কয়েকদিন আগে একটা প্রশ্ন মনে আসলো।
আমি কি ঈশ্বর বিশ্বাসী?
আল্লাহ্, খোদা, ভগবান, গড, যিহোভা, প্রকৃতি যে নামেই ডাকিনা কেন, আমি এক ঈশ্বর দিয়ে সবই বুঝাচ্ছি।
উত্তর পেলাম, হাঁ।
কোরআন, হাদিস, তাফসীর বা অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ যে বিশ্বাস আমাকে এনে দিতে পারেনি; এমনকি ডারউইন সাহেব ও যেখানে আমাকে বান্দরবাদী করতে পারেনাই; খুব ছোট একটা প্রশ্ন এবং তার উত্তর আমাকে আলোয় নিয়ে এসেছে। হয়তবা কেউ কেউ বলবে না আমি অন্ধকারের দিকে চলে গেলাম।
আমার আলো, আমার অন্ধকার আমারি থাক।
প্রসঙ্গান্তরে চলে যাই। ঈশ্বরের অস্তিত্বে একটু পরে আসি।
বাঙ্গালী ইতিহাস খুব পছন্দ করে। শিক্ষা নেয় কিনা তা অবশ্য প্রশ্নসাপেক্ষ।
যাই হোক খুব সম্ভবত নেতাজী সুভাষ বসু না কেউ একজন বলেছিলেন, বাঙ্গালী আজ যা চিন্তা করে ভারত কালকে তা ভাবে।
কথাটা এরকম ও হতে পারে যে, বাঙ্গালী আজ যা করে ভারত কাল তা ভাবে।
আসলেই বাঙ্গালী অনেক ব্যাপারেই অগ্রদূত।
দেশকে পিছিয়ে নিয়ে যাবার ব্যাপারে তো কথাই নেই।
এই হাসিনা-খালেদা আর ভালো লাগেনা। আর্মি যে হঠাৎ আসবেনা তাও বলা বাহুল্য। পচ্চিমাদের বর পাওয়ার একটা ব্যাপার আছে না!
তার উপর গলফ খেলে আর মিশনে গিয়ে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী ভালই আছে। এরা যে আয় করে মিশনে গিয়ে তার প্রাপ্য ট্যাক্স এখনো বাংলাদেশের রাজস্বে অর্জিত আয়ে এক নম্বর। যাই হোক ২ নম্বর হইলেও কিছু যায় আসে না। সোজা কথা বাংলাদেশের রাজস্ব খাতে সামরিকবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে বিগত কয়েক দশক ধরে।
কিন্তু শোনা কথা এদের জন্য বরাদ্দ বাজেটে নাকি সাক্ষর বাদে কলম চালানোর হক অর্থ মন্ত্রণালয় সহ নাকি আর কারো নেই। যাই হোক শোনা কথার খেতা পুড়ি। একবার এক বন্ধু বলল, তাদের সি ও না কোনো এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার টয়লেট পেপার কতো টাকার এবং কতো আরামদায়ক তা নিয়ে মিটিং হয়।
টয়লেট পেপার সম্বন্ধে একটা কথা বলি।
এখানে লন্ডনের সুপার মার্কেটগুলাতে মানুষের খাদ্যের পাশাপাশি পশু খাদ্যও প্রচুর পরিমাণে বিক্রি হয়। একটু উদাহরণ দেই; কুকুর, বিড়াল, মাছ, পাখির খাদ্য, এদের চিরুনি, খাঁবার প্লেট, মলত্যাগের …… ইত্যাদি, ইত্যাদি। যাইহোক এখানে আসার পর-পর একদিন এক সুপার মার্কেটে টয়লেট পেপার কিনতে গিয়ে দেখি প্যাকেটের গায়ে কুকুরের ছবি। ভাবলাম এই টিস্যু কুকুরের জন্য। (এখানে কুকুরের জন্য চেস্টিটি বেল্ট ও পাওয়া যায়)
দোকানের এক কর্মচারীকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলাম, মানুষের জন্য টিস্যু পেপার কই? সে আমাকে কুত্তার ছবিওয়ালা টয়লেট পেপার দেখিয়ে দিলো। আমি বললাম, এটাতে কুকুরের ছবি; কুকুরের জন্য। কর্মচারীটি আমাকে পার্শ্ববর্তী সেলফে রাখা হাতীর ছবিওয়ালা টিস্যু পেপার দেখিয়ে বললেন, তবে কি এটা হাতীর জন্য? নিজের বোকামীর জন্য কয়েক প্রস্থ হাসলাম, কর্মচারীটিও সঙ্গী হল। ভাগ্যিস বাঙ্গালী আর ভানুর যুগে নেই। আমি বিখ্যাত কৌতুক অভিনেতা ভানুর কথা বলছিলাম। আমার দেখা এবং জানামতে আজ অবধি ভানুই শ্রেষ্ঠ।
