একটা ছোট বাচ্চাও মনে করতে পারবে এরকম সময় আগে এক খরগোশ পরিবার এক পাল নেকড়ের কাছাকাছি বসবাস করতো। নেকড়েরা খরগোশদের জীবন যাপনের ধরন পছন্দ করতো না এবং সবকিছুর জন্য তাদের দায়ী করতো। তারা তাদের নিজেদের জীবন যাপন পদ্ধতি নিয়ে উচ্ছ্বসিত ছিল কারণ সেটা ছিল একমাত্র জীবন যাপন পদ্ধতি।
এক রাতে ভূমিকম্পের ফলে বেশ কয়েকটি নেকড়ে মারা গেল। এর জন্য নেকড়েরা খরগোশদের দোষ দিলো। কারণ, একথা কে না জানে, খরগোশরা পিছনের পায়ে ভর দিয়ে জমিনের উপর লাফিয়ে লাফিয়ে চলে সেইজন্যই ভূমিকম্প হয়।
আরেক রাতে বজ্রপাতে কয়েকটি নেকড়ে মারা গেল। এবারও খরগোশদের দোষ দেয়া হলো। নেকড়েদের নেতা বললো, লেটুস পাতা খেলে বজ্রপাত হয় এ তো সবাই জানে। এই খরগোশদের সভ্য করে তুলতে হবে। তারা যদি ভালো ব্যবহার না করে তবে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। এরকম হুমকিতে খরগোশরা খুব ভয় পেল। তারা ঠিক করলো একটি মরু দ্বীপে পালিয়ে যাবে। কিন্তু অন্য পশুরা যারা একটু দূরে বসবাস করতো তারা বললো, পালিয়ে যাওয়া খুব লজ্জার কথা, তোমরা অবশ্যই নিজ এলাকায় থাকবে এবং তোমাদের সাহসী হতে হবে। যারা পালিয়ে যায় এই দুনিয়া তাদের জন্য নয়। যদি নেকড়েরা তোমাদের হামলা করে তবে আমরা তোমাদের সব রকম সাহায্য করবো। এ রকম আশ্বাসে খরগোশেরা নেকড়েদের আশেপাশেই রয়ে গেল। একদিন এক ভয়াবহ বন্যা হলো এবং অনেক গুলো নেকড়ে ডুবে মরে গেল। এবারও সব দোষ খরগোশদের কারণ লম্বা লম্বা কানওয়ালা যারা গাজর চিবায় তাদের জন্যই বন্যা হয়। তাই তাদের ভালোর জন্য তাদের একটি অন্ধকার গুহায় বন্দী করে রাখা হলো। আসলে এ ছাড়া তাদের রক্ষা করার কোন উপায় ছিল না।
বেশ কয়েক সপ্তাহ পর যখন খরগোশদের সম্পর্কে আর কিছু শোনা যাচ্ছিল না তখন অন্য পশুরা তাদের কি হয়েছে তা জানানোর দাবি জানালো। নেকড়েরা জানালো খরগোশদের খেয়ে ফেলা হয়েছে এবং যেহেতু তাদের খেয়ে ফেলা হয়েছে এটি সম্পূর্ণ অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। অন্য পশুরা নেকড়েদের সতর্ক করে বললো, খরগোশ নিধনের কোন ব্যাখ্যা না দেয়া হলে সবাই নেকড়েদের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হতে পারে। সুতরাং নেকড়েরা একটি কারন ব্যাখ্যা করলো। ” তারা পালাতে চেষ্টা করছিল। তোমরা তো জানোই, যারা পালাতে চায়, এই দুনিয়া তাদের জন্য নয়। ”
সব দোষ খরগোশের
মূল: The Rabbits who caused all the troubles by James Thurber
অনুবাদ: টিটো মোস্তাফিজ
দুর্বলের দোষ তো হয়ই।