[এই ধারাবাহিক উপন্যাসের একেক পর্ব একেকজন লিখবেন। যে কেউ লিখতে পারেন। কেউ যদি পরের পর্ব লিখতে চান তাহলে তাকে এই পর্বে মন্তব্য করে তা বলে দিতে হবে। যিনি আগে বলবেন তিনিই লিখবেন পর্বটি।]
প্রথম পর্ব
গত পর্ব
১৬
ফর্মে চরম চিল্লাচিল্লি হচ্ছে। দুই দিকে দুই বিষয় নিয়ে চরম ফাটাফাটি অবস্থা। সামনের দিকে সবাই ফুটবল নিয়ে আছে। বিশ্বকাপ চলছে তাই এটা স্বাভাবিক।
“আমার নাম নুরুজ্জামান মোল্লা……”
মোল্লা স্যারের মত অতীত ইতিহাস বরিশাল ক্যাডেট কলেজের আর কোন শিক্ষক সম্পর্কে জানা যায় না। স্যার যখন আশির দশকের শুরুর দিকে আমাদের কলেজে পোস্টিং এসে অন প্যারেড হলেন ঠিক সেই দিন থেকে তাকে নিয়ে কাব্য গাঁথা রচনার শুরু। ক্লাসে এসে যেই তিনি বললেন, “আমার নাম নুরুজ্জামান মোল্লা…..” ঠিক সাথে সাথেই পিছন থেকে এক ক্যাডেট গলা চিকন করে বলে উঠল,“…..আমি একটা কবিতা বলব”। ব্যস আর যায় কোথায়?
বিস্তারিত»ক্যাডেট ডায়েরী ( ১৯৯৬ )—- ২
পূর্ব পাতা
মার্চঃ ২৪
ওফফ আজ ক্যাডেট কলেজের ভাইভা পরীক্ষা ছিল। একটা অবশ্য মজা হয় ক্যাডেট কলেজের এই পরীক্ষাগুলার দিন। বেশ পিকনিক পিকনিক ভাব হয়। আমার পরীক্ষা ছিল শহীদ রমিজউদ্দীন স্কুলে। ক্যান্টনমেন্ট এর স্কুল গুলা কেমন যেন। কখনো আমি এর আগে ক্যান্টনমেন্ট এ যাইনাই ক্যাডেট কলেজের পরীক্ষা দেওয়ার আগে। আজ অবশ্য আমার বেশ টেনশন হচ্ছিল। কারণ আব্বুর সামনে ভাইভা প্র্যাকটিস করা ছাড়া আমি আসলে আর কিছুই করিনাই।
ঘটনা, নাকি দূর্ঘটনা
১.
ছোটবেলায় অন্যান্য সব পিচচি পোলাদের মত আমারও কিউরিসিটির সীমা-পরিসীমা ছিল না। বাপের পোষ্টিং তখন রাজশাহীতে। প্রতিদিন গোয়ালা এসে দুধ দিয়ে যায়, কিন্তু এই দুধ কোথায় থেকে আসে তা জানার আসীম আগ্রহ আমার। মাকে জিজ্ঞেস করলে বলে, গরু দুধ দেয়। তাও আমার প্রশ্ন গরু দুধ কোথায় থেকে দেয়, এবার মা বলে পেট থেকে দেয়। কিন্তু তাও পরিষ্কার হয় না আমার কাছে ব্যাপারটা। আমরা থাকতাম নিচতলাতে।
বস্ত্রহরণের গল্প
(আমার আমেরিকা-প্রবাসী বন্ধু শাহেদ। গত লেখায় সে মন্তব্য করেছিলো, আমার “ভালো” লেখা পড়তে পড়তে সে খুব “বোর” হয়ে গেছে, তাই এই “খারাপ লেখা”টি ওর-জন্যে উত্সর্গ করলাম।)
ক্যাডেটে ভর্তির লিখিত পরীক্ষায় অপ্রত্যাশিতভাবে চান্স পেয়ে যাই আমি। এরপর শুরু হয় ভাইভার প্রস্তুতি, সাথে থাকে প্রতি রাতে ঘুমাতে যাবার সময় দু’পায়ের মাঝে একটা বালিশ। ‘সাবধান’ পজিশনে আমার দুই হাঁটুতে গ্যাপ হতোনা, সেজন্যে এই বাড়তি কসরত। O:-)
ওদিকে মিরপুর ক্যাডেট কোচিংয়ে যেতাম ভাইভার প্র্যাক্টিস ক্লাস করতে।
আমার প্রথম পোস্ট
