আমার বন্ধু ভাগ্য খুব ভালো। কিন্তু আসল ভাগ্যটা খারাপ। এ কারণেই ভালো বন্ধুগুলোর সাথে নানা রকম গ্যাঞ্জাম লাগে। মধুর গ্যাঞ্জাম না, এক্কেবারে সিরিয়াস টাইপ…এই জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে সবসময় উৎকন্ঠায় থাকতে হয়। কখন কি থেকে কি হয়ে যায়…
পঁচা ছাত্র ছিলাম। আইডিয়াল স্কুল আমাকে ঢাকা শহর থেকে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করতে দিবে না বলে ঠিক করলো…হুদাই তাদের মান সন্মান ডুবাবো…আমি খুশী। কার এতো সখ পড়ছে ফাইনাল পরীক্ষার পর এইসব আজাইরা জিনিস নিয়ে সময় নষ্ট করার…এই সহজ ব্যাপারটা আমি বুঝলেও আমার মা বুঝলোনা। তিনি কোন সহজ জিনিসই আসলে বুঝেন না। (মহিলা) হিটলাররা আসলে কিছুই বুঝতে চায় না…আমার হিটলার মা তাই সিদ্ধান্ত নিলেন কিছুতেই আমারে ফাইনালের পর শান্তিতে থাকতে দেয়া যাবেনা।
তুমি দেশের বাড়িতে যেয়ে বৃত্তি পরীক্ষা দিবা? ঠিকাসে? প্রশ্নের আদলে করা হলেও এটা একটা সিদ্ধান্ত। ইহ জগতে সদ্য প্রসূত একটা সিদ্ধান্ত। যাহা আর কোনদিন চাইলেও পরিবর্তন করা যাবেনা।
আমি কিছু বলি না। শুধু আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি। নতুন নতুন দোকানে যেয়ে ভিডিও গেম খেলা শিখছি, বাপের পকেট থেকে টাকা মারা শিখছি। আর এখন কিনা আমাকে দুই মাসের জন্য দেশে চলে যেতে হবে। হায়রে দুনিয়া…
কি একটা ফালতু কথা আছে না? জীবনে এই ধরণের সমস্যা, কন্টক আসবেই। এইগুলোকে উত্রিয়ে যেতে পারলেই দেখা যাবে নতুন সূর্য। যত্তোসব। কিন্তু আমার কিচ্ছু করার নাই। খালুর স্কুলে ভর্তি হয়ে বলদের মতো দিনরাত পড়তে হবে সরকারী টাকা হাতানোর ধান্ধায়। কি হবে এইসব করে। মিছেই দুনিয়া, মিছে এই টাকা পয়সার খেলা। তারচেয়ে চলো মাস্তি করি, শুয়ে শুয়ে স্বপ্ন বুনি।
কিন্তু ঐ তল্লাটে আমি তো আর কাউকে চিনি না। বন্ধু ছাড়া কি মাস্তি করা যায়? খালা-মামাদের সাথে লুডু খেলা যেতে পারে কিন্তু মাস্তি করা যায়না। স্কুলে যেয়ে ঠিক করলাম যে প্রথম আমার সাথে পরিচিত হতে আসবে তারেই ধরমু। যেতে দিবোনা কোথাও। সে হবে এই আজিব তল্লাটে আমার দোস্ত।
তাহার নাম দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। বোধ করি তার বাবা কিংবা মা বংগদেশীয় সিনেমার বিরাট সমঝদার। তাই পরিচালককের নামে রেখেছেন নিজের ছেলের নাম। হতেই পারে। এই জগতে কতো কিছুই তো হয়। কেউ বাবা হয়, কেউ মা হয়, কেউ দাদা কিংবা নানা হয়।
ঝন্টু প্রসংগ এইখানেই শেষ। বোধ করি স্বল্প সময়ের সেই বন্ধুত্বে তার সাথে আমার কোন ঝগড়া ঝাটি হয় নাই। হলেও মনে নাই। এইসব মনে রেখে কি হবে।
অতঃপর সময় এবং নদীর স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা না করে চলা আরম্ভ করলো। সূর্যটাও মাটি ছেন্দা করে প্রতিদিন একবার মাথা বের করে আবার দিন শেষে সেটা ঢুকিয়ে রাখলো আরেক ফ্ল্যাটে গিয়ে। এইভাবেই দিন চলছিল, চলছিল মাস, তারপর বছর।
টিটি বোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। দুইটা বড় বড় একই চেহারার ছেলে আমাকে বললো আসো টিটি খেলি। আমরা টিটি খেলা শুরু করলাম। টিটির বলকে নির্দয়ের মতো পিটাতে পিটাতে একসময় পরস্পরের বন্ধু হয়ে গেলাম…অনেকদিন টিটির বল পেটানো হয় না। আমি এখন তাই স্মৃতিকে পেটাই। কিংবা রাস্তা ঘাটের সেই গেন্ডারি বিক্রেতার গেন্ডারি পেষণের যন্ত্রে ঢুকিয়ে দেই…চিপতে চিপতে তার ভেতরের রসা বের করে নিয়ে আসি। তারপর সেটা নিজের গায়ে মাখি। শরীরের লোমকূপ দিয়ে অনুভব করি ফেলে আসা সেই বন্ধুগুলোকে…
