রাতের রাস্তার
কোন নাম থাকে না,
কোন নিয়ম থাকে না,
পায়ে চলা মানুষের পা টলে,
ঘরে ফেরে, কিংবা ফেরে না,
মাটিহীন কংক্রিটে, উবু হয়ে,
ফুল বোধে, নিশ্বাস ভুলে যায়,
ক্লান্তিতে, অপ্রাপ্তিতে, নেশায়
কিংবা অতি-নেশাহীনতায়
মাটির সুবাস পায় না।
ভালোবাসার ঘৃণা
বুকের মাঝে ছিলে তুমি
আছো আজো সেখানেই
বাসবো ভালো জনম জনম
থাকবে তুমি যেখানেই।
কষ্ট, দুঃখ, জ্বালা যত
করছি স্বীকার দায় তার
সুখ গুলো সব হোক তোমারই
ভুল গুলো সব হোক আমার।
আমার তরে আর কোনদিন
ভিজবেনা জানি ঐ দু’চোখ
ঘৃণারা সব একজোট আজ
কখন নেবে সকল শোধ।
সুখস্মৃতি আজো কাঁদায় মোরে
তোমায় ভোলা যায়না তো
চাইনা আমি ভুলতে তোমায়
ঘৃণা তুমি করলেও।
রিক্ত
হচ্ছে তৈরী অস্ত্র
বাধছে যত যুদ্ধ
খাদ্য নেই
বাদ্য নেই
নেই’তো কোন বস্ত্র
হচ্ছে অনেক বিবস্ত্র
কাজ নেই
কম্য নেই
নৌকো পাড়ি
কোর্ট কাচারী
সোনার দেশে
যেতেই হবে
হও’না যতই রিক্ত…
সাতাশ বছর পরে
সাতাশ বছর আগে লেখা আটটা কবিতা পেয়েছিলাম। সাতটা পোস্ট করেছি, আট নম্বরটা অনেক বড়, আর লিখবোনা।
মানে, নীলা মারা গেছে। আমার লেখা যে অনেকে পড়ে, যদিও ফ্রেন্ডলিস্ট ছোট, সেটাতে অবাক হয়েছি। তার থেকে বেশী বিব্রত হয়েছি, বড় ভাইরা, বন্ধুরা, প্রাক্তন সহকর্মীরা এবং ছোটভাইরা যখন ফোন করে জিজ্ঞাস করেছে, নীলা কে?
চিন্তায় একটা মানুষ দাঁড় করা, জীবন্ত করা, বোধ এর মাঝে আনা,
বিস্তারিত»সময়ে বিলীন (অনুবাদ কবিতা)
আমি অবিরাম কেঁদে যেতে পারতাম,
সারারাত ধরে,
কেউ সত্যি কোন পরোয়া করতো না,
কিংবা কাছেও আসতো না,
অনুভূতিটুকু বুঝতে।
জীবনটা দ্রুত চলে গেল,
তোমাকে খুঁজতে গিয়ে
তোমার শুধু চিহ্নটুকুই পেলাম,
তোমার আলিঙ্গন নয়।
এখন আর সময় নেই নতুন কিছু খোঁজার,
এ সময় ভালবাসাহীন, প্রেমের মুক্ত দুয়ার রুদ্ধ।
মূলঃ Sandra Feldman
অনুবাদঃ খায়রুল আহসান
কবি পরিচিতিঃ Sandra Feldman একজন আমেরিকান কবি।
বিস্তারিত»ভালোবাসার সাতকাহন
ভালোবাসার সাতকাহনে বেঁধে জীবন
তোমার মনের কোণে নিয়েছি আশ্রয়
প্রেমের বহ্নিশিখা পুড়ে চলে হৃদয় মোর
তবুও আরো ভালোবাসতে সাধ হয়।
ভীরু মন কাপে অনাগত মিলনের অপেক্ষায়
বাড়ে হৃদস্পন্দন, ধমনী ওঠে ফুলে
প্রেমের স্বর্গীয় সুধাপানে মগ্ন এ হৃদয়
যেন লজ্জাবতী হয়ে ফুটেছে শতদলে।
ভালোবাসি, ভালোবাসি তৃষিত হৃদয়ের আর্তনাদে
পারেনা বোঝাতে কতটা সে ভালোবাসা
দু:খ ছাড়িয়ে সুখ আলিংগনে পড়বে বাঁধা তোমাতেই
আর কিছু নেই ছোট্ট মনের গহীনে কোন আশা।
সাতাশ বছর আগে – সাত
এখন যদি বৃষ্টি নামে, নামুক, আমি ভিজবো, নীলা।
সমস্ত শরীর ভিজবো, ভিজে চুপসে যাবো
ঠিক যখনই বৃষ্টি থামবে, তোমায় ডাকবো;
আমায় একটু শুকিয়ে দিয়ে যাবে, নীলা?
তোমার বুকের উত্তাপে আমায় শুকাতে দাও
নীলা, আমাকে শুকানোর জন্য ভেজাতে
সুখের কোন বৃষ্টি এ নয়, তুমিতো তা জানোই।
নীলা, তুমি নেই সে কথা বারে বারে মনে করানোর কি প্রয়োজন?
