আচার০০৬ : বাংলা ব্লগোস্ফিয়ার

ব্লগ বলতে আমি শুধু বুঝতাম টেকি ব্লগ, টেকনোলজিক্যাল কোন সমস্যায় পড়লে যেখানে সমাধান পাওয়া যায়। বাংলা ব্লগিং কি জিনিস জানতামই না। বাংলা ব্লগিং-এর সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল কানাডায় আসার পর। এক বন্ধু ফেসবুকে একটা লিংক পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করেছিল আমাদের আরেক বন্ধু যে ব্লগ লিখে তা জানি কিনা। সত্যি বলতে কি ব্লগিং শব্দটার মানেই তখন আমার কাছে পরিস্কার ছিল না। যাহোক লিংক ধরে চলে গেলাম সেই বন্ধুর ব্লগে, পড়লাম ওর লিখা। লেখার বিষয়বস্তু আমি, আমার জীবনের মোড় ঘোরানো ঘটনাগুলো নিয়ে লিখেছে ও। আমার ভালো বন্ধু, আমাকে নিয়ে সে উচ্ছাস প্রকাশ করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মন্তব্যে গিয়ে দেখি, অজানা অচেনা কিছু মানুষ আমাকে শুভ কামনা জানিয়ে রেখেছে। আমার মন তাদের ভালোবাসায় আদ্র হলো, বাংলা ব্লগিং-এর অদ্ভুত জগতটার সাথেও পরিচয় হলো আমার। ঘটনাটা খুব বেশি দিন আগের না, মাস আটেক হবে হয়তো। মজার ব্যাপার হলো বন্ধু ব্লগটি লিখেছিল আমি যেদিন পড়ি তারও এক বছর আগে।

ব্লগিং-এর সাথে আমার প্রথম দেখাটা তাই খুব আলতো কিছু অনুভবে জড়ানো। আগ্রহ বাড়াতে অর্ন্তজালে খুঁজে বের করলাম দুটো বাংলা ব্লগ- সামহোয়ার ইন এবং সচলায়তন। সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় প্রায় পুরোটা দিন কাটিয়ে দিলাম এই ব্লগ সাইট দুটোতে। ভালো লাগল, ভেবে কিছুটা অবাকও হলাম যে কতটা শক্তিশালী একটা মিডিয়া হতে পারে ব্লগিং। আরো কিছুদিন অর্ন্তজালিক ঘোরাঘুরির পর লিখেও ফেললাম একটা ব্লগ সামহোয়ার ইনে। লেখাটা বেশ কাঁচা হাতের হয়েছিল, সাড়া পাইনি খুব একটা। তারপর নিজের জীবন কাহিনী নিয়ে আরেকটা ব্লগ লিখলাম সচলায়তনে, অতিথি লেখক হিসাবে। ছাপল বটে তারা, কিন্তু প্রথম পাতায় না। কবিতা বলে দাবি করি এমন কিছু লেখার অভ্যাস ছিল বলেই হয়তো ওই ব্লগটাতে অনাবশ্যক দীর্ঘ বাক্য ব্যবহার করেছিলাম। প্রাঞ্জলতা হারিয়েছিল লেখাটা, সচলয়াতনের মডারেটররা খুব উদরতা দেখিয়েই ছেপেছিলেন বোধ হয়। লেখালেখি আমার কর্ম না – মেনে নিয়ে নীরব পাঠক হয়ে গেলাম।

