গতকাল এক বাসায় গিয়েছিলাম বেড়াতে। ঠিক বেড়াতে যাওয়া নয়। রোগী দেখতে। বেচারা বাংলাদেশে গিয়েছিল বেড়াতে। কোথায় কি খেয়েছে খোদা মালুম, salmonella বাধিয়ে ফেরত এসেছে।
বাংলাদেশের সাথে যোগসূত্র এখন বাবা, মা, আত্মীয়স্বজন, এবং বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে ফোনালাপ। সময় পেলে টিভি দেখি এন টিভি (ফালুর টেলিভিশন তো সব কথা ঠিক বিশ্বাস করে উঠতে পারিনা), এ টি এন (সারাক্ষণ ডক মিয়ার; মালিক বা তার গুণবতী স্ত্রীর গাআআন আর তৃতীয় শ্রেণীর নাটক), চ্যানেল আই (এদের অনুষ্ঠান ৩ ভাগে বিভক্ত; তৃতীয় মাত্রা, কৃষিবার্তা, সাগর মিয়ার বোনের আগুন ছাড়া রান্না করার অভাবনীয় প্রতিভা; আগে আরেকজন ছিলেন ব্রাউনিয়া যিনি কিনা খবরপাঠ থেকে শুরু করে সব, সবধরনের উপস্থাপনা, এমনকি গান করতেন, মনে হয় এখন বিজি আছেন)। এর কথা লিখতে গিয়ে আরেকজনের কথা মনে পরল, আমাদের অনেকের প্রিয় তৃষা। ফারুকির পুরা গোষ্ঠী যে কি পাইছে আল্লাহ্ জানে; এরা শিশু থেকে শুরু করে তরুণী, যুবতি, প্রৌড়, বৃদ্ধা সব চরিত্রেই পারলে তৃষাকে দিয়ে অভিনয় করায়। মাসাল্লাহ নজর বটে!!!
এখানকার একটা চ্যানেল আছে; চ্যানেল এস (এদের একমাত্র খবরটাই ভালো; অন্য সবার তাও ভালো না)।
যাই হোক গতকাল শুনলাম ১২ না কয়জন বাউলের চুল দাঁড়ি কেটে দেওয়া হইছে; শুনলাম ঘটনা ঘটছে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সন্ত্রাসী/ নেতাদের মাধ্যমে। খুব খুব মর্মাহত হইলাম। এইটা কি ধরণের ঘটনা!!! আওয়ামী লিগারদের বিরুদ্ধে বলা উদ্দেশ্য নয়। বড়ই দুঃখে আছি।
৯০ এ যখন লে জে হোমো এরশাদ লেজ গুটাইয়া পালাইল আমরা ভাইবা নিছিলাম দেশ বাঁচল আমরা দেশবাসীও বাঁচলাম; কিন্তু একি এরা দেখি গত ২১ বছর ধইরা দেশরে ভাইজা, পুইরা, গ্রিল কইরা, বেক কইরা, এমনকি কাঁচা চিবাইয়া খাইল।
আমরা অনেকে বলি ৭২ থেকে ৭৫ আওয়ামী লীগের তথা বাকশালের শাসন বা কুশাসন, ৭৪ এর দুর্ভিক্ষ।
শেখ মুজিব পাহাড়িদের বললেন,
“তোরা বাঙালি হইয়া যা।”
সিরাজ সিকদারের মৃত্যুর (বরিশালের এস পি মাহবুবের হেফাজতে ছিলেন যখন মারা যান)পর সংসদে দাঁড়িয়ে বললেন,
“এখন সিরাজ সিকদার কই।”
(সিরাজ সিকদারের বোন ভাস্কর শামিম সিকদার তো ঘোর আওয়ামী সাপোর্টার; শেখ মুজিবের ভাস্কর্য পর্যন্ত গড়েছেন; সলিমুল্লাহ হলের পাশে ফুলার রোদে ঢোকার মুখে অনবদ্য ভাষ্কর্য)
আমার মুক্তিযোদ্ধা মামা যিনি কর্নেল তাহেরের আন্ডারে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, ঢাকা ক্যান্টে বন্দি ছিলেন, তিনি উল্লাস করে উঠেছিলেন মুজিবের মৃত্যুর সংবাদ রেডিওতে শোনার পর। এই কথাটা বলার উদ্দেশ্য একটাই আমাদের জাতির জনক, যিনি কিনা আপামর বাঙ্গালির মুক্তিদাতা; যিনি কিনা হাজার বছরের পরাধীন বাঙালিকে প্রথম মুক্তি এবং স্বাধীনতার চরম স্বাদ এনে দিয়েছিলেন, যার নামে বাংলার লক্ষ, কোটি মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে, যুদ্ধে তিনি কি করে এমন জনবিচ্ছন্ন হয়ে পরলেন?????
