ফেসবুকে ফ্রেন্ড হাজার পাঁচেক বুকের ভিতর নাইকো ফ্রেন্ড,
ফলো লাইক স্ট্যাটাস শেয়ার চলছে দেদার এটাই ট্রেন্ড।
দশ বছরে হয়না দেখা, ব্যস্ত জীবন সময় কই?
স্ট্যাটাস দেখে জানছি সবই, পাচ্ছি খবর সমস্তই।
অমুক দিবস, তমুক দিবস, বিয়ে জনম সকল দিন,
মনে রাখার নাই কোন দায়, ঠিক নোটিফাই ভ্রান্তহীন।
রোদের আগুন, বর্ষা কাদা, জ্যাম, ধোঁয়া আর সন্ত্রাসী,
আয়েশ শুয়ে মাথায় বালিশ,
মেঘ জমে মস্তকে
আবার
চুপটি করে যখন-তখন
হানা দিয়ে যায় তোমার কাহন।
বৃষ্টি রোদে, শারদ নীলে-
জর্জরিত বেহালা বাদন।
সত্যান্বেষ ব্যর্থ আবার, মেঘ জমে মস্তকে।
কেবল
বাচাল চিন্তা সাঁতরায় মেঘে, পরিণতি সব ভুলে।
হাহা-
অদৃষ্ট জাল। অনন্তকাল! ভ্রান্তি সে যায় বুনে!
বেশ!
ভোকাট্টা
একটা বর্ণিল চৌকোণ ঘুড়ির মত
আজকাল আমি আকাশে উড়ি,
নিঃসীম আকাশে ঘুরি ফিরি,
আর উড়ি, অনেক উঁচুতে উড়ি।
আমার একটা লম্বা লেজ আছে।
সেটাও মহানন্দে নেচে ওঠে,
যখন সে দেখে ঘুড়ির নাটাইটা
গাঁথা আছে তোমার চোখের পাতায়।
তুমি যতক্ষণ তাকিয়ে থাকো,
ততক্ষণ আমি উল্লাসে উড়ে বেড়াই
মেঘ থেকে মেঘান্তরে,
পাখিদের সাথে পাল্লা দিয়ে।
ছারপোকা সমাচার
চৌকি,গদি,লেপ ও তোষক সীমান্তে অসংখ্য ডিম্ব পেড়েছে ছারপোকা
সুচতুর, কৌশলী,আচানক, আণুবীক্ষণিক আক্রমনে আমি যেন কচি খোকা
ক্ষণকাল আগে গুটিকয়েক ভেবে অবহেলা করে মহাকালের রেস্তোরাঁতে খেয়েছি ধোঁকা
রক্ত পিপাশু ক্ষুদে ড্রাকুলার অনবরত কামড়ে দিশেহারা, শরণার্থী,ক্লান্ত, বোকা
পুঁজিবাদী বিজ্ঞাপনী প্রচারণাতে আস্থা রেখে ক্রয় করলাম বিনাশী FINIS
কিন্তু এবারো তোমার পালঙ্ক কাঁপানো কৌশলে প্রমাণ করলে তুমি একটা ” জিনিষ”
ওগো ছারপোকা
আমি কচি খোকা
নই শুঁয়োপোকা
ক্ষমা কর আমায়
নিশিযাপন কর মধুর
পরিত্যাগ কর তোমার দানবিক রুপ “অসুর”
কথা বলে যায়……
আমার কানে কানে ক্ষণে ক্ষণে আজকাল
কিছু কিছু শব্দেরা কথা বলে যায়।
জানা অজানা, পড়া না পড়া শব্দেরা
কবিতার ছন্দ হয়ে কথা বলে যায়।
ভুলে যাওয়া কিছু গানের কথা,
পরিচিত বিস্মৃত কিছু কন্ঠের কথা,
ফিনিক্স পাখির মত পুনর্জীবিত হয়ে
একত্রে সম্মিলিত সুরে কথা বলে যায়।
দেখা অদেখা কিছু ফুল কথা বলে যায়,
নিশ্চল কিছু ছবি পদ্যের মত কথা বলে,
প্লাটোনিক প্রেম
এক স্বপ্নীল মায়াবিনী
দূর হতে কোন এক লাজুক ছেলেকে
নিজের অগোচরে ভালোবেসেছিলো।
এমনি এমনি ভালোবেসেছিলো।
চুপি চুপি ভালোবেসেছিলো।
মন থেকে ভালোবেসেছিলো।
তার এ অনুচ্চারিত ভালোবাসায়
ছিলনা কোন কামনার উত্তাপ,
ছিলনা কোন প্রত্যাশার স্বপ্ন।
ছিল শুধু অনুভবে কাছে পাওয়ার,
রঙিন কল্পনা মাখা এক দুর্নিবার আকর্ষণ।
প্লাটোনিক প্রেম এভাবে আসে যায় চিরন্তন।
ঢাকা
০৮ জুন ২০১৬
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
মমতা
এক লহমায়
করে দেয়া যায়
অঙ্গীকার বিকল।
কিছু অনিহায়
ভেঙ্গে ফেলা যায়
ঘনিষ্টতার শিকল।
মুগ্ধতা জেগেছিল যেভাবে,
উবে যেতে পারে তা সেভাবে,
কিন্তু, মমতা?
