দেশে কি এমন কেউ ছিলো না

ঢাকা থেকে ফোন এলো।
– দোস্তো, ঘুমাতে পারছি না।
– কেনো, কি হলো আবার?
– ঐ পাঁচ জন অফিসারের ফাঁসি হয়ে গেলো কিছু আগে।

সকালে অফিসে আসার আগে স্যাটেলাইট টিভিতে বাংলাদেশের খবরে শুনেছিলাম যে ফাঁসির আদেশ প্রাপ্ত ঐ পাঁচ জন অফিসারের আত্মীয়-স্বজনকে জেলে তাদের সাথে দেখা করতে দেওয়া হয়েছে। তবে ভাবিনি যে আজই এই ফাঁসির আদেশ কার্যকর হবে।

আমেরিকা থেকে হঠাৎ করে ৩৫ বছরের আগের বাংলাদেশে যেন ফিরে গেলাম। ১৯৭৫ সাল ব্যক্তিগত ভাবে আমার জন্যে বিশেষ স্মরণীয়। এ বছরই আমাদের প্রথম সন্তানকে হারাই আমরা। প্রায় তিন সপ্তাহ হাসপাতালে অসহ্য যন্ত্রনা সহ্য করে আমাদের থেকে বিদায় নিলো লাবনী জুন মাসের ২ তারিখে। ৩৫ বছর অনেকগুলি দিন – তবুও সে দিনের সব স্মৃতি এখনো স্পষ্ট মনকে নাড়া দিতে থাকে – কষ্টটাকে কিছুতেই দূর করতে পারিনা।

যখন ১৫ই আগষ্টের ঘটনা জানলাম তখনো আমরা আমাদের ব্যক্তিগত শোকে কাতর। আমাদের বাসা থেকে ধানমন্ডীর ৩২ নম্বর খুব দূরে ছিলো না। আমরা তখন সেন্ট্রাল রোডের এক বাড়ীতে থাকতাম। শিল্পী মোস্তফা মনোয়ার থাকতেন উপরের তলায় আর পাশের বাড়ীতে মুক্তিযোদ্ধা কাদের সিদ্দিকীর ছোট বোন। আমার এক আর্মি বন্ধুকে ফোন করলাম কি হচ্ছে জানার জন্যে। সে খুব একটা কিছু জানতো না। তবে বুঝলাম সেও অস্থিরতার মধ্যে আছে। আমাকে বললো, খামোখা ফোন-টোন না করে চুপ-চাপ বাড়ীতে থাকো। কিছুক্ষনের মধ্যে রেডিওতে ডালিমের ঘোষণা শুনলাম। ডালিম এবং তার ভাই স্বপন (ফৌজিয়ান) – এরা সবাই মুক্তিযোদ্ধা। মাত্র তিন বছরের মধ্যে কতটা বদলে গেলো সব কিছু।

মাত্র কিছুদিন আগে কথা হয়েছিলো কামালের সাথে সোহেল-সালমানের বাড়ীতে। এরা দুই ভাই তখন ধানমন্ডীর ১নং রোডে তাদের মায়ের সাথে থাকতো। সেখানে কোন অনুষ্ঠান থাকলে আমরাও যেতাম। বেস্কিমকো তখন অন্য রকম ছিলো – এক ছোট পরিবারের মতো। আমি যখন প্রথম বারের মতো বিদেশে, সুইজারল্যান্ডে, গেলাম তখন তাদের মা আমার স্ত্রী একাকী ঠিক মতো আছে কিনা দেখতে নিজে আমাদের বাসায় এলেন। আমার একদিন জ্বর হওয়াতে আমার স্ত্রীর ফোন পেয়ে সোহেল তখনই ছোট ভাই সালমানকে পাঠালো ডাক্তার সাথে করে আমাকে দেখার জন্যে।

কামাল ও সালমান ছিলো ঘনিষ্ট বন্ধু। কামালের ব্যবহার খুব অমায়িক ছিলো। যখনি দেখা হতো, নিজে থেকে আমার কুশলাদি জানতে চাইতো। তাদের আর এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলো শাহান (সাখাওয়াত মুবিন চৌধুরী) । আমার মনে পড়ে, আমার মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে শাহান ছুটে এলো আমার বাসায়। আমি তখন আমার মেয়ের মৃতদেহ জড়িয়ে ধরে আমাদের ঘরের সংলগ্ন বারান্দায় কংক্রিটের মেঝেতে পড়ে আছি। আমার স্ত্রী তখনো অসুস্থ এবং শয্যাশায়ী। বনীর মৃত মুখ দেখার মতো মনোবল তখন তার আর ছিলো না। মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে যখন কলেরা হাসপাতাল থেকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে অপারেশন করাতে নিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন কিছুক্ষণের জন্যে বনীকে বাসায় এনেছিলাম তার অসুস্থ মাকে দেখাতে। দীর্ঘ ১৮ দিন পরে মা আবার তার মেয়েকে দেখতে পেলো। বুকের দুধ খাওয়ালো মেয়েকে। বনীর দুধ খাওয়াকে পরম স্নেহ ভরে তাকিয়ে দেখলো মা। কে ভেবেছিলো যে এই দেখাই তার শেষ দেখা হবে। এর আগের দিন আমার রক্ত দেওয়া হয়েছিলো বনীর শরীরে। তার সুন্দর চেহারা আরও সুন্দর হয়ে উঠেছিলো নতুন রক্ত পেয়ে। বনীর এই চেহারাটাই মনের মধ্যে চির দিনের মতো ধরে রাখতে চাইলো পিংকু – তাই তার মৃত ফ্যাকাসে মুখ আর দেখতে চাইলো না। আমি তার মনের ভাব বুঝতে পেরে আর তাকে অনুরোধ করলাম না। আমি বারান্দায় একাকী আমার মেয়েকে বুকে জড়িয়ে পড়ে থাকলাম। শাহান আমার কাছে এসে সযত্নে আমার পা থেকে জুতা খুলে নিলো যাতে আরও একটু স্বাভাবিক ভাবে মেয়েকে কোলে নিয়ে শুয়ে থাকতে পারি আমি। আজিমপুর কবরস্থানে সোহেল, সালমান, শামসুল হক – আমার অন্য কিছু আর্মি বন্ধু – সবাই এলো যখন আমি আমার আদরের ছোট মনিকে তার ছোট মাটির ঘরে নিজে হাতে শুইয়ে দিচ্ছি।