রফিক আজাদ বলেছিলেন,
“ভাত দে হারামজাদা তা না হলে মানচিত্র খাবো।”
শেখ মুজিব নিজে বলেছেন,
” আমার কম্বল গেলো কই?”
চোরের খনি নিয়েও শেখ মুজিবের এক বিখ্যাত dialogue আছে।
মুজিবের দেশপ্রেম, সাহস, ইত্যাদি গুন নিয়ে আমার কোনও সন্দেহ নেই; যেমন সন্দেহ নেই ৪ নেতা বিষয়ে। আমি বিশ্বাস করতে পারিনা আর কাউকে।
অনেকে জানেন কিনা; তাজউদ্দীন কে মন্ত্রীসভা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিলো। তাই কুচক্রী মোস্তাক ধরেই নিয়েছিল তাজউদ্দীনের সহায়তা তিনি পাবেন। কিন্তু মহান এই নেতা মৃত্যুকেই শ্রেয় মনে করেছিলেন।
উল্লেখ্য রাজনীতিতে মোস্তাক মুজিবের চাইতে সিনিওর ছিলেন; কিভাবে তার পতন ঘটল জানতে চাইলে ৫৪ সালের নির্বাচন দ্রষ্টব্য।
এই মোস্তাকের আত্মীয় ছিলো খুনি ফারুক, রশিদ।
১৫ই আগস্ট নিয়ে অনেক জল্পনা কল্পনা রয়েছে; কিন্তু একটা ব্যাপার আমরা জানি যে একমাত্র কর্নেল জামিল ছাড়া আর কেউ এগিয়ে আসেন নি। বিগ্রেডিয়ার খালেদ মশাররফ সেনানিবাসের মীটিঙে শুধু আস্ফালন করছেন কিন্তু কাজের বেলায় লবডঙ্কা। শফিউল্লাহ কেঁদে বুক ভাসিয়েছেন; জিয়া ছিলেন অবিচল। কিন্তু কেউই কোনও পদক্ষেপ নেননি।
এমনকি মুজিবের নিহত হওয়ার সংবাদ যখন সেনানিবাস সদর দপ্তরে আসলো তখন তো জিয়া বলেই ফেললেন, (probably over phone), “ভাইস প্রেসিডেন্ট ইস দেয়ার।” এবং সদর দপ্তরে জিয়া যখন আসেন তখন ছিলেন প্রপারলি ড্রেসড।
মুজিব যেন শুধুই দেশের প্রেসিডেন্ট। বাংলাদেশ নামে স্বাধীন একটি দেশ না হলে যে এই মেজরেরা মেজরই থেকে যেতেন তা আর কেউ না জানলেও আমরা দেশবাসি জানি। হয়তো জিয়া অনেকদুর যেতে পারতেন কেননা তিনিই একমাত্র বাঙালি সেনা অফিসার যিনি কিনা পাকিস্থানি সেনা বাহিনীর দ্বিতীয় সর্বচ্চ পদক পান।
প্রথম পর্ব শেষ।
পরিশেষঃ আমি রবীন্দ্রনাথ কে কবিগুরু বা বিশ্বকবি বলি না, নজরুলকে বিদ্রোহী কবি বলি না, মুজিবকে বঙ্গবন্ধু বলিনা, জিয়াকে শহীদ জিয়া বলি না। তাই এই ব্যাপারে কার আপত্তি থাকলে দুঃখিত হওয়া ছাড়া কিছুই করতে পারছি না।
সুন্দর হয়েছে :clap: :clap: :clap:
ধন্যবাদ।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
ভালো লেগেছে । স্পষ্ট ঝাঁঝ টের পেলাম।
ধন্যবাদ।
কি করব বল?
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
মূল সুরটা ধরতে পারলাম না। মুজিব না জিয়ে কে যে খারাপ, কে যে ভাল কে জানে। তাই এই বিষয় নিয়া ক্যাচাল দেখলেই মেজাজ খারাপ লাগে। দুই দল আছে দুই নেতার কবর নিয়া রাজনীতিতে ব্যাস্ত।
মরতুজা অপেক্ষা কর।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
ভাইয়া নামটা বাংলা করে দিয়েন প্লিজ
কেনরে কি সমস্যা?
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
সমস্যা কিছু নয় রাজিব, এটা হল নিয়ম। বাংলা ব্লগ, বাংলায় লেখা, নামটাও বাংলা। সবাইকেই আমরা তাই বলি নিজের নামটাও বাংলায় করে ফেলতে। অন্য কিছু নয়।
তুমিও করে ফেল। 🙂
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
এই পর্বে বক্তব্য ক্লিয়ার না। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
ভাইয়া আপনার নামটা কি বাংলায় করে দেয়া যায়??
