১.
ক্যাডেট কলেজে আমার দেখা প্রথম সিনেমা ছিল অক্ষয় কুমার আর রাভিনা ট্যান্ডনের ‘মোহরা’। আমরা তখন ক্লাস সেভেনে একেবারে নতুন। সেই সময় নিয়ম ছিল মাসের শেষ বৃহস্পতিবার ফিল্ম শো হবে। আমরা তো আর এত কিছু জানিনা। একদিন সন্ধ্যায় টি ব্রেক শেষ হওয়ার ঘন্টা পরার সাথে সাথে দেখলাম ক্লাস ১২এর ভাইয়ারা আমাদের আগে ডাইনিং হল থেকে দৌড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। তারপর ক্লাস ১১, ১০ একে একে সবাই।
কোথায় পাবো তাদের-৬
১.
শরীফ উদ্দিন স্যারের সাথে আমার প্রথম পরিচয় একদিন টার্ন আউট প্যারেডে । আমরা তখন ক্লাস সেভেনে। একেবারেই নতুন। প্যারেডে দাঁড়িয়ে আছি। আমদের পাশে ক্লাস এইটের ভাইয়ারা। হঠাৎ সেখান থেকে তানজিন ভাই আমদের আব্দুল্লাহ কে ডাক দিলেন
-আব্দুল্লাহ কাম হিয়ার
আব্দুল্লাহ দৌড়ে গেল। তানজিন ভাই বললেন
-ওই যে দেখতেছ বড়ো চশমা পরা একজন স্যার আসতেছে উনারে গিয়া জিজ্ঞেস করবা, স্যার ghost মানে কি?
নতুন দিনের মিছিলে…
আমার বন্ধু ভাগ্য খুব ভালো। কিন্তু আসল ভাগ্যটা খারাপ। এ কারণেই ভালো বন্ধুগুলোর সাথে নানা রকম গ্যাঞ্জাম লাগে। মধুর গ্যাঞ্জাম না, এক্কেবারে সিরিয়াস টাইপ…এই জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে সবসময় উৎকন্ঠায় থাকতে হয়। কখন কি থেকে কি হয়ে যায়…
পঁচা ছাত্র ছিলাম। আইডিয়াল স্কুল আমাকে ঢাকা শহর থেকে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করতে দিবে না বলে ঠিক করলো…হুদাই তাদের মান সন্মান ডুবাবো…আমি খুশী। কার এতো সখ পড়ছে ফাইনাল পরীক্ষার পর এইসব আজাইরা জিনিস নিয়ে সময় নষ্ট করার…এই সহজ ব্যাপারটা আমি বুঝলেও আমার মা বুঝলোনা।
বিস্তারিত»বন্ধু তোদের মিস করছি ভীষণ
হারিয়ে গেছে বন্ধু মিজান- মিজানুল মাহবুব। মেধাবী ছিল। আঁকার হাতটা ছিল দারুণ। বুয়েটে যখন স্থাপত্য বিভাগে ভর্তি হলো আমরা কেউ অবাক হইনি। ক্যাডেট কলেজে ঢুকে আমাদের অধিকাংশ বন্ধুর ড্রইংয়ে হাতখড়ি হয়েছিল। সেসময় মিজান, সোহেলসহ কয়েকজনকে আমরা রীতিমতো ঈর্ষা করতাম।
মিজান স্থাপত্য পড়া শেষ করে ছোটখাট কিছু কাজ করছে এমন সময় তার অসুখটা ধরা পড়লো। দুটো কিডনিই তার পুরো নষ্ট হয়ে গেছে। রোগের সঙ্গে লড়াই করতে করতে বন্ধু মিজান হারিয়ে গেল ১৯৯৩ সালে।
বিস্তারিত»ভালবাসি তোমাকে
