আমি ফার্মগেট ওভারব্রিজের উপরে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকি, প্রখর রোদে। নাগরিক ব্যস্ততা দেখবো বলে, সারিবদ্ধ গাড়ির ধেয়ে চলা দেখবো বলে, ফুটপাতের হকারের সংগে ক্রেতার দরদাম শুনবো বলে।
আমি জিরো পয়েন্টের চক্করে চিত হয়ে শুয়ে থাকি, চোখ বন্ধ করে। আশেপাশে অজস্র গুঞ্জন গুলো ফেনা পাকিয়ে আমাকে অষ্টপৃষ্টে বেধে ফেলে। আমি ব্যস্ততাকে অনুভূব করি।
আমি কর্ণফূলীর মোহনায় বসে থাকি, নদীর আর সমুদ্রের সঙ্গম দেখি, নোঙ্গর করা জাহাজ দেখি, বাদামের ফেরীওয়ালা দেখি। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে, দূরে কাফকো আর সিইউএফএলের বাতি গুলো জ্বলে উঠে একের পর এক, আরাম করে দুটো কাঁকড়া চিবিয়ে ঘরে ফেরার রাস্তা ধরি। শ্রমিকের পরিশ্রান্ত মুখ দেখি, শ্রমিকের পরিশ্রমও দেখি।
ঠিক কি কারনে জানিনা, সিলেটের সাংস্কৃতিক জোট কবি শামসুর রহমানকে সংম্বর্ধনা দিতে গিয়ে ব্যর্থ হলেন। আমরা, মানে রংপুর, মানে রংপুরের সাংস্কৃতিক জোট ঠিক করলো, তাকে সংম্বর্ধনা দেয়া হবে। আমি ঠিক সেই অর্থে “সাংস্কৃতিক কর্মী” টাইপ কিছু ছিলাম না, তবে আমার বড়ভাই ছিলেন। “শব্দকন্ঠ” বলে একটা কবিতা সংগঠন ছিল কারমাইকেল কলেজে, ভাইয়া তার সাংগঠনিক সম্পাদক। কাধে পাটের সুতা দিয়ে বানানো ঝোলা আর এক গাদা কবিতার বই নিয়ে, পাঞ্জাবী কিংবা সাদা শাড়ি পরে রংপুর শহরের মোড়ে মোড়ে কবিতা আউড়ে বেড়ায়, “মহিষের শিঙ্গার ধ্বনি ঐ শোনা যায়” কিংবা “বাকের মুখে কে যাও, লন্ঠনটা বাড়িয়ে দাও” । আমি তখন ক্যাডেট, ছুটিতে বাসায় আসি, ভাইয়ের সংগে যাই, তারা আবৃত্তি করে, আমি সোডিয়ামে নীচে ভুতের মত দাঁড়িয়ে থাকি, আর মনে মনে হাসি “কবিতা দিয়ে দেশ বদলের চিন্তার চেয়ে হাস্যকর আর কিছু হতে পারে না।“ তারা প্রখর রোদে ঘামতে ঘামতে চিৎকার করে আবৃত্তি করে “যে শিক্ষক, বুদ্ধিজীবি, কবি ও কেরানী প্রকাশ্য রাজপথে হত্যার প্রতিশোধ চায় না, আমি তাদের ঘৃনা করি।“ তাদের আবৃত্তি আমাকে মুগ্ধ করে, আমি হাততালি দেই, এর পর বাসায় আসি, কলেজে যাই, এবং ভুলে যাই। তারা মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য করবে কলেজে, প্রচুর বাধা, ছাত্র ধর্মঘট, ডিসি অফিস ঘোরাও, রাস্তা অবরোধ। আমাকে জিজ্ঞাসা করে শব্দকন্ঠের কর্মীরা, “মিছিলে যাবি নাকি”। “যাব যাব”। আমি মিছিলে যাই, গলা ফাটিয়ে চিৎকার করি “শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না।“
