সংবিধিবদ্ধ সতর্কিকরন – প্রায় কাল্পনিক।
——————————————-
আগের গল্প ——-
একজন অসুস্থ মানুষ
ও, আমি এবং আমরা ……
যেদিন আমার মৃত্যু হলো ……………
বলতে চাই … তোমাকেই চাই
তুমি আজ ভালোবাসোনি ………
—————————————————————-
সকাল থেকেই পিসির সামনে বসে আছি, পিসির এডিটরে খোলা একটা কোড আর আমার মাথার মধ্যে খোলা কয়েক হাজার রকমের চিন্তার ফাইল। কেন এই কোডটা নিয়ে আজ কাজ করছি জানিনা, হয়ত নিজেকে কিছু একটার মধ্যে ব্যস্ত রাখার জন্যে মনে হয়। কিন্তু মাথা থেকে কাজলের চিন্তা ঝেড়ে ফেলতে পারছিনা। আজ কাজলের বিয়ে।
ভি পি এন দিয়ে অফিস নেটওয়ার্কে ঢুকে নতুন লেখা কোডটা আপলোড করে দিলাম, এখন প্রোগ্রামটা আরেকটু ফাস্ট চলার কথা। ডিসকানেক্ট হতে না হতেই আমার কলিগ এবং বন্ধু, আমিন ফোন দিলো,
— আজকে তুই এই কোড নিয়ে কাজ করবি কল্পনা করতে পারিনি।
আমিন আমার আর কাজলের কথা জানে, এও জানে আজ কাজলের বিয়ে। তাই একটু আক্রমনাত্বকভাবেই প্রশ্ন করলাম,
— কেন কি হইছে ??
— আজকে শুক্রবার দোস্ত, প্রতিদিন কাজ করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। আর তুই ছুটি নিসিস, ছুটিটা যদি বাসায় বসে অফিসের কাজ করে কাটাস, তাইলে লাভ কি হল ??
আরও দুয়েক বার হা হু করে রেখে দেই। সকাল থেকেই কিছু ভালো লাগছেনা। এই ধরনের পরিস্থিতি আমার পাগলামি করতে মনে চায়, ইচ্ছে হয় কাউকে কিছু না বলে একা একা দূরে কোথাও গিয়ে ঘুরে আসতে। কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই এদিক ওদিক চলে যেতে বেশ লাগে। মাঝে মাঝে প্রায়ই কাউকে কিছু না বলে দুদিনের জন্যে কক্সবাজার চলে যেতাম। সারাদিন ধরে ঘুমিয়ে সারারাত বসে বসে সাগরের ঢেউ দেখতাম। জোয়ারের সময়ের ঢেউ দেখতে বেশ লাগে, একটু গভীর সাগরের বিশাল বিশাল ঢেউ পাড়ের ওপর দিয়ে ছুটে আসতে আসতে ক্ষয়ে যেতে থাকে, অবশেষে বালির ওপরে পানির দাগ ছাড়া কিছুই বাকি থাকে না, ঠিক আমাদের গোপন কিছু স্বপ্নের মতন। তখন ইচ্ছে করতো, মাঝ সমুদ্রে দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি, বুকের ওপর আছড়ে পড়ুক ঢেউ। সাতার ভালো জানিনা দেখে আর সাহস করতাম না, অবশ্য জোয়ার আর ভাটার সাগরে সাতার জানলেও, মনে হয়না, তেমন একটা লাভ আছে।
কাজল এই পথটাও বন্ধ করে দিয়েছে আমার জন্যে, গতকালই ফোন দিয়েছিলো। হুমকি দিয়েছে, আমি যেনো কোনো পাগলামির কথা চিন্তাও না করি, এবং যদি আজ তিনটার মধ্যে অনুষ্ঠানে না পৌছাই, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমার মুখ দেখবে না। আসলেই, শুধু ক্যাডেটদের অনুভুতিই চড়া – এটা খুবই ভুল একটা কথা।
ভেজানো দরজা ঠেলে আমার ছোট মামি ঢুকতেই চিন্তার ট্রেন থামিয়ে ওনার দিকে তাকালাম। জানতে চাইলেন কি করছি। অফিসের কাজ করছি জানাতেই এমন ভাবে আমার দিকে তাকালেন যেন পাগল হয়ে গিয়েছি। এই লোকজনদের কি হয়েছে ? ছুটিতে আছি বলে একটু কাজ করা কি মহাপাপ নাকি ? আজ সকালে এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গিয়েছে। এই বৃষ্টির সাথে মানুষের আবেগের মনে হয় কোনো পরকীয়া সম্পর্ক আছে, কোনো কারন ছাড়াই এই সময় মন খারাপ হয়ে যেতে পারে বা ভালোও হয়ে যেতে পারে। যদি ছুটির দিনে বৃষ্টি হয়, আমি বারান্দাতে আমার ইজি চেয়ারটা টেনে আধ শোয়া হয়ে বারান্দার গ্রীলের মধ্যে দিয়ে পা বের করে দেই। বৃষ্টির ছাঁট পায়ে এসে পড়লে অদ্ভুত লাগে। তবে মাঝরাত বা ভোররাতের দিকে বৃষ্টি হওয়াটা খুব বোরিং। জানালার ফাঁক দিয়ে চুরি করে আসা ঠান্ডা বাতাসে কাঁথা মুড়ি দিয়ে মনটা আরও উষ্ণতা ভিক্ষা করতে থাকে। আজ রাতেও যদি বৃষ্টি হয়, কাজল তাহলে খুব রোমান্টিক একটা বাসর রাত পাবে। নাহ …… এই চিন্তা করতে এখন ইচ্ছে করছে না। মাথা থেকে চিন্তাগুলো ঝেড়ে ফেলে দিয়ে, ঘড়ির দিকে তাকাতেই টের পেলাম জুম্মার নামাজ ধরতে গেলে আমার প্রস্তুতি নেয়া শুরু করা উচিত।
