নিহরীকার জাদুঘরে, নিউট্রন নক্ষত্রের কফিনে সে এক দুঃখ বিলাসিনী মায়া
ছায়াপথ আজ তার মোহতে মহান, শালীনতার শিকলে মলিন তার ছায়া
কোলাহলের মাঝে লীন হয়ে হারিয়ে যায় তার নিঃসঙ্গ, নিষ্পাপ হাসি
অদ্ভুতূড়ে এই পাগলামিতে ধ্বসে পড়ে ব্যবিলন,মুগ্ধ দেবতারা দেয় কাশি
নিকষ কালো রাতের আধারে, শহুরে পথে সাইকেলে ঘোরা তার শখ
বেঁকে বসে সব দানব যাজক, থাবা দেয় তাতে কামুক ড্রাকুলার অশ্লীল নখ
মঞ্চ নাটকে ময়দা মুখোশের প্রতিযোগিতায় ,
সবুজ পাতারা একদিন হলুদ হয়ে যায়
সবুজ পাতারা একদিন হলুদ হয়ে যায়,
বৃক্ষ তাদের ছেড়ে দেয়, মাটি ডেকে নেয়।
শিস দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদুমন্দ সমীরণ
গেয়ে যায় জীবনের শেষ গান, অনুক্ষণ।
মর্মর নৃত্যগীতে ওরাও গায় নিপতনের গান,
ভুলে যায় জীবনের যত না বলা মান অভিমান।
সব গ্লানি, সব গৌরব ভুলে দখিনা হাওয়ায়,
আনন্দ বিষাদ নিয়েই ওরা নেচে নেচে যায়।
ঊর্ধ্ব থেকে পরিত্যাক্ত হয়ে ওরা অধঃ পানে ধায়
পরম আদরে মাটি ওদের ডেকে বলে আয় আয়!
অব্যক্ত ভালোবাসা
প্রিয়ার অভিশাপ নিয়ে পুড়ে যাওয়া
ভালোবাসার লতা-গুল্মগুলোর উপহাস,
বারান্দায় টবে ঝুলানো মানিপ্ল্যান্ট গাছটির
অহংকার মেশানো দোল খাওয়া,
কোন কিছুই আমায় আজ
স্পর্শ করেনা প্রিয়তমা।
না দেয়া মিথ্যে আশ্বাস
সত্যভাষণের নীল কষাঘাত,
ছিন্ন ভিন্ন করে দেয় হৃতপিন্ড…।
রক্তক্ষরণ…?
সেতো বুকের মধ্যে চলছে…
চলুক…
না হয় কেউ না-ই বা দেখলো …
না-ই বা জানলো…
সাতাশ বছর পরে – পাঁচ
তোমার জন্য আবারো কবিতা পড়তে বসেছি
জীবনানন্দের কবিতা
“সুরন্জনা, ঐখানে যেও নাকো তুমি
বলোনাকো কথা ঐ যুবকের সাথে”।
যতোবার পড়ি, ততোবার একই কথা মনে হয়
এটা কি আমার জন্যই লিখেছিলেন
জীবনানন্দ?
নাকি নীলা, এই সুরন্জনাই তোমায় ভাবিত করেছে
ঐ যুবকের কাছে যেতে?
