কিপ ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পেইন

মূল রচনা – KEEP CADET COLLEGE CAMPAIGN
লেখক – মিনু খাদেম (১৩তম ব্যাচ, এফসিসি)

১. সঙ্গত কারণেই বিশ্বাস করতে বাধ্য হলাম যে, অন্য সবগুলো ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান ক্যাডেটদের কাউকেই বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজের ইতিহাস সম্পর্ক কিছু জানানো হয়নি। স্বাধীন বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজের অস্তিত্বের ইতিহাস বলার দায়িত্ব কেউই নেয়নি।

২. বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজের বিলোপ ও পুনরাবির্ভাবের ইতিহাস সম্বন্ধে বলতে গেলে ফিরে যেতে হবে ১৯৭২-৭৩ সালের যন্ত্রণাদায়ক দিনগুলোতে। আমি মনে করি, এই ইতিহাস অন্য সবগুলো ক্যাডেট কলেজে পৌঁছিয়ে দেয়ার দায়িত্ব ফৌজিয়ান ও সিসিসিএল (ক্যাডেট কলেজ ক্লাব লিমিটেড) এর সদস্য সবার উপরই বর্তায়। ১৯৭২-৭৩ সালে ক্যাডেট কলেজের ভাগ্য নির্ধারণকারী বেশ কিছু ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনাগুলোর যতটুকু মনে আছে ততটুকুই সংক্ষেপে তুলে ধরার চেষ্টা করছি:

ক) বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সহকারী জনাব তোফায়েল আহমেদ ১৯৭২ সালে ছাত্রদের রাজনৈতিক উইং তৈরীর উদ্দেশ্যে এফসিসি সফর করেন।

খ) আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে আমরা পাঁচজন সেই সময়কার “শাহজাহান হাউজ”-এ এক বৈঠকে মিলিত হই। এই বৈঠকে আমি ও আনোয়ারুল হক ছাড়া উপস্থিত অন্য তিনজন ছিলেন মরহুম কাইয়ুমুল হুদা, এম এ তারেক ও এম নুরুর রহমান। আমি ছাড়া সবাই ১২তম ব্যাচের। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, এফসিসিতে কোনভাবেই ছাত্র রাজনীতি প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না। শুধু এফসিসি না, কোন ক্যাডেট কলেজেই ছাত্র রাজনীতিকে অনুমোদন দেয়া যাবে না। এজন্য আমরা অনতিবিলম্বে এফসিসি’র দ্বাদশ থেকে সপ্তদশ ব্যাচের সবাইকে তোফায়েল আহমেদের রাজনৈতিক সভায় যোগদান থেকে বিরত থাকতে বলার ব্যাপারে সম্মত হই। শুধু বলা নয়, সেদিন সবাইকে অডিটোরিয়ামে না যাওয়ার ব্যাপারে রাজি করানোরও সিদ্ধান্ত হয়।

গ) এম আনোয়ারুল হক আমাকে ১৫, ১৬ ও ১৭তম ব্যাচের সবার মন, হৃদয় ও আত্মায় “ছাত্র রাজনীতিমুক্ত ক্যাডেট কলেজ” এর ধারণা বদ্ধমূল করে দেয়ার দায়িত্ব দেন। কারণ, এই জুনিয়র ব্যাচগুলোর সাথে আমার সম্পর্ক খুব ভাল ছিল। তারা আমাকে “ওস্তাদ” ডাকতো। আজও তাদের সবাইকে খুব ভালবাসি। সে সময় আমার দায়িত্ব ছিল অডিটোরিয়ামে তোফায়েল আহমেদের সভা বর্জনের ব্যাপারে এই ব্যাচগুলোর সবাইকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করে তোলা। “ছাত্র রাজনীতিমুক্ত ক্যাডেট কলেজ” এর সমর্থনে তখন অনেকেই এগিয়ে এসেছিল। তাদের সবার প্রতিই আমি কৃতজ্ঞ। অবশ্য সবার নাম মনে নেই। এই মুহূর্তে যাদের নাম পড়ছে তারা হল: ১৫তম ব্যাচের আনোয়ার শহীদ, ক্যাপ্টেন (অবঃ) আমিন ও কর্নেল (অবঃ) রহমান; ১৬তম ব্যাচের মরহুম মিজানুর রহমান, মাহবুব আনাম, আহমেদ ইসমাইল হোসেন, জাকারিয়া মান্নান, ব্রিগেডিয়ার মোল্লা ফজলে আকবর, মেজর জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া, মজুমদার, মঈন, মোস্তাক ও ইফতেখার; ১৭তম ব্যাচের আহমেদ ইউসুফ হোসেন ও ব্রিগেডিয়ার সোহেল। আমরা শিক্ষকদের মধ্যেও এই চেতনা ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব এম নাসির চৌধুরীর মাধ্যমে সব শিক্ষকদের জানানো হয়েছিল যেন তারা কেউ সেদিন অডিটোরিয়ামে না যান।

ফলাফল: ১০০% সফলতা। এক ব্যাচের মাত্র ৫ থেকে ৬ জন ক্যাডেট অংশ নিয়েছিল। তোফায়েল আহমেদকে খালি হাতে ফিরে যেতে হয়েছিল। তিনি সব ক্যাডেট কলেজের প্রতি রাগান্বিত হয়েছিলেন।

ঘ) এর মাত্র ১০ দিন পর, রেডিও-টিভি-সংবাদপত্রের মাধ্যমে আমরা খবর পেলাম যে, সব ক্যাডেট কলেজকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এখন থেকে সেগুলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে সাধারণ “সরকারী কলেজ” হিসেবে বিবেচনা করে হবে।

ঙ) ক্যাডেট কলেজের বিলুপ্তি ও সবগুলোকে (তখন ক্যাডেট কলেজ ছিল চারটি, এফসিসি ছিল প্রতিষ্ঠার দিক দিয়ে প্রথম) সাধারণ সরকারী কলেজের সাথে একীভূত করার খবরে আমরা প্রচণ্ড মর্মাহত হয়েছিলাম। আমাদের হৃদয় ভেঙে পড়েছিল, আমাদের আত্মায় রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছিল, আমরা তীব্র মানসিক যাতনার শিকার হয়েছিলাম। আমাদের মনোবল ভেঙে পড়েছিল। অনেকে (তাদের নাম বলছি না) বলছিল, “সরকারী সিদ্ধান্তই তো চূড়ান্ত, আমাদের কি-ই বা করার আছে”।

চ) সরকারের ক্যাডেট কলেজ বিলোপের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্যাডেটদের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া আসার প্রয়োজন ছিল, প্রয়োজন ছিল দৃঢ় সিদ্ধান্ত গ্রহণের। সবচেয়ে সিনিয়র হিসেবে এফসিসি’র প্রাক্তন ও বর্তমান (তৎকালীন) ক্যাডেটরা এক্ষেত্রে হার মানেনি। তারা প্রচণ্ড উদ্যমের পরিচয় দিয়েছিল।
প্রাক্তন ক্যাডেট বা অন্যান্য ক্যাডেট কলেজের মধ্যে যারা সিসিসিএল এর সদস্য তাদের কেউ কি এ খবর জানে? আমার মনে হয় না।

ছ) আমাদের নেতা ফৌজিয়ান এম আনোয়ারুল হক ভাই “শাহজাহান হাউজ”-এ সেই পাঁচজনের আরেকটি বৈঠকের আয়োজন করেন। এই বৈঠকের বিষয় ছিল, “বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজ টিকিয়ে রাখার জন্য আমাদের কি করা উচিত এবং কি অবশ্যই করতে হবে?”

জ) আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল, কলেজের সব ব্যাচের সব ক্যাডেটদের কাছ থেকে ক্যাডেট কলেজ টিকিয়ে রাখার পক্ষে মতামত সংগ্রহ করা। সব ক্যাডেটদেরকে ক্যাডেট কলেজ টিকিয়ে রাখার পক্ষে মতামত প্রদানে উৎসাহ দেয়াটাও আমাদের কাজের মধ্যে ছিল। আমরা এই উদ্যোগের নাম দিয়েছিলাম, “কিপ ক্যাডেট কলেজেস ক্যাম্পেইন”।

ঝ) দ্বাদশ থেকে শুরু করে সপ্তদশ পর্যন্ত এফসিসি’র প্রতিটি ব্যাচের প্রতিটি ক্যাডেট আমাদের এই প্রচারাভিযানকে সমর্থন করেছিল। আর সর্বসম্মতিক্রমে আমাদের এই অভিযানের নেতা মনোনীত হয়েছিলেন এম আনোয়ারুল হক ভাই। আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল একটাই: “কিপ ক্যাডেট কলেজেস ক্যাম্পেইন”।

ঞ) আমরা প্রথমেই ফৌজদারহাটের দুজন শিক্ষকের সাথে এ বিষয়ে কথা বলি। শিক্ষক দুজন ছিলেন: মরহুম এম জাকিরুল্লাহ এবং জনাব মাহবুব আলম ভূইয়া। তারা আমাদের এই উদ্যোগকে মনেপ্রাণে সমর্থন করেন যা আমাদের উদ্যম আরও বাড়িয়ে দেয়। সে সময়ে এফসিসি’র সব শিক্ষকই আমাদের সমর্থন করেছিলেন, সবার কাছ থেকেই আমরা উৎসাহ পেয়েছিলাম। অবশ্য তাদের মধ্যে কয়েকজন বেশী উৎসাহী হয়ে কলেজের চারটি হাউজের নামই পরিবর্তন করার কাজে লেগে গিয়েছিলেন।
এবং সে সময়কার চারজন সিনিয়র শিক্ষকের মধ্যে অধ্যক্ষ পদ নিয়েও দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছিল।