যদি ভানু হতাম, তবে বলতাম, হাতির নাকি; তয় একখান দিয়া দেন। বঠঠাকুরের হাতিটায় ঘরের আশপাশ বড়ই নোংরা করে।
আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনে পঞ্চম ব্রিগেড/ ডিভিশন (জেনারেল ফ্রাঙ্কর যেমন ছিলো আরকি)যেটি আছে তা হচ্ছে বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশী দুতাবাসগুলি।জেনারেল মঈন না কে যেনো একবার লিখেছিলেন এরা বাংলাদেশে আসে কাঁদতে কাঁদতে, চলে যায় ও কাঁদতে কাঁদতে।
বলা বাহুল্য প্রথম কান্নার কারণ তথাকথিত পচ্চিমা স্বর্গ থেকে নরকের মতোন বাংলাদেশে পতনের জন্য কান্না।
আর যাবার সময় প্রকৃত স্বর্গ থেকে বিতারণের জন্য।
হাঁ আমি বাংলাদেশকে বিদেশীদের জন্য স্বর্গই বলছি।
বাংলাদেশে যারা দূতাবাস প্রধান হয়ে যান অন্য কোনো দেশে তারা দূতাবাস প্রধানের অধস্তন কর্মচারী /কর্মকর্তা হিসাবেই যান। আর বাংলাদেশে তারা আসেন রাজা মহারাজা হয়ে। এরা যেভাবে বাংলাদেশে আপ্যায়িত হয়ে থাকেন তা বোধহয় আর কেউই পান না। এসব দূতাবাস আয়োজিত যেকোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারলে সরকার ও বিরোধীদলীয় নেতারা ধন্য হয়ে যান; যেনো স্বর্গে যাবার ছাড়পত্র পাওয়া গেলো। ছোটবেলায় কুরবানীর সময় বাবাকে দেখতাম গরুর লেজ ধরে থাকতে। একবার জিজ্ঞাসা করলাম, কারণ কি? আব্বা বললেন, পুলসিরাত পার হওয়ার জন্য। কুরবানী হওয়া গরু যাবে বেহেস্তে, আর গরুর লেজ ধরে থাকলে নাকি পুলসিরাত পার হওয়াও সুনিশ্তিত।
বাঙ্গালীদের নাকি অতিথি আপ্যায়ন করার খ্যাতি যুগ-যুগান্তরের। (যদিও কোলকাতাবাসীদের ক্ষেত্রে এটা খাটে না। ওরা আজন্ম ……।)
এমনকি অনাহূতরাও গৃহস্বামীদের কাছে সাদরে আমন্ত্রিত হন। এরকম শোনা যায়, পিপাসার্ত হয়ে পথিক পানি চাইলে অন্দরমহল থেকে শরবত চলে আসতো। সেই দিনগুলো আর নাই। এখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জনগণ মূত্রে বহুমূত্র রোগের প্রমাণ পেলে তা বাড়িতে ফেরত নিয়ে আসেন তাতে চিনি আছে বলে।
আমাদের সাধারণদের দুর্দশা চললেও রাজনীতিবিদরা এখনো অতিথি আপ্যায়নে আমাদের পূর্বপুরুষদের মতন সমান পারদর্শী; কিংবা বলা ভালো এস্কিমোদের মতন পারদর্শী।
এস্কিমোদের ব্যাপারটা হয়তো অনেকেই জানেন। যারা জানেননা তাদের জন্য।
এস্কিমোদের বাড়িতে অতিথি আসলে রাতের বেলা নিজের স্ত্রীকে অতিথির বিছানায় শুতে দেন।
আমাদের রাজনীতিবিদরা এস্কিমোদের আরেক কাঠি বাড়া।
নিজের মাকে অতিথির বিছানায় শুতে পাঠিয়ে দেন। শুধু তাই না স্পেশাল শরাবান তহুরার ব্যাবস্থা ও করা হয়।
দুঃখিত এতো ভনিতা করার জন্য।
দেশ তো মা; নাকি?