সচলায়তন আর সামহোয়ার ইন আমার ব্রাউজারের দুটো ট্যাবে সবসময় খোলা থাকত, নতুন লেখা এলেই গোগ্রাসে গিলতাম। এই দুই ব্লগের কাহিনী বুঝতে বেশিদিন দেরীও করতে হয়নি। নিতান্তই অর্বাচীনের ব্যক্তিগত মতামত হিসেবে যদি নেন তবে এই দুই ব্লগের সম্পর্কে আমার মূল্যায়ন বলি। সামহোয়ার ইনের গালাগালি আর বেহুদা পোস্ট দেখে বমনের ইচ্ছাকেই যে বিবমিষা বলে মনে পড়ে গেল। মোহ ভাঙলো, সামহোয়ার ইনকে বিদায় দিলাম আমার প্রিয় সাইটগুলোর তালিকা থেকে। বুকমার্ক লিস্টে অবশ্য দূটো বুকমার্ক এখনো রয়ে গেছে সামহোয়ার ইনের, প্রায়ই ঢুঁ মারি ওই লিংক দুটোতে। দুটো লিংক-ই আমার দু’ বন্ধুর ব্লগের, ওদের লেখা পড়তে ভালো লাগে। এখন বাকি রইলো সচলায়তন, সচলায়তনের পরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং বিদগ্ধ লেখকরা আমাকে মুগ্ধ করে রেখেছিলেন অনেক দিন। তারপর একদিন আবিষ্কার করলাম তাদের সদস্য নিবন্ধনের নীতিমালা ও বাস্তবতার মাঝে পার্থক্যটুকু। ব্লগ পুলিশিং-এর সময় নীতিমালার দোহাই, তারপর পরিচিত অজুহাতে নীতির নামে দুর্নীতি আমাকে ব্যথিত করেছিল (তারেক ভাই মাইন্ড খায়েন না, আমি আপনারে অন্তত এরকম করতে দেখি নাই, আপনার লেখার একজন ভক্ত আমি)। একদিন একজন প্রোবেশনারী পিরিয়ড ব্লগারের কেন তাকে সদস্য করা হলো না শীর্ষক ব্লগে কিছু মন্তব্য দেখে সিদ্ধান্ত নিলাম, আর না। ও বাড়ি যাওয়া বন্ধ করে দিলাম আমি। বুকমার্ক লিস্টে অবশ্য বন্ধুবরের ব্লগের ঠিকানাটি ঠিকই রয়ে গেছে, মাঝে মাঝেই গিয়ে দেখে আসি কি লিখল ও।

বাংলা ব্লগ নিয়ে আমার আলতো কোমল অনুভূতি যখন হতাশায় রুপ নিয়েছে তখন ফেসবুকে ঘুরতে ঘুরতে পেয়ে গেলাম ক্যাডেট কলেজ ব্লগের পুরনো ওয়ার্ড প্রেসের ঠিকানাটা। মাউসের ক্লিকে ও বাড়ির সদর দরজায় পৌঁছে দেখি বিজ্ঞপ্তি ঝুলানো, ক্যাডেট কলেজ ব্লগ তার স্থায়ী ঠিকানায় চলে গিয়েছে, অনুগ্রহপূর্বক যেন নতুন ঠিকানায় তার খোঁজ নেই। আমার ক্যাডেট কলেজ ব্লগে পদার্পণ হলো এভাবেই। বিমুগ্ধ উচ্ছাসে পড়তে শুরু করলাম লেখাগুলো, রাত পেরিয়ে ভোর হয়েছে কখন টের পাই নি। সিসিবির সবগুলো পোস্ট পড়ার পর ভাবলাম সবাইকে জানান দিয়ে যাই আমার ভালোলাগার কথা। লিখে ফেললাম সিসিবিতে আমার প্রথম ব্লগ পোস্ট । এরপর দেখি নিজের ভেতরেই তড়পানি লেখার জন্য। নেমে গেল আরো কতগুলো পোস্ট। পরিচয় হলো কত নতুন আপু, বড়ভাই, বন্ধু, ছোট ভাইয়ের সাথে। অনেকের সাথে দেখা হলো বহুদিন পর।

আপনারা হয়তো একমত হবেন, বাংলা যে কোন ব্লগ সাইটের চেয়ে সিসিবি আলাদা। লেখক ও পাঠকদের আন্তরিকতা, আবেগ, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ক্যাডেট কলেজীয় সংস্কৃতি – সব মিলিয়ে এক অনন্য পরিবেশ এখানে। কারো নাম বলতে চাই না, কারণ সীমিত স্মৃতির আমি সবগুলো নাম কোনভাবেই মনে করতে পারব না। চমৎকার কিছু মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে এখানে। দেখা হয়নি তাদের সাথে কখনো, হয়তো হয়েছে ক্ষণিকের জন্য। কিন্তু ব্লগে চেনাজানাটা কম হয়নি। তাদের অনুপস্থিতিতে ব্লগে কেমন একটা শূণ্যতার অনুভূতি বোধ হয় তারই প্রমাণ। সিসিবি তাই আমার ব্রাউজারের হোম পেজ।

