এখানে মূত্রদান করিবেন না

কোন এক কালে আমাদের এক শিক্ষক ছিলেন; পড়াতেন সিভিকস । তো তিনি ক্লাসে এসে প্রায়ই আমজনতার সিভিক সেন্স নিয়ে কথা বলতেন। আমরা যে তার সিভিক সেন্স বিষয়ক লেকচার উপভোগ করতাম না তা নয়। কিন্তু আমাদের জন্য বেদনাদায়ক দৃশ্য ছিলো এই যে লেকচার দিয়ে তিনি ক্লাসের কোণায় থুথু ফেলতেন থু করে।

একটি কৌতুক বলে নিই এই যাত্রা।
*** একজন চাষা আর ভদ্রলোকের তফাৎ কি?
**** একজন চাষা নাকের ময়লা ফোৎ করে ঝেড়ে ফেলে দেয় আর একজন ভদ্রলোক নাকের ময়লা রুমালে করে বাসায় নিয়ে আসে।

নাকের লোম কারো লম্বা লম্বা। আমি নিজে এক টিভির কি একটা এডের পরে বুঝতে পারি নাকের লোম কাটতে হবে। যদিও সে বয়সে নাকের লোম ততটা বেড়ে ওঠেনি। এখনো রাস্তা ঘাটে দেখি কারো নাকের লোম এতোটাই দৃষ্টিগোচর যে গোফ বলে ভ্রম হয়, কানের লোম ও দৃষ্টিকটু ব্যাপার। আরো বিরক্তিকর যখন দেখা যায় কেউ পটাপট নাকের লোম ছিড়ছে।
সিভিক সেন্সের কথা আর না বলি।
তারপরো একটি বিষয়ে না বললেই নয়। আর তা হলো রাস্তার পাশে মূত্রত্যাগ। এবং সত্যি বলতে গেলে আমি নিজেও কখনো কখনো এই কাজটি করেছি। তবে চেষ্টা করেছি যতটা আড়াল করে নেয়া যায়।
এবং ইন্টারেষ্টিং ব্যাপার হলো ঠিক যেখানে লেখা থাকে, এখানে প্রস্রাব করা নিষেধ/ এখানে মুতিবেন না/ এখানে পেচ্ছাব করলে ৫০ টাকা জরিমানা ইত্যাদি সেখানেই বঙ্গ পুরুষ ছরছর করে মুতিবে। একই ভাবে যেখানে লেখা থাকে এখানে ময়লা ফেলা নিষেধ, পাবলিক ঐখানেই ময়লা ফেলিবে।

এমন না যে এই সমস্যা শুধুমাত্র ঢাকার বা বাঙলাদেশের; সুদূর বিলাতে র লন্ডন নগরীতে ও এই সমস্যা প্রকট।  জনসমাগম কম হয় এইরকম লিফটে, আন্ডারপাসে, নির্জন রাস্তায় উৎকট মূত্রের গন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি ফোন বুথেও। এছাড়া ফোন বুথে পতিতালয় গুলোর এড্রেস, ফোন নাম্বার দেয়া থাকে। বাঙলাদেশের সাথে একটাই পার্থক্য এই জে এখানে রাতের বেলা মাতাল রমণীরাও রাস্তায় প্রস্রাব করেন।

বাঙলাদেশে ফেরত যাই।
এইতো কদিন আগেই রাস্তাঘাটে মূত্রত্যাগ ঠেকাতে এক অভিনব পদ্ধতি নেয়া হয়েছে। এবং অত্যন্ত কার্য্যকরী পদ্ধতি। ভিডিওটি দেখুন।

