শোকাবহ পনেরই আগস্টে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পন করতে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। যার একটি অংশ ছিল এরকমঃ
“দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে ষাট বছরেরও আগে, জাপানে পড়াশোনা করতে এসেছে একাত্তর সালে স্বাধীন হওয়া দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট একটি দেশের এক যুবক। অবাক হয়ে সে লক্ষ্য করে, এই এতবছর পরেও সেখানে বিপুল দাপটের সাথে পরম তাচ্ছিল্যে ঘোরাফেরা করছে মার্কিন সেনাদল। প্রজন্মের পর প্রজন্মান্তর ঘটেছে, তাও এর পরিবর্তন ঘটেনি। কবে ঘটবে, কেউ জানেনা।
জাপানের তুলনায় অর্থনৈতিকভাবে একেবারেই গরীব ওই যুবক যে দেশের মানুষ সেই দেশটি। তবুও, সেই দেশে বিজয়ের পরের দিন থেকে আজ পর্যন্ত সগর্বে কোনও বিদেশী সৈন্য ঘোরাঘুরি করেনা।
শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর সাথে যুদ্ধপরবর্তী প্রথম সাক্ষাতেই বঙ্গবন্ধু বলেন- বেহেনজী, বাংলাদেশের মাটি থেকে ভারতীয় সৈন্য আপনি কবে সরিয়ে নেবেন? ইন্দিরাজী বললেন, “এটা হবে আপনার জন্মদিনের উপহার”।
ভারতীয় স্ট্র্যাটেজিস্টরা সমালোচনা করতে করতে নীল করে ফেলে ইন্দিরা গান্ধীর, কেন তিনি সেনা সরালেন বাংলাদেশ থেকে- এটা নিয়ে।ওই স্ট্র্যাটেজিস্টরা কল্পনাও করতে পারবেনা, ছয় ফুট দুই ইঞ্চি, মোটা চশমা পরা ওই লোকটার পার্সোনালিটির সামনে কোনও স্ট্র্যাটেজি খাটেনা।আর তাই বাংলার মাটিতে কোনও বিদেশি সেনা হাঁটেনা । ভুখা নাঙা বাংলাদেশের মানুষ চলে মাথা উঁচু করে, সগর্বে। এগেইন, থ্যাংক্স টু দ্যাট টল, স্পেকটাকলড ম্যান উইথ আ ভয়েস অফ ভলকানো।”
এ ঘটনাটির বিস্তারিত বর্ণনা আছে চরমপত্র খ্যাত এম আর আকতার মুকুলের বই “চল্লিশ থেকে একাত্তর” এ। বইটি এ মুহূর্তে হাতে নেই বলে পৃষ্ঠা নম্বর দিতে পারছিনা, তবে গুগল করে পাওয়া একটি ব্লগ থেকে হুবহু তুলে দিচ্ছি(ভুল হলে সরিয়ে নেব)।
“উনি (শেখ মুজিবুর রহমান) পাইপে কয়েকটা টান দিয়ে হালকা মেজাজে কথা আরম্ভ করলেন।
“কানের মাঝ থাইক্যা চুল বাইরাইয়া আইছে ভারতে এমন সব ঝানু পুরানো আইসিএস অফিসার দেখছোস্? এরা সব ইন্দিরা গান্ধীরে বুদ্ধি দেওনের আগেই আজ আলোচনার সময় মাদামের হাত ধইর্যা কথা লমু। জানোস্ কি কথা? কথাটা হইতেছে, মাদাম, তুমি বাংলাদেশ থাইক্যা কবে ইন্ডিয়ান সোলজার ফেরত আনবা?”
বঙ্গবন্ধু তাঁর দেয়া প্রতিশ্রুতি রেখেছিলেন। কোলকাতার রাজভবনে ফার্স্ট রাউন্ড আলোচনার শুরুতে দুজনে পরস্পরের কুশলাদি বিনিময় করলেন। এরপর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে সাহায্য করার জন্য ভারতের জনগণ, ভারত সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বঙ্গবন্ধু হঠাৎ করে আসল কথাটি উত্থাপন করলেন।
শেখ মুজিব: মাদাম, আপনে কবে নাগাদ বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করবেন?
