বছর তিন চার আগের বইমেলার কথা। সেবা প্রকাশনীর স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। প্রচন্ড ভীড়, বেশিরভাগই স্কুল কলেজের ছেলেমেয়ে। সামনে এগুতে না পেরে এক কোনায় দাড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ কানে ভেসে এল এক তরুণীর মন্তব্য – “ভাবতে অবাক লাগে একসময় এই বই গুলো কিভাবে যে পড়েছি! এখন বুঝি এগুলো আসলে কোনো লেখাই না।“ তারপর কয়েকজন ভারতীয় লেখকের প্রশংসা করে তিনি বললেন যে এগুলোই আসল সাহিত্য। তাকিয়ে দেখলাম আমাদের সমবয়সী এক তরুণী তার বান্ধবীর সাথে কথা বলছে।
আমার বলতে ইচ্ছা হলো – “একজন পাঠক পড়তে পড়তেই পাঠক হয়ে উঠে। সবকিছুই সবাই পড়ে না,যেটা তার ভালোলাগে সেটাই সে পড়ে। সেবার সবচেয়ে বড় অবদান এটাই যে, কিশোর কিশোরীদের ভালোলাগার মতো বই তারা প্রকাশ করেছে। সে বইগুলো সাহিত্যের মাঝে পড়ুক আর নাই পড়ুক, পড়ে তারা মজা পেয়েছে এবং ধীরে ধীরে তারা অন্য বইও পড়তে শিখেছে। আপনার এখন যে পাঠক মন তৈরি হয়েছে, তার ভিত্তি কিন্তু তৈরি হয়েছে এসব ‘বস্তাপচা’ বইগুলো পড়েই।“
বললাম না। কারণ বক্তা একজন তরুণী, তায় আবার সুন্দরী। বলামাত্র ঝগড়া লেগে যেতে পারে এবং নিশ্চিতভাবেই সে আশেপাশের মানুষের সমর্থন পাবে। আমি একটু গুতাগুতি করে সামনে গিয়ে কয়েকটা বই কিনে সরে আসলাম।
সেবার সাথে আমার প্রথম পরিচয় ‘ভূতের হাসি’ বইয়ের মাধ্যমে। তিন গোয়েন্দা সিরিজের বই। এর আগে সত্যজিতের ফেলুদা পড়ার মধ্য দিয়ে ডিটেকটিভ বইয়ের সাথে পরিচয় হয়েছিলো। কিন্তু এই বইগুলো সম্পূর্ণ অন্য ধাঁচের। একবার পড়া শুরু করলে এক নিঃশ্বাসে শেষ না করে উপায় নেই। শুরু হলো স্কুলের বন্ধুদের কাছ থেকে তিন গোয়েন্দার বই জোগার করা। দিনরাত শুধু ডুবে থাকতাম তিন গোয়েন্দার এডভেঞ্চারে। ‘সেবা বই প্রিয় বই, অবসরের সঙ্গী’ কথাটা তখন হয়ে গেছে ‘সেবা বই প্রিয় বই, সবসময়ের সঙ্গী।‘
আম্মার এক কলিগ, রিটায়ার করেছেন, ছিলেন আমাদের প্রতিবেশী। তখন তার অঢেল অবসর। তিনিও পড়ে থাকতেন সেবার বই নিয়ে।‘ভূতের হাসি’ বইটা উনার বইয়ের আলমারি থেকে নিয়েই পড়া। উনাকে দেখতাম ‘ওয়েস্টার্ন’ নামে একটা সিরিজির বই খুব পড়তেন। একদিন আমিও তাঁর কাছ থেকে একটা ওয়েস্টার্ন নিয়ে আসলাম। আমার পড়া ওয়েস্টার্ন বইটি কাকতালীয়ভাবে বাংলাদেশেও প্রকাশিত প্রথম ওয়েস্টার্ন -“আলেয়ার পিছে”। নায়ক এরফান জেসাপ। পরিচিত হলাম সম্পূর্ন নতুন একধরনের সাহিত্যর সাথে। যেখানে মানুষ কোমরে পিস্তল বেঁধে ঘোড়ায় চড়ে ঘুরে বেড়ায়, কথায় কথায় চলে গোলাগুলি। কিন্তু এসবের মাঝেও প্রেম ও মানবিকতার যে আবেগময় দিকগুলো ছিল সেগুলোও হৃদয় ছুঁয়ে যেত। এই বইগুলোর কিছু কিছু সংলাপ এমনকি এই আধুনিক যুগেও বাস্তব মনে হয়।