ভিডিও বা পদ্ধতি নিয়ে একটু পরে বলছি।
খুব ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যায়। আমরা খাতার উপরে লিখতাম রাব্বি যিদনি ইলমা/ ৭৮৬। বাস ও ট্রাকের ভিতরে চালকের সামনে লেখা থাকতো “বিসমিল্লাহে মাজরেহা ওয়া মুরছাহা ইন্না রাব্বি লা গাফুরুর রাহিম” বা “লা-ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ-জোয়ালেমিন”।  কোন কোন বাসে আবার এই লেখা বাঙলা ও আরবি দুই ভাষাতেই থাকতো। এরপর বাস-ট্রাকের সামনে বহিরাবরণের দুই পাশে আরবি ভাষায় কিছু লেখা শুরু হলো, খুব সম্ভবত একপাশে আল্লাহু, আরেকপাশে মুহাম্মদ লেখা থাকতো। বারিতে বাড়িতে আরবি নকশা ঝোলানো শুরু হলো, কার, বাস, ট্রাকের আয়নার সাথে আরবি লেখা, আরবি লেখা সম্বলিত ডিস্ক, তসবিহ, আল্লাহর ৯৯ নাম, আয়াতুল কুরসি ইত্যাদি ঝুলতে লাগলো। কোন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি দের বা পুরষ্কার হিসাবে আরবি লেখা সংবলিত ছবির ফ্রেম টাইপ বস্তু উপহার দেয়া শুরু হলো। এসবের বেশিরভাগ সোনালি হরফে লেখা থাকতো, কাবাঘরের দরজার ছবি থাকতো আরবি লেখা সহ। বাসায় ঝুলতে লাগলো মক্কা-মদীনার ছবি।

হঠাৎ করে দেখলাম জাহাঙ্গির গেট সংলগ্ন এলাকায় আরবি ক্যালিগ্রাফি তাইপ মুরাল, স্টাফ রোডের ঐদিকেও একৈরকম কিছু। বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে আরবি লেখা ঝুলতেই পারে। কিন্তু নগর ভবন, রাজউকের সামনে আরবি লেখার মানে বুঝে উঠতে পারি না। আমাদের এয়ারপোর্টটির নাম বাঙলা- ইংরেজির মাঝে আরবি দোলে। সংসদে মাননীয় স্পীকারের পিছনে আরবি দোলে। খোদা হাফেজ হয়ে যায় আল্লাহ হাফেজ।
আমরা ইসলামকে, আরবি কে ভালোবাসতে শুরু করি। বাসায়, হোষ্টেলে দাড়িওয়ালা যুবকের দল শান্তির ধর্ম ইসলামের দাওয়াত নিয়ে আসতে থাকে। সত্য হতে থাকে হুমায়ুন আজাদের আপ্তবাক্য টি,

“এদেশের মুসলমান এক সময় মুসলমান বাঙালি, তারপর বাঙালি মুসলমান, তারপর বাঙালি হয়েছিলো; এখন আবার তারা বাঙালি থেকে বাঙালি মুসলমান, বাঙালি মুসলমান থেকে মুসলমান বাঙালি, এবং মুসলমান বাঙালি থেকে মুসলমান হচ্ছে। পৌত্রের ঔরষে জন্ম নিচ্ছে পিতামহ।” (৬২- প্রবচনগুচ্ছ)

আমরা বেশি করে আলহাম্দুলিল্লাহ, মাশাল্লাহ, সোভানাল্লা বলতে থাকি। শুদ্ধ ভাষায় আস সালামু আলাইকুম বলে সালাম দিতে থাকি। ওয়া লাই কুম আস সালাম বলে সালামের উত্তর দিতে থাকি। আমরা আরেকটি নতুন শব্দগুচ্ছ যাযাকাল্লাহ খয়রান বলতে থাকি। আমরা ধীরে ধীরে খাটি মুসলমান হয়ে উঠতে থাকি। আমাদের প্যান্টের ঝুল কমে যেতে থাকে, প্যান্টের নিচ টাকনুর উপরে উঠতে থাকে। আমাদের মেয়েরা হিজাব পড়তে থাকে। আমাদের অফিস আদালতের টয়লেট, প্রস্রাবখানা মাটির ঢেলা, কংকরে ভরে উঠতে থাকে। ওয়াজে-ওয়াজে, মাজারে-মাজারে দেশ ভরে যেতে থাকে। খোরমা-খেজুর আমাদের সবচেয়ে প্রিয় ফল হতে থাকে।

