একদিন স্বপ্নের দিন

আমার স্বপ্নগুলো সব সময় কেমন যেন আজব ধরনের হয়।

স্বপ্ন মানে ঘুমানোর পর যে স্বপ্ন দেখি সেই স্বপ্ন। আমি একদিন আব্বাস কিয়ারোস্তমির মতো ফিল্ম মেকার হবো, জীবনের সেই স্বপ্ন না।
আজব হয় কারন কেমন করে যেনো ঘুরে ফিরে সব স্বপ্ন ক্যাডেট কলেজে গিয়ে শেষ হয়। এমনকি ক্যাডেট কলেজ থেকে বেরিয়ে আসার এতোদিন পরেও আমার অনেক স্বপ্ন শুরুই হয় ক্যাডেট কলেজে।
অনেকে বিশ্বাস করবে না, কিন্তু এটা সত্যি।
আমি যেদিন প্রথম মোবাইল কিনলাম, ইউনিভার্সিটির ফার্স্ট ইয়ারে, সেই ঘটনাটাই বলি। টিউশনির বেতন পেয়ে আর মাসুদের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিয়ে (সেই ধার আজো শোধরানো হয়নি, কোনদিন চেষ্টাই করিনি। বন্ধুদের কাছে আমি চিরঋনীই রয়ে গেলাম) একটা গ্রামীন প্রি-পেইড সিম আর সাজেম সেট কিনে ফেললাম। মাসুদ নিজেই তখনো মোবাইল কিনেনি। কিন্তু তাতে কি! একটা মোবাইল নিয়েই দুজনে খুশিতে নাচতে নাচতে ইউনিভার্সিটির হলে ফিরে এলাম। দুজনে মিলে একটু পর পর একে এসএমএস করি তো ওকে মিসকল দেই। বন্ধু-বান্ধব দু-একজন যাদের মোবাইল আছে তাদের ফোন করে অকারনে বিরক্ত শুরু করলাম।
‘দোস্ত, মোবাইল কিনলাম তো’
‘আরে তাই নাকি মাম্মা’
‘নাম্বার হইলো ০১৭০৬…’
‘নাম্বার উঠছে তো আমার এখানে, সেভ করতেছি’
‘ও উঠছে! তাও খাতায় লিখা রাখ। যদি ভুইলা যাস আর কী’
‘আরে না না ঠিকাসে…’
এইভাবে পুরোটা সন্ধ্যা পার করে মাসুদ বিদায় নিলো আর আমি আমার রুমে ফিরে ঘুমাতে গেলাম। এবং যথারীতি একটা স্বপ্নও দেখালাম।

স্বপ্নের শুরুই হলো প্রিন্সিপাল প্যারেড দিয়ে। প্রিন্সিপাল স্টেজে দাঁড়িয়ে আছেন। এসিস্ট্যান হাউজ প্রিফেক্টের নেতৃত্বে আমাদের জুনিয়র স্কোয়াড তাকে ডানে সালাম দেয়ার জন্য এগিয়ে যাচ্ছে। প্রিন্সিপাল স্যারের সামনে যাওয়ার পর এসিস্ট্যান হাউজ প্রিফেক্ট বললেন ‘স্কোয়াড ডানে দেখবে, ডানে-এ এ এ দেখ।’ আমরা স্যালুট দিয়ে ডানে তাকালাম। এমন সময় আমার মোবাইল বেজে উঠলো। পুরো স্কোয়াডের বাকি সবাই আমার দিকে ঘুরে তাকালো। আমি পকেটে হাত দিয়ে মোবাইলটা বের করে রিংটোন অফ করতে যাবো এমন সময় প্রিন্সিপাল স্যার চিৎকার দিলেন- ‘কামরুল ফল আউট, ফল আউট। ব্লাডি শীট, প্যারেডে মোবাইল নিয়া আসছে।’ আমি ফল আউট হলাম। এডজুট্যান্ট স্যার, কয়েকজন স্টাফ দৌড়ে আসলেন। মোবাইলটা আমার হাত থেকে নিয়ে এডজুট্যান্ট স্যার বললেন ‘ইউ ড্যাম নাট, স্টার্ট ফ্রন্ট রোল।’ তারপর শুরু হলো পাঙ্গা। সব স্টাফ মিলে এমন পাঙ্গা দিলেন যে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো।

