কোন কোন ছবি বেশ অবলীলায়
একশ’ একটা গল্প বলে যায়।
তবু, ছবি শুধুই ছবি।
ছবিকে নির্নিমেষ দেখা যায়,
পরখ করা যায়,
স্পর্শ করা যায়,
ছবিকে নিয়ে অনুক্ষণ ভাবাও যায়
তবে ছবির সাথে গল্প করা যায় না!
পাখির কথা
পাখি তোমার আঁখি কেন করছে ছলোছল?
কোথায় গেল তোমার ঠোটের হাসিটা নির্মল?
তোমার ঘরে তারা এনে দূর আকাশের ঐ,
পাখি তোমার মানিক রতন সঙ্গী গেলো কই?
রূপার বরণ পালক তোমার সোনার বরণ ঠোঁট,
কন্ঠে তোমার যাদুর বাঁশী, চক্ষে মেঘের জোট।
পাখি তোমায় আধার দেবার মানুষ গেল কই?
নিজের আধার, ছানার আধার খুঁজতে কী কষ্টই!
সাতাশ বছর পরে- তিন
মাঝরাতে একা হাটতে গিয়ে পুরনো পথে দেখা হলো।
“নীলা তুমি এখানে কেনো, এখন কেনো, একা কেনো?
সারাদিন তোমায় খুঁজি, কোথায় হারিয়ে গেছো?
একা সময় কাটে না, বসেই আছি কখন তোমায় দেখবো।”
নীলার সেই তীক্ষ্ণ চাহনী, যা বুকে তীরের মতো লাগে
হেসে ফেললো, “আমি কি আর সবার মাঝে আছি?
তুমি খোঁজ, একা খোঁজ, তোমার কাছে ধরা দেবার জন্য
এই পথে,
সাতাশ বছর পরে – দুই
সারারাত ঘুম হয়নি নীলা। জেগেই আছি।
ক্লান্ত শরীর, যতবার বিছানায় গা এলিয়ে দেই
চোখ দুটো বারবার খুলে এক ঝটকায় খুলে যায়;
মনে হয় তুমি মাথার পাশে হবসে আছে
নরম হাত বুলাচ্ছো যেন দুদন্ড শান্তিতে ঘুমাতে পারি।
তোমায় পাশে সজাগ বসিয়ে কিভাবে ঘুম আসে?
এমন বিভ্রান্তের মত চোখ বুজে আসা ঘুম ভেঙে চলে,
নীলা তুমি পাশে নেই,
অনুবাদ কবিতাঃ সন্তানদের নিয়ে
তোমার সন্তানেরা তোমার নয়।
তারা জীবনের সন্তান, জীবনের আকুল আত্ম-আকাঙ্ক্ষা প্রসূত।
ওরা তোমার আত্মজ, কিন্তু তুমি ওদের উৎস নও,
যদিও ওরা তোমার সাথেই থাকে, তবুও ওরা তোমার স্বত্বাধীন নয়।
তুমি ওদের ভালবাসা দিতে পারো, কিন্তু ভাবনা নয়,
কারণ ওদের নিজস্ব ভাবনা রয়েছে।
তুমি ওদের দেহকে গৃহে রাখতে পারো, কিন্তু আত্মাকে নয়,
ভাবীতে ওদের আত্মার বসত,
যা তোমার অধিগম্য নয়,
মাঝেমাঝে হারিয়ে যাওয়া ভাল!!
মাঝেমাঝে হারিয়ে যাওয়া ভাল!!
আয়োজন ছাড়া বা আয়োজন করে
প্রয়োজনে কিংবা বিনা প্রয়োজনে
এইতো আমার আশ্ পাশ্ থেকে
মাঝেমাঝে হারিয়ে যাওয়া ভাল!!
কিছুটা বুঝে বা পুরোটাই না বুঝে
একটু চিনে কিংবা একেবারে না চিনে
এইতো আমার আশ্ পাশ্ থেকে
মাঝেমাঝে হারিয়ে যাওয়া ভাল!!
স্বল্প শিখে বা একদম না শিখে
শুন্য হাতে কিংবা দুই হাত ভরে
এইতো আমার আশ্ পাশ্ থেকে
মাঝেমাঝে হারিয়ে যাওয়া ভাল!!
অপার্থিব ইচ্ছেগুলো…
আমি এমন একটা শান্তির দেশে যেতে চাই,
যেখানে উচ্চঃস্বরে কেউ কোন কথা বলেনা,
কেউ উল্টো পথ ধরে আসা যাওয়া করে না।
যেখানে পাখিরা নির্ভয়ে উড়ে যেতে পারে
ব্যস্ত বেখেয়াল মানুষের মাথার ওপর দিয়ে,
একান্তে বলে যেতে পারে তাদের মনের কথা।
একদিন কোন এক নির্জন গিরি চূড়ায় উঠে
পাখির চোখে আমি পৃথিবীটাকে দেখতে চাই।
সে পাহাড়ের বুক চিরে এক আনমনা বহমান
উচ্ছ্বল ঝর্ণা নেচে যাবে তার আপন খেয়ালে।
বোনেরা নদীর মত
দুই সহোদরা বোন দুই নদীর মত,
যাদের জন্ম হয়েছে একই উৎসে-
শৈলচূড়ায়, গলিত হিমবাহে কিংবা
অন্য কোন উচ্চস্থানে। ওরা একসাথে
কিছু পথ পাড়ি দিয়ে ভাগ হয়ে যায়-
প্রকৃতির অদৃশ্য ইশারায়।
দুই সহোদরার জন্ম হয় একই পরিবারে।
ওরা বেড়ে ওঠে একসাথে, আনন্দে দুখে।
তারপর ওরা ভাগ হয়ে যায় দুই সংসারে,
দূরত্ব রচিত হয় তাদের মাঝে, চিরতরে।
অস্তাচলের ভাবনা
সন্ধ্যা ঘনায়ে এলো,পাখি খোঁজে নীড়,
মেঘ তুমি ভেসে যাবে ছড়িয়ে আবির।
আমি হেথা দেখে যাবো রঙের খেলায়
তোমার হারিয়ে যাওয়া আঁধার বেলায়।
মেঘ তুমি ভেসে যাবে কোন দেশেতে?
