ডাকটা ঠিক কোথা থেকে আসছে আবীর তা বুঝে উঠতে পারল না। এই রকম মিষ্টি একটা গলায় কে ডাকে তাকে এই খোলা রাস্তায়? আর গলাটাও কেমন জানি চেনা চেনা লাগছে তার। অনেক আগে শুনেছিল ,এখন ঠিক মনে করতে পারছে না। মুহূর্তের মধ্যেই এতসব ভেবে উল্টো ঘুরতেই যা দেখল তাতে তার চোখদুটো আপনাআপনি বড় হয়ে গেল আবীরের। রাস্তা দিয়ে একরকম দৌড়েই তার দিকে আসছে একটি মেয়ে। একটি মেয়ে বললে অবশ্য ভুল হবে,
বিস্তারিত»পোড়া পতাকার গন্ধ
আমার গায়ে এই যে জার্সিটা দেখছেন, সেটা খুব পরিচিত লাগছে, তাইনা? হুম, লাগতেই হবে। এশিয়া কাপে আমরা এই জার্সি পরে খেলেছি। ভারত আর শ্রীলংকাকে ঘোষণা দিয়ে হারিয়েছি। ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে কাপ উঁচিয়ে ধরতে পারিনি। বরং সাকিব-মুশফিক-নাসিররা মাথা নিচু করে কেঁদেছে। বাঙালির চোখের নোনতা জলে ভিজেছে এই লাল-সবুজের জার্সি। জানেন, আমি খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। খুব কষ্ট।
খুব বেশি কষ্ট পেলে আমি বারান্দায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকি।
বিস্তারিত»মৃত্যুর আগে
-১-
গতকাল হুমায়ূন কবির সাহেব কলকাতা এসেছেন শুনে জীবনানন্দ সকাল সকাল তাঁর বাসায় চলে এসেছেন। কিন্তু আজকেও হুমায়ূন কবির সাহেবের সাথে দেখা হল না। পিএ যদিও বলল উনি বাড়িতে নেই, তবু সাক্ষাতের জন্য আসা এত লোকজন আর গাড়ি বারান্দায় দাড়ানো গাড়ি বলে দিচ্ছে একজন নিঃস্ব কবির সাথে দেখা করে চাকরির আর্জি শোনার চাইতে আরো অনেক বড় কাজ আছে মন্ত্রী মশায়ের। দুই মাস আগে একবার কবির সাহেবের সাথে দেখা হয়েছিল।
বিস্তারিত»কলেজ আউট
বাজার থেকে আজ তা প্রায় বারোটা বছর পর হবে, একটি ভিডিও গেমসের সিডি কিনে এনে করিম আর তার ছেলে সজীব খেলছে। করিম তো বুড়া আর সজীব ক্লাস ফাইবে পড়ে কিন্তু তা সত্বেও দুজন খেলাটার স্বাদ পেতে মোটেও বাকি রাখছে না। সজীবের মা মিসেস লিজা করিম অবাক হয়ে বাপ-বেটার কান্ডটা দেখছে। খেলাটার নাম “কলেজ পলায়ন-১”।
।এক।
১৯৯৫ সাল। নবম শ্রেনীর ছাত্র করিম আর হায়দার।
বিস্তারিত»অতঃপর…!!!
নিহাল কে ভালোবাসে অরিন। নিহাল নামটা খুব পছন্দ ওর। প্রথম যেদিন ওর প্রেমে পড়ল সেদিন বৃষ্টি ছিল, ছেলেটা ওকে অনেকগুলো গোলাপ দিয়েছিল। ভালোবাসার সময়গুলো কেমন জানি কেটে যায়। একটু ঘুরতে যাওয়া, হাত ধরে বসে থাকা, হাতধরাটা ন্যাকামি হলেও অদ্ভুত শান্তি লাগে,৫ আঙ্গুল বারবার আরেক হাতের স্পর্শে ঘেমে গেলেও হাত না ছাড়ার অনুভূতি অন্যরকম। চোখের সামনে দিনগুলো ভাসে। যেদিন নিহাল ওর গলা টিপে ধরে টাকা চাইল সেদিন অরিনের জন্মদিন ছিল।
বিস্তারিত»আলোর জাফরি
গ্লাসের পানি একটু একটু কাঁপছে। কেঁপেই যাচ্ছে।
ইতু দু’হাতে শক্ত করে ধরেও থামাতে পারছে না।এক ঢোক খেয়ে গ্লাসটা নামিয়ে রাখে পাশে।
এই আতাগাছের ছায়া টুকু বাদ দিলে সারা বাড়ি ঝকঝক করছে রোদে আর সেই বিহানবেলা থেকে ছুটতে শুরু করা মায়ের যত্নে।
পিড়িতে জুবুথুবু ইতু হাটুতে থুতনি ঠেকায় সাবধানে, অনুভব করে নাসিমা বেগমের ব্যাস্ততা।
উঠান জুড়ে কত কি যে শুকাতে দেয়া!মুড়ির ধান,আতপ চাল,কুমড়ার বড়ি,ট্যাংরা চান্দার শুটকি,ইতুর বিছানা বালিশ,আধভেজা পাতার রাশ,ধঞ্চে কাঠি আরো কত কি !