এতসব ওয়েস্টার্ন এর মাঝে ‘মরুসৈনিক’ বইটার কথা আলাদাভাবে মনে আছে এর অসাধারন সব সংলাপ আর উপমার জন্য। প্রথম পাতার একটা বর্ণনার কথা আমার এখনো মনে আছে- ‘দুঃসময় কাউকেই খুব বেশি সময় দেয় না।‘ বইয়ের শেষ লাইনটাও আমার মুখস্থ – ‘হিমোগ্লোবিনে আফ্রোদিতের শীৎকার।‘ শীৎকার কথাটার মানে তখন জানতাম না, চীৎকারের সমার্থক মনে হয়েছিলো।
ক্লাস ফাইভ বা সিক্স এ থাকার সময় পরিচয় হলো সেবার সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং উপভোগ্য সিরিজের সাথে। মাসুদ রানা। বইয়ের শুরুতে রানার পরিচিতি পড়ার পর বইটা না পড়ে থাকা খুব কঠিন। “সীমিত গন্ডীবদ্ধ জীবনের সীমানা ছাড়িয়ে আপনাকে নিয়ে যাবে স্বপ্নের এক মায়াবী জগতে। আপনি আমন্ত্রিত।“ সেই আমন্ত্রন অগ্রাহ্য না করে পড়া শুরু করলাম মাসুদ রানা। প্রথম পড়েছিলাম “বিদেশী গুপ্তচর-১”। দ্বিতীয় পর্বটা আঙ্কেলের আলমারিতে ছিলো না। সেটা পড়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে অনেক কটি বছর। পূর্ণাঙ্গ বই পড়েছিলাম “আমিই রানা” তারপর একে একে পড়া হয়েছে “ধ্বংস পাহাড়”, “ভরতনাট্যম”, “সতর্ক শয়তান” সহ অসংখ্য বই। তবে সবচেয়ে বেশি দাগ কেটেছে “অগ্নিপুরুষ” বইটি। কেউ যদি হুমায়ুন আহমেদের অমানুষ বইটি পড়ে মুগ্ধ হয়ে থাকেন, তাহলে অনুরোধ করব “অগ্নিপুরুষ” পড়ে দেখার । পড়ার পর অমানুষকে মনে হবে দুধের স্বাদ ঘোল দিয়ে মেটানো হয়েছে। অবশ্য “অমানুষ” ও প্রথম রহস্য পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে ছাপা হয়েছিলো। দুটোই “ম্যান অন ফায়ার” বইয়ের অবলম্বনে লেখা। কিন্তু যে আবেগ নিয়ে “অগ্নিপুরুষ” লেখা হয়েছে, “অমানুষ’ এ তা নেই। এখনো “অগ্নিপুরুষ” পড়লে আমি শিহরিত হই।
রানার আরো দুটি বই আমার প্রিয় – “বিদায় রানা” ও “আই লাভ ইউ, ম্যান।“ এই তিনটা বই-ই অসংখ্যবার পড়া হয়েছে। প্রথম যখন রানা পড়তাম তখন অনেকেই বলতো, এগুলা বড়দের বই, পড়ে কিছু বুঝতে পারবানা। কিন্তু থ্রিলার পড়ে মজা লাগার জন্য বড় হতে হয় না। পড়ার মন থাকলেই হয়।
মাসুদ রানা সংগ্রহ করার জন্য আমাকেও ঝুঁকি কম নিতে হয়নি। আমার এক স্কুল ফ্রেন্ডের বাবা ছিলেন কমিশনার। তার স্ত্রী মানে আমার বন্ধুর মা ছিলেন মাসুদ রানার ভক্ত। আমার বেশিরভাগ রানা পড়া হয়েছে আন্টির আলমারি থেকে লুকিয়ে এনে। আমার বন্ধু বই পড়ত না, কিন্তু লুকিয়ে বই নিতে সাহায্য করতে খুব।