জয়তু সিসিবি। জয়তু ক্যাডেট কলেজ। জয়তু ক্যাডেট কলেজীয় কমরেডশিপ।

৯,৫৬৫ বার দেখা হয়েছে

৯০ টি মন্তব্য : “আচার০০৬ : বাংলা ব্লগোস্ফিয়ার”

  1. ক্যাডেট কলেজীয় কমরেডশিপ কি এইটাই যে একেকজনের মনের কথাও এরকম মিলে যাবে! উপরের প্রত্যেকটা কথাই যেন আমার নিজের না বলা কথা মনে হচ্ছিলো :boss:

    তৌফিক, এইভাবে চমৎকার গুছিয়ে লেখার ক্ষমতাটার জন্য তোমাদের কয়েকজনকে যে কী পরিমাণ হিংসা করি সেটাও লেখার ক্ষমতাটাও নাই :((

    বাংলা যে কোন ব্লগ সাইটের চেয়ে সিসিবি আলাদা

    সিসিবি কে :salute:
    লেখাটার জন্য তৌফিককেও সমসাময়িক ধারা বজায় রেখে :salute:

    জবাব দিন
  2. মুসতাকীম (২০০২-২০০৮)
    জয়তু সিসিবি। জয়তু ক্যাডেট কলেজ। জয়তু ক্যাডেট কলেজীয় কমরেডশিপ।

    সিসিবি এবং ক্যাডেট কলেজকে :salute: :salute: :salute:


    "আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"

    জবাব দিন
  3. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    পোলাপাইন গুলার কোন একটা সমস্যা হইতেছে মনে হয়, দুই দিন ধইরা কোন পোষ্ট নাই, সবতি মনে লয় ইলেকশনে খাড়াইব, সব দল তো নতুন মুখ খুজতাছে শুনছি। B-)

    তুমি লিখলা, মনটা জুড়াই গেল। 😀

    সামহোয়ারে ডুকিনা, ওইটা আমার জায়গা না। আর সচলের কথা কি কমু :)পাব্লিক মাইন্ড খাইতে পারে। তয় ব্লগ চিনছি সচল দিয়া, কি একটা ঝামেলায় বিডিনিউজ সচল নিয়া নিউজ করছিল, তখন ঢু মারছিলাম। এর আগে ব্লগ বলতে বুঝতাম আমির খান আর অমিতাভের ঝগড়া করার টেকি সিষ্টেম।

    সিসিবির খোজ পাইছি আমার ব্লগ থেইকা। আমার ব্লগে প্রায়ই ডুকি, ওদের আবার মডারেশন বইলা কিছু নাই, তয় উলটা পালটা কেউ কিছু কইলে গাইলা ভুত ছাড়ায় দেয়। ধর্ম নিয়া কোন পোষ্ট দিলেই হইছে, ভার্চুয়াল লাথি, মাইর দিয়া ব্লগ থাইক্যা বাইর কইরা দিব। মডারেটর কিছু কয় না। ওই আমার ব্লগের তলে এক কোনায় দেখি, ক্যাডেট কলেজ ব্লগের লিংক, আইয়া পড়লাম নিজের বাড়ি।

    ইতিহাসটা কেমন কও তো, ফাটাফাটি না। 😀


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন
    • তৌফিক

      তোমার নামে ভাই সাল উল্লেখ ছিল না। প্রোফাইলটা দেখে আসলাম, একটু ধাক্কাও খেলাম। আমার একটা খুব ভালো বন্ধু ছিল যার ক্যাডেট নাম আর তোমার নাম একই।

      মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

      মোড় ঘোরানো ঘটনা আর কি, আমার ৭ বছরের পার্বতীরে বিবাহ করা। :shy:

      জবাব দিন
  4. তাইফুর (৯২-৯৮)
    জয়তু সিসিবি। জয়তু ক্যাডেট কলেজ। জয়তু ক্যাডেট কলেজীয় কমরেডশিপ।

    তৌফিক, সাব্বাশ ... :clap:


    পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
    মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥

    জবাব দিন
  5. সিসিবি তাই আমার ব্রাউজারের হোম পেজ।

    আমারো।
    সারাদিন ওপেন কইরা রাখি। 😛

    মাঝে মাঝে মাসফু বাসায় আড্ডা দিতে আসে। বাসায় ঢুকার সাথে সাথে ওর প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, নতুন কি কি কমেন্ট আসছে ভাইয়া?
    বুঝি , এ রোগে শুধু আমি একাই আক্রান্ত না। রোগীর সংখ্যা
    দিন দিন বাড়তেছে। 😀 😀

    জবাব দিন
  6. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    তৌফিক মামা,জটিল লিখছেন বস!আপনের শিরোনাম "স্বাগতম পর্যন্ত পইড়া ফালাইছি" এর সাথে আকর্ণ বিস্তৃত হাসি দেওয়া ইমোটিকন দেইখা আমি নিজেও ওইভাবে হাইসা দিছিলাম-অফ হয়া থাকা মুড ভালা হয়া গেছিল 😀

    জবাব দিন
  7. সায়েদ (১৯৯২-১৯৯৮)

    গত জুলাই মাসের কোন এক রাত প্রায় ২টার দিকে সিরাজ (১৯৯৪-২০০০) ডিউটি অফিসারের দায়িত্ব পালন করতে এসে আমাকে সিসিবি'র খবর দেয়। সেখান থেকেই আমার ব্লগের সাথে পরিচয়। তারপর একে একে 'সামহোয়্যার ইন' আর 'সচলায়তন'। কিন্তু ওই দুই জায়গাতেই মনে হয়েছে ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই। তৌফিকের তৃতীয় প্যারার সাথে দারুণভাবে সহমত।

    ভালোবাসা জমে গেছে 'ক্যাডেট কলেজ ব্লগে'। টানা বসে থাকা সম্ভব হয় না বটে, তবে সারাদিনে আলাদা করে প্রায় ঘন্টা আট দশেক ঠিকই আমার সিসিবি'তে চলে যায়। সিসিবি'র সবার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা।

    ...বাংলা যে কোন ব্লগ সাইটের চেয়ে সিসিবি আলাদা। লেখক ও পাঠকদের আন্তরিকতা, আবেগ, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ক্যাডেট কলেজীয় সংস্কৃতি - সব মিলিয়ে এক অনন্য পরিবেশ এখানে। ....চমৎকার কিছু মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে এখানে। দেখা হয়নি তাদের সাথে কখনো, হয়তো হয়েছে ক্ষণিকের জন্য। কিন্তু ব্লগে চেনাজানাটা কম হয়নি। তাদের অনুপস্থিতিতে ব্লগে কেমন একটা শূণ্যতার অনুভূতি বোধ হয় তারই প্রমাণ।....জয়তু সিসিবি। জয়তু ক্যাডেট কলেজ। জয়তু ক্যাডেট কলেজীয় কমরেডশিপ।

    অসম্ভবরকম ভালোলাগায় মনটা ছেয়ে গেল।

    :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute:


    Life is Mad.

    জবাব দিন
  8. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    আড্ডা তো দেহি বালাই জমছে। কয়দিন আগে কার পোস্টে জানি মনে নাই, যাইয়া দেহি আমারে লইয়া পুলাপাইন গুল্লি মারতাছে। একটা আরেকটারে জিগায় মোরগটারে (মুরগী কয় নাই তো?) কই পাইলি? কেউ কেউ কামরুলের দিকে আঙ্গুল দেখায়। এই সব। তহনই ভাবছিলাম আমার কাহানিটা একদিন কমুনে। ঘুরতে ঘুরতে আজকা দেহি এইহানেই সুযুগ আইছে।

    মনে অয়, বছর দেড়েক আগে বরিশাইল্লা (বিসিসি) শওকত হোসেন মাসুম (পরথম আলুর বিজিনেছ ইডিটর) আমারে সামহোয়ারের খবর দিছিল। দুই-তিনডা নিকে ওইখানে এহনো মাঝে-মইধ্যে ব্লগাই। কিন্তুক বালা পাই না। "ক্যাডেট নম্বর ৯৯৯" নিকে ওইহানে কলেজের নানা ঘটনা লইয়া স্মৃতিচারণ কইরতে আছিলাম। ওইহানে একদিন পা দিছিল জিহাদ। বইল্ল 'ক্যাডেট কলেজ ব্লগে'র কথা। তারপর থাইক্যা তো এইহানে আসি-যাই। এর মইধ্যে কামরুল আমারে মেইল কইরা আবার 'খুঁচায়' সিসিবিতে আয়েন না ক্যান। যেন একটা বুড়া মোরগ ওর খুব দরকার। তো কি করি? অহন তো নিয়মিতই। একদিন এইহানে ঢু না মারলে মনে অয় পেডে বুট বুট করতাছে। পুলাপাইনের মন্তব্য পইড়া হাসি, পিরা যাই, স্মৃতিকাতর অই। সুময় সুময় মন্তব্য করতে যাইয়া আবার নিজেরে সামলাই। মনেরে বলি, থাউগ্যা হাটুর বয়সি পুলাপাইন মজা করতাছে অর মইধ্যে তোর আঙ্গুল দেওনের দরকার কি!!

