১
মাঝে মধ্যে রাতের খাবারের সময়টাতে আমরা পরিবারের সদস্যরা মিলে গল্প গল্প খেলি। খেলাটা হচ্ছে কোন একটা বিষয়বস্তু নিয়ে পালাক্রমে সবাই একটা করে গল্প বলবে। যেমন কোন একদিনের বিষয়বস্তু ছিল এম্বুলেন্স। রাইসা গল্প বললো এইভাবে যে ফেইরী গড মাদারের দেরি দেখে সিন্ডারেলা ৯১১ (আমেরিকার জরুরী বিভাগের নাম্বার) নাম্বারে ফোন করে এম্বুলেন্স ডেকে এনে তাড়াতাড়ি রাজপুত্রের নাচের অনুষ্ঠানে চলে গেল। রাসীনের গল্পটা হলো এম্বুলেন্স আর ফায়ার ট্রাক রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। এই দুটো গাড়িকে আগে যেতে দেওয়ার জন্য রাস্তার আর সব গাড়িরা থেমে ছিল। তারপরও নিজেরা নিজেদের সাথে একসসিডেন্ট করে ফেললো। এতে দুজন ফায়ারফাইটার আহত হলো আর এম্বুলেন্সে আগুন ধরে গেল। ফায়ার ট্রাক এম্বুলেন্সের আগুন নিভিয়ে দিল আর এম্বুলেন্স দুজন ফায়ারফাইটারকে নিয়ে ভোঁ দৌড় দিল।
একদিন আমি ঠিক করলাম সেদিন হাসির গল্প বলা হবে এবং আমি প্রথম শুরু করবো। শুরু করার আগেই রাসীন বলে উঠলো, ‘বাবা, মামনি হাসির গল্প বলতে চাচ্ছে। এটাই কী সবচেয়ে বড় হাসির গল্প না?’ নির্ঝরের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সে কিছু না বলে ওর সেই বিখ্যাত ঠোট চাপা হাসিটা দিল। আমি রাসীনকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আমি কী কখনও হাসির গল্প বলি না?‘
‘সরি তোমাকে খুশি করার জন্য আমি মিথ্যা বলতে পারবো না। ওটা বাবার ডিপার্টমেন্ট।‘ রাসীনের নিস্পৃহ উত্তর।
হু, পরিবারের মধ্যে আমি যে রসিকতা কম করি শুধু তাইই নয়, বুঝিও কম। তাই নির্ঝরের দৃষ্টি আকর্ষন করে আমাকে বাচ্চাদের বোর্ডে বড় বড় করে লিখে রাখতে হয়, ‘আমার সাথে কোন রসিকতা করা যাবে না।’
২
একদিন খুব ভালোমানুষী ভাব নিয়ে আমার পাশে বসে নির্ঝর বললো, ‘বুয়েটে আমার এক বন্ধু ছিল। সে বলতো ইঞ্জিনিয়ার পরিচয়ে নয়, আমি বেশি গর্বিত বোধ করি আমার কবি পরিচয়ে। আমি বললাম বাংলাদেশে দুটো ঢিল ছুরে মারলে তার একটা পরবে কবিদের মাথায়।‘
বেশ বুঝতে পারছিলাম আমাকে রাগানোর চেষ্টা চলছে। আমি মুখটা ভাবলেশহীন করে বললাম, ‘আমি কবিতা লিখি না।‘
‘কী বলো? তুমি তো তাহলে এখনও এবিসি পর্যায়ে আছো। সাহিত্যের সবচেয়ে কঠিন পর্ব হলো কবিতা লেখা।’
প্রসঙ্গ পালটানোর জন্য বললাম, ‘উপন্যাসটার জন্য নিজের ছোটখাট একটা জীবনী লিখতে হবে। বলো তো কী লেখা যায়?‘
‘ভেতরের লেখা যেমনই হোক, লেখকের জীবনীটা একটু অন্যরকম হলে পাঠক কিছুটা আগ্রহী হয়ে উঠতে পারে।‘
‘সেই অন্যরকমটা কী জিনিষ?‘
‘এই যেমন লেখিকার একদিন জানতে ইচ্ছে হলো ডুবে যেতে কেমন লাগে, তাই তিনি জাহাজের ডেক থেকে প্রশান্ত মহাসাগরে ঝাঁপ দিলেন।‘
এতোক্ষন আগডুম বাকডুম বলে যা করতে পারছিলো না, এ কথা বলেই সে তার সিদ্ধি হাসিল করে ফেললো। আমি হেরে গেলাম রেগে গিয়ে।
আপাত দৃষ্টিতে নিরীহ এই রসিকতার পেছনে প্রতিক্রিয়া দেখানোর একটা ইতিহাস আছে।
৩
সালটা ছিল ১৯৯৯। তখন সবে মাত্র আমেরিকায় এসে স্যান হোজে স্টেইট ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স শুরু করেছি। ইউনিভার্সিটিকে এখানে স্কুল বলে। স্কুল থেকে বাসার দূরত্ব প্রায় ২০ মাইল। আমেরিকাতে বড় বড় ফ্রীওয়ে গাড়ির গতি বাড়িয়ে দূরত্বকে কমিয়ে এনেছে। একেকটা ফ্রীওয়ে থেকে শাখা প্রশাখা বেরিয়ে বিভিন্ন শহরের মধ্যে ঢুকে পরেছে। জিপিএসবিহীন সে সময়টায় নতুন কেউ একবার শাখা-প্রশাখা নিতে ভুল করলে তাকে গোলক ধাঁধার ভোগান্িততে পড়তে হয়।
একদিন রাতের বেলা ক্লাসের পর ল্যাব করে বাসায় ফিরতে গিয়ে ভুল রাস্তায় ঢুকে পরলাম। সোজা সরু সে রাস্তাতে কারণে গাড়ি উলটো ঘুরাতে পারছিলাম না। প্রায় আলোশূন্য রাস্তাটা ক্রমশ গভীর বনের মধ্যে দিয়ে সোজা পাহাড়ের উপর উঠে যাচ্ছিল। মাঝে মধ্যে যাওবা দু একটা বাড়ি দেখা যাচ্ছিল, কিন্তু সেখানে থামাবার সাহস করে উঠতে পারছিলাম না। একে তো অপরিচিত বাড়ি তার উপর সময়টা ছিল অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ। এ সময়টাতে আমেরিকানরা তাদের বাড়ির সামনে, উঠোনে পাল্লা দিয়ে ভয়ংকরভাবে সাজিয়ে রাখে। সদ্য বাংলাদেশ থেকে আসা অমাবস্যার রাতে পথ হারানো এক পথিকের কাছে এসব মেকী ভুত-প্রেত, কবরস্থান, কংকালেরা তখন বড্ড বেশি বাস্তব। তার উপর আবিষ্কার করলাম পেছন থেকে একটা পিক-আপ ধরনের গাড়ি আমাকে অনুসরণ করছে। আমি ডানে গেলে সে গাড়িও ডানে যায়, বায়ে গেলে বায়ে। সামনের আয়নায় ভয়ংকর চেহারার ড্রাইভারকে দেখে ততক্ষনে আমার আত্মরামের খাঁচার মধ্যে ছুটোছুটি । আগের রাতেই কী যে কুক্ষনে ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস মুভিটা দেখতে গিয়েছিলাম! মুঠোফোন বেজে উঠলো। ফোনটা ব্যাগের মধ্যে পিছনের সিটে রাখা। এই নির্জন জায়গা থেকে যদি হারিয়ে যাই তাহলে আর কেউই কোনদিন আমার খোঁজ পাবে না। আজ রাতই আমার জীবনের শেষ রাত হতে পারে না – কথাটা বার বার বলে নিজেকে সাহস দিচ্ছিলাম।
বাসায় ফিরে দেখলাম পার্কি লটেই নির্ঝর দাড়িয়ে অস্থিরভাবে পায়চারী করছে।
বললো ‘ আরেকটু দেরী করলে আমাকে হসপিটালে পেতে। ত্রিশ পৌছনোর আগেই প্রথম হার্ট এটাকে পরতে যাচ্ছিলাম।’
আহা, বরের কী ভালবাসা। আমিও সুইট করে বললাম,
’কেন খুব ভয় পেয়েছিলে বুঝি?’
