১.
অবশেষে আইনস্টাইন বুয়েটে ভর্তি হইল।
কথাটা যত সহজে বলা গেল,কাজটা কিন্তু ততটা সোজা ছিলনা।এর পিছনে ছিল বিরাট ইতিহাস….অনেকটা সেই..”কেরোসি নাই,,বউ কইল কেরাসি আন” টাইপ।কাহনীটা খুলেই বলা যাক।
মৃত্যুর পরে স্রষ্টা আইনস্টাইনকে সরাসরি নরকে পাঠিয়ে দিলেন..কারন আর কিছুই নয়..ব্যাটা দুইন্নার মানুষের ঘুম হারাম করা পারমানবিক বোমার বুদ্ধি দিসিল।কিছুদিন নরকযন্ত্রনা ভোগ করে আইনস্টাইন যখন নিজেকেই নিজে অভিশাপ দিচ্ছে..তখন বিধাতা একদিন ভাবলেন তিনি আইনস্টাইনের বুদ্ধির পরীক্ষা নিবেন…দেখি ব্যাটা পাশ করে কিনা। নরক থেকে আইনস্টাইনকে ডাইকা তিনি কইলেন..দ্যাখ,তুই দুইন্নাতে আকাম যেমন করছস,ভালা কামও কিছু কিছু করছস..তাই তোরে আমি এক্কেরে জানে মারুম না।তোরে দুইটা অপশন দিতাছি,বাইচ্ছা ল…
ক. আজীবন নরকে পচবি
খ. বুয়েট থেইকা গ্রাজুয়েশন কইরা আসবি..
হাসিহাসি মুখে আইনস্টাইন যখন ‘খ’ অপশনটি বেছে নিচ্ছিল তখন সে নিজেও জানত না এটা তার জীবনে নেওয়া ভুল সিদ্ধান্ত গুলোর মধ্যে প্রথম স্থান পেতে যাচ্ছে….
বিধাতাও বুঝতে পারলেন,পৃথিবীতে আইনস্টাইন এর যতই সুনাম থাকুক…ব্যাটা আসলে একটা বোকস ছাড়া আর কিসু না…
২.
পৃথিবীতে ফের ব্যাক কইরা আইনস্টাইন ভাবল বুয়েটে তো পড়মু মাগার কিসে পড়মু…..তার তো আর মুবাইল কোম্পানিতে চাকরী করন লাগব না..তাই ইলেকট্রিক্যাল বাদ..ইট-রড,লোহা-লক্কর ভুয়া লাগে তাই ওইটাও বাদ..শেষমেষ ঠিক করল আগে টিইক্কা লই তারপর ভাইবা দেখা যাইব..
ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়া তো আইস্টাইনের মুখ শুকায়া আমসি…খালি ফিজিক্সের সব আর কেমিস্ট্রির কিসু বাদে বাদবাকি সব কিছুই অ্যান্টেনার উপর দিয়া যাইতেসে…যাই হোক ভাইবা কাম নাই…পুরা টাইম ধইরা কইষা ফিজিক্স আনস্যার করল আর বাকি গুলা হালকার উপর ঝাপসা বুগিচুগি মাইরা দিল…যা আছে কপালে…
রেজাল্ট দেওয়ার পর দেখা গেল চান্স পাইলে মেকানিক্যালে পাওয়া যাইতে পারে…ওইটাই নিল..আর সবাইরে বইলা বেড়াইতে লাগল,এইবার দেখায়া দিমু..এতদিন খালি তাত্ত্বিক গবেষনা করসি..এইবার এমুন সব যন্ত্র বানামু…সবাই টাসকির উপর থাকব..একের পর এক চমক দিয়া সবাইরে মাইরা ফালামু…
ও তখনও জানত না জীবনে নেওয়া ভুল সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে দ্বিতীয়টা সে এইমাত্র নিয়ে নিল…
৩.
ক্লাস শুরু…প্রথম ক্লাস।বহুত মান্জা-টান্জা মাইরা আইনস্টাইন ক্লাসে আসছে…ও তো জানেই ট্যালেন্টে তার ধারে কাছেও কেউ আসতে পারবে না।মনে মনে কল্পনা করে নিল,স্যারদের সব প্রশ্ন যখন ও স্মার্টলি ঝটাঝট অ্যানসার দিবে তখন ক্লাসের মেয়েগুলো ক্যামন ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকবে ওর দিকে…সেই থাকে ইর্ষান্বিত ছেলেগুলোও।আর কপালটাও দেখ…প্রথম ক্লাসটাই পড়ছে ফিজিক্স এর..
