[পাদটিকাঃ দীর্ঘদিন এই ব্লগে (যথেষ্ট সময় দিতে না পারার কারণে) ইনএ্যাকটিভ মেম্বার হয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ হঠাৎ …অনেক কাজের ভীড়ে সুযোগ করে আসলেও…, লেখালেখি করার মতন সময় নিয়ে আসতে পারতাম না। একই সাথে বেশ কয়েকটি (অফিসিয়াল) দায়িত্ব পড়ে যাওয়ায় এবং বিশেষ একটি কোর্সে স্টুডেন্ট হিসাবে যথেষ্ট চাপে থাকায়ই সিসিবিতে আমার এই অনিয়মিত আসা-যাওয়া।
বঙ্গোপসাগরে দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় আমাদের (বাংলাদেশের) জাহাজ কর্তৃক একটি শ্রীলংকান ফিশিং বোট উদ্ধারের বিষয়ে নিশ্চয়ই এই ব্লগের সবাই জানেন। সেই উদ্ধারকাহিনীর জানা…অজানা…কাল্পনিক…বাস্তব ইত্যাদি মিলানো কিছু গল্প নিয়েই আমার এই লেখা। বিশেষ কারণেই মাঝে মাঝে আমার এই কাহিনীর চরিত্রের নামগুলি অনেক পরিচিত মনে হতে পারে…কারণ, কতজনের আর নাম বদলানো যায় বলুন!!!
সঙ্গত কারণে বেশ কিছু নাম আমি ইচ্ছা করেই পরিবর্তন করেছি…ব্লগের প্রিন্সিপ্যাল ভাইস্যার…ভাইস প্রিন্সিপ্যাল ভাপু… অ্যাডজুট্যান্ট ভাইস্যার… এবং অন্যদের কাছে আমি এ জন্যে হালকা ক্ষমাপ্রার্থী!!! (যদিও আমি আশাবাদী…, তারা আমাকে বিশেষ বিবেচনায় মাফ করে দেবেন…, বিশেষতঃ মাহিন…মানে সকলের ভাতিজা এবং জুনা…মানে সকলের ভাই-এর কারণে এমনিতেই মাফ পাব বলে মনে হয়!!!)
****আমি স্পষ্ট করেই বলতে চাই…আমার এই লেখাটি সম্পূর্ণই বানানো। জীবিত…মৃত…কাল্পনিক কারও সাথে আমার এই লেখা মিলে গেলে সেটার দায়ভার আমার একেবারেই নেই…আছে সিসিবির প্রিন্সিপ্যাল ভাইস্যার… ভাইস প্রিন্সিপ্যাল ভাপু… অ্যাডজুট্যান্ট ভাইস্যার…ইত্যাদিসহ আমার সকল সিনিয়র ভাই/বোনদের…কারণ, বৃক্ষের আবার দায়ভার কিসের???????!!!!!]
ত্রিংকোমালি বন্দর, ২৩ এপ্রিল ২০০৯।
১। পুষ্পকুমারা (সম্পূর্ন নাম জি.চামিলা পুষ্পকুমারা) বেশ খুশী মনে মহাজনের সাতান্ন নম্বর বোটটি পরিস্কার করছে আর গুনগুন করে হাল সময়ের গান গাইছে। গত কয়েকদিন ধরে ওরা মহাজনের এই বোটটি নিয়ে মাছ ধরতে যাচ্ছে না…, ওদের স্কিপার হৃদয়-এর (সম্পূর্ন নাম হৃদয় উইরা প্রগিথকুমারা) এ লেভেল পরীক্ষার আর মাত্র দুইটি বাকী আছে। হৃদয়-এর পরীক্ষাটা শেষ হলেই আবার তারা স্কিপারের নেতৃত্বে বেড়িয়ে পড়বে মাঝ দরিয়ায়। বন্দর এলাকায় বসবাসরত মাঝিদের মধ্যে হৃদয় একটু কমবয়স্ক এবং বেশী মিশুক ধরণের স্কিপার। বাকি চারজন ক্রুদের সাথে তার তেমন মানসিক তফাৎ নেই, যদিও তাদের মাঝে কোন আত্মীয়তা নেই। আরেকটু পরেই নীলন (সম্পূর্ন নাম এ.এইচ নীলন রবীন্দ্র), নিরঞ্জন (সম্পূর্ন নাম আর.এ.ডি নিরঞ্জন মাধুশঙ্খ) এবং সঞ্জীব (সম্পূর্ন নাম কে.টি.এম সঞ্জীব) আসবে… সকলে মিলে আড্ডা দিতে…কার্ড খেলতে এবং দিনশেষে… একটিবারের জন্যে হলেও চেহারা দেখাতে আসবে হৃদয় ।
২। আজ কোনক্রমেই পরীক্ষায় মন বসাতে পারছে না হৃদয়… বারবার বাবার কথাটা মনে পড়ছে। পরীক্ষা দিতে আসার আগে বাবা ওকে কিছুদিনের মধ্যেই অনেক টাকার প্রয়োজন পড়বে বলে জানিয়েছে…ওর বোনের বিয়েতে বেশ কিছু টাকা ধার করতে হয়েছিলো… সেগুলি ফেরত চেয়েছে নাথুরাম কাকা। আবার ওদের মহাজন…কুমুদিনী…যার সাতান্ন নম্বর বোটটির স্কিপার ও নিজে… সে-ও তাকে আগামী ছয়মাসের মধ্যেই ৩,০০০ ইউএস ডলার জমা দেওয়ার কথা জানিয়েছে… মহিলা দেখতে যতই সাদাসিধে হোক না কেন…মেয়ের ভবিষ্যতের ব্যাপারে সে কখনোই ছাড় দেয় না…! ইতিমধ্যেই মহিলা তাকে কয়েকবার ওয়ার্নিং দিয়েছে…৫,০০০ ইউএস ডলার জমা দেওয়ার আগে চাঁদকুমারীর ঠোঁট পর্যন্ত স্পর্শ করা যাবে না!!! ভাগ্যিস, চাঁদকুমারী ওর মায়ের মতোন অত কড়া স্বভাবের হয় নি…হলে খবর ছিল!