’ভয় – তা বলতেই পারো। কিছুক্ষন আগে তোমার ভাই, সাদি মামা ফোন করে বললো তারা এখন বাসায় আসছে। এদিকে বাসায় এসে যদি তোমাকে লা-পাত্তা দেখে তাহলে আমার দিকে আঙ্গুল উঠবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমেরিকাতে বৌ গুম করে তাদের স্বামীরা।’
বলাবাহুল্য ভালবাসার এই রূপ দেখে খুব অভিমান হলো। এরপর থেকে ওর নিয়ে পথ হারানো কিম্বা পানিতে ঝাপ দেওয়া ধরনের রসিকতাগুলোতে কোন রস খুঁজে পায়না।
৩
ক্যালিফোর্নিয়ার রাজধানী স্যাক্রামেন্টো। আমাদের এখান থেকে দুইশ মাইল উত্তরে। একবার রিনো থেকে স্কী করে থেকে আসার পথে সেখানটায় থামলাম কিছু খাওয়ার জন্য। মেজবান নামের একটা পারসিয়ান রেস্টুরেন্ট দেখে ঢুকলাম। পারসিয়ান খাবারদাবার আমাদের দুজনেরই খুব পছন্দ। অর্ডার দিয়ে বসে আছি। দেখলাম দুই পারস্য সুন্দরী ঢুকলো। কিছুক্ষন পর কথা নেই বার্তা নেই হঠাৎ করে ঝুনঝুন শব্দ সাথে আরব্য রজনীর সুর ভেসে উঠলো। দেখি সেই দুই পারস্য সুন্দরী নাচতে শুরু করেছে। তাও আবার যেই সেই নাচ না – একেবারে বেলী ড্যান্স। বেছে বেছে ছেলেদের চারপাশ ঘিরে ঘিরে নাচছে, টিপস পেয়ে খুশি মনে আরেকজনের কাছে চলে যাচ্ছে। নির্ঝরের মুখ ছিলো অডিয়েন্সের দিকে আর আমার ছিল দেয়াালের দিকে। জায়গা বদল করা নিরাপদ ভেবে দুজনের জায়গা বদল করালাম। মাঝে মধ্যে নাচ দেখতে দেখতে ভাবছিলাম এরা আর অন্য কোন কাজ যোগার করতে পারলো না?
রেস্টুরেন্ট থেকে যখন বেরুলাম তখন দেখি পতিদেবতার মুখ গোমড়া। জিজ্ঞেস করলাম, কী ব্যাপার?‘
‘আমাকে দেখতে দিলে না ভালো কথা, তুমি দেখলে কেন?‘
‘কী ব্যাপার আমার ওরিয়েন্টেশন নিয়ে তোমার কি কোন সন্দেহ আছে?’
জানি নেই। তবে একবার এক ঘোরালো পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছিলাম।
৪
ইন্টেলে প্রতিবছরই খুব ঘটা করে ডাইভারসিটি ডে পালন করা হয়। বুথের সাজসজ্জা, আর হরেক রকম খাবারের পরিবেশনায় ইন্টেল বাংলাদেশ এসোাশিয়েশনের বুথ থাকে জমজমাট। বুথের সামনে আসতে লম্বা লাইনে কমপক্ষে তিন থেকে পাঁচ মিনিট দাড়িয়ে থাকতে হয়। গত কয়েক বছর আগে অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপক সুসান ডে ঠিক করলো যেহেতু এই বুথের সামনে খুব ভিড় হয়, এরপর থেকে সবচেয়ে কম ভিড় হওয়া বুথকে এর পাশে রাখবে। সকালবেলা বুথ ঠিকঠাক করতে গিয়ে দেখি, পাশে দিয়েছে গে, লেসবিয়ান আর ট্র্যান্সজেনডারদের সংগঠনকে। অনুষ্ঠানের সময় নিজ বুথে দাড়িয়ে নিস্পাপ কৌতুহলে পাশের বুথে খেয়াল রাখছি কারা আসে দেখার জন্য। প্রথমে প্রায় সত্তুর বছরের এক তরুন কানে আইপড লাগিয়ে এলেন। এরপর এলো এক মহিলা যার সাথে প্রায়ই করিডোরে চলতে আসতে দেখা হয়। অফিসে অধিকাংশই সাধারণত ফরম্যাল ড্রেস পড়ে আসে। কিন্তু এই মহিলাকে দেখি সবসময়ই আবৃত থাকে মিনিস্কার্ট, হাইহিল আর কড়া মেকাপের মোড়কে। তখনও ব্লগার হয়নি। ভবিষতে কাজে লাগতে পারে ভেবে কিছু তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্য পাশের বুথে গেলাম। মহিলা খুব আগ্রহ নিয়ে আমাকে তাদের সংগঠনের কার্যপ্রনালী বোঝাতে লাগলেন। হঠাৎ পাশে তাকিয়ে দেখি আমাদের বুথ থেকে এক তবলিকী ভাই সূক্ষ্ম চোখে আমাদের কথাবার্তা পর্যবেক্ষণ করছেন। তড়িঘড়ি করে সেখান থেকে সরে আসলাম। ভাইজান কী না কী ভেবে বসেন বলা তো যায়না।
এরপর করিডোরে মহিলার সাথে দেখা হলে হেসে কুশল বার্তা জিজ্ঞেস করতো। জানতে চাইতো তাদের সংগঠনের ই-মেল লিস্টে আমি নাম ঢুকাতে চাই কিনা। আমার মতো সোজাসাÌটা মানুষকে এ কী প্রশ্ন! একটা বিশেষ বুথে দেখার কারণে আমার কু-মন মহিলার নিষ্পাপ হাসির মাঝেও অতিরিক্ত উৎসুক্য খুঁজে পায়। দূর থেকে মহিলাকে দেখলেই অন্যপথ ধরি।
একদিন ল্যাবে কাজ করছি। সহকর্মী জর্জ পাশে এসে বললো, ‘আজকে রেস্টরুমে ঢুকেই ঘাবড়ে গিয়ে বের হয়ে গিয়েছিলাম। একটা বন্ধ টয়লেটের দরজার নীচে তাকিয়ে দেখি মেয়েদের জুতো।‘
‘তুমি না এখানে বিশ বছর ধরে কাজ করছো। এখনও ভুল করে মেয়েদের রেস্টরুমে পড়ো?’