স্যার ক্লাসে এসেই রোলকল করলেন…এরপর সবার নাম আর বাসা কোথায় জিজ্ঞেস করলেন।বেচারা কি জবাব দিবে খুইজা না পায়া নাম কইলো আইনুল আর বাসা কইলো গাবতলী..স্যার সাথেই কইলেন,বাসা গাবতলী এইটা না বললেও হইত..এইটা তোমার গরুটাইপ চেহার দেইখাই বুঝা যায়..এইটা কি টিজ না কমপ্লিমেন্ট আইনস্টাইন বুঝতে না পেরে মদনমার্কা একখান হাসি দিয়া বইসা পড়ল।
বেশিক্ষন বসতে পারলনা..রোলকল শেষ হতেই এ স্যার ওরে দাড় করায়া জিজ্ঞেস করল,আইচ্ছা কওতো দেখি আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সুত্রটা….প্রশ্ন শুইনা সে হাসবে কি কাদবে বুঝতে পারল না….এই প্রশ্ন কিনা তারে জিগায়!!!কিন্তু ওই যে একটু সময় দেরী করসে সেইখানেই বাধল গ্যান্জাম..স্যার মনে করল সে উত্তরটা সে পারেনা…বিরাট চেইতা গেল স্যার।হায়রে,গাধা-গুধা বইলা একাকার অবস্থা!শেষমেষ কিনা ক্লাস থেকে বের করেই দিল..
বের হওয়ার সময় আড়চোখে দেখতে পেল ক্লাসের সবগুলো মেয়েই তার দিকে তাকিয়ে আছে,তবে সে যে দৃষ্টির কথা ভেবেছিল সে দৃষ্টিতে নয়.. 😉
৪.
কিছুদিন পড়াশোনার পরেই আইনস্টাইন বুঝতে পারল বুয়েটের গ্রাজুয়েশন তার জন্য নয়…বিশেষ করে মেকানিক্যালেরটাতো নয়ই…ড্রইং ক্লাসে তার হাত পা কাপে…ডেইলি রিপিট খাইয়া রুমে আইসা রাত জাইগা আকে আর মনে মনে নিজেরে গাইল পাড়ে…আর স্যারগুলাও জানি ক্যামন ক্যামন…সারাক্ষন মনে হয় হাতে একটা বাশ হাতে নিয়া ঘুরতেসে…
এরই মাঝে একদিন ফিজিক্স ক্লাসে স্যারের সাথে বাহাস করতে গিয়া ধরা খাইল সে..তারই বা কি দোষ!!স্যার তারই দেওয়া একটা সুত্রের প্রমান প্রাগৌতিহাসিক কোন এক নোট থেকে ভুলভাল পড়ায়া যাইতেসিলেন..সে তাতে বাধা দিতেই স্যার ব্যাপক ঝাড়ি দিলেন..ইভেন এইরকম ঝাড়িও দিলেন,”কি,আইনস্টাইন হয়া গ্যাছ,অ্যা?”
ফলাফল,লাষ্ট তিনটা ক্লাসটেষ্টে সে তিন এর উপরে মার্ক উঠাতে পারেনি…
এইভাবে দেখতে না দেখতেই টার্ম ফাইনালও চলে এল..আর আইনস্টাইনও তখনি বুঝতে পারল গযব কতপ্রকার ও কি কি তা তাকে এবার হাতে কলমে বুঝিয়ে দেওয়া হবে…অবশ্য এর মাঝেও সে চোথা নামক এক বস্তুর সন্ধান পেল যেটা পড়লে নাকি নিশ্চিত পাস…পরীক্ষার আগে ঘুরে টুরে বিভিন্ন জায়গা থেকে চোথাপাতি জোগার করে সে যখন পড়তে বসল তখন পরীক্ষার বাকি আর এক দিন….
ফার্ষ্ট টার্ম পরীক্ষায় তিন এর নিচে জিপিএ পেয়ে আইনস্টাইন আবারও প্রমান করে দিল..ট্যালেন্টরা কখনই এইসব তথাকথিত পরীক্ষায় ভাল করেনা…
৫.
প্রথম টার্মেই বাশ খেয়ে টালমাটাল আইনস্টাইন সেকেন্ড টার্মে গিয়া পড়ল বাঘের মুখে।সি নামক বাঘের ভয়াল থাবায় প্রতিনিয়ত ক্ষতবিক্ষত হতে হতে বুঝতে পারল হলের এইসব বালছাল খেয়ে আর যাই হোক,ব্রেইনওয়ার্ক করা সম্ভব না…মনের দুখে সে টিউশনি করা শুরু করল..একেবারে প্রফেশনালি..
