সাকার বিচারের রায়কে বিতর্কিত করার চেষ্টা। বিশ্বাস করবেন না

খুব তড়িঘড়ি করে লিখলাম। সাথে স্ক্রীনশট দিয়ে দিলাম। ভুল হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। জামাত শিবিরের পুরাণ রোগ। ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত করা। তারই অংশ হিসেবে তারা এই মিথ্যে খবর ছড়িয়ে দিয়েছে। কিছু মানুষ আবার বিচার না করেই বিশ্বাস করে বসে আছে। প্রত্যেকটি পেজের নিচে কমেন্টে দেখবেন এক শ্রেনির মানুষ এগুলো বিশ্বাস করে বসে আছে… এদের এই বিভ্রান্তিকর প্রচারনা রুখে দেবার দরকার… তাই রাত জেগে লিখে ফেললাম…

 

হঠাৎ রাত ১২ টা -১ টার দিকে ফেসবুকে একটা পেজ সাজেশন আসলো। চোখ দিতেই ধাধায় পড়ে গেলাম কাহিনী কি? খুব সুন্দর চটকদার হেডিং দিয়েছে নিউজের।

ব্রেকিং নিউজঃ সাকা চৌধুরীর রায় প্রকাশের আগেই কপি ফাস, লিখেছে আইন মন্ত্রনালয়

20

নিউজ ফিডে এড আসা মানেই ডলারে পে করা হচ্ছে এই এডের জন্য। শিয়র হলাম নিচে ছোট্ট করে ‘Sponsored’ লেখাটি দেখে। একটু খটকা লাগলো। এমন নিউজ হলে মেইন স্ট্রীম মিডিয়া গিলে খাবে। ডলার দিয়ে প্রচার করার দরকার তো নেই। লিঙ্কে ক্লিক করে মূল রিপোর্টে গেলেই দেখা যাবে বেলজিয়াম ভিত্তিক ট্রাইবুনাল লিক্স এক ওয়েবসাইটের বরাতে খবর টা লিখা হয়েছে।

21

এই ট্রাইবুনাল লিক্সের সাইটে গেলে দেখতে পারবেন একটি রিপোর্ট আছে যেখানে একটি লাইন আছে, ‘This information was obtained from the Belgium-based website – ‘www.tribunalleaks.be

23

যেখানে মূল রিপোর্ট ধরা হয়েছে এটাকে সেখানে এমন লাইন গুলো কনফিউশন জাগায়। তারপর পুরো রায়টি পেতে আর একটি লিঙ্ক দেয়া হয়।

22

এটা হল আরেকটা সাইট justiceconcern.org   কথিত পুরো রায় টি এখানে আপ্লোড করা হয়েছে।  সেই মুহুর্তে আমি পুরা বিলা হইয়া গেলাম। কাহিনী কি? প্রথমে বলল ট্রাইবুনাল লিক্সে প্রথম আপ্লোড করা হয় রায়, ট্রাইবুনাল লিক্স দা দাবীও করে কিন্তু এসে দেখলাম রায় প্রথমে আপ্লোড করা হয়েছে জাস্টিস কন্সার্নে। তাহলে মূল রিপোর্ট কোনটা?

24

এখন একটা জিনিস দেখলেই কাহিনী ক্লিয়ার হয়ে যায়, দেখেন রিপোর্ট একটাই। একই রিপোর্ট একেক জায়গায় দিয়ে তা উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে রায়ের আগের দিনে প্রচার করা হচ্ছে। জাস্টিস কন্সার্নে, ট্রাইবুনাল লিক্সে একই হেডিং দিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এই রিপোর্টেরই বাংলা ভার্সন টুডে ব্লগে প্রকাশিত হয়েছে। এবং এই পেজটি ডলার দিয়ে পে করে এমন একটি খবর সাকার রায়কে বিতর্কিত করার জন্য ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে।  যে রিপোর্টের প্রকাশনাতেই এমন মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছে তা পড়ে দেখা কিংবা সত্যতা যাচাই করার ইচ্ছা হয় নাই।

 

১,১৪৮ বার দেখা হয়েছে

৪৭ টি মন্তব্য : “সাকার বিচারের রায়কে বিতর্কিত করার চেষ্টা। বিশ্বাস করবেন না”

  1. মাহমুদুল (২০০০-০৬)

    সিরাজ ভাই, কাল যখন দেখছি ফেসবুকে স্পনন্সরড পেজে এইটা ছড়ানো হচ্ছে তখনই আমি বুঝছিলাম, এমন অভিযোগ এরা করবে। সেই জন্যই লেখা। টেকনিক্যাল ঘাপলা বিস্তারিত আরো পাবেন


    মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য

    জবাব দিন
    • সিরাজ(১৯৯১-১৯৯৭)

      কিন্তু ভাই অনেকটাই যে মিলে গেছে লেখার সাথে বিচারের রায়!!!!!!! এটা কিভাবে সম্ভব?

      সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মানবতাবিরোধী অপরাধের চূড়ান্ত রায় ঘোষণার আগেই বেশ কয়েকটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে চূড়ান্ত রায় ফাঁস হয়ে গেছে। রায় ঘোষণার পরে দেখা যায়, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের সঙ্গে বিচারপতিদের রায় মিলে গেছে। ওই সংবাদমাধ্যমগুলো দাবি করেছে যে বেলজিয়ামভিত্তিক www.tribunalleaks.be সাইটে রায়-সংক্রান্ত তথ্য প্রথমে প্রকাশ করা হয়।

      একটি সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে যে রায় ঘোষণা করা হয়েছে, সেটির অনুলিপি আইনসচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকের অফিসের কম্পিউটারে রক্ষিত ছিল। দেখা গেছে, ঘোষিত রায়ের সঙ্গে ফাঁস হওয়া নথির কিছু অংশের মিল আছে। তবে এতে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে কী দণ্ড দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে উল্লেখ করা হয়নি। ওই সংবাদমাধ্যমের সাইটে ১৭২ পৃষ্ঠার মধ্যে ১৬৭টি পৃষ্ঠা প্রকাশ করা হয়।

      এ বিষয়ে আইনসচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক বলেছেন, প্রথমত মামলার রায় হয় সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে। মন্ত্রণালয় থেকে রায় লেখা হয় না, সুযোগ নেই এবং সংরক্ষণের প্রশ্নই আসে না। আপাতত যেটা ফেসবুকে দেখা যাচ্ছে, সেটা বেলজিয়ামভুক্ত একটি ব্লগ প্রকাশ করেছে। মন্ত্রণালয় থেকে এ ধরনের কোনো কিছু প্রকাশ হয়নি।

      সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে সাকা চৌধুরীর বিচারের রায়ের কথিত বিবরণী প্রকাশের বিষয়ে আইন প্রতিমিন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন, রায়ের আগে এ ধরনের কথিত বিবরণী প্রকাশ ষড়যন্ত্রের অংশ।তাই এটি তদন্ত করতে বিটিআরসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

      রায়ের বিষয়বস্তু আগেই প্রকাশ হওয়া সম্পর্কে বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবীরা এখনো কোনো মন্তব্য করেননি। তাঁরা আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করে সব জানাবেন বলে জানান।

      এদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, ‘এটি মিথ্যে কথা।আমি অ্যাটর্নি জেনারেল হয়ে জানতে পারলাম না; ওনারা পেলনে কীভাবে।এটি একটি মনগড়া কথা।’

      তবে এ বিষয়ে আইনজীবী শাহদীন মালিক প্রথম আলো ডটকমকে বলেছেন, বিচার চলাকালে খসড়া চিন্তা, প্রাথমিক সিদ্ধান্ত বিচারকেরা লিখে রাখতেই পারেন। বিচার যখন মাসের পর মাস চলছে, অতএব চূড়ান্ত রায়ে সাহায্যের জন্য এ ধরনের খসড়া অন্যদের কম্পিউটারে কপি করে সেখান থেকে পাওয়া গেছে বলে বলাটা কম্পিউটার নিরাপত্তার ব্যাপারে আদালতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাবধানতার অভাব এবং ব্যাপারটি না বোঝা ইত্যাদি ধরনের অদক্ষতা ও অযোগ্যতার প্রমাণ করে। তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে বিচারপতি নিজামুল হকের ঘটনার পর সরকারের এ ব্যাপারে মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন ছিল। কম্পিউটার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ না থাকায় ষড়যন্ত্রকারীরা রায়ের ব্যাপারে সন্দেহ সৃষ্টি করতে পারে।

      রায়ের অনুলিপিতে দেখা যায়, ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী মোট ২৩টি অপরাধে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছিল। ফাঁস হওয়া রায়ে দেখা যায়, ১৭টি অভিযোগের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষ্যপ্রমাণ হাজির করে। এর মধ্যে মোট নয়টি অভিযোগে সাকা চৌধুরীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। আটটি অভিযোগ থেকে তাঁকে খালাস দেয়া হয়েছে। বাকি ছয়টি অভিযোগের সমর্থনে রাষ্ট্রপক্ষ কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ হাজির করেনি।
      প্রথম আলো।