কিছুদিন পরে এক কাজে আমার সিংগাপুরে যাবার কথা ছিলো। বেক্সিমকো উৎসাহ দিলো আমার স্ত্রীকে সাথে নেবার জন্যে। এর মধ্যে ১৫ আগষ্টের ঘটনায় যাওয়া একটু পিছিয়ে গেলো। সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে সিংগাপুরে নামলাম আমরা। সেখানে যাবার তৃতীয় দিনে হঠাৎ করে এক ধরনের ভাইরাস জ্বর ধরলো আমাকে এবং শরীরের তাপমাত্রা ১০৩ ছুঁয়ে ফেললো। সিংগাপুরে তখন কোন পূর্ণাঙ্গ বাংলাদেশ দূতাবাস ছিলো না। একজন কমার্শিয়াল রিপ্রেজেনটেটিভ বাংলাদেশ মিশনের কাজ পরিচালনা করতেন। তখনকার মিশন প্রধান ছিলেন আমার স্ত্রীর এক চাচা। তিনি খবর পেয়ে এক ডাক্তার পাঠিয়ে দিলেন হোটেলে আমাকে দেখার জন্যে। এক ইনজেকশনে ডাক্তার আমার জ্বর নামিয়ে দিলেন। তবে যখনি আমি বাথরুমে যাবার জন্যে বিছানা ছেড়ে উঠলাম, মাথা ঘুরে সোজা মেঝেতে যেয়ে পড়লাম।

পরের দিন চাচা এসে আমাদেরকে হোটেল থেকে তাদের বাড়ীতে নিয়ে উঠালেন। খুব সুন্দর ছিলো চাচার পরিবার। তার দুই মেয়ে আমাদের জন্যে তাদের ঘর ছেড়ে এক ঘরে থাকলো এবং একটা ঘর আমাদেরকে ছেড়ে দিলো। আমি ধীরে ধীরে আমার শক্তি ফিরে পেতে শুরু করলাম।

তখন সিংগাপুরে খুব বেশী বাংলাদেশী থাকতো না। ১৫-ই আগষ্টের পর সম্ভবত আমরাই প্রথম সেখানে গেলাম। যখন এক ভারতীয় মহিলা সাংবাদিক আমাদের আগমনের কথা জানতে পারলেন তখন তিনি চাচার সাথে যোগাযোগ করে আমাদের সাথে দেখা করতে এলেন। তিনি আমার অভিজ্ঞতার কাহিনী আমার মুখ থেকে জানতে চাইলেন। বিশেষ করে তিনি বুঝতে চাইছিলেন যে মাত্র তিন বছরের মধ্যে বাংলাদেশের জাতির জনকের এমন অপমৃত্যু আপামর জনতা বিশেষ কোন প্রতিবাদ ছাড়াই কী করে মেনে নিতে পারলো।

আমরা যখন বিদেশ ভ্রমণ করি তখন আমরা সবাই দেশের অঘোষিত রাষ্ট্রদূত হয়ে পড়ি। যখন এই সাংবাদিক মহিলা আমাকে প্রশ্ন করলেন যে এই হত্যাকান্ডের কোন প্রতিবাদ হলো না কেনো – আমি সাধারণ মানুষের পক্ষ হয়ে সব ধরনের অজুহাত তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। আমি বলার চেষ্টা করলাম যে স্বাধীনতার পর স্বাভাবিক ভাবেই সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেড়ে গিয়েছিলো। সোনার বাংলার জন্যে বেশী দিন অপেক্ষা করার মতো ধৈর্য্য বা ক্ষমতা কোনটাই সাধারণ মানুষের বেশী ছিলো না। বাকশাল সৃষ্টি, অন্য সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষনা, অনেক সংবাদ পত্রের প্রকাশনা বন্ধ, রক্ষী বাহিনী সৃষ্টি, দূর্নীতি ও ১৯৭৪ সালের দূর্ভিক্ষ – এর কোনটাই সাধারণ মানুষের মনবল বাড়াতে সাহায্য করেনি। অভুক্ত লোকের মৃতদেহ ঢাকার রাস্তায় পড়ে থাকা একটি সাধারণ দৃশ্যে পরিণত হয়েছিলো। আমি নিজে চোখে সায়েন্স ল্যাবরেটরীর সামনে মৃত দেহ পড়ে থাকতে দেখেছি যখন ঐ রাস্তায় যাতায়াত করেছি।

ভদ্রমহিলা কোন কথা না বলে আমার সব কথা শুনলেন এবং মাঝে মাঝে তার নোট বইতে কিছু নোট নিলেন। অবশেষে আমার সব কথা শেষ হবার পর তিনি শুধু বললেন – কিন্তু দেশে এক জনও কি এমন কেউ ছিলো না, যে সর্ব সম্মুখে দাঁড়িয়ে জাতির জনকের সমগ্র পরিবারের এমন নৃশংস হত্যাকান্ডে কিছু চোখের জল ঝরাতো?

সেদিন আমি তার সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারিনি।

আজ, দীর্ঘ ৩৫ বছর পর, যখন জানলাম যে দোষীদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়েছে এবং দেশের লোক এই খবরে উল্লাস প্রকাশ করছে তখন আবার সেই প্রশ্ন আমার মনে এলো – কিন্তু দেশে এক জনও কি এমন কেউ ছিলো না, যে সর্ব সম্মুখে দাঁড়িয়ে জাতির জনকের সমগ্র পরিবারের এমন নৃশংস হত্যাকান্ডে কিছু চোখের জল ঝরাতো?

দোষী কি শুধু যাদের ফাঁসি হলো তারাই ছিলো??

৯,১৩৮ বার দেখা হয়েছে

৫৮ টি মন্তব্য : “দেশে কি এমন কেউ ছিলো না”

  1. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    আপনার লেখাটা আগেই পড়েছিলাম। আবারো পড়লাম। সত্যি বলছি সাইফ ভাই, '৭৫-এ চোখের পানি ফেলার জন্য কেউ ছিল কিনা দেখিনি। বুঝের সময় থেকে শুনে এসেছি কেউ নাকি কাঁদেনি। সবাই উল্লাস করেছে!!