ইন্দিরা গান্ধী: বাংলাদেশে আইন-শৃংখলার পরিস্থিতি তো এখনও পর্যন্ত নাজুক পর্যায়ে রয়েছে। পুরো “সিচুয়েশন” বাংলাদেশ সরকারের কন্ট্রোলে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করাটা কি বাঞ্চনীয় নয়? অবশ্য আপনি যেভাবে বলবেন সেটাই করা হবে।
শেখ মুজিব: মুক্তিযুদ্ধে আমাদের প্রায় ৩০ লাখ লোক আত্মাহুতি দিয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশে আইন ও শৃংখলাজনিত পরিস্থিতির জন্য আরও যদি লাখ দশেক লোকের মৃত্যু হয়, আমি সেই অবস্থাটা বরদাশত্ করতে রাজী আছি। কিন্তু আপনারা অকৃত্রিম বন্ধু বলেই বলছি, বৃহত্তর স্বার্থে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করলে আমরা কৃতজ্ঞ থাকব।
ইন্দিরা গান্ধী: এক্সেলেনসি, কারণটা আর একটু ব্যাখ্যা করলে খুশি হবো।
শেখ মুজিব: এখন হচ্ছে বাংলাদেশে পুনর্গঠনের সময়। তাই এই মুহুর্তে দেশে শক্তিশালী রাজনৈতিক বিরোধীতা আমাদের কাম্য নয়। কিন্তু ভারতীয় সৈন্যের উপস্থিতিকে অছিলা করে আমাদের বিরোধী পক্ষ দ্রুত সংগঠিত হতে সক্ষম হবে বলে মনে হয়। মাদাম, আপনেও বোধ হয় এই অবস্থা চাইতে পারেন না। তাহলে কবে নাগাদ ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করছেন?
ইন্দিরা গান্ধী: (ঘরের সিলিং-এর দিকে তাকিয়ে একটু চিন্তা করলেন) এক্সেলেনসী, আমার সিদ্ধান্ত হচ্ছে, আগামী ১৭ মার্চ বাংলাদেশের মাটি থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করা হবে।
শেখ মুজিব: মাদাম কেনো এই বিশেষ দিন ১৭ মার্চের কথা বললেন?
ইন্দিরা গান্ধী: এক্সেলেনসী প্রাইম মিনিস্টার, ১৭ মার্চ হচ্ছে আপনার জন্মদিন। এই বিশেষ দিনের মধ্যে আমাদের সৈন্যরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফেরত আসবে।
ভারতীয় সৈন্যদের শেষ দলটি বাংলার মাটি ত্যাগ করলো ১৯৭২ সালের ১৭ মার্চ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্মদিন।
পনেরই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লিখতে বসাটা কঠিন কাজ, প্রচন্ড শোক ও লজ্জার এই দিনটিতে আবেগকে অতিক্রম করার মত মানসিক শক্তি আমার ছিলনা। আমার স্ট্যাটাসটি ছিল তথ্যসুত্রবিহীন, কারণ টোকিওতে বসে রেফারেন্স খুঁজতে গেলে যে আবেগ নিয়ে লিখতে বসেছিলাম সেটা থাকত না। সে চেষ্টাও করিনি।তবে লেখাটি প্রকাশিত হবার পর দেখলাম খুব চমৎকার কিছু আর্টিকেল লেখা হয়েছে, বিভিন্ন যুক্তি-রেফারেন্স সহকারে এর ভুলত্রুটি দেখানো হয়েছে।
আমি এটিকে খুব পজেটিভ ভাবে দেখি। বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে যত বেশি চর্চা হবে, ততই জাতি হিসেবে ইতিহাসের দায় থেকে আমরা মুক্ত হব- মুক্তিযুদ্ধের আলোয় আমাদের অন্ধকার দূর হবে।সবচেয়ে ভাল লেগেছে “বোহেমিয়ান” ভাইয়ের লেখাটি। লেখাটি যৌক্তিক, রেফারেন্স সমৃদ্ধ এবং সুপাঠ্য। আরেকটি ফেসবুক নোট আছে- “আমান আবদুহু” সাহেবের। সেটিও লেখা হিসেবে ভাল, তবে আমাকে খুব বাজে ভাবে তথ্য প্রমাণ ছাড়াই ব্যক্তি আক্রমণ করেছেন ভদ্রলোক। দুটো লেখারই মুল সুর এক- আন্তর্জাতিক চাপ এবং ভূরাজনৈতিক কারণে ভারত এমনিতেই বাংলাদেশ দখল করে রাখতে পারতনা- এখানে বঙ্গবন্ধুর কোনও ভুমিকা নেই।