আছে কি, তোমার তা
ভোলানোর কোনো ক্ষমতা?
অকারণ তাই এই অঙ্গীকার ভেঙ্গে দেয়া,
অকারণ তাই এই ঘনিষ্টতা ভুলে যাওয়া,
ব্যার্থ তুমি যাবতিয় মুগ্ধতা হারিয়ে,
বাঁচতে চাই
অমরত্বের লোভ নিয়ে আমি বাঁচতে চাই না এই পৃথিবীতে
প্রতিদিন একটা নতুন সূর্যোদয় দেখা যোগ করতে চাই জীবনের খেরোখাতাতে
জীবনকে আটকাতে চাই না ফিগার এইট নটে কিংবা কোন ফসকা গিরোতে
অনেক খরার মাঝে এক পশলা বৃষ্টির জন্য আমি বাঁচতে চাই
দিনশেষে রাখাল আর গরুর পাল মেঘ্নার সবুজ ঘাসের উপর যে সরল রেখা একে ঘরে ফিরে তার জন্য আমি বাঁচতে চাই
অগ্নিঝরা রোদের আড়াল থেকে হঠাত যে কালবোশেখির কালো ছবি আড়াল করে দেয় পৃথিবির সমস্ত চকচকে ঝকঝকে ছবিগুলাকে
তা দেখার জন্য আমি বাঁচতে চাই অনেকদিন
নারকেলের খোসা দিয়ে গাড়ী বানিয়ে খেলা ছোট্ট শিশু দুটোকে দেখার জন্য বাঁচতে চাই
রাজ হাসের দল ঘ্যাত ঘ্যাত শব্দ তুলে যে সংগীত গেয়ে গৃহস্থের খোয়ারে ফিরে সেই দৃশ্য আর সংগীত এর জন্য বাঁচতে চাই
মাঠের মাঝখানে বৃষ্টিতে আটকে পরা গরুটি গৃহস্থের অপেক্ষায় যেই মায়াময় দৃশ্য তইরি করে তা দেখার জন্য আমি বাঁচতে চাই
সারারাত নদীতে মাছ ধরে রতইন্যা জেলে যখন ঘাটে নাও ভিড়ায় তখন উলংগ শিশুটা কোমরে বাধা ঘন্টার ছন্দে দৌড়ে এসে-বাজান বলে চিৎকার দিয়ে যে।আনন্দ আর হাসির দৃশ্যপট তৈরী করে সেই দৃশ্য দেখার জন্য আমি।বাঁচতে চাই আরো অনেকদিন
এমনি কিংবা তার চাইতে অনেক তুচ্ছ লজ্জাবতীর শিশিরভেজা রুপ দেখার জন্য আমি বাঁচতে চাই অনেকদিন –
খুঁজে নিও পদচিহ্ন
কখনো চাই ঊষার আলো,
কখনো অমানিশা।
কখনো চাই নীরব আঁধার,
কখনো দীপশিখা।
কখনো হই কাজের ঘোড়া,
কখনো জবুথবু,
কখনো ছড়াই আলোক রশ্মি,
কখনো নিবুনিবু।
সবাই চলেছে আপন ধারায়,
গতি তাদের ভিন্ন।
আমিও চলেছি আমার পথেই
খুঁজে নিও পদচিহ্ন।
ঢাকা
০৪ মে ২০১৬
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
বৃষ্টি তোমায় ভাল লাগে
বৃষ্টি তোমায় ভাল লাগে
রাতে কিংবা প্রাতে
তোমাকে ছাড়া কিংবা সাথে
বৃষ্টি তোমায় ভাল লাগে।
টিনের চালে, গাছের ডালে
নদীনালা কিংবা খালে
বৃষ্টি তোমায় ভাল লাগে।
বৃষ্টি ছোঁয় আমায়