সেবার আসল রত্ন যেটাকে আমি মনে করি, তা হচ্ছে এর অনুবাদ। বাংলাদেশ এবং ভারতের অনেক ভালো লেখকেরা অনেকে অনুবাদ করেছেন, কিন্তু আমি এ কথা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি, সেবার অনুবাদ এর চেয়ে অনেক অনেক ভালো। ভারতের একটা অনুবাদই আমার পুরোপুরি ভালো লেগেছে, সেটা হচ্ছে নচিকেতা ঘোষের “শার্লক হোমস রচনাসমগ্র।“ কেন ভাল লেগেছে সেটা বুঝতে চাইলে ভারতেই প্রকাশিত “শার্লক হোমস অমনিবাস” এর কয়েকটা গল্প কেউ পড়ে দেখতে পারেন।
অনুবাদ মানেই প্রতিটি লাইন বা প্যারার বাংলা অনুবাদ নয়। এমনকি মূল কাহিনীর পুরোটা অনুবাদ করতে হবে এমন কোন বাঁধাধরা নিয়মও নেই। মূল কাহিনীর মজাটা পাওয়া যায়, এমনভাবে উপস্থাপনা করলেই সেটাকে ভাল অনুবাদের কাতারে ফেলা যায়। আর সেবার অনুবাদ এগুলো অনুসরন করে বলেই সে অনুবাদগুলো হয়ে উঠে অসাধারণ।
সেবাকে নিয়ে যে যাই বলুক, আমি একটা কথা বলতে কখনোই কুন্ঠাবোধ করবো না – আমার যে পাঠকসত্বা আছে, তার জন্য আমি সেবা প্রকাশনীর কাছে ঋণী। কৈশোরের সেই অলস দুপুরগুলো রাঙিয়ে দিয়েছিলো যে বইগুলো, সেগুলোকে আমি কি করে ভুলি?
১থম 😀 😀
২য় পড়ে এবং বিষয়বস্তু ভালো লেগে
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
পড়ে ৩য়
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
ভাল লাগল মুস্তাকিম। তোমার নাম তো কেকুল তাই না? শেষ বার সম্ভবতঃ আমাদের দেখা হয়েছিল এলিফ্যান্ট রোডে। মনে পড়ে?
লেখাতে ৫ তারকা দিয়ে দিলাম।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
একদম ঠিক, ভাইয়া। থ্যাংকু ফর রেটিং।
সেবা প্রকাশনীর কিশোর ক্লাসিক সিরিজটা আসলেই জটিল।মাসুদ রানা খুব একটা পড়া হয়নি,বেশি অ্যাগ্রেসিভ লাগসে।আই লাভ ইউ ম্যানটা শুধু ভালো লাগসে।
অগ্নিপুরুষ টা পড়ে দেখ
মুস্তাকিম, মরুসৈনিক বইয়ের লেখক আলীমুজ্জামান, সেবা প্রকাশনীর অন্ধ ভক্ত ছিল, সেই সূত্রে লেখা। তবে তোমার কথাই ঠিক। মৌলিক সাহিত্য রচনার মানদন্ডে এগুলো টিকবে না।
আলীম ভাই, আমি জানি মরুসৈনিক বইটা আপনার লেখা। আমি কিন্তু কখনোই বলিনি এই বইগুলো টিকবে না। যদি নাই টিকতো তাহলে ১২/১৪ বছর পর কেন এগুলো নিয়ে স্মৃতিচারণ করছি?
vaiya feeling proud that u r that alimujjaman. salam via. kal khub choto jinis. mohakaler buke seba prokashoni tike thakbe.