“বোহেমিয়ান” ভাইয়ের লেখাটি পড়ে তাঁকে জেনুইনলি নিরপেক্ষ বলে মনে হয়েছে যিনি কিনা কোনওরকম ব্যক্তি আক্রমণের বদলে ইতিহাসের সত্যতা জানাতেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে, “আমান আবদুহু” সাহেব তাঁর লেখা শুরুই করেছেন ব্যক্তি আক্রমণ দিয়ে, এবং তাঁর লেখায় মনে হয়েছে তিনি নিরপেক্ষভাবে লেখার বদলে আওয়ামী বিদ্বেষের ঝুলি নিয়ে বসেছেন। এটাও অবশ্য দোষের কিছু বলে আমি মনে করিনা, একটি গণতান্ত্রিক দেশে ভিন্নমত থাকতেই পারে।দুটি লেখার লিঙ্কই নীচে পাবেন।
এবার আসি আমার অবস্থানেঃউপরে উল্লিখিত দুজনই বলতে চেয়েছেন, ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারে বঙ্গবন্ধুর কৃতিত্ব একেবারেই নেই( বা থাকলেও খুবই সামান্য)। এই প্রত্যাহারের পেছনে ভূরাজনৈতিক এবং অন্যান্য কারণই মূল।আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে মনে করি- ভূরাজনৈতিক এবং অন্যান্য কারণগুলো যেমন অনস্বীকার্য, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর “স্টেটসম্যানশীপ” বা নেতৃত্বকে যেভাবে বাদ দেয়া হচ্ছে সেটা করা হলে প্রকৃত ইতিহাস বাদ পড়ে যায়। এটা অন্যায় এবং একজন বাঙালি হিসেবে এটার প্রতিবাদ করাটা জরুরী।
“বোহেমিয়ান” ভাই বঙ্গবন্ধু কিছু রেফারেন্স চেয়েছেন, মূলতঃ তাঁর জ্ঞানকে আরও সমৃদ্ধ করতেই নিচের রেফারেন্সগুলো দিচ্ছি। উল্লেখ্য, এটা তাঁর প্রতি কোনওরকম রাগ বা বিদ্বেষ থেকে নয়। তিনি চমৎকার ব্লগটি লিখে আমার জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করেছেন, সেই কৃতজ্ঞতা এবং দায়বদ্ধতা থেকেই আমার এই প্রচেষ্টা।
রেফারেন্সঃএক
সাবেক স্পীকার ও পেশাদার কূটনীতিক হুমায়ূন রশিদ চৌধুরীর ভাষায়,
“১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতা সফরে গিয়ে বঙ্গবন্ধু সাধারণ কথাবার্তার মাঝে প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইব্দিরা গান্ধীকে অপ্রস্তুত করে দিয়ে বলেন, আমার দেশ থেকে আপনার সেনা বাহিনী ফিরিয়ে আনতে হবে।’ শেখ মুজিব এমন একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় এর সহজভাবে তুলতে পারেন, ভাবতেও পারেন নি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। তাঁর এই অপ্রস্তুত অবস্থার সুযোগ নিয়ে শেখ মুজিব নিজের কথার পুনরাবৃত্তি করে বললেন, ‘ এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর আদেশই যথেষ্ট। ‘ অস্বস্তিকর অবস্হা কাটাতে মিসেস ইন্দিরা গান্ধীকে রাজী হতে হয় এবং (তিনি) জেনারেল মানেকশকে বাংলাদেশ থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের দিনক্ষন নির্ধারনের নির্দেশ দেন।”
রেফারেন্সঃদুই
প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ও লেখক আবুল মনসুর আহমদের বিখ্যাত বই “আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর” থেকে,
” পরদিন উভয় প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা সম্পর্কে একটি সুন্দর যুক্ত বিবৃতি প্রকাশিত হইল। তাতে উভয় স্বাধীন সার্বভৌম রাস্ট্রের কল্যানের জন্য পারস্পরিক সহযোগিতার কথা ছাড়াও বলা হইল যে, আগামী ২৫ শে মার্চের মধ্যে ভারতীয় সৈন্য অপসারনের কাজ সমাপ্ত হইবে। আমি এই ঘোষনায় আহলাদিত হইলাম এবং শেখ মুজিবের কূটনৈতিক সাফল্যে গর্বিত হইলাম। কার্যত বাংলাদেশ হইতে সৈন্য অপসারনের কাজটা নির্ধারিত তারিখের অনেক আগেই সমাপ্ত হইল।১২ই মার্চ তারিখে ভারতীয় সৈন্য ঢাকা ত্যাগ করিল।প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান একটি প্রানস্পর্শী সংক্ষিপ্ত ভাষনে তাদের বিদায় সম্ভাষন জানাইলেন।”
