অমরত্বের নিদান যেহেতু এখনো আসে নি তাই নিশ্চিত করেই বলা যায় আমি, আমরা সবাই মারা যাবো। কয়েক সপ্তাহ আগেই আমার প্রথম শিক্ষক যিনি আমাকে অ আ ক খ শিখিয়েছিলেন সেই লাভলু ভাই মারা গেলেন (মামাতো ভাই) । আরেক মামাতো ভাই জানালো ফেবু তে যে লাভলু ভাই নেই। ওনারা চার ভাই ছিলেন। মেজ জন এখন জীবিত। ৪০ থেকে ৫০ এর মধ্যেই সবাই মারা গেলেন। বছর দুই হল মা মারা গেছেন। কিন্তু এরা সবাই তো স্বাভাবিক নিয়মেই মারা গেছেন। কিন্তু যাদের মেরে ফেলা হচ্ছে???
আমরা এক অস্থির সময় পার করছি। পৃথিবীর সব দেশেই। মধ্যপ্রাচ্য প্রায় সবসময়ই অশান্ত ছিলো। নব্বই এর দশক থেকে এর মাত্রা টা আরো বেড়েছে। আর নাইন ইলেভেন এর পর ও বিশ্বের চেহারা ই ভিন্ন হয়ে গেছে।
আজকের এই সময়ে মৌলবাদ যে একটি বিশাল সমস্যা তা বলার অপেক্ষা রাখে না। হয়তো বা প্রধান সমস্যা। বছর দুই তিন আগে ইসলামিক স্টেট বা আই এস নিয়া কথা বললে বা কল্পিত ইসলামিক রাষ্ট্রের কথা বললে আমরা নিঃসন্দেহে বক্তাকে মাথায় কদুর তেল মাখতে বলতাম। কিন্তু আজকের বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। সিসিবি তেই আই এসের শুরুর দিকে দুটো লেখা লিখেছিলাম। আসুন হাত কাটাকাটি করি ও আইসিস ও অন্যান্য শিরোনামে। আজকের পরিস্থিতি আরো খারাপ। খাচায় মানুষ বন্দী করে রাখা হচ্ছে। আগুনে পুড়িয়ে, পানিতে ডুবিয়ে, শিরোচ্ছেদ করে, গুলি করে মানুষ মারা হচ্ছে। মেয়েদের কে খোলাবাজারে পণ্য হিসাবে বিক্রি করা হচ্ছে।
ইন্টারেষ্টিং ব্যাপার হচ্ছে আই এস এর মালিকানায় বেশ কিছু তেল খনি আছে। এখান থেকে তেল তুলে তারা বিক্রি ও করছে। আর ঘুরিয়ে পেচিয়ে সেই তেল কিনছে আধুনিক উন্নত রাষ্ট্রগুলো। আমার মতো আরো অনেকের গাড়ী হয়তো চলছে মানুষের রক্ত মিশ্রিত গ্যাসে।
আমাদের আধুনিক দেশের রাষ্ট্র নায়কেরা সবাই প্যারিসে জড়ো হন চার্লি হেবদোর হত্যাকান্ডে প্রতিবাদ জানাতে। কিন্তু নাইজেরিয়ায় বোকো হারাম এর উথ্বান (২৭৬ জন মেয়ে কে অপহরণের মাধ্যমে যার শুরু) বা কেনিয়ায় সেই কলেজে ১৪৭ জনকে হত্যা র পরে ইউরোপ আমেরিকা সেভাবে কিছুই করে নি। খুব হিসাব কষে একটা বিভেদ তৈরি করা হচ্ছে কি? নাকি এই বিভেদ টা সব সময় সব যুগে, সব সমাজে ছিলো। আমরা অস্বীকার করে গেছি প্রতিনিয়ত।
হয়তো বা আমরা যারা পিছিয়ে আছি তাদের কে নিজেদের ভাগ্য নিজেদের কেই গড়ে নিতে হবে। পশ্চিমারা আমাদের নিয়ে মাথা ঘামায় নিজেদের প্রয়োজনে। মাঝে মাঝে আমাদের ডেকে গণতন্ত্রের কথা বলে বটে। কিন্তু জানি না আজো তারা আমাদের সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কি করা উচিত, নৌযান ডুবি প্রতিরোধে কি করা উচিত সে ব্যাপারে কিছু বলেছে কিনা!!! কেনোই বা বলবে? তারা গণতন্ত্রের কথা বলে কারো সাথে আগাম চুক্তি করে। এই দল আসলে তার ব্যবসা হবে, আরেক দল আসলে আরেক দেশের ব্যবসা হবে। অবশ্য আমাদের বললেই কি কোন কাজ হবে? আমরা তো নিজেরাই নিজেদের খাবারে বিষ মেশাই।