‘প্রথমে আমিও তাই ভেবেছিলাম। পরে বুঝতে পারলাম মেয়েদের জুতোটা আসলে মার্টির।‘
মার্টি প্রাইস হচ্ছে সেই মহিলা যাকে আমি এড়িয়ে চলছি। বুঝলাম সে আসলে ট্র্যান্সজেনডার। অপরা উইনফ্রের অনুষ্ঠানে কয়েকবার ট্র্যান্সজেনডারদের সমস্যার কথা শুনেছিলাম। এক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর বৌ বাচ্চা নিয়ে বেশ ভালোই ছিল। কিন্তু সবসময়ই তার মনে হতো যে সে আসলে একজন মেয়ে। ভুল করে ছেলেদের দেহে বন্দি হয়ে আছে। তাই সে হরমোন থেরাপীর মাধ্যমে লিঙ্গ পরিবর্তন করে আইনত মেয়ে হয়ে গেল। এদিকে বৌকেও ছাড়তে চায় না আর বৌও সাথে থাকতে চায় না। কারণ সাথে থাকলে সে অফিসিয়ালি লেসবিয়ান হয়ে যাবে যা সে চাইছে না। আমেরিকাতে এখন অনেক অল্পবয়েসী ছেলেমেয়েই লিঙ্গ পরিবর্তন করছে। দেখা যাচ্ছে একটা মেয়ে ছেলে হয়ে প্রেমে পড়ছে আরেকটা ছেলের। টেকনিক্যালি তো তার মেয়ের প্রেমে পড়ার কথা যদি তার দেহের মধ্য আসলেই একজন ছেলে বাস করে থাকে। হিসেব বড় গরবরে।
এসব দেখলে মনে হয় এই পৃথিবীতে আসলে মানুষের জীবনে সুখ-দুঃখের পরিমান সমান। থাকতো যদি ক্ষিদের কষ্ট তাহলে আর ভাবতে হতো না দেহটা ভুল না ঠিক। তখন পেটই সব।
৫
প্রশান্ত মহাসাগরের পাড়ে শীতকালে বৃষ্টি হয়। আস্ত আস্ত একেকটা বড় বড় পাহাড় তার মেটে বদলে সবুজ হতে শুরু করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই বৃষ্টি শুধু জানালা থেকে দেখা যায়। ছোঁয়া যায় না। উত্তর মেরুর কনকনে বাতাস এতে মিশে থাকে। আবার আটলান্টিকের পাড়ে একেবারে অন্যরূপ। ফেçারিডার গাছপালা জলবায়ু সব বাংলাদেশের মতো। সেখানে গরমের সময় বৃষ্টি পরে। একেবারে বাংলাদেশের মতো বিদ্যুৎ চমকানো বৃষ্টি। গত বছর তা দেখে রাইসা বলে উঠেছিলো, ‘বিদুৎ চমকানো ব্যাপারটা তাহলে সত্যি। আমি ভেবেছিলাম এটা বুঝি শুধু কার্টুনের দেখা যায়।‘
ফেçারিডার সমুদ্র সৈকত দেখলে কক্সবাজারের কথা মনে হয়। তবে ফেçারিডার সৈকতের পানি অনেক স্বচ্ছ। রংটা একটু নীলচে, সবুজাভ। বালুর বদলে একটু আধটু সামুদ্রিক আগাছা ভেসে আসে। অরল্যান্ডো শহরটাতে অনেক সৈকত আছে খুব সুন্দর আবার একেবারেই নিরিবিলি। তবে মায়ামীতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ। পুরো শহরটা মনে হয় সমুদ্রের উপর ভাসছে। আবাসিক এলাকা, বানিজ্যিক এলাকা, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, মানুষজন কোন কিছুর সাথেই আমেরিকার অন্যান্য শহরের অতো মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। পাহাড় বাদ দিয়ে টেকনাফের রাস্তাটা মিলিয়ে দিয়ে চিটাগাংকে আরেকটু পরিকল্পিত, পরিচ্ছন্ন আর কম ভিড় করলে যে রূপটি পাওয়া যাবে তার সাথে এই শহরটার মিল আছে। আছেই বাহামা আর কিউবা। শহরের মানুষগুলো অধিকাংশই সেখান থেকে এসে এখানে বসতি গড়েছে।
আমেরিকান সংস্কৃতির একটা অংশ হলো এদের বাথরুম কিম্বা শুধু টয়লেট (এখানে রেস্টরুম বলে) খুব সুন্দর হয়। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন, সাজানো-গোছানো, ঝকঝকে ফিটিংশ। কিন্তু মায়ামী থেকে যতোই দক্ষিনে যাচ্ছিলাম বাথরুমগুলো ততোই বেশি অ-আমেরিকান হচ্ছিল। বিভিন্ন পাবলিক সার্ভিসের অবস্থাও তথৈব।
আমেরিকার দক্ষিনের শেষবিন্দুটির নাম কী-ওয়েস্ট। যে রাস্তাটা দিয়ে সেখানে যেতে হয় সেটা কখনও ব্রীজ কখনও রাস্তা – আটলান্টিকের উপর ভেসে থাকা কতোগুলো ছোট্ট ছোট্ট দ্বীপকে সুতোর মতো জোড়া দিয়ে একতানে ধরে রেখেছে। কী-ওয়েস্ট একরত্তি একটা দ্বীপ। চারপাশ দিয়ে গালফ অফ মেক্সিকো, ক্যারিবিয়ান আর আটলান্টিক ঘিরে রয়েছে। দ্বীপটার দক্ষিন-পূর্বে আটলান্টিক ছুঁয়ে যাওয়া এক সৈকতে থামলাম। পানি উষ্ণ, স্বচ্ছ। নীল-নীল। কিছুটা শান্ত তবে তীরের পানিতে অনেক শ্যাওলা, মস ধরনের সামুদ্রিক উদ্ভিদ ভেসে আসে। তীরে গিয়ে পানি ধরলাম। জীবনে সেই প্রথম সরাসরি কোন মহাসাগরকে স্পর্শ করা। এর আগে যা ছুঁয়েছি তার সবই ছিল উপসাগর।
সৈকতের পাশেই একটা রেস্টুরেন্টে আমরা রাতের খাবারের জন্য ঢুকলাম। তখনও দিনের আলো নিভে যায়নি। আটলান্টিকের পাশে বসে আটলান্টিকে ধরা মাছের স্বাদ নিচ্ছিলাম। আস্তে আস্তে আলো নিভে আসলো। রেস্টুরেন্টের ভেতরকার বৈদুতিক আলোয় বাইরের অতলান্িতক এক রহস্যোময় রূপ নিচ্ছিল। দূরে টিম টিম করে ভেসে যাওয়া কোন জাহাজের আলো দেখে বার বার ফিরে যাচ্ছিলাম অতীতে। কলম্বাস,ভাস্কো দ্যা গামা বা জেমস স্মিথ মতোই হয়তো কোন অদম্য সাহসী কোন অভিযাত্রী একদিন এখানে থেকে মাস্তুল করে দক্ষিন আমেরিকা আর আফরিকার পাশ দিয়ে সোজা দক্ষিন-পূর্বে চলে গিয়েছিল নতুন কোন ভূখন্ডের সন্ধানে। কিন্তু হায় এখানে থেকে অতলান্টিক যে সোজা শেষ হয়েছে দক্ষিন মেরুর আন্টার্টিকায়। হয়তো সে নাবিকের আর ফিরে আসা হয়নি। আমরাও জানতে পারিনি তার নামটি। এভাবে না ফেরা নাবিকেরা জানিয়ে দিয়েছে আর নতুন কোন পৃথিবী ওখানে ঘুমিয়ে নেই। এভাবে হাজারো সফলতা আর ব্যর্থতার ইতিহাস মানবসভ্যতার জ্ঞানভান্ডার করেছে সমৃদ্ধ। দূরের জাহাজের ঐ টিমটিমে আলোর মতোই আমরা মশাল নিয়ে এগিয়ে চলছি। ঠিক যেন রিলে রেস।
মালা গাঁথার সুতোর মতো কীওয়েস্টের সেই রাস্তাটা দিয়ে মায়ামী ফেরার পথে মু© আমি নির্ঝরকে বললাম, ‘এমন একটা সুন্দর ভ্রমনের জন্য উপহার স্বরূপ ঠিক করলাম আগামী তিনমাস তোমার সাথে কোন ঝগড়া করবো না। এমন কী তুমি শুরু করলেও না।’
’আমি আবার কবে ঝগড়া শুরু করলাম?’