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
সেবার সাথে আমার পরিচয় রুপালি মাকড়সা দিয়ে ... এর পরে বেশ কিছু ওয়েস্টার্ন তারপরে এক পর্যায়ে মাসুদ রানা ..... তবে সেবার সবচেয়ে ভালো লেগেছিল কিশোর ক্লাসিকগুলো ... সেবা পাথ্রায় ...
ছোটবেলায় মাকে দেখতাম মাসুদ রানা পড়তে। লাইব্রেরি থেকে প্রতি সপ্তাহে একটা আসত বাসায়। ক্লাস থ্রিতে থাকতে হঠাত্ কি মনে করে একদিন হাতের কাছে পাওয়া মাসুদ রানাটা পড়তে লাগলাম। ভরতনাট্যম। নিবিষ্ট মনে পড়ছি কিভাবে রানা একটা মেয়েকে জুয়ায় জেতাচ্ছে। হঠাত্ মা হাজির আর বকুনির তুবড়ি। যাইহোক বড়দের বই মাসুদ রানা পড়েছি কলেজে গিয়ে। ক্লাস ফোরে অনুবাদ টারজান। আর কিছুদিন পর 'হেল কমান্ডো'। এখনও ওয়েস্টার্ন পড়ি গোগ্রাসে।
কারও কাছে হেল কমান্ডো বইটা থাকলে আওয়াজ দিয়েন কাইন্ডলি। বাসারটার শেষ কয়টা পৃষ্ঠা ছিলনা।
আমার কাছে আছে।এর সেকেন্ড পার্টও বের হয়েছে অন্য প্রকাশনী থেকে তবে সেইটা কাল্পনিক কাহিনি দেখে আর কিনিনাই-লেখকের ফোন নাম্বার এই মুহূর্তে না থাকলেও ওই বইয়ের পেছন থেকে যোগাড় করে দেয়া যাবে।আর্মি ট্রেনিং লাইফের এত জীবন্ত বর্ণনা আর কোন বইয়ে পড়েছি বলে মনে পড়েনা।আওয়াজ দিয়েন-শেষ অংশ পড়লে একটু মন খারাপ হয় 🙁
হেল কমান্ডো জটিল বই।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
সেবা প্রকাশনী দিয়েই মনে হয় আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের বই পড়ার নেশার সৃষ্টি হয়। সেবার বই পড়া নিয়ে আমার নিজের কাহিনি গল্পের বইয়ের গল্প পোস্টে শেয়ার করেছিলাম।
সেবা পাথ্রায় :thumbup: :thumbup: :thumbup:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
তোমার পোস্ট পড়লাম। খুব ভাল লাগলো।তুমি বই কিনতে টিফিনের টাকা জমিয়ে, আর আমি কিনতাম রিকশা ভাড়ার টাকা জমিয়ে।স্কুলে যাওয়ার রিকশা ছিল মাস হিসাবে ভাড়া করা।ফেরার সময় তিন টাকার রিকশা ভাড়া বাঁচিয়ে ফেলতাম বন্ধুরা সবাই একসাথে পায়ে হেঁটে বাসায় ফিরে।তিন টাকা শুনে হয়তো হাসি পাবে, কিন্তু যদি শুন সেই ভাড়া আজ দশ টাকা তাহলে হয়ত দূরত্বটা আন্দাজ করতে পারবে। তাও ময়মনসিংহের মত শহরে!