—————————-
নামাজ শেষ করে এসে দেখি প্রায় দেরি হয়ে গিয়েছে। তাড়াহুড়ো করে ড্রেস পালটে গাড়ীতে চেপে বসলাম। বিশ মিনিটের মতন সময় লাগবে, আশা করি কাজলের বেঁধে দেয়া ডেডলাইনের আগেই পৌছে যাব। চোখ বন্ধ করে কাজলের কথা ভাবি, আজ মেরুন রঙের শাড়ী পরবে ও। কল্পনাতে ওকে দেখে হাত বাড়িয়ে ছুয়ে দেখতে ইচ্ছে করে। এই পর্যন্ত যতগুলো বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছি, কেন জানি, সবগুলোতেই বিয়ের সাজে কনেদের একই রকম লেগেছে আমার কাছে। নুপুর আর রশিদের বিয়ের সময় তিথীকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, বিয়ের সময় মেয়েদের এত সাজগোজ করে নিজের আসল চেহারা লুকানোর কি দরকার। সে আমার কথার সম্পুর্ন আলাদা মানে করে ঝাড়ি দেয়া শুরু করলো, তারপরে যখন অতিকষ্টে বোঝাতে পারলাম আমি আসলে কি বোঝাতে চেয়েছি, যেনো একটা বাচ্চা ছেলেকে বোঝাচ্ছে, এমন ভাবে জ্ঞান দেয়া শুরু করল, বিয়ে মানুষ একবারই করে। সে জন্যে এই বিয়ের দিন যত বেস্ট সম্ভব নিজেকে সাজায় … ইত্যাদি … ইত্যাদি। জ্ঞান দেবার সুযোগ পেলে কেউই হাতছাড়া করতে চায় না।
————————————————————————————————————————-
বর এসেছে, বর এসেছে – ছড়িয়ে পড়তেই বিয়েবাড়ীতে, অবশ্য বিয়েবাড়ী বললে ভুল হবে, কম্যুনিটি সেন্টারে হই হই রই রই পড়ে গেলো। সাধারনত আড়াইটার সময় বর আসার কথা থাকলে, বর এসে পৌছায় সাড়ে তিনটার সময়। কেউ ভাবতে পারেনি সোয়া দুইটার মধ্যেই বর চলে আসবে। তাই গেট ধরে কেউ অপেক্ষা করে নেই। বর ভদ্রলোক ফুলে সাজানো গাড়ী থেকে নেমেই গেটের দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করলেন, বরের স্টেজটা কোন ফ্লোরে জানি সাজানো হয়েছে? দারোয়ান বেচারী প্রশ্ন শুনে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো, তার ক্যারিয়ারে কোনো বরকে মনে হয় এমন প্রশ্ন করতে শোনেনি। কোনোরকমে বললো, স্যার, এইদিকে। দাড়োয়ানের পিছু পিছু হন হন করে বর হাঁটা দিতেই, ইতিমধ্যে জড়ো হয়ে যাওয়া কনে পক্ষের কিছু দর্শকের মধ্য থেকে মন্তব্য ভেসে আসলো, এহহহ …… ছেলের তর আর সইছে না। হাসির কলরোলের মধ্যে বরের কাজিন এবং তার বউ হাসতে হাসতে এসে বরের দুপাশে দাঁড়িয়ে দুহাত চেপে ধরে বললো, এত তাড়ার কিছু নেই ভাই, আস্তে আস্তে যাও, নইলে লোকে খারাপ বলবে। বেচারী মুখ পাঁচ বানিয়ে ধীরে ধীরে পা ফেলে সিড়িঘরের দিকে এগোল। তাড়াহুড়ো করে কনের ছোট বোন তার কিছু বান্ধবী নিয়ে সিড়ির গোড়াতে ফিতে ধরেছে। মিষ্টিমুখ করিয়ে বরের হাতে শরবত দিতেই বর একঢোক খেয়ে একটু করুন মুখ করে বললেন, এখনই পুরোটা খেয়ে ফেলতে হবে ? টেনশনে আছি, একটু আস্তে আস্তে খাই? মেয়েগুলো খিল খিল শব্দে হেসে দিলো, একজন বললো, টেনশনের কি আছে দুলাভাই ? আপু তো চলেই এসেছে। কনের ছোট বোন তাকে থামিয়ে দিয়ে বললো, এই দাড়া, এখন বিজনেস …… দুলাভাই পঞ্চাশ হাজার টাকা। বরপক্ষ থেকে আওয়াজ এলো, কিসের পঞ্চাশ হাজার ……… এই পাঁচশো টাকা দিয়ে দাও তো। ঠিক যেনো অতীতের মাছের বাজারের দরাদরি। বর সবাইকে থামিয়ে দিয়ে কবিত্ব করার চেষ্টা করলেন,
শ্যালিকাবানু, ওগো শ্যালিকাবানু,
কেনো প্রেম ভালোবাসার মধ্যে অর্থের বিষবাষ্প ?
নিঃস্ব আমি,
জানোই তো তুমি,
তোমার বোনটি ছাড়া কোনো সম্পদ নেই আমার।
চারদিকের হাসির মাঝেও কপট রাগ দেখিয়ে কনের বোন জিজ্ঞেস করলো,
— আমার বোন বুঝি আপনার বাড়ীর শুধুই সম্পদ ?