আমি নিজে আরবি বুঝি না। আরবি বোঝার বিন্দুমাত্র প্রয়োজন বোধ করি না। কিন্তু একসময় আমি যখন কথাপ্রসঙ্গে ভার্সিটির এক সিনিয়র ভাই কে বলি আমি শুধু আরবি আলিফ চিনি তিনি অবাক দৃষ্টি তে আমার দিকে তাকান, করুণা মিশিয়ে বলেন, এই কথা আর কাউকে বলো না।
আমি নিমিষে বুঝে যাই এই বাঙলার ব-দ্বীপে মরুর দেশের আরবি ভাষা না জানা অপরাধ। কিন্তু আমার বোধ বলে আলিফের চেয়ে বেশি আরবি জানার তোমার দরকার নেই। বাঙলা আর ইংরেজি টাই তুমি ভালো করে শেখো।

গতকালকেও খবরে দেখলাম হুমকিতে বাড়িছাড়া ৩ হিন্দু পরিবার । অবশ্য আরো কিছুদিনের মাঝেই অমুসলিম বাঙলাদেশে দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠবে। হয়তো আমরা আমাদের জীবদ্দশাতেই দেখে যাবো আই এস বাঙলাদেশে তাদের শাখা খুলেছে, দেশ শাসন করছে।

আরবিতে লেখা হয়েছে এখানে মুতিবেন না। এবং এতে কাজ হচ্ছে। আর এতে হুজুররা ক্ষেপার বদলে ক্ষেপে গেছেন তারা যারা চান না রাজনীতি তে ধর্ম আসুক। সত্যি বলতে কি আমিও চাই না রাজনীতিতে ধর্ম আসুক। কিন্তু ঐ তুচ্ছ মরুর ভাষা যদি রাস্তাঘাটে ব্যাটা ছেলেদের মূত্রত্যাগ বন্ধ করতে পারে তবে আমি অন্তত এতে লাভ ছাড়া ক্ষতি দেখছি না। এর মধ্যে অনেকে বলছেন তবে হিন্দুদের জন্য সংস্কৃত, বৌদ্ধদের জন্য পালি আর খ্রিষ্টানদের জন্য হিব্রু তে লেখা হোক।

কয়েকটি ফেবু পোষ্ট শেয়ার করছি আপনাদের উদ্দেশ্যে –

*** “হয় স্বীকার করুন যে হিন্দু, খৃষ্টান, বৌদ্ধ ভাইয়েরা মুসলিম ভাইদের চেয়ে অনেক সভ্য (তারা মুত্র ত্যাগ করতে যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে যায় না)
অথবা বলুন যে, যেখানে সেখানে মুত্র ত্যাগ করা একমাত্র মুসলমান ভাইদের জন্যই নিষিদ্ধ হল।
এই দেশটা তো সবার রে” – আর খান

*** “ঢাকা শহরে লোকজনের যত্রতত্র মূত্র বিসর্জনের যেই সমাধান ধর্ম মন্ত্রণালয় বের করেছে তা প্রমাণ করে আমাদের দেশের লোকজন কতটা না বুঝে ধর্ম পালন করে। বাংলার পরিবর্তে আরবীতে লিখা হচ্ছে, “এখানে প্রস্রাব করা নিষেধ।” অথচ দেখা যাচ্ছে অনেকে সেই লিখাটিকে সালাম করছে। এই সমাধান সাময়িক ফলাফল আনলেও তার দীর্ঘমেয়াদী ফলাফল খারাপ। মানুষকে আরো বেশী ধর্মান্ধ করে তুলবে এমন সমাধান। নিজ ভাষায় লিখা না বুঝে শুধুমাত্র পবিত্র কুর-আন শরীফের ভাষায় লিখা হয়েছে বলেই মানুষ মানছে। মানুষ কি আসলে বুঝে মানছে? নাকি আরবীতে কিছু একটা লিখা আছে বলে মানছে? তাহলে এক কাজ করা হোক, সিটি কর্পোরেশন সমূহ প্রতিদিন আর রাস্তা ঝাড়ু দেয়ার দরকার কি? পুরো শহরে আরবীতে কিছু চিকা মারার ব্যবস্থা করা হোক, কেউ আর তা নোংরা করবে না।

