পিঠে করে ফেরত এসেছিলেন তা আর মনে করতে পারেননি। বাতাস তো সব দিকেই দৌড়িয়েছে, আর উনিও তো এক দিকে ছিলেন।
আমরা বাঙালিরা মনে করি গাঁজা খেলেই সুলতান হওয়া যাবে। টি এস সিতে মদ খেলেই রুদ্র হওয়া যাবে। বেশ্যাপাড়ায় গেলেই বোদলেয়ার হওয়া যাবে। অর্শ হলেই রবীন্দ্রনাথ হওয়া যাবে। প্রথাবিরোধী হলেই হুমায়ুন আজাদ হওয়া যাবে। বাংলাদেশে না এসেই আলেকজান্ডার বলেছিলেন, সত্যি সেলুকাস, কি বিচিত্র এই দেশ।” বাঙাল মুলুকে আসলে তিনি হয়তো বাকশক্তিহীন হয়ে যেতেন। তখন হয়তো সেলুকাসই বলতো, “হুজুর কি তবদা মাইরা গেলেন নাকি?”
বাংলাদেশে আমরা আর যাই হোক বিচারপতিদের ভিন্ন চোখে দেখে থাকি। পুরা দেশটা তো পচে, গলে গেছে। ভাবি শেষ আশ্রয়স্থল হল বিচারপতিরা। সেই বিচারপতিরাও যে কতটা নষ্ট, ভ্রষ্ট হতে পারে তার প্রমাণ হচ্ছে স্বাধীনতাপরবর্তী বিচারপতিরা যারা কিনা একের পর এক মঞ্চে আসা এক নায়কদের বুটের ময়লা সাফ করে দিয়েছেন; জিভের ডগা দিয়ে চেটে চেটে উজ্জলতর করেছেন তাদের বুটজুতা।এইসব একনায়কদের আমাদের শ্রদ্ধেয় বিচারপতিরা শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছেন। অতঃপর সেই মহান নায়কের অধীনে গণতন্ত্র রক্ষার ভার নিয়েছেন। হুমায়ুন আজাদের (খুব সম্ভবত আমাদের রাজনীতিবিদগণ বইটিতে সেইসব বিচারকদের পুরা তালিকা পাওয়া যাবে) আমাদের কোন কোন রাজনীতিবিদরা যেমন ঘৃণিত ঠিক তেমনি কোন কোন বিচারপতিরাও তাদের চাইতে কোন অংশে কম ঘৃণার পাত্র নন। ১৯৯০ সালে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হওয়ার পর আমাদের আর এইসব মহান, মহানতর বিচারকদের-প্রধান বিচারকদের (যারা কিনা রুগ্ন গণতন্ত্রকে জলে ভেজানো তালপাখা দিয়ে বাতাস করার মহত্তম বাসনা বুকে করে বাংলার মাটিতে একদিন বিচারপতি হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন) রঙ্গমঞ্চে আবির্ভূত হবার কথা ছিলো না। কিন্তু সেরকম তো হবার নয়। আমাদের এই নমঃশুদ্রদের দেশে আলখাল্লা পড়া কয়েকজন যাদুকরেরা আবির্ভূত হবেন না তাই কি হয়!!! মহান বিচারপতিরা তার যাদুকর্মের কতিপয় সহযোগিদের নিয়ে এসে আমাদের গণতন্ত্র উপহার দিবেন লাল রঙের মোড়কে করে তাই না হলে কি আর হয়!
মাঝে মাঝেই একটা কথা শোনা যায় বিচারালয় কলঙ্কিত হয়েছে। কথা হচ্ছে এর ইজ্জতই বা ছিলো কবে? অনেক মহান মহান কর্ম সম্পাদনের পর মাননীয় আদালত এবার দায়িত্ব নিয়েছে আমাদের প্রিয় ভাষা, প্রাণের ভাষা বাঙলার মান রক্ষায়। এবং কাজটি তারা করেছেন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে।অনেক ধরণের প্রণোদনার কথা শোনা যায়, বোধকরি সবচেয়ে শক্তিশালী প্রণোদনাতেই মহামান্য আদালত বাঙলা ভাষার ইজ্জত রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে। বাঙলা ভাষা নাকি সমূহ হুমকির মুখে; তাও আবার যারা এই ভাষা ব্যাবহার করছেন তাদের দ্বারাই। তাই আদালত আমাদের বলে দিবে আমরা যারা বাঙলায় কথা বলি তাদের মানভাষা কি হবে! যারা বাঙলায় লিখবো তারা কোন ব্যাকরণ মেনে লিখবো! এমনকি যারা মনে মনে বাঙলায় কথা বলবো বা ভাববো তাদেরকেও ব্যাকরণ মেনে চিন্তা করতে হবে! এমনকি আমাদেরকে স্বপ্ন দেখতে হবে প্রমিত বাঙলায়!