— আবার জিগস ……
মুখে দুষ্টূ হাসি মেখে শ্যালিকার দিকে চোখ টিপ দিয়ে শ্যালিকার থুতনী নেড়ে দিয়ে আবার বললেন,
— তবে তুমি আমার বাড়ীর সৌন্দর্য্য …… তুমি তো জানোই, তোমাকে আমি বেশি ভালোবাসি ……
শালীর বান্ধবীরা মুখে ওড়না বা আঁচল চাপা দিয়ে হাসা শুরু করলো। শালী বেচারী লজ্জায় বেগুনী হয়ে গিয়েছে, তা দেখে বর নিষ্পাপ মুখ বানিয়ে অনুমতি চাইলেন, আমি কি ওপরে যেতে পারি ?
— শুকনা কথায় চিড়া ভিজবেনা দুলাভাই, আপনাকে কিছু ছেড়েই যেতে হবে।
— জাফর !!! তুমি ??!!
বর মনে হলো আকাশ থেকে পড়ে রীতিমতন বেদনার্ত।
— তুমি না বলসিলে, স্পেশাল গিফট পেলে গেটমোহর প্রার্থিদের সামাল দিবা, এখন তুমিই চাইছো ……… ?
মুহুর্তেই বরকে ছেড়ে কনেপক্ষের সব মনোযোগ জাফরের ওপরে পড়লো,
— জাফর নামের সবগুলা আসলেই মীরজাফর ……
— আরে কিয়ের স্পেশাল গিফট …… চাপাবাজী করতেসে ……
বর আবার সমঝোতার চেষ্টা করলেন,
— সবার জন্যেই স্পেশাল গিফট হবে আস্তে ধীরে, ইনশাল্লাহ ……… তবে অনুষ্ঠানের সন্মানার্থে আপাতত তোমাদের জন্যে কিছু মোহর ……
এক টাকার কয়েন ভর্তি মাঝারী সাইজের দুটো থলি ধরিয়ে দেয়া হলো কনেপক্ষকে। শ্যালিকাবৃন্দ বরের হাত ধরে বরের মঞ্চে নিয়ে গেলো ………
—————————————————————————————————————————–
বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোতে, আমি খেয়াল করেছি, সবচেয়ে বেশী বোর হয়, মনে হয়, যাদের বিয়ে হচ্ছে তারা। নিজেদের সদ্য ধরা পড়া দূর্লভ প্রজাতির প্রাণীর মতন মনে হবার কথা, যাদের ধরা পড়ার খবর পেয়ে সবাই দেখতে এসেছে। পার্থক্য শুধু টিকিট কেটে ঢোকার বদলে সবাই গিফট নিয়ে ঢুকছে, তারপরে খাওয়া দাওয়া করে দর্শনীয় প্রানী দর্শন করে সবাই চলে যাচ্ছে। সবাইকে খেতে দেখে আমারও ক্ষুধা পেয়ে গিয়েছে, কিন্তু হাসি হাসি মুখ বানিয়ে চুপচাপ বসে আছি আমি এবং আরও কয়েকজন, কাজলদের সাথে খাবো আমরা। কিছুক্ষনের মধ্যে কাজলকে নিয়ে কিছু মুরুব্বী ক্যাটাগরির মহিলা এলেন, বর কনেকে এখন খাওয়া দাওয়া করতে হবে। ওকে দেখে আমি হাঁ হয়ে গেলাম, আমার এই পর্যন্ত দেখা যে কোনো মেয়েকে এখন ওর তুলনায় এখন পেত্নী বলে মনে হচ্ছে। আমাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে ও আমার দিকে তাকিয়ে খুব উজ্জ্বল একটা হাসি দিলো। আচ্ছা, মেয়েটা কি জানে, ওর এই হাসিটা আমাকে কী রকম টর্চার করছে ?
খাওয়া দাওয়া শেষ হতেই শুরু হলো ছবি তোলার পালা, সবাই নতুন দম্পতির সাথে ছবি তুলবে। আমি ওর ডানপাশে একটু কাছ ঘেষে দাঁড়িয়ে মেক আপ, পারফিউম আর হেয়ার স্প্রের গন্ধ ভেদ করে ওর চুলের আসল গন্ধটা নেবার চেষ্টা করলাম, এই গন্ধটা আমাকে প্রায় মাতাল বানিয়ে ফেলত। ও আমার দিকে তাকিয়ে একটা বিষন্ন হাসি দিলো। আমি জানতে চাইলাম, কিরে তোর জামাই পছন্দ হচ্ছে না এখন ?? ও কিছু না বলে আবার সেই বিষন্ন হাসিটা হাসলো। হঠাৎ করে আমার মনটাও খারাপ হয়ে যেতে থাকে ……….