৩। কোনমতে পরীক্ষা শেষ করেই বোটের কাছে চলে এলো হৃদয় । কুমুদিনী-র মেয়ের মতোই… কুমুদিনী-র সাতান্ন নম্বর বোটটিরও প্রেমে পড়েছে হৃদয় । খুব বেশী বড় নয় যদিও বোটটি…মাত্র একচল্লিশ ফুট লম্বা। নামটিই হৃদয়কে প্রথম এইটার সাথে বন্ধুত্ব করে দিয়েছিলো… “সূর্যপুত্র” নামটি যেন চাঁদকুমারীর কথা মনে করেই রাখা। এই কারণেই মাঝে মাঝে ওর নিজেকে “সূর্যপুত্র” বলে মনে হয়…যে কিনা চাঁদকুমারীর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে!! অবশ্য, ওই তরফের সম্মতিও কম নয়!!
৪। বোটের কাছে এসে অন্যান্য সাথীদের পেল হৃদয় । তারপর ওদেরকে সব যোগাড় যন্ত্র শেষ করে তৈরী থাকতে বলে দিল…এপ্রিল ২৬ তারিখের সন্ধ্যায় ওরা আবার মাছ ধরতে বেরিয়ে পড়তে চায়…যাতে পরের পূর্ণিমাটায় সকল আশা মিটিয়ে মে মাসের ১২ তারিখের মধ্যেই গতবারের মতন ফিরে আসতে পারে। ওদের গত যাত্রায় সকল খরচপাতি মিটিয়েও জনপ্রতি প্রায় ৮০০/৯০০ ইউএস ডলারের মতন সঞ্চয় ছিলো।
৫। চাঁদকুমারীর আজ মন খারাপ। হৃদয় এখনও পর্যন্ত ওর কাছে আসেনি। তার মানে… ও আবার বোটটির কাছে গিয়েছে। যদিও জানে আপাততঃ কোন বিকল্প নেই…, তবূও চাঁদকুমারী হৃদয় -এর মাছ ধরতে গভীর সমুদ্রে যাওয়াটা একদমই পছন্দ করে না। অনেকবার কথাটা ও হৃদয় কে বলেছেও। কিন্তু হৃদয় কোনমতেই এই কাজ ছাড়তে রাজী হয় না… সমুদ্রে যাওয়াটা না কি ওর রক্তে মিশে গিয়েছে। তাহলে নৌবাহিনীতে যোগ দাও… এই কথা বললে হাসে আর বলে…কেন, আমাকে মেরে কি অন্য কাউকে ভালবাসতে চাস্?? রাগ করে বললে না হয় ঝগড়া করা যায়… কিন্তু হৃদয় যে কখনও রাগই করে না!!! তাই, মন খারাপ করলেও চাঁদকুমারী আপাততঃ বিষয় টি মেনে নিয়েছে। অবশ্য ওদের দুজনেরই স্বপ্ন আছে…, এ লেভেলটা পাশ করে হৃদয় হোটেল ম্যানেজমেন্ট-এ গ্র্যাজুয়েশন করবে…এবং বাড়ির কাছাকাছি একটা হোটেল দেবার ব্যবস্থা করবে। এই গৃহযুদ্ধ শিগগীরই শেষ হয়ে যাবে…, তখন ত্রিংকোমালীর পর্যটন ব্যবসা সরগরম হবে নিশ্চয়ই!
[ক্রমশঃ]
🙂
কি ভাপু, বরাবরের মতই...১ম না কি???
Proud to be an ex-cadet..... once a cadet, always a cadet
চাঁদকুমারী আর সূর্যপুত্রের যুগল ছবি দেখতে মঞ্চায় চায় 😀
আমার যুগোল ছবি দেখতে ইচ্ছা করেনা খালি রাজকুমারিরটা দেখতে ইচ্ছা হয় 🙁
জুলহাস ভাইয়া ওয়েল্কাম ব্যাক B-)
সবই বয়েসের দুষ। x-(
ক্যান মাসরুফ ভাই, আমাগো কি আরেকটা যুগল ছবি দেহার খাউস খাকতে পারে না? এরাম করেন ক্যান?
