দেশের গান করতে গেলে আমার মধ্যে অনেক বেশি আনন্দ আর আবেগ এসে ভর করে। দীর্ঘদিন প্রবাস জীবন যাপন করার জন্যই এমন হয় কি না জানিনা। গত বছর বড়দিন এর ছুটিতে বাংলাদেশে বেড়াতে গিয়েছিলাম। সুযোগ হয়েছিল গ্রাম এর বাড়িতে যাবার। বরাবর এর মতোই গ্রামে গেলে তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হই। এবারও দেখলাম হলুদ রাঙ্গা সর্ষে ক্ষেত, মেঠো পথ, আর চারিদিকে সবুজ আর সবুজ, মনটা জুড়িয়ে যায়।
বিস্তারিত»অন্তর্গত দাবানলের ভিতর বসবাসকারী তাবৎ কবিদের প্রতি রইলো বিশ্ব কবিতা দিবসের শুভেচ্ছা
বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে কবিতার জন্য একটা বিশেষ দিন পালনের এক রীতির শুরু। ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো প্রতি বছর ২১ মার্চ তারিখে এ দিন পালনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়।
আজ ’বিশ্ব কবিতা দিবস’ (World Poetry Day)। গোটা বিশ্ব যে দিবস পালন করছে তা আমরা কতোটা জানি-মানি পালন করি! কবিতাকে কতোটা ব্যবচ্ছেদ করি, কবিকে করি কতোটা! কাব্যচর্চা বা কাব্য আন্দোলন আসলে কোথায় পড়ে আছে আমাদের নিজেদের দেশে সমাজে কী সাহিত্য চর্চার ডেঁরায়।
বিস্তারিত»অন্ধকার
আমি অন্ধকার দেখেছি
রাত্রির কোমল শরীরে যার প্রগাঢ় ছায়া।
আমি অনেক হেঁটেছি;
শহরের এমাথা-ওমাথা,এগলি-ওগলি
প্রহরীর সজাগ দৃষ্টিতে যখন ক্লান্তির মায়া।
হঠাৎ থেমেছি
পায়ের চলার শব্দ থামিয়ে কান পেতেছি
বাতাসের পরে ভেসে আসে কার দীর্ঘশ্বাস?
নাকি কান্নার আভাস?
হৃদয়ে? নাকি অন্ধকারে?
অনেক বৃষ্টির পরে-
যেমন ধুসর মেঘের আকাশ।
বিস্তারিত»মায়াবতী মেঘ
এক মায়াবতী মেঘ আমায় ছায়া দিয়েছিল,
হাওয়ায় ভেসে ভেসে আমার কাছে এসেছিল।
সে মেঘ আমায় কথার ছলে গল্প বলেছিল,
তার গল্প শুনে আমার চোখে স্বপ্ন ভেসেছিল।
মায়াবতী মেঘের বুকে অনেক কান্না জমা ছিল,
দেখতে পেলাম চোখ দুটো তার যখন ঝরেছিল।
যখন তৃষিত এক মরু বুকে তার অশ্রু পড়েছিল,
লক্ষ গোলাপ একটি রাতেই হঠাৎ ফুটেছিল!
ঢাকা
০৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
শেষ আশ্রয়
নাম্বারটাও বন্ধ করে দিলে!
কিছুই রাখলে না আমার জন্য!
কই? কখনো তো কোন বিরক্ত করি নি
তবে কেন?
জান! মাঝে মাঝে যে
রং নাম্বার গুলো থেকে কল আসত তোমার
ওইযে, যে কল গুলোয় ওপার থেকে
কেউ কথা বলত না-
তুমি হ্যালো হ্যালো বলে
বিরক্ত হয়ে ফোন রেখে দিতে,
হয়ত ইংরেজীতে খুব সুন্দর করে বলতে-
“স্ট্রেঞ্জ!
জীবনের খসড়া খাতায়
ইচ্ছে হলেই সব কথা বলা যায় না। তবে না বললেও-
কিছু কিছু মনের কথা ছড়িয়ে পড়ে আকাশে বাতাসে,
না বলা কথাগুলো মাঝে মাঝে ভেসে ওঠে চোখে মুখে।
যার শোনার, সে শুধু শুনেই যায়, মুখে কিছু বলে না।
যার দেখার, সে দেখে শুধু মনে মনে ছবি এঁকে যায়।
এ জীবনে অনেক কথা শুধু কল্পনায় বলা হয়ে থাকে।
অনেক কথা আমৃত্যু না বলাই থেকে যায় মনের মাঝে।
~ অযুত নিযুত জীবনের অপার আনন্দ – জীবনানন্দ ~
[ প্রিয় কবির ১১৮তম জন্ম দিবসে তাঁকে শ্রদ্ধাঞ্জলি ]
কুসুমকুমারী দাশ যখন লিখেছিলেন – “আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে / কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে ?” তখন নিশ্চিত তাঁর জানা ছিল না আপন গর্ভে তিনি কত বড় মাপের একজন মানুষকে, বাংলা ভাষার একজন প্রধান কবিকে ধারণ করবার মহিমা অর্জন করবেন।
পিতামহ সর্বানন্দ দাশগুপ্ত (১৮৩৮-৮৫) বিক্রমপুর থেকে বরিশাল গিয়ে আবাস গড়েন।