আমি উঠে থ। কলেজ থেকে বেরিয়ে এসেছি এতো বছর, তাও স্বপ্নে এসে স্টাফরা পাঙ্গা দিয়ে যান। এতো মহা মুশকিল।
আর স্বপ্নের ক্যাডেট কলেজেও মোবাইল নেয়া যাবে না, তাইলে ক্যামনে কী? স্বপ্নে মোবাইল নিতে দিলে কী এমন ক্ষতি?

এরপরের ঘটনাটা আরো কিছুদিন পরের………
বলা নেই কওয়া নেই আমি ইউনিভার্সিটির এক ক্লাসমেটের প্রেমে পড়ে গেলাম। যেনো তেনো প্রেম না। একেবারে দেবদাস-পার্বতী টাইপ প্রেম। ক্লিনিক্যাল বায়োকেমিস্ট্রির লেকচার আর ভালো লাগে না। স্যার বোর্ডে কী সব হাবিজাবি লিখেন আমার তাতে মন টানে না। আমি পিছনের সারিতে বসে আমার পার্বতীকে দেখি। পার্বতী অবশ্য আমার দিকে ফিরেও তাকায় না। তাকাবেইবা কেন? আমি তো আর বলিনি যে তাকে ছাড়া আমার জীবন কতো অর্থহীন!

ক্লাস শেষ হয়। পার্বতী ক্যান্টিনে যায়, আমিও তার পিছন পিছন ক্যান্টিন যাই! পার্বতী সস দিয়ে সিঙ্গাড়া খায়। সিঙ্গাড়া আমার খুব অপছন্দ। না খেয়ে মরে গেলেও আমি কখনো সিঙ্গাড়া খাওয়ার কথা ভাবি না। কিন্তু পার্বতীর দেখাদেখি আমিও সিঙ্গাড়ার অর্ডার দেই, তারপর সস দিয়ে সিঙ্গাড়া খাই আর পার্বতীকে দেখি! পার্বতী অবশ্য আমার দিকে ফিরেও তাকায় না।

এইভাবে ক্রমশ ক্লিনিক্যাল বায়োকেমিস্ট্রির সব লেকচার শেষ হয়ে যায়, মনে হয় ডিপার্টমেন্টের ক্যান্টিনের সব সিঙ্গাড়াও। কিন্তু পার্বতীকে আমার আর বলা হয় না যে তাকে ছাড়া আমার জীবন কতো অর্থহীন।

অবশেষে একদিন শরতের সুন্দর সকালে, সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে নাকি নামতে নামতে ঠিক খেয়াল নেই, দুনিয়ার সব সাহস সঞ্চয় করে আমি পার্বতীকে বললাম ‘ তোমার ভালোবাসা পেলে আমি হাতের মুঠোয় প্রাণ নেবো, দুরন্ত ষাড়ের চোখে বেধে দেবো লাল কাপড়। বলো, আমাকে ভালোবাসো।’
হায় কপাল! মুখ ঝাপটা দিয়ে পার্বতী বললো ‘ বানরের আবার সখ কতো!’

সিনেমার নায়ক যখন দুঃখ পায় তখন নাকি মদের ডিব্বা খুলে বসে। আফসোস, আমার তখন মদ কিনারও পয়সা নেই।
এমন করে কেউ বলে ! না হয় চেহারায় পুর্ব পুরুষের ছাপ একটু রয়েই গেছে, বিবর্তনটা আর সবার মতো আমার পুরোপুরি হয়নি। তাই বলে মুখের উপর এটা বলতে হবে। মনের দুঃখ আমি এখন কারে দেখাই? শহিদুল্লাহ হলের পুকুর পাড়ে মাঝরাত পর্যন্ত বসে থেকে টানা দেড় প্যাকেট গোল্ডলীফ শেষ করে আমি রুমে এসে ঘুম দিলাম। যথারীতি একটা স্বপ্নও দেখালাম।