আমি নিজে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কে নিয়ে অনেক আশাবাদি। হয়তো তিনি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে বলেই। সন্ত্রাস, বিশেষ করে মৌলবাদী সন্ত্রাস বন্ধ করার ব্যাপারে তাকে একসময় যতটা শক্ত মনে হয়েছিলো আজ আর তেমন মনে হয় না। তিনি অনেক ব্যস্ত। এক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার জন্যই তার রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাবার কথা। এবং আশার কথা এই যে এই পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সুন্দর করে এগিয়ে যাচ্ছে। সাকা র ফাসির রায় হয়ে গেলো পর্যন্ত। যে কোন দিন সময় করে তাকে ঝুলিয়ে দেয়া হবে। অথচ এই সাকা কে একসময় ও আই সি এর মহাসচিব/ সেক্রেটারি জেনারেল পদে বাঙলাদেশ এর তরফ থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিলো। রাজনীতির কথা না হয় বাদ দিই। সাকা আমাদের কোন এক ক্যাডেট কলেজের এক্স ক্যাডেট ও বটে। যদিও অনেকেই তার ক্যাডেট পরিচয় অস্বীকার করতে চায়। অথচ আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি তার কাছ থেকে/কোম্পানির কাছ থেকে টাকা বা স্পন্সর নেয়া হয়েছে রিইউনিয়ন গুলোতে। অন্তত একবার ক্যাডেট মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দেবার জন্য তার কাছ থেকে টাকা বা স্পন্সর নেয়া হয়েছে।
যাই হোক প্রসঙ্গে ফেরত যাই। বাঙলাদেশে একের পর এক ব্লগার, লেখক দের হত্যা করা হচ্ছে। তাদের অপরাধ তারা ধর্মের নানা অসঙ্গতি তুলে ধরতেন তাদের লেখায়। আরেকটু নজর করলে দেখি যে তারা সবাই যুদ্ধাপরাধী দের বিরুদ্ধে বলতেন। তারা সবাই জামাত-শিবিরের বিরুদ্ধে বলতেন। আমার পরিচিত বেশিরভাগ মানুষ ধর্মে বিশ্বাস করে। তাদের সাথে ধর্মালোচনা করলে তারা মাঝপথেই থেমে যান। কারণ বেশ কিছু বিষয় এসে পড়ে যার উত্তর তারা জানেন না। কিংবা উত্তর জানলেও উত্তর দিতে বিব্রত বোধ করেন। কিন্তু ধর্ম তো বিব্রত বোধ করার বিষয় নয়। বরং এটি সম্পূর্ণ জীবন বিধান।
কোন ব্লগার হত্যা করা হলেই আমাদের ভিতর নানা দল নানান কথা বলে ওঠে,
- হত্যাকারীরা প্রকৃত ইসলামের অনুসারী নয়।
- এই ইসলাম ইসলাম নয়।
- মৃত ব্যক্তি টি কি করেছিলো যে তাকে হত্যা করা হয়েছে?
- ব্লগার টি ক্যানো ধর্মের বিরুদ্ধে লিখতো!