ক্যাডেট কলেজ ব্লগে সবার পোস্ট পড়তে অনেক ভাল লাগে। আমি মাসখানেক আগে এই ব্লগে জয়েন করেছি। লিখার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু লিখার কোন টপিক পাচ্ছিলাম না। তাই আজকে আপনাদের, তোমাদের ও তোদের সবার জন্য ২ টা ভিডিও দিলাম। আমাদের রংপুর ক্যাডেট কলেজের ১৯তম ইনটেকের (১৯৯৩-১৯৯৯) ১৪ বছর এবং ১৫ বছর পুর্তি উপলক্ষে ভিডিও ২ তা বানানো হয়েছিল। আমাদের ইনটেক হয়েছিল ২০ মে ১৯৯৩। তাই ভিডিও ২টা যথাক্রমে ২০ মে ২০০৭ এবং ২০ মে ২০০৮ এ রিলিজ করা হয়।
বিস্তারিত»কোথায় পাবো তাদের-৫
।১।
আমদের সময়ে কোরান তেলওয়াত প্রতিযোগিতা বলে একটা জিনিস ছিল। এর দায়িত্বে থাকতেন ইসলামিয়াতের আব্দুর রব স্যার। কলেজে যতো প্রতিযোগিতা ছিল এর মধ্যে এটাই সবচেয়ে বোরিং টাইপ। এমনিতেই মসজিদ খুব গুরুগম্ভীর জায়গা। খুব বেশি ফাজলামি দুষ্টামি করার সুযোগ নাই। তার উপর কোরান তেলাওয়াত। কয়েক ঘন্টা চুপ চাপ বসে থাকা ছাড়া আর কিছুই করার নাই।
সেবারও একই ঘটনা। একজন একজন করে তেলাওয়াত করছে আর বাকিরা সবাই ইচ্ছায় অনিচ্ছায় সেটা শুনে যাচ্ছে।
ক্যাডেট ডায়েরী ( ১৯৯৬ )—- ১
শুরুর আগে
ক্যাডেট কলেজে থাকতে ডায়েরী লেখার অভ্যাস ছিল আমার। আবার সেই সাথে একটা বদভ্যাস ও ছিল বেশ কিছু দিন চলে গেলে সেই গুলা পড়ে নিজেরই লজ্জা লাগত তাই সেটা আবার ছিড়ে ফেলে দেওয়া। এই সিসিবি আসার পর থেকে আমি সেই ডায়েরী গুলাকে খুব খুবই মিস করছি। তাই পুরান ডায়েরীর আদলে পুরান ঘটনাগুলা নতুন করে লেখার চেষ্টা করছি। যেহেতু এটা পুনঃলিখন তাই দিন তারিখ না মিলার সম্ভাবনাই ৯৯%।
ছুটি, ক্যালেন্ডার এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট দল
ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হবার আগে বাসার বাইরে ভাল করে বলতে গেলে আম্মুকে ছেড়ে কখনোই থাকিনি। একবার মনে আছে নানাবাড়িতে আমাকে এক খালার কাছে রেখে আম্মু আরেক খালার বাড়ি গিয়েছিল ২ দিনের জন্য। সেই দুদিন নিজেকে খুবই বেচারা বেচারা মনে হয়েছিল। ছোটবেলা থেকেই আমি মা ন্যাওটা। সবসময় মায়ের আশেপাশেই ঘোরাফেরা করি। তাই ক্যাডেট কলেজে গিয়ে আমার প্রথম রাত থেকেই দিন গুনা শুরু হয়েছিল। প্রতিদিন ক্লাসে স্যারদের লেকচার শুনতে শুনতে আমি আমার খাতায় ক্যালেন্ডার বানিয়ে ফেলতাম।
বিস্তারিত»ছুটি শেষে অভ্যর্থনা
কলেজ গেটে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য দারুণ সব উপকরণ হাজির থাকত। কর্তৃপক্ষই ব্যবস্থা নিতেন আর কি। সেগুলো আবার একটার চাইতে আরেকটা কয়েক কাঠি করে বেশি সরেস!
দুলাল ভাই (ও তার দল) এর কাঁচির নিচে ২২/ ২৩ দিনের সযত্ন লালিত মাথাভর্তি চুলের বিসর্জন দিয়ে শুরু হত সেই অভ্যর্থনা পর্ব। করুণ চোখে তাকিয়ে দেখতাম আমার আগের জনের পায়ের কাছে কি নির্দয়ভাবেই না থোকা থোকা চুলগুলো লুটিয়ে পড়ছে।
বিস্তারিত»কোথায় পাবো তাদের-৪
১.