আমাদের ভূগোল স্যার
আমাদের ভূগোল স্যার ছিলেন হিসেবি। শুধু হিসেবি নয় ভয়াবহ হিসেবি। কতটা
হিসেবি বলি, তিনি ছিলেন আমাদের ক্লাস টীচার। ক্লাস টীচারের দায়িত্ব ছিল
অনেক। ক্লাসের কোন জিনিসপত্র নষ্ট হলে তা ঠিক করার দায়িত্ব ছিল স্যারের।
একবার হঠাত্ করেই ক্লাসের ঘড়ির ব্যাটারি নষ্ট হয়ে গেল। যেহেতু আমাদের
ক্যাডেট কলেজে অনেক নিয়ম কানুন ছিল তাই চাইলেও ব্যাটারি পরিবর্তন করার
সুযোগ ছিলনা। এদিকে পরীক্ষাও খুব কাছে চলে এসেছে।
আম
খাবার টেবিলে আমার বউ আমাকে প্রশ্ন করল, “তুমি আম চেনো?”
প্রশ্নটা শুনে যথেষ্ট বিরক্ত হলাম। আমি বাঙালী ছেলে। বাঙালী হয়ে আম চিনব না, তা হয় নাকি? কন্ঠে যথেষ্ট বিরক্তি ঢেলে উত্তর দিলাম, “আম না চেনার কি আছে?”
“না, মানে কোনটা কি আম, সেটা চিনতে পার?”
একটু চিন্তা করলাম।এবার প্রশ্নটা যুতসই হয়েছে। আমিও চামে কেটে বের হবার চেষ্টা করলাম, “কিছুদিন পর বাজারে গেলেই দেখবে বড় বড় সাইজের আম উঠেছে।
বিস্তারিত»তুর্কী জাতিকে নিয়ে কিছু কথা…
শুনেছি স্বপ্ন নিয়ে মানুষ নাকি বেঁচে থাকে। জীবনের চলার পথে স্বপ্ন নাকি মানুষের এক অপরিহার্য সহযোগী।যুগে যুগে মানুষ স্বপ্নের রকমফের করেছে। পরিবর্তন করেছে স্বপ্নের সংজ্ঞাকে। শুনেছি কেউ কেউ নাকি স্বপ্নকে আশা বলে ব্যক্ত করতেই পছন্দ করেন। তো সেই রকম কত স্বপ্নই না আমরা দেখে থাকি জীবনে। বিশেষত একজন বাঙ্গালীর স্বপ্ন দেখার সংজ্ঞাটা এবং পরিধিটা বেশ বড়। কথায় বলে বাঙ্গালী নাকি স্বপ্ন দেখতে ভালবাসে। আর ১৮ বছর বয়সের এক যুবক তরুণের ক্ষেত্রে সেই স্বপ্নটা অনেকটাই অতিমাত্রায় রঙ্গিন।
বিস্তারিত»“কি অয় এই সনদ দিয়া? সনদ দিয়া কি পেট ভরে??”
কুরবানির ঈদ বিধায় গরু কাটার কাজ শেষ করেই ছুটতে হয়েছে মাংস বিলির কাজে। সারা পাড়া মাংস দিয়ে আসছিলাম, তখন ট্রেতে অনেক মাংস বাকিই ছিল। অনেকেই নিজের ভাগটাও দিয়ে পাঠিয়েছেন। তো বাসায় আসার পথেই হাতের বামে মসজিদ পরে। ঐ মসজিদেই জুম্মা ও অন্যান্য নামাজ আদায় করি আমাদের পাড়ার সবাই। সেই মসজিদের সিঁড়িতে দেখি একজন বৃদ্ধ বসে আছেন ছেঁড়া একটা পাঞ্জাবি আর লুঙ্গি পড়া। পাশে একটা প্লাস্টিকের ব্যাগ।
বিস্তারিত»সেলস পারসন!!