      যদিও এ ঘটনা কোনভাবেই প্রমাণ করে না যে, সাকা চো নির্দোষ।কিন্তু এত ঝামেলা করার দরকার কেন।এমনিতেই তো সাকার ফাঁসি হওয়া উচিত কিন্তু মাঝ খান থেকে বিতর্কিত করার দরকার কি ছিল রায়ের প্রক্রিয়াকে? এটা কি শুধুই জামাত এর চাল নাকি এর সাথে স্বইয়ং আওয়ামীলিগ জরিত?তা না হলে কিভাবে এত গোপন বিষয় ফাঁস হল।


      যুক্তি,সঠিক তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি

      জবাব দিন
      • মাহমুদুল (২০০০-০৬)

        ভাইয়া, একজন প্রসিকিউটর বলেছেন এওং আমরা সবাই জানি, এই ট্রাইব্যুনাল কে বিতর্কিত করার চেষ্টা প্রতম থেকেই হচ্ছে। আমার ধারনা এটি ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট কারো কম্পিউটার থেকে হয়েছে। পরে তা উদ্দেশ্যমূলক ভাবে আইন মন্ত্রণালয়ের নামে ছড়ানো হয়েছে আর দেখা গেছে যে লাস্ট যে এডিট/ সেভ করা হয়েছে তা ম্যাক বুক থেকে। আমার কথা হচ্ছে , কোন কম্পিউটার ম্যাক বুক ইউজ করে?

        হ্যা, রাষ্ট্রীয় তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায় তবে আইন মন্ত্রনালয় রায় লিখে দিয়েছে এইটা মানতে আমার আপত্তি। আর কথা হচ্ছে এই তথ্য এমনিতেই সবাই জানতো। টাকা খরচ করে জানানোতেই আমার সন্দেহ প্রবল হচ্ছে।


        মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য

        জবাব দিন
      • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

        অবশ্যই আওয়ামীলীগ জড়িত।

        এর আগে স্কাইপে কথাবার্তা সহ, টিয়া পাখি, লইট্টা ফিস, বাবুর বাবা, এস এস সি পাস জিয়া সব কিছুই আওয়ামী কারসাজি।
        এমনকি নাসার সাথে কথা বলে লইট্টা সাঈদী কে চাদে দেখানোর বন্দোবস্তও আওয়ামী লীগ এর কারসাজি।

        এরকম স্বাধীনতার চেতনা বিরোধী দলের হাতে কি করে আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ভার ছেড়ে দিই!

        আমাদের দরকার বিএনপি সরকার।
        ইউ টিউবে একটা ভিডু আছে, সহীহ ওয়েতে জবেহ, কুরবানি করার। ভেড়া আইসা গলা পাইতা দেয় টাইপ।
        বিএনপি ক্ষমতায় আসলে প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীরা হাসতে হাসতে এসে গলায় ফাসির দড়ি নেবে।
        এমনি ১৯৩ জন যুদ্ধাপরাধী ইতোমধ্যে বলেছে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে তারা নিজেদেরকে বিচারের জন্য হাওয়ালা করবেন।
        আমি ঠিক করে ফেলেছি নেক্সট ইলেকশনে এজন্য বিএনপি-জামাত জোট কে ভোট দেবো।


        এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

        জবাব দিন
  2. দিবস (২০০২-২০০৮)

    রাজাকারের বিচার করেও কি আওয়ামীলীগ চোখের কাটা হয়ে গেল? তাদের আমলেই বিচার হচ্ছে, আবার তারাই নাকি আতাত করছে! রায়ের কপি ফাঁস করে ট্রাইব্যুনালকে আওয়ামী ট্রাইব্যুনাল বানানোর ষড়যন্ত্র চলছে, আবার সেখানেও আওয়ামীলীগই নাকি জড়িত!!! ঠিক কোন কোন পয়েন্টে আওয়ামীলীগ কে জড়িত মনে হল সাকা চৌধুরীর পরিবারকে সন্দেহ না করে, পয়েন্টগুলা যদি টু দি পয়েন্টে বলতেন ভাইয়া!


    হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি

    জবাব দিন
    • সিরাজ(১৯৯১-১৯৯৭)

      সরকার এত আন্তরিক হলে শাহবাগ আন্দলনের দরকার হত না। আসল যে মাথা,যে আসল গেম খেলেছে মাস্টার মাইন্ড গোলাম আজমের ফাঁসি না হয়ে যখন যাবৎজীবন হল তখন সরকার বল্লো যে তারা রায়ে খুশি। শেখ হাসিনা সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছে এই রায়ে তারা খুশি। তারা এরকম রায় চেয়েছিলেন যেখানে আমরা সাধারণ জনগণ গোলাম আযমের ফাঁসি চাচ্ছি সেখানে সরকার বা আওয়ামীলিগ কিভাবে যাবৎ জীবন রায়ে খুশি হয়!!!!!!!

      রায় প্রকাশের আগে বাইরে আসলো কিভাবে যেখানে শুধু রায়টা ট্রাইবুনালের ৪/৫ জন বিচারপতি ছাড়া আর কারো কাছে থাকার কথা না।সাকা পরিবারের কি সেই ক্ষমতা আছে ট্রাইবুনালের বিচারপতিদের কাছ থেকে রায়টা আগেই বেড় করে আনা?আর এ ক্ষমতাই যদি থাকে তাহলে রায় পাল্টানোর মতন ক্ষমতাও থাকতো।এই রায় আমি কালকেই দেখেছিলাম কিন্তু মনে একটা বিশ্বাস ছিল যে মিল থাকবে না কিন্তু মিল আছে।

      যদিও এ ঘটনা কোনভাবেই প্রমাণ করে না যে, সাকা চো নির্দোষ।সাকার ফাঁসি এমনিতেই হবে। বেশ কয়েকবারই ফাঁসি দেয়া যায় সে যে খারাপ কাজ করেছে তার জন্য।
      আর এই রায়টা আগেই প্রকাশ হওয়াটা মানে কি সরষের ভিতর ভুত কিনা জানি না।


      যুক্তি,সঠিক তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি

      জবাব দিন
      • দিবস (২০০২-২০০৮)

        সিরাজ ভাই, তার মানে বলতে চাইছেন, ট্রাইব্যুনালের উপর আওয়ামীলীগের সম্পূর্ন প্রভাব আছে। আমি যদি রাজাকারের বিচার চাই, তাহলে অবশ্যই তাদের মৃত্যদন্ডও চাই। সেক্ষেত্রে আওয়ামীলীগ সরকার তো ভালই করছে। বেশীরভাগকেই ফাঁসী দিয়ে দিচ্ছে। যদিও আমি মনে করি এটা ট্রাইব্যুনালের বিষয়, এখানে সরকার শুধু সাপোর্ট দিচ্ছে সাংবিধানিকভাবে। আর ভাইয়া, বিএনপি রাজনীতি করে রাজাকারদের মন্ত্রী বানাচ্ছে, আওয়ামীলীগ রাজনীতি করে তাদের শাস্তি দিচ্ছে। রাজনৈতিক দল রাজনীতি করবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমার দেখার বিষয় হচ্ছে, রাজনীতি করে কে তাদের মন্ত্রী বানাচ্ছে আর কে শাস্তি দিচ্ছে।

        গোলাম আযমের যাবজ্জীবন হয় নাই। ৯০ বছরের জেল হইছে।বিএনপি যদি তাকে না বের করে সে আর বাইরের আলো দেখতে পারবে না মরার আগে।

        উপরে যেই লিঙ্কটা দেওয়া আছে সেটা কি ভালভাবে পড়ে দেখছেন? আপনি কি সেটা পড়ে জেনেছিলেন যে রায়টা কি হতে যাচ্ছে? আই মিন রায়টা কি সেখানে লেখা ছিল? আর আপনি কি গতকাল যে রায়টা হয়েছে,সেটার কপিটা (আসল রায়ের কপি)পড়ে দেখেছেন? বা আপনার কি সদিচ্ছা ছিল সেটা পড়ে দেখার? নাকি কিছু জামাতি এজেন্টের বের করা কথিত রায়ের কপিকেই আপনি চোখ বুজে রায় বানিয়ে দিলেন যদিও সেখানেও রায়ের বিষয়ে কিছুই লেখা ছিল না।

