কে কখন তারে বেজেছিলো !
অনিরুদ্ধ কথকতা শিউলির ভোরে
মালায় মালায় গেঁথেছিলো !
কে কখন তারে বেজেছিলো !
বৃষ্টি ছাঁটে ঈষত ভেজা
কদম ছুঁয়েছিলো !
কে কখন নৈঃশব্দের ভীড়ে
কথার পসরায় সাজিয়ে নৌকো
সাগর পাড়ি দেবে ভেবেছিলো !
কে কখন শীতের শিশিরে
মগ্ন পায়ে হেঁটেছিলো চুপি চুপি !
অনাবিল মেঘের ভেলায় স্তুপ স্তুপ
কথা ফেরী করে নিতে চেয়েছিলো !
ছোট ছোট বিষয়
আমেরিকা ও কানাডা প্রবাসীর মধ্যে পার্থক্য ধরবেন কিভাবে? জিজ্ঞেস করুন অমুক জিনিসটার দাম কত। কানাডা বাসী বলবেন অত ইউএস অথবা অত কানাডিয়ান ডলার। অন্যজন বলবেন অত “টাকা”। একজন সৌদি আরবে থাকেন বা ছিলেন অনেক দিন। তিনি পুরো সৌদি আরব নামটা বলবেন না, বলবেন “সৌদি”। জার্মানীতে থাকেন যারা তারা দেশটাকে বলেন “জারমান”। মালয়েশিয়ার বিশাল প্রবাসী জনগন আপনার পরিচয় জানতে জিজ্ঞেস করবে, “ভাই, আপনি কি বাংলা?” বাঙালি বা বাংলাদেশি নয়- সরাসরি একে বারে “বাংলা”।
বিস্তারিত»মা

সাড়ে বারো বছর বয়স থেকে আমি ঘর ছাড়া। ১৯৭৬ সালের আগষ্ট মাসে সেই যে ক্যাডেট কলেজে ঢুকলাম তারপর থেকে ছুটি ছাটায় বাড়ি যাই গেস্টের মত। দুর্জনেরা বলে এতে বাড়ির সাথে নাড়ির সম্পর্ক কমে যায়। আমি ব্যাপারটাকে সেভাবে দেখিনা। ক্যাডেট কলেজ বারো বছরের একটা ছেলেকে উপরে উপরে শক্ত হতে শেখায়।বন্ধুরা হয়ে যায় ভাইয়ের মত। ক্যাডেট কলেজের ঘেরাটোপ থেকে বাইরে এসে আড়মোড়া ভাংতে সময় লাগে।মানুষ ভুল বোঝে।
বিস্তারিত»বিদায় ভোকাবুলারি মাস্টার
কেবল ক্লাশ সেভেনে কলেজে ঢুকলাম।। ছোট ছোট চুলে প্রায় টাক মাথায় ক্লাশে বসে আছি।। দিনটা মনে নাই। তবে সেটা ছিল ফিফথ পিরিয়ড। খাটো মতন সাদা চুলের এক স্যারের প্রবেশ ক্লাশে। সবাই চুপ।। ফর্ম শান করান হল। সব স্যার বলত ” seat easy” কিন্তু ইনি বললেন কিছুটা অন্যরকম ” seat to facile ” আমরা কোন কিছু না বুঝে আগের মতই থাকলাম। স্যার ব্যাপার টা বুঝে বোর্ডে বড় বড় করে লিখলেন FACILE.