আমাদের ভাগ্য যে মহামান্য আদালত রুল বা কিছু একটা জারি করেছেন। অন্তত বিব্রতবোধ করেননি। আমি যখন কোন প্রশ্ন এড়াতে চাই বাথরুমে দৌড়াই, ঠিক তেমনি মাননীয় বিচারকেরা বিব্রত বোধ করেন। পূর্বে শেখ মুজিবের হত্যা মামলায় মাননীয় বিচারকেরা বিব্রত হয়েছেন। নিকট ভবিষ্যতে রাজাকারদের বিচার করতে যেয়ে মাননীয় বিচারকেরা আবার বিব্রত হবেন। মাননীয়েরা বিব্রত হলেও আমরা আপামর জনতা বিব্রত হইনা। ভুল বললাম কি? না আমরাও বিব্রত হই। সেকথা ভিন্ন কোন খানে বলা যাবে।
যারা শুদ্ধ বাঙলায় কথা বলা, বা লিখার জন্য পাগলপারা হয়ে আছেন তাদের বলছি তারা কি কখনো মধ্যযুগীয় বাঙলা সাহিত্য পড়ে দেখেছেন? বুঝেছেন কিছু? সেই লিপি কি দেখেছেন? কিছু বুঝতে পেরেছেন? পেরেছেন, পেরেছেন, কেনো পারবেন না? তারা তো বাঙলায় কথা বলেছেন, বাঙলায় লিখেছেন।
এখানে চর্যাপদ (আদিযুগ)থেকে তুলে দিলাম। আদিযুগের;
উনিশ শতকের মাইকেলের মেঘনাদবধ কাব্যই কি খুব সহজে বোধগম্য
(“এতক্ষণে” –অরিন্দম কহিলা বিষাদে
“জানিনু কেমনে আসি লক্ষণ পশিল
রক্ষঃপুরে ! হায়, তাত, উচিত কি তব
একাজ, নিকষা সতী তোমার জননী,
সহোদর রক্ষশ্রেষ্ঠ ? –শূলী-শম্ভূনিভ
কুম্ভকর্ণ ? ভ্রাতৃপুত্র বাসব বিজয়ী ?
নিজগৃহপথ, তাত, দেখাও তস্করে ?
চণ্ডালে বসাও আনি রাজার আলয়ে ?
কিন্তু নাহি গঞ্জি তোমা, গুরুজন তুমি
পিতৃতুল্য। ছাড় দ্বার, যাব অস্ত্রাগারে,
পাঠাইব রামানুজে শমন-ভবনে,
লঙ্কার কলঙ্ক আজি ভঞ্জিব আহবে)
বা
(সম্মুখ সমরে পড়ি, বীর-চূড়ামণি
বীরবাহু, চলি যবে গেলা যমপুরে
অকালে…)
Meghnadbodh_Kabya_by_Michel_Madhusudan_Dutta
হুমায়ুন আজাদ তার আধার ও আধেয় প্রবন্ধ গ্রন্থটিতে দেখিয়েছেন বাঙলা সংবাদপত্রগুলি কিভাবে ভাষার বিবর্তন ঘটিয়ে চলেছে।
আমরা যদি এই সাইটটিতে যাই তবে বাঙলা ভাষার উৎপত্তি ও আরো কিছু ব্যাপারে কিছুটা হলেও জানতে পারবো।
একইসাথে আমি ডঃ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় এর বাঙ্গলা ভাষা প্রসঙ্গে প্রবন্ধ সংকলনটির কপি দিয়ে দিলাম। নিচে দেখুন
না পারলাম না।বইটির কলেবর আট মেগার উপর। তাই বাধ্য হয়ে লিঙ্ক দিয়ে দিলাম।
আর বাংলাপিডিয়া তেও বেশ সুন্দর করে ডায়াগ্রাম দেওয়া আছে বাঙলা ভাষার উৎপত্তি নিয়ে। দেখুন।
ভাষা হল প্রমত্তা নদীর মতোন। এক বাঙলা ভাষাই না আমরা সারা বাংলাদেশের মানুষ কতরকম করে বলি; জেলা, উপজেলা, গ্রামভেদে কতো বিচিত্রই না এর ব্যাবহার। পশ্চিম বঙ্গের কথা না হয় বাদই দিলাম।