😀
ভাই,যত্থার্থই কহিয়াছেন :salute:
মাসুদ রানার অনেক বই পড়ছি.........সেবারও অনেক বই পড়ছি......আমাদের একজন কলেজে প্রতি ছুটি শেষে আনত কিশোর ক্লাসিক,আরেকজন আনত মাসুদ রানা,অফ চান্সে আমিই ওদের আগে শেষ করতাম :grr: :guitar:
ক্লাস টেনে রেস্টটাইমে মাসুদ রানার ''শয়তানের উপাসক'' পড়ার সময় ইসলামিয়াতের শিক্ষক ইলিয়াছুর রহমান আসিয়া '' আছ-ছিব,কী শয়তানের উপাসনা করতিছাও দেখি ত'' বলে বইটা সিজ করে হাউস অফিসে নিয়ে গেলেন।এক ঘণ্টা পর বই আনতে গিয়ে দেখি উনিই পড়তেছেন 😮 ......আমি যে ঢূকছি টের ই পাননাই...... :khekz:
এরপর থেকে সবসময় খুঁজতেন কার কাছে মাসুদ রানা আছে আর সমানে সিজ করতেন।আমার বন্ধুগুলাও মাসুদ রানা আনা বাদ দিল,আমারো মাগনা সেবার বই পড়ার ইতি ঘটল 😡 =(( :((
সেবা ভালোবাসি 😡
=)) =)) =)) ইলিয়াছ স্যারের কথা আর কি কমু রে পিন্টু,তুইও যে তাঁর শিকার সেইটা জাইনা পরাণ ভইরা গেল-উনারে নিয়া আমার দুইটা ব্লগ আছে(কাকতালীয়ভাবে আমার সিসিবিতে প্রথম ব্লগটাও উনারে নিয়া লেখা)।উনার প্রিয় দায়ালগ ছিল-
মাস্তুরুপ(মাসরুফ) কি কইরতিছ্যাআআআআআআআও?????
ডজ দিতি দিতি তো ফতুর হয়্যা গেলা...বিয়াদবটা রোজা রাখনাই ক্যানো?তুমারে বাঘে ধরলে তো সাত দিনে খায়ি শ্যাষ করতি পারবিনা... 😮 😮 😮
ভাইইইইইইইইইই.....................আসেন কুলাকুলি করি :shy: :hug:
আমারে যে কি জ্বালাইত,এর পর থেইকা......।,ম্যালা কাহিনী,ব্লগেই কমু,এইহানে ফ্ল্যাশ করলাম না :grr: :grr:
ওই লোক এরপর মগাসিসি-তে গেছে,শুনছি সেইখানেও যথারীতি হিট !!!অবশ্য ছুট্টুবুন্ধুরা কইল, ভীষণ বিরক্তিকর লোক তিনি.........ইংলিশে ইসলামিয়াত গাইড বের করছে তো,কী বিদ্বান দ্যাখছেন বস?!! :khekz: =))
হেতারে নিয়া বাঁইচা থাকলে অবশ্যি মনের তাবৎ হিউমার দিয়া একখান ব্লগ লিখুম,পেরমিজ :-B
😮 😮 পন্টিং ইংলিশে ইসলামিয়াত গাইড বাইর করছে? 😮 😮 হইবই তো,হাজার হোক নিক নেম অস্ট্রেলিয়ান ;;;
মহান এই স্যারকে সালাম।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
মুস্তাকিমদা, আপনার সেই সুন্দরী তরুনী সুশীল আঁতেল শ্রেনীভুক্ত-আমি নিশ্চিত উনি হুমায়ুন আজাদ স্যারের লেখা সেই অভিনেত্রীদের মত যার প্রিয় ব্যক্তিত্ব মহানবী (স),প্রিয় লেখক আর্নেস্ট হেমিংওয়ে(কোন গল্পটি ভাল লেগেছে বললে এক গাল হেসে বলবেন সবগুলোই,তবে এ মুহূর্তে বিশেষ কোনটির নাম মনে পড়ছেনা) এবং এমনিতে ভীষণ রক্ষণশীল হলেও শিল্পের প্রয়োজনে শয্যাদৃশ্যে অভিনয় করতে তাঁর আপত্তি নেই :)) :))
=)) =))
