কোন এক পাকিস্তানি কূটনীতিকের উদ্দেশ্যে চিঠিঃ(নিউ ইয়র্ক রিভিউ অফ বুকস,২ সেপ্টেম্বর ১৯৭১)
ইকবাল আহমেদ
নিউইয়র্ক টাইমসে(১০ এপ্রিল ১৯৭১) আরো তিনজন পশ্চিম পাকিস্তানি পন্ডিতের সাথে স্বাক্ষরিত আমার একটি চিঠি প্রকাশিত হয়। পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানি সামরিক সরকারের হস্তক্ষেপের বিরোধীতা করে আমার প্রদত্ত বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এরপর বহু পাকিস্তানি কর্মকর্তা প্রতিবাদ জানিয়েছেন।তাঁরা সবাই নির্দিষ্টভাবে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো তুলে ধরেছেনঃ
১)জেনারেল ইয়াহিয়ার নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনী কেবলমাত্র একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন দমনের মাধ্যমে জাতীয় সংহতি বজায় রাখতে চাইছে-যে আন্দোলন সফল হলে ৭ কোটি পূর্ব পাকিস্তানি মানুষ সাড়ে ৫ কোটি পশ্চিম পাকিস্তানির কাছ থেকে পৃথক হয়ে যাবে।
২)বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদীরা(*) পূর্ব পাকিস্তানে বসবাসরত পশ্চিম পাকিস্তানি নাগরিক এবং বিহারী সংখ্যালঘু উদ্বাস্তুদের হত্যা করতে শুরু করার পরই সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করেছে।
৩)যেহেতু আওয়ামি লিগের নেতারা পশ্চিমা মনোভাবসম্পন্ন,এবং যেহেতু চীন কেন্দ্রীয় সরকারকে সমর্থন করে-সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী এবং আমূল সংস্কারে বিশ্বাসীদের উচিত সেনাবাহিনীর কার্যক্রমকে সমর্থন করা।
আমার নিম্নলিখিত বক্তব্য উপরোক্ত মনোভাব পোষণকারী এমনই একজন “বন্ধুর” প্রতিঃ
জনাব,
আমি আশা করি আপনি এটা বুঝতে পেরেছেন যে নিউ ইয়র্ক টাইমসে(১০ এপ্রিল ১৯৭১) আপনি যে বক্তব্যটি দেখেছেন সেটা আমি এবং আমার ভাই সাগীর আহমেদের পক্ষে প্রকাশ করাটা খুব একটা সহজ ছিলনা।প্রথমত, বাংলাদেশ আন্দোলনের প্রতি আমার কোন জন্মগত সমবেদনা নেই।বরং শেখ মুজিবের(পূর্ব পাকিস্তানি নেতা,যার দল আওয়ামী লিগ জাতীয় অধিবেশনে সরকার গঠন করার মত সংখ্যাধিক্য লাভ করেছে এবং শতকরা ৯৮ ভাগ বাঙ্গালি ভোট পেয়েছে) প্রতি আমার যথাযথ কারণে বিতৃষ্ণা রয়েছে। তিনি একজন ক্ষুদ্র এবং বোধবুদ্ধিহীন মানুষ হিসেবে আমাকে “মুগ্ধ” করেছেন।কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমি তাঁর পশ্চিম পাকিস্তানি জ্ঞাতি ভাই-গিরগিটির মত নিজের রং বদলকারী দুর্বিষহ জনাব ভুট্টোর প্রতি শ্রদ্ধা পোষণ করি।এছাড়া ঔপনিবেশিক ব্রিটেনে বেড়ে ওঠা আর আমেরিকার অস্ত্রে সজ্জিত জেনারেলরা,যারা দেশকে স্পেন বা গ্রীসের মুসলিম সংস্করণে পরিণত করতে চায়-তাদের প্রতিও আমার মনোভাব খুব একটা উঁচু নয়।
দ্বিতীয়ত, আপনি জানেন যে আমি মূলতঃ বিহারের লোক। আমার পরিবার পরিজনের বেশিরভাগ লোক বিহার থেকে এসে পূর্ব পাকিস্তানে অভিবাসী হয়েছে-যাদের অনেকেই সেনা হস্তক্ষেপের ঠিক আগে উন্মত্ত বাঙ্গালিদের হাতে মারা গিয়েছে।এছাড়া আমি নিজেই পাকিস্তান আন্দোলনের সময় বেড়ে উঠেছি-জাতীয় ঐক্যের কথা চিন্তা না করাটা তাই আমার পক্ষে খুবই কষ্টসাধ্য।সবশেষে,একজন সংস্কারবাদী ও আন্তর্জাতিক মনোভাবসম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে আমি অগ্রযাত্রার পথে সঠিক পদক্ষেপ বলে মনে করিনা।এসব কারণে পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষা হয় এমন একটি নীতিকে সমর্থন করাটাই আমার পক্ষে স্বাভাবিক।
যাই হোক, আমি যখন সমসাময়িক ঘটনাবলী সম্পর্কিত প্রকৃত তথ্যাবলীর দিকে তাকাই-সামরিক হস্তক্ষেপের সপক্ষে রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক বা নীতিগত-কোন ধরণের সমর্থনই খুঁজে পাইনা।বর্তমানে ঘটতে থাকা ঘটনাবলীর প্রতি আমি যতটা তীক্ষ্ণভাবে সম্ভব ঠিক ততটাই তীক্ষ্ণভাবে নজর রাখছি-যদিও অধিকাংশ সংবাদপত্রের রিপোর্টে অসংলগ্নতা রয়েছে।প্রকাশিত সংবাদের উপর সামরিক নিয়ন্ত্রণই এর কারণ,যার কিছুটা ভারত থেকেও এসেছে।
আমার বক্তব্য হচ্ছেঃ
১) সেই ১৯৫৭ সাল থেকে সামরিক শাসনের অধীনে থাকা পূর্ব পাকিস্তানিদের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি ক্ষোভের পুরোপুরি যৌক্তিক কারণ রয়েছে।পশ্চিম পাকিস্তানের সবচেয়ে গোঁড়া সমর্থকও বাঙ্গালিদের প্রতি মোটা দাগের অর্থনৈতিক বৈষম্য আর শোষণের কথা অস্বীকার করতে পারবেনা।১২ বছরের সামরিক শাসন তাদেরকে ক্ষমতার সামান্যতম অংশ থেকেও বঞ্চিত করেছে।
২)প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের জন্যে আওয়ামী লিগের দাবীর প্রতি প্রায় সর্বসম্মত ভোটার সমর্থন পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি উন্নাসিকতার ফলাফল ছাড়া আর কিছুই নয়-যে উন্নাসিকতার চূড়ান্ত রূপ দেখা যায় সাইক্লোন আক্রান্ত পূর্ব পাকিস্তানিদের প্রতি সীমাহীন ঔদাসীন্যে। আমি স্বীকার করি যে পশ্চিম পাকিস্তানের গরীবেরাও ভুক্তভোগী এবং আমাদের নেতাদের ঔদাসীন্য হয়তো দুক্ষেত্রেই সমান।তারপরেও,অপেক্ষাকৃত পশ্চাৎপদ পূর্ব পাকিস্তানিরা যদি একে প্রাদেশিক বৈষম্যের ফলাফল হিসেবে দেখে তাহলে তাদেরকে দোষ দেয়া যায়না।
৩)সংসদ বহির্ভূত মীমাংসায় পৌঁছতে ব্যর্থ হবার পর পশ্চিম পাকিস্তানি নেতাদের মদদপুষ্ট সেনাবাহিনী ২৫ মার্চ,১৯৭১ পাকিস্তানের সর্বপ্রথম মুক্তভাবে সংঘটিত নির্বাচনের ফলাফল মুছে ফেলতে হস্তক্ষেপ করে। সম্ভবত তারা পাকিস্তানের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে আত্মসমর্পনের আশা ছেড়ে দিয়েছিল।এটা এখন দিবালোকের মত সত্য যে ভুট্টো আর মুজিবের দর-কষাকষিকে তারা আড়াল হিসেবে ব্যবহার করেছিল।
৪)সন্দেহাতীতভাবে বলা যায় যে কেন্দ্রীয় সরকারের জনপ্রিয়তার কোন ভিত্তি নেই।এমনকী চার মাসের আতঙ্কের পরেও তারা সামরিক হস্তক্ষেপকে কিছুটা বৈধতা দিতে পারে এমন একটি দালাল শ্রেণী গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে।
৫)পূর্ব পাকিস্তানে যদি সেনাবাহিনীর প্রভূত্ব বজায় থাকে-তাহলে এই ঔপনিবেশিকতার জন্যে পূর্ব আর পশ্চিম দুই পাকিস্তানকেই চড়া মাশুল গুনতে হবে।শেষোক্তটির জন্যে তা বয়ে আনবে অর্থনৈতিক দুর্দশা, সমাজ ও রাজনীতির সামরিকীকরণ এবং নাগরিক অধিকারের পুরোপুরি বরখেলাপ। আসাদ এবং লায়াল-ও-নাহারের মত পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া,পশ্চিম পাকিস্তানের সাম্প্রতিক প্রায় ৮০০ লোকের বিচারবিহীন আটক(যাদের মধ্যে আফজাল বানগাশ,মুখতার রানা আর জি এম সায়েদের মত নেতা, আব্দুল্লাহ মালিক ও শেখ আজিজের মত মননশীল ব্যক্তি এবং জি এম শাহের মত পেশাজীবী পণ্ডিত রয়েছেন) এবং লয়ালপুর আর শিয়ালকোটে সরকারের সাথে ভিন্নমতাবলম্বী জনতার প্রতি পিটুনি একদলীয় মতবাদের দিকে ঝুঁকে যাওয়াকেই নির্দেশ করে।