        এখন আসি আপনি যেই ফাঁস হয়ে যাওয়া "রায়" এর কথা বলছেন সেই রায়ের কপি'র টেকনিক্যাল বিষয়গুলা নিয়ে। মিডিয়া ওয়াচ তার ব্লগে বলছে এটা আইনমন্ত্রনালয়ের সচিবের কম্পিউটার অপারেটর আলমের অফিসিয়াল কম্পিউটার থেকে পাওয়া। যেখানে আলম নামের কোন এক ফোল্ডারে ফাইলটি ছিল। এটা তাদের বক্তব্য। এখন আপনি আপনার মত করে ইনভেস্টিগেশনে নামেন। যদি ফাইলটি খুলে দেখেন তাহলে দেখবেন ২৩ মে ১২,০১ মিনিটে ফাইলের কাজ শুরু করা হয়। আর ফাইলের অথর এর নাম 'ADI' এবং সর্বশেষ যেই কম্পিউটারে ফাইলটি মোডিফাই করা হয় সেটি "ম্যাকবুক প্রো১৩"। যেই কোম্পানীর নাম সেখানে লেখা তার নাম "অ্যারাবিয়ান হর্স"। এই তথ্যগুলি আপনি নিজেই উপরোক্ত কথিত রায়ের ওয়ার্ড ফাইলে যেয়ে ইনফো চেক করলে পেয়ে যাবেন। ঝামেলা হলে আমাকে বলবেন, স্ক্রীনশট দিয়ে দিব।

        এখন টেকনিক্যাল বিষয়গুলার সাথে তারা যেটা বলছে সেটার মিল-অমিল দেখি এবং নিজের মত করেই চিন্তা করি। অফিস টাইম কিভাবে রাত ১২.০১ মিনিটে থাকে? আইনমন্ত্রনালয়ের সচিবের কম্পিউটার অপারেটরের অফিসিয়াল কম্পিউটারটি কি "ম্যাকবুক প্রো১৩" ? বাংলাদেশে এরকমটা হল কবে থেকে? আইন মন্ত্রনালয়ের কম্পিউটারে কোম্পানীর নাম "আইন মন্ত্রনালয়" বা "law ministry" না হয়ে "অ্যারাবিয়ান হর্স" হল কেন? নাকি আইন মন্ত্রনালয়ের নাম পরিবর্তন হয়ে গেছে?

        যেই ওয়ার্ডফাইলটি এখানে প্রকাশ করা হয়েছে, সেটা কি আপনি ভালভাবে যাচাই,বাছাই করেছেন কিনা সেটা নিয়ে বিস্তর সন্দেহ প্রকাশ করেছি যখন আপনি বলেছেন "রায় প্রকাশের আগে বাইরে আসলো কিভাবে যেখানে শুধু রায়টা ট্রাইবুনালের ৪/৫ জন বিচারপতি ছাড়া আর কারো কাছে থাকার কথা না"। যেই ফাইলটি তারা আপলোড করেছে সেখানেও কোন রায় লেখা ছিল না। (আবারও বললাম)

        কিছু মানুষ বসে থাকে কিভাবে গুঞ্জন এবং অপপ্রচারটাকে শিক্ষিত এবং ভালমানুষের বেশে প্রচার করা যায় দশ জনের মধ্যে। এর জন্য কিছু একটা ক্ল্যু (সেটা যতই নড়বড়ে হোক) পেলেই সেটা নিয়ে ত্যানা পেঁচাতে থাকে। আশা করি তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন।


        হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি

        জবাব দিন
        • সিরাজ(১৯৯১-১৯৯৭)

          তোমার উত্তর অনেক ভাবেই দিতে পারতাম এমন কি টেকনিকাল ব্যাপারগুলোও কিন্তু সেটার দরকার মনে করছিনা।তুমি বরং ট্রাইবুনালের রেজিস্ট্রার কে যেয়ে জিজ্ঞাসা কর কেন উনি আজকে থানায় জিডি করেছেন রায় ফাস হবার জন্য।তোমার যুক্তিতে তো রায় ফাস হয়নি।আমি তোমানে খুবই অনুরোধ করবো ওনাকে এই প্রশ্নটা করার এবং ওনাকে সাহায্য করার জন্য।যেখানে রায় ফাস হয়নি সেখানে জিডি উইথড্রো করা উচিত।

          প্রচ্ছদ
          বাংলাদেশ
          সংবাদ

          News Details - Full Banner_Above
          শাহবাগ থানায় জিডি
          রায়ের খসড়ার অংশবিশেষ ফাঁস হয়েছে: ট্রাইব্যুনাল
          নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: ১৫:৪৪, অক্টোবর ০২, ২০১৩
          ১৯৬

          সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার চূড়ান্ত রায়ের খসড়া কপির কিছু অংশ কোনো-না কোনোভাবে ফাঁস হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ বিষয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। জিডি নম্বর ৮৫।

          ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার এ কে এম নাসিরউদ্দিন মাহমুদ আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।


          যুক্তি,সঠিক তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি

          জবাব দিন
          • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

            সিরাজ ভাই দিবস মনে হয় বলতে চাইছিল, রায়ের কপি আইন মন্ত্রনালয় থেকে পাওয়া গিয়েছে এটা একটা মিথ্যা অপপ্রচার। টেকনিকাল বিষয় গুলো উত্থাপন করে বলতে চেয়েছে আইন মন্ত্রনালয়ের কম্পিউটার (ম্যাকবুক!!!!!!!) থেকে রায়ের কপি চুরির যে অভিযোগ তোলা হয়েছে সেটা মিথ্যা এবং সেটা কারা করে থাকতে পারে সেটার একটা ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছে। ও কিন্তু কোথাও বলে নাই রায়ের কপি ফাঁস হয় নাই। ওর মন্তব্যটা আবার পড়ে দেখেন। আশা করি বুঝতে পারবেন।


            \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
            অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

            জবাব দিন
            • দিবস (২০০২-২০০৮)
              তুমি বরং ট্রাইবুনালের রেজিস্ট্রার কে যেয়ে জিজ্ঞাসা কর কেন উনি আজকে থানায় জিডি করেছেন রায় ফাস হবার জন্য

              আপনি আবারও ছোট্টভাবে পাশ কাটিয়ে গেলেন এবং আসল কথাটা টুইস্ট করে দিলেন খুব স্মুথলি। রেজিস্টার মামলা করেছে রায়ের খসড়ার আংশিক কপি ফাঁস হবার জন্য, আবারও বলি রায়ের খসড়ার আংশিক কপি ফাঁস হবার জন্য। রায় ফাঁস হবার জন্য না। কিন্তু আপনি আবার বললেন, "রায় ফাঁস হবার জন্য"। ২/১ টি শব্দের এদিক সেদিক করেই আপনি আপনার পক্ষে সাফাই গেয়েই যাচ্ছেন। এখানে কি ভুলটা আপনি ইচ্ছা করেই করলেন নাকি অনিচ্ছাকৃত???

              তোমার উত্তর অনেক ভাবেই দিতে পারতাম এমন কি টেকনিকাল ব্যাপারগুলোও কিন্তু সেটার দরকার মনে করছিনা

              দরকার মনে না করে আপনি জিডি করার বিষয়টিকে টুইস্ট করে দিলেন। আর আপনি বিশ্বাস করছেন যে আইনমন্ত্রনালয় থেকে এই রায়ের কপি বানানো হইছে। কিন্তু টেকনিক্যাল বিষয়গুলি কিন্তু তা প্রমাণ করে না। সেটা কেউ ষড়যন্ত্র করে বাইরে বের করে আনছে টেকনিক্যাল বিষয়গুলি এটাই প্রমাণ করে। আশা করি সেগুলার যুক্তিও খন্ডন করবেন।

              অঃটঃ যুদ্ধাপরাধের বিচার আমিও চাই, কিন্তু... (সম্পাদিত)


              হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি

              জবাব দিন
            • সিরাজ(১৯৯১-১৯৯৭)

              মোকাব্বির ভাইয়া
              তুমি যেমন বলেছো যে লেখাটা ভালভাবে পড়তে তেমনি আমিও বলি আমার প্রথম কমেন্ট দেখো সেখানে আমি কি লিখেছি। তার পরেও আসলে এত বেশি করে আলোচনার দরকার ছিল না। আমি প্রথমে বলেছিলাম যে এত ভিতরের একটা টপ সিক্রেট কিভাবে বাইরে এলো।এটি আবার সরকারের কাজ নয়তো।তখন দিবস জানতে চেয়েছে কিভাবে সরকার জড়িত থাকতে পারে। তখন থেকে আলোচনাটা বড় হচ্ছে। তুমি প্রথম থেকে কমেন্টগুলো পড়।তাহলে একটার সাথে আরেকটার মিল খুজে পাবা।দিবসের কথা ছিল যে রায়টা আগেই প্রকাশ হয় নাই।কিন্তু আমি বল্লাম যখন বল্লাম যে রায়টার খসরা প্রকাশ হয়েছে এবং আজকে জিডিও হয়েছে তখন দিবস বলা শুরু করলো যে আইন মন্ত্রাণালয় থেকে কিভাবে হল।
              মোকাব্বির,রায়টা যেখান থেকেই প্রকাশ হোক না কেন সেটা বড় ব্যাপার না। সেটা ট্রিবুনাল থেকেই হোক আর আইন মন্ত্রণালয় বা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকেই হোক। আমার কাছে বড় কথা হল এত টপ সিক্রেট বিষয় বাইরে আসলো কিভাবে।কেন এভাবে বিতর্ক তৈরী করা হচ্ছে।আমি আমার প্রথম কমেন্ট এর শেষ প্যারাটা আবার তুলে দিলাম।আমার মনে হয় এর পর অহেতুক বিতর্ক করার মানে হয় না।
              যদিও এ ঘটনা কোনভাবেই প্রমাণ করে না যে, সাকা চো নির্দোষ।কিন্তু এত ঝামেলা করার দরকার কেন।এমনিতেই তো সাকার ফাঁসি হওয়া উচিত কিন্তু মাঝ খান থেকে বিতর্কিত করার দরকার কি ছিল রায়ের প্রক্রিয়াকে? এটা কি শুধুই জামাত এর চাল নাকি এর সাথে স্বয়ং আওয়ামীলিগ জরিত?তা না হলে কিভাবে এত গোপন বিষয় ফাঁস হল।