বিস্তারিত»সাগর বেলায়
শেষ বিকেলে সাগর তীরে ভেজা বালির উপর হাঁটছি। পেছনে ঝাউবন আর পাহাড় সবুজ বনানীতে আচ্ছন্ন। সূর্য ডোবার পালায় মেঘ মুক্ত আকাশে রঙের খেলা। কোলাহল থেমে গেছে। এক প্রবীন ভারতীয় দম্পতি তখনো লম্বা চেয়ারে বসে। ভদ্রলোকের মনোযোগ হাতের চৌকশ যন্ত্রে। হয়তো কিছু লিখছেন। জীবনের শেষ বেলা এই সাগর বেলায় সূর্য ডোবার ক্ষনে সমান্তরাল কোন উপলব্ধি। মহাশয়ার ব্যাস্ততা ভিন্ন মাত্রায়। বিশাল হাতব্যাগের ভেতরে কিছু খুঁজছেন, বিরক্তির আভিব্যাক্তি স্পষ্ট।
বিস্তারিত»আর দীর্ঘশ্বাস নয় (অনুবাদ কবিতা)
আর দীর্ঘশ্বাস নয়,
হে রমণীকূল, আর কোন দীর্ঘশ্বাস ফেলো না।
পুরুষেরা তো চিরকালই শঠ ছিলো;
তাদের এক পা থাকে সাগরে তো আরেক পা তীরে,
কোনও একটা কিছুতে তারা চিরবিশ্বস্ত থাকে না।
তাই কোন দীর্ঘশ্বাস ফেলো না।
তাদের যেতে দাও,
আর তোমরা প্রফুল্ল থেকো,
দুঃখের সকল ধ্বনিমালাকে তুচ্ছ করে।
আর কোন সাদাসিধে গান করোনা,
আর কোন বিষন্ন অবসাদের
ভারী গান গেয়োনা।
এ তোমার ভিন্ন স্পর্শ

তোমা থেকে দুরে কতই না রাত কাটিয়েছি,
অথচ তোমার শীতল স্পর্শ
আমি অনুভব করেছি।
যখন আমি ছিলাম রুয়ান্ডায়,
অগনিত শিশু, নারী ও বৃদ্ধের অংগ
প্রত্যঙ্গহীন বিকলাঙ্গ লাসের সাথে
তোমার শীতল স্পর্শ
আমি অনুভব করেছি।
সুদান বা কঙ্গোতে দেখেছি-
অগনিত ক্ষুধার্ত-মানব সন্তানের
খাদ্য নিয়ে কাড়াকাড়ি।
অবরোধের নিস্পেষনের যাতাকলে পড়ে
ইরাক ও লিবিয়ার অন্নহীন,
দিনলিপিঃ Bon Appetit

বৃষ্টিভেজা শনিবারে বন্ধু অরিন্দমের সাথে থাই কুজিনে খেতে গিয়েছিলাম। মাইল পাঁচেক ড্রাইভ করতেই তার পছন্দের রেস্তোরাঁটিতে পৌঁছে গেলাম। আমরা ভোজনবিলাসী মানুষ কিন্তু খাই ক্যালরী মেপে। দু’জনের জন্য খাবার অর্ডার করলে কখনোই শেষ করতে পারিনা। তাই বলি, তোমার পছন্দের সুপ আর এপেটাইজার বলো, আমি অর্ডার করছি মেইন ডিশ। দু’জন মিলে ভাগাভাগি করে খাওয়া যাবে। ও চাইলো ফ্রাইড ক্যালামারি আর কোকোনাট সুপ। আমি চিংড়ি নাকি চিকেন নেবো এই নিয়ে ‘ইনি মিনি’
বিস্তারিত»বৃষ্টি -১০
সমস্ত বিকেল ধরে
সাদাটে আকাশে
কে যেন
আঁকছেই
মেঘের পরে মেঘ,
খসখস খসখস –
৩বি ৪বি পেন্সিলে
জানলায়
থেকে থেকে’
সূঁচলো সরেখ বিদ্যুৎ।
গ্রীলের ছায়া
দেয়ালে ঝনঝন করে ওঠে –
মহাসাগর পাড়ি দিয়ে
হাইওয়ে ধরে ছোটে
টিনের চাল, থিরথির কচুপাতা
ডালের বড়া, মায়ের সবুজ শাড়ি
ধু ধু পার্কিং লটে
বৃষ্টির বাজনা দেখে
উনুনে-ফুটন্ত-ভাতের ঘ্রাণ আসে
আসে ডিমের সস্তা কারি;
বিদায় ক্রিকেটের কন্ঠস্বর
আমার টেলিভিশনে ক্রিকেট দেখার প্রথম অভিজ্ঞতা ছিল বিটিভির সাপ্তাহিক আয়োজন স্পোর্টস প্রোগ্রামে চ্যানেল নাইনের ক্রিকেট হাইলাইটস প্রোগ্রাম। যেটার উপস্থাপনা করতেন সাদা চুলের এক নাম না জানা ভদ্রলোক। একটা সময় পর্যন্ত কোমল কন্ঠের সাদা চুলওয়ালা ঐ ভদ্রলোকই ছিল আমার কাছে ‘ফেস অফ ক্রিকেট’, ‘ভয়েস অফ ক্রিকেট’।