বাংলার শাহজাহান আলী স্যার কে আমরা খুব পছন্দ করতাম কারণ স্যার দারুণ পড়াতেন। আমার এখনো মনে আছে রবীন্দ্রনাথের ‘ছুটি’ গল্পে ফটিক যখন মারা যাওয়ার আগে বলে ‘এখন আমার ছুটি হয়েছে মা, এখন আমি বাড়ি যাচ্ছি….’ এইটুকু পড়াতে পড়াতে স্যার আমাদের সামনে হু হু করে কেঁদে ফেললেন। স্যারের কান্না দেখে আমরাও চোখের পানি আটকাতে পারিনি।
এই শাহজাহান স্যারই প্রেপ টাইমে কেমন যেন পাগল হয়ে যেতেন।
বিস্তারিত»৫১ একরে সীমাবদ্ধ জীবন (শেষ পর্ব)
ক্যাডেট কলেজের প্রেক্ষাপটে মসজিদ একটা বড় ভূমিকা রাখে মাগরিবের নামাজের কারণে। বর্তমানে সামরিক বাহিনীতে সান্ধ্যকালীন রোলকল (যার অন্যতম উদ্দেশ্য সৈনিকের ব্যারাকে উপস্থিতি নিশ্চিত করা) দেখে মনে হয়েছে মাগরিবের নামাজটা হয়তো তারই একটা পরিবর্তিত সংস্করণ। মসজিদে হর হামেশাই নানান ঘটনা ঘটত। পাশাপাশি বসা দুজনের পাঞ্জাবিতে গিঁট মারা এর মধ্যে সবচাইতে চিত্তাকর্ষক বলে মনে হয়েছে। আর যদি সেটা হয় সিনিয়রের পাঞ্জাবিতে তাহলে তো কথাই নেই, অভিযুক্তের উপর প্রিফেক্ট সৃষ্ট নির্ভুল কাড়া নাকাড়ার শব্দ পাওয়া যেত।
বিস্তারিত»৫১ একরে সীমাবদ্ধ জীবন (দ্বিতীয় পর্ব)
নবমে এসে লেখাপড়ায় একটু সিরিয়াস ভাব আসল। যাই লেখাপড়া হোক না কেন সবই হয় এসএসসি কে টার্গেট করে। এক বন্ধুর বড়ভাই রংপুর ক্যাডেট কলেজে ক্লাস টুয়েলভে ছিলেন। তিনিও চিঠিতে এসএসসি’র কথা গুরুত্ব সহকারে লিখেছিলেন। সায়েন্স আর আর্টস ভাগ হবে। সেটা নিয়ে মোল্লা স্যারের হুমকি ধামকিতে আমরা প্রথম কয়েকমাস বেশ তটস্থ ছিলাম। (জন্মলগ্ন থেকেই স্যার আর কলেজ যেন হরিহর আত্মা, আপন সহোদর। স্যারকে ছাড়া বরিশাল ক্যাডেট কলেজকে চিন্তাই করতে পারি না।
বিস্তারিত»৫১ একরে সীমাবদ্ধ জীবন (প্রথম পর্ব)
২১ মে ১৯৯২ সাল।
প্রতি বছর নিজের জন্মদিন যতটা না খেয়াল থাকে তার চাইতে বেশি খেয়াল থাকে এই দিনটির কথা । কেননা ২১ মে ১৯৯২ এ পা রেখেছিলাম বরিশাল ক্যাডেট কলেজের বুকে। দুরু দুরু বুকে এক নব্য কিশোরের চোখ দিয়ে দেখছিলাম আমাকে গ্রহণ করার যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা। সেটার শেষ পর্যায়ে দেখেছিলাম আমাকে একা রেখে অশ্রুসজল চোখে বাবা-মা, আত্মীয়দের চলে যাওয়া। একইভাবে আরও ৫৪ জন ছেলে একই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিল সেদিন।
বিস্তারিত»তারে জামিন পার ও দুটি কথা…
গত বছর বলিউড এ একটি ব্যতিক্রমধর্মী ছবি রিলিজ হয়েছিল-‘তারে জামিন পার’। ছবিটি দেখার সময় কয়েকবার চোখ ভিজে ওঠেনি এমন মানুষের সংখ্যা খুব কমই আছে। তবে আমার মনে হয় ছবিটি বিশেষ করে সকল ক্যাডেটদের হৃদয়কে সবচেয়ে কাছ থেকে ছুঁয়ে গেছে। পিচ্চিটাকে(দার্শিল) যখন বোর্ডিং স্কুলে পাঠানো হয় এবং তারপর ওর যে মানসিক অবস্থা দেখানো হয় তাতে যে কোন ক্যাডেটের ক্লাস সেভেন/এইট এর কথা মনে পড়তে বাধ্য।
সত্যি,