রেফারেন্সঃতিন
বঙ্গবন্ধুর নিজের বক্তৃতায় পাই,
” আমি সশ্রদ্ধচিত্তে ভারতের জনগন ও প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে সালাম জানাই।বিশ্বের এমন কোন দেশ নাই যেখানে শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ব্যাক্তিগতভাবে আমার মুক্তির জন্য যান নাই। অনেকে বলেছেন, ভারতীয় সেনাবাহিনী কবে যাবে। মতিলাল নেহেরুর নাতনি, পন্ডিত জওরলাল নেহেরুর কন্যা ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীকে আমি ভালো করে চিনি। আমি যেইদিন বলবো, সেই দিনই ভারতীয় সৈন্য বাংলা থেকে চলে যাবে।ভারতীয় সৈন্য হানাদার বাহিনী নয়”।
যদিও যাঁকে নিয়ে লেখা তাঁর কথাই সরাসরি রেফারেন্স হিসেবে দুর্বল, তাও বক্তব্যটি তুলে দিলাম।
রেফারেন্সঃচার
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ফারুক চৌধুরী বলেছেন-” ১৯৭২ সালের ১০ ই জানু্যারি দিল্লি থেকে তাঁর সংগে ঢাকা আসার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল।আমি তখনই দেখেছি তাঁর মনে কাজ করছে কবে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সেনা বাহিনী চলে যাবে।একটি স্বাধীন দেশে অন্য দেশের সৈন্য অবস্হান করলে সে দেশ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে না, এটা তিনি বুঝতেন। ১৯৭২ সালের ফেব্রুআরি মাসে তাঁর কোলকাতা সফরের সময় ২৫শে মার্চের মধ্যে ভারতীয় সেবাবাহিনী প্রত্যাহারের ঘোষনা আসে। তিনি কিছুটা ঝুঁকি নিয়েই,আইনশৃন্খলা পরিস্হিতি যথেস্ট ভালো না হওয়া সত্ত্বেও এ কাজটি করেছিলেন।এটা না হলে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া দূরহ হতো।”
রেফারেন্সঃ পাঁচ
আমি যদিও ইন্ডিয়ান স্ট্র্যাটেজিস্টদের কথা বলেছি যে তাঁরা কেউ কেউ ইন্দিরা গান্ধীকে দায়ী করেন সৈন্য সরিয়ে নেবার জন্যে, এই কথাটির রেফারেন্স এ মুহূর্তে আমার কাছে নেই। এ কথাটি বলেছিলাম ইন্ডিয়াতে কোর্স করতে যাওয়া আমার পরিচিত কিছু সেনা অফিসারের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে। সঙ্গত কারণেই তাদের নাম প্রকাশ করতে পারছিনা, কাজেই, ধরে নিলাম রেফারেন্স হিসেবে এটি গ্রহণযোগ্য নয়।
তাহলে ব্যাপারটা কি? শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর উপর কি একেবারেই কোন চাপ ছিলনা বাংলাদেশকে দখলে রাখবার?
দু’হাজার চার সালে প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ এ এফ সালাহউদ্দিন আহমেদের বই “বাংলাদেশ-পাস্ট এ্যান্ড প্রেজেন্ট” ( নয়াদিল্লীর এপিএইচ পাবলিশিং হাউস থেকে প্রকাশিত) বইয়ের দুইশ পনের নং পৃষ্ঠায় আমরা পাই,
Ä high watermark of Sheikh Mujib’s statesmanship was reflected when during his visit to Kolkata on 6-8 February,1972, a joint declaration was signed by the prime minister of India and Bangladesh, announcing that the Indian troops would be withdrawn from Bangladesh by 25 March, 1972. It is a matter of interest to note that secret British official papers released after thirty years on January 1, 2003 , mention that Mrs Gandhi, on a visit to Britain in December 1971 told British Prime Minister Edward Heath regarding the pressure in her cabinet for her to take Pakistani territory and not return it.