সমাধান হতে পারতো অন্যভাবে। সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি মানুষকে শিক্ষিত করে তোলা। দুঃখিত অনেকেই এই সমাধানের প্রশংসা করলেও আমি পারলাম না।” – এস আর এম

*** “রাস্তাঘাটে মূত্রত্যাগ বন্ধে ধর্ম টেনে আনার যে মানসিকতা সেটা রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহারকে খুব ভালোভাবে ব্যখ্যা করে। সেই দিন আর দূরে নাই যেদিন জায়গায় জায়গায় পোস্টার দেখা যাবে, “কর দিন, বেহেশতের টিকেট কাটুন”, “ছেলেমেয়েদের আরবি নাম রাখুন, তাদের ইসলামের পথে রাখুন” ইত্যাদি ইত্যাদি। বাংলা মুছে আরবি হরফ লেখার ভিডিও দেখে বাঙালির আহ্লাদে আটখানা হওয়ায় মাথা কুটতে ইচ্ছা করছে।” – আর চৌধুরী

উপরের প্রতিটি মতের সাথে সহমত হয়েও মূত্রত্যাগ বন্ধ করার জন্য আরবি লেখাকে স্বাগত জানাচ্ছি।
কয়েকটি কারণ বলছি।

* আমরা যারা রাজনীতির সাথে ধর্ম মেলাতে ইচ্ছুক নই তাদের পক্ষে এই আরবি ভাষার ব্যাপারটি মেনে নেয়া বেশ দুষ্কর। কিন্তু তারপরো বলুন তো রাজনীতি আর ধর্ম এই দুইটা বস্তু কি আমরা শত চেষ্টা করেও আলাদা করতে পারবো?
স্পষ্ট করে বলতেই হয়, না সম্ভব নয়।

* অবশ্যই ধর্ম মন্ত্রনালয়ের বুদ্ধিটি আমাদের ধর্মান্ধতার পরিচয়। কিন্তু আমাদের ধর্মান্ধতা এ যাবৎ কাল আমাদের ভুল পথে উগ্রতার পথে, বিধর্মীদের ঘৃণা করার পথে নিয়ে গেছে। আজ কে যদি সেই ধর্মান্ধতার জন্য আমরা একটা খারাপ, দৃষ্টিকটু কাজ করা থেকে বিরত হই তবে সমস্যা কোথায়!

* অবশ্য কেউ বলতেই পারেন এক্ষেত্রে আমরা আরো বেশি ধর্মাশ্রয়ী হয়ে পড়ছি। আবার একই সাথে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান দের ক্ষেত্রে কি হবে?
এখানে সহজ করে বা মোটা দাগে বলা যায়, যেহেতু বাঙলাদেশে মুসলিম জনসংখা বেশি তাই বলা যায় রাস্তায় প্রস্রাব করা জনতার বেশিরভাগ ই মুসলমান। এখন লেখা হয়েছে আরবি তে। আর আরবি ভাষায় অজ্ঞ বেশিরভাগ মুসলমানরা ধরে নিচ্ছে এটা কোরানের আয়াত বা হাদিস। যদি তা নাও হয় অনেকেই শুধুমাত্র আরবি ভাষা হবার কারণে ঐ লেখাকে সম্মান করছে। এখন কথা হচ্ছে ওটা যে আরবি ভাষা তা কিন্তু বাঙলাদেশের প্রায় সবাই জানে, তা সে যে ধর্মেরই লোক হোক না ক্যানো। সংখালঘুরা জানেন ঐটা আরবি ভাষা তাই তারাও ওখানে প্রস্রাব করবেন না। কেউ তো আর জলে নেমে কুমিরের সাথে ঝগড়া করে না। কি খারাপ লাগলো শুনতে…. উপরে কিন্তু দিয়েই দিয়েছি হুমকিতে ৩ হিন্দু পরিবার ঘরছাড়া।