কিন্তু ওই যে,কয়লা ধুইলে ময়লা যায়না…তাই প্রতিদিন গোসল করার পরেও হালার বডিতে ময়লা থাইকাই যাইত…আর এই ময়লার চুলকানিতেই পড়াইতে গিয়া সে এ লেভেলের ছাত্রীর দিকে তাকায়া থাকত ড্যাবড্যাব কইরা…ততদিনে সে বয়লারের সংজ্ঞা শিখতে শুরু করেছে এবং বুঝতে শুরু করেছে যে..চলমান বয়লারের উদাহরন হিসেবে তার ছাত্রীর নামটি সহজেই দিয়ে দেওয়া যায়…
এইসব কষ্টকর জীবনের মাঝে মজাও যে ছিলনা তাও নয়।সবচে মজা পেয়েছিল বোধহয় যেদিন সে আইনস্টাইনের জন্মদিন উপলক্ষ্যে একটা সেমিনারে অংশগ্রহন করল।অবাক হয়ে সে লক্ষ্য করল..সে কি করেছে,কেমন ছিল..এইগুলা বলতে বলতে বক্তারা সব ফেনা উঠায়া ফেলতেসে বাট কিভাবে তার মত হওয়া যাবে সে সম্পর্কে তাদের কোন মাথাব্যাথাই নেই!!
আবার,মেকানিক্যাল ডে এর ফাংশনে হল অন্যরকম অভিজ্ঞতা।ভায়োলিনে আইনস্টাইন বস টাইপের..সে ভেবেছিল ভায়োলিন বাজায়া সবাইকে মাতোয়ারা করে দেবে..কিসের কি?বুয়েটের পোলাপাইন কি আর ভায়োলিন খায়!!দুই মিনিট বাজানোর পরেই সবাই হাততালি দিয়ে তাকে থামায়া দিতে চাইসিলো…তাতেও ভ্রুক্ষেপ না করে সে আরও মিনিটখানেক বাজানেরা পর যেসব গালি আসতে থাকল অডিয়েন্স থেকে তাতে উপস্হাপক নিজেই তাকে জোর করে স্টেজ থেকে টেনে বের করে আনল…..
আসতে আসতে সে ভাবতে থাকল…বুঝল না..এই বুয়েটে কেউ তার প্রতিভার মুল্যটা বুঝল না… :((
৬.
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আইনস্টাইনের গ্রাজুয়েশন প্রায় শেষের পথে…আর কিছুদিনের মধ্যেই সে ফিরে যাবে তার চিরশান্তির আবাস..নরকে।তবে আইনস্টাইন হয়ত চলে যাবে…কিন্তু রয়ে যাবে বুয়েট শহীদ মিনারের পাশের দেয়ালে তার কাপা কাপা হাতের লেখা..
কষ্টে আছি – আইনস্টাইন
১ম
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
২য় B-)
ফেসবুকে আগেই পড়ে ফেলেছিলাম, আবারও পড়লাম, পিরা গেলাম এবং অতঃপর চেয়ার থেইকা পড়ে গেলাম 🙁
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
:clap: :thumbup:
=)) =)) :goragori:
ভালো হয়েছে। :clap:
বন্য... এই সকাল বেলা কি খাইস ভাই ??
হাহাহাহা! =)) =)) =))
জটিল, জটিল!!!
দারুন মজা পাইলাম। =)) =))
সাবাশ ফুয়াদ! :thumbup: :thumbup:
হুমমমমমম ......... মেকাতে লেখাপড়া খুব টাফ .........
হা হা হা হা হা দারুণ =)) :khekz:
ভাই সবাই খালি সাইন্স এর লোকদের নিয়া জোক্স করে আমরা যারা আর্টস তারা কি দোষ করলো 🙁
আমাদের কাউরে নিয়াও জোক্স বানান 🙁
ওই ব্যাটা, মাথা খারাপ হইছে। এরেই বলে নিজের পায়ে কুড়াল মারা। তোর বাঁশ খাওয়ার এত শখ থাকলে নিজে নিজে খা। আমারে আর লাবলু ভাইরে নিয়া খাইতে চাস কেন? 😡 😡 x-( x-(
🙁
আমারে নিয়া কেউ কিছু?? :grr: :grr: :grr:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
কেমুন য্যান চিনা চিনা লাগে 😮 😮
যা শালা,আগেই কোট করে দিলি.............আমিও......... 😕 ~x( ~x( ঐ
:thumbup: :thumbup: :thumbup:
কেউ বুঝলো নাজে মাহমুদ একটা ট্যালেন্ট। খালি খালি ওরে নাম্বার বেশি দেয়, তাই না মাহমুদ?