সেবার বই সাহিত্য হোক না হোক সেটা নিয়ে বোদ্ধারাই আলাপ করুক,আমি শুধু এটুকু বলব যে সেবা বাংলাদেশকে একটি প্রজন্ম উপহার দিয়েছে যারা বই পড়তে ভালবাসে-শুধু দস্যু বনহুর নয়,এরকম মজার মজার আরো যে চরিত্র বিশ্বসাহিত্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তা বান্দরবানের এক কোনায় বসবাস করা কিশোর আমাকে জানিয়েছিল এই সেবাই।সেবার এই অবদানটুকু কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবেনা-তা সে যত চেষ্টাই করুক না কেন।
সেবা এক কথায় অসাধারণ। ছোটবেলায় সেবা কিনতাম পুরোনো বইয়ের দোকান থেকে, ক্লাস সিক্সের পর থেকে কেনা শুরু করলাম টিফিনের টাকা জমিয়ে। যে জন্য টিফিনের পরের ক্লাস গুলো আমার কখনই করা হয়ে ওঠেনি 😛 টিফিন টাইমে কেনা বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকতাম তো।
এখনো আমার বাসার আলমারীতে অসংখ্য সেবা প্রকাশনীর বই আছে। যদিও মাঝে অনেক বই উইপোকায় খেয়ে ফেলেছে। অনেক কস্ট পেয়েছি তার পর।
আরো অনেক ছোট বেলার বই এখনো ভুলতে পারি না। চাচা চৌধুরি, বিল্লু, পিংকি, নন্টে ফন্টে, টিনটিন, কুয়াশা, কীরিটী, ফেলুদা, শংকু, এখনো পেলেই পড়তে এক পায়ে খাড়া।
ভাই,হবে না,আপনি পারলেন না আমার সাথে, বাটুল দি গ্রেট বাদ দিছেন :grr: :grr:
ফ্যান্টম?
বশ ময়মনসিংহে এখন ১০ টাকার রিকশার পথ দুকদম ফেললেই শেষ হয়ে যায়। 😛
কিছুদিন হইলো দাম বাইড়া গেছে। অনেক "উন্নয়ন" কর্মকান্ড হইতাছে তো!
সেবার কাছে আমি ঋনী, বই পড়লে যদি মানুষের উন্নতি হয় তাহলে আমি বলব আমার ভিতরের পরির্বতনের শুরুর জন্য সেবার অবদান বিশাল ( শুধু আমি না অসংখ্য কিশোর-কিশোরী )। Great expectation অথবা অল কোয়েটেট অন ওয়ের্স্টার্ন ফ্রন্ট, ডেভিদ কপারফিল্ড আমাকে সবসময় সাহস দিচ্ছে, দিয়েছিল সামনেও দিবে। কালজয়ী সব সাহিত্যর সাথে আমার পরিচয় সেবার মাধ্যমে। আরো লাখ লাখ কিশোর-কিশোরীকে সেবা আলো দেখাক, মননশীল করুক তাদের মানসিকতাকে, বেচে থাকুক সেবা যতদিন বই আছে ততদিন, এই প্রতাশা......
যেমন রক্তের মধ্যে জন্ম নেয় সোনালি অসুখ-তারপর ফুটে ওঠে ত্বকে মাংসে বীভৎস ক্ষরতা।
জাতির শরীরে আজ তেম্নি দ্যাখো দুরারোগ্য ব্যাধি - ধর্মান্ধ পিশাচ আর পরকাল ব্যবসায়ি রূপে
- রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
অনেক বইয়ের নাম শুধু সাধারন জ্ঞান বইয়ে পড়তাম। সেবা সেগুলোকে আমাদের নাগালের মধ্যে এনে দিয়েছিলো।
সেবা বস :boss: :boss: মাসুদ রানা আর রকিব হাসানের তিন গোয়েন্দা, প্রায় সব পড়া, শামসুদ্দিন নয়াব লেখা শুরু করার পর কেন জানি আর তিন গোয়েন্দা ভাল লাগেনাই যদিও শুনসি তারা নাকি একি লোক...
তবে আমার বেশি প্রিয় সেবার অনুবাদ...গডফাদার বইটা এত জোসভাবে অনুবাদ আর কেউ করতে পারবেনা....
গডফাদার বইটা আমার পড়া সেরা অনুবাদ গুলির একটি। আমি ইংরেজি বইটাও পড়েছি আর তোমার মন্তব্যের সাথে সহমত প্রকাশ করছি
গডফাদারের অনুবাদ আসলেই দুর্দান্ত।ইংরেজিটা পড়ার সময় মনে হয়নাই যে এক বিন্দু বিচ্যুতি হয়েছে।অসাধারণ!