এরপর ক্যাবল টিভির কল্যানে প্রচুর ক্রিকেট দেখা শুরু হলো, সেই সাথে পরিচিত হলাম প্রচুর কমেন্টেটর এর সাথে কিন্তু কেউই সেই সাদা চুলের মানুষটি যার নাম তত দিনে জেনেছি ‘রিচি বেনো’
বিস্তারিত»নির্লজ্জ
জল নুপুরের শব্দে, আমাকে ফেলে
ওরা প্রায় বাইরে চলেই এসছিল
নির্লজ্জের মত ……
ভ্রুকুটি আর চোখ রাঙ্গানিতে
ফিরে গেল ওরা ওদের
শব্দহীন আলোহীন ঘরে
থাকুক তো ওরা গভীর অন্ধকারে
নিঃশব্দে আঁধারের চৌকাঠ ধরে
আমার পরাজিত স্বপ্নের দল
ফেসবুকে পুর্বে প্রকাশিত
বিস্তারিত»ঢাকার শুনানি, ঢাকায় শুনানি (গ)
ঘটনা (ক)
কিশোরগঞ্জ গিয়েছিলাম গত সপ্তাহে। সিলেট ক্যাডেট কলেজের ছোট ভাই ইবনে সিনা ইয়েনের বিয়েতে। সবাই যখন বাসে করে যেতে চাইছে আমি তখন সুবোধ বালকের মত শুক্রবার সকালের ‘এগারোসিন্দুর প্রভাতি’ ট্রেনের টিকেট কিনে ফেললাম। যাতায়াতের ব্যাপারে ট্রেন ব্যবহারের প্রতি আমার স্পষ্ট পক্ষপাত রয়েছে। বাঙলাদেশের অভ্যন্তরে কোথাও যেতে চাইলে সড়কের আগে প্রথমে দেখি রেললাইন আছে কিনা। সড়ক-প্রেমী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পর্যন্ত রাস্তা ছেড়ে সমান্তরাল লাইনে চলে এসেছিলাম।
বিস্তারিত»এপিটাফ
নাম না জানা শহীদ মুক্তি যোদ্ধাদের কথা ভেবে
যাও পাখি, উড়ে যাও,অন্য কোথাও
এখানে ঘুমিয়ে আছে এক বিপ্লবী
তোমাদের গানে তার ভেঙে যাবে ঘুম
চারিদিক হয়ে থাক নিথর নিঝুম
শুয়ে আছে গায়ে দিয়ে ঘাসের চাদর
কোথায় প্রেমিকা তার হায়
কে করে আদর
রাইফেল পড়ে আছে তার
হাতে নেই ধারালো ড্যাগার
বিপ্লবী মিশে আছে এ মাটির সাথে
সব চেয়ে ভালো যাকে বেসেছিলো সে
যেতে যেতে বলেছিলো নেড়ে দুই হাত
যদি রোখে সকলেই রেখে কাঁধে কাঁধ
কেটে যাবে দুর্দিন আর কালো রাত
***
বহু দিন হয়ে গেছে পার
বিপ্লবী জেনেছে কী আর ?
চকোলেট ও চুমু
আর কিছুদিন পরেই জানি
আসবে তুমি আমার কাছে,
পকেটটাতে হাত ঢুকিয়ে
দেখবে তাতে কি কি আছে।
যাবার সময় তোমার গালে
থাকবে জানি খয়েরি দাগ,
আমার মুখে রেখে যাবে
তোমার মিষ্টি চুমুর স্বাদ।
উৎসের খোঁজে
এর উৎস কোথায় জানি না
কোনো সাগরের তলদেশে?
নাকি কোনো পাহাড়ের হ্রদে?
এর উৎস খুঁজে পেতে আমি
সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা চালিয়েছি
মহাভারতের সেই প্রসুত অণ্ডে খুঁজেছি
বিগ-ব্যাং থিওরিতেও কিছু লেখা নেই।
খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত এই মন
যখন শুয়েছিলো অরণ্যের ঝরানো পাতায়
ছায়াপথ থেকে কেউ এসে বলে
“এই আমি! হৃদয়ের কাছে!
যুগ যুগ ধরে তোমার প্রেমের উৎস!”
১৩.০১.২০১৫
বিস্তারিত»