    বালাই লাগতাছে।


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  9. একদিন এইহানে ঢু না মারলে মনে অয় পেডে বুট বুট করতাছে। পুলাপাইনের মন্তব্য পইড়া হাসি, পিরা যাই, স্মৃতিকাতর অই। সুময় সুময় মন্তব্য করতে যাইয়া আবার নিজেরে সামলাই। মনেরে বলি, থাউগ্যা হাটুর বয়সি পুলাপাইন মজা করতাছে অর মইধ্যে তোর আঙ্গুল দেওনের দরকার কি!!

    লাভলু ভাইয়ের এই কমেন্ট পড়লে কে বলবে ভাইয়া এই ব্লগের সবচেয়ে মুরুব্বী মানুষ। 😉
    এতো পুরা যৌবনের ভাষা। 😉 😉

    কে বলে আপনার বয়স হইছে। ক্যাডেটদের বয়স কখনো বাড়ে না। ক্যাডেটরা সারাজীবন ১২-১৮ বছরেরই থাকে। 😉

    অফ টপিকঃ ভাইয়া, আপনার রেডিও স্টেশনের কিছু গল্প বলেন। কেমন লাগছে রেডিও স্টেশন সামলাতে, পত্রিকার সাথে এটার দায়িত্বের ধরন কতটা আলাদা। সব, সব শুন্তে চাই। 😀

    জবাব দিন
  10. মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

    তৌফিক ভাই স্মৃতিকাতর করে দিলেন। সামহোয়ারইনের সাথে আমার, লিংকন আর জিহাদের পরিচয় বেশ আগে থেকেই ছিলো। কিন্তু কেউই সেখানে খুব একটা জুত পেতাম না। রাগিব হাসানের লেখার লিংক ধরে একদিন সচলায়তনের খবর পেয়ে গেলাম। সবই আইইউটি-র চার মাসের ছুটির কাহিনী। আমি আর লিংকন পুরো তিন মাসই আইইউটি-তে ছিলাম। অলস সময়গুলো এগুলো করেই কেটেছিলো।
    আইইউটি খোলার পোলার মহিবের তুখোড় ব্লগিং এ আমরা সবাই উৎসাহ পেলাম। সচলায়তনে চারজনের জায়গা হয়ে গেলো। কিন্তু ক্যাডেট কলেজ নিয়ে লিখে কোথাওই জুত পেতাম না। অনেক কিছু বুঝিয়ে বলার পরও অনেকে ভুল বুঝতো।

    আমরা তখনই ক্যাডেটদের একটা আলাদা ব্লগের স্বপ্ন দেখেছিলাম। গত বছরের ৮ই ডিসেম্বর তৈরী করা সিসিবি-র প্রথম রূপটা নিচের লিংক থেকে দেখতে পারবেন।
    Blog for all: MECA Wiki
    লিংকন, জিহাদ, সামিয়া, তুহিন আর আমি; নিজেরাই লিখে নিজেদের ব্লগে কমেন্টাইতাম। তখন কল্পনাও কিরিনি সিসিবি এই পর্যায়ে আসবে।

    কোন সন্দেহ নেই, সিসিবি একেবারে অন্যরকম। আমাদের আন্তরিকতাই এর মূল কারণ। কারও নাম দেখার সাথে সাথে আমরা তুই, তুমি বা আপনি বলা শুরু করতে পারি। এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কি আছে! জয়তু সিসিবি।

    জবাব দিন
  11. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    স্বপ্ন দেখলে বড় দেখা উচিৎ- কিন্তু আমার মনে হয় 'রায়হান, জিহাদ, সামিয়া, তুহিন,মুহাম্মদ...' ওরাও ভাবে নি সিসিবি আজ এই পর্যায়ে আসবে। কলেজ থেকে বের হবার পর স্মৃতিগুলোয় সময়ের যে ধুলো পড়ছিল তা আজ ওদের কারনে আবার টাটকা হয়ে উঠেছে...অবশ্য সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দীর্ঘশ্বাসও...কলেজ জীবনটাকে খুব মিস করছি...আহা!!!