আবারো ক্যাডেট কলেজ। ক্লাস ইলেভেনে পড়ি। সদ্য ইউনিভার্সিটি পাশ করে আসা এক তরুনী বায়োলজি ম্যাডামের প্রেমে পড়ে গেলাম। বায়োলজিতে আমি খুব দুর্বল। আমার জন্য ইটিডি হলো পারফেক্ট। কিন্তু ম্যাডামের বেশি কাছাকাছি থাকা যাবে, বেশি বেশি ম্যাডামকে দেখা যাবে এই চিন্তা করে আমিও বায়োলজি নিয়ে নিলাম। এবং একদিন হঠাৎ প্রেপ টাস্কের খাতা দেখাতে গিয়ে একা পেয়ে ম্যাডামকে বললাম ‘ম্যাডাম আপনাকে আমার খুব ভালো লাগে।’
‘সাট আপ, ফাজিল ছেলে। তোমার বেল্ট লুজ কেনো? সু পালিশ নাই কেনো? বদমাশ ছেলে, টার্ন আউট ঠিক নাই, বলে আমাকে ভালো লাগে!!’

ধমক খেয়ে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো। আমি বিছানায় উঠে বসে ভাবতে থাকলাম স্বপ্নে কি দেখেছি। আর তখনি আমার কাছে সব কিছু ফিলিপস বাত্তির মতো ফকফকা হয়ে গেলো।

পার্বতীকে আমি যখন ভালোবাসার কথা বলি তখন আসলে আমার টার্ন-আউট ঠিক ছিলো না!

১৯,১৩৭ বার দেখা হয়েছে

১৫৪ টি মন্তব্য : “একদিন স্বপ্নের দিন”

  1. সামিয়া (৯৯-০৫)

    =)) =))

    পার্বতীর দেখাদেখি আমিও সিঙ্গাড়ার অর্ডার দেই।

    প্রেম করতে হলে বহুত কিছু করতে হয় শুনসি, কিন্তু এইটা বোধহয় একদম ইউনিক...
    কমেন্ট করার মত কিসুই মাথাতেই আসতেসে না
    :gulli: হইসে...

    জবাব দিন
  2. তানভীর (৯৪-০০)

    কেমস...তোর লেখা পড়ে খুব মজাও পেলাম আবার হঠাৎ মনটা খুব খারাপও হয়ে গেল। ঠিক বুঝতে পারছিনা কি বলব। টার্ন আউট ঠিক না থাকলে যদি কেউ প্রত্যাখান করে তাহলে তো খুব-ই মুশকিল! 😕 লেখাটা বরাবরের মতই খুব ভাল হইসে!

    মরতুজা ভাই, আপনি কি সোহরাওয়ার্দী হলের ৩০০৫ এর মরতুজা ভাই?

    জবাব দিন
  3. টিটো রহমান (৯৪-০০)

    দোস্ত বহুদিন পর একটা কমপ্লিট লেখা পড়লাম। থ্যাংকস

    মাম্মা মোবাইল কিনলাম তো
    আরে তাই নাকি মাম্মা
    নাম্বার হইলো ০১৭০৬…
    নাম্বার উঠছে তো আমার এখানে, সেভ করতেছি

    পার্বতীকে আমি যখন ভালোবাসার কথা বলি তখন আসলে আমার টার্ন আউট ঠিক ছিলো না।


    আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই

    জবাব দিন
  4. কামরুল ভাই,কি আর কমু,এত্তো ভাল লেখেন ক্যামনে? গেস্ট হিসেবে সেই অনেক আগে থেকেই আপনার লেখা পড়ি,আজ আর কমেন্ট না দিয়া পারলাম না। ভাই, রীতিমতো জটিল!!!(মেম্বার হইয়া যামু অচিরেই,এতদিন ভাবতাছিলাম,দুধ যখন ফ্রি ই পাওয়া যায়,গরু কেনার কি দরকার? নাহ ভাই আর পারতাসি না,গরু কিনতেই হইবো)

    জবাব দিন
    • প্রাথমিক ধাক্কা সামলাইয়া উঠার পর আমি যখন পরবর্তী প্ল্যানিং নিয়া ব্যস্ত ততোদিনে পার্বতী কার সঙ্গে যেন ফ্যামিলি প্ল্যানিং শুরু কইরা দিছে। 🙁 🙁

      আমিও সিংগাড়া খামু

      নেড়া একবারই সিংগাড়া খায়। তুমি তো প্রতি বর্ষায় খাও। আর কতো?