              আমি শুধু একটা সন্দেহের কথা বলেছি।বলিনি যে নিশ্চিত এটা সরকার বা আওয়ামীলিগ করেছে।


              যুক্তি,সঠিক তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি

              জবাব দিন
              • দিবস (২০০২-২০০৮)
                দিবসের কথা ছিল যে রায়টা আগেই প্রকাশ হয় নাই।কিন্তু আমি বল্লাম যখন বল্লাম যে রায়টার খসরা প্রকাশ হয়েছে এবং আজকে জিডিও হয়েছে তখন দিবস বলা শুরু করলো যে আইন মন্ত্রাণালয় থেকে কিভাবে হল।

                ভাইয়া আপনি বলেন নাই যে রায়ের খসড়া প্রকাশ হয়েছে। আপনি বলেছেন "রায়" বের হয়েছে। আর আমি বলে আসছি রায়ের কপি বের হইছে। আর আমি জিডি হবার পরে থেকে না, তার আগের থেকেই বলছি সেটা আইন মন্ত্রনালয় থেকে কিভাবে বের হল। আপনি তো উপরে কয়েকবার বললেন যে রায় আগেই বের হয়ে গেছে। যদিও আমি আপনাকে স্পেসিফিক্যালি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে আপনি ২ রায়ের কপি মিলিয়ে দেখেছেন কিনা। এগুলো সহ আরো বেশ কিছু টু দি পয়েন্টে করেছিলাম, আপনি এড়িয়ে গেছেন। অহেতুক অন্য দিকে টান দিয়েছেন। আপনি কি "রায়" এবং "রায়ের কপি" এই দুইটার পার্থক্য জানেন?

                আরেকটা কথা জানতে চাই, আগের দিন রাতে আপনার কথামত যেই "রায়" (রায়ের আংশিক খসড়া কপি না) বের হল সেখানে কি সাকার মৃত্যুদন্ড হয়েছিল?


                হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি

                জবাব দিন
                • সিরাজ(১৯৯১-১৯৯৭)

                  দুটো কথা বলবো তমাকে
                  ১)রায়ের খসড়া আর মূল রায়ের কপির মধ্যে খুব একটা পার্থক্য থাকেনা।খসড়া কে ফাইনাল বলা মানেই সেটা কে মূল বলা।তাই খসড়া আর মূল বলে খুব বড় পার্থক্য বলা যাবেনা।
                  ২)প্লিজ তুমি আমার লেখা খুব ভাল মত পড়ে তারপর কমেন্ট কর।


                  যুক্তি,সঠিক তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি

                  জবাব দিন
  3. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    যুদ্ধাপরাধের জন্য যাদেরকে ধরা হয়েছে এবং বিচারের অধীনে আনা হয়েছে, তাদেরকে নিরপরাধ বলার কোন কারণ নেই। কিন্তু বিচারের প্রক্রিয়াটাকে যেভাবে স্কাইপ-কেলেঙ্কারী আর এই অগ্রীম রায় প্রকাশের মাধ্যমে বিতর্কিত করা হলো, এই সুযোগটা অপরাধীরা নিতে চাইবেই, নিবেই।

    সাকাচৌ এবং বাদবাকী যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসী চাওয়ার সাথে সাথে আমাদেরকে তাই স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিচার করার উপরে জোর দেওয়া প্রয়োজন ছিল, যেটা খুব সম্ভবত ইচ্ছে করেই করা হলো না। এইরকম জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ একটা ইস্যুতে বিচার ব্যবস্থাকে যেখানে নিয়ে যাওয়া হলো, তা'র ফলাফল ভয়াবহ হতে বাধ্য, বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জন্য।

    @ সিরাজ,
    যুক্তি দিয়ে আসলেই কেউ চলছে না, চলছে সম্পূর্ণ আবেগ দিয়ে, এমনকি বিচারের সাথে সংশ্লিষ্টরাও যাদেরকে বাই-ডেফিনিশন নিরপেক্ষ হওয়ার কথা। আমজনতার নিরপেক্ষতা হওয়ার দায় নেই, কিন্তু বিচারকের আছে। কিন্তু সেইটা তুমি কোথাও বলতে পারবে না। তাইলে 'ট্যাগিং' খাইতে হবে।

    - তুমি বলেছো, শাহবাগে জনতার মঞ্চ বসেছিল কাদের মোল্লার ১ম রায়ের পর আওয়ামীলীগ সরকারের জামাতের সাথে আঁতাত সন্দেহ করে। আশেপাশে প্রশ্ন করে দেখো কয়জন সেইটা মনে রেখেছে। একজনকেও পাবে কি না সন্দেহ আছে। একইভাবে, এইবারও আওয়ামীলীগ পার পেয়ে যাবে এই বলে যে, "আমরাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছি, আর কেউ না"। কিন্তু তারা এইটা বেমালুম চেপে যাবে যে, "যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে রাজনীতি"ও একমাত্র তারাই করে, আর কেউ না। - এইটা স্বাভাবিক বিচারবুদ্ধি দিয়ে চিন্তা করলে যেকারো বোঝার কথা। কিন্তু আবেগ অনেককেই অন্ধ করে দিয়েছে, যে আবেগ নিয়ে আওয়ামীলীগ খেলছে, যেমন জামাত খেলে ইসলাম-অনুরাগ নিয়ে।


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
    • সিরাজ(১৯৯১-১৯৯৭)

      মাহমুদ ভাই কেমন আছেন।ধন্যবাদ আপনাকে।সমস্যা আমার এটাই হুজুগে আমি চলিনা এবং আমি সব কথা খুব সোজা বলি যার ফলে অনেকেরই আমার কথা নিতে পারেনা।এত এত বেশি আবেগ যে আমরা মূলটাই ভুলে যাই।


      যুক্তি,সঠিক তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি

      জবাব দিন
      • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

        সিরাজ একটু সোজা করে বলি তাইলে///

        তুমি কি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাও?
        না চাইলে ফাইন।
        যদি চাও তাইলে সেইটা কি আওয়ামীলীগ করতেছে না!

        যদি না করে বা ধরে নিলাম আওয়ামীলীগের সদিচ্ছা নাই। সেক্ষেত্রে বিএনপি আসলে কি করবে?
        যদি করে তবে কিভাবে করবে?

        গোলাম আযমরে এই ট্রাইব্যুনাল ৯০ বছরের জেল দিছে।
        ধরে নিচ্ছি বিএনপি ক্ষমতায় আসলে গোলাম আজমের রায় পুনঃবিবেচনা করার জন্য আবার নতুন ট্রাইবুনাল বসাবে। সেক্ষেত্রে বিচারের রায় কি হবে?


        এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

        জবাব দিন
        • সিরাজ(১৯৯১-১৯৯৭)

          এখানে বিচারের রায় নিয়ে কোন কথা হয় নি। আমি কোথাও বিচারের রায় নিয়ে কিছু বলিনি বরং বলেছি যে রায় ফাঁস হওয়া মানে কিন্তু এই না যে সাকা নির্দোষ। আমার কথা হচ্ছে কেন ফাঁস হবে।কিভাবে হল।একবার স্কাইপ ঘটনার পরেও কি শিক্ষা হয়নি।

          তাহলে পরে থেকে কি আর সাবধান হওয়া উচিৎ ছিল না?
          আর আওয়ামীলিগের যদি সদিচ্ছা থাকেই তাহলে ওরাতো বিচার করছেই।তাহলে আলাদা করে শাহবাগের দরকার হয়েছিল কেন?

          এখানে বিএনপি আসছে কোথায় থেকে যে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে খালেদা কি করবে।
          আমার প্রশ্ন ছিল আমরা সবাই সব যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাই(নাকি আপনি কারো কারো যাবৎজীবন চান)সেখানে আওয়ামিলীগ কিভাবে বলে যে তারা এরক, রায় আশা করেছিল।তারা মনে করেছে গোলাম আযম কে ফাঁসি না দিয়ে যেটা রায় হয়েছে সেটা ন্যায় বিচার হয়েছে!!!!!!

