খালি চোখে যা দেখি তার বাইরে কি আছে?
বিজ্ঞান অনেক কিছু আবিষ্কার করেছে এই ব্যাপারে। আমি সাইন্সে ফেল করা ছাত্র ঐ বিষয়ে না যাই।
আর্টস দিয়া চেষ্টা কইরা দেখি।
ভূত-ভগবান-স্বর্গীয় দূত আছে না নাই সেও তর্কেও না হয় না যাই।
ইতিহাস আমার খুব প্রিয় বিষয়। সেই সূত্রে নবী- ফেরাউনদের কাহিনীও আমার খুব প্রিয়।
ব্যাক্তিগত ভাবে আরেকটি বিষয় আমার খুব প্রিয়।
স্বপ্ন দেখা।
না কোনও দেশ বা মানব উন্নয়নের বা কোনও মহাজাগতিক স্বপ্ন নয়।
নিছক স্বপ্ন।
ঘুমে বা আধঘুমে আমরা যা দেখি বা যাতে অংশ নেই। এমন প্রায়ই হয় স্বপ্ন দেখতে দেখতে ঘুম ভেঙে গেলো আবার ঘুমানোর চেষ্টা চালাই বাকি স্বপ্নটুকু দেখার লোভে। খুব সাদামাটা স্বপ্নও আমার কাছে বিশেষ কিছু। সেকারণে খাবনামা বা খোয়াবনামা ও আমার প্রিয়। ইয়াকুবের সেই সূর্য-চন্দ্রের স্বপ্ন, ইয়ুসুফের সেই ৭ চিকন-মোটা গরুর স্বপ্ন, কাকের স্বপ্ন আমাকে লাটিমের মতো ঘোরায়। ফ্রয়েড সাহেবকে হয়তো রকেটের বেগে ঘুরিয়েছে।
আমার আরেকটি প্রিয় বিষয় হস্তরেখা। এই নিয়ে এখন না বলি।
মানুষ নিয়ে না হয় বলি।
পরিবেশবিদরা যখন পলিথিন, বন্যপ্রাণী ইত্যাদি নিয়ে ঘুম হারাম করে আমি তাতে বিন্দুমাত্র আগ্রহবোধ করিনা।
আমার আগ্রহ মানুষ।
মানুষ বলতেই নারী ও পুরুষ।
ক্লীব বলেও একটা ব্যাপার আছে।
আমরা তাদের সম্পর্কে কতটুকু জানি? কিছুই না।
হি মেল, শী মেল বলে কিছু একটা আছে চলতি ভাষায় এদের হিজড়া বলে। ব্যাস দৌড় এই পর্যন্ত।
আচ্ছা এই যে ক্লীব সম্প্রদায় তাদের নিয়ে ধর্ম কি বলেছে? ধর্ম তো হেন জিনিস নাই যা নিয়ে মাথা ঘামায় নাই। এদের নিয়ে কি কিছু বলেছে?
হয়তো বলেছে।
আপাতত ক্লীবরাও দূরে থাকুক।
নারী পুরুষ নিয়েই কথা হোক।
পরিবার বা পরিবারতন্ত্র এই যুগে এসে নতুন সংকীর্ণ রূপ নিয়েছে। ভালো লাগুক আর নাই লাগুক এটাই বাস্তবতা।
আমাদের পরিবারটি বেশ ছোট। বাবা-মা, দুইভাই। ব্যাস চারজন। পুরুষ- নারীর অনুপাত ৩:১।
আমি বলতাম ৪:০।
এই উদ্ভট অনুপাতের কারণ মা চাকুরী করতেন। চাকুরী করা মহিলারা তো পুরুষই; নাকি?