তখন তুঙ্গে ছিল জাহানার ঈমামের আন্দোলন, তিনি রুমীর মা। আমরা সবাই তখন রুমী। আমরা সবাই তখন তার ছেলে। “এক রুমী লোকান্তরে, লক্ষ রুমী ঘরে ঘরে” ।
খুলনায় গিয়ে একটা নিদির্ষ্ট ছাত্র সংগঠনে নাম লেখালাম। খুব এক্টিভ কর্মী। ভালো “পোষ্টের” অফার আসলো সংগঠনের ভিতর থেকেই। অন্য সংগঠনটিও আগ্রহ দেখালো, আমি ততদিনে বুঝে গেছি এদের কাজের প্যাটার্ন, নিজের “দর” বাড়িয়ে দিলাম, এবং খুলনায় যাওয়ার দেড় বছরের মাথায় ছেড়ে দিলাম ছাত্র রাজনীতি। ১৮ দফা বলুন বা ১৯, কে আর মাথায় ঘামায় এগুলো নিয়ে বলুন। চারদল বা চৌদ্দ, কিবা আসে যায় তাতে। দিন শেষে নিজের লাভের বখরা নিয়েই হিসেব করে সবাই। Money and Post Always Matter.
দূর্নীতিবাজ নেতাদের খুব করে গালি দিতে দিতে এখন সকালের নাস্তা সারি, বুদ্ধিজীবিদের গালি দেই, শেখ মুজিব কে গালি দেই, জিয়া কে গালি দেই, নিজ এলাকার এমপি কে গালি দেই, এরা সব নির্বোধ, এদের ভুলে ভুলে জর্জরিত দেশ রসাতলে গেল। এরপর উন্নত বক্ষা সেলিব্রিটির গসিপ পড়ি, মজা লাগে, লিভারপুল বার্সা নিয়ে ভাবি, মজা লাগে। রাতে ষ্টার প্লাসে ডেইলি সোপ দেখি, মুভিতে উড়ে চলা মাকড়সা কিংবা বাদূর দেখি, আখসারা আর ঋত্বিক এর খুনসুটি দেখে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে বউ বাচ্চা কে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ি, আরেক ধাপ এগিয়ে যাই মৃত্যুর দিকে।
পাচ বছর পরে আবার লাইন ধরে গিয়ে এম পিকে ভোট দিয়ে আসি, কারন তার সংগে আমার “ডিল” হয়েছে, আমাকে ব্রিজের বা রাস্তার বা সারের বা ঘাটের বা টেন্ডারের কাজটা পাইয়ে দিবেন। নিদেন পক্ষে বাচ্চার স্কুল ভর্তি নিশ্চিত তো করবেনই।
প্রতিদিন সকালে নিজের মেয়েকে নিয়ে স্কুলে যাই, দেশের ভবিষ্যৎ তারা। শিক্ষার মান নিশ্চিত করি। জাতির মেরুদন্ড সোজা করি।
আচ্ছা, সবকিছু কি একবারে হয়? হয়তো হয়। অনেকের হয়তো হয়েছে। এক নেতাই বদলে দিয়েছেন সব।
কিন্তু যদি তা না হয়, তখন?
