# এই লেখাটি বাংলাদেশ হতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণকারী সকল “ব্লু হেলমেটধারী”দের জন্য উৎসর্গকৃত যাঁরা শান্তির জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের ঝুঁকি নিয়ে জাতিসংঘের পক্ষে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত এলাকায় দায়িত্ব পালন করেন।
২৬ জুন, ২০……
সকাল ০৬০০-০৭৩০
২৯। গতকাল রাত থেকেই কেমন যেন একটু অস্থির লাগছিলো… ফজর নামাজের পর থেকে মনটা খুবই খারাপ লাগছে। বুড়ির সাথে কথা বললাম…আজ সারাদিন পেট্রোলিং এর জন্য বাইরে থাকবো…টেনশন করতে মানা করে দিয়েছি। কিন্তু ষোল বছরের বিবাহিত জীবন…আর ছয় বছরের প্রেম… কমপক্ষে বাইশ বছর ধরে আমাকে চেনে…
বললো… “কি, আমি সহনশীলতা হারিয়ে ফেলছি দেখে বেশী মন খারাপ?”
– “না, তা নয়…এমনিই ভাল লাগছে না…অস্থির লাগছে। ছেলেমেয়েরা কই?”
# “স্কুলে গিয়েছে। চিন্তা করো না, আল্লাহ্ ভরসা। আর তো মাত্র কয়েকটা দিন… আগষ্টের ৭ তারিখ দেখতে দেখতে চলে আসবে…”
– “ওরে পাগলু, কোথায় আমি তোমাকে বুঝাবো…তা না…বরং উল্টো তুমিই আমাকে বুঝাচ্ছো!!”
# “ঠিকই আছে…আমার সাথে তো মোটামুটি সবাই আছে…কিন্তু তোমার সাথে তো আমরা কেউ নাই…”
– “কি বলিস্ রে বুড়ি, তোরা সবাই আছিস্ আমার সাথে…আমার পকেটের মানিব্যাগে…বুকের মাঝে…মনের মাঝে…সবখানে!!”
লাইনটা কেটে গেল…মোবাইল নেটওয়ার্কটাও এমন!!
সকাল ০৭৩০-০৮৩০
৩০। আমার অস্থায়ী বাসস্থানের রুমমেট মেজর “তানদিন ওয়াংমো” যখন ঘুম থেকে উঠলো…ততক্ষণে আমি বুলেটপ্রুফ ভেস্ট (বিপি) আর হেলমেট পরিধানসহ পুরোদস্তর রেডি। এমনকি আমার সব জিনিসপত্রও গুছিয়ে রেখেছি। সচরাচর আমি একটু অগোছালো প্রকৃতির… নেহায়েৎ ঠেকায় না পড়লে জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখি না…কিন্তু এখানে এসে একটু অন্য রকম হয়েছি। নিজের কাজ এখন আমার নিজেকেই করতে হয়…আগে হোক আর পরেই হোক!! আমার বর্তমান কন্ডিশন দেখলে বুড়ি ভীষণ খুশী হতো…উচিৎ শিক্ষা হচ্ছে আমার। আমি সম্পূর্ণ রেডি দেখে রুমমেটও আর তেমন সময় ব্যয় করলো না…অবশ্য এমনিতেও ও যথেষ্ট গোছালো…।
৩১। আজ আমরা এখান থেকে “লাসু” শহরের দিকে যাব…মানবাধিকার সংস্থার লোকজনকে প্রোটেকশন দিতে হবে। কি অদ্ভুৎ একটা ব্যাপার…প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষগুলিকে “মানবিক সাহায্য আর ঔষধ সামগ্রী” দিতে যাচ্ছে একদল শান্তিপ্রিয় মানুষ…তাদের “ফোর্স প্রোটেকশন” দিচ্ছে “সামরিক বাহিনীর” সদস্যরা…যারা কি না “শান্তি হন্তাকারক” হিসাবে পরিচিত। আবার, একই সাথে… “শান্তি” আনার নাম করে একই দেশের দুই পক্ষের লোকজনের মাঝে অস্ত্র আর গোলাবারুদের ঝনঝনানি!! হায় রে অস্ত্রব্যবসা…হায়রে মানুষের অর্থের লোভ!!