গদফাদার; হা হা হা।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
মুস্তাকিম,
সেবা প্রকাশনী নিয়ে কেউ বাজে কথা বললে আমার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। এবারে বইমেলায় গিয়ে বই কেনার বিসমিল্লা করেছি সেবা প্রকাশনী থেকে। আমার বই পড়ার এই অভ্যাসের মূলেও আছে সেবা প্রকাশনী।
এখন আর সেবার বই আগের মত পড়ি না, সব বই আগের মত টানেও না, কিন্তু তাই বলে সেবার অবদান কেমন করে অস্বীকার করি? ব্যাপারটা যেন এরকম যে, ঠিক মতো লিখতে পড়তে শেখার পরে আদর্শলিপি বা বাংলা অক্ষরজ্ঞানের বইগুলোকে অবজ্ঞা করা! হাহ, অক্ষরজ্ঞান, ওসব কেউ পড়ে?
তোর জায়গায় আমি থাকলে ঐ তরুনী আপার কাছে জানতে চাইতাম ভারতীয় লেখকদের কয়টা বই আর আমাদের দেশীয় সাহিত্যিকদের কয়টা বই উনি পড়ে শেষ করেছেন? কথায় আছে না, খালি কলসী বাজে বেশি!
আকগে, সেবা নিয়ে অনেক আগে একটা লেখা লিখছিলাম, পড়ে দেখিস।
আর এই পোস্টের জন্যে অনেক ধন্যবাদ! 🙂
www.tareqnurulhasan.com
লেখাটা পড়লাম । অসাধারন লেগেছে। সবচেয়ে বেশি মজা পেয়েছি তোর আর আমার পছন্দের মিল দেখে।
রানা সিরিজে রানার পরেই যে চরিত্রটা আমার প্রিয় সেটা হচ্ছে মুক্তবিহঙ্গের মাইকেল সেভারস।
মুক্তবিহংগ ২ দিয়া না বুমেরাং দিয়া মাসুদ রানা শুরু করছিলাম। ১ পরছিলাম ১২ বছর পরে
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
সেভেন-এইট চুটাইয়া পড়ছি তিন গোয়েন্দা.......কিন্তু মাসুদ রানাটা কেন জানি বলতে গেলে পড়াই হয়নাই......একটা মাত্র পড়ছি, মুক্তবিহঙ্গ, অসাধারন লাগছে......
পাঠক সৃষ্টিতে সেবার তুলনা নাই, যদিও হুমায়ুন আহমেদের নামও চলে আসবে এক্ষেত্রে.......আর বিশ্বসাহিত্যগুলোর প্রাঞ্জল অনুবাদের কথা বললে সেবার ঋণশোধ করা যাবেনা কিছুতেই.......
কাহিনি বানানোর জন্য কি ঐ সুন্দরীকে নিয়া আসছস নাকি 😛 😉 আমার ক্যান জানি এইরকম মনে হইতাছে ;;;
কথা সত্য রশিদ . একটা মাইরা দিল আর কি।
কেকুল, ভাল লিখেছ বাছা।
নারে দোস্ত, ঘটনাটা আসলেই ঘটছিল।
চমৎকার লিখছিস কেকুল। :thumbup:
মুস্তাকিম, সেবা নিয়ে এরকম কথাবার্তা শুনলে মেজাজ আমারও চরম খারাপ হয়ে যেত!
আমি একসময় ভাবতাম হয়ত সেবার বইতে আমি এবং আমার বন্ধুমহলই বেশি উপকৃত হয়েছে। কিন্তু ক্যাম্পাসে যখনই গল্পের বইয়ের প্রসঙ্গ শুনেছি, সমস্ত পাঠকের ছেলেবেলার মুগ্ধতা ভরে থাকতে শুনেছি সেবার বইগুলোতে... ওয়েস্টার্ন, মাসুদ রানা... তিন গোয়েন্দা, অনুবাদগুলো...