যতদূর পারি, চেস্টা করে গেছি,
হাঁটু গেড়ে ভুল স্বীকার করেছি,
যদিও তেমন কোন ভুল করিনি,
~ অনাঘ্রাত ~
দাউ দাউ পুড়ে যাচ্ছে বন
কাবাব কিমার মতোন মাংসের শরীর
চারকোল গন্ধ ছড়িয়ে অশরীরী মন
নিকোটিন আর নোনা স্বাদ মাখা
বিভ্রমের আকাশে আটকা পড়া
অনুভূতির ঘুড়ি
স্মৃতির বনভূমি জুড়ে
পরিযায়ী পাখিদের ওড়াওড়ি
বরফে বেঁধেছি অপেক্ষা
গুটিয়ে রেখেছি সূতায়
বাকিটা বলার ইচ্ছা
অঘ্রাণের নির্মেদ আকাশ
মেঘের পাতায় পাতায়
নাহয় লিখুক আজ কিছু
পরিব্রাজ্য ভ্রমণ কিংবা
দ্বিধার সন্যাসে বিভ্রান্ত হবার গল্প
শীতের আগে উদগ্রীব মেগাফোনগুলো
জানুক কিছুটা –
এক ফোঁটা জল
এক ফোঁটা জল,
সেটাও হতে পারে এক সমুদ্র অতল,
যদি সেটা ঝুলে কোন আঁখির পাতায়
হৃদয় মথিত কোন সূক্ষ্ম ব্যথায়।
কবিতা,স্বপ্ন, গান,ঝর্না বহমান,
নিভৃতে বিরহী হৃদয় রোরুদ্যমান,
সব কিছু মূর্ত হয় এক ফোঁটা জলে,
ইতিহাস ভেসে উঠে কত কথা বলে!
ইনানী সৈকত, কক্সবাজার
০৪ অক্টোবর ২০১৭
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
পয়েন্ট
এই নিয়েছে ঐ নিল যাহ্ ! পয়েন্ট নিয়েছে কেড়ে,
লাগলে ধরব জীবন বাজি, পয়েন্ট দেব না ছেড়ে।
কাজের পিছে ছুটি আমি, ভেঙে পায়ের জয়েন্ট,
লাফিয়ে পড়ে ধরতে হবে মাটিতে পড়া পয়েন্ট।
কাজের মাঝে কাজের চেয়ে হিসেব করি যত,
বছর শেষে কার ঝুলিতে জমল পয়েন্ট কত।
না বাড়লে নিজের পয়েন্ট, মারি জোরে ল্যাং
নিচে থেকে জাপ্টে ধরি ঊর্ধগামীর ঠ্যাং।
~ কথার ভাঁজে উপহার অপেক্ষমান সেই ছুরি ~
[ অল্প কবিতা অল্প গল্প ~ একটি ‘অকল্প’ ]
অনেক দিন কথা হয় না।
আট দিন এগারো ঘন্টা। একে কি অনেক বলে !
সব খবর ভালো তো ?
যেমন হয় আর কি।
অভিমান নাকি রাগ !
বলেছি !
রাগ তো বিশ্বের সুলভতম বিষয়টি বৈ অন্য কিছু নয়।
সেজন্যেই তো ওসব করা ছেড়েছি।
মন অবশ্য মানুষের সব দিন এক রকম থাকেনা।
একদিন শুধু ছবি হয়ে যেতে হবে
যতই অনিচ্ছা থাক,
একদিন শুধু ছবি হয়ে যেতে হবে।
চলে যেতেই হবে, অমোঘ নিয়মে,
এক অনন্ত যাত্রাপথে, আদেশভুক্ত যাত্রী হয়ে।
কেউ যেতে চায় না, তবু যেতে হয়।
চিরনিদ্রায় শুয়ে থাকতে সেই রেখাঙ্কিত সারিতে,
যেখানে ঘুমিয়ে থাকবে আরো অজানা অনেকে,
তবে কার পাশে কে ঘুমোবে, তা অজানাই রবে।
সব কিছুই থেকে যাবে। খোলা ধূলিমাখা ল্যাপটপ,
অগোছালো টেবিল,
প্রত্যুষের ভাবনা ও প্রার্থনা
আমরা সকলেই ঘুরছি।
বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের সবকিছুই নিজ আবর্তে ঘুরছে।
হে সকল গতির নিয়ন্ত্রক, তোমার আদেশে
এক নিমেষে সব গতিতে যতি নেমে আসে।
প্রতি অনুপলে কোন না কোন গতি থেমে যায়,
আবার প্রতি অনুপলে নতুন কোন গতি সৃষ্টি হয়।
হে মহাবিশ্বের অধিপতি,
নিশ্চয়ই তুমি সকল গতির মহানিয়ন্ত্রক!