    কিন্তু আজ ৩৪ বছর পর অনেকেই হয়তো ফাঁসির ঘটনায় উল্লাস করছে, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের লোকজন। আর নতুন প্রজন্ম, আমাদের মতো অনেকে, যাদের বেশির ভাগ বর্তমান ধারার রাজনীতি করেনা, তারা বঙ্গবন্ধুর জন্য কাঁদছে। তাঁকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে। কলংকের দায় মোচনে অপরাধ বোধ থেকে মুক্তি পেয়েছে। এখন আমরা জোর গলায় বলতে পারবো, আমাদের মুক্তির নায়ককে যারা খুন করেছে শেষ পর্যন্ত তাদের বিচার হয়েছে।

    আরো দোষী শুধু এরাই ছিল কিনা সেটা আপনিও জানেন, জানি আমরাও। ইতিহাস ওদের আবর্জনার ঝুড়িতেই স্থান দিয়েছে।


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
    • মরতুজা (৯১-৯৭)

      শেষ লাইনে দ্বিমত। তৎকালীন সেনাপ্রধান তো শুনি এখনো বহাল তবিয়তে লীগের উচ্চপদেই আছে। রক্ষীবাহিনী প্রধান তোফায়েল সাহেবও তো বহাল তবিয়তে। আবর্জনার ঝুড়িতে তো কাউকে দেখি না।

      সবাই হাসিনার পদতলেই আছে, আর সাথে কলাটা মুলোটাও খেয়ে যাচ্ছে। হাসিনাও তো সব জেনেই এদের আনুগত্য গ্রহন করেই আছেন। তিনিও জানেন যারা ওই আবর্জনার স্তুপে যাবার যোগ্য তাদের সত্যি সত্যি সরিয়ে দিলে ওনার গদি ঠিক থাকবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে।

      গদিই ধর্ম, গদিই সব।

      মূল প্ররোচনাকারি জিয়াও তো দেবতার আসনে। আর যদি বলেন দেশের সবাই জানে কে কি করেছিল, তা দিয়ে কি আসল বিচার হয়? নিজামী, মুজাহিদ যতই ঘৃন্য হোক না কেন, ওরাই তো পতাকা উড়িয়ে যায় রাস্তা দিয়ে। আর সে সুযোগ খালেদা হাসিনা দুই জনেই করে দিয়েছেন। আর হাসিনার বেয়াই মহাসাহেব ওই কি জানি আদম-পাচার মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী, তিনি তো দেখি জমিদারি স্টাইলে ছড়ি নিয়ে বেড়ান, উনিও নাকি খাঁটি রাজাকার। আর ওদিকে হাসিনার সরকার নাকি যুদ্ধাপরাধিদের বিচার করবে। ফুঃ। নিজের মেয়েকে রাজাকারের সাথে বিয়ে দিয়ে বেয়াইয়ের বিচার? আর সেটাও বাংলার ম্যাঙ্গোপাব্লিক বিশ্বাস করে।

      তাই কে যে আবর্জনার ঝুড়িতে তা নিয়ে সন্দেহ জাগে। আমাদের মত আমজনতা(=আমছাগল) ছাড়া তো আর কাউকে দেখিনা।

      জবাব দিন
      • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

        মরতুজা, তোমার দ্বিমত নিয়েই বলি। সে সময়ের সেনাপ্রধান সফিউল্লাহ হত্যাকারী বা হত্যাকারীদের সহযোগী কিছুই ছিল না। হ্যা, সেনাপ্রধান হিসাবে তিনি যোগ্য ছিলেন না, সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলা রক্ষায় তার ব্যর্থতা অপরিসীম। তার কথা কেউ শুনতো না। সেনাবাহিনীতে তখন প্রচুর উপদল ছিল। তার চরম ব্যর্থতা বঙ্গবন্ধুকে রক্ষায় ব্যর্থতা।

        তোফায়েল আহমেদ বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সচিব ছিলেন। রক্ষীবাহিনীর প্রধান ছিলেন অন্য একজন, ব্রিগেডিয়ার নুরুজ্জামান। বঙ্গবন্ধু হত্যার সময় নুরুজ্জামান দেশের বাইরে ছিলেন। খালেদ মোশাররফের অভ্যূত্থানের সঙ্গে তিনি জড়িত হয়েছিলেন। ৭ নভেম্বর সেটা ব্যর্থ হলে নুরুজ্জামান পালিয়ে ভারত চলে যান। আর শেরেবাংলা নগরে রক্ষীবাহিনীর সদর দপ্তরের বাইরে একাধিক ট্যাংক বসিয়েছিল খুনিচক্র। যদিও অনেক পরে জানা যায়, ওইসব ট্যাংকে গোলাবারুদ ছিল না।

        রক্ষীবাহিনীর বিষয়ে তোফায়েল আহমেদের ক্ষমতা কি ছিল জানি না। দুটো বই ঘেটেও কিছু পেলাম না। তবে কর্নেল শাফায়াত জামিল ১৬ আগস্ট তোফায়েল আহমেদের বাসায় গিয়েছিলেন। শাফায়াত জামিল লিখেছেন, খুনিচক্রের সদস্য ডালিম, নূর, শাহরিয়ার, মাজেদরা এর পরপরই তোফায়েলকে বাসা থেকে নিয়ে নির্মম নির্যাতন করে। তাকে মোশতাকের সরকারে যোগ দেওয়ার জন্য বেশ চাপ দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে তোফায়েলের এপিএস শফিকুল আলম মিন্টুকেও এরা ধরে নিয়ে নির্যাতন করে এবং "ঠান্ডা মাথায় গুলিতে হত্যা" করে। ক্যাপ্টেন মাজেদ ছিল মিন্টুর খুনি।

        মরতুজা, সে সময় সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন প্রচণ্ড বিশৃঙ্খল ছিল। দলাদলি ছিল দলে। মোশতাক-চাষী চক্র তৈরি ছিল। আবার তারাই ছিল বঙ্গবন্ধুর ঘণিষ্ট। সেনাপ্রধান ছিলেন মেরুদণ্ডহীন। জিয়াউর রহমানসহ আরো অনেকের নানা উচ্চাভিলাষ ছিল। কারণ সিনিয়র হলেও বঙ্গবন্ধু তাকে দায়িত্ব না দিয়ে সফিউল্লাহকে সেনাপ্রধান করেছিলেন। সিআইএ সক্রিয় ছিল। তারাই পুরো অভ্যূত্থানের পরিকল্পনা করে। মোশতাক-ফারুক-রশিদ চক্রকে সিআইএ মদদ দিয়েছিল।

        এই মামলায় বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রের বিচার হয়নি। একে উদঘাটনের চেষ্টাও হয়নি। আওয়ামী লীগ সাহস করেনি। বিচার হয়েছে হত্যাকাণ্ডের। ষড়যন্ত্র উদঘাটনের চেষ্টা হলে হত্যার বিচার হতো কিনা সন্দেহ। তাহলে অনেকে জড়িয়ে পড়বে। সেই জাল কি আদৌ গোটানো সম্ভব হতো??


        "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

        জবাব দিন
        • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

          জিয়াউর রহমানের উচ্চাভিলাষ এর কথা একটু ডিটেইল বলবেন।

          প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয়েছিল যে দলিল (আমেরিকান এম্বেসী) তাতে জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ ছিল বলে মনে হয়নি, ৭ ই নভেম্বর এর আগ পর্যন্ত, বরং রাজনৈতিক ভাবে উচ্চাভিলাষী ছিলেন খালেদ মোশাররফ, যিনি মোস্তাকের কাছে সেনাবহিনীর চিফ হবার জন তদ্বির নিয়ে গেছেন। জিয়ার মধ্যে ছিল হতাশা, কারন তার চেয়ে জুনিয়র তার উপরের পোস্টে ছিলেন।

          জিয়াকে লাইম-লাইটে নিয়ে আসেন কর্নেল তাহের, তাই তো জানি, এর আগ পর্যন্ত জিয়া কি নিছক জেনারেলের বাইরে আর কিছু ছিলেন? তথ্য আছে? এই যেমন ধরেন রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষী জেনারেল বা এই ধরনের কিছু?