অনুপম এ রঙে তোমায় কে এঁকেছে?
সোনালী আভায় মোড়া নীল ধুপছায়া
প্রেয়সীর কপোল সম কোমল কায়া!
প্রভুর ক্ষমা, মায়ের আশীষ
নিজের লেখায় কখনো তৃপ্ত বোধ করি না। যতবার পড়ি, ততবারই সম্পাদনা করতে ইচ্ছে হয়। নিজের লেখা পুরনো কবিতার ঝাঁপি খুলে আজ এই কবিতাটাকে হাতের কাছে পেলাম। পড়ে ভাল লাগলো, কবিতা লেখার পেছনের অনুভূতিটার কথা মনে পড়ে গেল। সাথে সাথে মাকে ফোন করলাম, দোয়া চাইলাম। মা জানালেন, সব সময় আমরা তাঁর দোয়ায় আছি। মাথায় তাঁর অদৃশ্য হাতের পরশ অনুভব করলাম। মায়ের হাসিমাখা কথাগুলো কানে গেঁথে রইলো।
বিস্তারিত»সে রাতে আকাশটা অঝোরে ঝরেছিলো
সে রাতে আকাশ যেন ভেঙে পড়েছিলো,
জলভরা মেঘগুলো নেমে এসেছিলো,
পাখিদের নীড়গুলো ভিজে গিয়েছিলো,
নিশাচর পথিকেরা বাড়ী ফিরেছিলো।
সে রাতে আকাশটা অঝোরে ঝরেছিলো,
মেঘ ভরা জলধারা ঝরে পড়েছিলো,
সরীসৃপেরা সারারাত বিবরে ছিলো,
বাহিরের কিছু প্রাণী ভেসে গিয়েছিলো।
সে রাতে আকাশ থেকে নেমে এসেছিলো,
এক সুন্দরী জলপরী মায়ায় ভরা।
এক ঘুমহারা পাখিকে ঘুম পাড়িয়ে,
খুঁজি অহর্নিশি
যারে খুঁজি অহর্নিশি
সুখে কিংবা দুঃখে ভাসি’
ব্যস্ততা বা বিরামে বসি’
অদেখা তারে ভালবাসি।
ভালবাসি বলেই খুঁজি,
জেগে কিংবা চক্ষু বুঁজি,
শিশু যেমন খোঁজে মা’কে
তেমনি আমি খুঁজি তাকে।
ঢাকা
২০ জুন ২০১৭
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
যদি এবং নদী
যদি এবং নদী
ভালবাসায় জয় পরাজয়
প্রশ্ন ওঠে যদি,
প্রেম ভেসে যায় ঢেউয়ের সাথে
ঝর্না থেকে নদী।।
সবার জীবন প্রশ্নে ভরা
আদি আর অনাদি,
আমার জীবন ভরা শুধু
যদি এবং নদী।।………
অভিমানের দেয়ালটাতে
ছত্রাক জমে যদি,
গান মরে যায় সুরের আগে
কষ্ট নিরবধি।।
সবার জীবন প্রশ্নে ভরা
আদি আর অনাদি,
কাহলিল জিবরান পড়তে বসে মনে উঁকি দেয়া কিছু টুকরো ভাবনা
১
“Your children are not your children.
They are the sons and daughters of Life’s longing for itself.
They come through you but not from you,
And though they are with you yet they belong not to you.”
Kahlil Gibran
১৯৯২-এ যখন আমাদের বিয়ে হয়, আমি তখন সদ্য সাতাশে। উনি তখনো একুশ পেরোননি।
বিয়ের ষষ্ঠ দিনে আমরা সংসার করতে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেই মহানগরের চেয়ার কোচে।
দু:সময়।
দু:সময়
ওবায়েদুল্লাহ খান ওয়াহেদী
এত জল বুকে শুয়ে হে জলধি
জগৎ জ্বলে খরতাপে,
পুডে খাক চরাচর ঘর বাড়ী
জলে দাউ দাউ লোলুপ বহ্নি শিখা,
নিষ্ঠুর নির্দয় আক্রোসে আস্ফালন
উমর্িলা কি পরাক্রমশালী?
অস্থির উৎকন্ঠায় গোকুলের কুলবাসি,
গর্জন হুংকারে উথালি বাণে
ধাবিত জলোচ্ছ্বস,
ভেসে যায় বসত শতাব্দীর
সুনামির তান্ডব প্রলয় নাচে
প্রকৃতির কোলাহল স্তব্ধ চিরতর।


