তিন নদীর মোহনার কাছাকাছি
বেলাভূমিতে ছোটখাটো মেলা।
আছড়ে পড়া ঢেউ এর নকশায়
মাকড়সাসম কাঁকড়ার বিচরণ।
ফাতরার বন থেকে ভেসে আসা
অংকুরিত সুন্দরী গাছের ফল
ঝাউবনের সামনে আরেকটি
ছোট্ট সুন্দরবনের সম্ভাবনা।
নিযুত কোটি ঝিনুকের খোলা
ছড়ানো সাদা এক মহাসড়ক
জলের শেষ সীমানায় সূর্য
ডুবে যাওয়ার আগে পরে
ছবি তোলার রঙঢঙের সাক্ষী।
আমার ক্যামেরার ফোকাস
সীমাবদ্ধ কেবলই প্রাকৃতিক দৃশ্যে।
নিঃশব্দ বিভাজন
ছিন্নমস্তা শঙ্খ জোড়ার বিনুনি কাটা,
শিরদাঁড়ার পথে ওঠে হিংসার জহর।
অবশ করা নীল বেদনার আকাশ।
ইত্যবসরে কারও শাটার ক্লিক,
অবকাশ যাপন যাত্রার সুযোগ।
যদিও আছে, তবুও মনে করো নেই
আমার কোন সহোদর সহোদরা।
আর সব থাক; নয় মাস অবস্থান,
দৌড়াদৌড়ি শেখা পর্যন্ত স্তন্যদান।
বোমা কিংবা আগুনঝরা দিন-রাত
নিরাপদ থাকতে এবং রাখতে,
এদিক-সেদিক সতর্কতার সাথে
বুকে আগলে রেখে পলায়ন
শুধু এটুকুই তো সব নয়;
বাস্তবিক ব্যস্ততা
বাস্তবিক ব্যস্ততার
বিবর্ণ বিবরে
শৃঙ্খলিত
বিশৃঙ্খল সময়,
দীর্ঘসূত্রিতা আর কালক্ষেপণে
পণ্ড।
আপসে আর পণ্য মূল্যবোধে
টিকে যাওয়া
সততার অহমে
নিত্য পিষ্ট
অহমের সততা।
সমাজ-সংসারের
দায়হীন নিরপেক্ষতার
দায়,
জন্ম দেয়
শুধু হতাশার।
মিরপুর, ৩০ জুন, ২০০৩
বিস্তারিত»কুয়াকাটার ডায়েরি
সাগরকন্যার ডাক –
ঝাঁকি খেতে খেতে পথ
তেপান্তরের মাঠ
আঙ্গুলের কলম –
বালিতে লেখা যত নাম
মুছে দেয় ঢেউ
ছোট্ট ছেলেটা
ছোটে ভেজা বালিতে –
দরিয়ার গর্জন
বালির উপর
আঁইশের নকশা কাটা –
কাঁকড়ার বাচ্চা
সমুদ্রের গর্জন –
জিও ব্যাগের উপর
আছড়ে পড়ে ঢেউ
সাগরের ঢেউ
তাদেরও আবেগী করে –
চার্লস বুকোস্কির দু’টি কবিতা
হাইহিল জুতা
তুমি যখন কিশোর
এক জোড়া
হাইহিল জুতা
বিশ্রাম কক্ষে
একাকী অবস্থান করেই
তোমার হাড়ে আগুন
জ্বালিয়ে দিতে পারে।
আর যখন তুমি বুড়ো
এ কেবলই
এক জোড়া জুতা
কেউ পরে নেই
হুঁ, একদম তাই।
মূলঃ চার্লস বুকোস্কি/ শুজ
অনুবাদঃ টিটো মোস্তাফিজ
বিখ্যাত পলায়ন
শোনো,
বিস্তারিত»অবরুদ্ধ হাইকুপঞ্জি
১
সুমহান গল্পী-
অবিরাম বয়ে চলা
চেতনার তল্পী
২৪ জুলাই ২০২৪
২
প্রহরীর তীর
তাক করে মালিকের বুক-
মৎস্য শিকার
৩
পাথর সময় –
জীবনের দাম মাপি
জড়র তুলনায়
২৫ জুলাই ২০২৪
৪
কি ঘটে কি হয়
যা দেখি তা সত্য নয় –
অপেক্ষায়…
ঘন অরণ্যে দিনের আলোতেও আঁধার পুরোপুরি তিরোহিত হয় না।
মনে হচ্ছে গত সাতটি দিন ধরে এমনই এক অরণ্যে হেঁটে চলেছি।
আলো নেই, শ্বাপদ সংকুল পরিবেশ। পাখির কাকলি নেই, আছে শুধু
শবের অপেক্ষায় বসে থাকা অলক্ষুনে এক শকুনির কর্ণভেদী ডাক।
এ অরণ্যের যেন শেষ নেই, পথ চলারও নেই। পথের ক্লান্তি শুধুই দেহের,
চোখে সে ক্লান্তি নিদ্রা নামাতে পারে না। তন্দ্রা কেবলই আসে আর যায়।
বিসর্জনের অঙ্ক
শেষ আনন্দাশ্রমটা বিলীন বিসর্জনের জলে
আনন্দরা সব হাবুডুবু খেতে খেতে ভেসে যায়
আকাশের মেঘগুলো হয়েছে যেনো নিরব স্বাক্ষী।
বিশ্বাসের সে প্রাসাদ আজ ভূলুণ্ঠিত
বারংবার একই প্রশ্নের শুধু পুনরাবৃত্তি
আকাশ কেনো প্রশ্রয় দেয় পাখিদের?