একটা গল্প বলে আজকের মতো লেখা শেষ করি। আমি আর রাসেল তখন একসাথে থাকি। পরদিন ছুটি থাকলে মদ্য নিয়ে দুই ভাই বসি। আকাশে চাঁদ থাকলে পর্দা সরিয়ে দুই ভাই মিলে চাঁদ দেখি আর টুকুশ-টাকুশ করে গ্লাশে চুমুক দেই। রাসেল সেই আধো অন্ধকারেও চমৎকার পেগ বানাতে পারতো। আমার চাহিদা আবার জেমস বন্ডের মতো ভদকা উইথ মারটিনি এবং আরো কিছু ছিলোনা, খুব সরল এক পেগ ঢালা হলে তাতে দুটা বরফ। বরফও আমি খুব সাধারণটা পছন্দ করি; বেসিক ইন্সটিঙ্কট এর সেই ধারালো বরফ আমার লাগে না। রাসেল চাঁদের দিকে তাকিয়ে গান ধরে আবার হবেতো দেখা
বা কতদিন দেখিনি তোমায়।
আর চাঁদ না থাকলে মোমবাতি জ্বালিয়ে গাইতাম তোমায় দিলাম
পরজনমে
বা নাচো কালি
বা গোপন প্রেমের কথা
বা চঞ্চল মন আমার।
সুখের দিন বেশিদিন রইলোনা। এক হাঁটুর কাছের ছোটভাই আসলো বাংলাদেশ থিকা। রাসেল বের করে ফেললো ঐ ছেলে তার ভাইগ্না হয় সম্পর্কে। তো ভাইগ্নারে তো বিদেশী মাল খাওয়ানো লাগে; দেশে থাকতে তো পোলায় বড়জোড় কেরু খাইছে, তো তারে এখন বিলাতি খাওয়াতে হবে, নাহলে মামু কিসের। ইজ্জত বইলা তো কিছু একটা আছে। আমি বাধ্য হয়ে বললাম ঠিক আছে, কিন্তু পিচ্চি মাতাল হইলে খবর আছে। যথাসময়ে পিচ্চি রুমে আইসা ইয়েস বস, ইতং, বিতং কথা শুরু করলো। এক সময় বাইর হইলো পিচ্চি আর আমি একই সিস্টেমের আউটপুট। আর ভাব ধইরা রাখার প্রয়োজনীয়তা দেখলাম না। এক পেগ খাইয়াই তো পিচ্চি আকাশে। আমারে ইংলিশ বানান জিগায়। (কলেজে ১২ তম তে থাকতে ইংরেজি বানান প্রতিযোগিতায় একবার যেতে হয়েছিল, চারটার একটাও পারিনাই; সেই আমারে পিচ্চি ইংরাজি বানান জিগায়) কয় DHAKA বানান কি? এর মধ্যে দুইটা A আছে। দুইটা A আবার একসাথে না, আবার সামনেও না। একটা A মাঝখানে আরেকটা A হইলো সবার শেষে। A যে VOWEL সেইটাও আমারে বুঝাইলো। ইংরাজিতে VOWEL নানাবিধ গুরুত্বসহকারে বুঝাইলো। আমার তো জিনিস কান্ধে উইঠা গেছে পিচ্চির কথা শুইনা। আরেক পেগ পিচ্চির হাতে ধরাইয়া দিয়া রাসেল ওরে বলে, ভাইগ্না অনেক ব্যাকরণ হইছে এইবার একটা গান গাও। হায়রে এতো দুঃখ কপালে ছিল। পোলায় গান ধরছে ঢাকা।
কিছুখণ পর কেউ দয়া করলো। পোলায় কয় বাথরুমে যাইবো। রাসেল কয় ভাইগ্না পারবা তো? পোলায় তো তখন ভাবে পুরা, কয় এইরকম কতো বোতল খালি কইরা দিলাম। আমি মনে মনে কই পিচ্চি দেশে থাকতে কেরুর উপর উঠতে পারো নাই তাও খাইছো বন্ধুর পয়সায়। তো পোলায় বাথরুমে যাওয়ার সাথে সাথে আমি রাসেলের উদ্দেশ্যে চিলেকোঠার সেপাইয়ের স্পেশাল দেওয়া শুরু করলাম। রাসেল কয় একদিনই তো বস মাপ কইরা দেন। আর আপনারই তো ছুডু ভাই। পনের-বিশ মিনিট হয়ে গেছে কিন্তু পিচ্চি ফেরত আসতেছে না। রাসেল বলে, বস একটু দেইখা আসি পোলাডারে। আমি কই থাকুক পইড়া বাথরুমে। যাই হোক