সিসিবি জমজমাট। এইতো চাই। গতকাল দুই ছোটভাই বলল লেখা দিতে। সিসিবিতে লেখার জন্য সবসময় দুপায়ে খাড়া। অনেক লেখা পড়েও আছে এক আনা, দুই আনা, চার আনা, বারো আনা হয়ে। সেগুলোর একটাই এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই কাজের কাজ ছিলো। অথচ লিখতে বসলাম নতুন একটা ব্লগ। দেখা যাক কতদূর কনটিনিউ করতে পারি নাকি একেও গলা টিপে মেরে ফেলতে হয় আঁতুড়ঘরেই; শুনেছি অনাকাঙ্খিত বাচ্চা জন্মালে নাকি মুখে লবণ দিয়ে দেয় যাতে অটো মারা যায়। কি একটু বেশি খারাপ কথা বলে ফেললাম! বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির জন্মের কথা ভাবছিলাম। একি তবে নষ্টজন্ম??? দেশ থাকুক; দেশের মানুষ চাইলে দেশ থাকবে, আর নয়তো বঙ্গোপসাগরে ডুবে যাবে। আটলান্টিসের মতো বঙ্গের নামেও হরেক রকম কথকথা চালু হবে।
সেই ছোটবেলা থেকে আমি স্বপ্ন দেখার কাঙাল। হ্যা ঘুমাইয়া মানুষ যে স্বপ্ন দ্যাখে তার কথাই বলছি। তখনো সিগমুন্ড ফ্রয়েড, বা প্রফেসর জাঙ্এর নাম শুনি নাই। ধীরে ধীরে জানতে পারি স্বপ্নের ও ব্যাখ্যা তাবির আছে। বাঙলা সাহিত্যে হুমায়ুন আহমেদ স্বপ্ন নিয়ে সাহিত্যিক হিসাবে বেশ কাজ করেছেন। এরই ফাকে ইউসুফ নবীর সেই বিখ্যাত চারটা স্বপ্নের কাহিনী পড়ি। প্রেম বা যেকোন হিসাবেই ইউসুফ নবীর কাহিনী এপিক। সেই ছোটবেলা থেকে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে ওয়ায শুনতাম আর কাহিনী পড়তাম। তাছাড়া নবী রাসূলদের স্বপ্ন সাধারণ স্বপ্ন না। অনেকসময় ওহী পর্যন্ত আসে। এছাড়াও অনেকেই পূণ্যবান ও দুষ্ট লোক ও স্বপ্নে ভবিষ্যত দ্যাখতে পান। অনেকে বিব্রত হতে পারে বাট আমিও কিছু একটা দেখি। এটা সেই ছোটবেলা থেকে। পাবলিক হয়তো ভাবতেছে আমি ফাইজলামি করতেছি কিন্তু ঘটনা সত্য। আমি যে স্বপ্নের আকারেই দেখি তা নয় বরং অনেক সময় গভীর ভাবনা, হতে পারে খুবই নগণ্য ভবিষ্যতে দেখি চোখের সামনে ঘটতে। যাকে কিনা বলে দেজা ভু। ডেনজেল ওয়াশিংটনের বিখ্যাত ছবিটা অনেকেই দেখেছে আশা করি। তাছাড়া বাংলাদেশে স্বপ্নে ঔষুধ পাবার রীতি আছে।
আমার মা এই জাতীয় যাবতীয় ঝাড়ফুক, তুকতাকে অসম্ভব বিশ্বাস করেন। জীনওয়ালা অনেকের সাথেই আম্মার জানাশোনা ছিলো। আমিও দুই জীনওয়ালার কাছে গেছিলাম। জীনওয়ালার দেয়া তাবিজ, ইন্দ্রনীলা ধারণ করছি। একসময় কিরো নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা গবেষণা করতাম। আমার হাতে বেশ কিছু রেখা (মূল রেখা) আছে যা অন্য কারো হাতে নেই। ওয়ান ইন এ মিলিয়ন বলতে যা বোঝায়। সাধারণত আমার স্বপ্ন গুলো লম্বা হয়, কখনো সখনো সিরিজ আকারে চলে। ধরা যাক, কোন কারণে ঘুম ভেঙ্গে গেলো, টয়লেটে যেতে হলো বা পানি খেলাম; শুয়ে পড়ার পর স্বপ্নের বাকি অংশ আমি অনায়াসে দেখতে পারি। আজকে সকালেও সেইরকম স্বপ্ন দেখছিলাম। কয়েক দফা ঘুম ভেঙ্গে গেলেও স্বপ্নের ট্র্যাকে গাড়ি তুলতে