ট) আমরা চট্টগ্রাম ও ঢাকায় বসবাসরত এফসিসি’র অনেক এক্স-ক্যাডেটের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলাম। তাদের সবাই কায়মনোবাক্যে বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজ রক্ষার উদ্দেশ্যে পরিচালিত এই অভিযানকে সমর্থন করেন ও বিভিন্নভাবে উৎসাহ যোগান। আমাদের কয়েকজনকে মাঝেমধ্যেই ৩-৪ দিনের জন্য কলেজ থেকে অন-লিভে চট্টগ্রাম বা ঢাকায় যেতে হতো। সেখানে সরকারী দপ্তর ও সামরিক বাহিনীতে কর্মরত ফৌজিয়ানদের সাথে মিলে “কিপ ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পেইন” এর কাজ করতাম (ফৌজিয়ান সামরিক কর্মকর্তাদের অধিকাংশই পাকিস্তানে বন্দী ছিলেন আর বাংলাদেশে বসবাসরত মুক্তিযোদ্ধা সামরিক কর্মকর্তাদের একেকজন একেক সেনানিবাসে ছিলেন)। কর্নেল এ এস এম নাসিম ভাই তখন বঙ্গবন্ধুর এমএসপি ছিলেন। কিন্তু সরকারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কিছু করা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাই দীর্ঘ কয়েক মাস আমাদেরকে কোন ফলাফল ছাড়াই কাজ করতে হয়েছিল।

ঠ) এক সকালে ফৌজিয়ান চৌধুরী এম মহসিন ভাইয়ের (৪র্থ ব্যাচ) সাথে আমাদের দেখা করার সৌভাগ্য হয়। ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডে তার বাসায়ই আমরা দেখা করি। (স্পষ্ট মনে পড়ে, তিনি গোসল করছিলেন, তার স্ত্রী বাসায় ছিলেন না। এই সুযোগে আমরা ফ্রিজ থেকে প্রায় ৫ কেজি টাঙ্গাইলের রসমালাই ও মিষ্টি খেয়ে সাবাড় করে দিয়েছিলাম)। তিনি আমাদেরকে ব্রিগেডিয়ার জিয়াউর রহমানের (পরবর্তীতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি: অক্টোবর ১৯৭৭ – মে ১৯৮১) সাথে দেখা করে তার পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা নিতে বলেন। তার কথামতই আমরা জিয়াউর রহমানের সাথে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট করি। আনোয়ারুল কবির ভাই, কাইয়ুম ভাই, নুরুর রহমান ভাই, তারেক ভাই ও আমি এক সুন্দর সন্ধ্যায় ঢাকা সেনানিবাসে জিয়াউর রহমানের বাসায় যাই।

ড) সেদিন আমরা বিষয়টা নিয়ে বেশ গভীরভাবে আলোচনা করেছিলাম। ব্রিগেডিয়ার জিয়াউর রহমান ফোনে জেনারেল এম এ জি ওসমানীর (সে সময় বঙ্গবন্ধু কেবিনেটের নৌচালনা মন্ত্রী) সাথে ক্যাডেট কলেজের ভাগ্য ও এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন। ব্রিগেডিয়ার জিয়া দয়াপরবশ হয়ে জেনারেল ওসমানীর সাথে আমাদের একটি সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেন। পরদিনই সকাল ৭:৩০ এ ওসমানীর মিন্টু রোডের বাসায় (বর্তমানে ঢাকা মেট্রোপলিটনের কমিশনারের কার্যালয়) তার সাথে আমাদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট ঠিক হয়।

ঢ) এখনও স্পষ্ট মনে পড়ে, নুরু ভাই ও কাইয়ুম ভাইয়ের সাথে আমিও সেদিন সিদ্ধেশ্বরীতে আমার বড় ভাইয়ের বাসায় বিনিদ্র রাত কাটিয়েছিলাম। আমাদের ঘুম আসেনি কারণ, আমরা বুঝতে পারছিলাম ওসমানীই আমাদের শেষ ভরসা। তখনকার চারটি ক্যাডেট কলেজেরই ভাগ্য নির্ধারিত হওয়ার কথা পরের দিনটিতে। ব্রিগেডিয়ার জিয়া বলেই দিয়েছিলেন, “জেনারেল ওসমানী না পারলে বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজের বিলুপ্তি কেউই ঠেকাতে পারবে না।”
অবশেষে সেই সকাল এল। স্পষ্ট মনে পড়ে, আমরা পাঁচ জন মিন্টু রোডে ওসমানীর বাসায় যাই সকাল ৭:১০ এর দিকে। গিয়ে দেখি বাসার চাকার-বাকরেরা নিচের তলার হলরুমগুলো পরিষ্কার করার কাজে ব্যস্ত। আমাদেরকে নিচে তার পিএ’র রুমে অপেক্ষা করতে বলা হয়। পিএ আসলে তবেই সাক্ষাতের ব্যবস্থা হবে।

আনুমানিক ৭:৩৫ এর দিকে পিএ উপস্থিত হন। আমরা বলি, “৭:৩০ এ জেনারেলের সাথে আমাদের একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল।” পিএ সিলেটি বাংলায় বলেন, জেনারেল গোসল করছেন, গোসল শেষে সকালের নাশতা করবেন। এরপর তার সচিবালয় ভবনে যাওয়ার কথা রয়েছে। তিনি আমাদেরকে সচিবালয়ে গিয়ে অপেক্ষা সহ নানা কথা বলতে থাকেন। বাসায় ওসমানীর সাথে আমাদের দেখা করিয়ে দেয়ার ইচ্ছে তার ছিল না।

আমরা উপরের তলা থেকে জেনারেলের গলার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিলাম। অগত্যা আমরাও পিএ’র সাথে একটু জোড়ে কথা বলতে শুরু করলাম, উদ্দেশ্য জেনারেল ওসমানীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা। ওসমানী সিলেটি বাংলায় তার পিএ-কে জিজ্ঞেস করেন, নিচতলায় কি হচ্ছে? পিএ বলেন, এফসিসি থেকে কয়েকজন ক্যাডেট এসেছে, তারা তার সাথে কথা বলতে চায়। এ শুনে ওসমানী আমাদের উপরতলায় যেতে বলেন। আমরা তড়িঘড়ি করে উপর তলায় চলে গেলাম। গিয়ে দেখি তিনি টেবিলে বসে নাশতা করছেন। আমাদেরকেও নাশতায় অংশ নিতে বলেন। নাশতা হিসেবে ছিল টোস্ট পাউরুটি, ডিম ও চা। আমরা এমনিতে বেশ ক্ষুধার্ত ছিলাম, সানন্দে খাবারের আমন্ত্রণ গ্রহন করলাম।

ণ) আলোচনা করতে গিয়ে বুঝতে পারলাম, কেবিনেটের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও জেনারেল ওসমানী ক্যাডেট কলেজের বিলুপ্তি সম্পর্কিত সরকারী সিদ্ধান্তের কিছুই জানেন না। এটা জানতে পেরে তিনি প্রচণ্ড বিরক্ত হন এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এবং বলেন, তিনি আজই বঙ্গবন্ধুর সাথে এ নিয়ে কথা বলবেন। আমরা আনন্দে উদ্বেলিত হয়েছিলাম। নাশতার পর আমরা জেনারেলের সাথে তার “১৯৬৭ টয়োটা করোনা” মডেলের সাদা গাড়িতে চড়ে বাংলাদেশ সচিবালয়ে যাই। তখন প্রায় ৯:২৫ বাজে। তার ওভারস্মার্ট পিএ যিনি আমাদেরকে তার সাথে দেখা করতে দিতে চাচ্ছিলেন না তিনি অন্য কোন বাহনে (সম্ভবত রিকশা) চড়ে সচিবালয়ে গিয়েছিলেন। তিনিও অবশ্য বেশ তাড়াতাড়িই সচিবালয়ে পৌঁছে যান। আনুমানিক ৯:৩৫ এর দিকে আমরা সচিবালয় ভবনের ১১তম তলায় ওসমানীর নৌচালনা মন্ত্রনালয়ে যাই।

ত) জেনারেল ওসমানী আমাদেরকে মন্ত্রীর চেম্বারেই বসান। আমরা সেখানে বসে থাকি আর প্রতি ৩০-৪০ মিনিট পরপর চা-বিস্কিট খেয়ে খেয়ে সময় কাটাতে থাকি। এরই মধ্যে জেনারেল “রেড ফোন” তুলে বঙ্গবন্ধুকে ফোন করেন, কিন্তু পাননি। কারণ বঙ্গবন্ধু তখনও অফিসে আসেননি। এরপর বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেন, কিন্তু ফলাফল একই। বঙ্গবন্ধুর সাথে কথা বলা যাচ্ছে না। আমরা অবাক হয়ে লক্ষ্য করেছিলাম, জেনারেলের টেবিলে কোন ফাইল-পত্তর নেই, আর তিনি কোন ফাইলে স্বাক্ষর করা নিয়েও কথা বলছেন না। মন্ত্রীর সচিব একটু পর একটি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল নিয়ে আসলে ওসমানী বলেন, “আমার সাথে ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের এই ক্যাডেটরা আছে, বঙ্গবন্ধুর সাথে ক্যাডেট কলেজের ভাগ্য নির্ধারণের সুরাহা না করে আজ আমি কোন ফাইলে স্বাক্ষর করছি না।” সচিব আমাদের দিকে তাকিয়ে একটু হেসে চলে যান। আমরা সেদিন বিকেল ৩:৩৫ এ ওসমানীর অফিস ত্যাগ করেছিলাম, এর মধ্যে সচিব আর একবারও আসেননি। তিনি ওসমানীর পিএস-কেও (বর্তমানে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা) বলে দিয়েছিলেন আজ ওসমানী কারও সাথে দেখা করবেন না।

থ) অবশেষে সকাল ১০:৩৫ এর দিকে জেনারেল রেড ফোনে বঙ্গবন্ধুকে পান। তিনি বঙ্গবন্ধুর কাছে জানতে চান, “ক্যাডেট কলেজ বিলুপ্ত করে দেয়ার ব্যাপারে তাকে কে পরামর্শ দিয়েছে এবং তার (ওসমানীর) অগোচরেই কিভাবে ক্যাডেট কলেজ বিলোপের মত কাজটি সম্পাদিত হল?” বঙ্গবন্ধুর সাথে বাংলা ও ইংরেজিতে কথা বলার সময়ে তার বিরক্তি ও উদ্বেগ স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছিল। তিনি ফোনে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ক্যাডেট কলেজের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং ক্যাডেট কলেজ বিলোপ বিষয়ক পিও টি বাতিল করে দেয়ার কথা বলেন।