- ব্লগারটির উচিত নয় নি অন্যের ধর্মানূভুতিতে আঘাত দেয়া।
- আল্লাহ ব্লগার টিকে উচিত সাজা দিয়েছেন।
- ধর্ম নিয়া আকথা-কুকথা বললে পরিণতি তো এই হবেই।
অথচ কোন মুসলিম বলে না যে ব্লগারটি কলম দিয়ে আমার, আমার বাপ-দাদার ধর্মের বিরুদ্ধে লিখছে। আসো আমরা সবাই মিলে কলম দিয়েই এর উত্তর দিই। আমাদের প্রধান মসজিদ গুলোর খতিবেরা একত্র হয়ে কোন বিবৃতি দেন না যে এইভাবে তোমরা মানুষ হত্যা কোরো না। সরকারের অবস্থান ও খুব একটা স্পষ্ট নয় নিহত এই ব্লগার দের বিষয়ে। আইজিপির বক্তব্য দেখা যেতে পারে। ব্লগারদের হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে আইজিপি বলেন,
- “এখানে আমার একটা বক্তব্য আছে। মুক্তমনা, তারা তো থাকবে। তাদের প্রতি আমার যথেষ্ট শ্রদ্ধাবোধ আছে।
- “তবে আমাদের যে জিনিসটা খেয়াল রাখতে হবে… আমাদের দেশে প্রচলিত আইনে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা অপরাধ। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারীর সাজা ১৪ বছর। তবে কেউ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করলে তাকে হত্যা করতে হবে, তা মানা যায় না।”
- কেউ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করলে, তার বিরুদ্ধে মামলা হলে, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে ।
- “পাশাপাশি যারা মুক্তমনা, লেখেন, তাদের কাছে এবং আপনারা যারা আছেন- তাদের কাছে অনুরোধ, আমরা যেন সীমা লঙ্ঘন না করি। এমন কিছু লেখা উচিত নয়, যেখানে কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে, বিশ্বাসে আঘাত আনে।”
- “নিলয়ের হত্যা কোনোভাবে কাম্য নয়। হত্যাকারীকে খুঁজে বের করা হবে।”
এছাড়া ডিএমপির গোয়েন্দা ও অপরাধতথ্য বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম এর বক্তব্য ও লক্ষনীয়।তিনি বলেন,’‘যারা ব্লগারদের হত্যার সঙ্গে জড়িত এবং যারা হযরত মুহাম্মদ (সা.), ধর্ম ও কোরআন নিয়ে যুক্তিহীনভাবে ব্লগে লেখালেখি করেন তাদের সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে। কারণ যারা যুক্তিহীনভাবে ধর্ম নিয়ে ব্লগে লেখেন তারাও উগ্রবাদী।”
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে লেখালেখি করলে ব্লগারদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, ‘কোনো ধর্ম নিয়েই কটূক্তি করা যাবে না।’
আর সত্য হচ্ছে ব্লগার দের পাশে কেউ নেই। এই লেখাটি পড়ে দেখা যেতে পারে।
আজকেই এ এস টিটু ভাই চমৎকার কিছু কথা বলেছেন। তুলে দিচ্ছি এখানে,
“ব্লগার হত্যা হলে অধিকাংশ মানুষের মধ্যে হত্যার কারণটা নিয়ে আলোচনা করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতে দেখা যায়, তাদের আলোচনার মোদ্দা কথা- এইসব নিয়ে না লিখলেই হয়। একই সুরে রাষ্ট্রের কর্তাব্যক্তিরাও কথা বলেন। অথচ সত্তর দশকেই ড. আহমদ শরীফের লেখায় এমন অনেক বক্তব্য রয়েছে যার কারণে হয়তো আজ তাঁকেও একই ভাগ্যবরণ করতে হতো। এমনকি সেই তিরিশের দশকে বেগম রোকেয়ার কিছু লেখাতেও একইভাবে ধর্ম নিয়ে এমন কিছু কথা রয়েছে যার কারণে তাকেও হয়তো অভিজিৎ-দের ভাগ্যবরণ করতে হতো। অথচ ড. আহমদ শরীফ মৃত্যুর পরও তাঁর নাস্তিক্যবাদ থেকে বিচ্যুত হননি। জানাজা দাফনকে অস্বীকার করেছেন। তাহলে তিরিশের দশক কিংবা তৎপরবর্তী সময়ে যা বলা সম্ভব ছিল এখন তা বলা অসম্ভব। এই আমাদের এগিয়ে যাওয়া? ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত অর্থ কী সেটাই অস্পষ্ট অধিকাংশ মানুষের কাছে। ঈশ্বরের অস্তিত্ব কিংবা অস্তিত্বহীনতা নিয়ে বিতর্ক কি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের নামান্তর। এলাকার এক মৌলভী যদি ভুল ফতোয়া দিয়ে কারো উপর অত্যাচার করেন তার বিরুদ্ধের দাঁড়ানো কি ধর্মের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো? ধর্মের নামে অন্যায় অত্যাচার রাজনীতি কি যুগ যুগ ধরে চলে আসছে না?? এগূলোর বিরুদ্ধে ধর্মীয় নেতারা কতটা সোচ্চার?? বরং ধর্মটা এখন যতটা না নিষ্ঠার সাথে পালন করা হয় তার চেয়ে অনেক বেশি রাজনীতির প্রয়োজনে উস্কানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সমস্যা আমাদের তথাকথিত শিক্ষিত সমাজের মধ্যেই প্রবল। একজন চাপাতির ব্যবহার করে মুখবন্ধ করছে আর দশজন তথাকথিত শিক্ষিত তাকে জাসটিফাই করার চেষ্টা করছে ।”
টিটু ভাই এর করা আরেকটি মন্তব্য তুলে দিতে চাচ্ছি,
“বেগম খালেদা জিয়া শাহবাগের সমাবেশকে নাস্তিকদের সমাবেশ বলার পর থেকেই ব্যাপকভাবে’ ‘ব্লগার মানেই নাস্তিক’ ধারণাটি প্রচার পায়। সেই সূত্র ধরেই নাস্তিক মানেই মৃত্যুদণ্ডতুল্য অপরাধে অপরাধী জীব- এই ধারণাটি দিন দিন বাড়ছে। একটি বড় দলের বড় নেত্রীর দায়িত্বজ্ঞানহীন একটি বক্তব্যে একটি সমাজে কতটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে তার উজ্জল দৃষ্টান্ত এটি।”ভিডিও লিঙ্ক।
ব্লগার হত্যাকাণ্ড ও জঙ্গি তৎপরতা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন,
“অন্তত বাংলাদেশে ধর্মের নামে রক্তপাত চলতে দেওয়া যাবে না। গোটা পৃথিবীতে জঙ্গিবাদী তৎপরতা চলছে। এখানেও মাঝেমধ্যে সেই ধাক্কাটা লাগে। সৌদি আরবের মসজিদে জুমার নামাজ পড়ার সময় বোমা হামলা করে মুসলমানদের হত্যা করা হয়েছে। এখানে (বাংলাদেশে) আবার ধর্মের নামে ব্লগার হত্যা করা হচ্ছে। যারা মুসলমান হয়ে মুসলমানদের হত্যা করে, কিংবা মানুষ হত্যা করে, ইসলাম ধর্মকে কলুষিত করে, তারা মুসলমান হতে পারে না। এরা কোন ধর্মে বিশ্বাস করে? এদের কোনো ধর্ম নেই।”
যদিও সরকারের তেমন কোন কার্য্যকর পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। অভিজিত রায় কে হত্যা করার পরে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্য ছিলো কুয়াশাচ্ছন্ন। ডঃ জাফর ইকবাল জয়ের মন্তব্যের বিরোধিতা করলে অতি আওয়ামীলীগার এক এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী (সিলেট ৩) জাফর ইকবালকে চাবুক মারার ইচচ্ছাপোষণ করে বলেন,
“আমি যদি বড় কিছু হতাম, তাহলে ধরে তাকে (জাফর ইকবাল) আমি চাবুক মারতাম।… তাকে আমি চাবুক মারতাম।।
এছাড়াও তিনি ডঃ জাফর ইকবাল সমপর্কে বলেন,
“শাহজালাল ইউনিভার্সিটিতে সিলেটি ছেলেদের ভর্তি না করার বিষয়ে যতো আইন কানুন আছে তারা করেছে। এই যে কি এটা, কি এটার নাম, জাফর ইকবাল, এর… সে চায় না এই সিলেটের মানুষ শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হোক। আর এই সিলেটের মানুষ তাকে ফুল চন্দন দিয়ে, প্রত্যেক দিন সুন্দর সুন্দর ফুল নিয়ে প্রত্যেক দিন মূর্তি পূজা করতে যায়।”