একইভাবে যেসব সম্পাদকীয় ও বক্তব্য ভারতীয়-ইহুদি-আমেরিকান ষড়যন্ত্রের কথা বলে জনমনে ভীতি ছড়াচ্ছে তা নিয়েও আমি শঙ্কিত।আমেরিকান সরকার অস্ত্রশস্ত্র ও অর্থ দিয়ে রক্তপিপাসু সামরিক একনায়কত্বকে পরোক্ষভাবে সহায়তা করছে- আমার শঙ্কাটি এ কথা জানা সত্বেও বিদ্যমান । সর্বোপরি, সেনাবাহিনী কর্তৃক আমাদের হিন্দু নাগরিকদের পরিকল্পিত হত্যা ও অত্যাচার এবং ধর্মীয় মৌলবাদের উত্থান নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন।এই নীতি ভারতের ৮ কোটি মুসলিমের উপর কি প্রতিক্রিয়া ডেকে আনবে একথা চিন্তা করলে আমি ভয়ে শিউরে উঠি।
৬) এই মুহূর্তে পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক শাসনের ইতি না ঘটালে দূর্ভিক্ষ,মহামারী এবং সেনাবাহিনী কর্তৃক পর্যায়ক্রমিক গণহত্যা আগামী মাসগুলোতে লক্ষ লক্ষ প্রাণহানির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।সামরিক হস্তক্ষেপ ইতোমধ্যে প্রায় ২৫০,০০০ নিরস্ত্র মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।৬০ লক্ষ উদ্বাস্তু ভারতে পৌঁছেছে।৬০,০০০ থেকে ১০০,০০০ মানুষ প্রতিদিন ভারত যাচ্ছে এবং কলেরা সংক্রমন আর দরিদ্র ভারতীয়দের বিদ্বেষের স্বীকার হচ্ছে।লক্ষ লক্ষ ভীতসন্ত্রস্ত ও ক্ষুধার্ত মানুষ পূর্ব পাকিস্তানের ভেতর অমানবিক দিন কাটাচ্ছে-সম্ভাব্য পরিসংখ্যান মতে এটি ইতিহাসের ভয়াবহতম হত্যাযজ্ঞ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
আপনি জানেন,পূর্ব পাকিস্তানে অস্তিত্বের ভারসাম্য রক্ষা করা অত্যন্ত নাজুক একটি বিষয়।সামান্য অসঙ্গতি এখানে প্রায়ই মর্মান্তিক ঘটনার জন্ম দিয়ে থাকে।১৯৭০ ও ১৯৭১ বিশেষ করে কঠিন সময় হিসেবে দেখা দিয়েছে।গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের বন্যা ছিল বিগত কয়েক দশকের মধ্যে সবচাইতে ভয়াবহ যা প্রায় ৫ লক্ষ টন খাদ্যশস্য বিনষ্ট করেছে।নভেম্বরের সাইক্লোন,যা কিনা শতাব্দীর সবচাইতে মারাত্মক,সেটিও প্রায় সমপরিমান খাদ্যশস্য বিনষ্ট করেছে এবং একহাজার বর্গমাইল আবাদী জমিকে অন্ততঃ এক বছরের জন্য চাষবাসের অযোগ্য করে দিয়েছে।
এরপর সেনাবাহিনী তাদের বাঙ্গালি প্রতিপক্ষের রসদ সরবরাহে বাধা দিতে মজুদ খাদ্য বাজেয়াপ্ত এবং অগ্নিসংযোগ করেছে।বহু ভীত,বাস্তুচ্যুত কৃষক শীতকালীন ফসল ঘরে তোলেনি।দূর্ভিক্ষ এড়াতে সর্বমোট প্রায় ২৫ লক্ষ টনের এই ক্ষতি যত দ্রুত সম্ভব পুষিয়ে দিতে হবে।বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক জরিপ এবং সেনেটর কেনেডীর প্রকাশিত স্টেট ডিপার্টমেন্টের রিপোর্টে দেখা যায় যে পূর্ব পাকিস্তানের পশ্চিমা এবং ইউরোপীয় কর্মকর্তারা ওয়াশিংটনকে দূর্ভিক্ষের আশংকায় সতর্ক করেছে।
অন্যেরা তাদের পূর্বাভাসের ব্যাপারে আরো নিশ্চিত তথ্য দিয়েছে।তিন মাস আগে লেইন ম্যাকডোনাল্ড(অক্সফ্যাম ও অন্যান্য সংস্থার রিলিফ সমন্বয়কারী) সতর্ক করে দিয়েছেন যে প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ খাদ্যাভাবের শিকার হতে পারে।সাম্প্রতিক ফিনান্সিয়াল টাইমস অব লন্ডন অনুমান করেছে যে অতি দ্রুত রিলিফ ও পুনর্গঠন কার্যক্রম শুরু করা না হলে প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ মৃত্যুমুখে পতিত হবে।বিবিসির সাংবাদিক এলান হার্ট বিশ্বাস করেন “প্রায় দুই কোটি বা তারও বেশি পূর্ব পাকিস্তানি মানুষ সেপ্টেম্বর অথবা অক্টোবরের মধ্যে খাদ্যাভাবের শিকার হবে”।
দ্রুত রিলিফ সরবরাহের মাধ্যমে আসন্ন মর্মন্তুদ ঘটনা ঠেকিয়ে দেবার সম্ভাবনা খুব কম।শুধুমাত্র বেসামরিক আইনের দ্রুত প্রতিস্থাপন খাদ্যশস্য ও ওষুধপত্রকে সামরিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা ঠেকাতে পারে,এবং এধরণের প্রতিস্থাপনই কেবল রিলিফের সঠিক বিতরণ ও রিলিফকার্যে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখা নিশ্চিত করতে পারে।
৭)সবশেষে,আমি সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই যে পূর্ব পাকিস্তানিদের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার এমনকী বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া যদি না মেনে নেয়া হয় তাহলে সত্যিকারের বেসামরিক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
এ সব কারণে আমি বিশ্বাস করি যে পশ্চিম পাকিস্তানিদের উচিৎ এই মুহূর্তে নিঃশর্তভাবে সামরিক শাসনের বিলোপসাধনে জোর দেয়া,ন্যায়ভাবে নির্বাচিত জাতীয় এসেম্বলিকে সহায়তা করা এবং তার সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া-এমনকী সে সিদ্ধান্ত যদি পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সমন্বয়ে গঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রকে ভেঙ্গে দেয় তবুও।আমাদেরকে অবশ্যই “সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের উদ্দেশ্য পাকিস্তানের একমাত্র মুক্তভাবে সংগঠিত নির্বাচনে সদ্য জয়লাভ করা দলের হাত থেকে দেশের অখণ্ডতা রক্ষা করা”-এই উদ্ভট দাবীকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে।
সত্যি বলতে কি,পূর্ব পাকিস্তানের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ কেবলমাত্র স্বায়ত্তশাসনের উপর জোর দিয়েছিলেন।তাঁরা স্বাধীন বাংলাদেশের ঘোষণা দেন সেনাবাহিনী কর্তৃক জাতীয় এসেম্বলী আহবান করতে অস্বীকার এবং ২৫ মার্চ,১৯৭১ রাতে বর্বরভাবে পূর্ব পাকিস্তানে হস্তক্ষেপ করার পরে। ২৮ জুনের ভাষণে জেনারেল ইয়াহিয়া জাতীয় এসেম্বলির সংবিধান রচনার অধিকার অস্বীকার করেন এবং আওয়ামি লিগের সব নেতাদের কর্কশভাবে আক্রমণ করেন।এটি নির্বাচনের ম্যান্ডেট অনুযায়ী যে কোন সমঝোতার সম্ভাবনা ভেস্তে দেয়।
আমি জানি আমাকে আমার অবস্থানের জন্য চড়া মাশুল গুনতে হবে।যে ব্যক্তি আমেরিকায় একটি কঠিন বিচারের মুখোমুখি হচ্ছে(**) তার পক্ষে তার নিজ দেশের সরকারের সাথে সংঘাতে যাওয়া কোন সহজ কাজ নয়।তবুও আমি যখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে আমেরিকান অপরাধ অথবা কাশ্মীরে ভারতীয় দখলদারিত্বের প্রতিবাদ করছি-তখন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের উপর আমার নিজ সরকারের করা অন্যায়গুলো মেনে নেয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়।যদিও আমি উন্মত্ত বাঙ্গালিদের হাতে বিহারী হত্যাকান্ড এবং আওয়ামি লিগের দায়িত্বহীনতার নিন্দা করি-কিন্তু তাদের কর্মকাণ্ডের সাথে আমি সরকার এবং একটি পেশাদার সেনাবাহিনীর অপরাধমূলক কার্যকলাপকে এক করে দেখতে রাজী নই।