অনেক সময় এ কথার উত্তর দিতে গিয়েই ঝগড়া বেঁধে যায়। যেহেতু মনে এখন মোগল সাম্রাজ্যের প্রাচুর্য তাই কোন কথা না বলে বাইরের অপূর্ব দৃশ্যাবলী দেখতে লাগলাম।
দুঃখের বিষয় সে রাতেই ঝগড়া হলো।
৬
মায়ামী এসে যখন পৌছলাম তখন রাত বারটা বাজে। হোটেলের মানুষগুলো জানি কেমন। বোধহয় কিউবান, মেক্সিকান আর স্প্যনিস বংশোদ্ভুত হবে। পোষাক-আশাক চালচলনে একটা মাফিয়া মাফিয়া গন্ধ পাচ্ছিলাম। মেয়েগুলোকে দেখে জুলিয়া রবার্টসের প্রেটি ওমেনের কথা মনে পড়ছিল। হোটেল লবী অপরিসর। বসার জায়গা নেই। রেজিস্টারের জায়গাতেই বার। সেখানে আবার মাফিয়া আর প্রেটি ওমেনরা ভীড় করে বসে আছে। রুমের চাবি হাতে দিয়েই নির্ঝর চলে গেল গাড়ি ঠিক জায়গায় পার্কিং করতে। বাচ্চাদেরকে শ্বশুর-শারুরীর রুমে রেখে লবীতে গেলাম ব্যাগ আনতে। এক মাফিয়ারূপী (অ)ভদ্রলোকের থেকে কিছু খারাপ কথা শুনলাম। আমার এগারো বছরের প্রবাস জীবনে সেই প্রথম ইভ টিজিং শোনা। দেশে থাকতে পারার মাস্তানরা পর্যন্ত সম্মান করতো। এখন এই বয়সে এসব কী? মেজাজটা টং করে খারাপ হয়ে গেল। রুমে গিয়ে বাথরুমের অতি অ-আমেরিকান অবস্থা দেখে টং-টা ঢং ঢং করতে লাগলো। বাচ্চারা রুমে এসে এমন লাফালাফি শুরু করে দিল যে কোনভাবেই তাদের শান্ত রাখা যাচ্ছিল না। নির্ঝর রুমে ঢুকে সাথে সাথেই আমি টগবগ খই ফোটাতে লাগলাম,‘নিশ্চয় তুমি খুব ভালো ডিল দেখে সস্তার এই হোটেল ঠিক করেছো। এখানে কোন ভদ্র মানুষ থাকে?’ ইত্যাদি ইত্যাদি —-
হোটেল ঠিক করার সময় মায়ামীর সবচেয়ে বিখ্যাত সৈকতকে প্রাধান্য দিয়েছিল যাতে হেটেই সৈকতে যাওয়া যায়। পরদিন সকাল বেলা বাচ্চাদেরকে ওদের দাদা-দাদির জিম্মায় রেখে দুজনে হেটে হেটে বীচে গেলাম। এরকম জীবনত বেওয়াচ চোখের সামনে অভ্যস্ত হয়ে উঠিনি। উন্নত দেশের উষ- সৈকতের উষ-তার আঁচে এখনও অভ্যস্ত হয়ে উঠিনি। সিলিকন ভ্যালির শীতল সৈকত নিয়ে যে দুঃখ ছিল তা এক নিমেষে উবে গেল। আসলে সুখ-দুঃখ, সফলতা-ব্যর্থতা, আনন্দ-বেদনার মাঝের সীমারেখাটা যে আসলেই খুব সূক্ষ্ন সেটা বেশ বুঝতে পারলাম। যাকে এতোদিন বেদনার কারণ হিসেবে ভেবে এসেছি, তাই এখন আনন্দময়ীর রূপে প্রতিভাত। কোন সেন্সরশীপের চিন্তাভাবনা করতে হয় না। যখন তখন যে কোন সৈকতেই আমরা বেড়িয়ে আসতে পারি। দুজনেই স্বীকার করলাম বাচ্চা-বুড়োদের আর এই সৈকত দেখিয়ে কাজ নেই। যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব এখান থেকে বেরুতে হবে। গতরাতে
গাড়ি রাখতে গিয়ে নির্ঝরের অভিজ্ঞতাও খুব একটা ভালো হয়নি। গ্যারাজে নাকি ওকে দুজন প্রেটি ওমেন ধরেছিল।
আমার এই হাজি সাহেব বরটাকে নিয়ে প্রেটি ওমেনদের টানাটানি এর আগেও খেয়াল করেছিলাম।
৭
বিয়ের প্রথম প্রথম সুযোগ পেলেই আমরা ঘুরতে বেড়িয়ে পড়তাম। যেহেতু নির্ঝর ক্যাডেট কলেজে পড়েনি তাই সে জানে না নিয়ম ভাঙ্গার মজাটা কী। একদিন রাত তিনটার সময় সান ফ্রান্সিসকো যেতে চাইলাম। ‘ঐ সময়টায় তো শহরটা অতো নিরাপদ থাকে না –‘
]‘ ও এরকম হালকা হালকা কিছু বললেও শেষ পর্যন্ত সেখানে গেলাম। ঘুরেফিরে রাতের শহর দেখতে লাগলাম। ফিশারম্যান ওয়ার্ফের সেই জমজমাট ভীড়টা নেই, ফাস্ট স্ট্রীট আর মার্কেট প্লেসের কোনায় এক মনে বাজিয়ে চলা সেই বেহালাবাদক তখন উধাও। তার বদলে দেখলাম হঠাৎ করেই একটা গাড়ি ঘ্যাচ করে ব্রেক কষলো। দরাদরি শেষে এক প্রেটি ওমেন সে গাড়িতে উঠে পরলো। লালবাতি জ্বলতে থাকায় আমাদের গাড়ি থেমে ছিল। পাশেই আরেক গাড়ি থামলো। সে গাড়িতে চারটা অল্পবয়সী ছেলে। কোন গ্যাঙ্গের সদস্য হবে বোধহয়। আর বেশিক্ষন সেখানে থাকার ইচ্ছে হলো না। ভাবলাম স্টারবাস্ট থেকে একটা ফ্রেঞ্চ ভ্যানিলা ক্যাপাচিনো কিনে ফেরত যাই। এখানে পার্কিং এর ঝামেলা। গাড়িতে নির্ঝর অপেক্ষা করছিলো। কফি কিনে ফেরত এসে দেখি দুজন প্রেটি ওমেন গাড়ির জানালা ঘেষে দাড়িয়ে আছে। নির্ঝরের খুব কাছাকাছি।
৮
অনেকেই দেশ বলতে শুধু আত্নীয়স্বজন মূলত বাবা-মাকেই বোঝে। কিন্তু আমি দেশ বলতে দেশই বুঝি। যেখানে আমার শেকড়, বেড়ে উঠা। আমার শৈশব কৈশোর তারুন্যের প্রতিটি পরতে পরতে হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, আশা-নিরাশা, স্বপ্ন দেখা, হতাশ হওয়া, জেগে উঠা, প্রেমে পড়া – এরকম নানান অনুভূতি পসফুটিত হয়েছে দেশেরই জলবায়ুতে। কালবৈশাখীর দমকা হাওয়া, বর্ষার বৃস্টি, শরতের কাশফুল – শেফালী ফুলেরা, শীতের শিশির, বসন্েতর বাহারী রং থেকে শুরু করে পথের বাহারী পথিক, হরতাল-ধর্মঘট, ধূলাবালি, দৈনিক পেপার, বাংলা সাহিত্য, টিভি নাটক সব কিছুই কাছেই কৃতজ্ঞ ভেতরের মানুষটা। তাই প্লেন দেশের মাটি স্পর্শ করলেই এখন কেঁপে উঠি। চোখে পানি চলে আসে। এয়ারপোর্টের দেশি মানুষগুলোকে খুব আপন মনে হয়। উত্তরা থেকে বাড়ি ফেরার পথে যখন গাড়ির সামনে ঘ্যাচ করে লোকাল বাসটা থেমে যায়, কন্ট্রাকট্র নেমে রিক্সাচালকের পিঠে একটা বাড়ি দিয়ে রাগত স্বরে রিক্সা সরাতে বলে তখন একটা বড়সর শ্বাস নিয়ে অনুভব করি আসলেই বাড়ি ফিরে এসেছে। এত্তোদিন বড়ই একুইরিয়ামে ছিলাম।