আমাদের সবকিছু একেবারে হয়নি। কিন্তু ধাপে ধাপে তো হয়েছে। আমরা জাতি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছি, আমাদের নিজস্ব ভাষা হয়েছে, নিজস্ব দেশ হয়েছে।
হয়তো দেশটা এখনো পুরোপুরি গড়ে উঠেনি। দাড়াতে পারেনি নিজের পায়ে।
বাংগালীকে জাতি হিসেবে তৈরীর পিছনে আমার অবদান “শুন্য”, নিজস্ব ভাষা হিসাবে বাংলাকে প্রতিষ্টিত করার ব্যাপারে আমার অবদান “শুন্য”, স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আমার অবদান “শুন্য”।
অবদান রাখার জায়গা এখন একটাই, দেশটাকে যদি গড়ে তোলা যায়, স্বপ্নের মত করে। নতুবা আমার মেয়ের কাছে আমার পরিচয় হবে “ বুদ্ধিজীবিদের গালি দেয়া, সেলিব্রিটিদের গসিপ পড়া এবং ডেইলী সোপ অপেরা দেখে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে মরে যাওয়া একজন মানুষ”।
অনেকে অনেক কিছু করেছে, বা করেনি, এটা এত গুরুত্বপূর্ন নয় একজন মানুষের জীবনে। গুরুত্বপূর্ন হচ্ছে, সে নিজে কতখানি করেছে।
ক্যাডেট-ক্যাডেট বলে যে মূর্খের মত গর্বের ছাতি ফুলাচ্ছেন, গর্ব করার মত কিছু কি আছে ঝুলিতে? নাকি আমার মতই “তৃপ্তির ঢেকুর তুলে মরে যাওয়া একজন মানুষ”??
১ম 😀
চরম সিরিয়াস পোস্ট ।
চিন্তার বিষয় ফয়েজ ভাই ।
আমিতো আবার থাকি বিদেশে । পলাতক আসামী !
নিজেকে পলাতক আসামী মনে হচ্ছে 🙂
তুমি এখন যেভাবে যে অবস্থায় আছো, তাতেই তো কাজ করতে পার।
পার না? 🙂
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ভাই ফয়েজ,
চমৎকার লেখা। আমি মুগ্ধ। আশা করি এই লেখার ক্ষমতা তুমি ব্যবহার করবে। দোয়া করি- অনেক বড় হবে।
মুকুল ভাই
😀 😀
স্যালুট ...
😀 😀 😀
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
আমি আসলেই কিছু খুঁজে পাচ্ছি না.....মৃত্যুর আগের দিনও পাবো কিনা সন্দেহ আছে.....মরার আগেই মরে যাওয়া মানুষেরা পায় না
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
বয়স তো আছে সামনে, আজকে শুরু করলে মরার আগে আগে হয়তো পেয়ে যাবে গর্ব করার মত কিছু একটা। 🙂
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
সাবাশ ফয়েজ ভাই। এই রকম একটা পোস্ট ই লিখুব কইরা ভাবতাসি কয়েকদিন টাইমের যন্ত্রণায় পারতেসি না। ভালো লিখছেন।
সকালে ৭ টায় বেরিয়ে রাত ৯ টায় ফিরি বাসায়। অফিসের গুতানি তারচেয়ে বেশি উপভোগ্য (!!) বাসের মধ্যে দুই দুই চার ঘন্তার দুটা জার্নি যার বেশিরভাগ টাইম মাথা বেকা কইরা দাঁড়ায়ে বসার জায়গার জন্য নারী বৃরদ্ধদের ফেলে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় ফেলে।
তারপরে ভাঙা রাস্তায় রিকশা ওয়াদের সাথে বেশি ভাড়া নিয়ে চিল্লাচিল্লি অতপর ডৈনিক গড়পড়তায় ধূলা কাদা আর মানুষে ঠেসা ফুটপাতে ৩ কি মি হন্টন তারপর বাসায় ফিরে লোডশেডিং এর পেইন। তখন এসিতে বসা বড়লোকের বাচ্চাদের উপর খেইপা গাইল বাইর হয়। কিন্তু তার পরেই আমার চেয়ে খারাপ থাকা মানুষগুলার কথা ভাবি যাদের উপর রাগ হই তাদের কথা ভাবি, মানুষের উপর বিশ্বাস হারাই না। কারণ মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ। শত কষ্টেও যদি এই শান্তিটুকু থাকত যে মানুষের জন্য কিছু করতে পারতাসি!!!!!!!!
তোমার সাবাশ পাবার জন্য লিখিনি, লিখেছি কাজ শুরু করার জন্য। আমার নিজের জন্য।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
বস চেতলেন নাকি ?