সংযুক্ত ভিডিও টি দেখার আমন্ত্রণ রইলো।
৮ই আগষ্ট ২০১৫ সালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আওয়ামী ওলামা লীগ সহ সমমনা ১৩ দল সমাবেশ করে ১৭ দফা দাবী পেশ করে। তাদের বক্তব্য ও কয়েকটি দাবীর উপর নজর দেয়া যাক।
- প্রশাসনে হিন্দুতোষণ বন্ধ করা : চাকরীর ক্ষেত্রে ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানদের নিয়োগ আনুপাতিকহারে করতে হবে। হিন্দুদেরকে মুসলমানদের চেয়ে বেশি নিয়োগ দিয়ে বৈষম্য করা যাবেনা। প্রশাসনকে হিন্দুকরণ চলবেনা। কারণ ২০১৩ সালের অক্টোবরে পুলিশের এসআই পদে নিয়োগে ১৫২০ জনের মধ্যে হিন্দু নিয়োগ দেয়া হয়েছে ৩৩৪ জন যা মোটের ২১.৯৭ শতাংশ। ২০১১ সালে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইতে নিয়োগের ৯৩ জনের মধ্যে হিন্দু নিয়োগ করা হয়েছে ২৩ জন। যা মোটের ২৪.৭৩ শতাংশ। সম্প্রতি ৬ষ্ঠ ব্যাচে সহকারি জজ পদে নিয়োগ দেয়া ১২৪ জনকে। এর মধ্যে ২২ জনই হিন্দু। শতকরা হিসেবে ১৭ শতাংশ। এসব বিতর্কিত সিদ্ধান্তে মুসলমান দেশে মুসলমানদের প্রতি ব্যাপক বৈষম্যের দাবিই দৃঢ় হচ্ছে। যাতে হেফাযতসহ বিরোধীরা সুযোগ পাচ্ছে।
- ‘বর্তমান পাঠ্যপুস্তকে কট্টর ইসলাম বিরোধী হিন্দু ও নাস্তিক লেখকদের লেখাকে নিরঙ্কুশ প্রাধান্য প্রদান করা হয়েছে। প্রথম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত বাংলা বইয়ে অন্তর্ভুক্ত গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধসমূহের মধ্যে মুসলমান লেখকদের তুলনায় বিধর্মী হিন্দু লেখকদের লিখাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।…….প্রথম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত গল্প ও কবিতার সংখ্যা ১৯৩টি। এর মধ্যে হিন্দু ও নাস্তিকদের লেখার সংখ্যা হলো ১৩৭টি যা সর্বনিম্ন শতকরা ৫৭ ভাগ থেকে সর্বোচ্চ ৮২ ভাগ প্রাধান্য পেয়েছে।’
- ‘ইসলামকে কটাক্ষ করে লেখালেখি করে এদেশের জাতীয় পর্যায়ে যেসব চিহ্নিত ইসলাম বিদ্বেষী লেখক রীতিমতো কুখ্যাতি অর্জন করেছে, তাদের লেখা পাঠ্যবইয়ের প্রত্যেক শ্রেণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।……কুখ্যাত ইসলামবিদ্বেষী ও নাস্তিক হুমায়ূন আজাদ, তসলিমা নাসরিনের স্বামী রুদ্র শহীদুল্লাহ, সেলিনা হোসেন, সনজীদা খাতুন, কবীর চৌধুরী এবং এ রকম আরো অনেকে যা এদেশের মুসলমানদের কাছে কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়’
- ‘আশ্চর্যের বিষয় হলো, বাংলাদেশে বহু ইসলামী ঐতিহ্যবাহী পুরাকীর্তি ও স্থাপত্য নিদর্শন থাকলেও তা নিয়ে কোনো অধ্যায় বা প্রবন্ধ সংযোজন করাতো দূরের কথা, তা নিয়ে কোনো প্রকার বর্ণনা দিতেও চরম কার্পণ্য করা হয়েছে। এসব বই দেখলে বোঝার উপায় নেই যে, এদেশে মুসলমানরা বসবাস করে। …..কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী বক্তব্য যুক্ত ও ষড়যন্ত্রমূলক এসব পাঠ্যপুস্তক অবিলম্বে বাজেয়াপ্ত করতে হবে। একই সঙ্গে ইসলাম বিরোধী প্রচলিত শিক্ষানীতি বাতিল করতে হবে এবং ৯৮ ভাগ মুসলমানের এদেশের শিক্ষানীতি সম্পূর্ণ ইসলামিক করতে হবে।’
- পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হাবীবুল্লাহ হুযুরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানীকর; কার্টুন প্রদর্শনী, ছবি ছাপানো নিষিদ্ধ করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রণী ভুমিকা পালন করা এবং সংসদে নিন্দা প্রস্তাব পাস করা
- দেশে ২০ লাখ মসজিদে গরু যবেহ করে মীলাদ শরীফ এর মাধ্যমে ১৫ আগস্ট ব্যাপকভাবে পালন করা এবং শোকের মাসে টিভি চ্যানেলে নাচ-গানসহ সব ধরনের বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা এবং ১৫ আগষ্ট মিথ্যা জন্মদিন পালনকারী খালেদা জিয়াকে মুনাফিক হিসেবে ঘোষণা করা
- কুরবানীকে বাধাগ্রস্থ করতে কুরবানীর পশুর হাট রাজধানীর বাইরে নেয়া বন্ধ করা এবং পশুর হাট বৃদ্ধি করা (এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বক্তারা একে হিন্দুদের চক্রান্ত বলেন এবং দাবি করেন,তাই অবিলম্বে হিন্দুত্ববাদী এই চক্রান্ত বন্ধ করে কুরবানীর পশুর হাট রাজধানীর বাইরে নেয়া বন্ধ করতে হবে এবং প্রত্যেক ওয়ার্ডের মাঠে ১টি করে কমপক্ষে ১০০টি পশুর হাট বসানোর ব্যবস্থা করতে হবে।)
- নাস্তিক ব্লগার কর্তৃক বিভিন্ন ব্লগ, ওয়েবসাইট, স্যোসাল মিডিয়ায় কুরুচিপূর্ণ নাস্তিক্যবাদী লেখা বন্ধে ধর্ম অবমাননার জন্য মৃত্যুদণ্ডের আইন প্রণয়ন করা : বক্তারা বলেন, এদেশে প্রগতিশীল, বুদ্ধিজীবী ও মুক্তমনার লেবেলে নাস্তিক্যবাদকে ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে। নাস্তিক্যবাদীরা পেপার-পত্রিকা, বইপত্র, সোস্যাল মিডিয়া, অনলাইন সর্বত্রই প্রকাশ্যে পবিত্র ইসলাম ধর্মের কুৎসা রটনা করছে। আখেরী রসূল হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, হযরত আহলূ বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শান-মানের বিরুদ্ধে বলে যাচ্ছে। যা তসলিমা নাসরিন, সালমান রুশদী, দাউদ হায়দারদেরকেও হার মানিয়েছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা। (নাউযুবিল্লাহ)
- হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব ‘গাদীমাই’ উপলক্ষে গরু, মহিষসহ বিভিন্ন পশু বলি দেয়া বৈধ হলে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব কুরবানী উপলক্ষে পশু কুরবানী নিষিদ্ধ হবে কেন? অবিলম্বে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে কুরবানীর উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে ভারত সরকারকে চাপ প্রয়োগ করতে হবে
- ঈদের ছুটি ১০ দিনে বর্ধিত করতে হবে
- মেয়েদের বিয়ের কোনো বয়স নির্ধারণ করা যাবেনা, সুন্নতি বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে কুফরী আইন বাতিল করতে হবে
- সব ভারতীয় টিভি চ্যানেল ও পর্ণ সাইট অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। বিস্তারিত পড়তে ক্লিক করুন।
এই ওলামালীগ এর কর্মতৎপরতা জানতে হলে এই লেখাটি পড়ে দেখতে পারেন।
কিন্তু এতে করে আওয়ামীলীগ কতোটা লাভবান হবে??? মেজর জেনারেল (অবঃ) আবদুর রশিদ চমৎকার করে ব্যাখ্যা করেছেন এই ভিডিও তে।
সাধারণত হুজুরেরা নিশ্চুপ থাকেন এইসব হত্যাকান্ডে। তবে এই ভিডিওর হুজুরকে ব্যতিক্রম বলতেই হচ্ছে।
সরকার যদি শক্ত হাতে পদক্ষেপ না নেয় তবে সামনে অপেক্ষা করছে কঠিন দিন।
“মরন একদিন হবেই বন্ধু, আজ নয়তো কাল
খোদার লাগি খোদার দুশমনের লইবো তাহার প্রাণ…
নবীর অপমানে কাদে না তোমার মন!
কি তোমার পেহচান?