উপরে প্রথম যে চারটি রেফারেন্স দিলাম, তার সারমর্ম মূলতঃ উপরের লাইনগুলোতে বলে দেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর দুর্দান্ত স্টেটসম্যানশীপের অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে এই চুক্তি। ভারতীয় ক্যাবিনেটে শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর উপর যে প্রচন্ড চাপ ছিল পাকিস্তানি এলাকা দখল করে ফেরত না দেবার, তিনি নিজে এটি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন।
রেফারেন্সঃছয়
সালেহ উদ্দিন আহমেদের বইটি ক্রস চেক করতে গিয়ে বিবিসি নিউজের ওয়েবসাইটে দুহাজার তিন সালের পহেলা জানুয়ারির প্রকাশে পেলামঃ
Beyond South Asia, many people saw it as a freedom struggle in which India played a helpful role against an oppressive military hierarchy in West Pakistan, led by General Yahya Khan.But the transcripts of talks between the Indian Prime Minister, Indira Gandhi, and Mr Heath, and of the Heath-Nixon summit in Bermuda, show it was more than that.Mrs Gandhi, on a visit to Britain, told Mr Heath of the pressure in her cabinet for her to take Pakistani territory and not return it.
অর্থাৎ, সাউথ এশিয়া ছাড়াও বাইরের বহু মানুষ এটিকে দেখত একটি মুক্তিসঙ্গ্রাম হিসেবে যেখানে ভারত একটি আগ্রাসী সামরিক বাহিনীর বিরূদ্ধে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।ব্রিটিশ সিক্রেট পেপার বলছে, ব্রিটিশ ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কত্থোপকত্থনে এটা পরিষ্কার যে ভারত শুধুমাত্র সহায়ক হিসেবে পাকিস্তানকে ভাঙতে চায়নি, বরং ভারতীয় ক্যাবিনেটে বাংলাদেশ দখল করে নেবার জন্যে ইন্দিরা গান্ধীর উপর চাপও ছিল।এই চাপে মাথা নত না করার বহু কারণ রয়েছে, যেগুলো বোহেমিয়ান ভাই আর অন্য ভদ্রলোকের ফেসবুক নোটে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এত বড় একটা চুক্তি ঠিকঠাকভাবে সম্পাদনে কি তাহলে বঙ্গবন্ধুর পার্সোনালিটির কোনই ভূমিকা নেই?? ঠিক একই ধরণের পরিস্থিতি তো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানে হয়েছে, ইতালিতে হয়েছে, আরও অনেক জায়গায় রয়েছে। এ দুটো জায়গাতে সশরীরে মার্কিন সেনাদলের মুখোমুখী হবার অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে, সে কারণে চাক্ষুষ অভিজ্ঞতা থেকেই এ দুটো জায়গার কথা বলেছি।
এমন না যে আমেরিকান সেনার উপস্থিতির ফলে এ দুটো দেশ খুব খারাপ রয়েছে। তবুও এটা বলার কারণ, বাংলার মাটিতে দখলদার হিসেবে অন্য দেশের সেনার পদচারণা আমার কাছে চরম অপমানজনক বলে মনে হয়। আমরা জাপান আর ইতালির তুলনায় জাতি হিসেবে হয়ত অর্থনৈতিক এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে বহু পিছিয়ে আছি, কিন্তু আমার দেশের মাটিতে দখলদারিত্বের দর্পে অন্য দেশের সেনাদল টহল দেয় না- এ নিয়ে গর্ববোধ আমি করতেই পারি।
যে নেতার হাত দিয়ে এই কাজটি সম্পাদিত হল- তিনি কি কোনই ধন্যবাদ পাবার যোগ্য নন???