          বলতে পারেন কেন এত দেরি করে আপিলের রায় হচ্ছে?কেন শুনানি শেষ হবার অনেক দিন পর রায় হচ্ছে। প্রথমে বলা হয়েছিল যে রায়ের ৬০দিনের মধ্যে আপিল করতে হবে কিন্তু এখন আইন মন্ত্রণালয় বলছে যে ঠিক আছে ৬০দিনের মধ্যে আপিল করতে হবে কিন্তু না করলে কি হবে সেটা বলা নাই। আর আইনের ফাঁক নামক এই শব্দের মাধ্যমে আসামিরা সুযোগ নিচ্ছে।এসব দেখেই মনে হচ্ছে আওয়ামীলিগের সদিচ্ছা আছে কিনা নাকি তারা এটা নির্বাচনে ভোট প্রার্থনা করার কৌশল হিসাবে মুলা ঝুলানোর ব্যাবস্থা করছে যে ভোট দিলে আগামি টার্মে রায় কার্যকর হবে।


          যুক্তি,সঠিক তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি

          জবাব দিন
          • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

            উপরে মাহমুদ তোমাকে উদ্দেশ্য করে বলেছে,

            @ সিরাজ,
            যুক্তি দিয়ে আসলেই কেউ চলছে না, চলছে সম্পূর্ণ আবেগ দিয়ে, এমনকি বিচারের সাথে সংশ্লিষ্টরাও যাদেরকে বাই-ডেফিনিশন নিরপেক্ষ হওয়ার কথা। আমজনতার নিরপেক্ষতা হওয়ার দায় নেই, কিন্তু বিচারকের আছে। কিন্তু সেইটা তুমি কোথাও বলতে পারবে না। তাইলে 'ট্যাগিং' খাইতে হবে।

            - তুমি বলেছো, শাহবাগে জনতার মঞ্চ বসেছিল কাদের মোল্লার ১ম রায়ের পর আওয়ামীলীগ সরকারের জামাতের সাথে আঁতাত সন্দেহ করে। আশেপাশে প্রশ্ন করে দেখো কয়জন সেইটা মনে রেখেছে। একজনকেও পাবে কি না সন্দেহ আছে। একইভাবে, এইবারও আওয়ামীলীগ পার পেয়ে যাবে এই বলে যে, "আমরাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছি, আর কেউ না"। কিন্তু তারা এইটা বেমালুম চেপে যাবে যে, "যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে রাজনীতি"ও একমাত্র তারাই করে, আর কেউ না। - এইটা স্বাভাবিক বিচারবুদ্ধি দিয়ে চিন্তা করলে যেকারো বোঝার কথা। কিন্তু আবেগ অনেককেই অন্ধ করে দিয়েছে, যে আবেগ নিয়ে আওয়ামীলীগ খেলছে, যেমন জামাত খেলে ইসলাম-অনুরাগ নিয়ে।

            উপরে বোল্ড করা অংশ নিয়া কি বলবা?


            এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

            জবাব দিন
          • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)
            এখানে বিএনপি আসছে কোথায় থেকে যে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে খালেদা কি করবে।

            এই কারণে যে নির্বাচনে বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় আসতে পারে।


            এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

            জবাব দিন
    • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)
      - তুমি বলেছো, শাহবাগে জনতার মঞ্চ বসেছিল কাদের মোল্লার ১ম রায়ের পর আওয়ামীলীগ সরকারের জামাতের সাথে আঁতাত সন্দেহ করে। আশেপাশে প্রশ্ন করে দেখো কয়জন সেইটা মনে রেখেছে। একজনকেও পাবে কি না সন্দেহ আছে।

      যদি আওয়ামীলীগের সাথে আতাত হয়েই থাকে জামাতের তাহলে লীগের ছেলেপেলেরা ঐখানে গেলো কি করে?
      না তো আমি তো এখন পর্যন্ত শাহবাগীদের মধ্যে ধাওয়া, প্লাটা ধাওয়া, গোলাগুলি এসব কিছুই শুনি নাই।

      ধইরা নিলাম তোরা এবং সিরাজের কথা সত্য। সেইক্ষেত্রে কয়েকজন আন্দোলনকারীর নাম নে যে বা যারা আওয়ামীলীগকে এই ব্যাপারে দায়ী করেছে..।

      শুধু শুধু অবাস্তব এবং নিজের মনের কথা অন্যের নামে জুড়ে দেয়ার কোন প্রয়োজন দেখি না।

      একইভাবে, এইবারও আওয়ামীলীগ পার পেয়ে যাবে এই বলে যে, "আমরাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছি, আর কেউ না"।

      তা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কি আওয়ামী লীগ সরকারের সময় হচ্ছে না!
      যদি হয়েই থাকে তবে কি তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার ক্রেডিট নিতে পারে কিনা?

      বিএনপি যদি চাইতোই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার তবে তারা জামাত এর সাথে গাট বেধে থাকতো না।
      নাকি বলবি এইটা ভোটের রাজনীতি!

      তাইলে কি হইলো ভোটের রাজনীতি করার একমাত্র অধিকার বিএনপির। এবং সেই জন্য তারা যুদ্ধাপরাধীদের সাথে থাকবেন, খাবেন, শোবেন। এবং একই সাথে এইকথা বলার ধৃষ্টতা দেখাবেন যে তারা ক্ষমতায় আসলে প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবেন।
      আনন্দম। আনন্দম।


      এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

      জবাব দিন
  4. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    ইহা একটি বিনোদন।
    যতই যুক্তি-তর্ক দেয়া হোক না কেনো আমাদের চুষীলের দলের বেদ-কোরান হইলো বাশের কেল্লা আর মিডিয়াওয়াচ।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  5. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)
    সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার চূড়ান্ত রায়ের খসড়া কপির কিছু অংশ কোনো-না কোনোভাবে ফাঁস হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ বিষয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। জিডি নম্বর ৮৫।

    ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার এ কে এম নাসিরউদ্দিন মাহমুদ আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।

    সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো (২/১০/১৩)

    আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে রায় ফাঁসের অভিযোগ স্বীকার করলেন ট্রাইব্যুনালের রেজিস্টার মো. নাসির উদ্দিন। এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেছেন, মঙ্গলবার ঘোষিত রায়টির খসড়া প্রস্তুতির সময়ে এর অংশবিশেষ ফাঁস হয়েছে। কোনো সুবিধাবাদী দুষ্টুচক্র এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এজন্য কারা জড়িত তা নির্ধারণে থানায় জিডি করা হয়েছে এবং তদন্ত করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

    সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক (২/১০/১৩)


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
    • দিবস (২০০২-২০০৮)

      রায়ের খসড়ার অংশবিশেষ যারা ফাঁস করল তাদের একবারও নিন্দা করছেন না দেখে খুব হতাশ এবং বিষ্মিত হলাম। বিচার বন্ধের জন্য কোটি কোটি ডলার খরচ করা হচ্ছে, এমন কথা যদি আমি বলি তাহলে কি আমাকে আবেগ দিয়ে চলা একজন বলবেন?


      হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি

      জবাব দিন
      • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)
        রায়ের খসড়ার অংশবিশেষ যারা ফাঁস করল তাদের একবারও নিন্দা করছেন না দেখে খুব হতাশ এবং বিষ্মিত হলাম।

        - রায় ফাঁস করা শুধুমাত্র নিন্দনীয়ই নয়, চরম অপরাধ- এক্ষেত্রে তোমার সাথে দ্বিমতের প্রশ্নই নেই। বিচার ভন্ডুল করতে আসামীপক্ষ টাকা ঢালছে, তাদের ক্ষমতা অনুযায়ী, সেটাও সহজবোধ্য। কিন্তু কারা ফাঁস করল সেইটাই ত' এখনো জানলাম না। আর ফাঁস যে হইছে, সেইটাই ত' বলার মুখ বন্ধ করার চেষ্টা চলল জিডি করে স্বীকার করার আগ পর্যন্ত। - আপাততঃ স্কাইপ-কেলেঙ্কারীর অনুরূপ ঘটনাই ঘটছে মনে হচ্ছে। আমার ব্যক্তিগত ধারণা, এইটা যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে আওয়ামী রাজনীতির অংশবিশেষ। (সম্পাদিত)


        There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

        জবাব দিন
        • দিবস (২০০২-২০০৮)

          ভাই, অফিসিয়াল কেউ কিন্তু আগের থেকে কিছুই বলে নাই। ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে রায়ের পরে সাংবাদিকেরা এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে উনি বলেছিলেন যে ইন্টারনেটের রায়ের কপি উনি দেখেননি। দেখে এরপর কথা বলবেন। আমার কাছে তো এটাই যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে। উনারা ব্যাপারটা দেখে, সত্যটা স্বীকার করেছেন এবং জিডি করেছে্ন। আর এখানে ঠিক কোন কোন পয়েন্টে আওয়ামী রাজনীতি মনে হচ্ছে সেটা একটু বুঝিয়ে বলবেন কি? এই ফাঁস হওয়াতে তো সরকারকেই বিপাকে পড়তে হচ্ছে। কারন সবাই বলছে আইনমন্ত্রনালয় এই রায় বানিয়েছে, বানানো রায়, প্রহসনের আওয়ামী ট্রায়াল।বিরোধীদের কাছে ইশ্যু তুলে দেওয়া। তাহলে আওয়ামীলীগ কি 'রাজনীতি' করে স্পষ্টত নিজেদেরই বিপদে ফেলছে না? আর একটা রাজনৈতিক দলের কি এতটুকুও বোঝার ক্ষমতা নেই?