পারছিলাম। এক্সিডেন্ট, রেসিং, উপর থেকে পতন অনেক কিছুই ঘটছিলো। এমনকি আমি মারা যাই স্বপ্নে বেশ কয়েকবার। প্রতিবারই এক —— দক্ষতায় জীবিত হয়ে উঠছিলাম। জীবিত হবার ব্যাপারে আমার স্ত্রী আমাকে সাহায্য করছিলো। মারা যাবার পূর্ব মুহুর্তে স্ত্রীকে যেই বলছিলাম, মারা যাচ্ছি, তখনি সে আমার (পূর্বে বাতলে দেয়া) ওয়েতে আমার জীবন ফিরিয়ে আনছিলো। কিন্তু শ্যাষবার আর রক্ষা হলো না। ।
আমার বড় মেয়ের তখন প্রথম ওটসিটস
এর প্যাকেট শেষ, ২য়টা দেবার জন্য ডাকাডাকি শুরু করেছে। ছোট্মেয়ে আমাকে খোচানো শুরু করেছে মিকি মাউস কার্টুন দ্যাখবে বলে।
ঘুম ঘুম গলায় ওদের মাকে বললাম, ওদের দ্যাখতে পারো না! আমি তো মরে যাচ্ছি এইদিকে, বাচানোর কেউ নেই। যেই তারা তিনজন বুঝলো ঘটনা স্বপ্নে ছোট মেয়ে প্রথম খিল খিল করে হাসা শুরু করলো, সঙ্গী হলো বড়জন, শেষে তাদের মা। আমি হাড়ে হাড়ে টের পেলাম ক্যানো সাধুরা জঙ্গলে জঙ্গলে থাকতেন। হায়রে দুনিয়া, তুই তো পরের কথা, আমার বউ মেয়েরাই আমার কদর করলো না। যদি কোনদিন আবার বিবাহ করার সুযোগ পাই জীবনে অবশ্যই মজিদ যেরকম রহীমাকে বিবাহ করেছিলো আমি সেরকম কিছু একটা করবো। খেয়াল যদি থাকে পাঠক তবে মনে করুন আরেকবার লালসালুর কথা। মজিদ যা অর্জন করেছিলো তার পিছনে ছিলো তার বুদ্ধি আর ১ম বউ রহীমার আনুগত্য। একটু অন্য লাইনে যাই। আমার চৌদ্দ গুষ্টির মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের, বিপক্ষের সব লোকজনই আছে। সেই হিসাবে বেছে নেবার একটা ব্যাপার ছিলোই। জন্ম আমার ৭৮ এ। জিয়ার ব্যাপার স্যাপার মাথায় ঢোকার আগেই জিয়া শ্যাষ। জিয়া নাকি আমার আদর করে দিয়েছিলেন একবার। ছোটবেলায় আমার দাঁত বেশ বড় আর ফাকাফাকা ছিলো; বলা হতো জিয়াউর রহমানের কোদাল- খাল কাটার কোদাল। আমার ছোটভাই নাকি সানগ্লাস পড়ে অভিনয় করতো, “আমি বিচারপতি আব্দুস সাত্তার বলছি।”
হ্যা এরশাদকে খুব ভালো খেয়াল আছে। টিভিতে এরশাদকে মহামানব মনে হতো। তার হাসি, চেহারা, কথাবার্তা, চালচলন সবকিছুই রাজকীয় মনে হতো। এরশাদের কোন ভুল, কোন ব্যাত্যয় চোখে পড়তো না। তবে ধর্মমন্ত্রী মান্নানকে একটা ভাড় মনে হতো। টিভির পর্দা জুড়ে সে ভাড়ের মতো লাফিয়ে বেড়াতো, খুব আনন্দ লাগতো। একমাত্র গৃহপালিত/ পশুসম্পদ মন্ত্রী বাদে এরশাদের প্রায় সকল মন্ত্রীই বেশ স্মার্ট ছিলো। টপ স্মার্ট ছিলো ফরেন মিনিষ্টার (আনিসুল ইসলাম মাহমুদ কি নামছিলো তার? তবে এক্স ক্যাডেট এফসিসির) এরশাদ অনেক কিছুই ইসলামীকরণ করেছেন সত্য কিন্তু তার বেশিরভাগই ছিলো লোক দেখানো। দেশ চালাতে গেলে এর প্রয়োজন আছে বলে মত দিয়েছেন সেই মহাভারতের ভীষ্ম পর্যন্ত। এরশাদের নামটাও বেশ সুন্দর ছিলো, পোষ্টারের এপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত চলে যেতো তার পুরা নাম। সরকারী লিফলেটে, ম্যাগাজিনে এরশাদকে দেবদূত মনে হতো। দেশের বাইরে অতিথি হয়ে গেলে তাকেদেয়া হতো রাজকীয় সম্মান। বাংলাদেশেও অঢেল পরিমাণে বিদেশী অতিথি আসতেন। এর মাঝে হাফেজ্জী হুজুরের সাথে ইলেকশন চলে আসলো, কি কারণে জানি না আমরা বালক বালিকারা প্রায় সবাই হাফেজ্জী হুজুরকে পছন্দ করা শুরু করলাম। একমাত্র আমার ছোটভাই সে নির্বাচনে এরশাদকে সাপোর্ট করে।