নির্ভরযোগ্য রিপোর্টের মতে(যা সরকারীভাবে খণ্ডণ করা হয়নি)দাঙ্গায় বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদীদের হাতে ১০০০০ এর বেশি বিহারী মৃত বা আহত হয়নি।যাহোক,আগস্টের শুরুতে পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃপক্ষ একটি শ্বেতপত্র জারি করে যাতে দাবী করা হয় যে এক লক্ষ মানুষ বাঙ্গালিদের হাতে নিহত হয়েছে।এটিসহ শ্বেতপত্রের অন্যান্য অতিরঞ্জিত দাবী নিঃসন্দেহে নিশ্চিতভাবে বিরোধীদলীয় নেতাদের বিচার ও সম্ভাব্য মৃত্যুদণ্ডের অজুহাত হিসেবে তোলা হয়েছে।এ চিঠি লেখার সময় সামরিক সরকার ঘোষণা করেছে যে ১২ আগস্ট শেখ মুজিবকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে “যুদ্ধ শুরু করার” অপরাধে গোপন সামরিক ট্রাইবুনালের মুখোমুখি করা হবে।শ্বেতপত্রে যেহেতু ঘোষণা দেয়া হয়েছে যে ৭৯ জন জাতীয় এসেম্বলীর সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হবে,শেখ মুজিবের বিচার আরো অনেক গোপন বিচারকার্যের পূর্বলক্ষণ হতে পারে।
আমি জানি পূর্ব পাকিস্তানে ৩ সপ্তাহ ধরে চলা অবাঙ্গালি হত্যাকাণ্ড ঠেকানো(যে সময়ে জেনারেলরা রাজনীতিবিদদের সাথে পার্লামেন্ট বহির্ভূত সমঝোতায় পৌঁছানোর ভান করেছেন)সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের উদ্দেশ্য ছিলনা।বেসামরিক মানুষদের জীবনরক্ষা করা এই অসহনীয় অত্যাচারের লক্ষ্য ছিলনা-যে অত্যাচারের ফলে অসংখ্য পাকিস্তানি তাদের জীবন ও সহায় সম্পত্তি হারিয়েছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।নৃশংসতার অসম বণ্টন কোন দায়িত্বশীল সরকারের কাজ নয়।এই সেনাবাহিনী যে তাদের কার্যকলাপকে আওয়ামি লিগ আর উন্মত্ত জনতার বাড়াবাড়ি উল্লেখ করার মাধ্যমে বৈধতা দিতে চাচ্ছে-এ থেকেই বোঝা যায় আমাদের সেনাবাহিনী আর বেসামরিক সার্ভিসের ক্ষেত্রে সভ্যতার মান কতটা নীচে নেমে গিয়েছে।সবচেয়ে বড় কথা, অপরাধ কোন বানিজ্যিক কর্মকাণ্ড নয় যে একজন তার অপরাধ আরেকজনের হিসাবখাতায় গচ্ছিত রাখবে।
এ ব্যাপারে চায়নার ভূমিকা অপ্রাসঙ্গিক বলে আমি মনে করি।তারা পাকিস্তানকে কেবলমাত্র বহিঃশত্রুর আক্রমণের ক্ষেত্রে সহায়তার প্রস্তাব করেছে ; আর এই সংঘাতকে অভ্যন্তরীণ ব্যাপার হিসেবে ইঙ্গিত দিয়েছে।কিন্তু আমেরিকার ভূমিকা আসলেই উদ্বেগজনক-তারা তাদের পশ্চিমা বন্ধুদের,কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের এবং বিশ্বব্যাংকের সর্বসম্মত বিরোধিতা সত্ত্বেও একনায়কতন্ত্রের কাছে অস্ত্র বিক্রি এবং অর্থনৈতিক সহায়তা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।পশ্চিম এবং আমেরিকার প্রতি শেখ মুজিব আর তার দলের বিশ্বস্ততার কথা মাথায় রাখলে এ ঘটনা আসলেই লক্ষণীয়।
যেসব পাকিস্তানিরা মনে করে যে স্বৈরাচার এবং সুশীল গণতন্ত্রের মধ্যে বেছে নিতে বলা হলে আমেরিকা শেষোক্তটাকেই বেছে নেবে-পশ্চিম পাকিস্তানি জান্তার প্রতি ওয়াশিংটনের সহায়তা তাদের জন্যে একটি শিক্ষামূলক ঘটনা হওয়া উচিৎ।স্পেন এবং পর্তুগাল থেকে গ্রীস ও ইসরায়েল হয়ে ইরান থেকে পাকিস্তান পর্যন্ত ভূমধ্যসাগর ও ভারত সাগর অঞ্চলে একটি অনানুষ্ঠানিক কিন্তু নির্ভরযোগ্য সোভিয়েত বিরোধী ব্লক তৈরি করা নিক্সন-কিসিঞ্জারের কর্মকৌশলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ- পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামি লিগের নেতারা এই বিষয়টি বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন।
বলা হচ্ছে, জনাব কিসিঞ্জারের চায়না মিশনে সাহায্য করার পুরষ্কার হিসেবে জেনারেল ইয়াহিয়া আমেরিকান সহায়তা পাচ্ছেন।তাই যদি হয়,তবে চীন-আমেরিকান দাঁতাতের শুরুটা হবে এশিয়ার গরীব ও দুর্বলদের জন্যে ক্ষতিকর হিসেবে। আমেরিকান নীতির পেছনে যে কারণই থাকুক না কেন একটি বিষয় নিশ্চিত-এশিয়ার আরেকটি অংশে আমেরিকানরা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের নীরব সহযোগী হয়ে রইল।কিন্তু তাদের দায়ের চেয়ে আপনার আমার দায় অনেক বেশি ভারী।
আমি আরেকটি বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করছি-সাম্প্রতিক ঘটনাবলী থেকে মনে হচ্ছে ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে আরেকটি যুদ্ধ বাঁধতে চলেছে।এই দুটি দেশ দিনকে দিন আরো বেশি করে বিশ্ব রাজনীতির খেলায় দাবার ঘুঁটিতে পরিনত হচ্ছে।ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়ন ইতোমধ্যে বিশ বছর মেয়াদী সম্প্রীতি-চুক্তি হয়েছে যার ফলে ভারত রাশিয়ার কাছে পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধে সামরিক সহায়তা লাভ করবে।এ চুক্তির ফলে ১৯৬৬ সালের তাসখন্দ চুক্তিতে পাকিস্তান যে সুবিধা পেয়েছিল(রাশিয়ার কাছ থেকে সহায়তা এবং ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে রাশিয়ার নিরপেক্ষ থাকার আশ্বাস) তা নাকচ হয়ে গেল।
…………………………………………………………………………………………………………………………….
আমি জানিনা আমার অবস্থান আদৌ একটি মানবিক মীমাংসার ক্ষেত্রে কোন ভূমিকা রাখতে পারবে কিনা।যেহেতু আমাদের সরকার জনগনের কাছে দায়বদ্ধ কিংবা মানবজাতির মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল-এর কোনটাই নয়,এই অঞ্চল থেকে সব সম্পদ নিঃশেষ হওয়া এবং দেশ নীতিগত,রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া না হওয়া পর্যন্ত আমাদের প্রতিবাদ সম্ভবত কোন প্রভাব রাখতে সক্ষম হবেনা।তবে যাই হোক না কেন- স্বেচ্ছাচারী শক্তির সামনে নিরবতার অপরাধকে আমি সাফল্যের অভাবের কথা বলে বৈধ করতে রাজী নই।
নির্ঘণ্টঃ
(*)এখানে বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদী বলতে বর্তমানে একই নামের রাজনৈতিক দল সম্পর্কিত কাউকে বোঝানো হচ্ছেনা সেটি সম্ভবত পাঠকমাত্রই বুঝতে পারছেন।
(**)১৯৭১ সালে লেখককে যুদ্ধবিরোধী যাজক ফিলিপ বেরিগান ও তার ভাই ডেনিয়েল এবং আরো ৪ জন শান্তিবাদীর সঙ্গে একসাথে হেনরি কিসিঞ্জারকে অপহরণের মাধ্যমে ভিয়েতনাম যুদ্ধ বন্ধ করার “ষড়যন্ত্রের” সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ তোলা হয়।এ প্রবন্ধ লেখার সময় লেখক বিচারাধীন ছিলেন।১৯৭২ সালে মামলাটিকে পদ্ধতিগত ভুলের কারণে বিচারকগণ খারিজ করে দেন।
অনুবাদকের কথাঃ
