খুব ছোটোবেলায় আবছা আবছা ধোঁয়ায়
মনে পড়ে বলেছিলে-”শুনিস নি তুই
বলো বীর, চির উন্নত মম শির?
তবে খাঁড়া হয়ে দাঁড়া, বীরের মত।”
হইতোবা বুঝি নি তখন, হইতোবা বুঝেছি,
জানি না কোন মন্ত্রে অন্তর হয়েছিল দগ্ধ,
মনে পরে সেই তন্ত্রে হৃদয় হয়েছিল মুগ্ধ,
তারপর মনে মনে গড়েছিলাম এক সঙ্কল্প,
নোয়াব না মাথা, সইবো সব ব্যথা,
শত দুঃখেও জাগ্রত রবে এই কথা।
বুকের মধ্যে অনেক ফাটল
রাত বাড়তেই ক্রমশ আমি মানুষ হয়ে উঠি
লোভ-কাম-ক্রোধ-পাপচিন্তা বাড়িয়ে হাতের মুঠি
সব টেনে নেই বুকে
বুকের ভেতর লক্ষ ফাটল,তার কোনটায় ঢুকে
নষ্ট মাথার চিন্তাগুলি,খায় খুটে খায় মড়ার খুলি
সেই মৃত কি আমি?
আয়নাতে মুখ দেখতে গিয়েও থামি
ভরসন্ধ্যায় শ্মশানঘাটে বসে
এসব যত চিন্তা ভেবে ঘামি!
সুজাতাকে প্রেমের কথা বলে
নিয়ে গেছি বৈতরণী নদীর কাছে-হাত দিয়ে সেই জলে
পালিয়ে গেলাম মানুষ ছেড়ে অচেনা জঙ্গলে
সুজাতা কি একা সেদিন ফিরতে পেরেছিল?
একটি বৈজ্ঞানিক কবিতা
এখন চুলের সামনের দিকে অনেক খানি পেকে গেছে। তিন বছর আগে চুল পাকেনি। মাঝে মাঝে অনেক ভালবাসায় পুরনো লেখায় চোখ বুলাই। তিন বছর আগে মনেও জোয়ার ছিল। এক সময় মনে হত জীবন শুধুমাত্র খন্ডকালীন সময় ছাড়া কিছু নয়, যার দুটো মাত্রা আছে। দৈর্ঘ্য আর গভীরতা। –
দুই মাত্রায় ‘সময়’ শুয়ে আছে
‘দৈর্ঘ্য’ টুকু জীবন নিল
‘গভীরতা’ রইল পরে
তোমার চোখের কাছে।
ষোলো
অবসাদে নুয়ে পড়া বিষন্ন জীবন ,
একঘেয়ে ক্লান্তিতে অবিশ্রান্ত ছুটে চলা ,
পিঠে চাপিয়ে শত কোটি বোঝা ,
কোনো চতুস্পদ জন্তু যেন !
ষোলো কোটি মানুষের ষোলো কোটি রূপ ,
ষোলো আনা ভর্তি আত্মকেন্দ্রিকতা ,
কেউ কি আমি নেই, অন্তত এক জন ?
শেষ ভোরে ভালোবাসা
কতশত বার ভালোবেসে তোমায় কিছু দেব বলে ভেবেছি,
নির্জন অরণ্য অথবা কোলাহলময় ব্যস্ততা,
নিদেনপক্ষে সমুদ্রের ঢেউ বা বিস্তৃত কালবেলা,
সেসব তোমার ভালো লাগে নি ।
আমার দেয়া সোনা রোদ আর লু হাওয়া,
পুড়িয়ে দিয়েছে তোমার সুখভেলা ।
আর তাই আজ শেষ ভোরে, দিচ্ছি তোমাই একটি ছোট্র তারা,
আমার মৃত্যুর পর জ্বলে ওঠা ছোট্ট তারা।।
একটি চিত্রকল্প……
দমকা হাওয়ার মৃদ্যু দোলা হাস্নাহেনার ঝাড়ে
দাগ রেখে যায় রাতের
মনের ভেতর চঞ্চলিত স্বপ্ন স্পর্শ পায়
ভীষণ উদার হাতের!
সেই পুরোনো আদ্যিকালের রাজপ্রাসাদের ইট
শ্যাওলা দিয়ে ঢাকা
তার উপরে উপুর করে মেলছে আঁধার ছায়া
গন্ধরাজের শাখা!
মেঘের স্রোতের আলতো ছোঁয়ায় কাঁপছে তিরতির
মলিন রূপোর চাঁদ
তার আলোতে ঘ্রাণস্মৃতিময় বাড়ছে ধীরে ধীরে
রহস্যময় রাত!