😀 😀
আরে না পাগল,
ভাবছি কাজ শুরু করে দেই, আর কত
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
:thumbup:
কাজ শুরু কর। 🙂
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
করতে তো চাইই, কিন্তু সুযোগ পাইনা তো!
এতোদিন ধরে যে কাজের জন্য নিজেকে তৈরী করলাম+করছি, সেটাই পাই না। তাইলে?
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ক্যাডেট-ক্যাডেট বলে যে মূর্খের মত গর্বের ছাতি ফুলাচ্ছেন, গর্ব করার মত কিছু কি আছে ঝুলিতে? নাকি আমার মতই “তৃপ্তির ঢেকুর তুলে মরে যাওয়া একজন মানুষ”?? কর্কশ-বাস্তব একটা প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড়া করালেন আমাদের সবাইকে।
কাজ শুরু কর, কাজ, প্রশ্নের উত্তর খোজাখুজি পরে হবে।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
নাই ... 🙁
কিছু সময় বের করতে পারবে কিনা জানি না, নতুন জীবন, তবে সময় পেলে কাজ শুরু কর 🙂
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
nai .... 🙁 🙁 🙁 🙁
কাজ শুরু কর। বসে আছো কেন? 🙂
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
প্রিয়তে নিলাম।
ভাইয়া, খুব সত্য কথাটা এভাবে বলতে পারেন বলেই হয়ত আপনার সব লেখাই অদ্ভূতভাবে আমার মন ছুঁয়ে দেয়...
আমরা সবাই গা এড়িয়ে চলি...
আর ঘটে কিচ্ছু নাই 🙁
প্রিয়তে নেয়া না নেয়াতে কিছু যায় আসে না। কাজ শুরু করলে কিনা সেটাই প্রকৃত উদ্দেশ্য। 🙂
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
আমিও কাজ শুরু করতে চাই 🙁 🙁
নেটের অবস্থা কি? প্রতিদিন একঘন্টা দিতে পারবা?
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
parbo boss ...... 1 ghonta time deya shomvob inshallah
রায়হান ভাইয়ের পোস্টে একটা মেইল এড্রেস আছে, গ্রুপে ঢুকে যাও 🙂
বাকী আল্লাহ ভরসা
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
আমার লেখার পরপরই এতো সুন্দর এবং অসামান্য লেখা দেবার জন্যে আপনার পার্মানেন্ট ব্যান চাই!!!
অদ্ভুত সুন্দর করে...পরিকল্পিতভাবে সত্যকে ফুটিয়ে তোলায় আপনাকে সাধুবাদ।
আসুন, আসলেই...কিছু শুরু করি...।
যতটুকু পারি......যতক্ষণ পারি...... আপনার সাথে আছি।
Proud to be an ex-cadet..... once a cadet, always a cadet
নেটের অবস্থা কেমন? সময় দিতে পারবা একঘন্টা? ডেইলি? পারলে গ্রুপে আওয়াজ লাগাও।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
গ্রুপে আওয়াজ মানে কি???
ঝাথি...ঝাণথে ছায়!!! B-) B-)
...মনে হয় পারবো।
তবে, কোর্সের ভিতরে আছি...সময়টা বোধহয় রেগুলার/স্পেসিফিক হবে না।
Proud to be an ex-cadet..... once a cadet, always a cadet
রায়হান রশিদ ভাইয়ের পোস্টে গুগুল গ্রুপে একটা আওয়াজ ছিল, ভুইল্লা গেছ? তোমারে তো দেখলাম উকিঝুকি মারতে।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
এই...ভাইজান...!!!
আমি তো ওইখানে মেইল কইরা দিছি কবেই!!!!!!!!!!!!!
তাইলে কি...আমার ঝুলিতে কিছু আইলো!????
আছি ভাইস্যার...আমি আছি!!!!!!!