          বংগবন্ধুর ষড়যন্ত্রের কথা জিয়া জানতেন, কিন্তু কতটুকু জানতেন তা কি পরিস্কার আছে? ফারুক নিজেও তো বলেছেন তিনি ব্যাপারটা ঘুরিয়ে বলেছেন জিয়াকে, পরিবর্তন এর কথা বলেছেন, জিয়া তাতে সায় দিয়েছেন। আমার তো ধারনা পরিবর্তন তখন সবাই চাচ্ছিলেন, কেউ কেউ পরিবর্তনটা বংগবন্ধুর মাধ্যমেই চাচ্ছিলেন, কেউ কেউ হতাশ হয়ে তার পরিবর্তে অন্য কাউকে চাচ্ছিলেন। কিন্তু পরিবর্তন এত নির্মম হবে তা মনে হয় ফারুক-ডালিম ছাড়া আর কেউ ভাবেননি।

          আরেকটু ডিটেইল বলবেন প্লিজ।


          পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

          জবাব দিন
          • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

            খুনি ফারুক-রশিদ চক্রের সঙ্গে যোগাযোগটা বেশ জোরালোই ছিল জিয়ার। ১৯৭৫ সালে ফারুক, রশিদরা একাধিকবার জিয়ার বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন। মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী তার বই "এক জেনারেলের নীরব সাক্ষ্য"তে এসব সাক্ষাতের দিন-তারিখও উল্লেখ করেছেন। পরে ফারুক এন্থনি ম্যাসকারেনহাসের কাছে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাদের পূর্ব যোগাযোগের বিষয়টি জোর দিয়েই বলেন।

            আবার তাহেরের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল জিয়ার। যে কারণে তাহের বন্দি দশা থেকে মুক্ত করে জিয়ার হাতেই ক্ষমতা তুলে দেন। কিন্তু তাহেরের দেখানো পথে হাটেননি জিয়া।

            অর্থাৎ মুজিব-বিরোধী একাধিক চক্রান্তকারী দলের সঙ্গে জিয়ার ঘণিষ্টতা ছিল। জিয়ার সমর্থন ছাড়া ১৫ আগস্ট ও ৭ নভেম্বরের অভ্যূত্থান ঘটেনি। জিয়ার উচ্চাভিলাষ হয়তো হতাশা থেকে তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তিনি মুজিব-বিরোধী যে কোনো সুযোগকে কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন।

            আর সেনাবাহিনীতে তখন মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যেও অনেকগুলো উপদল সক্রিয় ছিল। মুক্তিযোদ্ধা, পাকিস্তান ফেরত বিভক্তি তো ছিলই। আর চক্রান্তকারী উপদলগুলোও যেহেতু জিয়ার হতাশা ও ক্ষোভের কথা জানতো তাই তারা জিয়াকে সব বিষয়ে অবহিত রাখতো। জিয়াও অধিকাংশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। তিনি সৎ হলে তো বঙ্গবন্ধুকে এইসব চক্রান্ত সম্পর্কে জানাতেন। তুমি বলতে পারো, সেক্ষেত্রে জিয়া বিপদেও পরতে পারতেন। 'মিসআন্ডারস্টুড' হতে পারতেন। অস্বীকার করি না। কিন্তু বাস্তবতা হলো জিয়া সুযোগ নিয়েছিলেন।

            যে যুক্তি তুমি খালেদ মোশাররফ সম্পর্কে দিলে সেটা কি জিয়ার বেলায়ও সত্য নয়? ১৫ আগস্টের সময় ও পরে কিছুদিন সফিউল্লাহ সেনাপ্রধান ছিলেন। তারপর তাকে সরিয়ে দিয়ে জিয়া ওইপদ নেন। সেনাপ্রধান হয়েও জিয়া খুনিচক্রের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি।

            বরং '৭৫ এর পর তার শাসনামলে খুনিচক্র পূনর্বাসিত হয়েছে। ৩ নভেম্বর অভ্যূত্থানের পর খালেদ মোশাররফের জন্য সেনাপ্রধান হতে চাওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল কি? অভ্যূত্থান তার নেতৃত্বে হয়েছে। সেটা ধরে রাখতে তিনি অন্য কাউকে সেনাপ্রধান করবেন? আর সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নিয়ে খালেদ প্রথমেই মোশতাককে সরান। ৬ নভেম্বর বিচারপতি আবু সাদাত সায়েমকে রাষ্ট্রপতি করেন। খুনিচক্রকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে এদের দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু ইতিহাসে দেখা যায়, খালেদ ১৫ আগস্টের ষড়যন্ত্রকারী কোনো চক্রের সঙ্গে ছিলেন না। বরং খুনিচক্রের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাদের শায়েস্তা করার জন্য তৎপর ছিলেন। অভ্যূত্থান করেও খালেদ দ্বিধান্বিত ছিলেন। তিনি বেতারে ভাষণ দেননি। নিজের ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করার কোনো চেষ্টা করেননি। যে কারণে ৭ নভেম্বর সহজেই সম্পন্ন হয়।


            "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

            জবাব দিন
            • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

              শেষের প্যারায় খালেদ মোশাররফ সম্পর্কে যেটুকু বললেন তা জানা ছিল না। আপনাকে ধন্যবাদ। খালেদ মোশাররফ কে নিয়ে একটা পোস্ট দেবার কথা ছিল আপনার, এই সুযোগে তা মনে করিয়ে দিলাম।

              ১৫ই আগস্ট আর ৭ ই নভেম্বর এর সবচেয়ে বড় বেনিফিসারি জিয়া, একথা সত্য। কিন্তু এত গুলো ঘটনা তিনি প্ল্যান করে ঘটিয়েছেন তা মেনে নিতে কস্ট হয়। তিনি বাধা দিতে পারতেন, তিনি বাধা দিলে হয়ত ইতিহাস অন্য রকম হত, এত রক্তপাত হত না, প্রশ্ন জাগে, তিনি বাধা দিলেন না কেন? তিনিও পরিবর্তন চাচ্ছিলেন, বুঝতে পারি, কিন্তু কি ধরনের পরিবর্তন?