বঙ্গবন্ধু ফোনে জেনারেলকে কি বলেছিলেন তা আমরা শুনিনি, আর জিজ্ঞেস করার সাহসও হয়নি। রেড ফোন রেখে দেয়ার আগে ওসমানীর শেষ কথা ছিল, “ক্যাডেট কলেজ থাকলে আমি থাকব, অন্যথায় পদত্যাগ করবো।” এবারও বঙ্গবন্ধু কি বললেন তা আমরা শুনতে পাইনি, আর ওসমানীর গুরুগম্ভীর মুখভঙ্গী দেখে কিছু জিজ্ঞেস করার সাহসও হয়নি।

দ) এরপর জেনারেল তার পিএস-কে ডেকে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় ক্যাডেট কলেজের গুরুত্ব এবং ক্যাডেট কলেজের কার্যকারিতা বিষয়ে ইংরেজিতে একটি নির্দেশনা দেন। এই নির্দেশনাটি টাইপ করে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই পিএস ওসমানীর সামনে নিয়ে আসেন। এই টাইপ করা লেখাটি পড়ে ওসমানী তাতে স্বাক্ষর করেন। এরপর ফাইল হাতে নিয়ে উঠে দাড়ান আর আমাদের দিকে তাকিয়ে বলেন, “বয়েস, উইশ মি লাক”। ১১:১৫ তে তিনি হাতে ফাইল নিয়ে অফিস ত্যাগ করেন, ফাইলের ভেতর ছিল বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজের ভাগ্য ও গুরুত্ব বিষয়ক নির্দেশনা। তার গন্তব্য ছিল বঙ্গবন্ধুর কার্যালয় আর উদ্দেশ্য ছিল ক্যাডেট কলেজের ভাগ্য ও গুরুত্ব নিয়ে তার সাথে চূড়ান্ত আলোচনটা সেড়ে নেয়া। এর পরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ক্যাডেট কলেজ- এর ইতিহাস, এর ভাগ্য এবং এর গুরুত্ব বিষয়ক সকল রচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহনের কাজ সম্পন্ন হয়। এর কয়েক মিনিট পূর্বেই জেনারেল বলেছিলেন, “If cadet colleges stay, I stay, otherwise, I resign”। তাই এই দিনটিই বাংলাদেশের সব ক্যাডেটের জন্য সবচয়ে ঐতিহাসিক দিন। (ঐ দিনের তারিখটা আমি মনে করতে পারছি না, অথচ মনে করাটা খুব জরুরী। আমাদের “কিপ ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পেইন” এর কেউ কি স্মৃতি থেকে এই তারিখটি বের করে নিয়ে আসতে পারবেন? পারলে খুব ভাল হতো)

ধ) প্রতিটা মিনিট যাচ্ছিল, আর আমাদের মনে হচ্ছিল ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যাচ্ছে। আমাদের শিক্ষায়তনের ভাগ্য, ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ এবং অন্য তিনটি ক্যাডেট কলেজের ভাগ্য তখন দাড়িপাল্লার এক প্রান্তে ঝুলছিল, কোনদিকে পাল্লা ভারী হয় কিছুই বোঝা যাচ্ছিল না। প্রতি মিনিটে আমাদের হৃৎস্পন্দন একটু একটু করে বেড়ে যাচ্ছিল।
ক্যাডেট কলেজে আমার প্রথম দিন (১৯৬৬ সালের ৯ই জুলাই, শনিবার) থেকে সেদিন বিকেল পর্যন্ত সবকিছু একে একে মনে পড়ছিল। আমাদের সমবেত কণ্ঠের চিয়ার্স কানে বাজছিলো (কাম অন ব্লুস.. কাম অন রেড্‌স.. কাম অন গ্রিন্‌স.. কাম অন ইয়েলোস.. কাম অন এফসিসি)। আরও শুনতে পাচ্ছিলাম, আমাদের সমবেত হাসির শব্দ, আমাদের কষ্ট আর কান্নার শব্দ। ফৌজদারহাটের খেলার মাঠের সব অ্যাডভেঞ্চার, নিয়ম ভাঙার আনন্দ, ব্যাড সাউন্ড আর মিষ্টি মিষ্টি সব স্মৃতি সব মনে পড়ছিলো। সবকিছু ছাপিয়ে ভেসে উঠছিলো এফসিসিতে আমাদের সবচেয়ে ভালবাসা ও কাতরতার ১৮৫ একর জমি। অন্তরের গভীরে আমরা সবাই বুঝতে পারছিলাম, এটাই বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজ টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে আমাদের সব আশা-ভরসার শেষ দিন।

বঙ্গবন্ধু কি তার স্বক্ষর করা “প্রেসিডেনশিয়াল অর্ডন্যান্স” (পিও) উঠিয়ে নিয়ে ক্যাডেট কলেজকে আবার আগে মত কার্যকর করতে সম্মত হবেন? জেনারেল ফিরতে এতো দেরী করছেন কেন? ঘড়ি টিক টিক করে ঘুরেই যাচ্ছিল, মিনিটের পর মিনিট চলে যাচ্ছিল। তখন প্রায় ২:৩৫ বাজে। আমরা এর মধ্যে কয়েকবার লিফ্‌ট দিয়ে নিচে নেমে দেখেছি জেনারেল ফিরলেন কি না। অবশেষে ৩:১৫ তে হঠাৎ জেনারেলকে দেখলাম, ১১ তলার করিডোরে ফাইল হাতে দাড়িয়ে আছেন।

আমরা দৌড়ে তার কাছে গেলাম। তার অনন্য গোঁফের মিষ্টি হাসি আমাদের অনেকটাই আশ্বস্ত করেছিল, কিন্তু শেষকথা না শুনে কিছুতেই শান্তি পাচ্ছিলাম না। অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে তিনি বললেন, “বয়েস, ক্যাডেট কলেজ থাকছে।” আমি “হিপ হিপ হুররে” বলে যত জোড়ে পারি চেচিয়ে উঠেছিলাম, আমার সাথে বাকিরাও “হিপ হিপ হুররে” ধ্বনি তুলেছিল। ৩৬ বছর পরও সেদিনের সেই ঘটনাগুলো যেন আমার চোখের সামনে ভাসে। আমরা সবাই আমাদের প্রথাগত ভঙ্গিতে জেনারেলকে স্যালুট করেছিলাম। লং লিভ জেনারেল ওসমানী।

আমি মনে করি, জেনারেল ওসমানীকে বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজের জনক হিসেবে আখ্যায়িত করা উচিত, পাকিস্তান আমলে যেমন ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান ছিলেন ক্যাডেট কলেজের জনক।

ন) যদ্দুর মনে পড়ে, এর পরই আমি জেনারেলের অফিস থেকে এফসিসি’র ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব নাসির চৌধুরীকে ফোন করে এই অতি আনন্দের সংবাদটি জানাই। আর তাকে অনুরোধ করি পিও জারির পরই তিনি এফসিসি’র সাইনবোর্ড পরিবর্তন করে যে নতুন নাম লিখা সাইনবোর্ড টানিয়েছিলেন তা খুলে ফেলতে। উল্লেখ্য, পিও জারির পর গ্র্যান্ড ট্রাংক রোডের পাশে এফসিসি’র প্রবেশ পথে স্থাপিত সাইনবোর্ডে ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের বদলে “ফৌজদারহাট সরকারী কলেজ” লেখা হয়েছিল। তিনি বললেন, ব্যবস্থা নেবেন। তিনি কথামতো কাজ করেছিলেন। পরদিন সকালে আমরা কলেজে গিয়ে দেখি নতুন সাইনবোর্ডে ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ লেখা। তিরি আরও বলেছিলেন, “দেখো, আমার চেয়ারটা ঠিক রেখো”।

প) ৩৬ বছর আগে আমাদের সেই উদ্যোগে যারা সহযোগিতা করেছিল তাদের সবার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা রইল। দীর্ঘ ৩৬ বছর পর আমি কেবল ৭-৮ জন ক্যাডেটর নামই মনে করতে পারি। এদের মধ্যে সবাই এফসিসি’র ১২, ১৩, ১৫, ১৬ ও ১৭তম ব্যাচের। “কিপ ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পেইন” এ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে, ঢাকা, চট্টগ্রামে কিংবা এফসিসি ক্যাম্পাসে থেকে যে যেভাবেই আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে অংশ নিয়েছে তাদের সবার প্রতিই আমি কৃতজ্ঞ। ১৯৭২-৭৩ সালের এই “কিপ ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পেইন” এ ফৌজদারহাটের যারা যারা অংশ নিয়েছিল তাদের সবার পূর্ণ নাম আমাদের জানা থাকা উচিত।

ফ) সিসিসিএল এর উচিত এই ক্যাম্পেইনের সাথে যুক্ত সকল ফৌজিয়ানকে বিশেষভাবে সম্মানিত করা, তাদেরকে বিনা অর্থে সিসিসিএল এর আজীবন সদস্য করে নেয়া। কারণ ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের এই প্রাক্তন ক্যাডেটদের আত্মত্যাগী উদ্যোগ ও প্রয়াসের কারণেই আমরা আজ ১২টি ক্যাডেট কলেজ পেয়েছি। তাছাড়া ১৯৭২ সালে অধ্যয়নরত সেই ক্যাডেটদের সক্রিয় সহযোগিতা না থাকলে সিসিসিএল আজ এ পর্যায়ে আসতেও পারতো না। আমাদের পুরো জাতি শেষদিন পর্যন্ত সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করে যাবে; তবে সিসিসিএল ও বর্তমানের সব ক্যাডেটরা কেন ফৌজদারহাটের সেই প্রাক্তন ক্যাডেটদের সম্মান করবে না যাদের প্রচেষ্টায় ক্যাডেট কলেজ এ পর্যন্ত আসতে পেরেছে?
১৯৭২ সালে যে ক্যাডেট কলেজ ব্যবস্থাকে বিলুপ্ত করে দেয়া হয়েছিলো তা-ই আজ দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফৌজিয়ানদের সেই প্রচেষ্টা ছাড়া এটা সম্ভব হতো না।

