[ইংরেজ কবি জন ক্লেয়ার জন্মগ্রহন করেন ১৭৯৩ সালে আর মৃত্যু ১৮৬৪।দরিদ্রতার কারণে পড়াশুনায় বেশীদূর এগুতে পারেন নি।মাত্র সাত বছর বয়সেই তাকে পশুপালনের মত কঠিন কাজে নামতে হয়!যদিও এটি কবিতা লেখার মত উপযোগী পরিবেশ তাকে দেয় নি,কিন্তু এ সময়ই তিনি পেয়ে যান আরেক ব্রিটিশ কবি জেমস থমসনের দ্যা সিজন আর এটাই তাকে ভবিষ্যতে কবি হতে সহায়তা করে!
বিস্তারিত»স্তোত্র-১
অভাগিনী,কী দিই তোরে দান?
আমার সকল গান-
অসাড় আজি জীর্ণ-অচল আমার কলতান!
ঢেউ তোলে না অবশ বুকে
সুখ ঢালে না কারুর দুঃখে
চুপটি করে যায় সয়ে তার সকল অপমান!
তোর লাগি সুর বেঁধেছিলাম গভীর মমতায়
কোন সে অসুর,আমার সেসব সুর কেড়েছে হায়
তোর পূজাতে জ্বেলেছিলাম গন্ধবিধূর ধূপ
চাঁদের হতে ধার করেছি শঙ্খশাদা রূপ!
তোর প্রতিমায় সে রূপ জুড়ে-
দেবার বেলায় হৃদয় পুড়ে-
তৈরি হলো বুকে আমার বিষের অতল কূপ!
অপরিচিতা
পুব আকাশে সূর্য এলে,কিংবা আলোর দুপুরে,
দিন ফুরিয়ে শেষ বিকেলে কে যায়?বাজায় নূপুরে-
চৈতালী সুর-ধিনাক ধিনাক;ভাঙা কাঁচের রিনঝিনি-
হাসিতে কে দেয় ভেঙে মোর ভাঙা বুকের অঞ্জনি?
কে ঢালে মোর সুখসাগরে একটু প্রেমের বিষাদজল?
কার প্রেমাদে তরল আবেগ উথলে উঠে অচঞ্চল?
কার আচঁলের আড়াল কোলে লুটপুটি খায় বকুল ফুল?
কে দেয় দোলা নদীর জলে,বুক দোলে মোর দোদুলদোল!
ঘুম
“ক্লাস এ যাবে না?” বলে
ডেকে দিল বাবা।
ভাঙল ঘুম, কি আজব!
“এই ঘুমাচ্ছ কেন?” বলে
বের করে দিল টিচার।
হলো না ঘুম ক্লাসেও, কি আজব!
আমার কষ্টগুলো ……
আমিই তো তোর সব চিনি!
আমি তোর সব চিনি,তোর মেখলা হাসা
ঠোঁট ফুলিয়ে মান করা,ফের ভালোবাসা!
তোর গালে কি ছোট্ট কালো তিল আছে?
অন্ধকারের মতন কালো চুলের খোঁপায়
আলতো করে গুঁজে দেওয়া রক্তজবা
আজো আমার চোখে যেন বিঁধে আছে!
আবার যুদ্ধ হলে আমি রাজাকার হব…
তিন যুগ পেরিয়ে গেল, কেউ কথা রাখেনি।
আমার বাবার কথা কেউ মনে রাখেনি।
কেউ খুঁজে দেখেনি আমার হারানো ভাইয়ের লাশ।
কেউ মনে রাখেনি আমার বোনের সর্বনাশ।
তাই আজ আমি বিদ্রোহী…
আবার যুদ্ধ হলে আমি রাজাকার হব,
আবার যুদ্ধ হলে আমি বন্দুক হাতে নেব,
তারপর… …
চারটি কবিতা
হাসি
জানালার গ্রীলে তরুণী লাল-সবুজ
বিভাবসু শিরে লোহিত শিরস্ত্রাণ;
বিকেলের শ্যেন সুড়সুড়ি লিবিডোতে
রক্তাভ নীল আকাশে মেঘ-সোপান।
দোতলা হতে কে ছুড়লো লেসার গান
আমাকে লক্ষ্য করে? এ অবিশ্বাস্য;
ইরম্মদ রূপে ধরা পানে ধায়
অন্তরীক্ষ হতে যেন সেই লাস্য।
বিদ্রোহী কবিকে শ্রদ্ধাঞ্জলিঃ যদি আর না ফিরি
(আজ ১২ ভাদ্র। আমাদের জাতীয় কবি, বিদ্রোহী কবি, রেঁনেসা এবং সাম্যবাদী চেতনার কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী। ক্ষনজন্মা এই প্রতিভাকে শ্রদ্ধা নিবেদনের ভাষা এবং যোগ্যতা কোনটিই নেই আমার। “যদি আর না ফিরি” শিরোনামে কবির ভাষণটি একযুগ ধরে আমার ডায়েরীতে সংরক্ষিত আছে। কবি নির্বাক হওয়ার আগে এটিই সম্ভবত শেষ বক্তব্য। আজ খুব ইচ্ছে হলো সিসিবির বন্ধুদের সাথে শেয়ার করি।)
“মসজিদের পাশে আমায় কবর দিও ভাই/গোর থেকে যেন আযান শুনতে পাই।”
চেপে যাওয়া কান্নাগুলো……..
টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ডে নামলাম বহুদিন পর
“এই রিকশা, মেইন রোডে যাবে?”
হ্যাঁ জানাতেই বললাম, তা ভাড়া কত নেবে?
আগে কিন্তু করতাম না রিকশার কোন দামদর
এখন তবু করতেই হয়
সময়ের ব্যাবধানে ভাড়া কিছু বেড়েছে নিশ্চয়!
অন্তরে আয় অন্তরা
অন্তরে আয় অন্তরা
বুকের মৃদ্যু রক্ত স্রোতে আন ত্বরা
দুলিয়ে বাতাস সুবাস মাখা মন্থরা!
আমারে বল ঊষা রাঙা রোদ কোথা!
কোথায় নদী শুকিয়ে ধূলোর রূক্ষতা?
আমায় শোনা তোর ও বুকের দুঃখতা!
কৃষকের কৃতি কথা !
১
কৃষকের অপার প্রচেষ্ঠায়
ছোট ছোট বীজ থেকে
সবুজের বুকে রচিত হয়
একেকটি জীবন্ত সভ্যতা!
২
এভাবেই দিন যায়
ক্ষণ যায়, কাটে রাত !
এক প্রান্তে অভিজাত ঝলমলে শপিং মল
অন্য প্রান্তে অন্ধকারে জোনাকীর চলাচল।
আজো স্বপ্ন দেখি !
ব্যাপারটা নিয়ে তদন্ত হতে পারে !
আমার চশমার গ্লাস গলে –
এখনো আলগোছে ঢুকে পড়ে
বেপরোয়া দুরন্ত স্বপ্নরা!
আমার বুকে পাজরের দূর্গ ভেঙ্গে-
সংশপ্তক হৃদয়ে অনাহূতের মত
অনুপ্রবেশ করে লক্ষীছাড়া স্বপ্নরা।
ব্যাপারটা নিয়ে তদন্ত হতে পারে !
জন্মাবার পর থেকে প্রতি ক্ষনেই
জ্ঞানে-ধ্যানে-টানে-অভিমানে;
অজস্র স্বপ্নেরা ধরা দেয়
অদেখা কারেন্ট জালে।
পদে পদে সেই স্বপ্নের সমাধি
খুঁজে খুঁজে আমি গড়িয়ে যাই-
পথ থেকে পথে।
ছোট কবিতা-৩
১।
অনুতপ্ত নই
অণুতে অণুতে তপ্ত
তাপ লুকোবার কায়দাসমূহ
করে নিচ্ছি রপ্ত।
২।
বিষণ্ণ,
বিষ অন্ন?
বিষময়
বিস্ময়!
বিস্মৃত।
বিষ-মৃত?
সমঝোতা !
পেরিয়ে আসা সেই দিনগুলো,
ফেলে আসা আমার কৈশোর
বড্ড প্রহসন করে আমায়।
টিপ্পনি কেটে বলে আজ
তোমার শুধু কাজ আর কাজ।
ফাইল গুলো খোলা রেখেই; তাই
কফির মগে এক চুমুক দিয়ে
টেবিল ছেড়ে উঠে যাই।
মুঠোফোনটি বোবা করে
আমি বারান্দায় এসে দাঁড়াই।