      জবাব দিন
  5. মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

    আপনেতো ভাই দুর্দান্ত সব স্বপ্ন দেখেন। স্বপ্ন নিয়া ফিলিম বানাইতে শুরু করলে নিশ্চিত ডেভিড লিঞ্চ হয়া যাইতে পারবেন। "মুলহল্যান্ড ড্রাইভ" এর মতো তুখোড় সব স্বাপ্নিক ফ্যান্টাসি বানায়া উড়ায়া দিবেন। কিয়ারোস্তামির "টেস্ট অফ চেরি" নাই বা বানালেন।
    (আমি অবশ্য কিয়ারোস্তামিরও ভক্ত)। অনেকেই কিয়ারোস্তামি খাইতে চায় না। আপনে কিয়ারোস্তামির মতো ফিল্ম মেকার হতে চান জেনে তাই খুব ভাল্লাগলো। চালায়া যান, কামরুল ভাই। একদিন দেখব, কামরুল হাসান পরিচালিত কোন "টেস্ট অফ ড্রিম" অস্কার পায়া বসছে।
    আমি কিন্তু সেদিনের অপেক্ষায় আছি।

    কমরুল ভাই, কিয়ারোস্তামির "টেস্ট অফ চেরি", "ক্লোজ-আপ" আর "দি উইন্ড উইল ক্যারি আস" ছাড়া আর কোন সিনেমার ডিভিডি কি বাংলাদেশে আছে? খোঁজ দিতে পারলে খুব ভালো হতো।

    জবাব দিন
    • ১.
      “মুলহল্যান্ড ড্রাইভ” দারুন। আমার বেশ পছন্দ।
      ২.
      “টেস্ট অফ চেরি”, “ক্লোজ-আপ” আর “দি উইন্ড উইল ক্যারি আস” ছাড়াও কিয়ারোস্তামির অনেক ছবিই পাবা বাংলাদেশে। আমার কাছেই আছে। TEN, Where is friend's home? আর Homework। দেখার জন্য নিয়ে যেতে পারো। কিন্তু শর্ত হলো ফেরত দিতে হবে।

      এছাড়া কালেকশন করতে চাইলে আইডিবি থেকে কিনে নিতে পারো। ওদের কাছে এর সবগুলিই আছে।
      ৩.
      কিয়ারোস্তামির আরো কিছু ছবি আছে। আমি কালেক্ট করতে পারিনি, তবে ফিল্ম ফেস্টিবেলে দেখেছি। White balloon, Life and nothing more!,Under Olive trees!
      ৪.
      আমার মাজিদ মাজিদিও খুব প্রিয়। তার cildren of heaven তো সব সময়ের প্রিয় ছবি।

      ভালো থেকো।

      জবাব দিন
          • মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

            চিলড্রেন অফ হেভেন আমারও অল টাইম ফেভারিট। বারান-ও খুব ভাল লাগছে। মাজিদির সিনেমা মনে হয় ভাল না লেগে কোন উপায় নাই।
            কামরুল ভাই, হার্ড ডিস্ক নিয়াও আসতে পারি। তাতে একসাথে অনেকগুলা সিনেমা কপি কইরা নেয়া যাবে। পরীক্ষাটা শেষ হোক।
            মুভির অভাবে এক সময় হতাশায় ভুগতাছিলাম। আপনে সেটা দূর করলেন।

            জবাব দিন
            • বারান-এর কথা বলতে ভুইলা গেছিলাম। আমি আসলে কিয়ারোস্তামি,মাজিদি আর মখমলবাফ এই তিন জনের ডাই হার্ট ফ্যান।

              তোমার কিছুই আনতে হবে না। আমার ডিভিডি রাইটার আর ব্ল্যাঙ্ক ডিভিডির বাক্স আছে। রাইট করাইয়া নিয়া যাইও ইচ্ছা হইলে।

              আচ্ছা তুমি রান লোলা রান দেখছো ?