ব) তাছাড়া অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের সব ক্যাডেটদের এই ঐতিহাসিক ঘটনা ও ক্ষণগুলো সম্পর্কে জানা উচিত। এর ফলে বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজের গতিশীলতা বজায় থাকবে। এফসিসি’র যে প্রাক্তন ক্যাডেটরা প্রাণান্ত চেষ্টার মাধ্যমে ফৌজদারহাটের মটো “কথা নয় কাজ” এর মহিমা ধরে রাখার ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন তাদের প্রতি “হ্যাট্‌স অফ”। তারা কথা নয়, কাজ দিয়েই সবকিছু প্রমাণ করেছিলেন, বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজকে জীবিত রাখার জন্য তাদের সে প্রচেষ্টার গুরুত্ব কোনদিনই হারিয়ে যাবে না।

ভ) অবশেষে সেই সময় এসেছে, বাংলাদেশের সব ক্যাডেট কলেজের সব প্রাক্তন ক্যাডেটদের একত্রিত করার সময়, তাদেরকে ভাই, সহকর্মী ও বন্ধু হিসেবে জড়ো করার সময়। মনে রাখতে হবে, আল্লাহ আমাদেরকে চারপাশটা দেখার জন্য দুটি চোখ দিয়েছেন, যাতে আমরা তার সৃষ্ট প্রকৃতি দেখে তার প্রশংসা করতে পারি। আমি নিশ্চিত, সব ক্যাডেট কলেজের সব ক্যাডেট তাদের নিজ নিজ কলেজের ছাত্র হওয়ার বিষয়টাকে উদার ও বৃহত্তর দৃষ্টিতে দেখবে, সেখানে দৃষ্টির কোন সংকীর্ণতা থাকবে না!!! তাই ফৌজদারহাটের সেই প্রাক্তন ক্যাডেটদের বর্তমানে সিসিসিএল এর নেতৃত্ব দেয়া উচিত, এই ক্লাবকে এমন বৃহত্তর রূপ দেয়া উচিত যাতে তা বাংলাদেশের সব ক্যাডেটের হয়ে উঠতে পারে এবং এটা যেন কর্মের দিক দিয়ে বাংলাদেশের অদ্বিতীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে পারে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

কক) পাঠকের মন্তব্য ও ফিডব্যাক কাম্য। “কিপ ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পেইন” বিষয়ে বলা আমার কথাগুলোর যথার্থতা ও ৩৬ বছর আগের সেই ঘটনাগুলোর ঐতিহাসিক সঠিকত্ব বিষয়ে কোন সন্দেহ থাকলে বলতে দ্বিধা করবেন না।

খখ) উপরে বর্ণীত ঘটনাগুলো সম্পূর্ণ আমার নিজস্ব স্মৃতি থেকে লেখা, কারও কাছ থেকে শুনে নয়। এম আনোয়ারুল হক ভাই, নুরুর রহমান ভাই, তারেক ভাই, সি এম মহসিন ভাই, নাসিম ভাই, আনোয়ার শহীদ এবং আরও অনেকে এখনও বেচে আছেন। আমাদের উচিত তাদের স্মৃতির সবটুকু নিয়ে আসা।
এটা কাউকে আহত করার উদ্দেশ্যে নয়, বরং ক্যাডেট কলেজের বিকাশে ফৌজদারহাটের প্রাক্তন ক্যাডেটদের অবদানকে জনসমক্ষে নিয়ে আসার উদ্দেশ্যে। এর মাধ্যমে ক্যাডেট কলেজের বিকাশ বিষয়ক ঐতিহাসিক তথ্যগুলো একত্রিত করা সম্ভব হবে এবং সব কলেজের জন্যই একটি চূড়ান্ত ইতিহাস প্রণয়ন সম্ভব হবে।

গগ) এফসিসি দীর্ঘজীবী হোক, দীর্ঘজীবী হোক ফৌজিয়ানেরা। বাংলাদেশের সব ক্যাডেট কলেজ এবং সব প্রাক্তন ক্যাডেটরা দীর্ঘজীবী হোক। আসুন আমরা একত্রিত হই এবং জাতির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। কারণ এই জাতিই আমাদেরকে বাংলাদেশের সবচেয়ে সুবিধাপ্রাপ্ত ও সম্মানিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে।

Once a Faujian, forever a Faujian

*****

অনুবাদকের কথা

ফৌজিয়ান ভাই সেই ১৭ই মার্চ “কিপ ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পেইন” নামে একটি ব্লগ পোস্ট করেছিলেন। সেখানে খাদেম ভাইয়ের মূল ইংরেজি রচনাটা ছিল। সেটা বাংলা অনুবাদ করব বলে কথা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করেই কেন জানি ভুলে গেলাম। আর অনুবাদ করা হয়নি। আজ হঠাৎ ঐ ব্লগের কমেন্ট পড়ে মনে হলো। তাই অনুবাদ করে ফেললাম। ক্যাডেট কলেজের ইতিহাস বিষয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট। এটা পড়ার পর আমিও খাদেম ভাইয়ের সাথে সুর মিলিয়ে কিছু প্রস্তাব রাখছি। আশাকরি সবাই মতামত ও করণীয় জানাবেন:

– জেনারেল ওসমানীর সাথে পাঁচ ফৌজিয়ানের সাক্ষাতের দিনটিকে স্বাধীন বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। অবশ্য সেই তারিখটাও আমাদের জানা নেই। এটা জানতে হবে।
– জেনারেল এম এ জি ওসমানীকে স্বাধীন বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজের জনক হিসেবে আখ্যায়িত করা উচিত।
– কিপ ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণকারী সবাইকে সিসিসিএল এর পক্ষ থেকে যথাযোগ্য সম্মান প্রদান করা উচিত।
– এই ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণকারী সবাইকে বিনামূল্যে সিসিসিএল এর আজীবন সদস্যপদ প্রদান করা উচিত।
– এই ক্যাম্পেইনের দলিলপত্র সংগ্রহ করা উচিত।
– “ক্যাডেট কলেজের ইতিহাস” নামক একটি অফিসিয়াল বইয়ে এর সবকিছু অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এই বইটি সব ক্যাডেটদের অবশ্যপাঠ্য থাকা উচিত। তবে এমন অবশ্যপাঠ্য নয় যাতে তার উপর আবার বিতৃষ্ণা জন্মে।

ডেইলি স্টারের একটি কলামে মিনু খাদেমসহ অন্যান্যদের এই ক্যাম্পেইনের উল্লেখ পেলাম। পরবর্তীতে সেটা নিয়ে লেখার ইচ্ছা রইল। কলামের লিংকটা দিচ্ছি:
# Faujdarhat Cadet College: Half a century of excellence – Fakhruddin Ahmed

৭৯ টি মন্তব্য : “কিপ ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পেইন”

  1. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    অনেক অনেক ধন্যবাদ মুহাম্মদ।
    বেটার লেইট, দ্যান নেভার 😉
    এর সাথে সাথে উত্থাপিত প্রস্তাবনাগুলোও বেশ গুরুত্বপূর্ণ... দেখা যাক পোলাপাইন কি বলে।

    থ্যাংকস অ্যাগেইন :clap: :clap:


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  2. রবিন (৯৪-০০/ককক)
    জেনারেল ওসমানীর সাথে পাঁচ ফৌজিয়ানের সাক্ষাতের দিনটিকে স্বাধীন বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। অবশ্য সেই তারিখটাও আমাদের জানা নেই। এটা জানতে হবে।
    - জেনারেল এম এ জি ওসমানীকে স্বাধীন বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজের জনক হিসেবে আখ্যায়িত করা উচিত।
    - এই ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণকারী সবাইকে বিনামূল্যে এর আজীবন প্রদান করা উচিত।
    - এই ক্যাম্পেইনের দলিলপত্র সংগ্রহ করা উচিত।

    সিসিসিএল সদস্যপদ দেক আর না দেক, সব ক্যাডেট এর ইতিহাস টা জানা জরুরি।

    জবাব দিন
  3. What was wrong with this guy 'Tofail Ahmed'? I assume this is the same person still around in AL. Cadets should be wary of such people and their politically motivated activities in the future. I do not subscribe to any party ideology, but seriously - this guy was an evil/vindictive/misinformed/flawed, does not matter whether he belongs to AL/BNP/Jamaat. Since cadet colleges were reinstated by Bangabandhu with General Osmani's recommendation, it is obvious that it was not his decision to cancel it in the beginning. But rather he was acting on people such as Tofail's negative recommendation. I can imagine someone getting mad for being boycotted by the cadets, but why the mentality that 'dekhie debo tomader' and then to kill something within a week (he literally killled the cadet colleges and many cadets' hopes in 1972)! How dangerous!

    Thank you for the wonderful article in Bangla. And thanks to those Faujians - they must not be forgotten.

    জবাব দিন
      • মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

        ঠিক, প্রিন্সিপাল কিভাবে এমন হলেন?
        আর সেই ক্যাডেটদের কথা চিন্তা করেন। কি ছিল। আর আজকালকার ক্যাডেটদের কি অবস্থা?! তাদের কথা ভেবে অবাক হই। শ্রদ্ধায় মাথা নুয়ে আসে।

        জবাব দিন
        • রাফি (০২-০৭)

          মুহাম্মাদ ভাই, আমি আপনার সাথে পুরাই এক মত। এখনকার ক্যাডেটদের আসলেই এত সাহস নাই। তবে ভাই এর জন্য কিন্তু ক্যাডেটরাই সুধু দায়ি না। ফ্যাকাল্টিরাও অনেকাংশে দায়ি। আমি মনে করি সম্পুর্ণ না হলেও সিংহভাগ দায়িত্ব তাদেরই। কেন না, বর্তমানে অধিকাংশ ফ্যাকাল্টিরা এমন এক ধারণা পোষণ করে যে, ক্যাডেটরা কখনও ভাল কিছু করতেই পারে না, এমন কি তাদের অনেকে ক্যাডেটদের করা ভাল কোনো কাজকে appreciate ও করে না। তাই ক্যাডেটদের সাহস অনেকাংশে কমে গেছে। তাছারা অবকাঠামোতেও অনেক পরিবর্তণ হয়েছে।

          জবাব দিন
        • জোবায়ের (পকক ২০০৮-১৪)

          ভাই,আম একমত,এই কমেন্ট টি যখন লেখা হয়েছে,সেই সময়ে আমি ক্যাডেট কলেজ এ ঢুকি মাত্র,আমি জানিনা ক্যাডেট কলেজের শিক্ষকদের ট্রেনিং এ কি করানো হয়,তবে ক্যাডেটদের quality and ability সম্পর্কে পজিটিভ ধারণা রাখা ও বলার প্র‍্যাকটিস বাধ্যতামূলক করা উচিৎ । এই বিষয়টি আমি ৬ বছর খুব করে feel করেছি।

          জবাব দিন
  4. সায়েদ (১৯৯২-১৯৯৮)

    মুহাম্মদ,
    ভাই তোমাকে বিশাল একটা ধন্যবাদ :clap: ।
    এভাবে না দিলে হয়তো পড়াই হোত না। জানা হোত না এক অজানা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
    সব ক্যাডেটের জন্য তথ্যগুলো জানা প্রয়োজন বলে মনে করি।


    Life is Mad.