অতঃপর দেখা গেলো পিচ্চি বাথরুমের কমোড জড়িয়ে শুয়ে আছে, তার আগে বমি করে মেঝে ভাসিয়েছে। আমার কাছে তেতুল ছিলো (তেতুল আমার খুব প্রিয় ছিল। সেই কাহিনী পরে এক সময়) রাসেল লেবু সরবত আর তেতুল খাওয়াল পিচ্চিকে ঐ রাতে। না গল্প এখনি শেষ না। এর মাস খানেক পর বাংলাদেশ থেকে আমাদের একজনের মামা আসলেন ব্যাবসা সংক্রান্ত কাজে। আবার মামারে নিয়া আড্ডা বসলো। রাসেল আবার মামারে ধুয়া তুলা দিলো, একটা গান ধরেন। তো মামা গান ধরলেন। তো মামা কি গাইলেন তা আজো আমি মনে করতে পারিনা। আমি পুরান দিনের ছবি বা গান নূরজাহানের আনমোল ঘড়ি, ভারতভূষণের বৈজু বাওড়া; তু গঙ্গা কি মৌজ মে
সায়গল
পর্যন্ত গিয়েছি কিন্তু মামা দেখি নেবুচাদনেজার যে গান গেয়ে নেফারতিতির মন জয় করেছিলেন সেই গান গাইছেন।
তবে হাঁ একটা জিনিস মনে হলো পিচ্চি গায় আকাশের গান, আমরা মাটির আর মামু মাটির তলের। আর একেই বোধহয় বলে জেনারেশন গ্যাপ। আমার জন্য মামুর সেই গান খুব জরুরী ছিলো। এখন আমাদের মাননীয় বিচারপতিদের সেই গান শোনাবে কে?
পরিশেষে প্রিয় তৌফিকের র্যাপ গান দিয়ে:
দেশ ও দুর্নীতি
আর মাননীয় আদালত ভাষাকে ভাষার মতো চলতে দিন।আপনাদের যে কাজটি ১ নম্বর, সেই বিচার কাজটি একটু মন দিয়ে করুন।
বাঙ্গালা হরফ, ১৮১৩। চিত্রগ্রাহক-ফয়জুল লতিফ চৌধুরী।
মদনমোহন তর্কালঙ্কারের শিশুশিক্ষা প্রথম ভাগের ৩৪টি ব্যাঞ্জনবর্ণ।
ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয় প্রথম ভাগে নির্দেশিত ৪০টি ব্যাঞ্জনবর্ণ।
আজকের বাংলা/ বাঙলা ভাষায় ব্যাবহৃত বর্ণমালা।
কড়া ব্লগ রাজিব ভাই।
:thumbup: :thumbup:
ধন্ধে ছিলাম।
ধন্নবাদ।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
সময়ের সাথে ভাষার পরিবর্তন আসবেই...বাংলা ভাষাও এর ব্যতিক্রম নয়। ভাষার বিবর্তন কাম্য হলেও বিকৃতি কোন মতেই গ্রহণযোগ্য নয়। ভাষার বিকৃতি সে দেশের, সে ভাষাভাষী মানুষদের দুর্বলতা-উদাসীনতা-অপরিনামদর্শীতা প্রকাশ করে। সেক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত এই বিকৃতিরোধে যদি আদালতের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হয়, আমার মতে, তাই করা উচিৎ।
আর রাজীব ভাই, আমাদের দেশে যার যার এক নম্বর দায়িত্ব যদি আমরা পালনই করতাম তাহলে তো... :dreamy:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
তুমি তোমার মত প্রকাশ করেছো তোমাকে ধন্নবাদ। আদালতের মূল কাজ হচ্ছে বিচার করা। আগে তারা সেকাজটা করুক। তারপর ভাষা নিয়ে ভাবুক। তারা নিজেরা ইংরেজিতে কাজ চালাবে আর আমাদের উপর আদেশ জারি করবে তা কি করে হয়!