—————————————————————————————————————————–
ব্যাপক কান্নাকাটির মধ্যে মেয়ে বিদায় করছে কনেপক্ষ। বর বেচারী মহা অপরাধ করছে, এই রকম একটা ভাব নিয়ে বিষন্ন মুখে এক দিকে দাঁড়িয়ে আছে। বরের দিকের এক মুরুব্বি এই কান্নাকাটির পার্ট ছোট করতে বর কনেকে ঠেলেঠুলে বাইরে এনে ফেললেন। বর-কনে দুজন গাড়ীতে উঠে রাস্তার পাশে জমা হয়ে থাকা বন্ধু-বান্ধবদের ব্যাপক আনন্দধ্বনির মধ্যে দিয়ে যাত্রা শুরু করলো ……………
—————————————————————————————————————————–
চাকুরী পাবার পরে নতুন বাসা নিয়েছিলাম, যেনো নিজের একটা রুম হয়, যেনো দরজা বন্ধ করে দিয়ে ইচ্ছে মতন যা খুশী তাই করতে পারি। একটা বয়েস হয়ে গেলে সবারই একান্ত নিজের কিছু সময় দরকার হয়, যে সময়টুকুতে নিজের একান্ত সুখ, দুঃখ, আশা-আকাংখা, অ্যাম্বিশনগুলোকে জাবর কাটা যায়। ছয় বছর ক্যাডেট কলেজে কাটানোর পরে ঢাকাতে বাসা থাকা সত্ত্বেও প্রায় পাঁচ বছর হলে কাটিয়েছি। তাই তেমন কোনো চেষ্টা ছাড়াই অ্যাটাচড বাথ সহ বড়সড় একটা রুম পেয়েছি। অবশ্য আমি চাকুরী পাবার পর থেকেই আম্মু আমাকে বিয়ে করানোর জন্যে উঠে পড়ে লেগেছেন – সেটাও একটা কারন হতে পারে। আজ বাসাতে অনেক লোক। ফিজিক্যালি, মেন্টালি এবং ইমোশনালি, আমার ওপর দিয়ে প্রচুর ধকল গিয়েছে আজ। তাই এইমাত্র লম্বা একটা শাওয়ার নিয়ে উঠলাম। ড্রেস পালটে আমার অনেক পুরোনো জিন্স আর নীল একটা পাঞ্জাবী পড়ে আয়নাতে নিজের ছায়ার দিকে তাকিয়ে আকাশ পাতাল চিন্তা ভাবনা করছি। হঠাৎ মনে হলো, কাজল এখন কি করছে ? আমার হাসি পেলো, আজ ওর বাসর রাত, রাত্রি পৌনে বারোটার মতন বাজে — ও কি করতে পারে এই সময় ……… বাথরুমের দরজার মধ্যে ধাপ করে একটা শব্দ শুনে চমকে যাই। আশ্চর্য্য ……… আমার নিজের রুম, আমার নিজের রুমের বাথরুম — লোকজন কি একটু শান্তিতে বাথরুমেও থাকতে দেবে না? দরজা খুলে বের হয়ে দেখি যা ভেবেছি তাই,
— তুই তো দেখি বাথরুমে মেয়েদের চাইতেও বেশী সময় নিস, আমি তো আরেকটু হলেই অন্য কিছু ভাবা শুরু করসিলাম।
হাসি এবং প্রায় সমান সমান কঠিন একটা উত্তর গলায় চেপে ধরে ওর দিকে তাকালাম। একেবারে একটু আগে যা চিন্তা করছিলাম, কাজল প্রায় আধা হাত লম্বা একটা ঘোমটা টেনে পুরাতন আমলের বাংলা সিনেমার নববঁধুদের মতন জুবুথুবু হয়ে বসে আছে। তবে ঘোমটা ভেদ করে আসা শয়তানি চাপা হাসিটার জন্য বা একটু আগে করা কমেন্টটার জন্যে অথবা আমার পায়ের কাছে পড়ে থাকা ফুলের তোড়া, যেটা কিনা সে একটু আগেই বাথরুমের দরজাতে ছুড়ে মেরেছে, সেটার জন্যেই হোক, ওকে আমার মোটেও ইনোসেন্ট মনে হচ্ছে না। ওকে জিজ্ঞেস করলাম,
— তোর সখীরা তাহলে গেসে?
ও চুপচাপ বসে থাকে। আমার কিছুটা নার্ভাস লাগতে থাকে ……… আশ্চর্য্য …… এই গত প্রায় ছয় বছরে কখনোই ওর সামনে বাকরুদ্ধ অবস্থা হয়নি। আচ্ছা …… আমি যদি এখন দৌড়ে পালিয়ে যাই, স্টেজে উঠে কবিতা বলার সময় ভুলে গেলে বাচ্চারা যেমন পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে? …… ভাবতেই হাসি পেলো, আসলেই হাস্যকর চিন্তা ……… আমি আবার চেষ্টা করি,
— পুরা সিনেমার নায়িকাদের মতন বসে আছিস ………
কিছুনা বলে ঘোমটার মধ্যে থেকেই ভেংচি কাটলো ও,
— হিন্দি সিনেমা হলে, বাই দিস টাইম, তোর গান শুরু করার কথা ………… আর ইংলিশ সিনেমা হলে ……… হেঁ হেঁ হেঁ হেঁ ………
শয়তানি হাসি দেবার চেষ্টা করি, ও রাগ দেখিয়ে বলে,
— লালায়িত হাসি হাসবিনা ………
এইবার সত্যি সত্যি হেসে ফেললাম, ওর কাছে গিয়ে ঘোমটা সরিয়ে দেই, ওর কাছে গিয়ে আবার চুলের ঘ্রান নেবার চেষ্টা করতেই আবার সেই মেক আপ আর হেয়ার স্প্রের গন্ধ,
— তুই শাওয়ার নিয়ে চেঞ্জ করে ফ্রেস হয়ে আয়, তারপর কথা বলবো ……… আজ আসলেই অনেক ধকল গেসে ………
ও কিছু কাপড় গুছিয়ে নিয়ে ভেতরে যেতেই আমি ড্রয়ার থেকে আমাদের ডায়েরী তিনটা বের করলাম। ও খুব যত্ন করে এগুলোর ওপরে সুন্দর মলাট লাগিয়েছে। প্রথম ডায়েরীটা হাতে নিয়ে খুলতেই দেড় বছর আগের কথা মনে পড়ে গেলো —–
হতবিহ্বল অবস্থা কাটিয়ে ডায়েরীটা হাতে নিয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে থাকি। কি করবো বুঝে উঠতে পারছিনা ……… কাজলকে ফোন দিলাম, ফোন ধরে ও চুপ হয়ে আছে। শুধু বললাম, আমি আগের জায়গাতেই অপেক্ষা করছি, ইচ্ছে হলে আসিস, আমি অপেক্ষা করে থাকবো। বলেই কেটে দিলাম। অনেক কিছু, অনেক স্বপ্ন পাবোনা বা সফল হবেনা জেনেও কামনা করি বা লালন করি, সেটাই যখন হাতের মুঠোর দুরত্বে চলে আসে, হাত বাড়িয়ে দিতে কেনো সংকোচ লাগে ? কেনো নিজেকে অযোগ্য মনে হয় ?