    জবাব দিন
  5. তৌফিক (৯৬-০২)

    মুহাম্মদ, তোমাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই অনুবাদের জন্য, ইংরেজিটা আগেই পড়ছিলাম। সিসিবি থেকে কোন ইবুক বের হলে অবশ্যই এই লেখাটাকে রাখতে হবে।

    জেনারেল ওসমানীকে :salute:

    সংশ্লিষ্ট ফৌজিয়ান ভাইদেরকে :salute: :salute:

    লং লিভ ক্যাডেট কলেজেস।

    জবাব দিন
  6. টিটো রহমান (৯৪-০০)

    লং লিভ জেনারেল ওসমানী।
    লং লিভ ক্যাডট কলেজ।
    লং লিভ মিনু খাদেম ।

    মুহাম্মদ কে অসংখ্য ধন্যবাদ লেখাটি শেয়ার করার জন্য।
    লেখাটি প্রিয় পোস্টে রাখার কোন ব্যবস্থা আছে কি?
    আর কাউকে ব্যক্তিগত মেসেজ কি এই ব্লগ থেকে পাঠানো যায়?

    নাহিদ জবাব দিবা?


    আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই

    জবাব দিন
  7. জেনারেল ওসমানীকে :salute:

    সংশ্লিষ্ট ফৌজিয়ান ভাইদেরকে :salute:

    লং লিভ মুহম্মদ এন্ড মিনু খাদেম

    লং লিভ ক্যাডেট কলেজেস।

    অফ দ্য রেকর্ডঃ সফল না হলে তো বিরাট সমস্যা হত, কতকিছু মিস করতাম

    জবাব দিন
  8. আমি যতটুকু জানি তোফায়েল আহম্মেদ এর একমাত্র সন্তান মেয়ে ডা:"নাম মনে |আসছেনা" এম,জি,সির ex-cadet তার পুত্রতুল্য মঈনুল ভাই বরিশালের ex-cadet। এই কথাগুলো তার মুখ দিয়ে শোনা, আমাদের কলেজের Re-union a...ক্যাডেট কলেজের কতো প্রশংসা যে সেদিন তিনি করলেন...........হায় এরই নাম বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ... 😛

    জবাব দিন
      • মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

        ঠিক যেমন, দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোটি কোটি প্রশংসা করে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী সমাজের লোকেরা স্কুল বা কলেজ শিক্ষার জন্যও ছেলেমেয়েকে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়।
        রাজনীতিবিদ সবাই সময়ের দাস। যখন যা প্রয়োজন তা-ই বলেন। যাদের আদর্শ আছে তারা কাজটি একটু সম্মানের সাথে করতে পারেন আর যাদের আদর্শ নেই তারা নেক্কারজনকভাবে করেন।

        জবাব দিন
  9. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    আগেও লিখেছিলাম এখানেও লিখছিঃ এই কাহিনী নিয়ে ভবিষ্যতে কিন্তু দারুণ একটা নাটক বা ডকুমেন্টারি করা যেতে পারে।এখানে দুর্দান্ত একটা নাটকের যা যা উপাদান দরকার তার অনেক কিছুই আছে-ঐতিহাসিক চরিত্র,নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বাঁচানোর লড়াই,তাও কতগুলো একেবারেই বাচ্চা বয়েসি ছেলেদের দ্বারা-ক্লাইম্যাক্স...আশা করি পরবর্তীতে কোন ক্যাডেট এটা নিয়ে ছবি বানাবেন।

    জবাব দিন
  10. সায়েদ (১৯৯২-১৯৯৮)

    একটা কলেজে ক্লাস টুয়েলভ হলো সবচাইতে সিনিয়র ব্যাচ। কিন্তু কলেজের পরবর্তী উচ্চস্তরে তারাই সবচেয়ে নবীন। সেই তুলনায় এফসিসি'র ভাইয়ারা যা করেছিলেন সেগুলোকে রীতিমত বৈপ্লবিক মনে হয়েছে। তাদের অসামান্য অবদানের জন্য অশেষ শ্রদ্ধা।

    মাসরুফের আইডিয়াটা আমি কল্পনার চোখে লাইভ দেখতে পাচ্ছি 😛 😛 । দূর্দান্ত আইডিয়া। আইডিয়াটা ডিম পাড়ুক .....।


    Life is Mad.

    জবাব দিন
  11. মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

    যারা রাজনীতি বাদ দিয়ে চিন্তা করতে পারে না তাদের কাছে "কিপ ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পেইন" এর গুরুত্ব খুব কম বলে মনে হয়েছে। আমি বলতে চাচ্ছি, যে আওয়ামী লীগ (মনেপ্রাণে) করে সে কখনই তোফায়েল আহমেদকে এভাবে তুলে ধরাটা মানতে পারবে না। হাতেনাতে প্রমাণ পেয়েছি বলেই বলছি।

    কিছু প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে:
    ১। ১৯৭২ সালের সে প্রেক্ষাপটে কি ছাত্র রাজনীতি খারাপ ছিল?
    ২। ইলেভেন-টুয়েলভের কিছু ছেলের পক্ষে এতো উঁচু লেভেলে যোগাযোগ করাটা কি সম্ভব ছিল?
    ৩। অধ্যক্ষ সহ সব শিক্ষক এতো নির্বিকার ছিলেন কেন?
    ৪। ঘটনা কি একটু বেশী নাটকীয় না? একটু অতিরঞ্জিত নয় কি?
    ৫। এতো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না কেন? এফসিসি'র ক্যাডেটরাও কিছু জানে না কেন?

    এসব প্রশ্ন শুনতে পেলে কিপ ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণকারীরা মর্মাহত হবেন, এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু কিছু বিরুদ্ধ আলোচনাও হওয়া উচিত বলে মনে করি।

    আমি নিজে এখানে কিছু প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করছি।
    ১। ক্যাডেট কলেজের প্রেক্ষিতে ছাত্র রাজনীতি প্রশ্নাতীত বিষয়। বর্তমানের ক্যাডেটদেরও সেটা বুঝতে পারার কথা। ছাত্র রাজনীতি আসলে ক্যাডেট কলেজ আর ক্যাডেট কলেজ থাকতো না।
    ২। বিপ্লবে অনেকে অংশ নিলেও উদ্যোগ খুব কম লোকেরাই নেয়। যে কয়েকজন উদ্যোগ নিয়েছিলেন তাদেরকে বস মানতে অসুবিধা কোথায়?
    ৩। নির্বিকার থাকলে কি করার আছে। এখানে অনেকেই প্রেক্ষাপট না বুঝে কথা বলছেন।
    ৪। নাটকীয় তো অবশ্যই। পৃথিবীর সব সব বিপ্লবী ঘটনাই নাটকীয়। শুধু নাটকীয় না, নাটককেও হার মানায়।
    ৫। এটা ক্যাডেট কলেজ প্রশাসনের দোষ। ক্যাডেট কলেজ প্রশাসনে ক্যাডেটদের তেমন কোন অংশগ্রহণ নেই। সেই প্রশাসন আমাদের কিছু জানায়নি। তাই ক্যাডেট কলেজ গভর্নিং বডি এই দোষে দুষ্ট। তাদের বোধদয় হবে বলে আশা করি।

    অনেক ক্যাডেট পর্যন্ত এই ঘটনার গুরুত্ব বুঝতে পারছে না। বিশেষত যারা আওয়ামী লীগের গোড়া সমর্থক, তারা। কেউ কিছু বলেন।

    আমি এই ঘটনার বিস্তারিত দলিলপত্র ও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছি। নিয়মিত এই ব্লগেই আপডেট দেব। যারা এই ক্যাম্পেইনে অংশ নিয়েছিলেন তাদের আরও সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া সেটা সম্ভব না। আর এটা আবশ্যিক। কারণ, ইতিহাস ছাড়া ক্যাডেট কলেজ বেশীদিন টিকে থাকতে পারবে না। নিজেদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ না করলে তো সবকিছুই পরিবর্তনের স্রোতে হারিয়ে যাবে।