কাহিনী কি? আজ দেখি আমাকে “উদাস” রোগে পেয়েছে!!
সকাল ০৮৩০-১০০০
৩২। নেপাল ব্যাটালিয়নের আজকের পেট্রোল ডিউটির বস্ ক্যাপ্টেন “রমেশ থাপা”কে আমার খুব মেথোডিকাল মনে হলো…একেবারে বুকিশ (বই ধরে) চলাফেরা…গোছালো সেটআপ। অন্যান্য দিনের মতনই আমাদের ৩০ জনের প্লাটুন…যথারীতি প্রথমে এপিসি (আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার)…তারপরে আমাদের অর্থাৎ এমএলও (মিলিটারী লিয়াঁজো অফিসার)-দের গাড়ী…তারপরে একটা পিকআপ…তারপর বেসামরিক মানবাধিকার সংস্থার লোকজনের জন্য চারটা গাড়ী…তারপর আবার আরেকটা পিকআপ…আর সবশেষে আরেকটা এপিসি…আক্রমণ হলে যেন দ্রুত লম্বালম্বি ব্যারিয়ার তৈরী করা যায়।
আমি হঠাৎ কি ভেবে মেজর “তানদিন ওয়াংমো” কে বললাম, “আচ্ছা, মেজর, বলো তো… কোনদিন যদি লম্বালম্বি আক্রমণ না হয়ে আড়াআড়ি আক্রমণ হয়… তখন কি হবে??”
হাসতে হাসতে ও তখন উত্তর দিল… “কি আর হবে স্যার, আমরা নেই হয়ে যাব!! হাজার হলেও, আমরা যারা সামরিক বাহিনীর লোক…তারা তো বুলেটের মতোই এক্সপেন্ডেবল (খরচযোগ্য) এবং রিপ্লেসেবল (প্রতিস্থাপনযোগ্য)!!”
৩৩। আমরা সকাল থেকে প্রস্তুতি নিয়ে থাকলেও যাত্রা শুরু করতে করতে ঠিকই সাড়ে আটটা পার হয়ে গেলো…সিভিলিয়ানদের নিয়ে চলা- সে এক দারুণ ব্যাপার!! ইউএন এনভারনমেন্টে ওনাদের সাথে একত্রে কাজ করাটা একটা বিরাট মজার বিষয়!! সব সময়েই মিলিটারী থাকে ওনাদের আন্ডারে… ওনাদের কাছেই জবাবদিহিতা করতে হয়, ওনাদের কাছে গালি খেতে হয়……কারণ মিলিটারীরাই নাকি শান্তি নষ্ট করে!! আবার, ওনাদেরকেই প্রোটেকশন দিতে হয়!!
৩৪। মেজর “তানদিন ওয়াংমো” হঠাৎ করে জিজ্ঞেস করলো, “স্যার, আপনি কি গাড়ি চালাবেন?”
– “ না রে ভাই, এখন নয়। ফেরার সময়ে দেখা যাবেক্ষণ। অবশ্য তুমি যদি টায়ার্ড থাকো…তাহলে দিতে পারো।”
# “না স্যার, ভাবলাম…আপনি গাড়ি পেয়ে গেলে তো আর আমাকে সেটা চালাতে দেবেন না…তাই এখন আপনাকে একটু ঋণী করিয়ে রাখি!! পরে যাতে আপনারটা আমাকে চালাতে দিতে বাধ্য হন।”
– “আরে না, তুমি আমাকে যে সাপোর্ট দিয়েছো, দেখো…তোমাকে আমি সবরকমের সাপোর্টই দেবো!!”
৩৫। হঠাৎই সামনের দিক থেকে গোলাগুলির আওয়াজ ভেসে এলো…সামনের এপিসি-টা গতি কমালো না…একটু এগিয়ে গেলো। চারপার্শ্বে ঘন গাছপালা…একটু কেমন পরিবেশ। “তানদিন ওয়াংমো” গাড়ীর গতি কিছুটা কমিয়ে দিল…
পিছনের গাড়ীগুলিও বোধহয় একটু পিছিয়ে পড়েছে। আমি সাইড মিররে কিছু দেখতে পেলাম না… মাথার হেলমেটটা খুব ঝামেলা করছে!!
ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনের গাড়ীগুলিকে দেখার চেষ্টা করলাম…একইসাথে দরজা খুলে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিলাম। কারণ, এমএলও হিসাবে নিগোসিয়েশনের দায়িত্ব আমাদের…আর, আমি যেহেতু সিনিয়র…আমি-ই যাবো কোন চেকপোষ্ট থাকলে সেখানে কথা বলতে।
আমাদের কাছে সকল প্রকার কাগজপত্রই আপডেটেড আছে…মানবিক সহায়তা আর ঔষধ দেওয়ার জন্য অত্র এলাকার স্থানীয় কাউন্টি কমিশনারের অনুমতির চিঠি আছে…সাথে সরকারী এবং বিরোধী দল অর্থাৎ এসপিএলএ (সুদানীজ পিপল্স লিবারেশন আর্মি) এবং এসপিএলএ-আইও (সুদানীজ পিপল্স লিবারেশন আর্মি ইন অপোজিশন) দুই দলেরই কাগজপত্র রয়েছে। ফলে, ইনশাআল্লাহ্ যে কাউকেই মনে হয় বুঝ দিতে পারবো!! অবশ্য, এটা ইউএন…আমরা বলি “আন” যার কমন অর্থ হলো “আনপ্রেডিক্টেবল”!!
৩৬। কি ব্যাপার? ডান পাশ থেকে গুলির আওয়াজ হলো মনে হয়!! একটা নয়, কয়েকটা!! আমাদের গাড়ীর উপরে আক্রমণ হচ্ছে না কি?? সচরাচর সবাই-ই জানে, এপিসি-র পরের গাড়ীটাতেই এমএলও-রা থাকে। কাজেই, আলোচনার জন্য ডাইরেক্ট এই গাড়ীর দিকেই সবাই আসে…কিন্তু গুলি!! গুলি করছে কেন??
বামে তাকিয়ে দেখি, মেজর “তানদিন ওয়াংমো” স্লাইড করে গাড়ীর নীচে চলে গিয়েছে… ওখান থেকে চিৎকার করে আমাকে বাম দিক দিয়ে নীচে স্লাইড করে নেমে আসতে বললো।
ডান দিক থেকে আবার গুলি শুরু হয়েছে…আমি আমার সীট থেকে উঁচু হয়ে ক্রল করে বাম দিক দিয়ে নেমে আসার চেষ্টা করলাম…এবং মনে হলো…হঠাৎ একটা বিরাট ধাক্কা খেলাম!!
একি? আমি নামতে পারছি না কেন?? মাত্র কয়েক ইঞ্চি দূরে মেজর “তানদিন ওয়াংমো”-র হাতে হাত রাখতে পারছি না কেন আমি? মাথাটা কেমন যেন ঘুরে উঠছে…কাহিনী কি…আমি কি গুলি খেয়েছি নাকি???
নিজেকেই নিজে প্রবোধ দিলাম… “ওরে ঘাবলুস, আগে তো মাথা ঠান্ডা কর!!! সর্পভ্রমে রজ্জু…না কি রজ্জুভ্রমে সর্প…সেটা তো আগে দেখ!!” তারপর…হঠাৎ করেই দেখি সব অন্ধকার!!
৩৭। তীব্র যন্ত্রণায় চোখ মেলে চাইলাম, দেখি… আমি মাটিতে শুয়ে আছি। মেজর “তানদিন ওয়াংমো” আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে রয়েছে…আমি শরীরটাকে নাড়াতে গেলাম…ডানপাশটাকে অবশ মনে হচ্ছে। আমার বিপি (বুলেটপ্রুফ ভেস্ট) টার বাইরে প্রচুর রক্ত দেখতে পাচ্ছি…মনে হচ্ছে…আমার শরীর থেকে ওটাকে খুলতে অনেক কসরৎ করতে হয়েছে। আমার ডানপাশটাতেই সবকয়টা গুলি লেগেছে মনে হচ্ছে…ওহো…মেরুদন্ডেও লেগেছে না কি!!
