২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারির তের তারিখ।
হুট করে মরে গেলো আমাদের জহির।
হুট করে মানে, একদম হুট করেই। পুরো সুস্থ, বিশালদেহী টগবগে মানুষটা রাত দেড়টা দুটার দিকে হুট করেই চলে গেলো।
ক্যাডেট কলেজ থেকে বের হয়েছি বেশ অনেক বছর। অনেকের সাথেই অনেক অনেক দিন পরপর দেখা সাক্ষাৎ হয়। কারো কারো সাথে হয়ই না একদম। কিন্তু একটা জিনিস জানি সবাই আছে বেঁচে বর্তে, দুনিয়ার কোন না কোনখানে। শুধু এই একটা ছেলেই নেই। গাজীপুরের পৌর কবরস্থানটাতে শুইয়ে রেখে এসেছিলাম আমরা তের তারিখ দুপুরের পর পর। সবাই ভুলে গেছি। হঠাত হঠাত ছেলেটা স্মৃতির মধ্যে এসে যন্ত্রণা দেয়। আমাদের ৩৯তম ব্যাচের সবচে সহজ সরল ছেলেটা। সবচে ভালো ছেলেটা। একই রুমে পাশাপাশি বিছানায় কাটিয়েছি বলতে গেলে ক্যাডেট কলেজ জীবনের পুরোটাই। সেই ছেলেটা!
কষ্টের স্মৃতি নাকি মানুষ ভুলে যেতে চায়। আমি বা আমরাও নিশ্চয়ই চেয়েছি। আমাদের জহিরকে খাটিয়াতে শোয়া অবস্থায় শাদা কাপড়ে মোড়ানো দেখাটা কি ভয়ানক কষ্টের আমি বলে বা লিখে বোঝাতে পারবোনা।
জহিরের মৃত্যুটা এখনো আমাদের জন্য রহস্যজনক। লিখেছিলাম সিসিবিতেই। আমরা আমাদের জহিরের একটা অভ্যাসকে নিয়ে এই বছর একটা আয়োজন করেছি। ও রক্ত দিতো নিয়মিত। দুইহাজার আটের একুশের বই মেলায় রক্ত দেয়ার পরদিনই ও চলে যায় আমাদের সবার কাছ থেকে। আমরা আসলে জানতেও পারিনি ঠিক কী হয়েছিলো ওর। তবে আমরা ওর এই মানুষের জন্য হিতকর অভ্যাসটিকে নিয়েই ছোট্ট একটি আয়োজন করার চেষ্টা করেছি। রক্তদান কর্মসূচী। এরকমতো সবসময়েই হচ্ছে। এর মধ্যেই আমাদের আরেকটু চেষ্টা থাকবে, নিয়মিত রক্তদান কর্মসূচীর সাথে সাথে নিরাপদে রক্তদান করার জন্য সবাইকে উৎসাহিত করার জন্য।
আমাদের এই প্রচেষ্টা হয়তো তেমন বড় কিছু নয়। তবুও আমাদের বন্ধু, আমাদের ভাই জহিরকে মনে করে সামান্য কিছু করার মাধ্যমে ভবিষ্যতে বড় কোন জনহিতকর কাজের দিকে এগিয়ে যাওয়ার এটাকে একটা সূচনা হিসাবেও ধরা যায়।
সিসিবিতে আমি ওকে নিয়ে লিখেছিলাম এর আগেও। হয়তো অনেকেই পড়েছেন। যারা পড়েছেন, কিংবা যারা পড়েননি সবার কাছেই একটা অনুরোধ, এই সামনের বার তারিখ ক্যাডেট কলেজ ক্লাবে আসুন। কোন বাধা ধরা কিছু নেই। যারা পারবেন, আশে পাশে আছেন, নিয়মিত রক্ত দিয়েছেন কিংবা দেন, একটু কষ্ট করে হলেও আসুন। ক্যাডেট কলেজের ভাইটিকে মনে করে যদি সম্ভব হয় এক ব্যাগ রক্ত দান করুন। আমরা প্রায়ই দেখি বিভিন্নজনের দরকার হয় রক্তের। হয়তো এভাবে একটি উদ্দেশ্য সামনে রেখে শুরু করে আমরা নিজেরাই নিজেদের বিপদের সময়ের প্রয়োজনীয় বস্তুটির নিরাপদ একটি জোগান নিশ্চিত করতে পারবো।
জহিরের স্মরণে নিরাপদে রক্তদান কর্মসূচী
১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১২
বিকাল চারটা থেকে রাত দশটা
ক্যাডেট কলেজ ক্লাব প্রাঙ্গন
আরো বেশ কবছর আগে, এই মাসেই আমরা হারিয়েছিলাম আমাদের এক বোন পলেন কেও। ওকেও স্মরণ করছি একই সাথে। ওরা যেখানেই থাকুক, ভালো থাকুক।