* কিন্তু আজ না কাল তো পাবলিক জানবেই যে আরবিতে ওখানে লেখা, এইখানে মূত্রত্যাগ করা নিষেধ। তখন কি আবার ঐখানে পাবলিক মূত্রত্যাগ করা শুরু করবে না!!!
এইটাকেই আসলে আমি সবচেয়ে পজিটিভ দিক হিসাবে দেখছি। কেউ কিন্তু বলেনি ঐখানে আরবি তে কোন কোরান বা হাদিসের আয়াত লেখা। বরং নিচে সুন্দর করে লেখা কতদূরে পাবলিক টয়লেট বা কতদূরে মসজিদ। এখানে মুতিবেন না - এ এফ পি  আর যখন পাবলিক জানবে এটা আরবি আয়াত নয় তখন কি হবে?
১। আরবি ভাষায় যে কোরান-হাদিস ছাড়া অন্য জিনিস ও আছে তা পাবলিক বুঝবে। এখানে উল্লেখ করতে চাই সহস্র এক আরব্য রজনীর কথা আমার পড়া এ যাবৎ কালের সবচাইতে যৌন উত্তেজক পুস্তকের একটি। এমনকি আরবি কবিতা র অনেক বিখ্যাত কবিতাই যৌনতায় পরিপূর্ণ। আর তাই আরবি ভাষা যে মাহাত্ম্য নিয়ে আনারব বাঙালিদের কাছে বিরাজমান তার অবসান হবে।
০২। না, আবার ঐ একই জায়গায় কি মূত্রত্যাগ শুরু হবে না। কারণ কিছু লোক তখনো বিশ্বাস করবে যেহেতু ওটা আরবি ভাষা আর ঐ ভাষাতেই কোরান নাজিল হয়েছে তাই ওটা পবিত্র ভাষা, আর আল্লাহ ও নাকি ঐ ভাষাতেই কথা বলেন।

* কেউ একজন মসজিদে জুতা চুরির কথা বলছিলেন। মসজিদে তো জুতা চুরি করে জুতা চোরেরা। আর সেটা হবেই। যেখানে লোকসমাগম বেশি সেখানে এইসব জুতা, ছাতা চুরি হবেই। রবি ঠাকুরের বাড়িতে সাহিত্যের আসর বসতো। একদিন শরৎ বাবুর জুতা হারিয়ে/চুরি হলে পরেরদিন সেখানে তিনি কাগজ দিয়ে পেচিয়ে জুতা বগলে নিয়েই প্রবেশ করেন। এই নিয়ে রবিঠাকুরের সাথে বেশ একতা রসিকতাও হয়ে যায় শরৎ বাবুর। তাই ঠাকুরবাড়িতে জুতা চুরি হলে মসজিদ দোষ করলো কি!!!

* পরিশেষে ধর্ম যে একটা ভালো কাজে লাগছে এতে আমি যারপরনাই আনন্দিত। কারণ ধর্ম তো কাটাকুটি ছাড়া আর কোন কাজেই লাগছে না।

একইসাথে পাবলিক টয়লেট বাদে মসজিদেও মহিলাদের বাথরুমের ব্যবস্থা থাকলে বা করা গেলে ভালো হয়। ভিডিওতে শুনলাম ঢাকা শহরে নাকি ১০,০০০ এর বেশি মসজিদ। আর তলপেট নারী-পুরুষ সবার রয়েছে, আর চাপটাও দুজনেরই সমান ই হয়ে থাকে।