১।
পরীক্ষার কারনে কয়েকদিন হলে কাটিয়ে বাসায় ফিরে দেখি হুলস্থুল ব্যাপার। নতুন ভাড়াটিয়া এসেছে- তাদের মাল-পত্র আনা নেয়া, লোকজনের হাঁকডাকে পুরো বাড়ি মাথায় উঠেছে। বাসায় ফিরে মা’কে খাবার দিতে বলে আমার ছোট বোন টুনিকে ডাক দিলাম। ওর নাম দিয়েছি আমি ‘এফ এম’, কলোনীর যে কোন ভাল-মন্দ খবর আমি সবসময় ওর কাছ থেকেই পাই।
-ভাইয়া, ডেকেছ? টুনি জিজ্ঞাসা করল।
-তোর রেডিও প্রোগ্রাম শুরু কর…
ব্রেথলেস
১.
তরুণ স্বামীর বাড়ি ফেরার পথ চেয়ে নববিবাহিতা তরুণী স্ত্রীর অপেক্ষার মতন দম আটকে আসা ভালোবাসার উদাহরণ পৃথিবীতে খুব কমই আছে। সংসারের বয়স বাড়ার সাথে সাথে কমতে থাকে ভালোবাসা, আরও নির্দিষ্ট করে যাকে এইমাত্র বলা হল দম আটকে আসা ভালোবাসা। কিন্তু একইসাথে চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তে থাকে নির্ভরতা আর অভ্যস্ততা, এককথায় যাকে বলে মায়া-মমতা।
২.
প্রায় রাতেই ঘুমের মাঝে শারমিনের গলা চেপে ধরে কেউ।
বেপরোয়া নাবিক
কলেজের প্রথম দিন জড়সড় ভাবে বাতাসের সাথে মিশে থাকার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টায় নাজেহাল হচ্ছি। বাবা মায়ের বিদায়ের সময় ঘনিয়ে আসছে, অডিটোরিয়ামের কোনায় বসে নিজেকে আড়াল করে মায়ের আঁচল ভেজাচ্ছি।এভাবে কেঁদেও সুখ নেই! চারপাশে অনেকেই শরমের তোয়াক্কা না করে প্রাণ খুলে কাঁদছে।
এমন শোকসন্তপ্ত পরিবেশে উচ্ছল হাঁসির শব্দে চমকিত হয়ে অদূরে বসা ছেলেটিকে দেখলাম। আর সবার থেকে আধা হাত লম্বা, কাল লিকলিকে গড়নে জীবন্ত কংকাল।
বিস্তারিত»দৈনিক ধারাবাহিক অভিনয়…
রাত ৯.১৫। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল। জহির বসে আছে বিছানায়।
তার মোবাইলটা বেজে ওঠে হঠাৎ। হাতে নিয়ে দেখে মা কল দিয়েছে গ্রাম থেকে। সে কলটা কেটে দিয়ে নিজেই কলব্যাক করে।
– হ্যালো, মা।
– হ্যালো বাবা কেমন আছিস রে?
– আমি খুব ভাল আছি মা। তোমার শরীর এখন কেমন? রাশেদ আর মিলি কেমন আছে?
– আমার শরীর এখন একটু ভাল। রাশেদ আর মিলি পড়ছে।
মুহিব বাঁচবেই
কৃতজ্ঞতা: রেজা শাওন, পিসিসি, ২০০১-২০০৭
মুহিবদের ব্যাচের একজন হাসান যখন আমাকে বলল, ভাই মুহিবের জন্য ফান্ড রেইজের কাজ শুরু হয়েছে। সম্ভব হলে একটা লেখা রেডি করেন। বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়াগুলোতে লেখাটা ছাপানো প্রয়োজন। হাতে সময় একেবারেই নেই। হাসানের মেসেজটা পাওয়ার পর আমি আমার বয়স হিসেব শুরু করলাম। পহেলা সেপ্টেম্বর ১৯৮৯ এর হিসেবে আমার বয়স চব্বিশ হতে আরও দুই মাস বাকী। জীবনে এখনও আমার কী কী করা বাকী সেই লিস্টটা যখন আমি বের করি,
বিস্তারিত»