অথঃবিড়াল সমাচার

দুইটা বিড়াল মিলিয়া এক টুকরা কেক চুরি করিল। কিন্তু কে কতটুকু খাইবে ঠিক করিয়া উঠিতে পারিল না। শুরু হইল ঝগড়া,মারামারি,হরতাল ,গাড়ি ও মানুষ পুড়ানো।
পাশের উঁচু গাছের ডালে বসিয়া এক চালাক বানর দেখিতেছিল সব।ঝগড়া নয় কেকের লোভে নামিয়া আসিলো সে।
গম্ভির চালে বলিল-এই, তোরা ঝগড়া থামা।আমি আসিয়াছি দ্বি পাক্ষিক মীমাংসার জন্য।শীর্ষ হইতে বৈঠকে নামিয়া।
কেক যার হাতে ছিল সেই বিড়াল বলিল-এই কেক আমার পূর্ব পুরুষ এবং আমার স্বপ্ন । ইহার বেশিটুকু আমারই প্রাপ্য।
অপর বিড়াল বলল,আমি ও আমার পরিবার নিজেরা ঘোষণা দিয়া যুদ্ধ যুদ্ধ খেলিয়া এইটা অর্জনে বিশেষ অবদান রাখিয়াছি।
বানর বলল,দাঁড়া,দেশে দাঁড়িপাল্লা দরকার। বন্টন কার্যে ভারসাম্যের জন্য কিছু বলদ দরকার।
সব আয়োজন যেন আপনা হইতেই হইয়া গ্যালো।
বানর খাব্লা মারিয়া কেক দুই ভাগ করিয়া পাল্লার দুই দিকে রাখিল।একদিকে একটু বেশি হইল।বানর খাব্লা মারিয়া সেখান হইতে খানিকটা কেক খাইয়া নিল।
এইবারে অন্যদিক বেশি হইয়া গেল।বানর এইবার সেইদিকে খাব্লা মারিল,ফলে প্রথম দিক আবার ভারি হইল,সেইদিকে আবার খাব্লা।এই ভাবে খাব্লাখাব্লির ফলে এক সময়ে সামান্যই কেক অবশিষ্ট রহিল।
স্বাপ্নিক বিড়াল বলদকে সাক্ষি মানিয়া বলিল,আর ভাগ করিবার দরকার নাই।ঐটুকু আমি লই।আমিই ঐটা পাইবার যোগ্যতা রাখি।
ঘোষক পরিবারের বিড়াল কহিল,না,তা কিরূপে হয়!

গ্রাম্য পোদ্দার বলিল,দাদা বানর,আর ভাগাভাগি কইরেন না।আপ্নের গাছের পাইথন কাকা ফোঁস করিতেসেন।উনি বলিয়াছেন আমি শিঘ্রই আবার গরিবের বৃক্কের ওপর চাপ ফেলিতে পারিব কিনা জানিনা…কেকটুকু…

বানর বলিল,ইসস আমি যে এতোক্ষণ ধরিয়া এতো কষ্ট করিয়া মাপামাপি করিলাম ,তাহার মজুরি কই? এই সামান্য কেক টুকুই হউক মজুরি।পাইথন কাকারে এইটা দিব,বলে খাব্লা মারিয়া বাকি কেক টুকু লইয়া সে আবার মগডালে।

বিড়ালদ্বয়,দাঁড়িপাল্লা,বলদ এবং আম জনতা পড়িয়া রহিল।

আম জনতা বাদে অন্যরা প্ল্যান করিতে বসিল,এইবার কিভাবে কি কি চুরি করা যায় এবং কি নিয়া গাছতলা গরম করা যায় ,যাহাতে গাছ হইতে পাইথন কাকা আবার বানর দাদাকে পাঠায়।

২,৮৯৮ বার দেখা হয়েছে

১৮ টি মন্তব্য : “অথঃবিড়াল সমাচার”

  1. টিটো মোস্তাফিজ

    গল্প, স্যাটায়ার, রাজনীতি ট্যাগগুলো যোগ করে দাও।
    আম জনতা বাদে অন্যরা প্ল্যান করিতে বসিল,এইবার কিভাবে কি কি চুরি করা যায় এবং কি নিয়া গাছতলা গরম করা যায় ,যাতে গাছ হতে পাইথন কাকা আবার বানর দাদাকে পাঠায়।দারুণ


    পুরাদস্তুর বাঙ্গাল

    জবাব দিন
  2. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    গতকাল পড়ে বসেছিলাম তারপরে হঠাৎ কোন কারণ ছাড়াই পাগলের মত হাসা শুরু করলাম। ফলাফল হেঁচকি। তাই মনের দুঃখে কমেন্ট দেইনাই। আজকে আরো একবার পড়লাম তবে হাসি যাতে না আসে তাই খুব সিরিয়াসভাব নিয়ে পড়সি। আর একটা কমেন্টও লিখলাম! 😀 😀


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন
  3. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    এইসব দেখে আর আনন্দ পাই না। বরং অন্ধকার ভবিষ্যতের কথা ভেবে ভারাক্রান্ত হই।
    কোন পরিবেশে রেখে যাচ্ছি আমাদের সন্তানদের?
    কিছুই কি করার নাই, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরনের?
    গোটা একটি জেনারেশন জীবনের বিনিময়ে দেশটা স্বাধীন করেছিল। আর আমরা আরেকটা জেনারেশন কেবলই লুকিয়ে লুকিয়ে জীবন বাচাচ্ছি।
    গর্ত খুজে নিয়ে ইদুরের জীবন যাপন করছি।
    এটা ঠিক না! এটা ঠিক না!!


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।