নেপালীজ ক্যাপ্টেন রমেশ থাপা-কে দেখছি…একটুখানি গাইডলাইনের জন্য পারলে সেটটাকে ভেঙ্গে ফেলতে চাইছে বেচারা…
আমার সহকর্মী… মেজর “তানদিন ওয়াংমো” বেচারাকে অনেক কষ্ট করতে হবে…আমার কিছু হয়ে গেলে সবাই-ই তো ওর উপরে হামলে পড়বে…কারণ, “অলওয়েজ, সামওয়ান হ্যাজ টু বি ব্লেইমড্!!”
আচ্ছা, বুড়ি এখন কি করছে? আমার ছেলেটা …মেয়েটা কি স্কুল থেকে ফিরেছে?? আমার বাবা…মা…ভাই?? ওরা এখন কি করছে??
আমার বন্ধু মুকিত? দোস্ত…আমার…তুই কষ্ট করে একাই ছুটিতে যাস্ রে বন্ধু!!! আমি মনে হয় আর পারছি না রে!!
আচ্ছা, বুড়ি তো আমার মোবাইলের পাসওয়ার্ড জানেনা…!! ওকি জানে, ছেলের ফিংগার ইনপুট দেয়া আছে মোবাইলের লকস্ক্রীণে!! আর, ব্যানএফএমইউ-এর মআমার কোর্সমেট মঞ্জুর কি মনে করতে পারবে…ওর মোবাইলের পাসওয়ার্ডের আগের ডিজিটের পাসওয়ার্ড দেয়া আছে আমার মোবাইলের লক-এ??
আল্লাহ্, তুমি জানো…আমি আগামীবার হজ্ব করার নিয়্যত করেছিলাম…পারলে ক্ষমা করে দিও। আর, এর পরের ছুটিতে যাওয়ার সময়ে ওমরাহ্ করারও নিয়্যত ছিলো…তুমি তো জানোই!!
বুড়ি, মনে আছে…বলেছিলাম… “মণি রে, আল্লাহ্ যদি লিখে রাখেন যে ঘরের চিপায় আমার মৃত্যু হবে…সেইটা কি আর কেউ ঠেকাতে পারবে?”
আল্লাহ্ আমার মৃত্যু তাহলে সাউথ সুদানের এক প্রত্যন্ত “ইয়েই” এলাকার চিপা-য় লিখে রেখেছিল রে পাগলী!! মাফ করে দিস্ বুড়ি, জীবনে অনেক অন্যায় আমি করেছি তোর সাথে…আমাকে মাফ করে দিস্।
বাবা-মা, আমি তোমাদের সঠিক যত্ন নিতে পারিনি…আমাকে ক্ষমা করে দিও…আমার জন্য দোয়া করো!!
বেটা মাহীন, ভাল হয়ে থাকিস্ বাপ…তোর মা-কে আর বোনটাকে দেখে রাখিস্।
ফাতিমা, তোর জন্য চকলেট বিস্কিট আনতে চেয়েছিলাম মা…স্যরি, পারলাম না!!
দাদা (আমার ছোট ভাইটাকে আমি এই বলেই ডাকি), আব্বু-আম্মুকে আর বুড়িকে দেখে রাখিস্ ভাই…নিজের পাশাপাশি…সবার দেখভাল করিস।
আলহামদুল্লিল্লাহ্, আল্লাহ্…, তুমি এই জীবনে আমাকে যা দিয়েছো…তোমার কাছে তার জন্য লাখো-কোটি শুকরিয়া। আমার অবর্তমানে আমার পরিবার-পরিজন…আত্মীয়-স্বজন…সবাইকে ভাল রেখো!!