১০ টি মন্তব্য : “এখানে মূত্রদান করিবেন না”

    • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

      দাদা আমি যাদের সাথে সাধারণত বিভিন্ন ব্যাপারে সহমত পোষণ করি তাদের কেউই এই বিষয়টিকে পজটিভলি নেয় নাই।
      আমিও এক হিসাবে না।
      কিন্তু আমার মনে হয় না এর কোন নেভেটিভ ইফেক্ট আসবে।
      উপরে তাই বলার চেষ্টা করেছি।


      এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

      জবাব দিন
      • নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

        রাজীব,
        আমার মতে এটা মানুষের 'বিশ্বাস' নিয়ে প্রতারণা। মানুষ অশিক্ষিত, অল্পশিক্ষিত হতে পারে কিন্তু তার সম্মানবোধ নিয়ে টানাহেঁচড়া করলে ফুঁসে উঠবে। আমি পুরো প্রক্রিয়ার মধ্যে অসম্মান দেখতে পাচ্ছি -- শর্টকাট দেখতে পাচ্ছি। সেটাই ভালো ঠেকছেনা। আমি তোমাকে কোন ভালো কিছুর জন্যেও যদি মিথ্যা কথা বলে বা প্রলুব্ধ করে ডেকে আনি তুমি জিজ্ঞেস করবে মিথ্যা কথার কি দরকার ছিল এমনিতেই তো আসতাম। যদিও আমি মনে করছিলাম তোমাকে একমাত্র ওভাবেই আনা যেতো। প্রশ্নটা নৈতিকতার। End cannot justify the mean.

        জবাব দিন
        • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

          আপনার সাথে সহমত।
          কিন্তু প্রতারণা টা করে কিন্তু কারো গাট কাটা হচ্ছে না, কারো বাড়িতে আগুন দেয়া হচ্ছে না।
          তাও প্রতারণাটা কি রকম!
          জাষ্ট ভিন্ন বা সাও কলড পবিত্র ভাষা য় লেখা হচ্ছে এখানে প্রস্রাব করিবেন না।

          আমি নিজে আরবি তে আলিফ চিনি, আমার মনে হয় না আলিফের চাইতে বেশি কিছু আমার জানার দরকার আছে। ধরে নিচ্ছি আপনিও জানেন।না।
          এই যে আমি আরবি জানি না। আর আমার এই অজ্ঞতার কারণে আমি রাস্তায় প্রস্রাব করতে পারছি না এতে কিন্তু আমি আহত হচ্ছি না।

          রাস্তায় প্রস্রাব করাটাই তো অনৈতিক। কিন্তু ভালো কথা বলে, সুন্দর কথা বলে কি এটা বন্ধ করা যাবে?
          আমার মনে হয় না।

          আমি বলতে চাই এক্ষেত্রে কৌশলের আশ্রয় নেয়া হয়েছে।
          এবং কৌশলটি কার্য্যকর।


          এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

          জবাব দিন
  1. লুৎফুল (৭৮-৮৪)