          আর রায়ের কপি'র ফাইলে কোম্পানীর নাম যেটা দেওয়া আছে "অ্যারাবীয়ান হর্স"। পিএইচপি গ্রুপের ব্র্যান্ড নাম এটা।পিএইচপি'র হেড অফিস চিটাগাংএ। এই ব্যাপারগুলা কেন পর্যবেক্ষণে আনছেন না? তারা যে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে সেটা জেনেও কেন আমরা তারা জ্বালিয়াতি করতে পারে সেটা বিশ্বাস করি না? নাকি বিশ্বাস করতে চাই না?


          হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি

          জবাব দিন
          • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

            @ দিবস,

            অফিসিয়াল আর আনঅফিসিয়াল যা'ই বল, আইন মন্ত্রী, সরকারী+বেসরকারী উকিলরা যা'ই বলুক, রায় আগেই ফাঁস হইছে, এইটা বাস্তব, অন্ততঃ জিডির পর থেকে এই বিষয়ে আর সন্দেহের অবকাশ নাই। টেকিনিক্যাল বিষয়গুলো উল্লেখ করে এই সত্য অস্বীকার করার যো নাই। আর তুমি বলছো আংশিক রায় প্রকাশ হইছে, পুরোটা নয়, সেই অংশটা কত শতাংশ, ৯০%, নাকি এর কম বেশি সেটাও কিন্তু বিবেচ্য। উপরন্তু, আংশিক আর পুরো রায় প্রকাশের মধ্যে বিদ্যমান বির্তকে কোন মৌলিক কোন পার্থক্য হচ্ছে না।

            এখানে ঠিক কোন কোন পয়েন্টে আওয়ামী রাজনীতি মনে হচ্ছে সেটা একটু বুঝিয়ে বলবেন কি?

            কাদের মোল্লার যাবজ্জীবনের রায় থেকে উদ্ভূত শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চে আওয়ামীলীগ যেই রাজনীতি করেছে, সেই রকম এখানেও আছে আমি অনুমান করছি। এখন যদি জিজ্ঞেস করো শাহবাগে সেটা কিভাবে করা হলো, তাইলে আর কি করা।

            আপাততঃ অফ যাই। যা' বলার, বলা হয়ে গেছে। (সম্পাদিত)


            There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

            জবাব দিন
  6. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    জিডি করা হইছে শুইনা খুব ভালো লাগলো।
    আশা করি দোষীদের ধরা হবে।
    আমাদের গোয়েন্দারা এবার কিছু করে দেখাবেন আশা করি।
    বাবুর বাবা, এস এস সি পাশ তারেক, টিয়া পাখি এইসব শুইনা শুইনা বিরক্ত।
    এইবার কিছু কাজ দেখ্তে চাই। (সম্পাদিত)


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  7. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    রায়ের খসড়ার অংশবিশেষ ফাঁস হয়েছে: ট্রাইব্যুনাল
    নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: ১৫:৪৪, অক্টোবর ০২, ২০১৩
    (প্রথম আলো)

    সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার চূড়ান্ত রায়ের খসড়া কপির কিছু অংশ কোনো-না কোনোভাবে ফাঁস হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ বিষয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। জিডি নম্বর ৮৫

    ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার এ কে এম নাসিরউদ্দিন মাহমুদ আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।

    বেলা দেড়টার দিকে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নাসিরউদ্দিন মাহমুদ বলেন, চূড়ান্ত রায় প্রকাশের আগে সেটা ট্রাইব্যুনালের কম্পিউটারে খসড়া আকারে প্রস্তুত করা হয়। চূড়ান্ত রায়ের সঙ্গে কথিত ফাঁস হওয়া রায়ের অনেক জায়গাতেই মিল নেই। যেমন, মূল রায়ে অনুচ্ছেদ নম্বর থাকে। কিন্তু কথিত ফাঁস হওয়া রায়ে অনুচ্ছেদ নম্বর নেই। এ বিষয়ে শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

    জিডির বিবরণী
    ট্রাইব্যুনাল-১-এ বিচারাধীন আইসিটি মামলা নম্বর ০২/২০১১—চিফ প্রসিকিউটর বনাম সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় প্রচারের জন্য দিন ধার্য ছিল গতকাল মঙ্গলবার। কিন্তু রায় ঘোষণার পরপরই আসামি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবারের সদস্যগণ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্তকালে জানান যে, উক্ত মামলার রায়ের কপি তারা ইন্টারনেটেরে মাধ্যমে পূর্বেই প্রাপ্ত হয়েছেন। আসামি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্তকালে আদালত হতে রায়ের কপি সরবারাহ করার পূর্বেই একটি ডকুমেন্ট ক্যামেরার সামনে প্রদর্শন করে বলেন, এই সেই ইন্টারনেট হতে প্রাপ্ত রায়ের কপি। যা তারা রায় ঘোষেণার পূর্বেই প্রাপ্ত হয়েছেন এবং সেটি নিয়েই তারা আদালত কক্ষে প্রবেশ করেছেন। তিনি আরও বলেন যে, আদালত হতে প্রচারিত রায় এবং ইন্টারনেট হতে প্রাপ্ত রায়ের মধ্যে মিল রয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হতে প্রচারিত সব রায় ট্রাইব্যুনালেই প্রস্তুত করা হয়। রায় ঘোষণার পূর্বে রায়ের কোনো অংশের কপি অন্য কোনোভাবে প্রকাশের সুযোগ নেই। কিন্তু তার পরও কথিত খসড়া রায়ের অংশ কীভাবে ইন্টারনেটে প্রচারিত হলো বা কীভাবে ট্রাইব্যুনাল হতে খসড়া রায়ের অংশবিশেষ ফাঁস (লিকড) হলো, তা উদ্বেগের বিষয়। বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতার প্রতি হুমকিস্বরূপ।

    উল্লেখ্য যে, www.tribunalleaks.be ওয়েবসাইটে কথিত খসড়া রায়ের অংশ আপলোডেড দেখা যায়। এমতাবস্থায় বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হলো।

    কথিত রায় ফাঁস
    একাত্তর সালে গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করার দায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল গতকাল মঙ্গলবার এ রায় দেন। চূড়ান্ত আদেশে ট্রাইব্যুনাল বলেন, মানবসভ্যতার সম্মিলিত বিবেককে কাঁপিয়ে দেওয়ার মতো ঘৃণ্যতম অপরাধ করেছেন আসামি। এ জন্য তাঁকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হবে। রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, আদালতে তাঁর আচরণ ভালো ব্যবহারের পরিচয় বহন করে না

    সাকা চৌধুরীর পরিবার গতকাল অভিযোগ করেছে, রায়ের আগেই রায়ের কপি ইন্টারনেটে পাওয়া গেছে। সামাজিক প্রচারমাধ্যম ফেসবুক, ব্লগ ও কয়েকটি অনলাইন পত্রিকায় এটি প্রকাশ করা হয়েছে।

    তবে আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও আইনসচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক গতকাল দাবি করেন, মন্ত্রণালয় থেকে রায় ফাঁস হওয়ার কোনো সুযোগ নেই, ফাঁস হওয়ার প্রশ্নই আসে না। তার পরও মন্ত্রণালয় বিষয়টি অনুসন্ধান করতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দিয়েছে।

    গতকাল রায় ঘোষণার আগের রাতে বেশ কয়েকটি ব্লগ ও কয়েকটি অনলাইনের সংবাদে বলা হয়, আইনসচিবের অফিসের একটি কম্পিউটার থেকে তৈরি করা একটি রায় পাওয়া গেছে। সেখানে রায়ের কপিটিও দেওয়া হয়েছে।

    আইনসচিব বলেন, ‘প্রথমত, মামলার রায় হয় সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে। মন্ত্রণালয় থেকে রায় লেখা হয় না। কাজেই এখানে রায় আসার কোনো সুযোগ নেই। ইন্টারনেটে যেটা দেখা যাচ্ছে, সেটি বেলজিয়ামভিত্তিক একটি ব্লগ প্রকাশ করেছে।’