বাংলা যারা শাসন করেছে তাদের ভাষা আমাদের ভিতরে ঢুকিয়েছে। মূল সমস্যা মনে হয় কি এক্টা বাংলা রেডিও চ্যানেল্ আছে সেটা নিয়ে। তা ঐ চ্যানেল না শুনলেই তো হয়, নাকি!
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
আদলতের রুলিং এর কথা শুনে আমার প্রথম প্রতিক্রিয়াও ছিল একই রকম। বুঝলাম না ওনারা আবার ভাষা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো কেন? আর কোনটা বিকৃতি আর কোনটা ভাষার স্বাভাবিক পরিবর্তন সেটাই বা নির্ধারন করবে কে!
তবে আপনি যেভাবে বাংলার ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনের উধাহরন তুলে দিলেন তার সাথে মনে হয় বর্তমান ভাষার বিকৃতির পার্থক্য আছে। বিকৃতি বলতে আমি তথাকথিত 'ফারুকী ভাষা' বলছি না, হিন্দি-ইংলিশ-বাংলা মিলিয়ে খিচুড়ি ভাষা বোঝাচ্ছি। ব্যক্তিগতভাবে আমি যতটুকু দেখেছি তাতে আমার মনে হয় মা্ত্রাতিরিক্ত ইংলিশ আর হিন্দি মিলিয়ে, র এর বদলে ড় ব্যবহার করে যারা বাংলা বলে তাদের উদ্দেশ্য থাকে নিজেদেরকে একটু আলাদা, একটু স্মার্ট প্রমান করা। আর বাংলাকে আনস্মার্ট মনে করাটা তাদের শুধু ভাষাতেই থেমে যাচ্ছে না, বাংলা সংশ্লিষ্ট সব কিছুতেই তা ছড়িয়ে পড়ছে।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
তোর কথা বুঝলাম। কিন্তু বাঙলায় কথা বলে ৩০ কোটি লোক; শুধু বাংলাদেশেই আছে ১৫ কোটির উপর। কয় কোটি লোক সেই বাংলিশ বা বাংহিংলিশে কথা বলে। এরা কি বাঙলা ভাষার জন্য হুমকি হয় কি করে? এই যে এই ব্লগেই একটা ইমো আছে, পিরা গেলাম। আমি এর মানে জানি না। এটা বাঙলা কিনা তাও জানিনা। একটা কথা বলি এরা নিজেরা ডুরেক্স ব্যাবহার করবে আর আমাদের বলবে রাজা কেনো।
আমার শ্বশুর উকিল ছিলেন। তার কয়েক আলমিরা বোঝাই আইনের যে বই ছিলো তার সবই ছিল ইংরাজিতে।
একসময় ছেলেপেলে নতুন এক শব্দ ব্যাবহার করলো আজব। পরে আজবেও সন্তুষ্ট থাকলো না, বলা শুরু করলো আজিব।
আমাদের ছোটবেলায় বড়দের সামনে পান খাওয়া অভদ্রতা হিসাবে বিবেচিত হতো। দোকানে বসে চা খাওয়াও। এখন!
সময়ের পরিবর্তনটা কিন্তু হিসাবে ধরতে হবে।
আর যদি আমার, ব্যাক্তির কথা বলি তবে বলবো ভাষাটা সুন্দরভাবে বলাই শ্রেয়। কিন্তু তার জন্য আইন হবে কেনো? আমার পছন্দ না আমি এড়িয়ে গেলাম। ঐ নাটক, বা রেডিও অনুষ্ঠান কি আমার দেখতে বা শুনতে হবেই! ঐ বই কি আমার পড়তে হবেই!