বাবার বুকশেলফ এবং ক্যাডেট কলেজের লাইব্রেরি থেকে কিশোর বয়েসে ১৯৭১ সালের বর্বরতা সম্পর্কে জানার পর থেকেই পাকিস্তানের প্রতি আমার একটা অন্ধ ক্রোধ কাজ করত-যা অনেকটা যুক্তিতর্কের ঊর্ধে। যেহেতু আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি এবং মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে নোংরা কাঁদা ছোঁড়াছুঁড়ির সংস্কৃতির মধ্যেই আমার বেড়ে ওঠা-আমাদের সবচাইতে গৌরবোজ্জ্বল এ অধ্যায় সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান আছে এটা দাবী করার মত যোগ্যতা আমার নেই।তবে ক্ষুদ্র সামর্থ দিয়ে যতটুকু পারি যেখানে যা পাই তাতে চোখ বুলাতে চেষ্টা করি।আর এরকম চোখ বুলাতে বুলাতেই ইন্টারনেটে চোখে পড়েছিল এই লেখাটি।মুক্তিযুদ্ধের প্রচলিত দিকগুলো যেমন মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা,গণহত্যা-নির্যাতন এবং পরবর্তীতে দেশদ্রোহী অপশক্তির আস্ফালন ইত্যাদির ভীড়ে মানবতার একটি দিক কিন্তু আমরা ভুলে যাই-শত্রুপক্ষের ভেতর থেকেও যেসব মানুষ তাঁদের বিবেক আর ন্যায়বোধকে স্বজাতিপ্রেমের ঊর্ধে স্থান দিয়েছিলেন সেসব আলোকিত মানুষদের কথা।এ প্রবন্ধের লেখক ইকবাল আহমেদ একজন স্বনামধন্য পাকিস্তানি চিন্তাবিদ-নোয়াম চমস্কি এবং এডোয়ার্ড সাঈদের মত প্রতিথযশা যুদ্ধবিরোধী বুদ্ধিজীবীদের সাথে তাঁর নামও হরহামেশাই এক কাতারে উচ্চারিত হয়ে থাকে।১৯৭১ সালের মাঝামাঝি সময়ে রচিত এ লেখাটিতে স্বজাতির বর্বরতার বিরুদ্ধে শুধু প্রতিবাদই নয়-বর্তমান সমাজে আমাদের দেশীয় অপশক্তি যেসব যুক্তির মাধ্যমে তাদের অপকর্মকে জায়েজ করার চেষ্টা করে থাকে তার খণ্ডনও রয়েছে।আর এ কারণেই প্রায় চার দশক পরেও এ লেখাটি পড়ে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম।আমার আফসোস,বর্বর পাকিস্তানিদের মধ্য থেকে একজন আলোকিত মানুষ আলোচিত বিষয়গুলো এত অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন অথচ বাংলাদেশি বহু মানুষের কাছে আজ মুক্তিযুদ্ধ একটা গণ্ডগোল বা ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়।আর এই আফসোস থেকেই লেখাটি অনুবাদ করার সিদ্ধান্ত নেই-যাতে এ যুক্তিগুলো আমাদেরকে বিকৃত ইতিহাসের বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা করতে পারে।যেহেতু এ লেখাটি অন্য কোথাও অনূদিত হয়েছে কিনা আমার জানা নেই তাই এর কপিরাইট আমি দাবী করছিনা।যদি হয়ে থাকে,সহৃদয় পাঠক তার লিঙ্ক দিলে বাধিত হব।আর আমি যেহেতু পেশাদার অনুবাদক নই-এ অনুবাদ যে মানসম্মত হয়েছে সেটিও আমি আশা করিনা।এ কারণে মূল লেখাটির লিঙ্ক নিচে দিয়ে দিলাম-আগ্রহী পাঠক ইচ্ছে করলেই যাতে ইংরেজিতে লেখা মূল প্রবন্ধটি পড়তে পারেন এবং ইকবাল আহমেদ সম্পর্কে জানতে পারেন সে উদ্দেশ্যে।এছাড়া অনুবাদের ভুলত্রুটি ধরিয়ে দিলেও তা সহৃদয়চিত্তে গ্রহণ করব।
মুক্তিযুদ্ধ হোক আমাদের সকল বাধা পেরিয়ে যাবার পথে অফুরন্ত প্রেরণার উৎস।
মূল লেখার লিঙ্কঃ
http://www.bitsonline.net/eqbal/articles_by_eqbal_view.asp?id=8&cid=2
সময় উপযোগী লেখা। মাস্ফু, খুব ভালো একটা লেখা দিছোস। অনেক কিছু জানার আছে।
মামা,অনুবাদটা একেবারেই ভাল হয়নাই সেইটা নিজে পইড়াই বুঝতে পারতেছি।মুহম্মদ,তারেক ভাই বা টিটো ভাই এই লিখা অনুবাদ করলে যাদু দেখায় দিতো।উনারা মূল লিঙ্ক পইড়া আরো ভাল অনুবাদ করবেন এইটা আশা করি।
কষ্ট কইরা লিখাটায় চোখ বুলাইসেন দেইখা খুব ভাল লাগল।এইটা আমার জীবনের প্রথম অনুবাদ তাই বেশি গালাগালি দিয়েন না। 🙂
মূল লেখাটা পড়ি নাই। তবুও নির্দ্বিধায় বলতে পারি 'অসাধারণ' অনুবাদ। অনুবাদকের নিজের কথা গুলিও চমৎকার।
:boss: :boss: :boss:
:hatsoff: মাস্ফ্যু
(শুধু ফেব্রুয়ারী, মার্চ আর ডিসেম্বর না ... এমন লেখা চলুক সারাবছর)
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
তাইফুর ভাই,আমারে স্নেহ করেন দেইখা দেখি একেবারে আন্ধা হয়া গেছেন।এই ধুনফুন মার্কা অনুবাদরে ভাল কইলেন-ম্যালা লজ্জা পাইছি।
কষ্ট কইরা পড়ছেন দেইখা আপনেরে সেলাম, বস!
বিনয়ের অবতার ...
শেষ পন্ত তুইও ... 🙁
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
B-) আইচ্ছা যান অনুবাদটা ফাটায়া করছি-এক্কেরে সেবা কেলাসিক।
খুশি? x-(
আমি বিনয়ী হপো 🙁
বিনয়ী হইতে গিয়া "পিরা" যাইয়েন না আবার 😛
মাসরুফ, তোমার লেখাটা (হোকনা অনুবাদ) পড়ার জন্য আরেকটু সময় ব্লগে থেকে গেলাম। খুব ভালো লাগলো। ইকবাল আহমেদের দৃস্টিভঙ্গীর সঙ্গে অনেক পার্থক্য থাকলেও সিদ্ধান্তের ব্যাপারে একমত। বিজয়ের মাসে এমন একটা কাজ করার জন্য তোমাকে টুপিখোলা ( :hatsoff: ) অভিনন্দন। খাওয়া-দাওয়া বেশ পাওনা হয়ে গেছে তোমার।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
সানাউল্লাহ ভাই,শুরুতেই বলে নেই যে বিনয় টিনয় না, অনুবাদ পড়ে আমার নিজের কাছে আসলেই মনে হয়েছে যে এটা মূল লেখার কঙ্কালের মত হয়েছে-রক্ত মাংস খুব একটা জুড়তে পারিনি।তারপরেও নিজের কাছে ভাল লাগছে আপনার মত সিনিয়র মানুষের মন্তব্য পেয়ে।
ইকবাল আহমেদের যে জিনিসটি সবচেয়ে ভাল লেগেছে তা হচ্ছে কি সাঙ্ঘাতিক ভাবে ভদ্রলোক স্বজাতির সমালোচনা করেছেন সেটি।আর এ কাজটি তিনি করেছেন যখন হেনরি কিসিঞ্জারকে অপহরণের প্রচেষ্টার অপরাধে তাঁকে বিচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তখন।এরকম অবস্থায় নিজের সরকারকে ক্ষেপিয়ে তোলা(শুধুমাত্র বিবেকের তাড়নায়)আমার মনে হয় ইকবাল আহমেদ আর তাঁর মত বুদ্ধিজীবীদের পক্ষেই সম্ভব।লেখকের বক্তব্য কাঁটাছেঁড়া করার মত যোগ্য তা আমার এখনো হয়নি-সে চেষ্টাও আপাতত করছিনা। এ ব্যাপারে আপনি এবং অন্যান্য বড়ভাই(সেই সাথে জ্ঞানে আমার চেয়ে ২০ বছরের বড় মুহম্মদ)-সবাইকে অনুরোধ করছি।
বাপ্রে বাপ্রে বাপ। চ্রম ডাইলগ।
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
আজ আবার মন্তব্যগুলো পড়লাম। লেখালেখি আর অনুবাদের ব্যাপারে বলি- ওটা লিখতে লিখতে উন্নত হয়। এ নিয়ে লজ্জার কিছু নেই। তুমি সাহস করেছ, কংকাল হলেও এটাই যথেস্ট।
ইকবাল আহমেদের সঙ্গে মতপার্থক্যের জায়গাগুলো তোমার নিজের, কামরুল, মুহাম্মদ ও অন্যদের মন্তব্যের মধ্য দিয়ে অনেকটা চলে এসেছে। তবে তার যেসব সিদ্ধান্ত বা ভবিষ্যতবাণী এই নিবন্ধে প্রকাশ পেয়েছে সেটা ঘটনাক্রমের প্রতি একটা নির্মোহ দৃস্টিভঙ্গি নিয়ে দেখলে, বিশ্ব রাজনীতি অনুসরণ করলে তার মতো পন্ডিতের পক্ষে করা সম্ভব।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
মাসরুফ ভাই... অসাধরণ লাগল। কত কিছু অজানারে 😕
বেশ বলছেন বস। :salute: :hatsoff: :hatsoff:
আশা হারানোর যে কিছুনাই, এইটা নতুন প্রজন্মের কারো এই উপলব্ধিতেই স্পষ্ট। আমাদের গৌরবের বিষয়টাকে আমরা এতটাই বিভক্ত করে রেখেছিযে প্রতি দশজনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে প্রশ্ন করলে ছয়রকম তথ্য পাওয়া যায়। সেইহিসাবে আমরা যারা যুদ্ধ দেখিনি তারা নিজে থেকে কতটা সচেতন সেইটা আমার কাছে কেন জানি বেশ গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়।
মাস্ফুর লেখাটা তাই আশাবাদী করে তোলে আবার এত দুঃস্বপ্নের মাঝেও।
মূল লেখকের লেখাটা আরেকটু সময় করে পড়তে হবে। ডিফারেন্ট পার্সপেক্টিভ থেকে লেখাটার মূলভাব মন্দ লাগেনি অনেক মতপার্থক্য সত্ত্বেও।
মাস্ফুকে অসংখ্য :salute:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
মতপার্থক্যগুলো নিয়ে আলোচনা হলে দুর্দান্ত হয়-অনেক কিছু জানতে পারি আমরা।
কাইয়ুম ভাই,আপনার এই আশাটাই আসলে সব।সবাই হা-হুতাশ করলে আলো দেখবে কে?সেলাম আপনাকেও!