ক্রোধ কিংবা ক্ষমায়
বৃষ্টি তোমায় ভাল লাগে।
মাথার ছাতায়, চোখের পাতায়
হৃদয়কোণে, মনের খাতায়
বৃষ্টি তোমায় ভাল লাগে।
নিমগ্ন অন্তরীক্ষে
নিমগ্ন অন্তরীক্ষে।
মো ও খা ও
নিমগ্ন যখন অন্তরীক্ষে কিছুই ছোবেনা আর
না প্রেম না পূজা, বয়ে যাক বৈশাখী ঝড় নৈঋতে,
অথবা হউক পুড়ে খাক অধর্ চৈত্রের দাবানলে,
প্রকৃতি উন্মুখ হবে না আর উন্মাদ রোষানলে।
প্রয়োজন যখন পরাহত শুদ্ধ নিয়ন্ত্রনে সকল সত্বা
না লোভ না লালসা, নাচুক নটি কটি দুলে রঙিন রাতে,
অথবা ত্যাজি হউক ঘর সংসার রাজন সন্যাসী,
ক্ষমা
আমি যখন নিজের দোষ বুঝতে পেরে
লজ্জিত হই,
অনুতপ্ত হই,
ক্ষমাপ্রার্থী হই,
কিন্তু মুখে ক্ষমা চাইতে পারিনা,
তখন খুব করে চাই,
কেউ আমার চোখ দুটো দেখে পড়ে নিক
আমার নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন।
আমার প্রতি যখন কেউ অন্যায় করে,
আমি অপেক্ষা করতে থাকি,
সে নিজের ভুল বুঝুক,
লজ্জিত হোক,
অনুতপ্ত হোক,
ক্ষমাপ্রার্থী হোক।
ও মাঝিরে
নৌকা আমার পথ হারা মাঝ সাগরে
আঁধার রাতি শেষ তো না হয়
দয়াল মাঝি পার কর আমায়।
যতই নৌকা বাইতে থাকি
ঝামেলা ততই বাড়ে
ভয়ের সাথে মনটা ভাঙ্গে
পাগলা জোয়ার,কূলের দেখা না মেলে।
আমি ফিরতে পাগল বাড়ীর পানে
দাঁড় তো বাই প্রাণপনে
নৌকা তবু এগোয় না
আঁধার রাতি শেষ তো না হয়
দয়াল মাঝি পার কর আমায়।
পরিক্রমা
এক বৈশাখ থেকে আরেক বৈশাখ
খরতাপে, গরমে নাভিশ্বাস
তারপর ঝড়জল পাড়ি,
সাদা মেঘে উজ্জ্বল ঘুড়ির ডানা
নতুন ধান, শিশির ভেজা ঘাস
বসন্তের ফুল, পাখি আর গান
এই সবই এক দারুণ অপেক্ষার মানে।
বাতাসে তার আসার আবাহন
শরীর জুড়ে প্রজাপতি,
সে আসবে বলেই এই ঋতুচক্র
বারবার বাঁধে মায়াজালে।
কে ডাকে? কাক না কোকিল?
বুকের ভেতর এক হলুদ পাখি
অপেক্ষায় থাকে,
মেঘবালিকার ছবি।
মেঘবালিকা হারিয়ে গেছে
এক ভিন্ন মেঘের দেশে,
আকাশটা তাই মেঘশূন্য,
নীরব হয়ে আছে।
মেঘের ঘরেই গড়তে বসত
চেয়েছিলেন এক কবি,
স্বপ্ন ভেঙে জেগে দেখেন,
মিথ্যে হলো সবই।
জানালাটা খোলাই রাখেন
তারপরেতেও কবি,
আকাশ মাঝে খুঁজে ফেরেন
মেঘবালিকার ছবি।
ঢাকা
২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।