    জবাব দিন
    • @মুহাম্মদ
      খুব গুরুত্বপুর্ন আলোচনা। এবং এ ধরনের কিছু প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়াটা অস্বাভাবিকও নয়। এবং তোমার জবাব গুলিও বেশ গুছানো। তবে আমার সামান্য বুদ্ধিতে যা ধরে,তা দিয়ে, আমি আরো কিছু যোগ করছি......
      ১। ১৯৭২ সালের সে প্রেক্ষাপটে কি ছাত্র রাজনীতি খারাপ ছিল?
      হয়তো খারাপ ছিলো না। কিন্তু খারাপ ভালো বড় কথা নয়। সাধারনত ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যোগাযোগটা শুরু হয় কলেজ বা ইউনিভার্সিটিতে এসে। কিন্তু ক্যাডেট কলেজের ক্যাডেটরা বেশির ভাগই স্কুল লেভেলের(১১,১২ বাদে)। ওই বয়েসে ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়াটা মনে হয় কেউই সমর্থন করবে না। তাছাড়া ক্যাডেট কলেজতো আর দশটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো না। এর গঠনটাই আলাদা। (অন্য কোথাও মনে হয় ৭ থেকে ১২ পর্যন্ত পড়ার সিস্টেম নেই)। এর প্রসাশন অন্য রকম। এমনকি একমাত্র ক্যাডেট কলেজেই নিয়ম করে প্রতি বছর আলাদা ক্যাডেট প্রসাশন(প্রিফেক্টশীপ)তৈরী করা হয়। রাজনীতির উদ্দেশ্য যদি হয় নেতৃত্ব তৈরি করা তাহলে বলা যায় নেতৃত্বের গুনাবলী ক্যাডেটদের স্বভাবজাত। ফলে আলাদা করে ক্যাডেট কলেজে রাজনৈতিক অংগসংগঠন করার আদৌ কোন দরকার নেই বা ছিলো না।
      ২। ইলেভেন-টুয়েলভের কিছু ছেলের পক্ষে এতো উঁচু লেভেলে যোগাযোগ করাটা কি সম্ভব ছিল?
      যোগাযোগটা কিন্তু উঁচু লেভেলে সরাসরি হয়নি। ধাপে ধাপে হয়েছে। প্রথমেই ফৌজদারহাটের দুজন শিক্ষক>চট্টগ্রাম ও ঢাকায় বসবাসরত এফসিসি’র অনেক এক্স-ক্যাডেট>ফৌজিয়ান চৌধুরী এম মহসিন ভাই(৪র্থ ব্যাচ)>ব্রিগেডিয়ার জিয়াউর রহমান>জেনারেল এম এ জি ওসমানী>বঙ্গবন্ধু
      এক্স-ক্যাডেট বড় ভাইরা এই যোগাযোগে অনেক বড় ভুমিকা রেখেছেন। একজন ক্যাডেট হিসাবে এক্স-ক্যাডেট এবং সেনা সদস্যদের সাথে দেখা করতে পারাটা খুবই স্বাভাবিক। আমাদের ভাইয়ারা সেনা বাহিনীর যতো বড় অফিসারই হঊন না কেন, আমাদের কাছে তিনি আমাদের প্রিয় বড় ভাই। তারাও আমাদের ছোট ভাইএর মতো এক্সেস দিয়ে রাখেন বলেই না ক্যাডেট কলেজ আর সব কিছু থেকে আলাদা।
      ৩। অধ্যক্ষ সহ সব শিক্ষক এতো নির্বিকার ছিলেন কেন?
      তাদের নিশ্চয়ই নিজস্ব সীমাবদ্ধতা ছিলো। তারা করতেন চাকুরি। ফলে প্রশাসনের অবাধ্য হউয়া তাদের খুব একটা সম্ভব ছিলো না। তবে পুরা ঘটনাটা পড়লে ভাল মতোই বুঝা যায় যে নৈতিক ভাবে অনেক শিক্ষকের ক্যাডেটদের প্রতি সমর্থন ছিলো। কিন্তু যেহেতু অধ্যক্ষ একটা কলেজের সর্বোচ্চ প্রশাসক তাকে সরাসরি উচু পর্যায়ে জবাবদিহি করতে হয় তাই তিনি কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনার দায়ভার এড়াতে চাইছিলেন।
      ৪। ঘটনা কি একটু বেশী নাটকীয় না? একটু অতিরঞ্জিত নয় কি?
      আমি কিন্তু খুব নাটকীয় কিছু দেখি না।
      খুব সংগঠিত এবং ধীরে সুস্থে আগানো একটা প্রতিবাদ। যারা নাটক খুজেন তারা খুজতে পারেন। তাদের জন্য তোমার জবাবটাই পারফেক্ট।
      ৫। এতো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না কেন? এফসিসি’র ক্যাডেটরাও কিছু জানে না কেন?
      যারা ক্যাডেট কলেজের ভাগ্যনিয়ন্ত্রক ছিলেন বা হয়েছেন এই ঘটনা এক অর্থে তাদের নৈতিক পরাজয় ছিল। নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বাঁচানোর জন্যে লড়াই করা কিছু ছেলের কাছে নৈতিক ভাবে হার। আর তাই তারা চাননি সেই ইতিহাস সবাই জানুক। এটা অস্বাভাবিক কিছুনা। এই দেশের এমন অনেক ইতিহাসই এখনো আমাদের অজানা।

      ভালো থেকো। অনেক ধন্যবাদ এতো চমৎকার বিষয়টি সবার সামনে নিয়া আসার জন্যে।

      জবাব দিন
    • কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

      উত্থাপিত পয়েন্টগুলা গুরুত্বপূর্ণ।
      তবে আপাতত মুহাম্মদের ৫ নম্বর পয়েন্টটা নিয়ে একটু দ্বিমত করছি।
      হয়তো ক্যাম্পেইনটা নিয়ে এফ সি সি ছাড়া অন্য কলেজের অনেকেই জানেননা [যেহেতু এটি প্রায় একক ভাবে তখনকার ফৌজিয়ানদের মুভমেন্ট ছিলো, তাই অন্যরা না জানাটাই স্বাভাবিক] তবে এফ সি সি'র ক্যাডেটরাও জানেনা, এটা পরিপূর্ণ ভাবে ঠিক নয়, যারা এখনো ভার্সিটিতে বা পড়াশোনায় আছে স্বাভাবিকভাবেই নিজেদের এলামনাই এসোসিয়েশনগুলোতে তাদের অংশগ্রহণ কম [আমাদেরও তাই ছিলো] তার উপর এফ সি সি'র সিনিয়র ব্যাচগুলো আক্ষরিক অর্থেই বয়সের দিক থেকে আমাদের অনেক সিনিয়র হয়ে যাওয়ায় এবং তৎকালীন এক্স ফৌজিয়ানদের সিংহভাগই প্রবাসী হওয়ায় একটা গ্যাপ হয়ে থাকতে পারে। তবে সবাই যে জানেনা সেটা ঠিকনা।

      এফ সি সি'র প্রথম প্রিন্সিপাল কর্ণেল মরিস ব্রাউন ছিলেন বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজের ইন্টারনাল এনভায়রনমেন্ট তৈরি করার প্রধান রূপকার। উনাকে নিয়েও একটি তথ্যবহুল লেখা আমার কাছে আছে [আমাদের এক সিনিয়র ভাইয়ের লেখা]। খুজে বের করে সেটাও পোস্ট করে দিচ্ছি, এটা থেকে আমরা অনেকেই জানতে পারবো কিভাবে একজন ভিশনারি মানুষের নিরলস চেষ্টায় আমরা একটা দুর্দান্ত চমৎকার এবং সবসময়ের জন্য আধুনিক একটা শিক্ষাব্যবস্থার ট্র্যাডিশন পেয়েছিলাম।


      সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

      জবাব দিন
    • আওয়ামীলীগের সমর্থকদের মন খারাপ করার ত কিছু দেখিনা। তখন তোফায়েল আহমেদ ছিলেন আওামিলীগের ছোট নেতা, আর জেনেরাল ওসমানী ছিলেন আওামিলীগের ই প্রথম সারির। আর এখনও তিনি (তোফায়েল আহমেদ) আওয়ামীলীগে বিতর্কিতদের ই একজন। ভুল সিদ্ধান্ত ত মানুষ নিতেই পারে, আসল বেপার হল নিজের ভুল বুঝতে পারা এবং ভুল সংশোধন করা। যেটা বঙ্গবন্ধুর আওালীগের ছিল কিন্তু তার কন্যার আওামিলীগে অনুপস্থিত। চমৎকার লেখাটার জন্য থাঙ্কক্স। তবে আমরা আরও বিস্তারিত জানতে ছাই।
      সুপর্ণ

      জবাব দিন
    • আজিজুল (১৯৭২-১৯৭৮)

      আমরা ১৯৭২ এ' জুনিয়র মোস্ট ' ক্যাডেট হিসাবে এই সব ঘটনার নীরব সাক্ষী ! তবে খাদেম ভাইয়ের আলোচনায় একজন মানুষের নাম আসে নাই, যে এই তোফায়েল দের দাওয়াত করে নিয়ে এসেছিল "রাজনীতির ক্যাডেট কলেজ ব্রাঞ্চ" খুলার জন্যে ! নামটা এই মুহূর্তে মনে পরছেনা, সম্ভবত ফজলে বা এই ধরনের নাম। ছোট খাট আন ইম্প্রেসিভ মানুষ ছিল। যাকে জিয়াউর রহমান একবার ঠাট্টা করে বলেছিলেন " তোমাকে তো ক্যাডেটের মতই লাগে না"
      উনিই ছিলেন সব নষ্টের গোঁরা। সম্ভবত ওর নামে রিপোর্ট থাকায় ক্লাস টুয়েলভে ওকে বের করে দেয়া হয়।(কেও কি অর নাম বলতে পারেন? ১৩ ব্যাচ এর হবে)
      সেই দিনগুলি! তোমাদের সালাম ক্যাডেট কলেজ রক্ষার বীর যোদ্ধারা !
      আজিজুল, এফ সি সি ১৯৭২~৭৮


      Smile n live, help let others do!

      জবাব দিন
  12. মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

    স্টার ক্যাম্পাসে একটা লেখা পেয়েছি। এটা ক্যাম্পেইনের নেতা স্বয়ং লিখেছেন। এম আনোয়ারুল হকের লেখার লিংকটা দিলাম:
    http://www.thedailystar.net/campus/2008/04/04/camspotlight_campaign.htm

    জবাব দিন
  13. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)
    বিশেষত যারা আওয়ামী লীগের গোড়া সমর্থক, তারা। কেউ কিছু বলেন।