আমার জীবনে এসে এই অনুপাত ঠিক উল্টা হয়ে গেছে। ১:৩।
কিংবা বলা যায় ০:৪।
ব্যাখ্যা করি।
অনেক ঊল্টা পালটা কথা বল্লেও/ ভাবলেও/ করলেও প্রেম কোনো পুরুষের সঙ্গে না করে রক্ত মাংশের নারীর প্রেমেই পড়ি। বিয়ে ও করি। এখন পর্যন্ত ২ কন্যা সন্তানের পিতা। ইচ্ছা আছে আরও দুই কন্যা সন্তানের পিতা হওয়ার। যদিও দায়টা বহন করতে হবে আমার স্ত্রীর। সুতরাং তার ইচ্ছাই শেষ কথা।
বাবা-মা হওয়া যে কি জিনিস তা জানতে হলে বিদেশের মাটিতে বাবা-মা হওয়া উচিত।
ইসলাম আর কিছু না হোক নারীদের একটা মর্যাদা দিয়েছে। হাশরের ময়দানে যখন একেক জনকে ডাকা হবে তখন তাদের মায়ের নামে ডাকা হবে। যেমন রহিম রাহেলার পুত্র রমযান। দুনিয়াতে তার নাম রমযান ইবনে রহিম। সেই সময় হবে রাহেলার পুত্র রমযান। যদিও দুর্মুখেরা এর ভিন্ন ব্যাখ্যা করবে। ব্যাখার খেতা পুড়ি। রমযান যে রাহেলার পেট থিকা আসছে তাতে তো কোনও সন্দেহ নাই।
মা হওয়া বা সন্তান জন্ম দেওয়ার ব্যাপারটা বাংলাদেশের পুরুষরা কতটুকু জানেন আমি জানিনা।
আমি আমার দুই মেয়ের জন্মের পুরা সময়টাই আমার স্ত্রীর পাশে ছিলাম।
প্রথমবার নরম্যাল; সে এক ভয়াবহ ব্যাপার। ২৪ ঘন্টা লেবারে ছিল আমার মেয়ের মা।
ইঞ্জেকশন তো দূরের কথা সুই দেখলেই আমার মাথা খারাপ হয়ে যায়। সেখানে জন্মের আগেই আমার মেয়ের মাথা থেকে রক্ত নেওয়া হল। এক পর্যায়ে মাথায় সুই লাগিয়ে রাখা হল। আর মায়ের দুই হাতের কোনও জায়গা বাকি নাই যেখানে কোনও সুই নাই।
আমি খুব আশা করতেছি যেন ঈদের দিনে যেন আমার মেয়ে হয়। আমার এক বন্ধুর বড় ভাইয়ের ছেলে হইছে ঈদের দিনে; তারে ডাকতাম ইদু মিয়া বইলা। আর আমারে ঐ পিচকি ডাকত ভোটকা চুধুরী (চৌধুরী) বইলা।
দেশে থাকলে নিশ্চিত ও আমার মেয়েরে ডাকতো ইদুন বিবি বা ইদুন খাতুন বইলা।
ভাগ্যিস এই দেশে হইছে বইলা এখনো নাম আছে রায়া।
আমার বড় মেয়ের পুরা নাম হইলো রেনা তামারা (রায়া)
রেনা (আরবি) শান্তিময়
তামারা (গ্রিক, হিব্রু, আরবি) পাম/তেতুল গাছ
রায়া (আরবি) সুগন্ধিময় বাতাস
আমি পুরা নামটার অর্থ রাখছি এই রকম
আমার মেয়ে হইলো একটা শান্তিময় পাম গাছ যা কিনা সুগন্ধি বাতাস ছড়ায়।
আরও মরতবা আছে। আমার নামের প্রথম অক্ষর র; তাই আমার মেয়ের নামের প্রথম অংশ এবং ডাকনাম র দিয়া। শেষ অংশ ত আসছে আমার স্ত্রীর নামের প্রথম অংশ থেকে।
কথা প্রসঙ্গে/ অপ্রসঙ্গে বলি আমার মেয়ের প্রিয় প্রোগ্রাম হইলো সিসিমপুর।
সিসিমপুর ৩
সিসিমপুর ৪
যারা তাদের সন্তানদেরকে বাংলা ভাষার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে চান তারা এইটা এবং মীনা ট্রাই করে দেখতে পারেন।
মীনা
এবার আমাদের ২য় বাচ্চা হবে; এবারো মেয়ে। এবার আর নরম্যাল না; সারজিকাল ডেলিভারি। ডাইনোসর বাইচা থাকলে তারে যে সুই দেওয়া হইত সেই সুই দেওয়া হইলো আমার ছোট মেয়ের মায়ের মেরুদণ্ডে। ভয়াবহ ব্যাপার। ভয়াবহ। গরুর চামড়া ছাড়ানোর মতো শব্দ আসছিলো ……
ছোট মেয়েটা আর বড়জনের মতো ঈদের দিনে হয়নি। তাতে কি আমার জন্মমাসে তো হয়েছে।
এবার আর নাম রাখা নিয়া আগের বারের মতন উৎসাহ নাই। বউ বলে নাম ঠিক করো না কেন? আমি বলি করবো, করতেছি। আসল কথা তার কাছে ভাঙ্গিনা।
এবার প্রথম থেকেই প্রচুর পরিমাণে কমপ্লিকেসি ছিল। একটা উদাহরণ দেই; প্রেগন্যান্সিকালীন সময়ে এখানে আলট্রাসনগ্রাফি করা হয় দুইবার। আমার বউয়ের হইছে ২০ বারের অধিক। বাচ্চা হওয়ার আগ পর্যন্ত জানতাম না মা-মেয়ে বাঁচবে কিনা। যাইহোক দুইজনেই বেঁচে আছে।
অল্প সময়ের মধ্যে নাম ঠিক করলাম।
ঋধি।
রওযা তালিয়া (ঋধি)
রওযা (আরবি) বাগান। আমাদের নবীর কবরকেও আমরা রওযা মোবারক বলে থাকি।
তালিয়া (আরবি) সৌভাগ্য, ভাগ্যবতী
ঋধি (বাংলা) ঋদ্ধ থেকে ঋধি।
আমার ছোট মেয়ে হইলো সমৃদ্ধ বা ফলবতী একটি বাগান যা সৌভাগ্য বয়ে আনবে।
বড় মেয়েটার ডাকনাম ও বাংলা রাখতে চাইছিলাম, আমার পছন্দ ছিল রাই। রাধার আরেক নাম। আমার বউ বলে যে রায়া। পরে চেকআপের সময় ডাক্তাররে জিগাইলাম, কোন নামটা বেটার, রাই না রায়া? ডাক্তার বলে, রাই কমন নাম। আমি বলি কমন কেমনে? সে বলে ঐশ্বরিয়া রাই। হায়রে এতো সুন্দর নামটা ঐ মহিলা নিয়া নিছে। কি আর করা, আমার বউ এর জয় হইলো।
ভালো কথা মেয়ে (মুসলিম ঘরে) জন্মাইলেও কি আযান দিতে হয়?