ইয়াহু মেসেঞ্জারে একজন টোকা দেয়। আমি তার সাথে নির্দিষ্ট দুরত্ব বজায় রেখে গুরুত্বপুর্ণ আলোচনা করতে থাকি। পরেরদিন আমি অনলাইন হয়ে বসে থাকি…এমন ও তো পারে সে আবার আসবে। সে আসে। কথা হয়। গুলিস্থানের রাস্তা পার হবার সময় তার মিসকল আসে। আমি তাকে মিসকল দেই। বার্তা দেই…
আমরা ব্লগ লিখি। ব্লগ পড়ি। মাঝে মাঝে প্রচন্ড ঝগড়া করি। মেজাজ খারাপ করে ইনবক্সে যত্ন করে রাখা বার্তাগুলো ডিলিট করে দেই। ডিলিট করে দেই নম্বর…মুঠোফোন সেই নম্বর ভুলে গেলেও বেয়াদপ নিউরোন সেলগুলো সেগুলো ভুলে না…
কয়েকদিন পর আমরা আবার মিসকল মিসকল খেলা শুরু করি…বার্তা চালাচালি করি…ব্লগ লিখি, ব্লগ পড়ি…তারপর আবার ঝগড়া করি…
ভালই আিসস তাইেল... 8-> 8->
হ!
.... এক সময় সব আবার আগের মত হয়ে যায়।
আবার আমরা আগের মতই হাত ধরাধরি করে পাশাপাশি হাঁটতে থাকি। 🙂
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
:হুমম... 🙂
@ জিহাদ,
বেশী বেড়েছ সোনা। x-( খালি উলটা পালটা কথা কও।
আমি মনে হয় চিনতে পারলাম তোমার বন্ধুটাকে। ;;)
এই লাইনগুলা বঝি নাই, পারলে বুঝাইয়া দিওঃ
"চিপতে চিপতে তার ভেতরের রসা বের করে নিয়ে আসি। তারপর সেটা নিজের গায়ে মাখি। শরীরের লোমকূপ দিয়ে অনুভব করি ফেলে আসা সেই বন্ধুগুলোকে…"।
চিনতে পারলেই কি আর না পারলেই কি? কোন পুরস্কার তো ঘোষণা করি নাই। >:)
লাইনগুলার কোন মানে নাই। এটা হচ্ছে যেমন খুশী তেমন লেখ ব্লগ। 😛
কি আর ঝগড়া দেখছেন! আমি টায়ার্ড ব্লগীয় ঝগড়া দেখতে দেখতে! :(( <:-P
বয়স কম। এখনও তেমন একটা দেখি নাই বস। 🙂
গত কয়েকদিন বিশাল ঝগড়া করে খেতাবধারী হয়েছি আমি। :party: :party:
বস টের পাইতেছি উত্তাপ। তবে আপনি ঠিক আছেন। 🙂
খিক খিক! 😀
আগে খালি দুই ব্লগের মানুষ আমার নাম জানতো, ক্যাচালের ফলে আরো অনেক জায়গায় নাম ছড়াইছে আমার। আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে। B-) B-)
---
আপনে কিছু লেকেন না কেনো? মেলাদিন আন্নের লেকার সোয়াদ মিলতেচে না।
http://www.sachalayatan.com/raihan_abir/18710
লন এইটা সেইদিন লিখছি। ভাবছিলাম পাবলিক পিটাইবো। কিন্তু পিটায় নাই।
নেট থেকে দূরে আছি। এই জন্য লেখা হয় না ঠিক মতো।
ব্লগিং জগতে আপনি আসলেই বিখ্যাত। কুখ্যাত অবশ্যই না। 🙂
হা হা!
এইটা পড়ছিলাম আগেই। 😛
কি বুদ্ধি করে বই বাগিয়ে নিলো! :grr:
বন্ধু ভাগ্য ভাল হলে সুবিধাই বেশি। অসুবিধা একটাই। এসব ঝগড়ার কারণে মাঝেমাঝে মন খারাপ করে থাকতে হয়। 8->
ঠিকাছে!
আরামেই আছস দেখা যায়... 8->
তয় রাস্তা পার হওয়ার সময় মিসকল আসা তো মুসিবতের কথা, যে কোন সময় একসিডেন হয়ে যাইতে পারে ;))
আচ্ছা এরপর থেকে যে মিসকল দেয় তারে বলে দিতে হবে যেন আমি রাস্তা পার হবার সময় সে এই কাজটা না করে। 🙂
ভালৈ আছস না? ;;)
>"কয়েকদিন.... করি…বার্তা... করি…ব্লগ লিখি, ব্লগ পড়ি… করি…"
--- কর কর সব কর... 😀
খালি মিছিলে ডাক দিস.. 😉
ক্যাডা মিসকল দিতো??? :grr:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..