বড় হয়ে জানলাম হাফেজ্জী হুজুর দুই নাম্বার পাবলিক ছিলেন। পাকি দালাল।
লেখা বাড়াতে ইচ্ছা করছে না। প্রিয় লেখক খুশবন্ত সিং এর লেখা দিয়ে শেষ করি।
১ম B-)
হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি
:teacup:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
রাজীব ভাই, আপনার লেখা পড়লে চিপস,মরন, মিকি মাউস, ধর্ম, এরশাদ সব কিছুর ফ্লেভার একসাথে পাওয়া যায়। প্রচুর ডালপালায় ঘুরেন আর পিছে পিছে সবাইরে ঘুরান। 😀
লেখা ভাল্লাগছে 🙂
হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি
:awesome:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
:dreamy: :dreamy: :gulli2:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
😀
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
ভালো লিখেছো রাজীব। :thumbup:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
ধন্যবাদ সানা ভাই।
আমার পোষ্ট যদি ১০ জন পড়ে তাইলে কমেন্ট পড়ে ১ টা।
পাঠকসঙ্খা এখন আর দেখা যায় না বইলা ঠিক বুঝতেও পারি না কয়জন পড়লো!
আপনার কমেন্টে ভরসা পাইলাম।
🙂
বিশিষ্ট ইসলামবিদ লেজেহুমো এরশাদের সময়ও বাংলাদেশের এতো খারাপ অবস্থা ছিলো না। এখন নবীদের নামের আগে হযরত আর শেষে সাঃ বা আঃ না দিলে জবাবদিহি করতে করতে জান ছুইটা যায়।
দিনে দিনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে ইসলামী প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এ পরিণত হইতেছি আমরা।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
:hatsoff: :hatsoff:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
:teacup:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
ভাল লিখসেন এটা রাজিব ভাই। আপনার বেশির ভাগ লেখাই পড়ি। সবটায় কমেন্ট করা হয় না।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
শুইনা ভালো লাগলো। 😀
চা খা। :teacup:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
বাবা রাজিব এতকিছুর পরেও ইসলাম রক্ষা করার জন্য এইদেশে "হেফাজতে ইসলাম" দরকার পরে । উনারা না থাকলে না জানি কি অবস্থাটাই না হইত !?!
একটাই তো জীবন , তাই জীবন যেখানে যেমন -- Life is Beautiful .
জামাত-বিএনপির চাইতে হেফাযত ভালো খেলতেছে।
ইসলামের কোন ক্ষতি তারা হতে দেবে না মামুন।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
চমৎকার লেখা ।
:teacup: খান রহীম
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