জীবন-বোধের ব্যাপ্তি নিয়ে বসে থাকা
হিসাব মিলেনি তবু অঙ্ক কষে যাই।
২৪.০৫.২০২৪
বিস্তারিত»ড্যান্স ফ্লোর
দূর থেকে চোখে পড়ে লাল-নীল বাতি
জ্বলে-নেভে, নেভে-জ্বলে,
চোখ ধাঁধানো ফ্ল্যাশ।
আকাশ ছাড়িয়ে মহাকাশে
সদর্প সাদা আলোর তরবারি।
বুক-কান কাঁপানো
ধুপ-ধুপ-চিক-চিক। চ্যাউউউ!
পশ ধরনের বেইজ ও ট্রেবল
সবকিছুই যেন মহাকাশ ছুঁতে চাইছে।
এ এক অনন্য উচ্চতা।
ওখানে না গেলে, মিস হয়ে যাবে।
বুক ভরা আশা নিয়ে আমি হাজির হই।
কীসের আশা জানি না,
প্রতিকৃতি ও কান্না বারণ
কান্না বারণ
কান্নার শব্দে সাড়া মেলে না
চকিতে চোখ মুছে নেয় সে
গায়ের ধুলো ঝেড়ে ফেলে
দু’হাত পকেটে ঢুকিয়ে
মাথা একটু নিচু করে
শিস্ দিতে দিতে আগায়
একটু থামে চারিদিকে তাকায়
যাবতীয় দুঃখ গ্লানি হতাশা
পেরুবার সীমিত দরোজা
ক্রোধ কিংবা সফলতা
পুরুষ হবার পথে যাত্রা শুরু।
০৫ এপ্রিল ২০২৪
বিস্তারিত»
দু’টি চতুর্দশপদী কবিতা
প্রশ্নমালা
কবি! কেমনে লিখো হে এমন কবিতা?
লিখিতে কবে থেকে? ছাত্র থাকার কালে?
উনপঞ্চাশ বায়ু পঞ্চাশ পার হলে?
নয়! খুলে বলো তবে, রহস্য ছবিতা।
বলো কে সে মায়াবী আড়ালে আবডালে
কোন কাশবনের সেলফি তোলা ষোড়শী
গেঁথেছে তোমায় উছলতার বড়শী!
হয় কি মাতামাতি গোপন মহলে?
হতে পারে নাকি কভু গোধূলিতে ভোর
স্বপনে তোমায় দেখি, হবে নাকি মোর?
সাম্প্রতিক কবিতা
১
ভালোবাসা মেঘ হয়ে গ্যাছে বহু আগে,
এখন শীতকাল,
মেঘমুক্ত আকাশের দিকে
তাকিয়ে তবুও বৃষ্টির অপেক্ষা।
বৃষ্টি হবার কোন সম্ভাবনা নেই।
চরাচরে তীব্র রোদ।
ভালোবেসে যারা রোদ্দুর হতে চেয়েছিলাম,
এই শীতে তারা অডিনের সঙ্গে ডিনার করবো ভালহালায়।
সুদিন কবে আসবে, অডিন?
আর্তনাদ চেপে বীরের মতো মরে যাবো।
কোথাও কী আছে আর্তনাদহীন মৃত্যু, মৃত্যুহীন ব্যথা,
বৃক্ষ যে পরিযায়ী পাখি নই।
বৃক্ষ যে পরিযায়ী পাখি নই।
মোহাম্মদ ওবায়েদুল্লাহ খান ওয়াহেদী।
আমি তো পরিযায়ী পাখি নই
উড়ে যাবো উষ্ণতার খোঁজে শীতে
ঠাই দাড়িয়ে আজো হেথায়
শিকড় গেড়েছি জন্মে যে মাটিতে।
ঝড় উঠে বৃষ্টি ঝরে মুষল ধারায়
বিজলী চমকায় বিদারি গগন ধমকে,
ডাল পালা ভেঙে পড়ে বেদনায়
পায়ের তলের মাটি ধ্বসে যায় পলকে,
কোথায় যাবো বলো বৃক্ষ যে!
ব্যাবধান
ব্যাবধান
মো ও খা ও।
বহুদিন পর পাশাপাশি
গহিনে গাহন নিরবধি
ছিল দিন উচ্ছল প্রেমে
প্রবাহমান ভরাট নদী।
পাশে বসা শুধু বসা নয়
অনন্ত কালের যাত্রা রথ,
ধাবিত অসীম অন্তরীক্ষে
খোদিত স্মৃতি অমর পথ।
প্রহর খুঁজে ফিরে আপন
স্বকীয় বলয় চেনাজানা
আকুলি মনে ব্যাকুল কথা
বিভাজন দুপাড়ে দুজনা।
যতটুকু কথা সে কথা নয়
পুঞ্জিত মেঘমল্লার মর্মধ্বনি
সহস্র দিনান্তের শব্দ মালা
গ্রন্থিত অক্ষরে কাব্য খানি।
এক নিশীথেই
আজকে আমার মনটা খারাপ,
মনটা খারাপ, মনটা খারাপ;
অকারণেই মনটা খারাপ!
কেন খারাপ, কেন খারাপ?
বলেছি তো, কারণ ছাড়া
অকারণেই মনটা খারাপ,
খারাপ গেল দিনটা আমার অদ্য!
তবু, মন খারাপে চিন্তা নেই,
নিদ্রা যাবো ভারী বুকেই,
পাহাড় এসে দাঁড়াবে পাশে,
ভোরের পাখি ডাকবে শাখে,
স্বপন এসে চুমিয়ে যাবে,
এক নিশীথেই বদলে যাবে
মন খারাপের পদ্য!