শেষবার যখন দেশে গিয়েছিলাম তখন বর্ষাকাল ছিল। সেই বর্ষার মধ্যে মেঘনার বুকে নৌকায় চড়েছি, বৃষ্টির ঝালরের মধ্যে দিয়ে মাধবকুন্ডের জলপ্রপাতকে নেমে যেতে দেখেছি, ইলশে গুঁড়ি মাথায় নিয়ে কক্সবাজারের সৈকত ধরে অনেকদূর হেঁটে গিয়েছি। সেই সমুদ্র সৈকতের সামনে দাড়িয়ে রাসীন আমার হাতটা চেপে ধরেছিল। আস্তে করে বললো, ‘মামনি তোমার কথাই ঠিক।’ এর আগে সে বিশ্বাসই করতে চায়নি যে বাংলাদেশে আমেরিকার থেকে বড় কিছু থাকতে পারে।
আমি একটু গর্বিত ঠং এ বললাম, ‘আসল মজাটা তো এখনও দেখনি। এখানে আমরা ইচ্ছে মতো লাফালাফি করবো। ঢেউয়ের সাথে খেলা করবো। তোমরা শুধু সাবধানে আমাদের হাতটা ধরে রাখবে। যখন বলবো তখন একটা লাফ দেবে। দেখবে পেছন থেকে ঢেউ এসে তোমাদের সামনের দিকে অনেকদূর ভাসিয়ে নিয়ে যাবে।‘
রাইসার তখনও তিন বছরও পূর্ণ হয়নি। সিলিকন ভ্যালির শীতল সৈকতে এর আগ পর্যন্ত শুধু হাটু ভেজানোর অভিজ্ঞতা ছিল। ঢেউয়েরা যে এতো দুষ্টুমি করে বন্ধুর মতো খেলতে পারে তা ওদের জানা ছিল না। ওদের সাথে সাথে আমাদেরও বয়স কমে যায়। নির্ঝর অনেক ভেতরে চলে যায়। মাঝে মধ্যে শুধু মাথাটা ভেসে থাকতে দেখি।
ঢেউয়ের সাথে বাচ্চাদের খেলা করা দেখি আর দেখি অনেক দূরে দাড়িয়ে বাচ্চাদের দাদা-দাদিদের শুকনো সমুদ্র দর্শন। মনে পড়ে যায় এই সৈকতের সাথে মিশে থাকা আমার নিজের জীবনের কৈশোর আর তারুন্যের উচ্ছ্বাস্ময় স্মৃতি। এই একই সৈকতে এসেছিলাম একবার ক্যাডেট কলেজে থাকতে পুরো ক্লাসসহ। আরেকবার বুয়েটে থাকতে আমাদের ব্যাচের ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্ট। সবাই মিলে দুবারই এত্তো এত্তো মজা করেছিলাম। এখনও পুরোনো বন্ধু-বান্ধবীরা এক হলে সেসব দিনের স্মৃতিচারন করতে করতে আবেগাপ্লুত হয়ে উঠি। মনে হলো সেসব তো এই সেদিনের কথা। কীরকম মুহূর্তের মধ্যে সেসব দিন পার করে ফেললাম! আরো কয়েক মুহূর্ত পড়েই তো বুড়ো হয়ে যাব। তারপর তো মরে যাব, ক্ষয়ে যাব। অথচ এই সৈকত ঠিকই তার তারুন্য ধরে রাখবে। যে এখনও জন্মেনি, সে তরুনকে প্রভাবিত করে তার বলয়ের মধ্যে নিয়ে আসবে। অসম পাঞ্জা লড়ার এক হাস্যকর ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।
ঢেউএর পিঠে ঢেউ এসে গড়ে উঠে মহাসমুদ্র। ঠিক তেমনি জীবনের পরে জীবন এসে সৃষ্টি করে চলে মহাজীবনের। মহাজীবন মহাসমুদ্রের শক্তিকে জয় করার চেষ্টা করে বুদ্ধি দিয়ে। এর শুরুটা আদি, শেষটাও হোক অন্তত। কিন্তু এই অন্তত্বের মাঝে বাঁধা হয়ে দাড়ায় দুজনকার দ্বন্ধ। একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগটাও সমানে সমান। কখনো আইলা, কখনো নার্গিসরূপে মহাসমুদ্র কেন এতো নিষ্ঠুর হয়ে উঠে? আবার নদী দূষিত করে, সৈকত কলুষিত করে, এমনকি মহাসমুদ্রের গর্ভে যতোসব আবর্জনার স্তুপ জমিয়ে মহাজীবনও রাগিয়ে দিচ্ছে তাকে।
এর শেষ কোথায়?
৯
শেষবার যখন দেশে গিয়েছিলাম তখনকার কথা। ছয়জন সদস্য তিনটা রিক্সা নিয়ে ভোরবেলা বাসা থেকে বেরুলাম কক্সবাজারের বাসের উদ্দেশ্য। রাইসা আর আমি মধ্যের রিক্সায় ছিলাম। সামনের রিক্সায় রাসীন আর নির্ঝর। পেছনে শ্বশুর আর শাশুরী। সেবার ছোট ভাইয়ের বিয়ে নিয়ে এতো ব্যস্ত ছিলাম যে ভ্রমনের কোন কিছুই আমি জানতাম না। সব পরিকল্পনাই নির্ঝরের করা।
ঢাকা শহরে ভোরেও ভীড়ভাট্টা একেবারে কম থাকে না। এই ভীড়ের মধ্যে হঠাৎ করে মাঝে আমাদের রিক্সাটাই দলছুট হয়ে গেল। রিক্সাচালক যেখানে থামালো নেমে দেখি পরিবারের বাকি সদস্যরা সেখানে নেই। এদিকে আমার কাছে মুঠোফোন নেই। কারু ফোন নাম্বারও মুখস্ত নেই। রিক্সায় উঠার আগে হাতব্যাগটা নির্ঝরকে দিয়ে দিয়েছিলাম। মহা বিপদ। লক্কর ঝক্কর বাসগুলোকে দেখে মনে হলো আর যাই হোক নির্ঝর এ বাসগুলোর টিকিট কাটবে না। লোকজনকে জিজ্ঞেস করে একই রিক্সা করে বাস ছাড়ার পাঁচ মিনিট আগে আসল জায়গায় এসে পৌছলাম। শ্বশুর ব্যস্ত পায়ে হাটাহাটি করছিলেন। শাশুড়ি দোয়াদরুদ পরতে শুরু করে দিয়েছিলেন। তাদের আশংকা ঢাকা শহরের জনারন্যে হারাতে তো আর বেশি সময় লাগে না। বলা যায় না কোন মলম পার্টির খপ্পরেও পরতে পারি। ছিনতাই, হাইজ্যাকারেরও তো কমতি নেই।
একেবারে শেষ মুহূর্তে আমাদের দেখে ওনাদের ধরে প্রাণ ফিরে আসলো। আর নির্ঝর আমাকে দেখে ওর সেই চিরচেনা ঠোট চাপা রহস্যময় হাসিটি দিল। সে মুহূর্তে যার মানে দাড়ায় – আমি জানতাম এমনটা হবে।
নির্ঝরের ধারণা অঘটন আর আমি – দুটোই যেন সমার্থক শব্দ, একজন আরেকজনের ছায়াসঙ্গি। আমি কোন মিশনে থাকলে একটা না একটা অঘটন ঘটবেই। তবে পরিশেষে সব বাঁধা জয় করে কিভাবে কিভাবে জানি মিশন সফল করে ফেলি। ঠিক যেন জেমস বন্ড।
৭-১৪-১০
পেরথম নাকি? 😀
কত্তদিন পর 🙂
খুব ভাল লাগল আপু, ঝরঝরে লেখা...... 🙂
৫ঃ১৩ থেকে ৫ঃ৫৭ - আসলেও কী ৪৪ ্মিনিট লাগছে?