দুপুরের পরে ছাত্র কল্যান অফিসটা প্রায় ফাঁকা থাকে। আমরা দুজন অফিসের পাশে ঘাসের ওপরে বসলাম, কাজল আমার দিকে পিঠ ঘুরিয়ে বসে আছে।
— তোর লেখাগুলো পড়লাম ………
— লজ্জা করেনা অন্যের ডায়রী পড়তে ………
আমার দিকে না তাকিয়েই তীব্র গলায় জবাব দিলো ও।
— দেখ, আমি খুব সিরিয়াসলি তোর সাথে কথা বলতে চাচ্ছি ………
— তোর যা বলার তুই আগেই বলে দিয়েসিস, আর কি বলবি ………
— দেখ ……… এইটা খুব আনফেয়ার …… আমি কিভাবে বুঝবো ……
বিদ্যুৎবেগে সে আমার দিকে ফিরলো,
— কিভাবে বুঝবি মানে? তুই গল্প-উপন্যাস পড়ে পড়ে মানুষের না বলা, না লেখা কথা বোঝার চেষ্টা করিস, সেটা নিয়ে গলা ফাটায়া তর্ক করিস লোকজনের সাথে। তোর সামনে যারা থাকে
তাদের কখনো বোঝার চেষ্টা করসিস? ……………
বাঁধভাঙ্গা পানির মতন ও বলে যেতে থাকে। আসলেই, গত কয়েক বছরে ভ্যালেন্টাইন্স ডে বা আমার জন্মদিনে ওর চকলেট আনতে বা যখনি আমার মন খারাপ থাকে, কল দিয়ে বা এসএমএস করে আমার খোঁজ নিতে বা আমার মন ভালো করে দিতে ওর ভুল হয়নি। নিজেকে আমার খুব স্বার্থপর মনে হচ্ছে …… পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি, আমি মানসিকভাবে ওর ওপরে কতটুকু নির্ভরশীল।
— ……… যায়, কিন্তু নিজের সাথে প্রতারনা করা যায়না, এইসব লম্বা লম্বা কথা বলে তুই নিজের সময়ে কি করতেসিস? আমার জন্যে কে যোগ্য আর কে অযোগ্য সেইটা তোকে বুঝতে কে বলসে? ……………
আমি চুপ করে ওর কথা শুনতে থাকি, ও বলে যাক, ওর মন হালকা করুক। ভবিষ্যতকে ভয় পেয়ে আসলে কোনো লাভ নেই, কিছু বিশ্বস্ত বন্ধু থাকলে, ভবিষ্যত যে রুপেই আসুক না কেন, তখন দেখে নেয়া যাবে।
আমাকে বকা দিতে দিতে মনে হয় ও ক্লান্ত হয়ে গিয়েছে। কিছুক্ষন হলো চুপ করে চোখের কোনে জমে ওঠা পানি মুছছে, আমিও মুগ্ধ হয়ে ওকে দেখছি ……
রাগলে মনে হয় আসলেই মেয়েদের অন্যরকম সুন্দর লাগে,
— তো এই তোর জরুরী কথা ……
এখনো রেগে আছে আমার ওপরে। উঠে দাঁড়িয়ে ঘুরে হাটা শুরু করতেই আমি হাত ধরে টেনে আমার পাশে বসিয়ে দেই,
— হাত ছাড় আমার, এখন আর ধরা লাগবে না ……
— কিন্তু আমার যে এখন আর ছাড়তে ইচ্ছে করছে না ……
——-
জোর করে নিজেকে বাস্তবতায় ফিরিয়ে নিয়ে আসি। সেদিন ওর কাছ থেকে ডায়েরীটা ধার নিয়েছিলাম। ওর লেখার পর থেকে আমি লিখেছি, তারপর ও আবার লিখেছে, তারপরে আবার আমি। এই ডায়েরী তিনটাতে আমরা আমাদের ভালোবাসা, স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা, কামনা, মনের ভেতরে অন্ধকার গলিতে জমিয়ে রাখা আমদের অনেক গোপন কথা – যেগুলো আমরা ভুলে যেতে চাই, সব শেয়ার করেছি। আসলে সবকিছু মুখে ঠিক প্রকাশ করা যায়না, তাই আমরা লিখতাম ……
ও বাথরুম থেকে বের হয়ে আসে, সেই কবিতার আসরে ও যে ড্রেসটা পরেছিলো, সেটাই পরেছে। বিয়ের শাড়ি কিনতে যাবার সময়ই, রিকশাতে দুজন মিলে ঠিক করেছিলাম বিয়ের সবকিছু ও প্ল্যান করবে, বাসরের সবকিছু আমি। মিষ্টি করে হেসে জানতে চাইলো, আর কি কি প্ল্যান আছে আপনার ? জানালার পাশে রাখা গোলাপ ফুলের টবগুলো দেখিয়ে বললাম,
— আমরা ফুল ফোঁটা দেখতে পারি, তবে ফুল ফুটবে ভোরবেলাতে …… ততক্ষন আমরা গান শুনতে পারি, আমি আমার পছন্দের কিছু গান দিয়ে এই ডিভিডিটা বার্ন করেসি। আজকে জোছনা থাকলে, জোছনা পোহাতে পারতাম। তবে অল্টারনেট হিসেবে আমরা বৃষ্টি দেখতে পারি …………