আমার হাতেখড়ি সম্ভবত জুলভার্নের "ক্যাপটেন হ্যাটেরাস" দিয়ে। এরপর "নোঙ্গর ছেঁড়া" আর "সাগর তলে"... সেই অসম্ভব ভালোলাগা মুগ্ধতার কথা আজও মনে পড়লে বুকের ভেতরটায় অন্যরকম একটা অনুভূতি হয়...
সেবা বাংলাদেশে যেই পাঠক মহল তৈরি করেছে/করে কিশোর-কিশোরীদের মাঝে... আমি বিশ্বাস করি, একটা দেশের জন্য এইটা খুব খুব চমৎকার একটা ব্যাপার। পাঠক তৈরি হলেই বই পড়বে, ফলে অনেক বৈচিত্র্যময় জীবন, মত, ভাবনা, দেশ বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার অনুধাবন করা সহজ হবে...
আমার অনেক মনে হয়েছে, মনে হয়... এই দেশটার উন্নতির জন্য একটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো নতুন প্রজন্মকে বই পড়াতে হবে... অনেক অনেক বই... চিন্তার পরিপক্কতাই আমাদের অনেক সুন্দর আর আদর্শিক জাতিতে পরিণত করতে পারে...
(সেবার বইয়ের কথা বলতে গিয়া হঠাৎ সিরিয়াস হয়া গেলাম দেখি! )
সেবা রকস 😀
ওই মুস্তাকিম তোর জুনিয়র নাকি? x-(
সেবার বই না হলে কোনো জার্নিই সম্পূর্ণ মনে হয় না। চৌদ্দ বছর ধরে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ক্যামলট বুক স্টল এর নিয়মিত সদস্য। ছোটবেলায় খালি চান্স খুজতাম কিভাবে দোকানদার কে ফাকি দিয়ে একটা বই পড়া যায়। আর এখন বহুৎ আঁতেলীয় বই পড়লেও সেই স্টলের মায়া কাটাতে পারি না। পুরানো বইগুলোই নতুন করে পড়তে ইচ্ছা করে। আর ভাত খাওয়ার সময় একটা থ্রিলার না হলে হজমে সমস্যা হয় 🙂 😀 😛 ।
কিন্তু যাই হোক না কেন.......।
ভাল কথা। কারো কাছে মাসুদ রানার কালপুরুষ এর তিন খন্ড আছে নাকি? ধার দেয়া যাবে?
মুছে যাক গ্লানি/ঘুচে যাক জরা
অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা
কলেজে থাকতে পড়েছিলাম হেল কমান্ডো , তখন এই বই টা পড়ে মুগ্ধ ই হয়েছিলাম শুধু, স্বপ্ন দেখার সাহস ও পাই নি, কলেজে থাকতে performence এতই জঘন্য ছিল । সময়ের পরিবর্তনে সামরিক বাহিনীতে এসে full commando ই করে ফেলছি, এখন আবার ওই বইটা পড়তে খুব মনে চায়, কেউ কোন খোঁজ দিতে পারেন কি?
মাহমুদ
মুস্তাকিম ভাই
কিছু মনে করিস না, ৫ তারা দিতে গিয়া ৪ তারা দিয়া দিছি। শালা মবাইলের গুস্তি কিলাই।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
ভাই আমি প্রবাসি আজ ১৫ বছর ধরে।দেশে বছর বছ র আর কিছু দিন থেকে চলে আসি।আমার একটা মেয়ে আছে সে ক্লাস ফাইভে পড়ে, আমাকে প্রায়ই অংক পারেনা বলে টেলি ফুনে তার সমাধান দিতে হয়।লজ্জার কথা হল সব অংক আমি ও পাড়িনা।১৫ বছর ধরে বই এর সাথে কোন সম্পর্ক নাই। আমাকে কি কোন ভাই দয়া করে কোন লিংক দিবেন যেখান থেকে আমি ক্লাশ ফাইভ এর অংক সমাধান ডাউন লোড করতে পাড়ি। ০০৯৬৬৫০২৩৫৭৯৯৫ সাখাওয়াত