ইদানীং আমি ভয় পাই-
যানজটকে, কারণ স্থবির যানে আমার নিঃশাস বন্ধ হয়ে আসে।
ভয় পাই অসময়ে আমার বাড়ীর কাছে রিক্সায় ঘোরা
কোন আগন্তুকের মাইকে উচ্চারিত নির্লিপ্ত ঘোষণাকে,
কারণ অনেক চেনা মুখের চিরপ্রস্থান আমাকে ব্যাথিত করে।
আমি আরো ভয় পাই-
যখন প্রবাসী কোন স্বজনের দেশে ফেরার কথা শুনি,
কারণ, ইদানীং পর পর কিছু ঘটনা ঘটে গেছে, যখন
পরিচিত প্রবাসীর লাগেজ এসেছে, কিন্তু প্রবাসী আসেনি,
এসেছে তার নীরব নিথর দেহ নিয়ে শীতল কাঠের কফিন।
খুব বেশী ভয় পাই-
যখন কোন হাসপাতালে স্বজন দেখতে যাই, আর দেখি
মুখোশে নাক মুখ ঢাকা, সবুজ এ্যাপ্রন পরা নির্বাক নার্স
স্ট্রেচার ট্রলীতে করে মুমূর্ষ রোগীকে নিয়ে দ্রুত ধাবমান,
আর ঘোরে থাকা সেই রোগীটি এক অনিশ্চিত প্রত্যাশায়
কাতর চোখে শূণ্যে তাকিয়ে অপলকে দেবতাকে খুঁজছে।
এক্ষুনি সে অবেদন অচেতনে চলে যাবে, সুনিপুণ হাতে।
হয়তো সে ভাল হয়ে একদিন ফিরবে স্বগৃহে, হয়তো না।
তার হাত ছেড়ে দেয়া স্বজনের মুখ দেখে আমি ভয় পাই!
পাদটীকাঃ আজ দুপুরে আমার এক অসুস্থ কোর্সমেটকে দেখতে সিএমএইচে গিয়েছিলাম। লিফটের সামনে অপেক্ষা করছি, এমন সময় দেখলাম, বাম পাশের আইসিইউ এর দরজা খুলে গেল, দু’জন সবুজ এ্যাপ্রন পরা নার্স একটা স্ট্রেচার ট্রলীতে করে মুমূর্ষ এক রোগীকে নিয়ে ডান পাশের ওটিতে ঢুকে গেল। যে রোগীকে নিয়ে গেল, আমাকে ক্রস করার সময় তার সাথে আমার চোখাচোখি হয়। খুব মায়া অনুভব করি তার জন্য। আল্লাহ যেন তাকে দ্রুত আরোগ্য দান করে বাড়ীতে ফিরিয়ে আনেন! ট্রলীর পাশে তার একজন স্বজন তার হাত ধরে হাঁটছিল। ওটির দরজার সামনে গিয়ে তার স্বজন তার হাত ছেড়ে দিল, অশ্রুভেজা চোখে দাঁড়িয়ে থাকলো। ছবিটা মনে গেঁথে আছে।
ঢাকা
২০ আগস্ট ২০১৭
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।