দোস্ত মঞ্জুর, মনে আছে…আমাদেরকে অনেক আগে একজন বলেছিল… “মিশনে গেলে আর যাই করো…এমওপি (মুভমেন্ট অফ পার্সোনেল) আর সিএমআর (কার্গো মুভমেন্ট রিকয়েস্ট) কি জিনিস…শিখে রেখো”
আমি আজ এই দুইটার জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে যাচ্ছি রে দোস্ত…এই দেশে এমওপি নিয়ে এসেছিলাম…সিএমআর নিয়ে বের হয়ে যাবো…
৩৮। কেউ একজন আমার মুখে পানি ঢালছে…… লম্বা করে কান্না চেপে শ্বাস নিল কে যেন…আমার ঠোঁট দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে…কলেমা পড়ে নিলাম…
অনেক বছর আগে…বুয়েট (বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলোজি)-এর পরীক্ষার আগের রাতে পড়ার সময়ে আমার এক বন্ধু “সুজন”-কে বলেছিলাম…“দোস্ত, আমাকে তৈরী করে আল্লাহ্ ফেরেশতাদেরকে বলেছেন…দিলাম এরে ছাইড়া… চাবি একটা মাইরা—–সারাজীবন ও সবাইকে জ্বালিয়ে মারবে!!”
আসলেই তা-ই করেছি। ছোটবেলায় বাবা-মাকে জ্বালিয়েছি…আর, আমার জীবনে আসার পর থেকে বুড়ি শুধু জ্বলেই গেল। আজ, শেষবেলাতেও মনে হচ্ছে সাউথ সুদানের সবাইকে …বিশেষ করে ব্যানএফএমইউ-৩ সদস্যদের জ্বালিয়ে যাব…স্যরি গাইজ্…স্যরি টু পুট ইউ ইন থিক স্যুপ!!
আলহামদুলিল্লাহ্…
“ফাবি আইয়্যি আ’লা ই রাব্বিকুমা তুকাজ্জিবান…অতএব, হে জ্বীন ও ইনসান…তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ কোন্ নিয়ামতকে অস্বীকার করবে??”
– “আমি তোমার সকল নিয়ামত…সকল দান স্বীকার করে তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি আল্লাহ্!!”
নিজেকে আবার নিজে গালি দিলাম… “ওরে পাগলা, সারা জীবন ভুল জায়গায় ভুল কাজই করে গেলি!! তুই না এখন কলেমা পড়বি!! তা না …তুই এখন সুরা আর রাহমান পড়ছিস??”
নিজের বোকামীতে নিজেই হাসি…ওরে ঘাবলুস, আল্লাহ্ কি আমার মনের খবর জানেন না!!
৩৫। পনের মিনিটের মধ্যেই নেপাল ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়নের সিও এবং টুআইসি ডাক্তারসহ অতিরিক্ত স্পেশাল ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হলেন…
টুআইসি “মেজর বিষ্ণু থাপা” অবাক চোখে চেয়ে রইলো নিথর পড়ে থাকা দেহটার দিকে…মনে প্রশ্ন “স্যারের মুখে হাসি কেন??”
হেলিকপ্টারের জন্য বারংবার তাগাদা দেয়ার পরে জবাব আসলো… “ইজ হি অলরেডি ডেড? ইফ ইয়েস্…দেন স্যরি, ডেডবডি ক্যান নট হ্যাভ এয়ার লিফট্।”
কিছুক্ষণ আগেও…বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নাম ও পদবীসহ প্রাণচঞ্চল একজন কর্মকর্তা…ইউএন-এর একজন মিলিটারী লিঁয়াজো অফিসার (এমএলও) এখন কেবলমাত্র একটা “ডেডবডি” হিসেবে শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে “শান্ত” হয়ে পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য পড়ে রইলেন!!
সমাপ্ত
## বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রয়াত লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোহাম্মদ আশরাফ সিদ্দিকী-এর স্মরণে যিনি সাউথ সুদানে মিলিটারী লিয়াঁজো অফিসার (এমএলও) হিসাবে শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত থাকাকালীন পেট্রোলরত অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
### বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রয়াত লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোহাম্মদ আশরাফ সিদ্দিকী সাউথ সুদানে মিলিটারী লিয়াঁজো অফিসার (এমএলও) হিসাবে শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত থাকাকালীন পেট্রোলরত অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করার (২৭ জুন ২০১৮, সময়-আনুমানিক সকাল ১০৪৫ ঘটিকা) সময়ে লেখক সাউথ সুদানস্থঃ জুবায় “ব্যানএফএমইউ” কন্টিনজেন্ট-এর সদস্য হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
valo