জহির ভাই ভাল থাকুক।
পোস্ট শেয়ার করলাম। নিঃসন্দেহে চমৎকার একটা উদ্যোগ। :thumbup:
আসবো।
জহির ভাই ভাল থাকুক।
কাইয়ুম ভাই কেমন আছেন? একটা 'সরি' বলা বাকি আছে আপনার কাছে। দেখা হলে বলবো।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
অনুপস্থিতির জন্য কোন অজুহাত আর দেবো না। শেয়ার করছি খোমাখাতায়।
শান্তিতে ঘুমান জহির ভাই।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
::salute:: to জহির ভাই
জহির ভাই ভালো থাকুন।
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
কাইয়ুম ভাই, সি-৫৯, দক্ষিণ ছায়াবীথি -- এই লেখা পড়ে কাঁদেনি এমন লোক সিসিবিতে কমই আছে।
উদ্যোগ ভালো লাগলো। আসতে পারলে অবশ্যই আসতাম।
শান্তিতে ঘুমান জহির ভাই।
আসতে তো পারবো না, দোস্ত। জহির বেঁচে থাকুক বন্ধুদের ভাল কাজে। সংহতি।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
আমিও আসবো। কাইয়ূম ভাই কেমনাছেন?
কাইয়ূম ভাই,
ক্যান আছন?
🙁
জহির ভাই ভাল থাকুক।
ভাল থাকুক জহির ভাই।
কেমন আছেন কাইয়ূম ভাই? অনে-ক অনে-ক দিন হয়ে গেলো...
কাইউম ভাই ভাল লিখছেন। রক্ত দিতে আসতে পারতাম কিন্তু কএকদিন আগে আমাদের একজন কে রক্ত দিসি।
::salute:: জহির ভাইকে।
কাইয়ুম ভাই কে ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
জহির ভাই ভাল থাকুক।
"আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"
ভাল থাকুন জহির ভাই।
কাইয়ূম ভাই,
ভালো লাগলো আপনাদের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ দেখে।
"আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
শান্তিতে ঘুমান জহির ভাই......
কাইয়ূম ভাই কেমন আছেন ???
শান্তিতে ঘুমাক জহির।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
সংহিত
:boss: :clap:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
আর কিছু লিখতে পারলাম না।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
নিজের উপস্থিত হওয়া সম্ভব না, তাই শুধু সংহতি জানিয়ে গেলাম।
কাইয়ূম ভাই কেমন আছেন?
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
জহিরের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
আশা করি রক্তদান কর্মসূচি সফল হয়েছে 🙂
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
আমিও তাই আশা করছি 🙁
যাই নাই, রক্ত দেয়ার ডেট হয় নাই এখনো। কিন্তু কাইয়ূম ভাইয়ের সাথে দেখা হওয়ার বিরল সৌভাগ্য মিস করলাম, জাস্ট মকরামী করে 🙁
সবার আন্তরিক অংশগ্রহণে আমরা অভিভূত হয়েছি।
যারা কষ্ট করে এসে রক্তদান করেছেন, এসেছেন কিন্তু নানান জটিলতায় রক্ত দিতে পারেননি কিংবা সশরীরে আসতে না পেরেও আমাদের সাথেই ছিলেন, সংহতি জানিয়েছেন, ভার্চুয়ালি পাশে থেকে সাহস জুগিয়েছেন সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
সবার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!