২য় পর্ব কবে?
অনেক কিছু টাচ করলেন ভাইয়া । কিন্তু কোনটাই ঠিকমতো শুরু বে শেষ হলোনা । আপনার মতো ভাবনা অনেকের ই আছে । উনারা ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব এবং কেউই সমালোচনার উর্ধ্বে নন । আমাদের কেনজানি একটা ব্যক্তি পূজার প্রবণতা আছে । আশা করছি আগামী পর্ব গুলোতে আরো গুছানো বক্তব্য পাবো আপনার কাছ থেকে । আচ্ছা অফটপিকে একটা কথা বলি, এত এ্যাডের মাঝখানে টিভির অনুস্ঠান দেখেন কিভাবে ?!
আমিও অফটপিকে কথা বলি একটা । এ্যাডের মাঝখানে টিভি অনুষ্ঠান দেখার একটা মেকানিজম আছে। যেমন কলেজে থাকতে যখন সিন্দবাদ শুরু হইতো তার আগে বিপুল পরিমাণ এ্যাড হইতো। এইটাই বোর নেস কাটাতে আমরা ব্যবস্থা নিলাম। প্রথম এ্যাড আমাদের প্রথম ক্যাডেট নম্বরের.. তার পরের টা তার পরের ক্যাডেট নাম্বার এভাবে চলতে থাকবে। ক্যাডেট নাম্বার শেষ হইলে আবার শুরু থেকে। বাই দ্যা ওয়ে "এ্যাড তার" মানে ঐ এ্যাডের মেয়েটা তার। আর তখন ফেমিকনের এ্যাড যার কপালে পড়তো তার জন্য পঁচানি গ্যারান্টিড। এ্যাড তো বুঝছেন কোনটা .... গিন্নীর পছন্দ এক্কেবারে ঠিক।
বড় ভাইয়ের ব্লগে এসব কী কইতাসি :frontroll: :frontroll:
ভুলচুক হইলে মাফ কইরা দিয়েন বড় ভাইরা।
ভাই কোনো কথাই ক্লিয়ার না...।সব ঝাপ্সা ঝাপ্সা...আর ও গুছানো এবং to the point হইলে মনে হয় ভাল হইতো...।
জানি সত্য নয়,শুধু কল্পনায়...ইচ্ছের ঘুড়ি আমরা ওড়াই...স্বপ্ন গুলো সত্যি হবে তারি অপেক্ষায়
হুমমম ...
রাজিব ভাই, চালাই যান
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
আমাদের দেশে সত্যিকারের দেশপ্রেমিক বলে কি কেউ আছে? চিন্তা করলে আমি কারও নাম পাই না। অবশ্য আমার জানার পরিধি ছোট বলে হয়ত জানি না। সারা বশর শুধু দেখি নাম নিয়া রাজনীতি হচ্ছে সব দলের পক্ষ থেকে। এযেন দেশটা নিজের নামে লিখে নেবার এক প্রচেষ্টা সর্বক্ষণ। :bash: :bash:
মুল বক্তব্য বোঝার জন্য পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি। আমাদের দেশে অনেকেই নায়কের জায়গায় মহানায়ক, মহানায়কের জায়গায় খলনায়ক আবার খলনায়কের জায়গায় মহানায়ক হয়েছেন। তবে সবচেয়ে বেশি অবমূল্যায়িত হয়েছেন মনে হয় তাজউদ্দিন আহমেদ। আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসে তার অবস্থান আরো অনেক উপরে হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু আমরা বেশিরভাগই তার অবদান সম্পর্কে সম্পূর্ণ অন্ধকারে আছি।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
রাজীব ভাই, পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম... :dreamy:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
ফয়েজ ভাই, কামরুল, আমিন বাংলায় করে ফেলছি।
সবাই খুশি হলে আমিও খুশি।
জোকটা ছেলেপেলেরা জানিসতো!
সবাইকে,
এলোমেলো হচ্ছে ঠিকই, তবে গতি আসবে আশা করি।
যারা কষ্ট করে পরছে তাদেরকে শুভেচ্ছা।
নতুন কিছু কি বলবো???
মেজর শওকতের মতো বলতে পারবোনা যে জিয়া তেলের ড্রামের উপর দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা ঘোষণা করছে বা শাহজাহান সিরাজ বলছে যেমন, সেই প্রথম স্বাধীনতা ঘোষণা করছে।
একটু অপেক্ষা করতে হবে। ২য় পর্ব আসছে।
আরেকটা কথা সবই লিখছি মগজে যা আছে তার উপর ভর করে; ভুল হলে একটু ধরিয়ে দিও পাঠকেরা।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
রাজীব ভাই, পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম…
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম…
:-B :-/