              আফটার অল, তিনি কাপুরুষ ছিলেন এটা মনে হয় কেউ বলবেন না।


              পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

              জবাব দিন
              • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

                খালেদ মোশাররফ অভ্যুত্থান করেও যদি বিভ্রান্তিতে ভুগেন, তাহলে তিনি নিশ্চয় এখানে একটা বড় বোকামি করে ফেলেছেন।


                পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

                জবাব দিন
                • কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)
                  কিন্তু এত গুলো ঘটনা তিনি প্ল্যান করে ঘটিয়েছেন তা মেনে নিতে কস্ট হয়।
                  আফটার অল, তিনি কাপুরুষ ছিলেন এটা মনে হয় কেউ বলবেন না।

                  ফয়েজ ভাই, যিনি পরিবর্তন নিজেই চাচ্ছিলেন, আর্মির মত একটা ডিসিপ্লিন্ড রেজিমেন্টাল ফোর্সের টপ তিন চার জন অফিসারের একজন হওয়ার পরও কিছু জুনিয়র অফিসার মেজর এবং ক্যাপ্টেনদের এ রকম ষড়যন্ত্র জেনে তারপর গো এহ্যাড টাইপ সিগ্ন্যাল যিনি দিয়ে গেলেন, তাহেরের ঘাড়ে পা রেখে সবার নয়নের মণি হয়ে সেই তাহেরকেই যিনি প্রথম সুযোগে ঝুলিয়ে দিলেন, তাকে বীরপুরুষ অন্ততঃ আমি বলতে পারছিনা বস্‌ ।


                  সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

                  জবাব দিন
                  • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

                    ভালো পয়েন্ট বলেছো।

                    কিন্তু তুমি নিশ্চয় বুঝতে পেরেছো, আমি তাকে সেই অর্থে কাপুরুষ বলিনি, আমি মহামান্য আদালতের কথার আদলে বলতে চেয়েছি।


                    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

                    জবাব দিন
                    • কামরুল হাসান (৯৪-০০)

                      জিয়াউর রহমান তো বীর পুরুষই ছিলেন।
                      কয়েক হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে বিনা বিচারে ফাঁসিতে ঝোলাতে সাহস লাগে না বলছেন?


                      ---------------------------------------------------------------------------
                      বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
                      ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

                    • কামরুল হাসান (৯৪-০০)

                      আমি তোর প্রশ্নে অবাক হচ্ছি না, কিন্তু লজ্জা লাগছে।
                      ক'দিন পরে হয়তো কেউ জিজ্ঞেস করবে জিয়াউর রহমান আবার কবে মুক্তিযোদ্ধা হত্যা করলো?
                      এই যে আজকে তুই 'হাজার' শুনে অবাক হলি, কদিন পরে হয়তো অনেকে জিয়াউর রহমান কাউকে হত্যা করেছে শুনলেও এমন অবাক হবে।
                      কিন্তু তারপরেও এটা সত্যি।

                      Anthony Mascarenhas এর Bangladesh: A Legacy of Blood এ উল্লেখ আছে। বিশ্বাস না হলে পড়ে দেখতে পারিস।
                      একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, রক্তাক্ত মধ্য আগস্ট ও ষড়যন্ত্রময় নভেম্বর- কর্নেল শাফায়ত জামিল।প্রকাশক- সাতিহ্য প্রকাশ , ২০০০। এটাতেও পেয়েছি আমি।

                      আরো সন্দেহ থাকলে এখানে লাবলু ভাইকে জিজ্ঞেস করতে পারিস।
                      তারপরেও সন্দেহ না মিটলে নিজে এই বিষয়ক কিছু বই ঘাটাঘাটি কর।


                      ---------------------------------------------------------------------------
                      বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
                      ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

                    • শহীদ (১৯৯৪-২০০০)

                      দোস্ত,
                      ফাঁসিতে ঝোলানোর কারণ ছিল কিন্তু বিদ্রোহ। সেনাবাহিনীতে বিদ্রোহের শাস্তি সবসময়ই মৃত্যুদন্ড, আর তাই থাকা উচিত।
                      ফাঁসিতে ঝোলানোর মাধ্যমে জিয়ার কি কোন লাভ হয়েছিল? মুক্তিযোদ্ধারা কোন অপরাধ করলে তাদের শাস্তি হওয়া কি উচিত না?

                      আমি এই বিষয়ে আরো জানতে চাই বলেই প্রশ্ন করলাম। তোর মতামত জানাস

          • জিহাদ (৯৯-০৫)
            বংগবন্ধুর ষড়যন্ত্রের কথা জিয়া জানতেন, কিন্তু কতটুকু জানতেন তা কি পরিস্কার আছে?

            আজকে প্রথম আলোতে এই লেখাটা পড়লে অনেক কিছুই জানা যায় এ ব্যাপারে


            সাতেও নাই, পাঁচেও নাই

            জবাব দিন
          • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

            সরি ভাই; বড়দের কথার মাঝে নাক গলালাম।
            জিয়া সেনাপ্রধান হওয়ার পর সহ সেনাপ্রধান কে ছিল? কিংবা প্রেসিডেন্ট হবার পর?
            এরশাদ নয়কি? এরশাদ পাকিস্তান ফেরত নয়কি?
            মঞ্জুর মুক্তিযোদ্ধা নয়কি? তাকে কেন চিটাগাং বদলি হতে হয়?
            শাহ আজিজুর রহমান নামক প্রধানমন্ত্রী কি স্বাধীনতা বিরোধী ছিল না?


            এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

            জবাব দিন
  2. মান্নান (১৯৯৩-১৯৯৯)

    আমরা একটা অকৃতজ্ঞ জাতি। যতই মুখে বলি ৩৫ বছর পরে হলেও জাতির জনকের বিচার করেছি। এখনও জেল হত্যার বিচার হয়নি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়নি। এই ধারাবাহিকতায় বিডিআর হত্যার বিচার হতে হয়ত আরো পঞ্চাশ বছর কেটে যাবে। পঞ্চাশ বছর পর আমরা তৃপ্তির ঢেকুর তুলবো যে বিচার করেছি। আসলে আমাদের মাথায় অকৃতজ্ঞতার বোঝা এ্রত ভারী হয়েছে যে একটা দুইটা বিচার যেন বোঝা থেকে শাঁকের আটির হালকা হওয়া। জাতিরজনক সপরিবারে নির্মুল হয়ে যায় আর আমরা মেরুদন্ডহীন গন্ডার জনগন ৩৫ বছর পর টের পাই। জাতি হিসাবে নষ্ট নেতৃত্ব আমরা ডিজার্ভ করি।

    জবাব দিন
  3. আছিব (২০০০-২০০৬)

    :boss: ভাই,আপনারা সবাই অনেক সুচিন্তিত মতামত দিয়েছেন।এভাবে যদি আমরা সবাই চিন্তা করতে পারতাম,তাহলে হয়ত ইতিহাস অন্যরকম হত।
    কিন্তু আফসোস,স্বার্থই এখানে মূল নিয়ামক,আমরা নিজেদের স্বার্থকেই বেশি প্রাধান্য দেই।যতদিন হাসিনা-খালেদার স্বার্থ জড়িত থাকবে,ততদিন এসব স্পর্শকাতর মামলার কোন সুরাহা হবে না।আর আমরা জেগে উঠব তখনই যখন আমাদের অস্তিত্বে আঘাত আসবে।
    জাতিস্বত্তা,দেশপ্রেম,স্বার্বভৌমত্ব এসব জটিল জটিল শব্দের মর্মার্থ কয়জন বাঙ্গালী বুঝে????