বুইঝো কিন্তু মিয়া ভাই...শ্রীলঙ্কান...কিন্তু!! 😉 😉
Proud to be an ex-cadet..... once a cadet, always a cadet
ওই মিয়া...দেইখা তুমি তোমার :just: বান্ধবীদের সামাল দিতে পারবা তো!!!!
Proud to be an ex-cadet..... once a cadet, always a cadet
ওয়েল্কাম ব্যাক ভাইয়া 😀
থ্যাংকস্ বাডি...আই ওয়াজ অলওয়েজ দেয়ার। আই উইল নেভার গো ইভেন!!! 😉 😉
Proud to be an ex-cadet..... once a cadet, always a cadet
ওয়েলকাম ব্যাক ভাইয়া।
গল্পটা ভালো লাগছে, পরের পর্ব কবে পাব? :dreamy:
অনেকদিন পর জুলহাস ভাইয়ের দেখা মিলিল!! :clap: :clap:
ভাল হইছে লেখা...এই ভাবে এখন থেকে নিয়মিত চালান। 🙂
লেবার পেইন চলতাছে...এনি টাইম ইট মে কাম...আপনারা বি পজিটিভ রক্ত নিয়া :just: তাড়াতাড়ি রেডী থাকেন!!!
Proud to be an ex-cadet..... once a cadet, always a cadet
এত ভূমিকা দিছস....
যাউগ্গা...আমগোরে ঝুলায়া রাখবি না কইলাম...
বড় ভাইরে তুই কইরা ডাকায় জুনা ভাইয়ের ব্যাঞ্চাই-এ ব্লগে সিনিয়রদের এক্টাইজ্জতাছে এইটা মাথা রাখনের অনুরোধ করা হৈল x-(
এইটা কি কও ম্যাশ পটেটো???? তাইলেতো আমারও ব্যান চাইবা, আমিওতো আমার বড় ভাইরে তুই কইয়া ডাকি 😕
মাস্ফুরে যেখানে পাইবা, পাংগাইবা...
বিলাডি ছ্যাপ মাস্পু উ উ...এক হাতে লং আপ হয়ে পুশ আপ দিতে থাক...মু হা হা হা...
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
জুনা চইলা আইসে :guitar: :goragori:
ব্লাডি জুনা...তোরে দেহি সত্যই লং আপ করানো লাগবো!!!
আইচ্ছা...ইনসাফ্ কি দিহান ভাবীর বাসা থাইক্যা আসছে!!!
আসলে কেউ কি এট্টু জুনার পিছে ওরে লাগাইয়া দিবেন!!!
Proud to be an ex-cadet..... once a cadet, always a cadet
কি ভাই ঈদের দিনে এইখানে কি?
জাহাজে গিয়া যুদ্ধ করেন গিয়া। :grr: :grr: :grr:
ভালা আছেন?
জুলহাস ভাইয়া 😮 লিখা দিসেন???? ডিস্ক্লেমার দেইখ্যা বুঝা যাইতেসে, আপনি লিখা দিলেও নিয়মিত পাঠক 😛
অনেকদিন পর লিখা দিলেন ভাইয়া :hug: পরের পর্ব ভাইয়া তাড়াতাড়ি দিয়ে দেন পিলিস 😀
চেষ্টা করতাছি রে ভাপু!!! :bash:
Proud to be an ex-cadet..... once a cadet, always a cadet
স্বাগতম জুলহাস ভাইয়া, বহুতদিন পরে আসলেন। :teacup: :teacup:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
শুরুরটা ভালো হয়েছে, ড্যাশিং ওপেন যারে কয়
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
আমি কি ওয়াসিমের মতন মোটা হইছি না কি ভাইজান!!! এমুন খোঁটা দিলেন!!!
Proud to be an ex-cadet..... once a cadet, always a cadet
ভাল লাগল ভাই। 🙂
বাস্তবের স্বাদ পেলাম।
সিংহলিজদের নামের কি বাহার... দেখেন ক্রিকেটার চামিন্দা ভাসের পুরো নাম উচচারণ করতে দাঁত ভেঙ্গে যায়। B-)
অফটপিক: ভাই কমু না স্যার কমু বুঝতাছি না, আপনে কি ২০০৫ এ বানৌজা শাপলা তে ছিলেন?
টপিক: লেখাটা পড়ার জন্যে অপেক্ষায় থাকবো। :thumbup:
ফৌজি হইলে লং আপ হয়া থাকো। ন্যাভাল হইলে...বিলাডি তোমার খবর আছে!!!
না, আমি ২০০৫-এ শাপলায় ছিলাম না রে ভাই!!
Proud to be an ex-cadet..... once a cadet, always a cadet
শুরুটা ব্যাপক হইছে... পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
ধারাবাহিক পড়ি না, পলিসি। একেবারে সব নামলে একবারে পড়ি। পলিসি ভেঙে এইটা ক্যান পড়লাম, মাথার চুল ছিঁড়তে ইচ্ছা করতেছে এখন। লোভ লাইগা গেছে, তাড়াতাড়ি শেষ করেন জুলহাস ভাই।