নিজের বিবেককে প্রশ্ন করুন।
পরিশিষ্টঃ
বঙ্গবন্ধু ছাড়াও যেসব কারণসমূহ এই ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের মূল ভূমিকায় ছিল, এরকম আরও একটি সুস্পষ্ট কারণ বোহেমিয়ান ভাইয়ের লেখায় বাদ পড়েছে। এটি হচ্ছে, “হিউম্যানিটারিয়ান ইনটারভেনশন” সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক নীতিমালা।যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ওয়েবসাইট থেকে জুলিয়া ব্রাউয়ার এবং অন্যান্য-এর লেখা “Historical Examples of Unauthorized Humanitarian Interventions” আর্টিকেল (৭) থেকে পাই,
In justifying its unauthorized intervention, India framed the issue as mainly one of self-defense and regional security. Citing the millions of refugees flowing from East Pakistan into India, the Prime Minister of India wrote to the U.N. Secretary General that Pakistan’s actions “pose a serious threat to our security” and that the resulting military action taken against Pakistan was “entirely defensive. The Indian Ambassador to the Security Council argued that Pakistan had committed a crime of “refugee aggression,” that is, its aggression came from the strain its actions placed on India’s social structure and finances. India also argued that it had a right to intervene in light of the humanitarian catastrophe engulfing East Pakistan. The Indian Ambassador to the U.N. claimed that India had “absolutely nothing but the purest of . . . intentions: to rescue the people of East Bengal from what they are suffering.”
অর্থাৎ, ভারত মানবিক কারণের কথা খুব জোর দিয়ে বলেছে। এই হিউম্যানিটারিয়ান ইনটারভেনশন বা মানবিক কারণে যুদ্ধে যোগ দেয়া ভারত যদি বাংলাদেশ দখল করে রেখে দিত, আন্তর্জাতিকভাবে বেশ বিপদেই পড়তে হত তাকে। ভারতের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেয়া খুবই আলোচিত একটি বিষয় আন্তর্জাতিক আইনে, এ নিয়ে অসংখ্য পেপার রয়েছে।আগ্রহীরা গুগল করে দেখতে পারেন।
আমার কথাঃ
আমি কি নিরপেক্ষ ছিলাম পনেরই আগস্টের ওই স্ট্যাটাসটি লেখার সময়??উত্তর হচ্ছে, না। নিজেকে আমি নিরপেক্ষ নয় বরং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এবং বঙ্গবন্ধুর একজন বিশাল ফ্যান বলে মনে করি। মুশকিল হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বলে নিজেকে দাবী করামাত্র এটাকে পলিটিকাল রূপ দেয়া হয়, সম্পূর্ন অপ্রাসঙ্গিকভাবে আমার পেশাগত পরিচয় টেনে নিয়ে আসা হয়।
আমার প্রায় পৌনে পাঁচ বছরের চাকুরিজীবনে কখনও কোন দলীয় তাঁবেদারী করিনি- পুলিশ অফিসার হিসেবে আমার সীমিত সামর্থ্যে যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করেছি সততা ও নিরপেক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে। তবে পুলিশ অফিসার পরিচয়ের আগে আমি একজন বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের একজন গর্বিত নাগরিক। মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুকে বাদ দেয়া মানে আমার অস্তিত্ব ধরেই টান দেয়া- যেটা আমি পারবনা।
মুক্তিযুদ্ধ না হলে, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব না থাকলে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেতাম না, আর আজকে হয়ত কোনও পাকিস্তানি অফিসারের জুতো পলিশ করতে হত। এই কথা বলার জন্যে যদি আমাকে দলীয় ট্যাগ খেতে হয়, বিসিএস পরীক্ষায় আমার কষ্টার্জিত সাফল্যের প্রতি আঙুল তোলা হয়- এই মিথ্যা অপপ্রচারের যন্ত্রণা সহ্য করতে আমি রাজি আছি।