বাইরে তুমুল বৃষ্টি হচ্ছে। আমি জানতাম, ও বৃষ্টিতে ভেজার অফার ফেলবে না। ও ল্যাপ্টপটাতে ডিভিডি দিয়ে গান ছাড়তে ছাড়তে আমি বারান্দাতে ইজিচেয়ারটা নিয়ে গেলাম। আধা শোয়া হয়ে বসতে বসতেই প্রায় অর্ধেক ভিজে গিয়েছি, ও আমার কাঁধে মাথা রেখে বসেছে। হঠাৎ বিকট শব্দে বাজ পড়তেই কাজল চমকে গিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। প্রায় সাথে সাথেই আরো একটা বিস্ফোরনের আওয়াজের পরে কারেন্ট চলে গেলো, মনে হয় আমাদের লাইনের কোনো ট্রান্সফর্মার জ্বলে গিয়েছে। চারিদিকে অন্ধকার, শুধু জানালা দিয়ে ল্যাপ্টপের আলো আর বৃষ্টির আওয়াজ ছাপিয়ে সেলিন ডিয়নের “বিকজ ইউ লাভড মি” গানটার হাল্কা শব্দ ভেসে আসছে। ওর চুল থেকে সেই মাতাল করা গন্ধটা ভেসে আসছে। আমি চোখ বন্ধ করে সাগরের কথা চিন্তা করি, সাগরের গর্জনের সাথে বৃষ্টির একঘেয়ে আওয়াজের কোনো তুলনা হয়া না, তারপরেও ভাবতে ইচ্ছে করে, এই সময় সাগরের পাশে থাকলে কি করতাম …… ও হাল্কা গলায় জিজ্ঞেস করলো, কি ভাবছিস এত ? আমার হাসি পায়, আসলেই কি এত ভাবছি আমি ……… আমার সাগরে ডুবে যাবার শখ …… এই মেয়েটাই আমার জন্যে একটা সাগর হতে পারে, আমি এখানেই ডুবে যেতে পারি।
——————————————————————
আমার কথা ::::: সবাইকে ধন্যবাদ আমার গল্পগুলো পড়ার জন্যে। সমালোচনা মাথায় আসলে লিখে দেবেন। বহুদিন হয় বাংলা লেখা তো দূরে থাক, বাংলা বইও পড়িনি। তাই সিরিজটাকে বিভিন্ন টাইমলাইনে এবং ছোট ছোট টাইমস্প্যানে লিখতে হয়েছে। ভবিষ্যতে ভালো লেখার চেষ্টা করব। আবারও ধন্যবাদ।
🙂
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
প্রথমে একটু পড়ে বেশ মেজাজ খারাপ হয়েছিল ধুস এটা কি হচ্ছে, কাজল অন্য কাউকে বিয়ে করল আবার সেই বিয়েতে অয়ন কে দাওয়াত দিয়ে না গেলে এরকম হুমকী দেওয়ার কি অর্থ। পরে পড়তে পড়তে বুঝলাম লেখক খুব সুন্দর একটা টুইস্ট দিতে চাইছে। আশ্চর্য ভালো লাগতে থাকল। শেষ পর্যন্ত তার রেশ রইল। শেষের কিছুদূর পড়ার সময় কখন যেন দেখি চোখটা বড্ড বেশি ঝাপসা লাগছে।
যাও কথা ফিরায়ে নিলাম ভালো বন্ধু থেকে আরো অনেক দূর সর্ম্পকটা এগিয়ে যায়।
শুভ কামনা।
ধন্যবাদ সামি ভাই ......... 😀 😀
মাঝখান পর্যন্ত আইসা ভাবছিলাম তোরে কোপাই, সারাক্ষণ আমাদের পিরারে থ্রেট দিয়া নিজেই এই কাহিনী x-( কিন্তু একটু পরেই....
সিরিজটা মন খারাপ করে দিলো। লেখা পিড়া না দোস্ত, এই গান্ধা লাইফটা কেন এই দুর্দান্ত প্রায় 'কল্পিত গল্পটার' হইলোনা এইটা ভাইবা 🙁
দারুন লিখিস তুই, এইটা বার বার আর কমুনা চিন্তা করতাছি :hug:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
থ্যাংকু দোস্ত 😀 😀 😀 😀
প্রকাশঙ্গি অসাধারণ, গুরু তো আগেই মানতাম, আজ থেকে প্রকাশ্যে। :boss: :boss:
লাইনগুলো চুরি করলাম অনুমতি ছাড়াই। প্রকাশভঙ্গি অপূর্ব। কিছু লেখা পাঠককে গল্পের ভেতরে ঢুকিয়ে ফেলে, এটা সেরকম। :thumbup: :thumbup:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
অনেক ধন্যবাদ রকিব .........
:hatsoff: :hatsoff:
:hatsoff:
অসাধারণ।
আগেই কইছিলাম এই গল্পের নায়ক হইতে মঞ্চাইতাছিল। লেখা একটু পড়েই বুঝতে পারছিলাম টুইস্টটা তাই মজা করে পড়তে পারছি।
ধন্যবাদ তপু ......... তোমাকে পরের গল্পের নায়ক বানায়া দিবো, খালি একটু হিন্টস দাও তোমার নায়িকাগুলা কিরাম ???