              জবাব দিন
              • মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

                নাহ, রান লোলা রান দেখি নাই। তবে এই ডিরেক্টরের (Tom Tykwer) আরেকটা সিনেমা দেখছি: Perfume: The Story of a Murderer
                পোলাপান সব এই "পারফিউম" দেইখা বলছিল, সিনেমার নায়কটা নাকি পুরা আমার মতো। মুভি দেইখাতো আমি থান্ডার্ড। পোলাপান কয় কি! আমার মনে হইছিল, পারফিউমের কাহিনী আরেকটু অর্থপূর্ণ করলে ভাল হতো।
                রান লোলা রান খুব ভালো নাকি? রেটিং তো দেখলাম খুব ভালো। আপনের কাছে থাকলে নিয়া আসুম।

                জবাব দিন
                • এক্সপেরিমেন্টাল ফিল্ম। আমার কাছে আইডিয়াটা দারুন লাগছে।

                  আর এমনিতেও হলিউডের সিনেমার চেয়ে আমার ইউরোপিয়ান
                  সিনেমা বেশি ভালো লাগে। জার্মান, ফ্রান্স বা ইটালী অনেক ভালো ছবি করে।

                  সিনেমা পারাদিসো দেখনাই?

                  জবাব দিন
                  • মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

                    পারফিউমের আইডিয়াটা আসলেই ভালো ছিল। সিনেমাটাও খারাপ লাগে নাই। তবে আরও ভালো হতে পারতো।
                    সিনেমা পারাদিসো দেখিনাই। আসলে আমার খুব বেশী সিনেমা দেখা হয়নাই। কিন্তু প্রতিনিয়ত দেখেই যাচ্ছি। পোলাপান বলে, "এমনিতে আমার মুখ থাকে বাংলা পাঁচের মতো। শুধু মুভি দেখার সময়ই একটু হাশিখুশি মনে হয়।" এ কারণেই আমার মুভি দেখা।
                    আর আমি মুভি দেখা শুরু করছি ১ বছর যাবৎ। তার আগে ধার্মিক ছিলাম। কলেজে আমার হুজুর খ্যাতি ছিল। জানেনইতো, কলেজের হুজুররা কখনও কমন রুমে গিয়া মুভি দেখে না। হুজুরের খোলস থেকে বের হয়া আসার পরই মুভি দেখে মুগ্ধ হওয়ার সূচনা।

                    এই ব্লগে কিয়ারোস্তামির কথা না লিখলে হয়তো আপনার মুভি স্টকের কথা জানাই হতো না। আমি আরও কতদিন অভুক্ত থেকে যেতাম। এখন থেকে মুভির জন্য কিন্তু আপনেরে যখন তখন ডিস্টার্ব করুম। কিছু মনে করতে পারবেন না। 😀

                    জবাব দিন
                    • এখন থেকে মুভির জন্য কিন্তু আপনেরে যখন তখন ডিস্টার্ব করুম। কিছু মনে করতে পারবেন না।

                      মভি বিষয়ে আমি কখোনোই বিরক্ত হই না।
                      আইসা পইড়ো। এনি টাইম। মাই প্লেজার।

                    • আহ্সান (৮৮-৯৪)

                      "পারফিউম" আমার দেখা সেরা ছবি গুলোর মধ্যে একটি। আমি যখন মুভিটা দেখছিলাম, তখন আমার পাশের রুম থেকে এক সিনিয়র ঢুকেছিলেন আমার রুমে। কয়েকদিন পরে ওনার ক্যারিয়ারের একটা হেভী ইম্পর্টেন্ট পরীক্ষা। লেখা পড়া নিয়ে ভীষন ব্যস্ত। নাওয়া খাওয়ার সময় নাই। রুমে এসে মুভিটার একটুখানি দেখে একটা চেয়ার টেনে বসে পড়লেন। এক বসাতে মুভি খতম। এখানেই শেষ না...। মিস করা অংশটুকু দেখার নাম করে ডিভিডি টা নিয়ে গিয়ে পুরো মুভিটাই আরেকবার দেখে ফেললেন...। 😀

  6. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)
    একদিন হঠাৎ প্রেপ টাস্কের খাতা দেখাতে গিয়ে একা পেয়ে ম্যাডামকে বললাম ‘ম্যাডাম আপনাকে আমার খুব ভালো লাগে।’
    ‘সাট আপ, ফাজিল ছেলে। তোমার বেল্ট লুজ কেনো? সু পালিশ নাই কেনো? বদমাশ ছেলে, টার্ন আউট ঠিক নাই, বলে আমাকে ভালো লাগে!!’