সেই সাথে এটাও বলি, আমার পেশাগত পরিচয় মিলিয়ে যাঁরা আমাকে দলীয় দোসর ইত্যাদি বলছেন, তাঁদের বদ্ধমূল ধারণা তো আমি পাল্টাতে পারবনা- তবে আঠাশতম বিসিএস পরীক্ষায় আমার রেজিস্ট্রেশন নম্বর( ০৩৯৬৪৫) উল্লেখ করে দিলাম। আপনারা খোঁজ নিন, উপযুক্ত প্রমাণ সহকারে আপনাদের দাবী প্রমাণ করুন। কথা দিচ্ছি, “আওয়ামী পারিবারিক/দলীয় কোটায় চাকুরি পেয়েছি” এটা যদি অকাট্যভাবে প্রমাণ করতে পারেন- সরাসরি চাকুরি থেকে রিজাইন দেব।
বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুদিবসে তাঁকে নিয়ে লিখেছিলাম, সে কারণে তাঁর কৃতিত্বটুকুকেই বেশি করে স্মরণ করেছি। এর মানে এই নয় যে বাকি কারণগুলো ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে ইতিহাসের বিকৃতি ঘটানোই আমার অভিপ্রায়।
আমি পেশাদার ইতিহাসবিদ নই, মুক্তিযুদ্ধের প্রতি প্যাশন থেকে মাঝে মাঝে লিখি। আমার লেখায় ভুলত্রুটি থাকতেই পারে, সেক্ষেত্রে তা ধরিয়ে দিলে কৃতজ্ঞ থাকব। তবে বিনীত অনুরোধ, ব্যক্তি আক্রমণ করবেন না। আপনি সম্পুর্ণ ভিন্নমতের হতেই পারেন এবং লেখার সাথে প্রকাশ্যে দ্বিমত করতেই পারেন- তবে ওটা যুক্তিতর্ক আর রেফারেন্সের মাধ্যমে হওয়াই ভাল। মতভিন্নতা মানে শত্রুতা নয়, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি স্বাধীনতাবিরোধী, রাজাকারসুলভ আচরণ করছেন।
তথ্যসূত্রঃ
১) হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীরর সাক্ষাতকার : বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিকথা.: রইস উদ্দিন আরিফ: পাঠক সমাবেশ। (২০১০)
২) আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর: আবুল মনসুর আহমদ; পৃ: ৬১২
৩) ২৪ শে জুলাই, ১৯৭২: টাঙ্গাইল বিন্দুবাসিনী কলেজের মাঠে কাদের সিদ্দিকির অস্ত্র সমর্পন অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতা।
৪) সময়ের আবর্তে: ফারুক চৌধুরী :পৃ: ১৭১
৫) Bangladesh-Past and Present: Salahuddin Ahmed: APH Publishing, New Delhi pp. 215 (2004)
৬) http://news.bbc.co.uk/2/hi/south_asia/2619317.stm ( ব্রিটিশ সিক্রেট ডকুমেন্টস সংক্রান্ত নিউজ)
৭) http://www.law.yale.edu/documents/pdf/cglc/GLC_historicalExamples.pdf (ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টিকেল)
৮) http://shorob.com/19754 ( বোহেমিয়ান ভাইয়ের ব্লগ)
৯) http://tinyurl.com/pq2mody (আমান আবদুহুর ফেসবুক নোট)
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ
শ্রদ্ধেয় অগ্রজ এনায়েত উল্লাহ ভাই, যিনি রেফারেন্সগুলো যোগাড় করে দিয়েছেন। তিনি ছাড়া এ নোটটি লেখা অসম্ভব ছিল।
জরুরী একটা লেখা।
ধন্যবাদ।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
প্রিয় তে
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
তথ্য প্রমাণ সহকারে দারুণ একটি পোষ্ট :hatsoff:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
প্রথমেই বলে নিচ্ছি, যুদ্ধ জয়ের পর মাত্র তিন মাসের মাথায় যুদ্ধে জয় করা ভূমি থেকে বিজয়ী সৈন্যদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়াটা ছিলো এক অভূতপূর্ব ঘটনা। এটা ছিলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এবং শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী, উভয়ের জন্য এক বিরাট কূটনৈ্তিক সাফল্য। এই ঘটনা উভয়কেই ইতিহাসে সম্মানের আসনে বসিয়েছে তাদের দূরদর্শিতার জন্য। এটা বলা বাহুল্য, বঙ্গবন্ধু ছাড়া আর কোন নেতার পক্ষে এ বিষয়ে এতটা সাফল্য অর্জন করা ঐ সময়ে অসম্ভব ছিলো।