    অনলাইন সংবাদে বলা হয়েছে, আইন মন্ত্রণালয়ের ষষ্ঠ তলার একটি কম্পিউটারের ডি-ড্রাইভে আলমের ফোল্ডার থেকে রায়ের কপিটি পাওয়া গেছে। আইনসচিব বলেছেন, এই নামে কার্যালয়ে কোনো কম্পিউটার অপারেটর বা কর্মচারী নেই।

    বেলজিয়ামভিত্তিক ট্রাইব্যুনাল-লিকস নামের ওয়েবসাইটে যে কথিত রায়ের কপি দেওয়া হয়েছে, সেটি ১৬৫ পৃষ্ঠার। আর গতকাল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায়টি ১৭২ পৃষ্ঠার। দুটো রায় মিলিয়ে দেখা গেছে, ওয়েবসাইটে পাওয়া রায়ে দোষী সাব্যস্তকরণ ও সাজার বিষয়ে কোনো কথা নেই। কিন্তু মূল রায়ে অভিযোগ ধরে ধরে প্রমাণ, দোষী সাব্যস্তকরণ ও সাজার উল্লেখ রয়েছে।

    মূল রায়ের প্রথম অংশে রয়েছে বিচারকের নাম, প্রসিকিউটরদের নাম, আসামিপক্ষের আইনজীবীদের নাম, ভূমিকা, কার্যবিবরণী, ঐতিহাসিক পটভূমি, ১৯৭৩ সালের ট্রাইব্যুনাল আইনের নানা বিষয়ের সংজ্ঞা, বিভিন্ন বিদেশি আইনের প্রসঙ্গ, ত্রিপক্ষীয় চুক্তি এবং ১৯৫ জন পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীর ক্ষমা, যে কারণে এই বিচার হতে দেরি ইত্যাদি। ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কথিত রায়ে এসব থাকলেও হুবহু মিল নেই, অনুচ্ছেদগুলো এলোমেলো।

    সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মোট ২৩টি অভিযোগ আনা হয়েছিল। নয়টি প্রমাণিত হয়েছে। আটটি থেকে তিনি খালাস পেয়েছেন। ছয়টিতে রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষী হাজির করেনি। ফাঁস হওয়া রায়ের সংবাদে নয়টি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার কথা রয়েছে। মূল রায়ে আদালতে সাকার ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কথা উঠে এসেছে। ফাঁস হওয়া রায়ে আংশিকভাবে এ বিষয়টি এসেছে।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  8. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    সব দায় আওয়ামী লীগের - সবাই জল ঘোলা করবে, গু খাবে - আর এই সিস্টেমের মধ্যেই আওয়ামী লীগের কাছেই সবাই চায় সততা, সতীপনা। ৪০ বছর পার হয়ে গেলো দেশটায় এখনো এত সমস্যা - দেশটা এখনো যে চলছে এই তো বেশি।

    এতরকমের অরাজকতা, এত রকমের হুমকি ধমকির মধ্যে তবু একটা বিচার হচ্ছে। জেলে গিয়ে সাকা, কাদের, নিজামীদের বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে মারলেই তাদের ন্যায্য বিচার হতো।

    এতটুকু যে বিচার দেখছেন - এত অপবাদ, সমস্যা , অবিশ্বাস- অনাস্থা মাথায় নিয়ে, নিষ্ক্রিয়তা, অপদার্থতা মেনে নিয়ে তবুও কিছু যে দেখছেন - ইতিহাসের অংশ হচ্ছেন (যেটা আর কয়েকটা মাস পরেই অলীক মনে হবে) সেটা উপলব্ধি করতে যদি কার্পণ্য করেন -- দেশের, সময়ের বাস্তবতা বুঝেও যদি সরকারের সবকিছুকে 'এথিকালি' চালানোর ক্ষমতা থাকা উচিত বলে মনে করেন তাহলে 'অজর অক্ষম অধ্যাপক' ই হয়ে থাকা উচিত - এবং বড়বড় কথা যেমন বলছেন চালিয়ে যান - কেবল প্রত্যাশাটুকু কমান। রাজনীতি তস্করেরাই করেছে সবসময়ে, তাদেরই করতে দেয়া উচিত - তাদের মতো।

    জবাব দিন
  9. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    সাকার রায়ের খসড়া ফাঁস
    দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ পেনড্রাইভ, ভিডিও ফুটেজ জব্দ
    ০৪ অক্টোবর, ২০১৩ ০৩:০১:০৩
    আশরাফ-উল-আলম ও এম বদি-উজ-জামান

    বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার খসড়া রায় ফাঁস হওয়ার ঘটনায় জব্দ করা কম্পিউটার পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদও শুরু হয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তাঁরা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার আগে এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি নন।

    বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দুই কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। ঘটনাটি তদন্ত করছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক ফজলুর রহমান। আর তদন্ত তদারকি কর্মকর্তা হচ্ছেন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোখলেসুর রহমান। তাঁরা কেউই ফোন ধরছেন না। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে গত বুধবার রায় ফাঁসের বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। পরে ঘটনার তদন্ত শুরু করে ডিবি। তদন্তের শুরুতেই ট্রাইব্যুনালের কম্পিউটার জব্দ করা হয়।

    ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার এ কে এম নাসির উদ্দিন মাহমুদ জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের পেন ড্রাইভ জব্দ করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও জব্দ করেছে তদন্ত টিম। জব্দ করা চারটি পেন ড্রাইভ, কম্পিউটার, ভিডিও ফুটেজ তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হচ্ছে।
    গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, তারা মনে করছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের যে কম্পিউটারে সাকার রায়ের খসড়া কম্পোজ করা হয়, সেই কম্পিউটার থেকে সরাসরি ইন্টারনেটের মাধ্যমে রায়টি কাউকে পাঠানো হয়ে থাকতে পারে।

    আবার পেন ড্রাইভের মাধ্যমেও ওই কম্পিউটার থেকে রায়টি নিয়ে কাউকে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। তবে যেভাবেই পাচার হয়ে থাকুক, তা বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে উদ্ঘাটন করা সম্ভব। জব্দ করা আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

    রায় কম্পোজ করেন দুজন : তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, তদন্তের প্রথম পর্যায়ে তদন্ত কর্মকর্তা জানতে পেরেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের কক্ষেই তাঁর কর্মীরা রায়ের খসড়া কম্পোজ করেন। এ রায়ের খসড়া কম্পোজের দায়িত্বে ছিলেন দুজন। তাঁরা হলেন গৌরাঙ্গ চন্দ্র দাস ও রাশেদা বেগম। জানা গেছে, দুজনই বেঞ্চ কর্মকর্তা। তবে এ দুজনকে, না অন্য কাউকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তা জানা যায়নি।

    যেসব বিষয় সামনে রেখে তদন্ত : সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ট্রাইব্যুনাল থেকেই রায় পাচার হওয়ার বিষয়ে এরই মধ্যে নিশ্চিত হয়েছেন তদন্তসংশ্লিষ্টরা। তাঁরা কয়েকটি বিষয় সামনে রেখে তদন্ত এগিয়ে নিচ্ছেন। এগুলো হলো : এক. রায়টি কোনো কর্মচারী বা কর্মকর্তা পাচার করেছেন কি না তা খুঁজে বের করা। দুই. কিভাবে ট্রাইব্যুনালের কম্পিউটার থেকে রায়ের খসড়া পাচার হয়েছে তা উদ্ঘাটন করা। তিন. এটি পাচারের সঙ্গে অন্য কারা জড়িত তা খুঁজে বের করা এবং চার. এই পাচারের সঙ্গে অবৈধ লেনদেন ছিল কি না বা এর পরিমাণ কত ছিল তা খুঁজে বের করা।

    আইন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা পরীক্ষা : জানা গেছে, আইন মন্ত্রণালয় থেকে রায়ের খসড়া ফাঁস হওয়ার যে অভিযোগ আসামিপক্ষ করেছে, তার যৌক্তিকতাও খতিয়ে দেখেছে তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলা হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে। এরই মধ্যে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে তারা নিশ্চিত হয়েছে, এটি সাজানো অভিযোগ।