নায়িকার কি ছুটু ভাই লাগবো, তাইলে আমারে সেট কইরা দিয়েন। 😀 😀
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
সেই সাথে আমি আর নায়িকার ছুটু ভইনের(স্কলাস্টিকায় পড়া,অতি সুন্দরী এবং হট)সাথে আমার একটা "ইয়ে" টাইপ সিন রাখা যায়না? :shy: :shy:
ছরি,আমার নিজের কথা দুইবার হয়া গেছে।দুইটা সিন রাইখেন তাইলে :shy:
লেখাটা ভাল্লাগছে। তয় আমার নামটা নায়কের বন্ধুর হওয়াতে ভাল্লাগলো না। 😀 😀
লেখাটা কিছুটা আমার কাছে মনে হয়েছে অতি নাটকীয়তায় ভুগেছে। তারপরেও মিলনাত্মক যে কোন কিছুই সবসময় পড়তে ভালো লাগে।
ধন্যবাদ আমিন। কোথায় কোথায় অতি নাটকিয়তা হয়েছে ??
ইয়ে মানে বস মাইন্ড না নিলে বলি,
বিয়ের আসর থেকে হুট করে মেয়ের চলে আসাটা অত নাটকীয় মনে হয়েছে আমার কাছে। আরেকটা ব্যাপর হলো গল্পের নায়কের এতটা ঠান্ডা আর নিস্তরঙ্গ আচরণ কিছুটা রহস্যময় ঠেকেছে। এর ব্যাখ্যাগুলো নিজের মত করে করে নেয়া যায় তারপরেও গল্পটা কিছুটা টিপিক্যাল হয়ে তার অসাধারণত্ব হারিয়েছে বলে আমার মনে হয়েছে। গল্পের গঠন লেখনী শৈলী অসাধারণ বলেই এই কথাটুকু বললাম , গল্পটি আরো অসাধারণ হতে পারত।
পুরা মন্তব্য আমার নিজস্ব মতামত। আমি নিজে বাস্তব জীবন ঘনিষ্ঠ সাধারণ কাহিনীর ফুটিয়ের তোলার মাঝে গল্পের অসাধারণত্ব খুঁজি বলেই হয়তো আমার এমন মনে হয়েছে।
সর্বনাশ !!!!!!!!!!!!!!!!!!!
=)) =)) =)) =)) =)) =))
যদি আমি ভুল না করে থাকি, তাহলে ধরে নেয়া যায় তুমি এখনো বিয়ে করনি ...... আসলে বিয়ের মূল ব্যাপারটা সাধারনত খাওয়া দাওয়া শুরু হবার আগে, বা আমার ক্ষেত্রে যেটা হয়েছিলো, হলুদের সময়েই হয়ে যায়। আসলে আমি বিয়েটা যে অয়ন আর কাজলের মধ্যেই হচ্ছে ব্যাপারটা ঢেকে রাখতে চাইছিলাম, তবে শেষে রিকন্সিলিশনটা মনে হয় একটু অস্পষ্ট থেকে গিয়েছে। আমি অবশ্য লাইন রেখেছিলাম একটা -----
গল্পগুলো ছাড়াছাড়া হবার জন্যে মনে হয় নায়ককে বেশী ঠান্ডা মনে হয়েছে। পরের বার ভালো লেখার চেষ্টা করবো।
অনেক ধন্যবাদ তোমার রিভিউ এর জন্য।
সরি বস। অয়ন আর কাজলের বিয়ের ব্যাপারটা আসছিলো মাথায় সবসময়। কিন্তু এই লাইন গুলায় হঠাৎ কনফিউসড হয়ে গেছি। হতে পারে সেটা অমনোযোগী পাঠের কারণে। এখন ঠিক আছে। তবে গল্পের দ্ব্যর্থকতা তৈরি যদি এই লাইন গুলার উদ্দেশ্য হয় তবে আমি বলবো......অসাধারণ
:salute:
অনেক ধন্যবাদ আমিন 🙂 🙂 🙂
অনুমতি ছাড়াই চুরি করলাম। অসাধারন ১টা লাইন। সকাল থেকে খালি পড়তেই আছি, পড়তেই আছি। ১০-১৫ বার মনে হয় আমি একাই পড়েছি।
এই পর্বটা সবচেয়ে জ্জোস হয়েছে।
অনেক ধন্যবাদ জাহিদ ... 🙂 🙂 🙂
আমিও "ঐখানে"ডুব দিপো :(( :((
অসাধারণ, বহুদিন পরে একটা সুন্দর গল্প পড়লাম। তোর বাচ্চা কেমন আছে?
ধন্যবাদ দোস্ত ......... আমার মেয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছে ......
:salute:
চলো বহুদুর.........
মইনুল ভাই, অসাধারণ গল্পো। আপনার আগের গল্পো গুলো পড়িনি। তবে আর দেরি না করে এখনই শুরু করছি।
কথাটা মনে ধরেছে.........।। :boss: চমৎকার টেকনিক.........।।
অনেক ধন্যবাদ মেহেদী .........
প্রত্যেকবারই বলি তাও আবার বললাম ভাল লাগসে :hatsoff:
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
অনেক ধন্যবাদ রাশেদ ......
কি আশ্চর্য! এই গল্পটা আমি খুব মন দিয়ে পড়তাম, আমার খুব খুব ভাল্লাগে, হয়ত কাহিনীটার জন্য একটু বেশি ভাল লাগে।
শেষটাতে বিবেক অনুপস্থিত কেন? বিবেক অংশটা ভাল ছিল। কাজলের দুম করে চলে আসাটা একটু পরে বুঝেছি। ছেলেটা নিঃসন্দেহে বিশাল সাইজের গাধা। গল্প পড়তে পড়তে আমিই বুঝে গেলাম কাজল কাকে পছন্দ করে :-B , ছেলেটা এতদিন বুঝে নাই কেন? গরু একটা।
সব মিলায় ভাল্লাগছে খুব। :guitar:
অনেক ধন্যবাদ সামিয়া ......... ছেলেটা আসলেই গাধা 🙂 🙂 🙂
সামিয়াপ্পু,প্রেমে পড়লে মেয়েরা হয় চালাক আর ছেলেরা হয় গাধা।এইটা যুগ যুগ ধরে চলে আসতেছে।বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলতেসি :shy: :shy:
😀 😀 :khekz: :khekz:
:just: সহমত
মাস্ফুর বাস্তব অভিজ্ঞতা দেখি মাশ-আল্লাহ খারাপ না।
একটা লিষ্ট করি ফেল তো। গাইড টাইপ আরকি। 😉
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
মাস্রুফের সাথে কঠিন ভাবে একমত ...... আমার সময় প্রথমে আমিও ভাবছিলাম আমি এই প্রবাদ ভুল প্রমান করতে যাচ্ছি, পরে শেষে আইসা টের পাইলাম (দীর্ঘশ্বাস).........