ভালো ছিল...
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
বন্য দোস্ত জটিল লিখছিস। :just: :pira:
:just: :tuski:
:khekz: =))
:pira:
জোসসস..........
:clap: :clap: :clap:
ভাল ছিল। খুবি ভাল :)) :)) :)) :))
=)) =)) :)) :)) :khekz: :khekz: :boss: :boss:
:just: :pira:
জীবন থেকে নেয়া......
ফুয়াদ :boss: :boss:
বেচারা আইনস্টাইন
খুবই ক্রিয়েটিভ একটা লেখা । অনেকদিন পর তোর লেখা পড়লাম ফুয়াদ । আগের ধার এখনো আছে এবং আগের চেয়ে বেশি যোশ নিয়ে লিখতে থাক । welcome back. its good to see u :hug:
:khekz: :khekz: সিরাম মজা পাইছি রে, চোখে পানি চলে আসত আরেকটু হলেই।
আমি লুই আই কানের বুয়েট গ্র্যাজুয়েশন নিয়ে কিছু লিখব কিনা ভাবতেছি, লিখলে অবশ্যই কানের কান ধরে উঠবস করাইতাম 😡
খুবই ক্রিয়েটিভ লেখা । খুব মজা পেলাম।
এই ধরনের লেখা নিয়ে সিরিজ জম্বে(জমবে কথাটাও জমে গেল!!!) ভাল।
তোমাদের মত করে বলি, সিরাম হইসে। =)) :gulti:
দারুন হয়েছে...। :clap:
দোস্ত, জট্টিল লিখছস, আসলেই শীরাআআম। কোন হালায় ৪ তারকা দিল, ধরতে পারলে কুপাইতাম। তরে দিলাম ৫ তারা ✰✰✰✰✰
╔╗╔═╦╗
║╚╣║║╚╗
╚═╩═╩═╝ :just: :khekz: :khekz: :pira:
......যথারীতি ফুয়াদ মিয়ার সিরামমম লেখা। :thumbup: :thumbup: :thumbup:
......তয় লেখার মইদ্যে ওর মনের ম্যালা কষ্ট বাইর হইয়া আইছে মনে হইতাছে।
=)) =)) =))
মেকানিক্যাল।।।।।
জীবন টা ফালা ফালা কইরা দিলো।।। :(( :(( :((
:)) :)) :))
আপনি কি মেকানিকালের?
অনেকদিন পর আবার পৈরা চরম মজা পাইলাম। :)) :)) :))
:pira: :pira: :pira: :pira:
তাইলে কি আমিও নরকে ছিলাম???
সিরাম!সিরাম!
পুরাই পিরা =))
ফুয়াদ, অনেকদিন পরে তোমাকে দেখে খুব ভালো লাগল।
"আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"
মজা পাইলাম ! :)) =))
=)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) :khekz: :khekz: :khekz: :khekz: :khekz: :khekz: :khekz: :khekz: :khekz:
:just: :hatsoff:
বড়ই মজা পাইলাম । =))
হাহাপিগে :)) =)) :pira:
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
:)) :))
আমিও মেকানিকাল ।
হাসতে হাসতে মিরা গেলাম =)) =)) =))
"আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"
এক্কেরে হাসা কথা :)) =)) :khekz:
স্যার তারই দেওয়া একটা সুত্রের প্রমান প্রাগৌতিহাসিক কোন এক নোট থেকে ভুলভাল পড়ায়া যাইতেসিলেন..সে তাতে বাধা দিতেই স্যার ব্যাপক ঝাড়ি দিলেন..ইভেন এইরকম ঝাড়িও দিলেন,”কি,আইনস্টাইন হয়া গ্যাছ,অ্যা?”
ফলাফল,লাষ্ট তিনটা ক্লাসটেষ্টে সে তিন এর উপরে মার্ক উঠাতে পারেনি…
মজা পাইলাম
:)) =)) :boss:
"মরনের বীথিকায় জীবনের উচ্ছ্বাস,
জীবনের যাতনায় মৃত্যুর মাধুরী"