বিস্তারিত»তুমিময় আমি
পরম মমতায় জড়িয়ে থাকা
তুমিময় কম্বলের উষ্ণতা সারারাত,
দেয়ালে ঝুলানো আরশিতে মুখ দেখা
যেন তোমার দু’চোখ বলে সুপ্রভাত।
টিক টিক করে চলছে হাতঘড়ি
যেন তোমারই হৃদস্পন্দন,
জানিয়ে দেয় তোমার উপস্থিতি
সারাদিন আর প্রতিটি ক্ষণ।
ভেংগে পড়োনা- এই তো আছি
শক্ত করে রাখো শিরদাঁড়া,
কোমরবন্দখানি নিরাশ করেনি
বুঝিইনি আমি তুমি ছাড়া।
পাঞ্জাবীটা আলমারীতে
ভাজে ভাজে তার প্রতীক্ষা,
ভালো ছেলে
ভালো ছেলে
রবার্ট লুই স্টিভেনসন
অনুবাদঃ মোস্তাফিজুর রহমান টিটো
সকালের আগে জাগি
আমোদেতে দিন কাটে
মুখে নেই বাজে কথা
মেতে রই খেলাতে।
সুয্যি মামা লুকোয় যখন
দূর সীমানার ওপারে
ছিলাম ভালো সারাবেলা
আনন্দেতে মন ভরে।
বিছানা খানা শীতল
এবং পরিপাটি ঝরঝরে
নামায পড়ে ঘুমোতে যাব
দাঁত মাজারই পরপরে।
একদিন সব বাঁধন শিথিল হয়ে যায়
আটপৌরে এ জীবনের কত হিসেব নিকেশ,
কত ভালবাসা, কত স্বপ্নের আশা-নিরাশা
মনের অগোচরে কোথায় বিলীন হয়ে যায়!
হায়! একদিন সব বন্ধন শিথিল হয়ে যায়।
একদিন মুঠোয় বাঁধা হাত ছেড়ে দিতে হয়,
পৃথিবীর বুক চিরে নতুন নতুন পথ সৃষ্টি হয়,
সে পথ বেয়ে ভালবাসার মানুষেরা চলে যায়।
একদিন আর কোন বাঁধন থাকেনা, অথবা
কোন আকুল আশাও থাকে না,
সাতাশ বছর আগে- ছয়
কাল রাতে ভরা জ্যোৎস্না অন্ধকার করে মেঘ জমলো;
জমাট মেঘ নিমিষেই গড়ে তুললো
এক অস্বস্তিকর অমাবশ্যা।
চাঁদ কি মুখ লুকোল না ডুবে গেল?
নীলা –
কাল রাতে আমি কি একাই বৃষ্টিতে ভিজেছি?
তুমি কি বুকের উত্তাপে তোমার চুল শুকাওনি?
এখনতো তুমি এত দূরে নও নীলা:
রাতের বৃষ্টিতেতে আমি একাই ভিজবো
আর তুমি বিদেশ বিভূইয়ে
সাদা রোদ্দুরে চুল খুলে হাসবে;
ভালবাসার আশা
ভালবাসায় রেখো আমায়,
শাস্তিতে নয় কভু,
ভুলের পথে পা বাড়ালে
শুধরে দিও প্রভু।
তুমি যাদের ভালবাসো
ফেরেশতারাও আকছার
ডাকে তাদের সসম্মানে
মানুষ তো কোন ছার!
প্রতিপালক একাই তুমি,
স্রষ্টা আমার, মানি
সৃষ্টিরা সব বেঁচে থাকে
তোমার দয়ায়, জানি।
ভুলের পাহাড় মাথায় নিয়ে
পথ চলেছি যত,
ভুলের বোঝা বেড়েই গেছে
হিসেব নেই কত।
কর্ণফুলীর মুহূর্তেরা
ফিরে যদি যেতেই হয়
তবে আজ আর দীর্ঘশ্বাস নয়;
আজ শুধু মেনে নেয়ার পালা।
যুদ্ধ করতে করতে সবগুলি তারা খসে গেছে
দূরত্ব ক্রমশ হয়েছে সমুদ্রের মত
তবুও একটি মুহূর্ত কোথাও উল্লেখিত হয়নি।
তুষারে কি ঢাকা পড়েছে তোমাদের শহর?
মধ্য রাতের নীল রঙ দেখার ইচ্ছায় কি রাত জাগা হয়?
চাঁদের সাথে মেঘেদের লুকোচুরি
আঙ্গুস এবং জুলিয়াস্টোনের গান এখনো কি বাজে?
সাতাশ বছর আগে – পাঁচ
যে জল ঝরার শব্দে
নির্জনতার ঘুম আরো গাঢ় হয়;
সেই চোখ দুটো আমি তোমার সামনে রাখছি
তুমি কি দু পায় মাড়িয়ে যাবে, নীলা?
ঘুম যখন তন্দ্রায় এসে নামে
আমি তোমাকে হাতের নাগালে পাই নীলা;
কতবার ছুয়েঁ দেখতে চেয়েছি তোমার চুল
চুলের ভেতর হাত চালিয়ে ঝর্ণা বানিয়েছি;
নীলা, আমার হাতের নাগালে নয়,
তোমাকে নি:শ্বাসের মাঝে চেয়েছি।
সাতাশ বছর আগে- চার
এমন অনাহূতের মত যাওয়া আসা ভালো লাগে না।
এমনি করে এক একটা অলস দিন আসে,
ভাসিয়ে নিয়ে যায় কেনো আমায় একা, নীলা?
সময় থেমে থেমে চলে, নষ্ট ঘড়ির মত;
এমন না চলে থেমে থাকে না কেন?
চুপ করে বসে বসে সময়ের হৃদস্পন্দন গুনতাম!
এমন অযাচিত যাওয়া আসা ভালো লাগেনা, নীলা।
মড়াঁ কাঁধে নিয়ে হাঁটবার মত
সময় আমার কাঁধে চেপে দীর্ঘপথ পাড়ি দেয়।