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
😛
পড়ার মাঝে উঠে এক জায়গায় গিয়েছিলাম, ফিরে এসে কমেন্টাইলাম 🙂
কাজ থেকে মাত্রই বাসায় ফিরে পুরো লেখাটা একটানে পড়ে ফেললাম! খুব ভাল লাগলো আপু, আপনার আপন মানুষগুলোকে যেন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলাম একদম!
আপাতত পাঁচ তারা। 🙂
www.tareqnurulhasan.com
ধন্যবাদ তারেক।
তোমার এই লিংক, সেই লিংক থেকে তোমার সমান্তরাল গল্পটা পড়ে আমি খুবই মুগ্ধ। তোমাকে একটা ইমেইল করতে চাইছিলাম।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
🙂 আপু, অনেক ধন্যবাদ।
আমার মেইল আইডি হচ্ছে- tareqnurulhasan এট জিমেইল ডট কম।
www.tareqnurulhasan.com
ধন্যবাদ ইমেইল এড্রেসের জন্য।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
ফিরে আসার জন্য সশস্র :salute:
=))
লেখাটা বরাবরের মতোই সহজ আর সাবলীল ।
কে জানি ফিরে আসে - দর্পনের দিকে তাকান।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
:just: :gulli2:
এইটা কি কইলেন বস?
আমিতো নিয়মিত পড়ি আর কমেন্ট করি। 😀
অত্যন্ত চমৎকার লাগলো ওয়াহিদা আপু। :boss: :boss: :boss:
তোমাকে তো বলছিলাম বাচ্চাদের নিয়ে লিখবো। কিন্তু লেখা শুরু করার পর দেখি তা বাচ্চাদের বাপকে নিয়েই বেশি লেখা হয়ে গেছে। ভদ্দরলোক এখনও জানে না।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
জ্বী আপু, তাই তো দেখছি।নির্ঝর ভাই খুবই লাকি মানুষ। আপনার লেখাগুলো পড়লেই বোঝা যায় (যেগুলোতে উনার কথা লিখেছেন), টিনএজ মেয়েরা প্রথম প্রেমে পড়লে প্রেমিককে যেমন জানপ্রান দিয়ে ভালোবাসে, আপনি নির্ঝর ভাই এখনো সেই রকম ভাবেই ভালোবাসেন।
মইনুল ভাইয়ের সাথে ২০০% ভাগ সহমত। আমি এইকথা বলতে চাচ্ছিলাম 🙂
@শান্তাপু
লেখা পড়ে পড়ার ক্ষুধা মিটেছে।
্তাই মনে হয়েছে তোমাদের? তাহলে পেছনের রহস্যটা একটু খোলাসা করি।
এখনও বুঝে না থাকলেও অচিরেই বুঝবে (অবশ্য নাও বুঝতে হতে পারে) দাম্পত্য সম্পর্কটার ক্ষেত্রে একদম শর্তহীন ভালবাসা কাজ করে না। আমি ভালবাসি তার কারণ ভালবাসা চাই বলে। প্রথমে না বুঝেই তো আমরা সংসার শুরু করি। তারপর পেঁয়াজের পলতার মতো আস্তে আস্তে এর ভেতরের ্রহস্যটা বুঝতে শিখি। অনেক উথথান- পতনের মধ্যে গিয়ে এক সময় আবিষ্কার করি পজেটিভ পেরেন্টিংএর মতো পজেটিভ স্পাউজিংও ভালো কাজে দেয়।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আপনার এই মন্তব্যে 'লাইক'। :thumbup:
পজেটিভ স্পাউসিঙ্গের ওপরে আপনার একটা লেখা আশা করছি 🙂 🙂
সহমত ।
সহমত
শান্তা,
ভোর ৫টা থেকে জেগে আছি, এ বয়সে সাধারণ ঘটনা। পরে উঠে পরে তোমার লেখা পড়া শুরু করলাম। আস্তে আস্তে অনেকক্ষণ ধরে পড়লাম। ভাল লাগলো খুব। খুব সহজেই যেন তোমার সব বলা ও না বলা কথা গুলি বুঝতে লাগলাম।
বেচারা নির্ঝর - প্রেম করে ক্যাডেট কলেজ ও বুয়েটে পড়া মেয়েকে বিয়ে করার মধ্যে একটা প্রচন্ড জয়ের আনন্দ আছে সন্দেহ নেই, কিন্তু যে মেয়ে এখনো তার নিজের মনকে সম্পূর্ণ আবিস্কার করতে পারেনি - তার সাথে পা মিলিয়ে চলা কি চারটিখানি কথা?
অত বেশী না বুঝলেই কি নয়? যত বেশী বুঝবে, ততই দেখবে সব কিছুই অর্থহীন।
খুবই ভাল লেগেছে।
মন্তব্যগুলির ভিন্ন মানে করবে না, আশা করি।
ধন্যবাদ সাইফ ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
কথাটা নির্ঝর না আমার জন্য প্রযোজ্য।
কেন জানি এখন পর্যন্তও তা মনে হচ্ছে না।হয়তো আসলে কিছুই বুঝিনি।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
হাহাহাহা...পিরা গেলাম
পাঁচতারা :clap:
তা সাব-এডিটর সাহেব দিনকাল কেমন যাচ্ছে?
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
ইয়ে মানে ...... আমার এক ধাপ উন্নতি হইয়াছে :shy:
আপনাকে একটা মেইল করছি, দেখেন নাই? 🙁
আমিও ইমেইল করতেছি।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
অনেকদিন এরকম ঝরঝরে, চমৎকার লেখা পড়িনি।
লেখাটা খুব, খুব ভালো লাগলো শান্তাপু।
আপনার বুড়ো হওয়া হবে না দেখবেন, সবসময় তারুণ্য ঠিকই ধরে রাখবেন। 🙂
আসলেও তারুন্য তো মনে এবং ব্লগে তাই না?
ভালো আছো তানভীর?
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আমি ভালো আছি আপু, আপনারা সবাই কেমন আছেন? 🙂
চলতেছে দিনকাল।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আম্রিকা যাপো :(( :((
আমিও বেড়াইতে খুব পছন্দ করি । অধিকাংশ ক্যাডেটই ঘুরতে ভালোবাসে দেখেছি । জীবনের একটা বড় সময় গন্ডিবদ্ধ হয়ে কাটায় বলেই কি না জানি না , অজানা জায়গার দিকে এদের টান মাশাল্লাহ 😛
আম্রিকাতে আমন্ত্রন রইলো। মানুষের ভেতরকার মানুষটা সবসময়ই অজানার পেছনে ছুটতে চায়।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
পুরা সেইরাম !! একটানে পড়ে গেলাম ...