    সিসিবির টেকিদের থ্যাঙ্কস দিয়েও ওদের ঋণ পরিশোধ সম্ভব না...তারপরও বলি ধন্যবাদ এবং অবশ্যই :salute:


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
  12. রায়হান আবীর (৯৯-০৫)

    দারুন গোছানো একটা লেখা ভাইজান...

    আমার কাহিনীতো মুহাম্মদ বলেই দিসে। আমরা সাইটটা শুরু করার পরও এইটা এতদূর আসতো না। মাঝে মাঝেই কেমন যেন চিমসে যেতো। তারপর হঠাৎ হঠাৎ কেউ এসে আবার জমিয়ে দিতো। কয়েকজনের কথা বলি...

    ** জিহাদ। মেকার ওই সাইট থেকে ওয়ার্ডপ্রেসে সিসিবিকে নিয়ে গিয়েছিল ঐ। এইটা খুবি দরকার ছিল। কারণ মেকার ওই সাইটটাতে আসলে ঠিক ব্লগিং হতো না...
    ** হাসনাইন, ইশতিয়াক
    ** কামরুল তপু। এককালে তিনি অনেক অনেক পোস্ট দিতেন। দীর্ঘ সময় সিসিবিকে চাংগা করে রেখেছিলেন।
    ** মাসরুফ ভাই। সিসিবিতে অনেক মানুষ এসেছেন, কয়েকদিন ফাটায়ে স্মৃতিচারণ করে তারা চুপসে গেছেন। কিন্তু মাসরুফ ভাই সেইআমল থেকে এখন পর্যন্ত একই উৎসাহে টগবগ করছেন... সিসিবিকে ঝিমিয়ে পড়া থেকে রক্ষা করেছেন।
    ** আলম ভাই
    ** ফুয়াদ। ফুয়াদের কথা মনে আছে। ফুয়াদের স্টার্টিং ডে তে আমাদের সিসিবি সেই আমলে সবচেয়ে বেশী হিট পেয়েছিল একদিনে...
    ** শফিভাই, তারেক ভাই। তারেক ভাইয়ের উৎসাহটা আমাদের খুব দরকার ছিল। কারণ উনি অনেকদিন বিভিন্ন বাংলা ব্লগের সাথে পরিচিত। বাংলা ব্লগজগতের পরিচিত নাম।

    ** আর কারও নাম ভুলে বাদ পরে যেতে পারে।

    ** এইগুলো প্রথমদিককার কথা। এখন আর এভাবে আলাদা করা যাবে না। এখন কত মানুষ সিসিবিতে বিশাল পরিমান ভালোবাসা দিয়ে আঁকড়ে ধরে রেখেছেন। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে কামরুল ভাই, ফোজিয়ান ভাইয়ের সাথের পরিচিত। কামরুল ভাই সত্যিকার অর্থেই সারাদিন সিসিবিতে থাকেন, এমনকি ঘুমের সময় সিসিবির কথা ভাবেন। ফোজিয়ান ভাইয়ের ক্ষেত্রেও একই কথা...

    সিসিবির এই অগ্রযাত্রার সম্পূর্ন কৃতিত্ত্ব তাই এর পাঠক ও লেখকদের। আপনাদের :salute: :salute:

    জবাব দিন
  13. তারেক (৯৪ - ০০)