Proud to be an ex-cadet..... once a cadet, always a cadet
🙂
ঝুলিতে আসে নাই এখনো, ভবিষ্যৎ বলবে কিছু হল কিনা।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ভনিতা ছাড়াই সরাসরি কথাগুলো বললেন ভাই।
সরল রেখাই দুটি বিন্দুর মধ্যে ক্ষুদ্রতম দুরত্ব (Straight line is the shortest distance between two points) 😀
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
আমি আওয়াজ দিছিলাম...কেউ পোছে না...নন্টেকি হওয়ার অনেক দূঃখ... :((
সবার একটু একটূ হুইস্পার একসময় স্ক্রিমিং হিসেবে দেখতে চাই... :dreamy:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
আচ্ছা, ভুলটা আমারি, আমি বোধহয় জিমেইলে এখনো অভ্যস্থ হয়ে উঠিনি।
ব্যাপার না, তুমিও লুপে আছো..।..।...।। :grr:
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
নাই... 🙁
অ.টঃ প্রথম তিন প্যারা পইড়া ভাবছিলাম কোবতে 😛
ভাইরে জীবনকে কবিতা ভাবতে ভালোই লাগে, কিন্তু বাস্তবতা একটা খটখটে নির্মোহ প্রবন্ধের বেশি আর কিছু নয়।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
দুঃখিত, আমার আছে।
আমি কিছুই করতে পারিনি তবুও আমার আছে।
হ্যা সামিয়া, আমরা সাক্ষী, তোমার গর্বের অনেক কিছু আছে। সেই অর্থে তুমি আমাদের গর্ব, আমাদের প্রেরণা।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
আপনে কই দিয়া সাক্ষী হইলেন ফয়েজ ভাই?? সন্দ সন্দ লাগে :gulti:
নাই :no: :no:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
শুরু কর, শুরু কর।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
এক্কেবারে ধুলায় মিশায়া দিলা ফয়েজ। সত্যি বলছি। চলো সবাই যার যার জায়গা থেকে কিছু কিছু করে কাজ করি।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
ভাইয়া গ্রুপে একটু সময় দেন, এতিম এতিম লাগে, কাজটাও ভাগ করে দেন সবাইকে।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
মাঝখানে দুইটা ঘোড়ার ডিম পোস্ট দিছিলেন, কিন্তু এইটা একেবারে 'ফয়েজীয় লেখা' হইছে। যেরকম আপনার কাছে প্রত্যাশা থাকে।
লেখা পইড়া নিজেরে রাস্তার কুকুরের চেয়েও অধম মনে হইতেছে। আসলেও আমি তাই। কোনদিন কিছু করতে পারি নাই কারো জন্যে, দেশ তো পরের কথা।
মনে থাকবে লেখাটা অনেকদিন, ফয়েজ ভাই। কোনদিন কিছু করতে পারবো কিনা জানিনা কিন্তু এরপর কোথাও গলাবাজি করতে গেলে আপনার লেখাটা মনে পড়বে, এইটা কথা দিলাম।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
😛
আহারে পোলাটা ইমোশনাল হই গেছে। ;;)
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
আমার বাবার চাকরি হয়েছে ৩০ বছর। পুরোটা সময় তিনি কতটা নিবেদিত-প্রাণ ছিলেন সেটা আমি, আমার বোন আর আমার মা ছাড়া আর কেউ জানে না। আমাদের পরিবার '৯৩ থেকে '০১ এই আট বছর দেশ বিদেশ মিলিয়ে তিন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থেকেছে শুধুমাত্র তার 'পোস্টিংয়ের চাকরি'টার জন্য। আমার মা'ও চাকরি করেন একটা স্কুলে, মাঝে একটা সময়ে তিনিও চাকরি ছেড়ে দিতে গিয়েছিলেন এই প্রচণ্ড কষ্টের জীবন ছাড়তে।
গতকাল রাতে জানা গেছে আমার বাবার শেষ প্রমোশন, যেটা তিনি গত তিন মাস ধরে ভারপ্রাপ্ত হয়ে পালন করছেন, সেটা আরেকজনকে দেয়া হয়েছে যিনি সোজা বাংলায় একজন অথর্ব। এই তিনমাস বাবার সিনিয়ররা চেষ্টা করেছেন তাকে এই প্রমোশনটা পাইয়ে দিতে। কিন্তু এই অথর্বের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে সেটা সম্ভব হয় নাই।
এখন আমার বাবা যদি প্রশ্ন করেন, ডাক্তারি এবং সেনাবাহিনী এই দু'টা স্বেচ্ছাসেবী মাধ্যম থেকে তিনি ৩০ বছর সার্ভিস দিয়ে কেন নিজের যোগ্যতা আর অভিজ্ঞতার বিনিময়টা কেন পেলেন না?