    জটিল জটিল, কেমনে লেখস এত্ত চমৎকার কইরা। :boss: :boss:


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  7. সিরাজ (৯৪-০০)
    মুখ ঝামটা দিয়ে পার্বতী বললো‘বানরের আবার সখ কতো।’

    বস নাম নাম্বার আর ঠিকানা টা বল তো দেশে আইসা বুঝামু কেডায় বানর :gulli: :gulli: :gulli:

    আফসোস,আমার তখন মদ কিনারও পয়সা নেই।

    আর চিন্তা নাই এখন আমাদের শুভ দিন আইতাছে.........। :party: :party:

    জবাব দিন
  8. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    আমি জানিনা এই কথাটা এইখানে শেয়ার করা ঠিক হবে কিনা। আমি জনৈকা ম্যাডামকে(তরুনী,৫ ফুট ৪ ইঞ্চি লম্বা,খুব এ ভালমানুষ ছিলেন, পামোশের কাছ থিকা ঝাড়ি খাইয়া ফর্মে ফিরার সময় আমারে ডাইকা অনেক সান্তনা দিতেন)
    একদিন লাঞ্চের সময়(প্যারেন্টস ডের পরের দিন)উনাকে বাসায় বানানো কেক খাইতে ডর্মে নিয়া আসলাম।আমার মনে কোন রকমের উল্টা পাল্টা ছিলনা কিন্তু ডিউটি ক্যাডেট(কেলাস ইলেভেনের) দেখি লাঞ্চের পরে আমাগোরে দেইখা মুচকি মুচকি হাসে।প্যারেড স্টেট আফটার লাঞ্চ সাইন করানোর কথা কিন্তু পোলা দেখি সেইদিন লাঞ্চের পরে না আইসা এক্কেবারে গ্রাউন্ডে আইসা সাইন করাইলো।ইতোমধ্যে সারা কলেজের পোলাপানের কাছে এই খবর দাবানলের মত ছড়ায় পড়ছে যে মাসরুফ ভাই আজকে ......।কেলাস সেভেনের গ্যাদা বাচ্চাও দেখি প্রেপ টাইমে ফর্মের পাশ দিয়া যাওয়ার সময় জানালা থিকা আমারে দেইখা পাশের টারে খোচা দেয়।আমি এমুন টিউবলাইট তখনো খুবই অবাক হইতাছি ঘটনা কি এইটা ভাইবা।পরে যখন পুলাপাইন আমারে রোমিও কইয়া ডাকা শুরু করল,আরো কইল যে জেসিসির অলিখিত প্রেমের ইতিহাসে তোর নাম সর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে-তখন আস্তে ধীরে কাহিনি কিসুডা বুঝতে পারলাম।অনেক লজ্জা পাইছিলাম,অপরাধ বোধও কাজ করসিল কারণ ম্যাডাম অনেক ভাল মানুষ ছিলেন 🙁 আমারে অনেক আদর করতেন 🙁

    কিন্তু এই বেলা স্বীকার করি, আল্লাহ যদি সামর্থ দেয় তাইলে আমি অবশ্যি সেই লাল পাড়ের শাড়ী আমার বউরে একদিন কিন্না দিমু(যদি কেউ দয়া কইরা বিয়া করে)আর তারে নিয়া আমার হুনাইন হাউসের সেই ডর্ম ভিজিট করুম...