অফ টপিক-আমার অরিজিনাল নাম বদলাইয়া "মাস্ফু" রাখতে হইবো দেখতাছি x-(
মাস্ফু তর অরিজিনাল নাম না ? ;)) ;))
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
কাল্কে ফাইনাল এক্সাম, মাতা গরোম, আইজ কমেন্টাইলাম, কাইল্পোরুম।
কালকে ফাইনাল তুই নেটে কি করস??যা ভাগ!!!
নেট দিয়া মাছ ধরি। জানেন তো, জাল না ছড়াইলে বেল নাই।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
আমরা যারা স্বাধীন দেশে জন্ম নিয়েছি এ বিষয়টা আমাদের জন্যে একটা অভিশাপের মত।জাতিগত গৌরববোধ না থাকলে কেই মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনা-আমাদের হয়েছে সেই দশা।বাজারে জামা কিনতে গেলে দোকানী বলে-নিয়া যান স্যার,ইম্পোর্টেড কাপড়(অথচ বস্ত্রশিল্পে আমরা পৃথিবীর একেবারে প্রথম সারির একটি দেশ)।
পৃথিবীর খুব কম জাতি আমাদের মত রক্ত দিয়েছে স্বাধীনতার জন্যে।আমরা গরীব হতে পারি কিন্তু আত্মসম্মানবোধ অনেক জাতির চাইতে বেশিই আছে আমাদের। আর তাইতো অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডার মত দেশ যখন এখনো বৃটেনের রানীকে নিজেদের সরকার প্রধান বলে মেনে নেয়-না খেয়ে থাকা বাংলাদেশের মানুষ তখন বিদেশি শক্তিকে পাত্তা না দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছে।
মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে আমাদের এই গৌরবসূর্যের মধ্যমনি অবস্থান।
ভালবাসি বাংলাদেশকে।
রকিব,কষ্ট করে এই চাঁছাছোলা লেখাটি পড়েছিস দেখে ভাল লাগল।পড়তে গিয়ে যেখানে যেখানে খটকা লেগেছে নির্দ্বিধায় জানিয়ে দে যাতে ঠিক করে ফেলতে পারি।
ওর প্রশ্নটা আমি কইরা দেই...
কারো লেখা কোট কেম্নে করে???????? :(( :(( :((
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
=)) =))
মামা আমার অনুবাদটারে পচায়া হইলেও কিছু কন পিলিজ।আপ্নের কমেন্ট না হইলে ব্লগ লিখাই মাটি 🙁
মাসরুফ, প্রথমবার পড়তে গিয়ে শেষ করতে পারিনি...এখন তোমার এই কমেন্ট দেখে আবার প্রথম থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত পড়লাম...
লেখকের দু'একটা মন্তব্য ছাড়া বাকি সব কিছুই ভাল লেগেছ...বিশেষ করে বিহারে বাঙ্গালীদের দ্বারা নির্যাতিত হবার পরও তিনি যে তৎকালীন পূর্ব বাঙ্গালীদের বঞ্চণাকে সহানুভূতির চোখে দেখেছিলেন-এটা তাঁর বড় মনের পরিচয় দেয়...বিচারাধীন থাকা স্বত্ত্বেও তাঁর এ বলিষ্ঠ উচ্চারণ-সত্যিই প্রশংসার যোগ্য... :clap:
লেখাটা এত কষ্ট করে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য তোমাকে :hatsoff:
অফ টপিক- তোমার অনুবাদ তো সেই রকম হইছে...ওয়ে টু গো বিগ ম্যান... :clap:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
কোট করছিলাম তো খালি প্রথম বাক্যটা, মাগার পুরাটাই হইলো কেমনে ~x( ~x( :no: :no: 😡
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
বস্... প্রথমে যেই লাই্ন কোট করবেন ঐটা কপি-পেস্ট করবেন, এরপরে কমে্ন্ট বাক্সে একটা অ্পসন আছে... উদ্ধৃতি (বাম পাশ থেকে ৩ নাম্বার) ঐটা একবার টোকা দিলেই হয়ে যাবে। :thumbup: :thumbup: :thumbup:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
রকিব, থ্যাংকু!!! =)) =)) =)) =)) =))
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
আরে আজিব!কোট ভুল করে কেডা আর সমাধান দেয় কেডা!কিদিনকালপর্ছে!!
=)) =)) =))
"আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"
😡
আচ্ছা, এই পাগলাডা কি কয়? মাস্ফু একটু দেখ তো অনুবাদ করতে পার নাকি...।
Life is Mad.
আরেকটা উদ্ধৃতি দেই সুনীলের কবিতা থেকেঃ
এই লাইনটার অবতারণা করলাম দুটো কারণেঃ
প্রথম কারণ, সত্য চাপা থাকে না কখনো। বেরিয়ে আসবেই। লেখক অন্তত স্বীকার করেছেন গণহত্যার কথা।
দ্বিতীয় কারণ, আগেই বলেছিলাম সিসিবি পূর্ণাঙ্গ ব্লগ হয়ে উঠবে অচিরেই। মুহাম্মদের পর মাসরুফও গবেষণাধর্মী লেখা শুরু করল। এক কথায় অসাধারণ।
তৌফিক ভাই,লেখাটাতে এত কমেন্ট আসবে আমি ভাবতেও পারিনি।ধন্যবাদ দিয়ে কাউকে তাই আর খাটো করতে চাচ্ছিনা।আর নিজের ভাই বোনদের মাঝে এত ধন্যবাদ-ধন্যবাদ খেলা ভালোও লাগেনা।সিসিবি তথা ক্যাডেটদের নিয়ে আমিও অনেক অনেক আশাবাদী।পৃথিবীর কত প্রান্ত থেকে কত ব্যস্ত মানুষ এখানে আসে, সময় দেয়-কেউ কি ঠেকাতে পারবে এই ব্লগটাকে?কখনোই না!
আর একটি ছোট শুদ্ধি করার ধৃষ্টতা দেখাই-মুহম্মদের গবেষণাধর্মী লেখার সাথে আমার এই কাঁচা হাতের অনুবাদকর্মের কোন তুলনাই হতে পারেনা।আপনার সহৃদয় প্রশংসা আমি মাথায় তুলে নিলাম-তবুও একে গবেষণাধর্মী বললে আমার মনে হয় প্রাপ্য মর্যাদার চেয়ে অনেক বেশিই দেয়া হয়ে যায়।
দেবার বেলায় কেউ কম নন আপনারা!
আইচ্ছা... :clap: 😀 😛
Life is Mad.
মাস্ফু'র অনুবাদটা পড়লাম আগে। তারপর মূল লেখাটা।
অনুবাদ ভালো হয়েছে। সব ঠিক ঠাক। সুন্দর কাজের জন্য পরেরবার বাসায় আসলে চায়ের সঙ্গে তোকে হাল্কা নাস্তাও খাওয়াবো। 😉
আমার সমস্যা হচ্ছে সব রকম যুক্তি তর্ক দূরে সরিয়ে রেখে আমি যেকোন পাকিস্তানিকে ঘৃনা করি।
আজীবন করবো।
স্রোতের বিপরীতে কথা বলা ইকবাল আহমেদকে তাই ধন্যবাদ ছাড়া আর কিছু দিতে পারছি না। যদিও তার অনেক চিন্তা ভাবনা আমার ঠিক পছন্দ হয়নি, অনেক বিষয়ে আমি একমত নই। তারপরো সাহস করে কিছু কথা বলার জন্য তাকে ধন্যবাদ। এবং এটাও সত্যি ইকবাল আহমেদের মতো লোক পাকিস্তানে অনেক কম।
আর মাস্ফু,
শিরোনামের "নিরপেক্ষ " কথাটা এই ক্ষেত্রে পছন্দ হয় নি। ইনি কি নিরপেক্ষ? একটু সহনশীল এই যা।
কামরুল ভাই,পাকিস্তানিদের প্রতি আমার যে খুব একটা প্রেম আছে সেটা বলা যাবেনা।তবে পাকিস্তানিদের চাইতে আমি বেশি ঘৃণা করি দেশদ্রোহীদের।
আপনার মতামতের প্রতি আমার পূর্ণ শ্রদ্ধা আছে-উনসত্তরের গণঅভ্যূত্থানের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা আমার বাবার অনুভূতিও অনেকটা আপনার মতই।চট্টগ্রামে আমার বাসায় একবার কয়েকজন পাকিস্তানি বন্ধু(মেডিকেল কলেজের ছাত্র) আব্বুকে বলেছিল-আঙ্কল আপ তো উর্দু জানতে হ্যায়, কিউ উর্দুমে বাত নেহি কার রাহা হ্যায় হামারে সাথ?