আমি অবশ্য দিছি। প্রথম দফা মোবাইলে আযান লেইখা নিয়া গেছিলাম। দেইখা দেইখা মেয়ের দুইকানে আযান দিলাম।
পরেরবার ডাউনলোড কইরা নিয়া গেছি। মেয়ের দুই কানে রেকর্ডেড আযান বাজালাম।
আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে।
হা হা হা, ভাই আযান রেকর্ড কইরা শুনাইসেন :))
নিয়মতো বোধহয় বাবাদের দেয়ার, কিন্তু যেটা রেকর্ড করা দিসেন সেটাতো আপনার দেয়া আযান না 😀
আমি কলেজে থাকতে আযান দিতাম :shy:
এখনো আযান মুখস্থ আছে মনে হয়
আচ্ছা মেয়ে হলে আযান দিতে হয় নাকি সন্তান হলেই ??
ভাইয়া কোথাও কি শি মেল দের কথা লিখা নাই ধর্মে??
বাবারই দিতে হবে এমন কথা মনে হয় নাই। রয়্যাল লন্ডন হসপিটালে একজন আছে যে আযান দেওয়ার জন্য ঘুইরা বেড়ায়।
এইবার আমার বাসায় আইসা আযান দিয়া শুনাবি।
ছেলে-মেয়ের জন্মের সময় আযানের ব্যাপারটা ক্লিয়ার না। আমি দিছি।
তবে আর যাই হোক সম্পত্তি ভাগ করা নিয়া বেশ কিছু ঝামেলা আছে।
ধর্মে হিজড়াদের ব্যাপারে কি বলছে আমি জানি না। তুই হুজুররে জিজ্ঞাসা কইরা দেখতে পারিস।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
আমাদের দেশেও যদি ডেলিভারীর সময় স্বামী পাশে থাকার নিয়মটা থাকত, তাহলে হয়ত নারী নির্যাতন অনেক কমে যেত।
আজানের আইডিয়া কঠিন, পুরা ডিজিটাল বাংলাদেশ :grr:
সাকিব
তোর কথা হয়তো ঠিক।
আর ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়া কোনোরকম ফাইজলামি করবি না। তুইলা নিয়া যাবে।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
🙂 রাজীব ওেতামার লেখা কোনবার ই একঘেয়ে লাগেনা। হাস্য রসের মধ্য দিয়ে মজা করে পরিবেশন কর। মাঝে মাঝে দু একটা হুল ও আছে সেটা যাদের জন্র তাদের। আমাদের দেশে কেবল ছেলে হলেই উঠোনে দাঁিড়িয়ে আজান দেয়,যাতে লোক জন জানে ওমুকের ছেলে হয়ে ছে। হাসরের দিন ছেলেদের মায়ের পরিচয়ে ডাকা হবে,মেয়েদের কার পরিচয়ে ডাকা হবে? আর হিজরাওেদর পাপ পুন্যের কি হবে। ওরা তো পুরুস ও না মহিলাওনা। ওদের তাহলে অর্ধেক পর্দা কর উচিৎ। তোমার সুন্দর লেখা আর ও চাই। আর আজ আমার ভাল রাগছে এখানে মন্তব্য করতে পেরে। এর আগে মন্তব্যের ঘরে আমাদের জন্র তারা লাগানো ছিল্ আমরাও চাই এখানে আমাদের ক্যাডেট কলে জীবনের অনেক মজার কাহিনী লিখতে। ভাল থাকো তোমার মেষ্টি মেয়েদের নিয়ে। 🙂
স্যার
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। কষ্ট করে আমার লেখা পড়েন এইজন্য। আর ভাল লাগাটা আমার জন্য উপরি পাওনা।
আপনার লেখার জন্য অপেক্ষা করছি। আশা করি শিক্ষকদের সদস্যপদ পাবার ব্যাপারে মডারেশন কমিটি শীঘ্রই আশাব্যাঞ্জক সিদ্ধান্ত নেবে।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
বস, লেখায় প্যারা কিংবা লাইন গ্যাপগুলা একটু ফরমেট করে দিয়েন। পড়তে আরাম লাগবে 😀 ।
আবারো বাবা হবার অভিনন্দন রইলো। ভাবী আছেন কেমন এখন?
পিচ্চি দুটোকে আদর দিয়েন।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
রকিব,
দেখি।
ভালো।
দিলাম।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
মজা পাইলাম...ভাবী এবং মেয়েদের জন্য শুভ কামনা।
মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য
মাহমুদ
ধন্যবাদ।
আজ আমার বড় মেয়ে প্রথম স্কুলে গেলো।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