মরন একদিন হবেই বন্ধু…
লও জালিমের জান…”
বাজারে নতুন লিষ্ট চলে এসেছে। চিঠিটা এসেছে সিলেট থেকে। এদের আখ্যায়িত করা হয়েছে ‘ইসলাম ও মাদ্রাসা শিক্ষার দুশমন, নাস্তিক, সিলেটবিদ্বেষী, সিলেটের কলঙ্ক, স্যাটানিক ব্লগার হিন্দুস্তানি দালাল ও মুসলিম নাম সর্বস্ব মুনাফিক’ হিসেবে।
লিঙ্ক। (লিষ্টির অনেকেই ব্যক্তিগত ভাবে পরিচিত) এছাড়া বরিশাল গণজাগরণ এর ৬ জন কে আন্সারুল্লাহ হুমকি দিয়েছে ফেসবুকে। বলা হয়েছে,“মাশাআল্লাহ, আমরা সফলভাবে বরিশালে কার্যক্রম শুরু করেছি। আমরা এ বিভাগে সফলভাবে কাজ শুরু করেছি। এখানে ইসলামবিরোধী তিনজন কবি এবং তিনজন ব্লগার সংগঠক আছে। তারা ইসলামের শত্রু। আমাদের যা লক্ষ্য তা আমাদের করা উচিৎ।”
যাদের কে হত্যা করা হয়েছে এবং যাদের কে নানা হিটলিষ্টে রাখা হয়েছে তাদের একটা মিল রয়েছে। আর তা হলো তারা সবাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে সোচ্চার।
আর হ্যা ১৫ ই আগষ্ট এ শোক পালন করা নিয়ে হুজুরদের অনেকের অলরেডি চুলকানি শুরু হয়ে গেছে। চুলকানির লিঙ্ক। দেখি সরকার কি করে এখন????
ফুটনোটঃ ব্লগটি লিখতে বিভিন্ন পত্রিকা সাইট, ব্লগ ও ব্যক্তির সাহায্য নেয়া হয়েছে। সময় করে পরে সবার নাম যোগ করে দিবো।
মাথায় কত প্রশ্ন আসে
দিচ্ছে না কেউ জবাব তার
সবাইবলে মিথ্যে বাজে
বকিসনে আর খবরদার
যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান
কথা তো সেখানেই ভাই। প্রশ্ন করা যাবে না। বিনা প্রশ্নে মেনে নিতে হবে। প্রশ্নকারীদের প্রতি বিশ্বাসী দের একটা বড় অংশের মতামত এই রকম,
* আগে জানো মিয়া, জাইনা শুইনা কথা বলো।
* অল্প পানির মাছ লাফায় বেশি।
* খালি কলসি বাজে বেশি।
* জীবনে ব্যর্থরাই ধর্মের পিছনে লাগে।
অর্থাৎ বিষয় টা দাড়াচ্ছে এমন যে ইসলাম কে এরা হিন্দু দের ধর্মগ্রন্থের মতো করে ফেলছে নিজেদের অজান্তে। সরাসরি বলে দিলেই হয়, কুরান পড়ার অধিকার তোমার নেই। আর পড়লে আগে বিশ্বাস করো, তারপর পড়ো। জানি না পৃথিবীর আর কোন কিতাবের ক্ষেত্রে (ধর্মীয় বাদে) এই নিয়ম আছে কিনা....
মাঝে মাঝে জানতে ইচ্ছা করে, ইসলাম জেনে শুনে ধর্মগুরু রা কেনো একমত হতে পারেন না। নাকি তারা কেউ ই ইসলাম সম্পর্কে জানেন না!!! তবে ইসলাম কে জানে????
আমরা ধীরে ধীরে অন্ধকারের গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছি। মুক্তি মনে হয় নেই।
এবং সেই সাথে ভীতির এক জগতে।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
দেশে যাইও না ভুলেও।
ভয় দেখাইয়েন না দাদা।
এমনিতেই দশ বছরের বেশি হয়ে গেলো দেশে যাই না।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
হারিয়ে যাবো বলছো রাজীব? আমি তো ভাবছিলাম হারিয়ে টারিয়ে সব শেষ! 🙁
কুড উই রিগেইন হোয়াট উই হ্যাভ অলরেডি লস্ট শিরোনামে একখানা লেখা এখনই শুরু করে দাও হে, ছোট ভাইয়া।
ভালো বলেছেন আপা।
সবচেয়ে ভয়ানক হচ্ছে আমাদের সমাজের, আমাদের অনেক বন্ধুবান্ধবই ভাবছেন এভাবে হত্যা করা সহীহ।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