মিয়ামি তে কিছু ঘটনা এখানেই বলে দেই:
মিয়ামি শহরের ভেতরে একটা জায়গার নাম হিয়ালেয়াহ, পুরা হিস্পানিক এরিয়া (অনেকটা নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশী এরিয়ার মতন)। সেখানে এক হোটেলে ঢুকে রেস্টরূম কোথায় জিজ্ঞাসা করতে গিয়ে দেখি দোকানদার ইংরেজী বুঝেই না, আমিও স্প্যানিশের অ টাও জানি না। মুখ দিয়েই হিসসসসস শব্দ করে (একটু অন্গভন্গিও ছিলো সাথে 😉 ) বুঝালাম কি চাই 😉 😉 ভাগ্য ভালো পরে খাবারের অর্ডার দিতে গিয়ে অন্তত এটা জানতাম কোনটা পর্ক আর কোনটা চিকেন। নাইলে সেটাও ভন্গি করাটা একটু হাস্যকর হতে পারতো 😉 😉
মিয়ামি এয়ারপোর্ট থেকে কোস্টারিকার প্লেনে উঠার কথা, আমার নাম আর তিন চার দিন শেভ না করা মুখ দেখে টিএসএ (ট্রান্সপোর্ট সিকিউরিটি) এর বেশ সন্দেহ হয়েছে। যতই বলি আমি সরকারী বিজনেসে যাচ্ছি আর আমার সহকর্মীরা ইতিমধ্যেই চলে গেছে ... কানে কিছুই ঢুকে না তাদের। যাই হোক, নিয়েগেলো 'কোয়েশ্চেনিং' এর জন্য। সার্চ করবে এক অতীব সুন্দরী মহিলা ... ড্রেস ও সেরকম। সার্চ শেষে বল্লাম আবার সার্চ কর, শিউর হওয়ার জন্য 😉 😉 চাইলে আরো দুবারও করতে পারো। হাসি দিয়ে বল্ল 'ভেরি ফানি, কফি খাবা?'।
পর্ক বাছলা আর সেরাম ড্রেস পড়া বেগানা মাইয়ার হাতে দুইবার সার্চড হতে চাইলা --- দুনিয়াতে ইন্সাফ বইলা আর কিছহু নাই।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
তওবা তওবা .... কি যে কন 😉
ইন্সেনটিভের ব্যাপার আছে না 😉 😉 নির্ঝর ভাইরে জিগায়েন 😉
ইফতেখার ভাই,
এক্কেবারে মুভির মত-"কফি খাবা" থেইকা শুরু আর শেষটা সেন্সর্ড 😀 জাতি ব্যক্তিগত মেইল আকারে বিস্তারিত জানতে চায়...
কবি সেখানে নীরব 😉
খুউব ভাল লাগলো আপা লেখাটা।
ধন্যবাদ ্তোমাকে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
কাজ থেকে মাত্রই বাসায় ফিরে পুরো লেখাটা একটানে পড়ে ফেললাম! খুব ভাল লাগলো আপু, আপনার আপন মানুষগুলোকে যেন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলাম একদম!
আপাতত পাঁচ তারা। :clap:
ভালোই লিখছো।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
মুগ্ধ হয়ে পড়লাম প্রিয় ব্লগারের লেখা! এতো সাবলীল যে মনে হলো সব দেখে ফেললাম পড়ার সাথে সাথে। একটা লেখার ভিতরে অতীত বর্তমান মিলে কতগুলো গল্প! সত্যি দারুন, শান্তা আপা!
বম্বেতে বছর ছয়েক আগে একটা ক্যাম্পে ছিলাম চার দিনের মতো গোঁরেগাও নামের একটা মহল্লায়। সেখানে বাংলাদেশ টেন্টের কাছেই নিখিল ভারত সমকামী ও বৃহন্নলা সংগঠনের প্রতিনিধিত্বকারী দুই উপ-সংগঠন হামসাফার এবং সাথিয়ার টেন্ট। সেইটা ছিল এক মহা অভিজ্ঞতা। আমেরিকার একটা শহরের রেইনবো জোনে যাওয়া হয়েছিল ঘটনাক্রমে। আপনার গে, লেসবিয়ান আর ট্র্যান্সজেনডারদের কথা পড়ে আবার সেই সব সময়ের কথা মনে পড়লো।
হুমঃ ... বায়ুপরিবর্তন / তীর্থভ্রমনে তাহলে স্যান ফ্রান্সিসকো আর মায়ামী যাওয়াই যথার্থ। ভবিষ্যত লিস্টে রেখে দিলাম।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
ধন্যবাদ রাব্বী। আচ্ছা তুমি কী করো বা পড়ো? ভারতের ক্যাম্পিংটা কোন প্রোগ্রামের মধ্য ছিল?
স্যান ফ্রান্সিসকোতে ঘুরে যেতে পারো।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
শান্তা আপা, কার্লটন ইউনিভার্সিটিতে এ্যানথ্রোপলজি পড়ছি। ক্যাম্পিংটা ছিল ওয়ার্ড সোশাল ফোরামের সামিট, ২০০৪-এ ভারতে হয়েছিল।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
একটানে পড়লাম, বরাবরের মতই খুবই ভালো লাগলো আপু। ভালো থাকবেন।
"Never think that you’re not supposed to be there. Cause you wouldn’t be there if you wasn’t supposed to be there."
- A Concerto Is a Conversation
আশহাব ধন্যবাদ তোমাকে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
একটানে পড়ে ফেললাম.... :boss: :boss:
এক টানে পড়ার পর রক্ষা পেয়ে মনে হয় খুব খুশি হইছো।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
ভালো লাগল, খুউব।
লগ ইন করলাম শুধুমাত্র এই লেখাটাকে পাঁচতারা দেওয়ার জন্য।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
আমার ভাংগা ঘরে তারার আলো - এ আলো আমি রাখবো কোথায়?
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
ভাল থাকুন এই কামনা করি।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
লেখার আয়তন দেখে তোমার কী ধারনা আমার মাথা বিগড়ায় গেসে। আমি ভালো নাই?
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আবারো একটি অসাধারন লেখা। আসলেই জীবনের কত গল্প, এই গল্পগুলোই কেউ অসাধারন ভাবে লিখতে পারে, কেউ পারে না।
ধন্যবাদ রবিন।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
নূরাপ্পু,কিছু কিছু মানুষ আছেন যাঁরা আমাদের মত হৈচৈ হয়তো পছন্দ করেন না,হাসিঠাট্টা হাহাহিহিহোহো তেও এঁদের খুব একটা দেখা যায়না।কিন্তু এর মানে এই না যে এঁদের রসবোধ প্রখর না।মাঝে মাঝে সবার কথার একফাঁকে এঁরা এমন একটা দুইটা কথা বলেন যে হাসতে হাসতে সবার পেটে ক্ষিল ধরে যায়।আমি বাজি ধরে বলতে পারি আপনি এই দলের মানুষ!
লেখাটা মাত্র একবার পাখির চোখে পড়লাম, জিম থেকে এসে পুরোটা রসিয়ে রসিয়ে পড়ব।পেটের ক্ষুধা মেটাতে পাশে থাকবে ইয়া বড় এক গ্লাস কোক আর একটা মোটাসোটা আমেরিকান বার্গার, আর মনের ক্ষুধা মেটাতে আপনার এই ব্লগ।
পাঁচ তারা আপু!!
:-/
ছোডু ভাই আমার রসবোধ নিয়ে আপনার বিশ্লষন একদম ১০০% সঠিক। তবে আপনি কোটেশনটা প্রাসংগিক করেন নাই মনে হচ্ছে। এইটা আমি অন্য ওরিয়েন্টশন বুঝাইছিলাম।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
:shy: ইয়ে,বুঝতে পারছি বলেই তো এই কমেন্ট দিলাম :shy: আমি তখন নির্ঝর ভাইয়ের মুখভঙ্গিটা কল্পনা করছি!