আমি লোভী নই…তবুও আজকাল
আমি লোভী নই: তবুও আজকাল মাঝে মধ্যেই
লোভ আসে সুচতুর জোয়ারের মতন
বুকের মধ্যে দীর্ঘ বছরের জমানো লোভেরা বেড়ে উঠে
বিকেলে বৃক্ষের ছায়ার মতো দীর্ঘতর হয় জ্যামিতিক হারে।
আজকাল খুব ইচ্ছে করে কৈশোরের যুক্তিহীনতায়
ফিরে গিয়ে চোখে রাখি রঙিন চশমা
ঠোঁটে মৃদ্যু গুঁজে দেই সাদা সিগারেট
তারপর উদ্ধত ভঙ্গিতে হেটে যেতে আঙুলে চিরুণী চালাই চুলে।
খুঁজে বেড়াই সহজ কবিতা
অজস্র কবিতায় কঠিন সব শব্দের খেলা
বুঝতে পারি না কিছুই – নিজেকে বড়ই ক্ষুদ্র মনে হয়।
মনে হয় আমি এখনও অনেক ছোট,
এখনও কবিতা বুঝতে গিয়ে অন্ধকারে ডুবে যাই আমি,
সহজ বাংলায় ‘ভালবাসি’ না বলে কবি কেন যে লিখে ফেলেন
দুই লাইনের শব্দজট – এখনও মাথায় আসে না আমার;
সহজ শব্দের ‘জল পড়ে, পাতা নড়ে’ আজ যেন হারিয়ে গেছে –
নতুন হাওয়ায় হারিয়ে যাওয়া
যুক্তিবাদী মানুষ যখন প্রলাপ বকতে থাকে
আনাড়ি লোক তুলি হাতে মনেরই ভাব আঁকে
বেসুরো সেইছেলেটা আজ প্রাণ ঢেলে দেয় গানে
সুর তাল নেই, তবুও আজ কি খুশি তার প্রানে!
আকাশ, বাতাস, নদী, ধরা, গাছের কচি ডাল
সবচে’ বেশি লাল মনেহয় সুর্যাস্তের লাল!
একটি ছোট গল্প
ছুটি শুরু হলো……অনেক কিছু করতে হবে এবার! সব্বার দোয়া নিয়ে শুরু করি নতুন বছর!
খুব ঝড়ো এক গভীর রাত
অনেক বছর আগের কথা
একটি করুন আর্তনাদ
ভাঙলো সকল স্তব্ধতা।
ভালোবাসার নববর্ষ
সুনসান বনের নিঃস্তব্ধতা মাঝে
আকাশ আজ তারায় তারায় মোহময় সাজে,
আধারের আড়ালটুকুতে জড়িয়ে থেকে
মুখোমুখি বসে দুজন চোখে চোখ রেখে
মেতে উঠি দুজনে খুলে স্মৃতির পাতা,
বিগত হয়ে যাওয়া অভিমান
আর শত ভালবাসার কথা
স্রোতের মত বয়ে চলি স্মৃতির নৌকা বেয়ে
কাটিয়েছি কত রাত তোমার চোখের পানে চেয়ে,
একটা বছরে ছিল কত দূরত্ব,
বিস্তারিত»ভালবাসা মানে
ভালবাসা মানে
উঠতি কবির ভুলে ভরা কবিতা
ভালবাসা মানে
শীতের সকালে এক পশলা বৃষ্টি
ভালবাসা মানে
লাশের গায়ে ডুমো মাছির দল
ভালবাসা মানে
গ্রীষ্মের তাপদাহে চৌচির ধানের ক্ষেত
যে সীমান্তে শুধুই বসন্ত ! (২)
যে সীমান্তে শুধুই বসন্ত ! (১)
………………………………………………………………………………………………
১ বছর পর আকাশ আর নীলিমা কক্সবাজারের বালুকা বেলায় ~
সময় ডিসেম্বরের মাঝামাঝি …
……………………………………………………………………………………………।
-
সিকোয়েন্স- ১। কথার পিঠে কথা ।
দৃশ্যপটঃ ১
ওপেনিং শট – সাগর আর আকাশ ঘুরে দুটো গাঙচিলের উড়ে চলা দেখিয়ে ফেড আউট।
জুম ইন-সাগর পাড়ের একটি কটেজ।
সেটঃ ইন্টেরিয়র-আকাশ-নীলিমা’র কটেজ।
মনমরণের ইতিবৃত্ত
মন মরে যাবার প্রক্রিয়ার সাথে আমি তেমন পরিচিত ছিলাম না।
বিজ্ঞপ্তি ও বিবৃতিতে মানুষের বিদেহী আত্মার কথা শুনেছি কেবল
জেনেছি, কেউ কেউ মরে গেলে দেহ বিয়োজন ঘটে,
আর কোনো কোনো লাশের খবর থাকে না।
ঈর্ষা করেছি যারা আত্মা হয়ে গেছেন, চল্লিশ দিন
ঘুরে বেড়িয়েছেন ভরহীন অশরীরে।
দুঃখ-শোক-সন্তাপ-বিদুরিত-প্রাণে-অপ্রাণে
আর অনেক অনেক বছর পরে, বিদেহীদের পরিচয়
আমার কাছে আটপৌরে হয়ে গেলে,
একান্ত ব্যক্তিগত !!
আমি ধীরে ধীরে সিসিবি’র সাথে আমার মানসিক ভাবে জরিয়ে যাওয়া দেখতে পাচ্ছি। মাহমুদকে ধণ্যবাদ জানাই।
একটা কবিতা পোষ্ট করব বলে বসেছি। অতীতে লেখা।সবার জীবনেই যেমন কিছু মূহুর্ত আসে যখন মানুষ একটু করে বদলে
যায়, আমার তেমন একটি সময়ে লেখা।আমার খুব প্রিয় বন্ধুদের মনে করে লিখেছিলাম।
তোমাদের চোখে তাকিয়ে
আমি আমার বদলে যাওয়া দেখতে পাই।
হয়তো তোমরা আমার
নিজস্ব আয়নার মতো,