আমাদের প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় গেলে একই কথা বলে। কোনও ডান-বাম নেই।
আমি তেল-গ্যাস সহ অন্যান্য খনিজ বাইরে রপ্তানি করার বিপক্ষে নই। তবে কি আমি দেশকে ভালবাসিনা!
আমি একটাই সহজ হিসাব বুঝি তা হইলো আমার দেশের লাভ কিভাবে হবে?
যদি ট্রানজিট দিলে দেশের লাভ হয় তবে ট্রানজিট দাও।
যদি গ্যাস বেচলে লাভ হয় তবে গ্যাস বেচ।
কিন্তু কথা হচ্ছে দেশের কি লাভ হবে?
প্রতি নির্বাচনের আগে আমাদের দুই নেত্রী হাজ্জ করতে দৌড়ান। এরা দুইজন মনে হয় মক্কার খতিব সাহেবের হাজ্জ করার রেকর্ডও ব্রেক করে ফেলবেন, ইনশাল্লাহ। আর দেশে শাহজালালের মাজার তো আছেই।
কোন দেশে বা কোন দূতাবাসে এরা কোথায় কোথায় দস্তখত দিয়ে আসে আল্লাহ্ মালুম।
শোনা যায়, ৭১ সালে যুদ্ধকালীন সময়ে ভারতের সাথে চুক্তি করতে গিয়া সৈয়দ নজরুল ইসলাম নাকি অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন।
ডারউইন সাহেবের সারভাইভাল ফর ফিটেস্ট কথাটা খাটে রাজাকারদের ক্ষেত্রে। এরা বান্দরবাদী না হইয়াও মূল জিনিসটা ঠিকই নিয়া নিছে।
নইলে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কি কইরা রাজাকার হয়?
প্রেসিডেন্ট কি কইরা রাজাকার হয়?
আর আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা একে একে প্রাণ দেন স্বাধীন বাংলাদেশে; খালেদ মোশাররফ, হূদা, তাহের, মঞ্জুর আরও অনেকে……
লেখাটা শেষ করি; অনেকদিন ধইরা পইড়া আছে।
ঈশ্বরবিশ্বাসী ক্যামনে হইলাম সেইটা বলি।
আমি ভূত বিশ্বাস করি।
তাই ভগবান ও বিশ্বাস করি।
জীবনে প্রথম প্রথম হইলাম। তাও একটা খাসা লেখায়।মন্তব্য পরে করব। আগে একটু নেচে নেই। :guitar: :goragori: :awesome:
আগে গেলে বাঘে খায়...
সবাই প্রথম হইবার চায়।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
কোপা লাগসে ভাই
পুরাই উরাধুরা বলসেন।
(সম্পাদিত)
কোপাইতে থাক।
ধন্যবাদ।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
কষ্ট পেলাম....