বিস্তারিত»অক্ষর
অক্ষরগুলো ফিকে হওয়া থেকে
বাঁচাতে পারেনি কোন হিমাগার,
সময়ের ট্রানজিসনে কালো থেকে ধূসর-
ধূসর থেকে ধূসরতর।
মাঝের সময়ে হারিয়েছে তুলি
অক্ষর জমাট বাঁধতে না পারলেও
জমাট বেঁধেছে রঙ
ইচ্ছেও হারিয়ে ফেলেছে রঙ তুলির কবি।
নিজের অজান্তে যে অক্ষর লেখা হয়েছিল
ফিকে হচ্ছিল একেবারে প্রত্যক্ষে।
ফিকে হতে হতে আজ অপরিচিত প্রায় সে অক্ষর;
সে অক্ষর –
আজ এটুকুই ফাল্গুন থাক
-
অনেকদিন পর কিছু লিখছি সিসিবিতে। বসন্তই যখন, একটা কবিতা লেখাই যায়।
আজ এটুকুই ফাল্গুন থাক
আসছে বছর নাহয় বাকীটুকু নিও
নিয়তির নিয়তে গড়া গতবছরের স্মৃতি
অতীত ভেবে না হয়ে ভুলেই যেও।
সেদিনও ছিল না তেমন একটা ফুল
গাছে গাছে
কিংবা কোকিলের কুহু ডাক
যা ছিল তা কেবল তোমার
ওই খোপাতেই
আর, ওই মিষ্টি হাসিতে।
~ কফিপেয়ালায় পরিত্যাক্ত স্মৃতি ~
চুম্বনে নি:শেষিত কফিকাপ
জানুদেশে ফেনার চাদর গায়
ফ্যাকাশে টেবিলে উৎকীর্ণ
প্লেসম্যাট জুড়ে শুয়ে আছে –
ক্লান্ত, শ্রান্ত, অবসাদ প্লাবিত;
পাকা শিল্পীর তুলিতে আঁকা
জলজ্যান্ত স্টিললাইফ
তেলরঙ মাতানো ক্যানভাস;
চিনি দুধের ব্যবহৃত
ছেঁড়াখোঁড়া শ্যাশে,
সাবাড় করা কুকির গুঁড়ো আভাস
এইসব দৃশ্যপটে সেজে,
এলায়ে আছে সে আজো
নাজুক মনের নকশাকাটা আঙ্গিনায়;
গ্লোরিয়া জিনসের ওয়েটার,
অপেক্ষা
শোভন চেয়ার আন্তঃনগর
রেলগাড়ী ঝকর ঝকর
গাছপালা ঘর জীব জানোয়ার
দোলায় দোলে জানালার ধার
জোরছে তাদের কেউ ছুটে যায়
কেউবা যেন কেবল ঝিমায়।
মাঠের পর রাস্তার ধার
নারকেল সার বাঁশের ঝাড়
তার ছায়াতে বাবা ঘুমায়
দিন গোনে মা অপেক্ষায়।
বিষ্যদ বার শুককর বার
শনিবার আর কত বার?
ছেলে তবু আসে না আর!
তিনটে অণু কবিতা
চোখের সমুদ্র
তুমি একদিন সমুদ্র দেখতে চেয়েছিলে।
আমি বলেছিলাম, সে তো আমার চোখেই আছে।
তুমি বলেছিলে….
তোমার চোখ তো শুকনো, জল কই?
আমি বলেছিলাম….
চোখের সমুদ্র মনের দুরবীন দিয়ে দেখতে হয়!
ঢাকা
১৩ জানুয়ারী ২০১৭
কবি ও কবিতা
সে বলেছিল, সে কবি হতে চায়।
তুমি বলেছিলে, অন্তরে তুমি চাও
তার কবিতা হতে,
শেষ তৈলচিত্র
সাদাকালো অরণ্য- পাহাড়- নদী পার হয়ে
মরুর ধুলো উড়িয়ে দুরন্ত ছুটে চলা ভাবনার
লাগামহীন এক পাগলাঘোড়ায় সওয়ার হয়ে
নিশ্চুপ বসে আছি।
দুর্দান্ত গতিময় স্বপ্ন – স্থবির বাস্তব – অর্থহীন -সম্ভাবনাহীন।
অথবা কি সম্ভাবনাময়?
কী রং তাদের?
.
এক হঠাৎ বর্ণান্ধ শিল্পী।
যা কিছুই আঁকি – যে রং এ আঁকি – কিছুই দেখিনা।
আঁকার অসহ্য তাড়না ছবির পর ছবি আঁকিয়ে নেয় আমাকে দিয়ে।
আমার কথা ছাড়ুন
আমার কথা ছাড়ুন,
আপনি অনেক বিখ্যাত হয়েছেন শুনে খুশী হলাম,
তবে ভাবছি, কোন একদিন আপনিও কি আমার মত মাটি হবেন?
এত এত মানুষকে টপকে এতো উপরে উঠেছেন,
এত এত মানুষের ভালোবাসা আপনার জন্য,
এসব কি একটুও কন্সিডার করা হবে না, ভাবতে কষ্ট হচ্ছে।
আপনার জন্য কি একটু বিশেষ ব্যবস্থা করা যেতো না?
এ ধরুন, মাটি না হয়ে অন্য কোন মহামূল্যবান খনিজ হবেন।
কবিতার পেছনে
কেউ ব্যথা পেয়ে কবি হয়,
কেউ শখ করে কবি হয়ে ব্যথা পায়।
কারো কবিতা মাঝপথে থেমে যায়, তখন
ফলহীন বৃক্ষের ন্যায় কবি শুধু দাঁড়িয়ে রয়।
আবার কারো কারো কবিতা ফল্গুধারার মত
অলক্ষ্যে নিশিদিন অন্তরে অন্তরে বয়ে যায়।
প্রেমের অনুভব ছাড়া কবি হওয়া যায়না,
ব্যথার দহনে পরিশুদ্ধ হয় কবির যাচনা।
কারো দু’টি মায়াবী চোখের অনন্য দৃষ্টি,
নীরবে করে যায় কত শত কবিতার সৃষ্টি!