    জবাব দিন
  4. রশিদ (৯৪-০০)

    ভাইয়া আবারো কষ্টটা অনুভব করছি বুকে......

    জানিনা সেদিন কেউ কেঁদেছিল কিনা, কিন্তু আজকে অনেকেই কেঁদেছি.......আমি সত্যিই কেঁদেছি.......একটা কবিতা লিখে ফেলেছি একটানে......পোষ্ট করে দিলাম

    জবাব দিন
  5. মেহেদী হাসান (১৯৯৬-২০০২)
    সেই প্রশ্ন আমার মনে এলো – কিন্তু দেশে এক জনও কি এমন কেউ ছিলো না, যে সর্ব সম্মুখে দাঁড়িয়ে জাতির জনকের সমগ্র পরিবারের এমন নৃশংস হত্যাকান্ডে কিছু চোখের জল ঝরাতো?
    জবাব দিন
  6. রাশেদ (৯৯-০৫)

    আমার কাছেও এই ব্যাপারটা দারুণ অদ্ভূত লাগে, যে মানুষটার কথায় সারাদেশের মানুষ চার বছর আগে জীবন দিল তার এই রকম নৃশংস মৃত্যতে কেউ কোন কথা বলল না? এত বড় একটা সংগঠনের নেতা (আওয়ামে লীগ) ছিলেন। এই সংগঠনের কয়জন লোক প্রতিবাদ করেছিলেন? এর কারণটা কখনোই আমার মাথায় ঢুকে না।


    মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

    জবাব দিন
    • জানিনা আমার এ মন্তব্য প্রকাশ হবে কি না? প্রথমেই বলে নেই আমি কোন ক্যাডেট নই।

      যে মানুষটার কথায় সারাদেশের মানুষ চার বছর আগে জীবন দিল তার এই রকম নৃশংস মৃত্যতে কেউ কোন কথা বলল না?

      এখানে পরিস্থিতি বিবেচনা করা উচিত, ৪০ বছর পূর্বের ইতিহাস জানতে আজকের চিন্তা-ভাবনাকে ঝেড়ে ফেলে নিজেদের ৪০ বছর আগের একজন মনে করে সত্য সন্ধানে নামা উচিত। এ সম্পর্কে ইতিহাসবিদ উইলিয়াম অ্যাপেলম্যান বলেন--

      The historical experience is not one of staying in the present and looking back. Rather is it one of going back into the past and returning to the present with a wider and more intense consciousness of the restrictions of our former outlook.

      মুজিবের মৃত্যুতে কেউ চোখের পানি ফেলেননি এবং মরহুম জিয়ার মৃত্যুতে ১০ লক্ষ লোকের জানাযা পরা এধরণের সংখ্যাতত্ত্ব দিয়ে ইতিহাসের সত্য তুলে ধরা যায়না, দুঃখজনক হলেও যা ৩০ বছর পরের আজও বাংলাদেশীদের মধ্যে প্রকটভাবে বিদ্যমান।

      মুজিব ও তার পরিবারকে নৃশংসভাবে হত্যা করে পুরো শাসন ব্যবস্থাকেই দখলে নিয়ে নেওয়া হয়। প্রথমত, মুজিব এভাবে খুন হবেন একথা তার চরম শত্রুরাও কখনও চিন্তা করেননি, সেখানে সাধারণ আম-কাডল জনতার এ ধরণের বন্য ও নির্বোধ স্বপ্ন দেখবার প্রশ্নই উঠেনা। নৃশংস হত্যাকান্ডের পরই ক্ষমতা দখল, ক্ষণিকের তরে "ইসলামিক প্রজাতন্ত্র বাংলাদেশ" নামকরণ, পুতুল সরকার হিসেবে মোশতাকের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা এবং বন্দুকের নল দেখিয়ে অন্যদের চেয়ারে বসানো। জনগণের বুঝতে কিছু বাকি থাকবার কথা নয়। আসলে তখন মুজিবের পক্ষ কথা বলবার কোন পরিস্থিতি ছিল বলে মনে করাটাই এক ধরণের বোকামী, যেখানে মুজিবের পুরো পরিবারকে এক রাতের মধ্যে খেয়ে ফেলা হয়, রাষ্ট্রের দিক-পথ ১৮০ ডিগ্রী ঘুরিয়ে দেওয়া হয়, সেখানে আম-কাডল জনতার ২-৪ দশটা মিছিল-মিটিং আশা করাটা অবান্তর।

      একই অবস্থা মরহুম জিয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সার্কিট হাউজে মরহুম মেজর মঞ্জুর কর্তৃক মিলিটারী ক্যু'তে জিয়াউর রহমান মরে পড়েছিলেন সার্কিট হাউজের মেঝেতে, তার জন্যও চোখের পানি ফেলবার কেউ ছিলেননা। সার্কিট হাউজে সে সময় থাকা বি,এন,পির নেতৃবৃন্দও জিয়ার মৃত দেহ দেখবার সাহস করেননি, জীবন নিয়ে পালিয়ে বেঁচেছেন। চলমান ক্যু এর রেশ ধরেই মরহুম জিয়াকে সমাহিত করা হয়েছিল রাঙ্গুনিয়ায়, ১০ লক্ষ লোক তো দূরে থাক হয়তো ১০০ লোকও সেসময়কার জানাযায় ছিলেন কি না সন্দেহ।

      পরবর্তীতে আমাদের লে. যে .হো.মো. এরশদ যখন জিয়াউর রহমান সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করলেন পুরো সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এবং ক্যু দমন করলেন, তখনই জনগণের পক্ষে সাহস সঞ্চয় করে মরহুম জিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন সম্ভব হয়েছিল। এরশাদ কর্তৃক ক্যু দমনের পূর্ব পর্যন্ত রাঙ্গুনিয়ায় সমাহিত জিয়ার কবরে ২ দিনে কতলক্ষ লো্ক যাবার সাহস দেখিয়েছিলেন তা বোধকরি সবারই জানা আছেন।

      মেজর জেনারেল মঞ্জুর কর্তৃক সংঘটিত ক্যু যদি সফল হতো তাহলে রাঙ্গুনিয়ায় সমাহিত মৃত জিয়ার কোনদিনই আর ঢাকা আশা সম্ভব হতোনা, সম্ভব হতোনা লাখ লোকের শ্রদ্ধা নিবেদন। জিয়া খুন হয়েছিলেন তবে সে খুনের নৃশংসতা কখনই মুজিব ও মুজিবের পরিবারের খুনের মতন বিভতস পর্যায়ের ছিলনা, পাশাপাশি ক্ষমতার লাল ফিতাটি জিয়ার অনুসারীর হাতেই ছিল। পাশাপাশি এরশাদ ও সেনাবাহিনী ক্যু এর দু'দিন পরেই ততকালীন জিয়া সরকারের পূর্ণ আনুগত্য প্রকাশ করে বিচারপতি সাত্তারের নেতৃত্বে অবিচল থাকে এবং ক্যু দমন করে বি,এন,পির মসনদ টিকিয়ে রাখে।

      আর জানাযায় আগত মানুষের সংখ্যাতত্বের ফাঁকটা ঠিক এখানেই।

      জবাব দিন
      • সাইফ শহীদ (১৯৬১-১৯৬৫)

        অতিথী,

        জানিনা আমার এ মন্তব্য প্রকাশ হবে কি না? প্রথমেই বলে নেই আমি কোন ক্যাডেট নই।

        ক্যাডেট কলেজ ব্লগের পাঠকদের মধ্যে মনের উদারতা সাধারনত অনেক বেশী। মডারেটরাও সেটা জানে। আপনি নিশ্চিন্ত মনে আপনার অভিমত এখানে ব্যক্ত করতে পারেন।

        অনেক ধন্যবাদ আপনার এই দীর্ঘ মন্তবের জন্যে।

        জবাব দিন
  7. মরতুজা (৯১-৯৭)

    ৭৫ এ যেমন কারও না কান্নাটা (আমার বাপের কাছেও শুনি সবসময় এ কথা) যেমন আমাকে অবাক করে ঠিক তেমনই আজকে অতি কান্না আমাকে আরো হতাশ করে। কিন্তু অবাক হই না।

    এখন তো মুজিবের নাম নেয়ার আগে বঙ্গবন্ধু না বললে যেন নবীর নামের পরে দরুদ না পরলে গুনাহ করার পাপ হয়ে যায়। নেতারা বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধু , জননেত্রী জননেত্রী করতে করতে মুখে ফেনা তুলে ফেলেন। বাংগালীও কলঙ্ক উদ্ধার করে যেন আইন ও বিচারের মা বাপ দেখে ফেলল। ওদিকে সাহারা বেগম দিনে রাতে ক্রস ফায়ারে মানুষ মেরে বেড়াচ্ছে সেখানে যেন জীবনের দাম নেই।

    আমি অপেক্ষায় আছি কেমন করে এইই বাংগালী আবার ৪ বছর পর জামাত বিএনপি কে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনে।

    আমি তো এর কোন সমাধান দেখি না। একমাত্র সমাধান দেখি গডফাদারের ডন ভিটো কর্লিয়নির মত এক রাতে সব রাজনীতিবিদ আর ঘুষখোর দুর্নীতিবাজদের গুলি করে মেরে ফেলা। এমন বিপ্লব দেশে এলে সবার আগে বন্দুক হাতে মাঠে নামতাম।

    জবাব দিন
    • মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

      ভাই কতগুলাকে মারবেন?ওইরকম করলে ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।এর শর্টকাট কোন সমাধান আছে বলে মনে হয়না।সমাজে ভালো মানুষের সংখ্যা বাড়ানো এবং তাদেরকে পলিসি মেকিং সিস্টেমে সংখ্যাগুরু করে ফেলা ছাড়া আর ত উপায় দেখিনা।সবচেয়ে ভালো হয় রাজনিতিতে ভালো মানুষেরা ঢুকলে কিন্তু সেই পথটা এত গন্ধযুক্ত এবং বিপজ্জনক যে কেউ যদি না আসতে চায় তাকে খুব বেশি দোষ দেয়া যায়না।দ্বিতীয় পথ হচ্ছে পলিসিমেকার হবার লক্ষ্যে সরকারী চাকরিগুলাতে যোগ দেয়া এবং দুর্নীতিবাজ না হওয়া-সেইটাও কোন কার্যকরী সমাধান না কারণ মাথা অর্থাৎ রাজনীতিবিদেরা ঠিক না থাকলে কোন সৎ মানুষের আমলা হিসেবে প্রভাব রাখা খুবই দুষ্কর।তৃতীয় হচ্ছে জেনারেল লি কোয়ান ইউ বা মাহাথির মাহমুদের মত দেশপ্রেমিক একনায়কের(সামরিক বা বেসামরিক) উত্থান।কিন্তু সেক্ষেত্রে-"power corrupts,and absolute power corrups absolutely আপ্তবাক্যটা সত্যি হয়ে যাবার সম্ভাবনা ৯৯ পারসেন্ট।

      প্রথম আর তৃতীয়তার কথা জানিনা,দ্বিতীয়টার কথা বলি।ধরা যাক পর পর কয়েক ব্যাচের অধিকাংশ পুলিশ কর্মকর্তা একেবারে ঢোকার সময় থেকেই ঘুষ খাবেনা বলে ঠিক করল এবং সেটা বজায় রাখল।এভাবে সৎ,নিবেদিতপ্রাণ মানুষজন পুলিশে ঢুকতেই থাকল টানা ৪-৫-১০ বছর।এরা যখন সিনিয়র হবে-দুর্নীতি কিছুটা হলেও কমবে বলে কি মনে হয়না?

      অবশ্য দেশের এখন যা অবস্থা তাতে আমার এই কমেন্ট নিরাপদেই পাগলের প্রলাপ বলে উড়িয়ে দেয়া যায়। 🙂

      জবাব দিন
      • সাইফ শহীদ (১৯৬১-১৯৬৫)

        মাসরুফ,

        কয়েক ব্যাচের অধিকাংশ পুলিশ কর্মকর্তা একেবারে ঢোকার সময় থেকেই ঘুষ খাবেনা বলে ঠিক করল এবং সেটা বজায় রাখল।এভাবে সৎ,নিবেদিতপ্রাণ মানুষজন পুলিশে ঢুকতেই থাকল টানা ৪-৫-১০ বছর।এরা যখন সিনিয়র হবে-দুর্নীতি কিছুটা হলেও কমবে বলে কি মনে হয়না?