(ফ্র্যান্ডশিপ ডে উপলক্ষ্যে জিহাদকে গিফট করা হলো এই কবিতাটা।)
ছিপছিপে তার বদনখানি
মিষ্টি কোমল মুখ
এরই মাঝে খুঁজে ফিরি
এক পলকের সুখ।
নীলাম্বরী শাড়ি পরে
সামনে যখন এলো
আকাশ থেকে নামলো পরী
আমার মনে হলো।
লজ্জাবতী লতার মতো
কুঁকড়ে গেল নিমিষে
ছুটে কোথায় পালাতে চায়
অধর ছুঁতেই গ্রীবাদেশে।
টেলিফোনের ওপার হতে
বললো যেদিন আমাকে,
সিসিবি সমাবেশ…
আগস্ট মাসে তপু ভাইয়ের বাংলাদেশ আগমন উপলক্ষে একটা সিসিবি সমাবেশ করার চিন্তা ভাবনা করা হয়েছিল বেশ কিছুদিন আগে। তারপর এর সাথে যুক্ত হয় সমাবেশে জাফর ইকবাল স্যারকে আমন্ত্রণ করার ব্যাপারটা। আগস্ট মাস প্রায় এসে পড়েছে। এসে পড়েছে তপু ভাইয়ের ঢাকা আগমনেরও সময়। আমরা জানতে পারলাম আমাদের আরও কিছু প্রবাসী সদস্য এই সময় ঢাকা থাকবেন…
সমাবেশ হবে এইটা নিশ্চিত।
বিস্তারিত»অন্যরকম ক্যাডেট কলেজ – ৭
[এই ধারাবাহিক উপন্যাসের একেক পর্ব একেকজন লিখবেন। যে কেউ লিখতে পারেন। কেউ যদি পরের পর্ব লিখতে চান তাহলে তাকে এই পর্বে মন্তব্য করে তা বলে দিতে হবে। যিনি আগে বলবেন তিনিই লিখবেন পর্বটি।]
প্রথম পর্ব
গত পর্ব
১৬
ফর্মে চরম চিল্লাচিল্লি হচ্ছে। দুই দিকে দুই বিষয় নিয়ে চরম ফাটাফাটি অবস্থা। সামনের দিকে সবাই ফুটবল নিয়ে আছে। বিশ্বকাপ চলছে তাই এটা স্বাভাবিক।
“আমার নাম নুরুজ্জামান মোল্লা……”
মোল্লা স্যারের মত অতীত ইতিহাস বরিশাল ক্যাডেট কলেজের আর কোন শিক্ষক সম্পর্কে জানা যায় না। স্যার যখন আশির দশকের শুরুর দিকে আমাদের কলেজে পোস্টিং এসে অন প্যারেড হলেন ঠিক সেই দিন থেকে তাকে নিয়ে কাব্য গাঁথা রচনার শুরু। ক্লাসে এসে যেই তিনি বললেন, “আমার নাম নুরুজ্জামান মোল্লা…..” ঠিক সাথে সাথেই পিছন থেকে এক ক্যাডেট গলা চিকন করে বলে উঠল,“…..আমি একটা কবিতা বলব”। ব্যস আর যায় কোথায়?
বিস্তারিত»ক্যাডেট ডায়েরী ( ১৯৯৬ )—- ২
পূর্ব পাতা
মার্চঃ ২৪
ওফফ আজ ক্যাডেট কলেজের ভাইভা পরীক্ষা ছিল। একটা অবশ্য মজা হয় ক্যাডেট কলেজের এই পরীক্ষাগুলার দিন। বেশ পিকনিক পিকনিক ভাব হয়। আমার পরীক্ষা ছিল শহীদ রমিজউদ্দীন স্কুলে। ক্যান্টনমেন্ট এর স্কুল গুলা কেমন যেন। কখনো আমি এর আগে ক্যান্টনমেন্ট এ যাইনাই ক্যাডেট কলেজের পরীক্ষা দেওয়ার আগে। আজ অবশ্য আমার বেশ টেনশন হচ্ছিল। কারণ আব্বুর সামনে ভাইভা প্র্যাকটিস করা ছাড়া আমি আসলে আর কিছুই করিনাই।
ঘটনা, নাকি দূর্ঘটনা
১.