    জামায়াত-শিবির পরিচালিত বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বলা হচ্ছে, আইন মন্ত্রণালয় থেকে রায়ের কপি ফাঁস হয়েছে। একই রকম বক্তব্য দিচ্ছেন সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ও তাঁর ছেলে। তবে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা তদন্ত সংস্থাকে জানিয়েছেন, ওয়েবসাইটে ফাঁস হওয়া রায়ের ফাইলটি তৈরি হয়েছে ২০১৩ সালের ২৩ মে রাত ১২টা ১ মিনিটে। রাত ১২টা ১ মিনিটে আইন মন্ত্রণালয় খোলা থাকার সুযোগ নেই। ফাইলটি শেষ সেভ করা হয়েছে 'ম্যাকবুক প্রো ১৩' কম্পিউটার থেকে। এ মন্ত্রণালয়ে এ ধরনের কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় না। ম্যাক কম্পিউটারের দাম অনেক বেশি হওয়ায় বাংলাদেশের সরকারি অফিসে ইন্টেলের পেন্টিয়াম কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
    ফাঁস হওয়া রায়ের ফাইল থেকে আরো জানা যায়, এ ফাইলের অথর বা মালিকের 'আদি' নাম আলম। আর এ ফাইলের অর্গানাইজেশনের নাম 'অ্যারাবিয়ান হর্স'। তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন, যদি আইন মন্ত্রণালয়ের কম্পিউটার থেকে ফাইলটি ফাঁস হয় তাহলে ফাইলে অর্গানাইজেশনের নাম থাকবে আইন মন্ত্রণালয়ের নাম। অন্যদিকে আইন মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আলম নামে এ মন্ত্রণালয় কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী নেই। 'অ্যারাবিয়ান হর্স' নামে দেশে কোনো প্রতিষ্ঠানও নেই বলে জানা গেছে।
    যে সাইটে সর্বপ্রথম রায়টি ফাঁস হয় সেই justiceconcern.org সাইটটি গত ১৩ মার্চ নিবন্ধন করা হয় লন্ডন থেকে। অর্ণব নামের একজন এটি নিবন্ধন করেন, যাঁর ই-মেইল ঠিকানা arnabsn28@gmail.com। এতে লন্ডনের একটি ফোন নম্বর ছিল : +44.7872183426। তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের ভুয়া ঠিকানা দিয়ে যে কেউ পৃথিবীর যেকোনো স্থান থেকে একটি ডোমেইন নিয়ে একটি সাইট বানাতে পারে। আর সেখানে যা খুশি তা-ই আপলোড করতে পারে।

    তদন্তসংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, ওয়েবসাইটে পাওয়া রায়ের ফাইলটি থেকে যে তথ্য পাওয়া গেছে, তা থেকে এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়, রায়ের কপিটি যেখান থেকেই ফাঁস হোক তা আইন মন্ত্রণালয় থেকে হয়নি।

    ট্রাইব্যুনালের পরিচ্ছন্নকর্মীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে : রায়ের খসড়া আগাম ফাঁস হওয়ার ঘটনায় গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান অন্য একজন সদস্যকে নিয়ে ট্রাইব্যুনালের পরিবেশ ঘুরে দেখেন। পরে তাঁদের নির্দেশে ট্রাইব্যুনালের ১০-১২ জন পরিচ্ছন্নকর্মীকে ট্রাইব্যুনাল চত্বর থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে ট্রাইব্যুনাল এলাকায় সন্ধ্যার পর কাউকে না থাকারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

    সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনা মানবতাবিরোধী ২৩টি অপরাধের মধ্যে ৯টি প্রমাণিত হওয়ায় চারটি অভিযোগে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। পাঁচটিতে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু রায় ঘোষণার আগেই গত সোমবার রাতে ১৭২ পৃষ্ঠা রায়ের খসড়ার ১৬৪ পৃষ্ঠা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়; যদিও তাতে সাজার অংশ ছিল না। প্রকাশিত অংশ বাঁধাই করে নিয়ে সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে রায় শুনতে ট্রাইব্যুনালে হাজির হন। রায়ের পর তাঁরা সাংবাদিকদের জানান, আগেই আইন মন্ত্রণালয় এ রায় তৈরি করে ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়েছে। ট্রাইব্যুনাল ঘোষিত রায়ের সঙ্গে ওয়েবসাইটে প্রকাশিত রায়ের সম্পূর্ণ মিল রয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। গতকাল সব গণমাধ্যমে রায় ফাঁসের ঘটনা গুরুত্ব সহকারে ছাপা হয়।
    সূত্র- কালের কন্ঠ


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  10. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    যেভাবে রায় ফাঁসের রহস্য উদঘাটন
    আদনান রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
    বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

    ঢাকা: রায় ফাঁসের পর আসামিদের চিহ্নিতকরণ এবং তদন্তের বিভিন্ন পর্যায় নিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেছেন।

    শুক্রবার সন্ধ্যায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে তিনি এ ব্রিফ করেন।

    মনিরুল ইসলাম জানান, তদন্তভার পাওয়ার পর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) প্রথম পর্যায়ে কোন কম্পিউটার থেকে রায়ের কপি বের করা হয় এবং কারা কারা সেই কম্পিউটার ব্যবহার করেন এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজেন।

    তারপর ট্রাইব্যুনালে গিয়ে রায় কম্পোজ করা ওই কম্পিউটার জব্দ করে ডিবি পুলিশ। কম্পিউটারে কোনো ইন্টারনেট সংযোগ ছিল না। এ কারণে ডিবি পুলিশ নিশ্চিত হয়, এখান থেকেই রায়ের খসড়া কপি ইউএসবি পেন ড্রাইভ কিংবা সিডিতে করে অন্য কম্পিউটারে নেওয়া হয়েছে।

    কম্পিউটার জব্দের পাশাপাশি ডিবি পুলিশ ট্রাইব্যুনালের সব কর্মচারীদের ওপর নজর রাখে এবং অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে।

    ফুটেজ দেখেই নয়ন আলীকে (২০) চিহ্নিত করে যে, ওই কম্পিউটার থেকে রায়ের কপি তিনিই বের করে নিয়ে যান।

    DBDB
    তিনি আরও জানান, নয়ন আলী ট্রাইব্যুনালের একজন মাস্টার রোল বিভাগের অস্থায়ী কর্মচারী। তিনি গত দেড় বছর ধরে ট্রাইব্যুনালে পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে কাজ করছেন। তবে তার কম্পিউটার দক্ষতা রয়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছে ডিবি পুলিশ। কারণ তিনি প্রায়ই ট্রাইব্যুনালের ছোট খাটো চিঠি কম্পোজ করতেন।

    শুক্রবার নয়নকে গ্রেফতারের পর তিনি রায় ফাঁসের খসড়া কপি পেনড্রাইভে নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। কিন্তু তিনি বলেন, মোটা অংকের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে এক আইনজীবীর সহকারী তাকে দিয়ে এ কাজ করিয়ে নেন।

    নয়ন জানান, তাকে একটি ফাইল আনার নির্দেশ দেন সাকা চৌধুরীর মামলার পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফকরুলের সহকারী আইনজীবী মেহেদী হাসান। পরে ওই ফাইল আনার পর যখন নয়ন দেখেন সেটি রায়ের কপি, তখন তিনি ফাইলটি দিতে অস্বীকৃতি জানান।

    সেই সহকারী আইনজীবী বলেন, ট্রাইব্যুনালের তথ্য নেওয়ার দায়ে তিনি নয়নকে ফাঁসিয়ে দেবেন। সেই ভয়ে নয়ন তাকে ফাইল দিয়ে দেন।

    পরে কোন কম্পিউটারে এই রায়ের কপি ট্রান্সফার করা হয়েছে সেই কম্পিউটার জব্দ করে পুলিশ।

    এরই সূত্র ধরে শুক্রবার দুপুরে সাকার আইনজীবী ব্যারিস্টার ফকরুলের চেম্বারে তল্লাশি চালিয়ে ২টি সিপিইউ, ১টি প্রিন্টার ও কয়েকটি সিডি আটক করে ডিবি পুলিশ।

    পরে নয়নের দেওয়া জবানবন্দির সঙ্গে মেহেদী হাসানের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায় ডিবি।

    এ ঘটনায় নয়ন ছাড়া ফারুক নামে ট্রাইব্যুনালের আরেক অফিস অ্যাসিস্ট্যান্ট জড়িত রয়েছেন।

    ডিবি পুলিশ নয়নকে কথা না বলতে দিলেও নয়ন বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ কাজ করতে মেহেদী হাসান বলেছেন!’

    মনিরুল ইসলাম বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আইসিটি অ্যাক্ট ৫৭ এবং ৬৩ ধারায় অপরাধ মামলা করা হয়েছে।

    যারা রায়ের কপি ফাঁসে সহযোগিতা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইসিটি অ্যাক্টের ৫৪ ধারায় মামলা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

    মনিরুল ইসলাম জানান, কপি যুক্তরাজ্য থেকে আপলোড করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশ থেকেও রায়ের কপি আপলোড করে যুক্তরাজ্য দেখানো হতে পারে।

    মনিরুল ইসলাম বলেন, এই রায় ফাঁস হওয়ায় অনেকে লাভবান হচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে। যদি এর সঙ্গে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায় তবে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

    বাংলাদেশ সময়: ২২০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৩
    এডিআর/এমআইপি/এএ/আরআইএস

    লিঙ্ক


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।