অফ টপিক ---- দীর্ঘশ্বাসের কোনো ইমো আছে ???
আগের পর্বগুলো পড়া হয় নাই মনে হচ্ছে। শেষ কইরা তারপর মন্তব্য করমু।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
দারুন হইছে মইনুল ভাই।
একটু দেরি হইছে ঘটনাটা ধরতে। সে ক্ষেত্রে আপনি সার্থক বলে মনে হচ্ছে।
অনেক ধন্যবাদ সাব্বির ...... 🙂 🙂
পেচগী ভালই লাগাইছো মাশা-আল্লাহ। মাথা ঘুড়ে। তয় তুমি পেচগী মারবা এইটা ভাইবাই পড়তে বসছিলাম বইল্লা যখনি তুমি কইছ
তখনি সব ফকফক্কা হই গেছে। এরপর মজা কইরা খুজতেছিলাম আর কই কই পেচগী দিতে পার। শেষটা তো ধরবার পারছি 😀
যাউজ্ঞা, ভাল লিখছো, দাগায় গেলাম, কিপ ইট আপ ব্রো :thumbup:
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
বস পেচগী কই দিলাম ...... আমি তো খালি বিয়ের অনুষ্ঠানের বর্ননাটা একটু আলাদা পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে লিখছি 😀 😀 😀 😀
সবগুলি একসাথে পিডিএফ করে রাখছি।
একসঙ্গে পড়ে তারপর জানিয়ে যাবো।
তার আগে আপনার কাছে আরো গল্পের দাবি জানিয়ে গেলাম।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
অনেক ধন্যবাদ কামরুল ......
মইনুল ভাই, খুব খুব ভালো লাগল এই সিরিজটা।
বেশ কিছু নাটকীয়তা, সাথে পাঠকের বিভ্রান্তি- সব মিলিয়ে চমৎকার।
আপনার কাছ থেকে আরও অনেকগুলা লেখার দাবি আমরা তো করতেই পারি। 🙂 🙂
প্লট দাও তাহলে ......... লিখে দিচ্ছি ......
আপনার তো ভাইয়া প্লটের অভাব হওয়ার কথা না! 😀
কেন ???????? 😮 😮 😮 😮 😮 😮 😮
আমি তো ভাই তোমার মতন রুপে গুনে অতুলনীয় না ......... তোমারই না লাখ লাখ প্লট থাকার কথা ...... নাকি ধার দিতে চাইছো না ...... ??
ইয়া আল্লাহ! এইটা কি বললেন মইনুল ভাই??? 😮 😮 😮
কলেজে তো আমারে এত টিজ করতেন না! 🙁
যাই হোক, প্রতিবেশিনী নিয়া একটা প্লট মাথায় ঘুরতেছে। লিখতে না পারলে আপনাকে অবশ্যই আপনাকে জানায়ে দিব। 😛 😛
তানভীর কলেজে থাকতে রূপবতী ছিলি নাকি! ;;) ;;) ঝানতামনাতো ;;;
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
নাউজুবিল্লাহ মিন জালেক!!!
আমার মান-সম্মান আজ হুমকির সম্মুখীন। 🙁 🙁
এতো টিজ ???!!!! কলেজে থাকতে তোমারে কখনো টিজ করছি ???
তা অবশ্য করেন নাই। 😛
আপনি ছিলেন খুব ভালো সিনিয়র। 😀
ইয়ে মানে...এখনও যে ভালো নাই, তা কিন্তু বলি নাই। 😛 😛
রবিনের কি অবস্থা ???? খাড়া হইতে পারছে ??? শুনলাম বিছনা থেকেই উঠতে পারতেছে না ......
পড়তে পড়তে বুঝলাম লেখক একটা পেচগী দিতে চাইছে। পেচগী খুব চমৎকার হইসে।
অসাধারণ লেখনী। ভালো লাগলো :clap:
অনেক ধন্যবাদ এহসান ভাই ... 🙂 🙂
খুবই ভাল হইছে ভাইয়া :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
ধন্যবাদ আবদুল্লাহ ...... 🙂 🙂
আগেই পড়েছিলাম, কিন্তু ভালো লাগার বিষয়'টা আপনাকে জানানো হয়নি।
চমৎকার লাগলো ভাইয়া। একদম শেষ না করা পর্যন্ত বুঝতেই পারিনি, হ্যাপী এন্ডিং।
পাত্র-পাত্রী'র জন্য কষ্ট হওয়া শুরু হতে দেখি আপনি ভেল্কি দেখালেন। 🙂
এখন লিখেননা কেন? ব্যস্ত সময় যাচ্ছে বুঝি? আবার শুরু করে দেন প্লিজ। 😀
🙂 🙂 🙂 🙂 🙂 🙂 🙂 🙂 🙂
আমার প্রিয় ধারাবাহিকগুলোর একটা। বহুদিন পর আরেকবার পড়ে গেলাম। বড়ই পরিতাপের বিষয় হলো, স্বপ্নচারী ভাইজান বহুতকাল গল্প লেখেন না। 🙁
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..