ছোটবেলায় অন্যান্য সব পিচচি পোলাদের মত আমারও কিউরিসিটির সীমা-পরিসীমা ছিল না। বাপের পোষ্টিং তখন রাজশাহীতে। প্রতিদিন গোয়ালা এসে দুধ দিয়ে যায়, কিন্তু এই দুধ কোথায় থেকে আসে তা জানার আসীম আগ্রহ আমার। মাকে জিজ্ঞেস করলে বলে, গরু দুধ দেয়। তাও আমার প্রশ্ন গরু দুধ কোথায় থেকে দেয়, এবার মা বলে পেট থেকে দেয়। কিন্তু তাও পরিষ্কার হয় না আমার কাছে ব্যাপারটা। আমরা থাকতাম নিচতলাতে।
বস্ত্রহরণের গল্প
(আমার আমেরিকা-প্রবাসী বন্ধু শাহেদ। গত লেখায় সে মন্তব্য করেছিলো, আমার “ভালো” লেখা পড়তে পড়তে সে খুব “বোর” হয়ে গেছে, তাই এই “খারাপ লেখা”টি ওর-জন্যে উত্সর্গ করলাম।)
ক্যাডেটে ভর্তির লিখিত পরীক্ষায় অপ্রত্যাশিতভাবে চান্স পেয়ে যাই আমি। এরপর শুরু হয় ভাইভার প্রস্তুতি, সাথে থাকে প্রতি রাতে ঘুমাতে যাবার সময় দু’পায়ের মাঝে একটা বালিশ। ‘সাবধান’ পজিশনে আমার দুই হাঁটুতে গ্যাপ হতোনা, সেজন্যে এই বাড়তি কসরত। O:-)
ওদিকে মিরপুর ক্যাডেট কোচিংয়ে যেতাম ভাইভার প্র্যাক্টিস ক্লাস করতে।
আমার প্রথম পোস্ট
ক্যাডেট কলেজ ব্লগে সবার পোস্ট পড়তে অনেক ভাল লাগে। আমি মাসখানেক আগে এই ব্লগে জয়েন করেছি। লিখার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু লিখার কোন টপিক পাচ্ছিলাম না। তাই আজকে আপনাদের, তোমাদের ও তোদের সবার জন্য ২ টা ভিডিও দিলাম। আমাদের রংপুর ক্যাডেট কলেজের ১৯তম ইনটেকের (১৯৯৩-১৯৯৯) ১৪ বছর এবং ১৫ বছর পুর্তি উপলক্ষে ভিডিও ২ তা বানানো হয়েছিল। আমাদের ইনটেক হয়েছিল ২০ মে ১৯৯৩। তাই ভিডিও ২টা যথাক্রমে ২০ মে ২০০৭ এবং ২০ মে ২০০৮ এ রিলিজ করা হয়।
বিস্তারিত»কোথায় পাবো তাদের-৫
।১।
আমদের সময়ে কোরান তেলওয়াত প্রতিযোগিতা বলে একটা জিনিস ছিল। এর দায়িত্বে থাকতেন ইসলামিয়াতের আব্দুর রব স্যার। কলেজে যতো প্রতিযোগিতা ছিল এর মধ্যে এটাই সবচেয়ে বোরিং টাইপ। এমনিতেই মসজিদ খুব গুরুগম্ভীর জায়গা। খুব বেশি ফাজলামি দুষ্টামি করার সুযোগ নাই। তার উপর কোরান তেলাওয়াত। কয়েক ঘন্টা চুপ চাপ বসে থাকা ছাড়া আর কিছুই করার নাই।
সেবারও একই ঘটনা। একজন একজন করে তেলাওয়াত করছে আর বাকিরা সবাই ইচ্ছায় অনিচ্ছায় সেটা শুনে যাচ্ছে।
ক্যাডেট ডায়েরী ( ১৯৯৬ )—- ১
শুরুর আগে
ক্যাডেট কলেজে থাকতে ডায়েরী লেখার অভ্যাস ছিল আমার। আবার সেই সাথে একটা বদভ্যাস ও ছিল বেশ কিছু দিন চলে গেলে সেই গুলা পড়ে নিজেরই লজ্জা লাগত তাই সেটা আবার ছিড়ে ফেলে দেওয়া। এই সিসিবি আসার পর থেকে আমি সেই ডায়েরী গুলাকে খুব খুবই মিস করছি। তাই পুরান ডায়েরীর আদলে পুরান ঘটনাগুলা নতুন করে লেখার চেষ্টা করছি। যেহেতু এটা পুনঃলিখন তাই দিন তারিখ না মিলার সম্ভাবনাই ৯৯%।
ছুটি, ক্যালেন্ডার এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট দল
ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হবার আগে বাসার বাইরে ভাল করে বলতে গেলে আম্মুকে ছেড়ে কখনোই থাকিনি। একবার মনে আছে নানাবাড়িতে আমাকে এক খালার কাছে রেখে আম্মু আরেক খালার বাড়ি গিয়েছিল ২ দিনের জন্য। সেই দুদিন নিজেকে খুবই বেচারা বেচারা মনে হয়েছিল। ছোটবেলা থেকেই আমি মা ন্যাওটা। সবসময় মায়ের আশেপাশেই ঘোরাফেরা করি। তাই ক্যাডেট কলেজে গিয়ে আমার প্রথম রাত থেকেই দিন গুনা শুরু হয়েছিল। প্রতিদিন ক্লাসে স্যারদের লেকচার শুনতে শুনতে আমি আমার খাতায় ক্যালেন্ডার বানিয়ে ফেলতাম।
বিস্তারিত»