        ভাল লাগলো তোমার উপরের কথাটা।

        জবাব দিন
      • মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

        মোন্নাফ সাহেব, পাকি ক্রস-স্পার্ম বেজন্মা রাজাকারের বাচ্চা জামাত শিবিরের সাথে তুলনাটা কিভাবে আসলো দয়া করে ব্যাখ্যা করবেন। চেষ্টা করবেন ব্যাখ্যাটা যেন খুব যুক্তিযুক্ত হয়।তা যদি না পারেন তাহলে নিজের নিরাপত্তার খাতিরেই আমার কাছ থেকে ১০০ হাত দূরে থাকবেন দয়া করি।আই ডোন্ট কেয়ার হু ইউ আর অর হোয়াট ইউ ডু,জামাত শিবিরের সাথে যেই মাদার**ত আমার তুলনা করার চিন্তাও করে-সামনাসামনি পেলে পিটিয়ে তার অন্তত গোটাপাঁচেক হাড্ডি ভাংতে আমার একটুও হাত কাঁপবেনা।সিসিবিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক আমার লেখা আর কমেন্টগুলো কষ্ট করে একবার পড়েন,তারপর চিন্তা করেন কিসের সাথে আমাকে তুলনা করেছেন।

        ইয়েস,ইটস আ ফাকিং থ্রেট।

        জবাব দিন
    • লেখাটা চমত্কার, আমাদের এ কপটতার মুল্য হয়ত একদিন আমাদেরই দিতে হবে | নিয়তি কাওকে ক্ষমা করেনা, আজ ৩৫ বচ্ছর আগের অবস্থাটা বোঝা কঠিন | ৭১ এ শেখ মুজিব মুক্তিদাতা নায়ক, ৭৫ ধিকৃত; তেমনি তাঁর হত্যাকারীরা ৭৫ এ মুক্তিদাতা নায়ক, আজ তাঁরা ধিকৃত | আর আমরা সব পুতুল, শুধু নিজেদের সুবিধা দেখি | মার্ক্সের ভাষাতে আমাদেরকেই বুর্জোয়া বলে |
      লিঙ্কটার জন্য ধন্যবাদ |

      জবাব দিন
        • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

          অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

          ১৯৪৬ সালে জন্ম। বি. এস. সি গ্রাজুয়েট। ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের পর তিনি বিমান বাহিনী থেকে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন এবং ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত থাকেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামের শুরুতেই সুদূর পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে যে দলটি সর্বপ্রথম মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেছিল তিনি ছিলেন তাদের একজন। মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ সাহস ও কৃতিত্বের জন্য তিনি বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত হন। একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গড়ে তোলার প্রক্রিয়ায় তার অবদান উল্লেখযোগ্য।

          শেখ মুজিবের স্বৈর শাসনকালে ১৯৭৪ সালে প্রেসিডেন্সিয়াল অর্ডার নং ৯ (PO-9) এর প্রয়োগে তিনি চাকুরিচ্যুত হন। ১৫ই আগষ্ট ১৯৭৫ সালের ঐতিহাসিক বৈপ্লবিক অভ্যুত্থানের পর তাঁকে সেনাবাহিনীতে পুর্ণঃনিয়োগ করা হয় এবং লেঃ কর্ণেল পদে পদোন্নতি দেয়া হয়। ১৯৭৬ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়োজিত হবার পর গণচীনে তাঁকে কূটনীতিক হিসাবে প্রেরণ করা হয়। ১৯৮০ সালে লন্ডন হাই কমিশনের সাথে তিনি এ্যটাচ্‌ড হন। ১৯৮২ সালে কমিশনার হিসাবে হংকং এর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৯৮৮ সালে রাষ্ট্রদূত হিসাবে কেনিয়ায় পোষ্টেড হন। একই সাথে তাঁকে তানজানিয়ার দায়িত্ব দেয়া হয়।

          ইউনেপ (UNEP) এবং হেবিটাট (HABITAT) এ বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসাবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। সোমালিয়ায় যুদ্ধকালীন সময়ে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীর অংশ হিসাবে প্রেরিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের সার্বিক তত্ত্বাবধানের বিশেষ দায়িত্বও তিনি পালন করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি সরকারি চাকুরি থেকে অবসর লাভ করেন। এরপর দেশে ফিরে নিজস্ব ব্যবসা শুরু করেন। তিনি বিবাহিত এবং এক কন্যার জনক। তার শখ হল বই পড়া, ভ্রমণ, খেলাধুলা এবং সঙ্গীত।

          হারামী এইগুলা লিখছে নিজের পরিচয় দিতে গিয়া।
          কিন্তু পড়ে দেখবো ভাইয়া আর কি লিখেছে।


          এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

          জবাব দিন
      • গুলশান (১৯৯৯-২০০৫)

        আমার কাছে কিন্তু ভাইয়া প্রশ্নটা অযৌক্তিক কিছু মনে হয়নি। আর প্রশ্নের উত্তরে পজিটিভ নেগেটিভ অনেক কথাই এসেছে। সবাই নিজের মত করে যুক্তিগুলো দেখতে এবং চিন্তা করতে পারে। যদি কারও মনে হয়, লেখাটায় কোন ফাঁক আছে, তাহলে তিনিও মন্তব্য করতে পারেন। অন্য কোন লেখার লিঙ্ক যদি প্রাসঙ্গিক মনে হয়, তাও দিয়ে দিতে পারেন। তবে আমাদের ভিন্নমতকে সহ্য করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। এই পোস্টে সাইফ ভাই একটা প্রশ্ন করেছেন। অনেক অ্যাবস্ট্রাক্ট ভাবে। আর ঐখানে প্রশ্নটির একটি কংক্রিট রুপ এসেছে মনে হয়। হয়ত কংক্রিট রুপ আরো অন্যরকমও হতে পারত। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে ব্যাপারটা বেশ প্রাসঙ্গিক।

        জবাব দিন
        • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

          আমি বলছিনা যে মুজিব আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে; কিন্তু যাকে সামনে নিয়ে আমরা/ ৭১ এর প্রজন্মরা স্বাধীনতা এনেছে তার নাম মুজিব।
          এখন যদি বর্তমানের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বা কোনও প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে মুজিব (ও পরিবারকে) হত্যার যৌক্তিকতা খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা করা হয় তা হবে নিতান্তই দুঃখজনক।
          কনফুসিয়াসের আবির্ভাবের অনেকগুলো মিথের একটা হল তিনি ডিম ভেঙ্গে বের হয়েছেন।
          কিছুই বলার নেই ভাই।
          কাল যদি জামাত সরকার ক্ষমতায় এসে বাংলা ভাইয়ের নামে মিনার করে; ফারূক, রশিদ, ডালিমকে জাতীয় বীর ঘোষণা করে তাদের মূর্তি স্থাপন করে রাস্তার মোড়ে মোড়ে তাতে অবাক হবো না।


          এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

          জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।