তোমার আদেশেই কঠিন বাঁধন
এক নিমেষে ছিন্ন হয়,
আবার যোজন যোজন দূরের বস্তু
এক পলকে আবদ্ধ হয়।
ভাল থেকো পাখি তুমি
ভাল থেকো পাখি তুমি, ভাল থেকো।
আজীবন সুখে থেকো, আদরে আদরে।
ভালবাসায়, মমতায়,
স্নেহের বাঁধনে থেকো।
চোখের তারায় তারায় দুষ্টুমি নিয়ে থেকো,
টোল পড়া দুটি গালে হাসি নিয়ে থেকো।
যে তোমার দুষ্টুমিকে হাসিমুখে প্রশ্রয় দিবে,
এমন উদার লোকের কাছেই যেন চিরদিন থাকো!
উড়ে যাবার ঠিক আগে আগে,
তোমার কান্নার আওয়াজ এখনো আমার কানে বাজে।
তুমিহীন এ ঘরে ফিরে এসে আমি আর ঘুমোতে পারিনি,
সাতাশ বছর পরে – চার
এইভাবে না বলে একা একা চলে যাওয়া
একদমই ভালো ছিলোনা, নীলা।
যেতেই যদি হয় একবার বিদায় নিয়ে যেতে
বলে যেতে কোথায় যাচ্ছো,
হয়তোবা পথের সাথী হতাম, হয়তো আমরা আর ফিরতাম না।
এখন তুমি যেমন গেছো, নীলা।
হারাতেই যদি হয়, একসাথে হারাতাম
এক পথে, শেষ না হবার মতো এক রাস্তায়।
একা একা অপেক্ষা করতে ভালো লাগে না।
বিস্তারিত»যা কিছু রচেছি প্রফুল্ল হিয়ায়
প্রভু,
উদরে উনুন জ্বালিয়ে রাখোনি,
মনে রাখোনি কোন জ্বালা,
করোটিতে নেই স্নায়বিক চাপ
শিরোপরি নেই ক্ষুব্ধ প্রতাপ
সাধ বশে তাই
সদা রচে যাই
প্রেমের পংক্তিমালা।
সকল প্রেমের উৎস তুমি,
সব কবিতার একই পটভূমি।
মনোসরোবরে যত ফুল ফোটে
জ্যোৎস্না কিংবা আঁধার রাতে
পদ্যে পদ্যে সেসব কথায়
হৃদয় কমল বিকশিত হয়।
যা কিছু রচেছি প্রফুল্ল হিয়ায়
পেয়েছি সবই তোমার দয়ায়।
ভয় পাই
ইদানীং আমি ভয় পাই-
যানজটকে, কারণ স্থবির যানে আমার নিঃশাস বন্ধ হয়ে আসে।
ভয় পাই অসময়ে আমার বাড়ীর কাছে রিক্সায় ঘোরা
কোন আগন্তুকের মাইকে উচ্চারিত নির্লিপ্ত ঘোষণাকে,
কারণ অনেক চেনা মুখের চিরপ্রস্থান আমাকে ব্যাথিত করে।
আমি আরো ভয় পাই-
যখন প্রবাসী কোন স্বজনের দেশে ফেরার কথা শুনি,
কারণ, ইদানীং পর পর কিছু ঘটনা ঘটে গেছে, যখন
পরিচিত প্রবাসীর লাগেজ এসেছে,
ছবি কেবলই ছবি
কোন কোন ছবি বেশ অবলীলায়
একশ’ একটা গল্প বলে যায়।
তবু, ছবি শুধুই ছবি।
ছবিকে নির্নিমেষ দেখা যায়,
পরখ করা যায়,
স্পর্শ করা যায়,
ছবিকে নিয়ে অনুক্ষণ ভাবাও যায়
তবে ছবির সাথে গল্প করা যায় না!