শান্তাপু, গতকালই আপনার লিখা পড়ে ফেলসিলাম, কোন এক অদ্ভুত কারণে কমেন্ট করা যাচ্ছিল না, তাই ঠিক তখনকার অনুভূতিটা ঠিকমত লিখতে পারলাম না, কিন্তু লিখাটা যে কি চমৎকার হইছে, এইটা গুছায়ে লিখা সম্ভব না আসলে।
মেলিতা ভাবীর মত বললে বলতে হয়, লেখা পড়ে ক্ষুধা মিটেছে। এত বড় একটা লিখা, কিন্তু পাঠককে টেনে রাখার রহস্যটা যে আসলে কি, তা অনেক চিন্তা করেও বুঝতে পারলাম না।
আর মঈনুল ভাইয়ের মত আমিও পজেটিভ স্পাউসিং এর ওপর লেখা চাই।
লিখার থেকেও সবচেয়ে বড় কষ্ট হলো এডিটিং আর বানান শুদ্ধ করা।
লেখা থেকে কেন জানি ব্যক্তি মানুষটাকে আলাদা করতে পারি না। প্রতিটা লাইনই গভীর বিশ্বাস আর উপলদ্ধি থেকে লেখা বলেই হয়তো। পজেটিভ স্পাউসিং নিয়ে কিভাবে লিখবো সেটা নিয়ে আরেকটু পড়াশোনা করা দরকার মনে করতেসি। ধন্যবাদ সামিয়া।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
বি শা ল লেখা...
অথচ মুগ্ধতার সাথে একটানা পড়তে পড়তে মনে হল যেন ঝপ করে শেষ হয়ে গেল...
ভ্রমণ নিয়ে অনেক কথা আছে বলে, দুই একটা ছবি দিলে মনে হয় ভাল হত আপু...
অনেক অনেক ভাল থাকুন।
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
ডিজিটাল যুগ আসাতে ছবিগুলো হয় ক্যামেরাতেই থেকে যায় বা অন্য কম্পিউটারে সেভ করা থাকে। তবে মাথায় থাকলো। পরের বার ----
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
এমনিতেই মন্তব্য করতে গিয়ে কি লিখব খুজে পাই না তারপর আজকে মন্তব্য করতে এসে দেখি যা যা বলার ছিল তা কেউ না কেউ উপরে বলে দিয়েছে। আসলে এভাবে সোজা সরল ভাবে প্রতিদিনের গল্প লিখে যাওয়া খুব একটা সহজ কাজ না, সবাই পারে না। আর এজন্যই আপনার লেখা এত ভালু পাই শান্তাপু 🙂
কয়েকদিন আগে একজনের সাথে তর্ক হচ্ছিল, ব্লগে নাকি কেউ বড় লেখা পড়তে চায় না। তখন আপনার কথা মনে পরে নাই, নাইলে আপনার ব্লগের লিংক ধরিয়ে দিতাম 🙂
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
তোমার ছোট গল্পের খবর কী? এটা ঠিক মন্তব্য করার সময় দেখি আগেই সবাই সব কিছু বলে দেয়। তারপরও ব্লগে মন্তব্যকারীকে দেখলে মনে হয় আমার বাসায় বেড়াতে আসছে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
সবাই সব বলে দিয়েছে উপরের মন্তব্যগুলোতে। :((
আমি তাই কেবল ভালো লাগাটুকুই জানিয়ে গেলাম। আচ্ছা আপু বলেন তো, আপনি এতো কম কম লেখেন কেন? 🙁
অফটপিকঃ ক্ষেপনাস্ত্রে চাপিয়ে আপনার জন্য চা পাঠিয়েছিলাম, পেয়েছেন তো? 😀
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
চা পাই নাইক্কা তবে টিপস পাঠায়ে দিব।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
শান্তা,
লেখাটা গতকালই পড়েছি। একটানেই পড়ে গেছি। কিন্তু অফিসের কাজ থেকে ছুটি নিতে পারিনি বলে মতামত দিতে পারিনি।
কি বলবো লেখাটা নিয়ে, সবাই লিখেছে, তবু বলি, এককথায় অসাধারণ। আমাদের বেশ কয়েকটা স্টেট ভ্রমণ হলো। তোমার নির্মোহ চোখ দিয়ে দেখার দারুণ বর্ণনা পেলাম। কতো কিছু তুমি লেখায় এনেছো। অথচ পড়তে কোথাও হোচট খাইনি। ভ্রমণ কাহিনীতে আমারও ঠিক এইসব খুটিনাটি বিষয়গুলো পড়তে মজা লাগে। মানুষ, তার আচরণ, তার দেখা বা ছোঁয়ার সব জায়গাগুলো, পরিবেশ-প্রকৃতির কোমল কিম্বা রুক্ষ অনুভূতি- মনে হয় লেখার সঙ্গে নিজেরও একটা ভ্রমণ অভিজ্ঞতা যুক্ত হয়। তোমার লেখা বরাবরই সাবলীল। তবে দিন দিন আরো পরিণত হচ্ছে। লেখার অভ্যাসটা জিইয়ে রাখলে এটা আসবেই। তোমার ভবিষ্যত পরিকল্পনাটা এখনো অক্ষত আছে তো?
স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক! এমনই না? সম্পর্কে গভীরতা থাকবে। আবার বন্ধুত্বটা উপভোগও করতে হবে। দাম্পত্য সম্পর্কটা আমার কাছে মনে হয়, যতো দিন যায়, যতো বয়স বাড়ে, ততোই পরস্পরের ওপর নির্ভরতা বাড়ে, ভালোবাসাটা ততো সহজ-সরল গভীর হয়। সম্পর্ক থেকে শুধু একটা বিষয়কে শুরুতেই বিদায় করতে হয়, ঈর্ষা। ঈর্ষাও ভালোবাসার একটা চেহারা। তবে সেটাকে উদারতায় রূপান্তর না করতে পারলে বড় বিপজ্জনক! জ্ঞান দিচ্ছি মনে হচ্ছে!! এটা যে তোমার জন্য না, তা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছো। যারা আগামীর কথা ভাবছে, তাদের জন্য। নির্ঝরের জন্য শুভেচ্ছা।
তোমার লেখার শুরুটা ভীষণ মুগ্ধ করেছে। রাইসা আর রাসীনকে আদর দিও। ওদের ভাবনাগুলো কি মজার না? ভালো থেকো। আমাদের আরো আরো লেখা উপহার দিতে থাকো।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
অনেক সময় অনেক সুন্দর পোস্টে পরে মন্তব্য করবো বলে আর মন্তব্য করা হয় না। অনেক কমেন্টের ক্ষেত্রেও এ্মন হয়। যথারীতি আপনার মন্তব্য উতসাহব্যঞ্জক।আমার পরিকল্পনা এখন পর্যন্ত ঠিক আছে। কারণ এছাড়া আমি আর অন্যকিছু ভাবতে পারছি না।
আপনার জ্ঞান তো মহামূল্যবান। সেটা তো আপনি কমই দেন।
আপনি এখন আর লিখছেন না কেন? আপনার তো দুটো সিরিজ চলছিল।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আপা, লেখাটা পরে খুব ভালো লাগলো, ছবিগুলো চোখের সামনে দেখতে পেলাম যেন.
মাসরুফ: দিনকাল কেমন কাটতেসে ভাই?
এইটা কি মৌলি আপু নাকি???!!!!!কি সাঙ্ঘাতিক আপনি সিসিবিতে???!!!! রকিব্বা কই গেলি?শিজ্ঞিরি আমার চাচাতো বোনকে(সত্যি সত্যি) চা দে......
আপু,
একটু দেরিতেই আপনার লেখাটা পড়লাম।
অসাধারন। এককথায় অসাধারন।
সবার মন্তব্য পড়ে তারপরে লিখছি।
নতুন কিছুই বলার নেই, শুধু এটা ছাড়া,
হা হা হা =))
এই লেখাটাতে ৫ তারা না দিয়ে থাকা গেল না।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
নির্ঝর ভাইয়ের কপাল!!! 😛 😛
হা হা হা.........
আমি এই লেখাটা কম করে হলেও ৫/৬ বার পড়েছি,লেখার মায়া মায়া ভাবটা খুব টাচ করে আপু।সরাসরি প্রিয়তে এবং ৫ তারা 😀