    সত্যি কথা বলতে কি,নিজামীর সাথে হাত মেলানোর পরে আওয়ামী লীগের প্রতি মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল হিসেবে যেটুকু শ্রদ্ধা ছিল সেটুকুও চলে গিয়েছে আমার-এদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে আমি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে এখন একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ বলে মনে করি।আমাকে আওয়ামী লীগ কেন, কোন রাজনৈতিক দলেরই গোঁড়া সমর্থক বলা যাবেনা। তবে কিপ ক্যাডেট কলেজের ঘটনা যদি স্বয়ং বঙ্গবন্ধু অথবা শহীদ জিয়া তো কোন ছার,লেনিন, আব্রাহাম লিংকন কিংবা মহাত্মা গান্ধীও ঘটাতেন ,একজন ক্যাডেট হিসেবে আমি সেটাকে ঘৃণা করতাম।নিজের এই সীমাবদ্ধতা আমি স্বীকার করছি-যদি আমাকে কোন কিছুর গোঁড়া সমর্থক বলা হয় তাহলে সেটা হবে ক্যাডেট কলেজের। ক্যাডেট কলেজ কোনো এক অখ্যাত স্কুলের সাথে বিতর্কে হেরে আসার পর রি-ইউনিয়নে গিয়ে সেই তার্কিকদের বকাঝকা করে প্রায় চোখে পানি এনে দিয়েছিলাম এই একটা কারণেই-ক্যাডেট কলেজের প্রতি অন্ধ ভালবাসা কলেজের কোন ত্রুটিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষেপে যাওয়া পাগলাটে সিনিয়র বানিয়ে দেয় আমাকে। তোফায়েল আহমেদ যে কাজটি করেছেন সেটি কেমন কাজ হয়েছে সেটা আলাদা করে বলার কোন কারণ দেখিনা,এটা বুঝতে ক্যাডেট না হলেও চলে।আওয়ামী লীগের যতই গোঁড়া সমর্থক হোক না কেন, এ কাজটা কেউ যদি সমর্থন করে তবে তাকে নিম্নশ্রেণির চাটুকার ছাড়া আর কিছুই বলতে পারছিনা।এ ধরণের সাপোর্টাররাই মূলতঃ যে কোন দলের পতন ডেকে আনে নেতৃত্বকে অন্ধ করে দেবার মাধ্যমে।আর এ ব্যাপারে আমার অবস্থানটা একটু পরিষ্কার করি।

    আমার প্রিয়তমা যদি আমাকে কখনো বলে-তোমাকে যে কোন একটা বেছে নিতে হবে-হয় আমি নতুবা ক্যাডেট কলেজ-তাহলে আমি বিষাদমাখা হাসি নিয়ে তার অধরে বিদায়চুম্বন এঁকে দেব। যে প্রতিষ্ঠানটি আমাকে এই আমি বানিয়েছে(তা যত তুচ্ছই হোক না কেন),সেই প্রতিষ্ঠানকে যে সম্মান করবেনা এমন প্রিয়তমা আমার কাছে আসলে সত্যিকারের প্রিয়তমা নয়,ক্ষণিকের ভাললাগা অলীক মরীচীকামাত্র।আমার বাবা মাকে ভাল না বেসে আমাকে ভালবাসলে সে ভালবাসা যেমন পরিপূর্ণ নয়,ক্যাডেট কলেজের অবস্থানটাও আমার কাছে সেরকম।হ্যাঁ,ক্যাডেট কলেজ যদি তার আদর্শের থেকে সরে আসে,তখন আমি অন্ধ থাকবনা, তবে আমার রোষ তখন থাকবে সেই "সরে আসা" আর সরে আসার পিছনে দায়ী মানুষগুলোর প্রতি।ক্ষুদ্র আমি ক্ষুদ্রতর সামর্থ নিয়ে তখন লড়ব ক্যাডেট কলেজের হারানো গৌরব উদ্ধার করতে।দেশ আক্রান্ত হলে ক্যাডেট কলেজে যদি শত্রুসেনা ঘাঁটি গড়ে,তখন সেই ঘাঁটি ধ্বংস করার জন্য কমান্ডো আহসান ভাইকে এই আমিই হয়তো প্রিয়তম কলেজের চিরচেনা লেআউট তুলে দেব-কারণও হবে একটাই-ক্যাডেট কলেজে শেখানো দেশপ্রেম।

    আমি দুঃখিত,আগেও বলেছি যে কিছু কিছু জায়গায় আমি আমার আবেগকে অবদমিত করে রাখতে পারিনা-ক্যাডেট কলেজ হচ্ছে সেরকম একটি জায়গা।হয়ত অপ্রাসঙ্গিক আর হাস্যকর অনেক কিছু বলে ফেললাম-আমার বক্তব্য কোনকিছুকে পরিষ্কার করার চাইতে মন হয় আবেগের আদিখ্যেতা বলে মনে হবে সবার কাছে।

    ক্যাডেট কলেজ পরিবারের একজন আবেগাক্রান্ত, অযোগ্য সন্তান হিসেবে আমার এই আবেগটাকেই মুহম্মদের কথার প্রসঙ্গে আমার বক্তব্য বলে ধরে নিতে বলছি।যে কোন ধরণের সমালোচনা,আমার মন্তব্য যে হাস্যকর রকমের আবেগের জগাখিচুড়ী তার তীব্র প্রকাশ- এই ব্লগের সবার কাছ থেকে এই অভিযোগগুলো পাবার জন্যে মাথা পেতে অপেক্ষায় রইলাম।

    ধন্যবাদ সবাইকে আমার মন্তব্য এত কষ্ট করে পড়ার জন্যে।

    জবাব দিন
    • আমার প্রিয়তমা যদি আমাকে কখনো বলে-তোমাকে যে কোন একটা বেছে নিতে হবে-হয় আমি নতুবা ক্যাডেট কলেজ-তাহলে আমি বিষাদমাখা হাসি নিয়ে তার অধরে বিদায়চুম্বন এঁকে দেব।

      দেখতে দেখতে পোলাডা বড় হইয়া গেলো। 😉 😉
      চুমা দেওয়া শিখা ফালাইসে। :grr: :grr:

      জবাব দিন
    • I wrote the initial comments on 'Tofail Ahmed'. Let me clarify. I just could not swallow the fact that he visited FCC, were boycotted by the cadets, and then "just within 10 days cadet colleges were abolished" (the rapidity of this action bother me). So what should I assume - he did not have a major part in this plot? I did not make a political comment to hurt anyone - he could have belonged to any party - my assesment of him would have been the same.

      Like this wonderful article, let's just focus on the heroes of the KCC Campaign. Everyone should know their story.

      জবাব দিন
    • সায়েদ (১৯৯২-১৯৯৮)
      আমার প্রিয়তমা যদি আমাকে কখনো বলে-তোমাকে যে কোন একটা বেছে নিতে হবে-হয় আমি নতুবা ক্যাডেট কলেজ-তাহলে আমি বিষাদমাখা হাসি নিয়ে তার অধরে বিদায়চুম্বন এঁকে দেব। যে প্রতিষ্ঠানটি আমাকে এই আমি বানিয়েছে(তা যত তুচ্ছই হোক না কেন), সেই প্রতিষ্ঠানকে যে সম্মান করবে না এমন প্রিয়তমা আমার কাছে আসলে সত্যিকারের প্রিয়তমা নয়, ক্ষণিকের ভাললাগা অলীক মরীচীকামাত্র। আমার বাবা মাকে ভাল না বেসে আমাকে ভালবাসলে সে ভালবাসা যেমন পরিপূর্ণ নয়,ক্যাডেট কলেজের অবস্থানটাও আমার কাছে সেরকম।

      মাসরুফ,
      ভাবতেছি, তোর মামীরে এই লাইন কয়ডা দেখাইয়া ভয় দিমু 😀 ।
      তোরে :salute: :salute: :salute:


      Life is Mad.

      জবাব দিন
      • মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

        আচ্ছা মামা,আমি এত আকুলি বিকুলি কইরা এত বড় একখান পোস্ট দিলাম আর সেইটার চুম্বক অংশ নির্বাচিত হইল এইডা? আমার ব্যাটে বলে হয় না কেন??
        এর আগেও সিরিয়াস পোস্ট দিছি সেইখানে সচিবের কন্যাদয়(আজকে আমারে বড়টা লাঞ্চ খাওয়াইছে 😀 ) হয়া গেল মূল ফোকাস। ঘটনা কি কন তো? মাইনষে কি আমারে সিরিয়াস ভাবতে পারেনা? 🙁 🙁 🙁 😀 😀 :)) =))

        জবাব দিন
  14. This is perhaps my last comment on this. Some years ago Nazmul Huda of BNP, information minister at that time visited Sylhet CC as chief guest on something. He was saying strange things mixing up cadet college with BDR force, thanking cadets for border protection or something like that - can any SCC ex-cadet verify this - I heard it briefly from an ex-cadet. I don't have any problem bashing such 'matha-mota' people whatever party he/she belongs to. Because these people make many important decisions without knowing things correctly. Same was the problem in 1972 - people in decision making being misinformed about cadet college, and perhaps misguided in trying to introduce party politics to such young people, and seriously vindictive in trying to abolish cadet college just because it did not conform to their will.

    Sometimes some intelligent people also say unjust things about cadets. Zafar Iqbal once wrote such a column without doing much research about cadet college. I wrote a long comment about this toward the end of the following post if someone wants to read that -
    //cadetcollegeblog.com/saif/642

    জবাব দিন
    • কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)
      Sometimes some intelligent people also say unjust things about cadets. Zafar Iqbal once wrote such a column without doing much research about cadet college.

      সোহেল ভাই, much research তো দূরের কথা, মু জা ই'র লেখা দেখে মনে হয় 'no research at all' ... অনেকটা স্বপ্নে পাওয়া টাইপ!


      সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

      জবাব দিন
      • বাদ দেন ভাইয়া।

        আসলে যারা ক্যাডেট কলেজের সমালোচনা করে আমি দেখেছি তাদের কেউই এই সিস্টেম সম্পর্কে তেমন কিছু জানে না।

        এমনকি আমাদের বুদ্ধিজীবিরাও। এরা জ্ঞানপাপী।

        রাজনীতিবিদদের কথা তো বাদই দিলাম। তাদের কাছ থেকে আমি ভালো কিছু আশা করি না কখনই।

        আমরা নিজেরাতো জানি আমরা কি। যে যাই বলুক আমরা আমাদের ক্যাডেট কলেজকে ভালো বাসি।

        আমার ক্যাডেট কলেজ আমাকে জ্ঞানপাপী বুদ্ধিজীবিদের মতো রাজনৈতিক দলের লেজুরবৃত্তি করতে শিখায়নি বা মাথামোটা রাজনীতিবিদদের মতো ভন্ডামি করতে শিখায়নি।

        তারা তাদের মতো বলুক, আমরা আমাদের মতো থাকি।

        জবাব দিন
        • চির হরিৎ (৯৫-০১)
          আমরা নিজেরাতো জানি আমরা কি। যে যাই বলুক আমরা আমাদের ক্যাডেট কলেজকে ভালো বাসি।
          আমার ক্যাডেট কলেজ আমাকে জ্ঞানপাপী বুদ্ধিজীবিদের মতো রাজনৈতিক দলের লেজুরবৃত্তি করতে শিখায়নি বা মাথামোটা রাজনীতিবিদদের মতো ভন্ডামি করতে শিখায়নি।