    ধর্ম হচ্ছে বিশ্বাস। আস্তিকের জন্য যার যে ধর্ম তা, নাস্তিকের জন্য নাঈশ্বরবাদ। তবে এতোটা সহজ ব্যাখ্যায় আমরা প্রজারা কিংবা রাজারা কেউই তাকে রাখিনি।
    প্রজার বিপদের শেষ আশ্রয় ধর্ম। মনের লাগাম টানবার পূর্ণ সমর্পনের মন্ত্র ধর্ম। মূর্খের সকল ভরসার কেন্দ্রবিন্দু ধর্ম। যার অসুখ সারায় ধর্ম, ফসল বাড়ায় ধর্ম।
    আর রাজারা তো বরাবরই ধর্মকে ব্যবহার করে এসেছে শোষণের মোক্কগম হাতিয়ার হিসেবে। ধর্মীয় নির্দেশনা আর বিধি-নিষেধ শোষকের ফায়দার নোটেশনে লিখেছে ধর্মের গান।
    সেই বৃত্তের দেয়াল আমরা কি সেভাবে ভাংতে পেরেছি ! যারা পর্যাপ্ত জ্ঞান ধারন করে তারা ধর্মের বিষয়ে নীরব কিন্তু স্বার্থান্বেষীরা তাদের মর্জি মাফিক দিয়ে যাচ্ছে ধর্মের ব্যাখ্যা। এটুকু সবাই জানি কিন্তু এর পেছনের কারনটুকু আবিষ্কারে আমরা আসলে কি কিছুটাও উতসাহী উদগ্রীব! মনে হয় না।
    ধর্ম তাই সৃষ্টির আদি থেকে সংকটগ্রস্তের সমর্পণ সংক্রান্তি হবার পাশাপাশি শাসক ও সুবিধাবাদীর মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে কাজে দিচ্ছে বেশী বেশী।
    সেখানে পরিবর্তন আনার পথটা বোধ করি আমরা এখনো আবিষ্কার করে উঠতে পারিনি। আজ তাই শিক্ষিত মানুষরাও বলে ওঠে, ইসলাম ধর্মে তিনিটি ক্ষেত্রে খুন জায়েজ করা হয়েছে।
    কথা হলো কবে কখন কোন প্রেক্ষাপটে একটি খুনের ঘটনা ঘটেছিলো তার উপর ভিত্তি করে এইসব জ্ঞান যদি বিতরিত হয় অবারিত... তবে এমন উটের পিঠে চড়বেই তো আমার দেশ ও সমাজ।

    জবাব দিন
    • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

      লুৎফুল ভাই কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ। আর সত্যি বলতে কি বেশ কিছু দিক আপনি তুলে ধরেছেন।

      আমি সিউর না বাট আপনি কি নাস্তিকতা বা নিধার্মিকতা কে ও এক ধরণের বিশ্বাস বলতে চাচ্ছেন//// আমার মনে হয় না নাস্তিকতাও এক ধরণের বিশ্বাস। কারণ নাস্তিকতা হচ্ছে বিশ্বাসের উল্টোটা, মানে অবিশ্বাস। অবিশ্বাস কে যে নামেই ডাকা হোক কোন ভাবেই কোন এক ধরণের বিশ্বাস বলা যাবে না।

      আর ধর্ম কে তো ইউজ করবেই যারা শাসন করে তারা। এইটাই তো সহজ। এই যে রাস্তায় প্রস্রাব করা বন্ধ করার ব্যাপারটাই ধরেন।

      আর উদ্ভট উটের উপর চলছে স্বদেশ কবিতাটি কিন্তু শামসুর রাহমান উটের মূত্র খাচ্ছে পাবলিক এটা দেখেই লিখেছিলেন। বুঝতেই পারছেন বাঙালি উটের পিছে পিছে যাচ্ছিলো আর উটের মূত্র খাচ্ছিলো কারণ উট নবীর দেশের বলেই। তাছাড়া কিছু হাদিস ও আছে এই ব্যাপারে।

      আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত কিছু লোকের মদীনার আবহাওয়া প্রতিকুল মনে হচ্ছিল। রাসুল তাদেরকে উটের রাখালের সাথে বাস করতে এবং উটের দুধ ও পেশাব খেতে। তারা রাখালের সাথে থাকতে লাগল এবং কিছুদিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠল। এরপর তারা রাখালকে মেরে তার উট নিয়ে পালাতে লাগল। খবর পেয়ে রাসুল তাদেরকে ধরে আনতে বললেন। তাদেরকে রাসুলের সামনে উপস্থাপন করার পর তিনি তাদের হাত পা কেটে এবং চোখে সুচ ফুটিয়ে হত্যা করার আদেশ দিলেন। এটা কিসাসের বিধানের আগের ঘটনা। - বুখারি ২৩৩। লিঙ্ক (সম্পাদিত)


      এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।