    তৌফিক,
    না রে ভাই, আমি মাইন্ড খাই না সহজে, আগেও বলছি, আমার স্টমাকে প্রবলেম হয়। 🙂 ( এই লাইনটা ফয়েজ ভাইয়ের জন্যেও। )
    সচলায়তন নিয়ে এরকম অভিযোগ শুনেছি বেশ কবার। ঠিকাছে। আসলে, একটা ফুল-প্রুফ মডারেটেড সাইট কখনোই সবার মন জুগিয়ে চলতে পারে না, নানান জটিলতা সামনে চলে আসে। সচলায়তন নিজের পরিচয়ও ব্লগ হিসেবে দেয় না, বলে, অনলাইন রাইটার্স ফোরাম, এ কারণেই সদস্যভুক্তি নিয়ে এত সাবধানতা।
    আর যদি জিজ্ঞেস করো, কেন এই মডারেশন, তাহলে এর পেছনের বিরাট ইতিহাস টানতে হবে। নানা রকম তিক্ত অভিজ্ঞতা পার করে সচলায়তনের জন্ম। এর পেছনে যারা কাজ করছে, তারা সবাই কাজ করতে করতেই শিখছে। অনেক ভুলভ্রান্তি হয়, হয়ে যায়, ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়।
    তোমার ( এবং আরও কারও কারও) ওখানকার অভিজ্ঞতা ভাল না শুনে একটু খারাপ লাগলো, হয়তো তোমার অথবা সচলেরই দুর্ভাগ্য, অথবা হয়তো এটাই ভালো হলো। তবে, এখানেরই কারও কারও কিন্তু সচলেও বেশ সমাদর, আমি এই পোস্টের মন্তব্যগুলোর শেষ মাথায় পৌঁছতে পৌঁছতে ভেবেছি, নিশ্চয়ই ওদের কারও কোন একটা বক্তব্য পাবো এখানে। পেলাম না দেখেও খানিকটা খারাপ লাগলো।
    যাকগে, এইসব নিয়ে আর কথা না বাড়াই। এই পোস্টের সকল ভালবাসা সিসিবি-র উদ্দেশ্যে নিবেদিত, আমিও দ্বিধাহীন চিত্তে সেখানেই শামিল হই।
    জয়তু সিসিবি। :clap:


    www.tareqnurulhasan.com

    জবাব দিন
    • জিহাদ (৯৯-০৫)

      আমি ব্যক্তিগত ভাবে আইলসা টাইপের একজন মানুষ। সচলে আমরা যারা আছি তাদের মতামত না থাকায় তারেক ভাইয়ের খারাপ লাগবে এইটা জানলে হয়তো আরো আগেই আইলসামি ঝেড়ে কমেন্ট করতাম।যাইহোক, ব্যক্তিগত ভাবে আমার সচল চারণ অভিজ্ঞতা খুবই মধুর। রেজিস্ট্রেশন পিরিয়ড থেকে শুরু করে এখন অবধি। রেজিস্ট্রেশন এর সময় সচলের কিছু নিয়ম নীতি মেনে চলতে হয় এটা ঠিক। সেটা একটা ক্লোজড কমিউনিটি হিসেবে থাকাই স্বাভাবিক। যার ভাল্লাগবে সেটা মেনে থাকার চেষ্টা করবে, না হৈলে নাই। সিম্পল লাইক দ্যাট। তবে এই কড়াকড়ির বিনিময়ে ব্লগিংএর যে সুন্দর পরিবেশ পাওয়া যায় তার বিনিময়ে এতটুকু বোধহয় মেনে নেয়াই যায়। কাজেই যদি আমার কথা বলি তাহলে বলবো সচলে ব্যক্তিগতভাবে আমাকে কোন খারাপ অভিজ্ঞতা ফেস করতে হয়নাই। বরং এমন কিছু মানুষের সংস্পর্শে এসেছি‍‍ যাদের কোনদিন না দেখার পরও কখনো দুরের মানুষ ভাবতে পারিনা।