তবে, লেখাটায় বর্ণিত কিছু নাটকীয়তা লেখার মানকে ক্ষুন্ন করেছে বলে মনে করি। সাবেক স্পীকার ও পেশাদার কূটনীতিক হুমায়ূন রশিদ চৌধুরীর ভাষায় "বঙ্গবন্ধু সাধারণ কথাবার্তার মাঝে প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইব্দিরা গান্ধীকে অপ্রস্তুত করে দিয়ে বলেন, আমার দেশ থেকে আপনার সেনা বাহিনী ফিরিয়ে আনতে হবে।’ শেখ মুজিব এমন একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় এর সহজভাবে তুলতে পারেন, ভাবতেও পারেন নি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। তাঁর এই অপ্রস্তুত অবস্থার সুযোগ নিয়ে শেখ মুজিব নিজের কথার পুনরাবৃত্তি করে বললেন, ‘ এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর আদেশই যথেষ্ট।" - এই কথা থেকে মনে হয়, বিষয়টি আচমকা উপস্থাপন করা হয়েছিলো এবং এতে প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইব্দিরা গান্ধী অপ্রস্তুত হয়েছিলেন। তাই যদি হবে, তবে তার সাথে "এক্সেলেনসী প্রাইম মিনিস্টার, ১৭ মার্চ হচ্ছে আপনার জন্মদিন। এই বিশেষ দিনের মধ্যে আমাদের সৈন্যরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফেরত আসবে" - এই কথাগুলোকে একটু অসামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হয়। আগত অতিথির জন্মদিন সম্পর্কে ঙ্খোঁজ নিয়ে রেখে অপ্রস্তুত অবস্থায় এরকম একটি তারিখ নির্ধারণ করাটা আমার কাছে স্বাভাবিক মনে হয়নি।
"স্বাধীন বাংলাদেশে আইন ও শৃংখলাজনিত পরিস্থিতির জন্য আরও যদি লাখ দশেক লোকের মৃত্যু হয়, আমি সেই অবস্থাটা বরদাশত্ করতে রাজী আছি" - এই কথাগুলোও বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্বের সাথে ঠিক খাপ খায় বলে মনে করিনা। হয়তো এখানেও কিছু ইতিহাস বিরোধী নাটকীয়তার অনুপ্রবেশ ঘটেছে। নিতান্তই ব্যক্তিগত মতামত, সাধারণ মানের জ্ঞান থেকে।
মাস্ফু ,
আরো জানতে চাই এ ব্যাপারে। ইতিহাসের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোই তো সযত্নে আড়াল করা হয়েছে ৭৫ এর পর থেকে।
আরো লিখো প্লিজ
জরুরী লেখা, ভালো লেখা- অবশ্যপাঠ্য।
ভূরাজনীতিওলা দের কথা শুনলে মনে হয়- ঐ প্রস্তাবটা যুদু মধু যে কেউ একজন দিলেই হয়ে যেত, এমনকি প্রস্তাব না দিলেও দুদিন পরে ভারতীয় সৈন্যরা এম্নিতেই চলে যেত!
ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের অনেক গুলি তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে,,,, আসলে কত তারিখে প্রত্যাহার করা হয়েছে? পোষ্টি অত্যন্ত গুরুত্ববহন করে।
মুক্তিযুদ্ধ অবশ্যই জাতির বৃহত্তম অর্জন। কিন্তু সেটার গুনগান বাস্তবতার সাথে করলেই ভাল হয় মনে করি। exaggerate করে বললে আপনাদের কাছে অপদস্থ হবার ভয়ে কেউ কিছু বল্বেনা কিন্তু আসলে ব্যাপারটা সম্পর্কে হালকা অনুভুতি চলে আসবে।
আজকে হয়ত কোনও পাকিস্তানি অফিসারের জুতো পলিশ করতে হত।...
এ কথা টা না বল্লেই কি হোতনা? নাকি আপনি পরাধীন দেশে অফিসার হলে সাধীনতা ক্ষুন্ন হয়ে যেত? কথার কথা হিসেবে বললেও লেম লাগে। যত অন্যায় অবিচারই হোক, বৈষম্যই হোক।এই ২০১৬ সালে আপনি বাঙালি বলে পরাশোনা করে জুতা পালিশ কেন সিপাহি বা হাবিলদার হতেন সেটা আজগুবি লাগে। আপনিতো বিরুদ্ধে কিছু বলেই হল।
আসলে স্বাধীনতার জন্য সুযগ সুবিধার কারন লাগেনা। জাতিগত স্পৃহাই যথেষ্ট। নাহলে স্কটল্যান্ড, ফ্রেঞ্চ কানাডিয়ান দের আলদা হবার কথাই উঠত না।
এতো রঙ চঙ্গে কথা, জুতা পালিশ কপরতাম, ঘরে ঘরে যুদ্ধ সন্তান হোত, বাঙ্গালিরা ক্রিকেট খেলেতে পারতনা একজন ও, নায়ক হতে পারত না এক জনও, আমেরিকা কানাডার মাটি দেখত না এক জন ও-শুন্তে এখন আজাইরা মনে হয়।