          তারা তাদের মতো বলুক, আমরা আমাদের মতো থাকি।

          😮 😡 ~x( :thumbdown: :no:
          আমরা আমাদের মতো থকতে থাকতেই তো দেশের এই দুরবস্থা। দেশে আজ লুট পাটের মচছব চলছে, "মগের মুল্লুক" এর লোকেরা থাকলে আজ হয়তো উদাহরণ দিত: "বাংলাদেশ পাইছ?"
          "আইয়ামে জাহেলিয়াত" এর সময়ে ও মনে হয় এরকম "ত্রাহি মধুসূদন'' অবস্থা ছিল না।

          আমাদের সব এক্স-ক্যাডেট-রা যদি চেষ্টা করি তাহলে অনেক কিছুই করতে পারি কেননা এক্স-ক্যাডেট দের মোট সংখ্যা এখন অনেক। এবং (প্রায়) সবাই কোন না কোন গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আছে। এই সুশিক্ষিত জনগোষ্ঠী যদি কিছু জেনে এবং বুঝে থাকে তাহলে তা প্রতিষ্ঠিত করার অনেক উপায় এবং ব্যবস্থা আছে, দরকার শুধু ইচ্ছা এবং উত্সাহ (initiative)।

          চোখ বুজে থাকার সময় অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। আমাদের অবহেলায় যদি কোন অঘটন / দুর্ঘটন / অজ্ঞতা তৈরি হয় তবে তার দায়ভার কিছুতেই অস্বীকার করতে পারব না। তারা তাদের মতো বলুক কিন্তু তাদের নির্বুদ্ধিতা চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমাদেরই। :duel: :chup:
          সব বড় ও ছোট ভাইদের কাছে এটা আমার দাবি - অনুরোধ নয়
          😡 :-/

          জবাব দিন
  15. যারা ক্যাডেট কলেজ কে বাঁচিয়েছে আর আমাদের দিয়েছে একটা সুন্দর জীবন তাঁদের সবাইকে সশ্রদ্ধ সালাম। এই campaign এ জড়িত নামগুলোর মাঝে একজনের সাথে প্রায় প্রতিদিন দেখা হয়। তাঁকে জানাব আমার অনুভূতির কথা।

    জবাব দিন
  16. মনিরুজ্জামান মুন (২০০২-২০০৮)
    জেনারেল ওসমানীকে বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজের জনক হিসেবে আখ্যায়িত করা উচিত, পাকিস্তান আমলে যেমন ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান ছিলেন ক্যাডেট কলেজের জনক।

    :salute: :salute:

    জবাব দিন
  17. রায়েদ (২০০২-২০০৮)

    আমার মনে হয় cadet college এ ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করাটা যেমন ১ টা ভালো কাজ ছিল তেমনি আরেকটা ভালো কাজ এখনকার cadetদের জন্য বাকি আছে।
    আর সেটা হলো cadet college থেকে বের হবার পর রাজনীতিকে ঘৃণার চোখে না দেখে এটার সাথে কিছুটা হোলেউ সংযুক্ত থাকা। কারণ cadet college যেমন আমাদের তেমনি এই দেশটাও আমাদের। মুর্খ আর স্বার্থপর রাজনীতিবিদদের হাত থেকে এই দেশকে বাঁচাতে cadetrai সবচেয়ে অগ্রগণ্য ভুমিকা পালন করতে পারে। তবে সেটা অবশ্যই বর্তমানের নোংরা ছাত্ররাজনীতি দিয়ে নয়। আমাদের নতুন কিছু চিন্তা করতে হবে।

    জবাব দিন
  18. আসাদুজ্জামান (১৯৯৬-২০০২)

    Not to take the credits but to complete the history.... I read it around one year ago in our ercc(ORCA) forum. There was another incidence of meeting Sheikh Mujibur Rahman by some Cadets of RCC and delivering speech in English before him explaining the importance of Cadet colleges in Bangladesh. If my memory does not deceive me, Talebul Maula and some other Rajshahi cadets from first few batches were present there and Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman was pleased with them.

    However, Cadet colleges survived and the history should really be disseminated among the cadets.

    জবাব দিন
    • আসাদুজ্জামান (১৯৯৬-২০০২)

      This is the reference from a group mail of ercc forum I must include here....

      "Respected Elder Brothers, Batch mates, and loved younger brothers,

      Please accept my salaam,

      I have been a silent but regular reader of all mails in ercc circles. It is time, i felt necessary to remind ourselfs as to facts which had saved CADET COLLEGES from TOTAL extinction. I am sure that we will not be trapped in the jargon of national history being shaped or rather tailored to the needs of one faction or the other. Being emotional Bangalees, we tent to forget and take credit of things which involve ourselves, easily forgeting what others had contributed. I am extremely confident that my seniors/younger brothers of 1st,2nd,3rd, 5th,6th 7th, batchs will bear me out.

      I most humbly draw your kind attention to the period when Banghabhandu had recieved the coveted prize of " Julie Curie". It was at that time that General Osmany had called some of us, ( most from the 4th Batch, and others - Please kindly put up your names as i cannot recollect them right now, please forgive me for that, do correct me and add your information) . It was a time when General Osmany told us that a file had been put up for Banghabhandu to sign and declare all Cadet Colleges as Krishi Colleges. So, accordingly we went to GONOBHABAN and met BANGHABHANDU. It was evidently clear by the statement of Mr. Tofail Ahmed and Mr. Razzaque standing behind the sofa of Father of the Nation, that the file was on his table and would be signed the next morning. We were further charged by these two that only sons of rich people studied in Cadet Colleges.That Alien culture was being incalculated and that the Country would suffer immensely if CADET COLLEGES were allowed to exist.
      We replied to all the qurries ( as we were briefed by General Osmany ). BANGHABHANDU WAS VERY SATISFIED WITH OUR ANSWERS and he called both the Defence and Educational Secretaries, who put up vivid details in our favour as stated by us earlier. Considering all these points.BANGHABANDU instantly asked us what we wanted, we stated that CADET COLLEGES should remain as they were and under Defence Ministry. He immediately ordered on our behalf and cancelled the Order for Krishi Colleges. This was immediately implemented. The Radio carried this news in their next bullitin, which we heard sitting at Ramna Resturant. All the News Papers carried the News Item the next Morning.

      May Allmighty Allah bless us all.

      Thanking you,

      R.H.Rameez.
      4/198.
      Additional Secretary,
      BGMEA.
      CELL # 01819 412255"

      জবাব দিন
  19. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    ছোটবেলায় কোথাও পড়ছিলাম আমাদের ৫ আব্বা।
    জন্মদাতা,
    আদম আব্বা,
    শ্বশুর আব্বা,
    উকিল বাবা (আব্বা)
    মুজিব আব্বা।
    প্লিস আর কোনও আব্বা চাই না।
    অবশ্য অনেকে ইব্রাহিম রে কয় আদিপিতা।
    রাজশাহীর পোলাপাইন ও তাইলে ভালো স্টেপ নিছিল।
    বাকি দুই কলেজ কি কিছু করেছিলো সেই সময়?

    তোফায়েল আহমেদ খুব সম্ভবত শেখ মুজিবুর রহমানের সচিব ছিলেন। সেই অর্থে একেবারে ছোট মাপের কেউ ছিলেন না। বাংলাদেশ নামটি সৃষ্টির সঙ্গে এই লোকটি অনেক কাছ থেকে জড়িত।
    কেউ ক্যাডেট কলেজের বিরুদ্ধে কিছু বললেই আমরা তার অনেক কিছু উদ্ধার করতে শুরু করি।
    মুজিব হত্যা পরবর্তী রাজনীতি, জিয়ার উত্থান ইত্তাদির সঙ্গে ওসমানী জড়িত, তবে?


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  20. তানভীর (৯৮-০৪)

    মুহাম্মদ, ভাই তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। ধন্যবাদ মূল লেখক মিনু খাদেম (১৩তম ব্যাচ, এফসিসি) ভাইকে ও। এই ভাবে না লিখলে হয়তবা জানাই হতো না এত গুরুত্বপূর্ণ একটা ঘটনা। আর তাদের কে জানাই সশ্রদ্ধ সালাম, যাদের জন্য আমি নিজেকে ক্যাডেট বলে পরিচয় দিতে পারি।

    জবাব দিন
  21. ::salute:: আমাদের অই সকল ভাইদের প্রতি।।।
    """"" প্রথমেই ফৌজদারহাটের দুজন শিক্ষক >> চট্টগ্রাম ও ঢাকায় বসবাসরত এফসিসি’র অনেক এক্স-ক্যাডেট >> ফৌজিয়ান চৌধুরী এম মহসিন ভাই(৪র্থ ব্যাচ) >> ব্রিগেডিয়ার জিয়াউর রহমান >> জেনারেল এম এ জি ওসমানী >> বঙ্গবন্ধু""""
    আমি এই সুন্দর ইতিহাসতুকু জানতাম্ না। আমি ক্যাডেট হিসেবে আমার জানা উচিত ছিল। যাহউক ভাই, এইতা খুবই গুরুত্তসম্পন্ন ইতিহাস। অই সময়ে প্রিঞ্ছিপাল এবং শিক্ষকগ্অন ক্যাডেটদেরকে ছুতি / লিভ দিয়ে সহায়তা করেছেন, এইতাউ খুবই গুরুত্তসম্পন্ন কাজ। ক্যাডেটরা ছুতি / লিভ নিয়েছিল কাজের জন্য । আমার ধারনা যে, প্রিঞ্ছিপাল এবং শিক্ষকগ্অন সরবান্তকরনে সাপরত / সহযঅগিতা করেছিলেন।
    এই সকল ব্যাক্তিদেরকেই, সিসিসিএল এর সদস্য করা উচিত। যারা মারা গেছেন তাদেরকে মরনত্তর সদস্য করা উচিত। তাদের ইস্ত্রই সন্তানদের সম্মান সুচক সদস্যপদ প্রদান করা উচিত। এই বিসইতি আগামি ১৫ দিসেম্বর '১৩ তারিখে সিসিসিএল-এ আলচনা করা উচিত। সিসিসিএল করত্রিপক্ষ এই বিসইতি গুরুত্তের সাথে বিবেচনা করবেন।

    সগীর - JCC-17, CCCL-MN-297...

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।