====
আপনার কথাগুলো পুরোপুরি সত্য ফয়েজ ভাই। তবে এটাও সমপরিমাণে সত্য যে এইগুলো করে কেউ এখনও (৩৯ বছর চলছে) দেশের চালু সিস্টেম বদলাতে পারে নাই। বদলাবে, এমন কোথাও কোন সেক্টরে ন্যূনতম আলোও দেখি না। এটা নেগেটিভ থট। জানি। কিন্তু আমি যে স্বপ্ন দেখি সেটার গালে ঠাশ করে একটা চড় দিয়ে আজকে আমার ঘুম ভাঙানো হয়েছে। এখন এই চরম নেগেটিভিটির অবস্থানটা নিজের কাছে বিশ্বাস হচ্ছে না।
====
মন খুবই বিক্ষিপ্ত। কমেন্টের কোন কথা খারাপ লাগলে সেটা মনে রেখেন না। আমি তো সারাজীবন মোটামুটি দেশের পয়সাতেই পড়লাম। দেশের জন্য সেটা মাথায় রেখেই করতে হবে। কিন্তু এটাও ঠিক, দেশের লোকে আমাকে লাথি মারলে সেটা আমি আমার বাবার মতো হয়তো চুপচাপ খাবো না। আমি ধরেই নিচ্ছি যে আমার অবদান কেবল এখন পর্যন্ত গ্রহণ করা অংশেরই। এই রিটার্নের কারণে আমি আমার ব্যক্তিগত সুখসমৃদ্ধিতে ছাড় কেন দিবো?
আন্দালিব,
তোমার কমেন্টটা পড়লাম, তোমার মানসিক অবস্থা বুঝতে পারছি, কারন এটা বাংলাদেশ বলেই, এ রকম ঘটনা আমরা অহরহ দেখি বলেই হয়ত।
আংকেল কে আমার পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা আর সম্মান। তারা আছেন বলেই দেশটা চলছে, আমরা বেচে আছি, বাচার চেস্টা করছি।
সামনে তোমার সুন্দর জীবন পড়ে আছে, কোন বড় কথা আমি তোমাকে এখন বলবো না, আমি দোয়া করি তুমি সুন্দর করে তোমার জীবনটা গুছিয়ে নাও।
তোমার কাছ থেকে নাহয় সরিয়ে রাখলাম এই বিষয়টা কিছুদিনের জন্য। তবে যখন তোমার মনে হবে কিছু করা দরকার, তখন আর চুপ করে না থেকে, কাজ শুরু করে দিও, এটা অনুরোধ থাকলো। 🙂
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
পোস্টটা পড়তে পড়তে অনেক চিন্তা করলাম, আমি কি করেছি বা কি করতে যাচ্ছি দেশের জন্য?
মন খারাপ হয়ে গেল। দেখি কি করা যায়। কিছু একটা করতেই হবে...