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
ভাই, আদালতের রুলিং এর ব্যাপারে আপনার সাথে আমি একমত, আর 'আজিব' বা এই জাতীয় ভাষা নিয়েও আমার তেমন একটা আপত্তি নাই, আমার মন্তব্যে আমি সেটা বলেছি। আমার আপত্তি হলো বাংলার সাথে জোর করে হিন্দি ইংলিশ ঢুকিয়ে কথা বলা। আর এটা যে শুধু একটা রেডিও চ্যানেলেই প্রচলিত তা কিন্তু না, ঐ রেডিও চ্যানেল বা অন্য কোন কিছুর প্রভাবে একশ্রেনীর স্মার্ট ছেলে মেয়েরাও কিন্তু সবসময়ই ঐ ভাষা ব্যবহার করে যাচ্ছে। রেডিও চ্যানেল না হয় না শুনলাম, কিন্তু ওদের মুখ বন্ধ করবে কে ?
আর 'পিরা গেলাম' সে এক বিরাট ইতিহাস, এই ভাষার (অনিচ্ছাকৃত) জনক আমাদের রবিন ভাই 😛 মূলত এইটা পইরা গেলাম এর অপভ্রংশ।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
করুক না তাতে সমস্যা কি?
কেউ যদি তাতে স্মার্ট হয়ে যায় হোকনা।
ছেলেরা এখন চুল রঙ করছে।কানে দুল পড়ছে। জিহ্বায় দুল পড়ছে। ভুরুতে দুল পড়ছে। আরো নানা জায়গায়।
উল্কি করছে। মেয়েরাও করছে ফুটা নানান জায়গায়।
আমি এসব পছন্দ করি না। তাই বলে আইন করে বন্ধ করবো???
এখন ধর চেয়ারের বদলে কেদারা, আর টেবিলের বদলে মেজ ব্যাবহার করলে বাঙলা ভাষা কি যাতে উঠে যাবে।
সিলেট, নোয়াখালি অঞ্ছলে সুপারিরে কি নামে ডাকে জানিস?
কিংবা সিলেটে কম্বল, বাদাম কিসের প্রতিশব্দ?
ভাষা চলবে ভাষার মতো।
তোদের ও তো ফৌজি কিছু ভাষা আছে, তবে?
আমি যতদূর জানি বিমান বাহিনীতে ইংরেজি ব্যাবহার হয়। অনেক আগে এক বন্ধু বলেছিলো বিমান বাহিনীর নন কমিশন্ড রা সেনাবাহিনীর অফিসারদের চাইতে ভালো ইংরেজী বলে।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
ইয়ে,কেরু কোম্পানির কথা শুইনাই চইলা আসলাম রাজীব ভাই 😀 কসম লাগে,চাপা মারতেছিনা-কেরু কোম্পানি আমার ডাইরেক্ট জুরিসডিকশনের মধ্যে পড়ে।সিসিবির বিশাল জাকজমকপূর্ণ সর্বশেষ জিটুজিটা আবার ওইখানেই হইছিলো কিনা...
আপনার ব্লগের মূল বক্তব্যের সাথে একমত।আইন করে ভাষার গতিপ্রকৃতি পরিবর্তন/নিয়ন্ত্রনের চেষ্টার উদ্দেশ্য সাধু হইলেও কৌতুকের উদ্রেগ করে বৈকি 🙂
মাসরুফ
যাবো।
অনেক শখ আছে কেরু কোম্পানি দেখার। ছিপির উপরে তো গোলাপ ফুলের ছবি।
ডা ভিঞ্চি কোড পড়তেছি; তাতেও গোলাপ ফুল।
না ভাষার উপর খবরদারি কোন মতেই সরল কিছু নয়।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
::salute:: :salute:
লিমন :teacup:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
পুরানো লেখা। আরো কিছু লিঙ্ক যোগ করে দিলাম।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
অনেক ভাল লাগলো রাজীব ভাই।
নতুন করে শেয়ার দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
:teacup: খান
... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!