যৌবনোত্তীর্ণ আমার বাবার চোখে সেদিন আগুনের যে স্ফুলিংগ দেখতে পেয়েছিলাম তা থেকে মুক্তিযোদ্ধারা কিসের আগুনে বিশালদেহী পাকসেনাদের পুড়িয়ে মেরেছিল তা কিছুটা টের পেয়েছিলাম।
অত্যন্ত শান্তশিষ্ট আমার বাবার গর্জনে সেদিন পুরো ফরেস্ট বাংলো কেঁপে উঠেছিল-
"লিসেন কিডস, আই ক্যান স্পিক উর্দু বেটার দ্যান ইয়োর বিহারি অরিজিন প্রেসিডেন্ট দ্যাট সো কল্ড মুশাররফ, বাট আই উইল নট।আই উইল নট হিউমিলিয়েট মাই মাদার টাং বাই স্পিকিং ইয়োর ল্যাঙ্গুয়েজ।ইন বাংলাদেশ,য়ু বেটার স্পিক বাংলা-ইফ ইউ ওয়ান্ট টু সারভাইভ"
পরে ওরা চলে যাবার পর জিজ্ঞাসা করেছিলাম এমনটি করার কারণ।উত্তরে
আব্বু বলেছিলেন-যারা ১৯৭১ দেখেনি তারা লাইব্রেরিতে হাজারটা বই পড়েও তা বুঝতে পারবেনা,সুতরাং সে চেষ্টা আমি যেন না করি।
আপনার রাগটা তাই যুক্তি দিয়ে বিশ্লেষণ করতে না পারলেও হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পারছি।
ভাল থাকবেন ভাইয়া।
:hatsoff: :thumbup:
আঙ্কেলকে :salute: ।
Life is Mad.
আমার সমস্যা হচ্ছে সব রকম যুক্তি তর্ক দূরে সরিয়ে রেখে আমি যেকোন পাকিস্তানিকে ঘৃনা করি।
আজীবন করবো।
সালাম বস। :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute:
চলো বহুদুর.........
মাস্ফু ভাই আমি আর কি কমু :-/ যা বলার ছিল তা আমার আগের কমেন্টগুলাতে আছে। আরও যা বলব তা পরে যারা কমেন্টাইবে তারা বলে দিবে :thumbup:
তয় অসাধারন লেখা :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
"আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"
লেখা মনে হয় ভালই হইছে। মনে হয় কইলাম কারণ আমি ভাল লেখা মনযোগ দিয়া পড়তে পারি না। প্রতি প্যারাগ্রাফের প্রথম লাইন আর শেষ লাইন পইড়া পার কইরা দেই। তোমারটাও তাই করলাম। এত বড় একটা লেখা দুই মিনিটে শেষ করছি দেইখাই মনে হইতাছে লেখা ভালই হইছে।
তবে মনযোগ দিয়ে না পড়ার আরেকটা কারণ হোল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক যেকোন ব্যাপারই আমার কাছে এখন হাস্যকর মনে হয়। একটা ফালতু সেন্টিমেন্ট ছাড়া আর কিছু নয়। আমি জানি আমার এই কথা শুনে অনেকেই (উহু, প্রায় সবাই) আমার উপর হামলে পরবেন। তবে আমি পাত্তা দেই না। কারণ দোষটা আমার নয়। গত সাইত্রিশ বছর ধরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে আমাদের সবচেয়ে গর্বের বিষয়টাকে আমাদের সম্মানিত রাজনীতিবিদরা আর মাদারচোদ (মডারেটর সাহেব আমার গালিকে বা কমেন্টকে মুছে দিতে পারেন, কিন্তু এই ক্ষেত্রে আমি মুখ সাম্লাতে পারছি না বা চাচ্ছি না) বুদ্ধিজীবিরা যে ধর্ষন করেছে এবং এখনও করে যাচ্ছে তাতে সংসদ ভবনের পাশে পতিতা দেখলে যেমন মুখ ফিরিয়ে চলে যাই, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়টা সামনে আসলে আমিও মুখ ঘুরিয়ে নেই। পাকি জানোয়াররা যা করেনি, আমাদের পা চাটা কুত্তা হারামখোর খানকি মাগির পোলা বুদ্ধিজীবিরা তা করে চলেছে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে। পাকিরা তো শুধু আমাদের মা-বোনকে ধর্ষন করেছে, যার ফলশ্রুতিতে হাজারখানেক জারজ সন্তান জন্ম নিয়েছিল বাহাত্তুরে। আর এই হারামীরা প্রতিনিয়ত ধর্ষন করে চলেছে দেশটাকে, যার ফলে আমার মত জারজ জন্ম নিচ্ছে প্রতিদিন যাদের "মুক্তিযুদ্ধের চেতনা" কথাটা শুনলেই পেচ্ছাব করতে ইচ্ছে করে ওই চেতনার উপর।
কেউ আহত হলে ক্ষমাপ্রার্থী নই।
মরতুজা ভাই,
একবাল আহমেদের ভাষায়-"স্বেচ্ছাচারী শক্তির সামনে নিরবতার অপরাধকে আমি সাফল্যের অভাবের কথা বলে বৈধ করতে রাজী নই।"
বিদেশের মাটিতে বসে স্বদেশের ভূমিতে খাণ্ডবদাহনে আপনার বুকের ভেতরে যে কষ্ট,তা হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পারছি।
তোমার কথায় এখনো আশা পাই বুকে। সাগরের মত বিশাল হতাশার মাঝে তোমাদের মত আশার প্রদীপই হয়ত ভরসা। মাঝে মাঝে মনে হয় যদি আরেকটা যুদ্ধ হত, তবে সবার আগে এইসব নরকের কীটগুলোকে গুলি করে মারতাম।
এদেশের সন্তান হয়ে হাজার সমস্যার ভীড়ে থেকেও আমেরিকার মাইক্রোসফট করপোরেশনের মত জায়গায় আপনি যে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করছেন-আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে এটাও কিন্তু যুদ্ধ।আশা করি আপনার মতই আমরা সবাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল হব।বাঁধভাঙ্গা জোয়ারের মত এই সফলতা যখন আসতে থাকবে,অমুকের শালা বা অমুকের নাতি হবার যোগ্যতা(??) দিয়ে কিন্তু খুব বেশিদিন আমাদেরকে ঠেকিয়ে রাখা যাবেনা।
এই যৌবন জলতরংগ রুধিবি কি দিয়া বালির বাঁধ?
কি দিয়া রুধিবি সাগরে জোয়ার আকাশে যখন উঠেছে চাঁদ?
পুরা বাঘের বাচ্চা!
আক্ষরিক অর্থেই বললাম...
উর্দু নিয়া পাকিস্তানী গুলারে ঝাড়ি দেওয়ার জন্য বস রে আমার লালসবুজ সালাম :salute:
হুমায়ুন আজাদ স্যারকে কোট করে শেষ করি-
"পাকিস্তানিদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা গোলাপ নিয়ে আসে, তখনও।" -
"আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"
সাকেব ভাই,রিটায়ার করার পর আব্বা অনেকদিন "বস" ডাক শুনেনা।উনারে আপনার কথা কইলে বড়ই খুশি হইবো 😀
শুভ কামনার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।দোয়া করবেন এই ক্ষুদ্রসামর্থ ভাইটার জন্য।
সাব্বাস তোর স্বপ্ন সত্যি হবে ইনশাল্লাহ । :salute:
পুরা সিসিবিরে তাইলে খাওয়ামু মামা।
অফ টপিক-আন্নে অস্ট্রেলিয়া থিকা আইতাছেন কবে?আমার জুন্য যাস্ট একটা অস্ট্রেলিয়ান আফামুনি নিয়া আইসেন 😛
আমি 20 তারিখ ঢাকা পৌছাব । তোর আফামুনি তো অলরেডী ঢাকাতেই আসে । খুইজা দেখ ।
মাসরুফ, বেশ মনযোগ দিয়ে পড়লাম তোমার লেখাটা।
অনুবাদ কেমন হয়েছে সেটা নিয়ে মন্তব্য করব, এতটা বড় এখনো হইনি। তার চেয়ে বরং এই সুন্দর লেখাটার জন্য তোমাকে
দুঃখিত, আগের মন্তব্য সম্পূর্ণ হয়নি।
মাসরুফ, বেশ মনযোগ দিয়ে পড়লাম তোমার লেখাটা।
অনুবাদ কেমন হয়েছে সেটা নিয়ে মন্তব্য করব, এতটা বড় এখনো হইনি। তার চেয়ে বরং এই সুন্দর লেখাটার জন্য তোমাকে :salute: দেই।
সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে,এ সপ্তাহের বিনয়ের অবতার হিসেবে তানভীর ভাইকে মনোনয়ন দেয়া হল।
well done মাস্ফু
:hatsoff:
:clap: :clap: :clap:
পুলাপান বড় হয়ে যাছ্ছে ( অবশ্যই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে 😀 😀 😀 )
তৌহিদ ভাই,আমিও বড় হপো :((
অনেক পরে হলেও আমরা স্বাধীন তো নাকি। স্বাধীন হওয়াটা একটা লক্ষ্য হতে পারে, একমাত্র নয়। অর্থনৈতিক মুক্তি আসল মুক্তি। সেই অর্থে যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ চলছে। আমরা এখন বরং মাপতে বসি আমি কতটুকু আছি এ যুদ্ধে।
নেতা ঠিক না হলে নেতাকে সরে যেতে হবে। আমরা নেতৃত্ব দেব, আমরা এই দেশকে গড়বই, শকুন তাড়াবোই।
মাস্ফু তুমি বেশ ভাল কাজ করেছ, তোমাকে :salute:
তবে অতীত নিয়ে আমি এত মাথা ঘামাই না আর, আমার সব চিন্তা ভবিষ্যত নিয়ে।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ফয়েজ ভাই,রফিক আজাদের কবিতা মনে করিয়ে দিলেন-"ভাত দে হারামজাদা নইলে মানচিত্র খাবো"
ক্ষুধার্ত মানুষ কি মর্ম বুঝবে স্বাধীনতার?সে অর্থে যুদ্ধ শেষ কোথায়-আমরা বরং যুদ্ধের ভয়ঙ্করতম তীব্রতা "থিক অব দা ব্যাটল" এ অবস্থান করছি।
দশজন খাঁটি মানুষ একটা দেশের চেহারা বদলে দিতে পারে।আর তাই যদি হয়,সে দায়িত্ব দেশের টাকায় পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ প্রশিক্ষণ পাওয়া আমরা ক্যাডেটরা যদি না নিই, কারা নেবে?
স্বদেশপ্রেম থাকতে হলে যে সেনাবাহিনীর সদস্য হতেই হবে তা কি কোথাও লেখা আছে?আমি সত্যি সত্যি বিশ্বাস করি-আমরা ক্যাডেটরা দেশের চেহারা পাল্টএ দিতে পারি।
দশজন খাঁটি মানুষ একটা দেশের চেহারা বদলে দিতে পারে।আর তাই যদি হয়,সে দায়িত্ব দেশের টাকায় পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ প্রশিক্ষণ পাওয়া আমরা ক্যাডেটরা যদি না নিই, কারা নেবে?
:salute: :salute: :salute: :salute:
চলো বহুদুর.........
আমার একটা প্রশ্ন ছিল। ১০০০০ বিহারী হত্যা করার ঘটনা কি সঠিক? কেউ জানলে দ্য়া করে জানাবেন।
@ মাসরুফ ভাইকে :thumbup: :thumbup:
মাসরুফ ভাই প্রথমেই আপনাকে কোটি কোটি ধন্যবাদ দিয়ে শুরু করছি। একটু লম্বা মন্তব্য করবো ভেবেছি।
১
এই কথাটা থেকেই শুরু করি। শেষ দিকে এসে এই লাইন পড়ে আমার আগ্রহ বেড়ে গেছে। কারণ আমি এডওয়ার্ড সাইদের ভক্ত। একজন দক্ষিণ এশীয় ব্যক্তির নাম যদি তার সাথে উচ্চারিত হয় তাহলে তাকে বস মানতে আমি দ্বিধা করবো না।
নেটে এই একবাল আহমেদকে নিয়ে সার্চ করে বাংলা উইকিপিডিয়ায় পেলাম। দেখলাম তিনি মূলত মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য নীতির সমালোচক। জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয় উগ্রতাকে তিনি যেকোন জাতির জন্য "twin curse" হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এটুকু পড়েই আমি মুগ্ধ। আমার চিন্তাধারার সাথে পুরো মিলে গেল। আমিও জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয় উগ্রতাকে দ্বিবিধ অভিশাপ মানি। তাই প্রথমেই একবাল আহমেদকে সাধুবাদ জানিয়ে নিচ্ছি।
আগ্রহ আরও বেড়ে যাচ্ছে। মাত্রই এক জায়গায় দেখলাম, এডওয়ার্ড সাইদ নাকি তাকে গুরু মানতেন। সেই এডওয়ার্ড সাইদ, যাকে বিংশ শতকের অন্যতম সেরা যুদ্ধবিরোধী দার্শনিক বলা যায়।
২
এডওয়ার্ড সাইদের প্যালেস্টাইন বিষয়ক একটা বই (The End of the Peace Process) পড়েছিলাম। সেখানে মূলত দেখেছিলাম, নিজের জাতিসত্ত্বা বা আত্মপরিচয়ের ধার না ধেরে কিভাবে একজন মানুষ শুধু যুক্তি ও মানবতার পক্ষে কথা বলতে পারেন। একবাল আহমেদও অনেকটা সেরকম কথা বলেছেন। তার লেখায় মানবতাবাদ সুস্পষ্ট। তার কিছু কথা এক্ষেত্রে পুরা আইকনিক (অনুবাদও খুব ভালো লেগেছে):
৩
মুক্তিযুদ্ধের শুরুর বিষয়টা তিনি ঠিকভাবে তুলে ধরেছেন। আওয়ামী লীগ (বিশেষত শেখ মুজিব)প্রথমে তো পুরো স্বাধীনতা চায়নি, চেয়েছিল স্বায়ত্তশাসন। ৩রা মার্চের পর থেকেই তা স্বাধীনতার দিকে মোড় নিতে শুরু করে এবং ২৫শে মার্চে গিয়ে চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। এই ধারাবাহিকতা এখানে ফুটে উঠেছে। এভাবে পুরো বিষয়টি তুলে ধরেছেন এবং দৃঢ়চিত্তে বলেছেন,
৪
আওয়ামী লীগ (বিশেষত শেখ মুজিব) এর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদৃষ্টি বিষয়ে তার কথার সাথে আমি একমত। শেখ মুজিবের পশ্চিম ঘেঁষা নীতিকে আত্মঘাতি বলেছেন। কারণ, সেই পশ্চিম তথা আমেরিকাই দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ায় কমিউনিস্ট বিরোধী জোট তৈরীর জন্য পাকিস্তানকে সহায়তা করেছে।
সম্ভাব্য ভারতীয় হস্তক্ষেপের কথাটাও উল্লেখযোগ্য। ৩রা ডিসেম্বরের কথা তিনি ২রা সেপ্টেম্বরেই সুন্দরভাবে বলে দিয়েছেন:
তবে ভুট্টোকে শেখ মুজিবের জ্ঞাতি ভাই বলা ঠিক হয়নি। সে সময়ের পরিস্থিতি সম্যক না জানলেও আমার এটা মনে হল।
৫
বিহারী হত্যা নিয়ে তার কথাগুলো লক্ষ্য করা খুব জরুরী। প্রথমেই মনে রাখা দরকার, তিনি নিজে বিহারী। এই বিষয়টাও তিনি পরিষ্কার করেছেন। পশ্চিম পাকিস্তানী কর্তৃপক্ষ যেখানে দাবী করেছে, সেনা হস্তক্ষেপের আগে ১ লাখ বিহারী বাঙালিদের হাতে নিহত হয়েছে সেখানে তিনি প্রথমেই বলে নিয়েছেন: ১০,০০০ এর বেশী নিহত হয়নি।
আমি অবশ্যই বিহারী হত্যার বিষয়টা এড়িয়ে যেতে চাই না। কিন্তু পাকিস্তান যখন দাবী করে, বিহারীদের বাঁচাতেই তারা ২৫শে মার্চ হামলে পড়েছে তখন আমি স্থির থাকতে পারি না। একবাল আহমেদ বিহারী হয়েও কিন্তু একই মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেই দিয়েছেন ২৫শে মার্চের হামলা এবং পরবর্তী হস্তক্ষেপ বিহারী বাঁচানোর জন্য হতে পারে না। এই হামলার কোন বৈধতাই তিনি দেখতে পাননি।
উল্লেখ্য মুক্তিযুদ্ধের পরেও বিহারী হত্যাযজ্ঞ চলেছে। ১৯৭২ সালে বিহারী হত্যা বিষয়ে তিনি নিজের অভিমত আবারও ব্যক্ত করেছেন। এ নিয়ে তার আরেকটা লেখা পেলাম:
Notes on South Asia in Crisis
মাসরুফ ভাই, পারলে এইটাও অনুবাদ করে ফেলেন।
৬
কামরুল ভাই একবাল আহমেদকে "নিরপক্ষ" না বলে "সহনশীল" বলেছেন। এটার সাথে আমি ঠিক একমত হতে পারলাম না। কারণ একবাল আহমেদকে আমার নিরপেক্ষ মানবতাবাদীই মনে হয়েছে। অবশ্য মানবতাবাদী মাত্রই নিরপেক্ষ। মানবতাবাদের কথা বলতে গেলে প্রথমেই ভুলে যেতে হয় যে, আমি কোন গোত্রে জন্ম নিয়েছি। প্রথমেই মেনে নিতে হয় যে আমি একজন মানুষ। একবাল আহমেদ সেভাবেই এগিয়েছেন বলে মনে হলো। ঠিক যেভাবে এডওয়ার্ড সাইদ এগোতেন।
দু জনকেই :hatsoff:
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
মাথায় গেঁথে গেল।
Life is Mad.
আমি কিন্তু শুধু এই লেখাটার ক্ষেত্রে "নিরপেক্ষ" শব্দটা পছন্দ হয়নি বলেছি। সামগ্রিক ভাবে ইকবাল আহমেদ কে বিচার করিনি। এই লেখাটার ইকবাল আহমদের ব্যাপারে আমার মতামত এখনো আগের মতোই আছে।
সত্যি কথা বলতে কি মাস্ফু'র অনুবাদ আর মুহাম্মদের এই কমেন্ট পড়ার আগে ইকবাল আহমেদ সম্পর্কে আমি কিছুই জানতাম না। এখন জানলাম। তার বাকি লেখা গুলি কিছু পড়লাম। ধন্যবাদ।
তবে সবচেয়ে বড় সত্যি হলো শুধু দু'একজন ইকবাল আহমেদ বাকি সব পাকিস্তানি সম্পর্কে আমার ধারনা কখনো বদলাতে পারবে না, এবং আমি নিজেও বদলাতে চাই না।
পাকিস্তানিদের প্রসংগ উঠলে আমি আমার মানবতাবাদ, নিরপেক্ষতা সহনশীলতা সব দূরে রাখি। এই ক্ষেত্রে আমি বোধ হয় একটু বেশিই অযৌক্তিক। কিন্তু কিছু করার নেই।
শিরোনামের "নিরপেক্ষ পাকিস্তানি" শব্দটা তাই কানে লাগলো। আর কিছু না।
ডিস্ক্লেইমারঃ
মতামত একান্তই আমার নিজস্ব।
মুহাম্মদ এবং মাস্ফুকে ধন্যবাদ।
সরি কামরুল ভাই। আমি সামগ্রিক প্রেক্ষাপটের ক্ষেত্রে আপনার "সহনশীল" শব্দটা প্রয়োগ করে ফেলেছি। এখন বুঝতে পারছি।
এই লেখা সম্পর্কে আপনার দ্বিমতগুলো লিখে ফেলেন না। মাসরুফ ভাই তো আগেই বলেছে, এতে আলোচনার ক্ষেত্র বাড়বে। আমিও কিন্তু একটা দ্বিমত লিখছি: শেখ মুজিবকে ভুট্টোর জ্ঞাতি ভাই বলার ব্যাপারে আমার দ্বিমত আছে।
খুব সচেতন ভাবে এড়িয়ে যেতে চাইছিলাম। কারন বড় বেশি রাজনৈতিক মন্তব্য হয়ে যাবে, যদিও এখনকার রাজনৈতিক মতাদর্শগুলি'র প্রতি আমার ঘৃনা ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।
তাও একটু বলি,
I did not have any natural, sympathy for the Bangla Desh movement. In fact, I had a definite feeling of antipathy for Sheikh Mujib [East Pakistan’s leader whose party, the Awami League, won a governing majority in the national assembly and 98 percent of Bengali votes]. He impressed me as being a limited man, impetuous and unimaginative.