ফয়েজ ভাই,
:salute: :boss:
জীবন জীবিকার কাছে হেরে হেরে আমি এন্টাসিড খেয়ে খেয়ে ঢেকুর তুলছিলাম। :thumbdown:
জুলহাসের কাছে শুনে ব্লগে এসে আপনের লেখাটা পড়লাম।
ভেতরটা জ্বালায় দিলেন বস - এক্কারে হৃৎপিন্ড ধইরে ঝাকুনি দিছেন।
আমিও আছি - আপনা লগে - যতটুকু পারুম - যেমনে পারুম ।
আসলেই কিছু করতে চাই।
দেশের জন্য প্রতিদান না - তা কখনোই শোধ হয় না - এমন কি জীবন দিয়েও না।
তাই শুধু নিজের কৃতজ্ঞতাটুকু প্রকাশ করার জন্য। নিজের বিবেক কে সান্তনা দেওয়ার জন্য - 'আমি চেষ্ঠা করেছিলাম' - এই বলে।
:thumbup:
সৈয়দ সাফী
Amar hoitoba ekhon manush er jonno, desh er jonno amar service er baire kisu kora somvob naa. Kintu, ek somoy nishchoy desh er manush er jonno, amar khomotar majhe kisu ektaa korboo...
Apnar osadharon lekhar jonno dhonnobad.. 🙂
ফয়েজের এতো অনিয়মিত লেখে রীতিমতো অন্যায়। এমন উদ্দীপনার উপলদ্ধিতে ভরে যাক ব্লগমন্ডল। মুক্তাঙ্গনেও শেয়ার করছি:
http://www.nirmaaan.com/blog/admin/5613/comment-page-1#comment-3086
অনেক ধন্যবাদ ফয়েজ।
চেষ্টা করে যাব..দেখা যাক কি হয়।
লেখাটা অসম্ভব সুন্দর।
সুন্দর পোষ্ট। ফয়েজ ভাইকে আবার নতুন করে চিনলাম।
আমরা যারা দেশে কিংবা দেশের বাহিরে আছি সবাই যে যার অবস্থান হতে দেশের জন্য কাজ করে কিছুটা ঋণ শোধ করতে পারি। এখানে আমি কার্য ক্ষেত্রগুলো দিচ্ছি যে যার অবস্থান হতে যতটুকু সময় পাই দেওয়ার চেষ্টা করি।
প্রথম ক্ষেত্রঃ যুদ্ধাপরাধীদের জন্য আর্কাইভ বিষয়ে যা এর মাঝেই লাভলু ভাইয়ের পোষ্ট এ এসেছে।
দ্বিতীয় ক্ষেত্রঃ বাংলা উইকিপিডিয়া এবং বাংলা উইকি সংকলনকে সমৃদ্ধ করা। আমি বিশ্বাস করি উইকিপিডিয়া আমাদের সামনে বিশাল এক সুযোগ এনে দিয়েছে। আমরা যদি শুধু উইকিকে সমৃদ্ধ করতে পারি তবে আমি নিশ্চিত আমরা এমন এক প্রজন্ম পাবো যারা দেশ গড়ার কাজে নেতৃত্ব দিতে পারবে।
তৃতীয় ক্ষেত্রঃ দূর্নীতি দূরীকরণ। আমার মতে বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা এই দূর্নীতি। এট দূর করার জন্য সিসিবি র পক্ষ থেকে একটী সামাজিক আন্দোলন আমরা শুরু করতে পারি।
Good one Dosto. Masud (87-93 ccc)
অদ্ভুত! তোমার লেখা পড়ার সময় কোন লাইন এমনকি কোন শব্দ বাদ দিই না। আবেদনটা খুব সুন্দর।
তবে আমার মনে হয় আমরা ঠিক মরে যাওয়ার জন্য বাঁচি না। শক্তির মতো মানুষের কর্মও কোন না কোনও ভাবে রুপান্তিত হতে থাকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। আমরা সবাইই সে প্রেক্ষাপট থেকে শুরু করেছি যে প্রেক্ষাপট আমাদের পূর্বপুরুষেরা ধারাবাহিকভাবে আমাদের জন্য নির্মান করে রেখেছেন। ক্ষনজন্মা কেউ এসে কয়েক প্রজন্মের কাজ একাই করে ফেলতে পারে।
মনে হচ্ছে অপ্রাসংগিক অনেক কিছু লিখে ফেললাম।
তোমার ডাক দেওয়াটা খুবই সময়োপযোগী। থেম না।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi