এই ভালো, তবে এই ভালো….
তুমি একটা কিছু বললেই,
আমি চুম্বকের মত আকর্ষিত হই,
অভিভূত হই, আলোড়িত হই।
তোমার অদেখা মুখটা খুঁজতে থাকি,
চোখ দুটো খুঁজি, চোখের তারা খুঁজি।
আমার কান দুটো অতন্দ্র প্রহরীর মত
জেগে থাকে, শিশিরের শব্দ শোনার মত
তোমার মিহিসুর কন্ঠ শোনার জন্য।
কিন্তু এসব কোন কিছুই যখন হবার নয়,
যখন জানি, এ দু’চোখ তোমাকে
খুঁজে পাবে না,
যে জনপদ ঘুমায় না
এক কুড়ি হাইকু
হাইকু ২০১
পোর্টহোলে চোখ
গোলাপী ডলফিন খেলে
নির্জন সৈকত
হাইকু ২০২
সুপার পিঙ্ক মুন
ঘরে নাইকো চাল ডাল মা
খিদা লাগিচে
হাইকু ২০৩
নিষ্ঠুর এপ্রিল
পূর্ণীমায় কাল ছোপ
স্তব্ধ পৃথিবী
হাইকু ২০৪
তাজ্জব মুঠোফোন
অকাতর জ্ঞান বিতরন
রাজা উজির বধ
হাইকু ২০৫
মুক্ত পৃথিবী
প্রস্থান বা আগমনে
স্পর্শ চাই প্রিয়
হাইকু ২০৬
সরু মেঠোপথ
থেমে থেমে ত্রস্ত পায়
বেজী ফিরে চায়
হাইকু ২০৭
ঘরবন্দী মানুষ
শেষ রাতে পাখি ডাকে
ফুল কুঁড়ি জাগে
হাইকু ২০৮
সঙ্গনিরোধ কাল
নিজ ভাল পাগল বোঝে
গাড়ল তেজপাতা!
করোনা কালের দুটো লিমেরিক
একঃ ভুলো মন
করোনা ভয়ে ভীত হয়ে ঘরেই বসে আছি,
ঘরের বাইরে বের হবো না শপথ করেছি।
খাচ্ছি দাচ্ছি যখন তখন,
গল্প করছি ইচ্ছে মতন,
গোঁফ দাড়ি যে কাটতে হবে, সেটাও ভুলেছি!
ঢাকা
১৯ এপ্রিল ২০২০
দুইঃ নিষ্ফল প্রচেষ্টা
লকডাউনে আটকে আছি সারাটা দিন ঘরে,
এই সুযোগে লিস্টি করি গভীর চিন্তা করে।
স্বপ্নিল ধোঁয়া
চায়ের পেয়ালা থেকে
কুন্ডলী পাঁকিয়ে উড়ে যায় কিছু ধোঁয়া
খানিক পরেই মিলিয়ে যায়
শূন্যতায়!
মনের গহীন থেকে
অগোচরে বের হয়ে যায় কিছু ইচ্ছে ঘুড়ি
দীর্ঘশ্বাস হয়ে মিলিয়ে যায়
সপ্তাকাশে।
রঙিন সেই ঘুড়িগুলো
স্বপ্ন হয়ে থিতু হয়ে যায় মেঘের কোলে।
কোন এক শাওন রাতে আবার ফিরে আসে
বৃষ্টি হয়ে!
ঢাকা
০৮ মে ২০২০
জানুয়ারির হাইকু
হাইকু ১৫২
দুই হাজার কুড়ি
কারসাজি আর বিদূষক
নির্বাসনে যাক
হাইকু ১৫৩
বই আর বউ
অমিলে সৃষ্টির কথকতা
কবিতা ও ব্যর্থতা
হাইকু ১৫৪
ঘন কুয়াশা
রবির পরে মেঘ ছোটে
বাম ডানে উইপার
হাইকু ১৫৫
তুরাগ নদীর তীর
দিনের বেলায় হেডলাইট
ধীর হাইওয়ে
হাইকু ১৫৬
জেগে ওঠা চর
ধ্যান করে বকের দল
মোলায়েম রোদে
হাইকু ১৫৭
জানুয়ারির ভোর
লেপের মাঝে এলার্ম ঘড়ি
বিলাপসম বাজে!
ভুলে যেতে হয়
কে কবে কী বলেছিল,
কখন বলেছিল, এসব-
অন্তর কন্দরে রাখতে নেই,
এসব ভুলে যেতে হয়।
কার চকিত চঞ্চল হাসি
আকাশ থেকে এক ফালি
বিজলী প্রভা এনে দিয়েছিল,
সে কথা ভুলে যেতে হয়।
যার কথায় পরাণে প্রথম
নিক্কণের সুর বেজেছিল,
নিস্তব্ধ নীরবতার আচ্ছাদনে
তার স্মৃতি ঢেকে রাখতে হয়।
কার কান্নায় বুকের নদীটা
ক্ষণে ক্ষণে উছলে উঠেছিল,
অনুবাদ হাইকু
কোবায়াশি ইশার সাতটি হাইকু
এক
শীতল হাওয়া
সব শক্তি দিয়ে ডাকে
ঝিঁঝিঁপোকা
দুই
ঠাণ্ডা বাতাস
পেঁচিয়ে মোচড় দিয়ে
এখানে এলো
তিন
গরমে পর্বতমালা
আমার প্রত্যেকটি ধাপে
আরো দেখতে পাই
চার
চড়ুইপাখির ছানা
পথ ছাড়ো পথ ছাড়ো
ঘোড়া পার হচ্ছে
পাঁচ
গরুর বাছুরটি
গিয়েছে বেড়াতে
শরতের বৃষ্টি
ছয়
সেপ্টেম্বর মাস
ডোরাকাটা কিমোনো
পরেছে আকাশ
সাত
লোভ জাগানিয়া
ধীরে ধীরে তুলতুলে
তুষার পড়ছে
ইয়োশা বুসনের সাতটি হাইকু
এক
হারুসামে ইয়া
মোনোগাতারি য়ুকু
মিনো তো কাসা
বসন্তের বৃষ্টি
কথা বলতে বলতে
চলে যাচ্ছে
দুই
য়ুকু হারু ইয়া
ওমোতাকি বিওয়া নো
দাকি গোকোরো
বসন্তের গমন
চৌতারা বাদ্যযন্ত্র
ধারণের অনুভুতি
তিন
না নো হানা ইয়া
সুকি হা হিগাসি নি
হি ওয়া নিশি নি
ক্যানোলা ফুল
পুব দিকে চাঁদ
পশ্চিমে সূর্য
চার
বোতান চিরিতে
উচি কাসানারিনু
নি সান হেন
বিক্ষিপ্ত পিওনি ফুল
আর জড়ো করে রাখা
কয়েকটি পাঁপড়ি
পাঁচ
ওনো ইরে তে
কো ওডোরোকু ইয়া
ফুয়ু কোদাচি
কুড়াল মেরে
আমি অবাক গন্ধে
শীতের বৃক্ষরাজি
ছয়
ফুজি হিতোতসু
উজুমি নোকোসিতে
ওয়াকাবা কানা
ফুজিয়ামা ব্যতীত
সব কিছু ডুবে গেছে
কচি কচি পাতায়
সাত
য়ুদাচি ইয়া
কুসুবা ও সুকামু
মুরা সুজুমে
বিকালের বৃষ্টি
ঘাস ধরবে না পাতা
গ্রামের চড়ুইপাখি
♦মাতসুয়ো বাসো,
বিস্তারিত»ডিসেম্বরের হাইকুগুচ্ছ
ডিসেম্বরের হাইকুগুচ্ছ
১২৫
অতলান্তিক সময়
চলতে স্রোতের বিপরীতে
কূলহারা নাবিক
১২৪
এক রত্তি ডাঙা
পালক খুঁটে খুঁটে হাঁস
রোদ কণা মাখে
১২৩
সাদা সজনে ফুল
ফুলিয়ে রোঁয়া বুলবুলি
রৌদ্র মাখে গায়
১২২
উল্টা বিব্রত
আজব প্রজন্ম কহে
সব তোমাদের দোষ
১২১
মলন মলা শেষ
উঠোন ঠুকরে মা মুরগী
ছানাদের ডাকে
১২০
হেমন্তের দুপুর
ছোট্ট দ্বীপে হাঁসের দল
জলকেলি শেষে।
ভালোবাসা অধরা
ভালোবাসো আমায় ?
হ্যাঁ………কিন্তু না…
স্বপ্নে দেখো আমায় ?
হ্যাঁ………কিন্তু না…
তবে, আমি ভালোবাসি ?
উমম………হ্যাঁ………কিন্তু না…
স্বপ্নে আসবে আমার ?
জানিনা………
জীবনের অতল গহীনে দ্বিধা আর দ্বন্দ্ব
চাওয়া পাওয়া, আর না পাওয়া চাওয়া সব ধূসর হয়ে
সাঙ্গ হবে খেলা একদিন
মনের ইচ্ছের বিরুদ্ধে ।
তবুও ভালোবাসি প্রিয়তমা, জেনে রেখো…
ভালোবাসি তোমায় ।
হাইকু গুচ্ছ
১১৪
কুয়াশার চাদর
সীমের মাচায় ফুলপাতায়
নাচে টুনটুনি
১১৩
বকলম কবি
সুবর্ণ বন্দর লোভে
নিজ সন্তান ফেরি
১১২
খড়ের গাদায় ভাপ
দুধ নারকেল খেজুর রসে
পিঠে খাওয়ার ধুম
১১১
প্রকৃতির পর্দা
কচুরিপানার ফুলে
তৃপ্ত নয়ন মন
১১০
আখ ফুলে ফিঙে
গাঁয়ের বধু ধান ওড়ায়
হেমন্ত বাতাসে
১০৯
মায়ের বুকের ওম
পাশ ফিরতে লেপের মাঝে
শিমুল বিচি বাজে
১০৮
এক এক শূণ্য নয়
অনুবাদ পার্থক্যে হয়
কথার ডালপালা
১০৭
গোলাপী বা লাল
সবুরে মেওয়া ফলে
রে ঝিঁঝিঁ বাঙ্গাল!
আটটি হাইকু
এক
তারার আলো
পতঙ্গের ঐকতান আর
নাসিকা গর্জন
দুই
শীতনিদ্রায় ব্যাঙ
আসেনি প্রিয়া বৃষ্টিতে
অশ্রুধারায় বান
তিন
বোলতার আক্রমন
আকাশে তারা ঝিকমিক
পতঙ্গের কনসার্ট
২৮/১০/২০১৯
চার
কার্তিকে লঘুচাপ
প্যাট প্যাট ছাদ গড়ানো জল
সানশেডে কাক
পাঁচ
হেমন্তে লঘুচাপ
নারকেল গাছে ভেজে কাক
পানকৌড়ির প্রায়
ছয়
নাসিকা গর্জন
প্রতিবেশী কোলবালিশ
আর বৃষ্টির বাগড়া
সাত
টিক টিক হাতঘড়ি
ঘুনপোকার ক্যাট কুট কট
রাত হলো সারা
২৫/১০/১৯
বিস্তারিত»
মায়ের খুব কাছাকাছি
মায়ের খুব কাছাকাছি
ওবায়েদুল্লাহ
মাটির উপর শুয়ে কান পেতে আছি,
সোদা গন্ধ নাকে পিঠে শিতল পরশ
মায়ের খুব কাছাকাছি।
মা মাগো তুই কেমন আছিস ?
তুই শুয়ে ঘরে আমি যে দাড়িয়ে বাইরে
চলে গেলি মাগো সত্যি আমাকে ছেড়ে,
দেখবো না তোকে কোন দিন বাড়ি ফিরে
এও কি হয় মা বল, বাড়ি যাবো কি করে?