আমিও কষ্ট পাইছি।
এমনিতেই অনেকেই কষ্ট পাইছে, ক্ষোভে ফাইটা পড়ছে।
আমি আহসান ভাইএর লেখার উত্তর দিছি, দেখে নিস।
আমাদের অবস্থা যেন এমন না হয়ে দাঁড়ায়, ঠাকুরঘরে কেরে? আমি কলা খাই না।
ভালো থাক।
পুরাটা পড়িস।
শুধু আবেগ ঢেলে দিস না।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
রাজিব ভাই, আপনার পোস্টগুলো সব সময়ই ভাল লাগে, বেশির ভাগ ভাবনাই মিলে যায়, আরো মিলে যায় এর বিক্ষিপ্ততা... কোন উপসংহারে পৌছাতে পারি না, অনেক ভাবনা সঠিক দিক থেকে ভাবতেও পারি না।
আর আর্মি মিশনের ট্যাক্স থেকে রাজস্ব আয়ে এক নম্বরে এটা একটা মিথ, প্রথম তিনের ভেতরেও সম্ভবত নেই।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
আহসান
তাই জানলাম।
একজন বলল কোনও ট্যাক্স নাই।
আরেকজন বলল বেতন পাবার আগেই সরকার কেটে নেয়। যাই হোক ট্যাক্স দিক আর নাই দিক; বৈদেশিক মুদ্রা তো আসতেছে।
আর অমিয় চক্রবর্তীর একটা কবিতা আছে
মেলাবেন তিনি মেলাবেন।
শহীদ কাদরীর ও এরকম একটা কবিতা আছে।
ভুলে গেছি, একটা লাইন হয়তো এরকম
শুওর খুঁজে পাবে তার প্রিয় কচু।
যাই হোক বাংলাদেশের জন্ম থেকে শুরু করে অদ্যাবধি বাংলাদেশ নামের সকল উত্থান-পতন সকল কিছুর সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনির সম্পৃত্ততা রয়েছে। তাই ভালো অনেক অবদানের পেছনে যেমন সামরিক বাহিনী রয়েছে তেমনি অনেক প্রশ্নবোধক চিহ্নের পিছনে ও সামরিক বাহিনী রয়েছে।
যাই হোক সামরিক বাহিনীতে আমার ভাই বোনেরাই রয়েছে বলেই আমি জানি।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
এটি বলেছেন গোপাল কৃষ্ণ গোখলে। নিখিল ভারত কংগ্রেস দলের এক কালের নেতা এবং থিংক ট্যাংক। গোখলে হলেন মহাত্মা গান্ধী এবং জিন্নাহর রাজনৈতিক শিক্ষক।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
রাব্বী
ধন্যবাদ তথ্যের জন্য।
গান্ধীর গুরু কি কেউ ছিল?
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
গোখলেকেই মনে করা হয় গান্ধীর রাজনৈতিক মেনটর। তবে তাঁর করা মন্তব্য "হোয়াট বেঙ্গল থিংঙ্কস টুডে, ইন্ডিয়া থিংঙ্কস টুমরো'র" দিন আর নাই।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
আঁহা, আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম.. 😀
হেই দিন আর থাকবো কেমতে..বাংগালী চিন্তাবিদরাতো এখন সব ইউএস, কানাডায় 😉
বস, আপনে ইউএসএ, কানাডায় আসলেন আর আমাদের একটু জানালেন পর্যন্ত না 😮
আমার বন্ধুয়া বিহনে
ভাই, আপনার লেখার প্রশংসা কেমনে করমু তা জানিনা । তবে তা এভাবেই করলাম.........-আপনার লেখার লগে পরিচয় হইছে আমার এক ফ্রেন্ডের লগে তর্ক করতে যাইয়া, ও যখন আপনার লেখাগুলা আমারে ওর যুক্তি হিসাবে দেখাইল আমি তখন পুরাই অফ গেছিলাম । 😀 আমি এই ব্লগে নতুন নতুন লেখা শুরু করছি ......আমার লাইগা গাইড লাইন রাইখেন......... :boss:
শামীম,
ভালো লাগলো জেনে আমার লেখা কেউ রেফারেন্স হিসাবে দেয়।
আবার ভয়ের ব্যাপার ও ।
আরও সিরিয়াস হতে হবে এক্ষণ থেকে।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