      তবে আমার ক্ষেত্রে না হলেও আমার মনে হয়েছে (এটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত মতামত) কিছু কিছু সদস্য সচলের ক্ষেত্রে অনাবশ্যক বেশি টাইম আবার কিছু কিছু সদস্য সচলের ক্ষেত্রে সচলের নির্দিষ্ট ক্রাইটেরিয়া ফুলফিল করার চে অন্য কিছু প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। এই জিনিসটা ব্যক্তিগত ভাবে মাঝে মাঝে আমার খুব খারাপ লাগসে। তবে একটা জিনিস, সেটা যাই হোক না কেন, ভাল মন্দ মিলিয়েই হয়। সব মিলিয়েই বলি,আই সিম্পলি লাভ সচলায়তন। ওখানে ব্লগিং করার সুযোগ না পেলে আমার হয়তো কোন দিনই ব্লগিং করা হতোনা সেভাবে। সাম ইনে ছিলাম। বাট সেখানকার পরিবেশ আমার কোন কালেই ভাল্লাগেনি।শুধু সাম ইনে থাকলে আমি নিশ্চিত কয়েকদিন পরেই ব্লগিং বানানটাও একসময় ভুলে যেতাম। কাজেই আমার মত একটা মানুষ, যে কীনা কোন নির্দিষ্ট একটা কাজে কখনো বেশিদিন টানা লেগে থাকতে পারেনা ,এখনো যে টুকটাক হাবিজাবি ব্লগিং করছে তার সিংহভাগ অবদানের জন্য আমি সচলের কথাই আগে স্মরণ করবো।


      সাতেও নাই, পাঁচেও নাই

      জবাব দিন
      • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

        জিহাদ, তোমার কথা খুব ভালো লাগল। আমি ব্যক্তিগত ভাবে তোমরা যারা ক্যাডেট এবং সচলকে জমিয়ে রাখছ তাদের জন্য গর্ববোধ করি।

        তবে সচলকে ব্লগ সাইট আমি বলতে চাই না। In Fact সচল নিজেকেও মনে হয় ব্লগ সাইট বলে না। এ ক্ষেত্রে তারেকে কথাটাই সচল বলে, "অনলাইন রাইটার্স ফোরাম"।

        এনি ওয়ে, সচল সবথেকে পরিচ্ছন্ন সাইট।


        পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

        জবাব দিন
      • তৌফিক

        জিহাদ,

        সচলে তোমার স্বপ্নই মনে হয় ইনজুরড হইছে, নিক বললাম না, ইংগিত দিলাম। আমারমতামতে মাইন্ড খায়ো না, চাষাভুষা ধরনের মানুষ। যা মনে আসে কয়া ফেলি। চালায়া যাও, সচলই মূলধারা। আমরা থাকবো আমাদের মতো।

        ভালো থেকো।

        জবাব দিন
        • জিহাদ (৯৯-০৫)

          ভাই আপনে একটু বেশি সৌজন্যতা দেখান। জুনিয়রের লগে এত সৌজন্যতা দেখাইলে পাবলিক কিন্তু আবার অন্য কিছু ভাইবা বসতে পারে। 😛
          আমি আসলে সি সি বি তে অন্য কোন ব্লগ নিয়ে আলোচনায় উৎসাহী ছিলাম না তেমন একটা। আমার মনে হয় আমাদের সবারই তাই করা উচিত। কিন্তু কথা প্রসংগে যখন চলেই এলো তাই নিজের কথাটা এই ফাঁকে বলে দিলাম। কোন কিছু অন্য কারো ভাল নাই লাগতে পারে । তাই বলে নিজের ভালবাসাটুকু প্রকাশে ক্ষতি তো নেই 🙂

          এই হৈলো ঘটনা। সো মাইন্ড করাকরির কিছু নাই।


          সাতেও নাই, পাঁচেও নাই

          জবাব দিন
    • তৌফিক

      তারেক ভাই,

      সচল বাংলা ব্লগ সাইটগুলার মধ্যে সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন, লেখাগুলো খুবই মান সম্পন্ন। সচলকে এই কৃতিত্ব না দিয়ে উপায় নেই। এবং এতোগুলো ক্যাডেট সেইখানে ব্লগিং করে, এইটাতো আমাদের জন্য অনেক গর্বের একটা ব্যাপার। ঠিক কি কি কারণে আমি সচলে যাওয়া বন্ধ করেছি তা এখানে বলতে চাই না। তবে আপনার আপত্তি না থাকলে একদিন সময় করে হয়তো একটা ইমেইল পাঠিয়ে দিতে পারি। সচলের মডারেটর হিসাবে আপনি হয়তো ওই দিকগুলোতে (অবশ্যই যদি সংগত ও যুক্তিযুক্ত হয়) নজর দিতে পারবেন।

      আপনি আমার ব্লগে এতো বড় মন্তব্য করছেন দেখে খুব ভালো লাগছে। নিজেকে মনে হইতাছে একজন সত্যিকারের ব্লগার। 😛

      ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

      জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।