এই প্যারায় একবাল হোসেনের মতের ব্যাপারে আমার একটু দ্বিমত আছে।
তবে সব কিছুর পরে একবাল আহমেদ'র মানুষ পরিচয় আমার কাছে পাকিস্থানি পরিচয়ের চেয়ে বড় , আর তাই আমি “নিরপেক্ষ পাকিস্তানি” কথাটা পছন্দ হয়নি বলেছি।
এই প্রসঙ্গে আর এখানে বলতে চাইছিনা।
ওকে কামরুল ভাই
"নিরপেক্ষ পাকিস্তানি" কথাটা বলার কারণ একবাল আহমেদের এই ব্যতিক্রমী উচ্চারণ।অনেকে যখন গণহত্যাকে "অতিরঞ্জিত" বলে লাফালাফি করতে ব্যস্ত,একবাল আহমেদ সেই ১৯৭১ সালেই একে সরাসরি গণহত্যা বলে অভিহিত করেছেন।অন্ততঃ এই ক্ষেত্রে উনাকে আমার নিরপেক্ষ বলেই মনে হয়েছে।
আর নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি-আমার সাথে অনেক পাকিস্তানির পরিচয় রয়েছে যারা নিজেদের পূর্বপুরুষের অপকর্মের জন্যে লজ্জাবোধ করে এবং সরাসরিভাবে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা চায়।একজন পাকিস্তানের মানুষের ভেতরে এই বোধটুকুকে আমি সম্মান না দিয়ে পারিনা।
পাকিস্তানের প্রতি ঘৃণার কারণ বুঝতে পারলেও এই মানুষগুলোর প্রতি কিন্তু আমার অশ্রদ্ধা আসেনা।"নিরপেক্ষ পাকিস্তানি" কথাটা বলার এটাও একটা কারণ।
আশা করি বুঝাতে পেরেছি।
লাউড এন্ড ক্লিয়ার। 😀
এইবার আমারে তাইলে লাউড এন্ড কিলিয়ার কইরা টিরিট দ্যান। 😀
মুহম্মদ,
একবাল আহমেদের এই আর্টিকেলটির যে যে দিকগুলো আমি বলতে চেয়েও বলতে পারিনি(জীবনের প্রথম অনুবাদকর্ম সম্পাদনজনিত ক্লান্তিতে বলতে পারিস)তুই ঠিক সে বিষয়গুলো তুলে ধরেছিস।তোর মন্তব্যে আমার এ সামান্য প্রয়াস কিছুটা হলেও পূর্ণতা পেল।বিশেষ করে একবাল আহমেদ সেই সেপ্টেম্বরে বসে দুটো বিষয় নিখুঁত ভবিষ্যদ্বানী করেছেন-১)ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ এবং ২)শতাব্দীর নৃশংসতম গণহত্যা।তোকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আর আগের কমেন্টে দেখে থাকবি(শুরুর দিকে)তোর অনুবাদ নিইয়ে আমার মতামত এবং তোর জ্ঞান সম্পর্কে আমার ধারণা।সুতরাং বুঝতেই পারছিস-অন্ততঃ এডওয়ার্ড সাঈদের এক আধটা প্রবন্ধের অনুবাদকর্ম তোর হাত থেকে আশা করছি 🙂
একবাল আহমেদের সেরা লেখা বোধহয় "Terrorism", এডওয়ার্ড সাইদের যেমন "Orientalism"। এই লেখাটা এখানে দেখলাম:
Terrorism: Theirs and Ours
মাসরুফ লেখাটা আমি সময় নিয়ে পড়তে চাই। তাই প্রিয়তে রেখে দিলাম।
তোমাকে :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
টিটো ভাই,লেখকের সাথে যদি আপনার দ্বিমত থেকে থাকে তাহলে সেটা নিয়ে আলোচনা করলে আমরা যারা এ বিষয়গুলো নিয়ে খুব সীমাবদ্ধ জ্ঞান রাখি তাদের জন্যে খুব ভাল হয়।কথাটা একটু ভেবে দেখবেন ভাইয়া।
এহ্ হে। এডওয়ার্ড সাইদের একটা উক্তি পেয়ে গেছি। একবাল আহমেদ সম্পর্কে তিনি বলেছেন:
এর পরে আর কিছু বলার নাই।
দুই দফায় মাত্র একবার শেষ করলাম। আরও অনেকটা সময় দেব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
অনবদ্য মাসরুফ।
Life is Mad.
সায়েদ ভাই,বিষয়টা আপনার জন্যে হয়তো স্পর্শকাতর হতে পারে।আর তা যদি হয়, তাহলে আপনার মৌনতায় ব্যথিত হবনা ভাইয়া।পড়ার জন্যে অনেক অনেক ধন্যবাদ।যদি সম্ভব হয় তাহলে ভুল ত্রুটিগুলো(আমি নিশ্চিত অনেক ভুল আছে যা আপনারা স্নেহবশতঃ মুখ ফুটে বলছেন না)ধরিয়ে দিলে খুব খুশি হব।ভাল থাকবেন।
that's the spirit. :boss:
দোস্ত, তুই তো পাকিস্তানে থাকিস। ১৯৭১ নিয়ে ওদের বইপত্রে কি আছে আর ওদের সাধারণ মানুষ কি ভাবে এইটা নিয়ে একটা লেখা দিলে খুব ভাল হইত।
অফ টপিক-তোর পড়াশুনা কেমন চলে রে?
that's the spirit, dude. :clap:
আরে যন্ত্রনা এইটা তো পড়লাম একবার,কইতাছি যে তোর পড়াশুনা কেমন চলে?আর পাকিস্তানিদের হাবভাব কি মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে?পারলে এই বিষয়টা নিয়া টুকিটাকি লিখিস-তোর অভিজ্ঞতা তো আমার এক্কেবারে ফার্স্ট হ্যান্ড 😛
এই পোস্টটা এবং সাথে সাথে সম্পর্কীত মন্তব্যগুলোই বলে দেয় আমাদের আশা হারানোর কিছু নেই, হয়তো কিছুটা দেরী হতে পারে, কিন্তু হবেই। নিশ্চিত। সবাইরে :salute: :salute:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে প্রোফাইল ছবি বদলে দিলাম। আমি আবার মৌসুমি বাঙ্গালী তো... 😛
ভাল ছিল :awesome:
আজ বোধ হয় আমি মন্তব্য করতে পারবো! কি যে ভালো লাগছে। নববষের্র শুভেচ্ছা বাচ্চু।
ভাবীগো আপনে কই?লেখা নাই ক্যাআআআআআআন? :((
এই লেখাটা এতো দেরিতে পড়া বড় ধরণের অন্যায় বলে আমি মনে করছি। খুব ভাল কাজ হয়েছে। অনুবাদো ভাল হয়েছে। এই লেখার আরো প্রচার প্রয়োজন। অনুমতি দিলে এই লেখা আমি অন্য ব্লগে দিতে চাই।
শওকত ভাই,অনুমতি না চাইয়া দুই গালে দুইডা থাবরা দিলে কষ্ট কম পাইতাম।সানা ভাই বা আপনের মত লোক আমার পোস্ট পইড়া সেইটারে অন্য ব্লগে প্রকাশের যোগ্য মনে করছেন-কবীর ভাইয়ের ভাষায় "অচো" না হইয়াও এই আনন্দে আমি যাই ১০০ ফ্রন্ট্রোল দেই 😀
:)) :)) :)) :)) 😀 😀
Life is Mad.
x-( ওই মিয়া আপনে হাসেন ক্যান?দেবরকে নিয়া মস্করা করার অফ্রাধে আপনের পার্মানেন্ট ব্যাটওম্যান(আমাদের ভাবীজান)এর কাছের নালিশ করলে কইলাম মির খিয়া মিরা যাবেন x-(
কিরে ইদানিং লগআউট হয়ে হয়ে কমেন্ট দেস দেখি। কেমন আছস?
খুবই চমৎকার একটা লেখা। অনেক না জানা কথা জানলাম এবং ভুল জানাকে সংশোধিত করলাম।
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
🙁 নরকবাস ৪ পড়তে মন চায়...