নিহাল কে ভালোবাসে অরিন। নিহাল নামটা খুব পছন্দ ওর। প্রথম যেদিন ওর প্রেমে পড়ল সেদিন বৃষ্টি ছিল, ছেলেটা ওকে অনেকগুলো গোলাপ দিয়েছিল। ভালোবাসার সময়গুলো কেমন জানি কেটে যায়। একটু ঘুরতে যাওয়া, হাত ধরে বসে থাকা, হাতধরাটা ন্যাকামি হলেও অদ্ভুত শান্তি লাগে,৫ আঙ্গুল বারবার আরেক হাতের স্পর্শে ঘেমে গেলেও হাত না ছাড়ার অনুভূতি অন্যরকম। চোখের সামনে দিনগুলো ভাসে। যেদিন নিহাল ওর গলা টিপে ধরে টাকা চাইল সেদিন অরিনের জন্মদিন ছিল। নীল জামদানি নিহালের খুব প্রিয়। ছেলেটার জন্য মায়া লাগত ওর। এত নিষ্পাপ দেখতে। থাক নাহয় বাসা থেকে কিছু টাকা চুরিই করতে হইসে তো কি। ছেলেটা তো ভালো থাকবে। ওর ভালোবাসা।
“মা কবুলটা বলে ফেলেন…!! লজ্জার কিছু নাই, এখানে সবাই আপনার আপন।” – কাজি সাহেবের কণ্ঠে চমকে উঠে অরিন। কবুল বলতে হবে। সবাই অপেক্ষা করতেসে কবুল বলতে হবে। সবাই আলহামদুলিল্লাহ ঠোঁটে নিয়ে বসে আছে।
অরিনের মা কান এগিয়ে মেয়ের “কবুল” শোনার চেষ্টা করতেসেন। অনেক কষ্টে ভালো ছেলে পেয়েছেন,ছেলে ব্যারিস্টার। আজকাল কার যুগে এমন ছেলে পাওয়া মুশকিল। ঢাকায় বাড়ি-গাড়ির মালিক। মেয়ের বিয়ে দিয়ে মেয়েকে বিদায় দিতে পারলে তিনি মুক্ত। যদিও বয়স একটু বেশি তবুও ছেলেমানুষ বয়স্কই ভালো। তার আর অরিনের বাবার বয়স এর পার্থক্য ও ১৩ বছর। তাতে কি তারা সুখী হয়নি? হয়তো মাঝে মাঝে ঝামেলা হয় তবুও দিনশেষে ডাল-ভাত খেয়ে সুখীই তো। মেয়েও ভালো থাকবে জানেন তিনি।
” কবুলটা বলে ফেল তো মা। জানি মেয়েদের কষ্ট হয় মা,আমার ও হইসে কিন্তু একবার বলে ফেললেই দেখবি তুই আর তোর নাই মা। আরেকজনের সাথে মিশে গেছিস।”
কথাগুলো শুনে চমকে মায়ের দিকে তাকায় ও। যেদিন নিহাল প্রথম ওর ঠোট স্পর্শ করেছিল সেদিন ও এত চমকায় নি ও,এমনকি যেদিন জানতে পারে এতদিন সুধুই খেলা ছিল সব সেদিনও না। আজ কেন? কিসের বাধা…ছেলেটা ভালোই শুধু ১১ বছরের বড়। টাকা-পয়সার অভাব নাই। ওর চেহারা কিনতে আসছে, দোষের কিছু না।
ওর আর আছেই বা কি। ভালোবাসাটুকু নিহাল নিংড়ে নিয়ে গেছে, বাচতে হলে বাকি সম্বল বাইরেরটাই। সবাই খুশি তাতে ও খুশি। কবুল আসেনা কেন তাহলে?
“অরিন অনেকক্ষণ হইসে কবুল বল নাহলে বেইজ্জতি হবে।”
মায়ের চোখের দিকে তাকায় ও। আজ ও আরেকজনের অংশ। অংশের পুরোটা জুড়ে নিহালের নীল জামদানী পড়া মাংসের পিণ্ড।
“মা কবুল…!!!”
“কাজি সাহেব আলহামদুলিল্লাহ বলেন,মেয়ে আমার কবুল বলসে।”- আনন্দে চোখে জল আসে দিলরুবার।
আজ অরিন সুখী…!!!
সুধুই
শুধুই।
ভালোবাসার মানুষ ছাড়া অন্য কারো সাথে বিয়ে হলে মেয়েরা কি বিয়ের আসরেবসে এসব ভাবে!
মনে হয় না।
এইসব ছুড়ে ফেলে দিয়েই বিয়ের জন্য বসে।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
রাজীব ভাই,এটা কোন এক সত্যি ঘটনা কে কেন্দ্র করে লিখা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হয়ত ভাবেনা। কিন্তু লিখার সময় শুধু সিচুয়েশন টা মাথায় ছিল। 🙂