    কামরুল ভাই,এই স্বপ্নটা আমি প্রায় ই দেখি।আমার এক্স রে নিয়া অনেক দিন দেখছি যে তারে সেই লাল পাড়ের শাড়ি পরায় হাত ধইরা আমি আমার ক্লাস ১২ এর সেই ছোট্ট ডর্মে ঘুরতে গেছি...(ভাইয়েরা, কসম কইতাছি আপত্তিকর কিছু মনে আসতেসেনা কিন্তু রোমান্টিক যেই বর্ণনা মাথায় ঘুর ঘুর করতেসে সেইটাও নাহয় না বললাম,মাপ কইরা দেন )

    অথবা,কলেজের সবুজ মাঠে একটা চাদর বিছায় সেই খাঁটি ইউরোপিয়ান রোমান্টিক মুভির মত পিকনিক

    রোমান্টিক চিন্তাতেও ক্যাডেট কলেজ আসে এইটা কারো সাথে এতদিন শেয়ার করিনাই গালি খাওয়ার ভয়ে।কামরুল ভাই,কি বইলা আপনেরে ধন্যবাদ দিমু বুঝতাছি না...

    জবাব দিন
  9. আহ্সান (৮৮-৯৪)
    আমি প্রেম করতে যামু কোন দুঃখে? আমারে কি ভুতে কিলাইসে? প্রেম ভালোবাসা হইলো তোদের ডিপার্টম্যান্ট।

    কতটা সত্য, আল্লাহ ই জানে...।

    কামরুল,
    জটিল লেখা। মনটা খুব খারাপ ছিল। তোমার লেখাটা পইড়া মন কিছুটা হাল্কা হইছে। কেমনে লেখ এত সুন্দর কইরা?

    জবাব দিন
  10. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    দারুণ লিখেছ কামরুল। হাসতে হাসতে মাটিতে পরার মতো অবস্থা। মনটা ভালো করে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। রম্য রচনা তোমাকে দিয়ে হবে।


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  11. তৌফিক (৯৬-০২)

    ধন্যবাদ কামরুল ভাই, আপনে বিরাট উপকার করছেন আমার। বউয়ের মন খারাপ ছিল, কিছুতেই যখন কিছু হইতেছিল না, ফোনে আপনার পারু কাহিনী শুনায়া দিলাম। আমার বউয়েও মন ভালা হইয়া গেল।

    জবাব দিন
  12. সাইফ (৯৪-০০)

    “দুধ এর বাজার এখন গরম,ফ্রি ত দূরে থাক,হাত দেয়া যায় না।”

    যাতে সবাই হাত দিতে না পারে তাই দুধের বেপারিরা ইচ্ছা কইরাই মেলামাইন মিশাইয়া রাখছে।......।..।..।...।।...কেম . :salute:

    জবাব দিন
  13. তাইফুর (৯২-৯৮)
    এইভাবে ক্রমশ ক্লিনিক্যাল বায়োকেমিস্ট্রির সব লেকচার শেষ হয়ে যায়, মনে হয় ডিপার্টমেন্টের ক্যান্টিনের সব সিঙ্গাড়াও। কিন্তু পার্বতীকে আমার আর বলা হয় না যে তাকে ছাড়া আমার জীবন কতো অর্থহীন।

    লেখাটা অনেক দেরীতে হলেও পড়লাম। প্রিয়তে যোগ ...


    পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
    মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥

    জবাব দিন
  14. হাসান (১৯৯৬-২০০২)
    প্রেম ভালোবাসা হইলো তোদের ডিপার্টম্যান্ট।

    তানভীর ভাই কোন ডিপার্টম্যান্টে ছিলেন?

    ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে যাওয়ার আগে ইংলিশ এর বেশ নাম ডাক শুনেছিলাম, যেয়ে বুঝলাম কাহিনী সত্য 😀 আফসোস সামনে এমএ ফাইনাল :((

    জবাব দিন
  15. সাবিহা জিতু (১৯৯৩-১৯৯৯)

    লেখাটা পইড়া দিলখোশ হো গায়া! না না, কামরুল, তোর লেখা ভাল সেতা বলছি না, তরে পাঙ্গা খাইতে দেইক্ষা দিল খোশ হো গায়া!!!
    (খুবই মজার ছিলো :pira: )


    You cannot hangout with negative people and expect a positive life.

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।