একদিন ঝরা পাতার মত নামহীন নিঃশব্দে
তোমাদের কাছ থেকে ঝরে যাব যখন
পিছনে ফেলে রেখে আমার নিদ্রাহীনতার কয়েকটি ফুল
নতজানু তাই আমি, তোমাদের সুখের অভিসারে।
হে আমার সম্ভাবনা, এক সুখ এর মুখোশে আমি
সে সুখ সংশয়হীন- একা একা!
তোমাদের ছেড়ে যাব…না না, তা কেন ?
আমি আবার আসবো, এই রঙ্গ মেলায়,
রঙের দ্বারা সাজাবো আমার সমস্ত দেহ,
আগন্তুক
যদি কখনো খুব ব্যস্ত তুমি
ধরা যাক-পড়ছো, একঘেয়ে সুরে
হাতের কাছে হঠাৎ কলমটা খুঁজে পাচ্ছো না-
দেখো, টেবিলের ওপাশটায় আমি
হাতে কি? আরে না না,তোমার কলম নয়, ওটা সিগারেট
ধোয়ায় তোমার ঘর ভাসিয়ে দিচ্ছি
তোমাকে আরো রাগাবার জন্যে
ঘর ফাটিয়ে হো হো করে হাসছি ।
যদি কখনো রাতদুপুরে বৃষ্টি একাকার-
ঘুম নেই চোখে,
এপাশ আর ওপাশ,
প্রাকৃতিক অনু পরমানু
১
জানালা দিয়ে তাকিয়ে ছিলাম
সারাটা দুপুর, মেঠো পথের দিকে-
রোদের তাপ কমে গেলে;
মাড়িয়েছি ঘাসফুল অবুঝের মত
একটা ঘাস ফরিঙ এর পিছুপিছু ।
২
পুকুরের জলে পা ডুবিয়ে বসেছিলাম-
মাছরাঙার ছোঁ-মারা ভঙ্গিমাটুকু
বিস্মিত নয়নে দেখব বলে।
গোটা বিকেলটাই পালিয়ে গেল;
কিন্তু অপেক্ষাটুকু ফুরালো না।
৩
আকাশে লালিমা মেখে তখন
আমায় থমকে নামলো সন্ধ্যা।
নদীর পাড়ে খেলা
নদীটাকে নিলাম করে বেচে
আনবো কিনে আজকে রাতে চাঁদ
তবুও যদি একটিবারের মত
পাই ফিরে সেই প্রথম প্রেমের রাত
চাঁদটা ভেঙে করবো রূপোর গুড়ো
আর অতঃপর ছড়িয়ে নদীর জলে
আমরা দু’জন বসবো মুখোমুখি
প্রেম পোড়াবে চুপ কথার অনলে
নদীর পাশে তোদের সাদা বাড়ি
খেয়া নিয়ে বসবো আমি ঘাটে
সঙ্গী র’বে দুইটি গাংচিলে
সারাটাদিন অপেক্ষাতে কাটে
সকাল মুছে,দুপুর মুছে-শেষে
বিকেল হলে ঘাস ফড়িঙের দল
হঠাৎ তাদের ব্যস্ত ছুটোছুটি
রোদের ছোঁয়ায় ছলকে উঠে জল
চতুর্দিকে হঠাৎ হুলুস্থুলু
সব দিকেতে কেবল কানাকানি
নদীর পাড়ের সরু পথটা বেয়ে
আসছে যে কোন পরীর দেশের রাণী!
নিরুদ্দেশ
ঘর ছাড়িয়ে পথে পথে,
পথ ছাড়িয়ে মাঠে মাঠে।
মাঠ ছাড়িয়ে বনে বনে-
বন ছাড়িয়ে দূর তেপান্তরে
পাহাড় ছেড়ে মেঘের পারে।
সব দেশ ঘুরে ফিরে,
ক্লান্ত আমি অবশেষে;
ফিরি তব আপন ঘরে।
তুমি তখন মুচকি হাসো,
ভালবেসে কাছে আসো।
দুহাতে আমি যতন করে
তখন সরাই তোমার কেশ,
ঐ দু’চোখেই ডুবে আছে
আমার অচিন নিরুদ্দেশ।।
পর্যায়ঃ ২০২
এমনি করে পায়ের কাছে পূজোর প্রসাদ দলতে পারো
অহঙ্কারী মেয়ের মতো চুল উড়িয়ে চলতে পারো
তোমার হাতে শিউলি দিলাম-ছুঁড়ে দিলে নদীর জলে
সাত কোটিবার প্রেম চাইলাম,ফিরিয়ে দিলে অন্ধ বলে
আর চা’বো না তোমার কাছে
আমার প্রেমের গোল পুকুরে একটি ছোট্ট কৌটা আছে
তার ভেতরে লুকিয়ে রাখি তোমার দেওয়া সব অধিকার
এখন থেকে তোমার মনের সবটা দখল একলা আমার
তোমার সাথে সারাটাদিন কাটিয়ে দিই খুনসুটিতে
ভালোবাসার টুকরো চিঠি-মুঠোফোনের সুক্ষ্ম ইথার
সন্ধ্যা হলে প্রেম চাইতে লজ্জা পেলাম
এমনতর মানুষ আমি
নিজের সকল উজাড় করে নারীর কাছে বিলিয়ে দিয়েও
বুকের মাঝে গোপন রাখা স্বপ্ন চা’বার সাহসটা নেই
সুপ্ত থাকুক বুকের কোণে চিরটাকাল
ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকুক চোরের মতন!
একটি যাপিত জীবন
১
লাটিম হয়ে কক্ষপথে নক্ষত্রের ঘূর্ণি-
মানুষ আমি অবিরাম ছুটি দিবানিশি ।
হঠাৎ আচমকা কখনও ফুসরত মিললে
নীল আকাশের দিকে তাকাই মুখ তুলে।
বহমান নদীর জলের মত পলি ফেলে
নিরুদ্দেশের মোহনাকে মেনেছি গন্তব্য।
চলতি পথের নুড়ি পাথরের গায়ে গায়ে
লেপ্টে রয় আমার অপূ্রনীয় স্বপ্নগুলো ।
২
সবুজ পাহাড় পেরিয়ে যাযাবর হয়ে
ধুলো মাখা পথ মাড়িয়ে ছুটে চলি।
যে সীমান্তে শুধুই বসন্ত ! (৪)
চমকিত বিজলী
প্রথম আমাদের দেখা হয়েছিল
জমকালো এক শপিং মলের
অলস দুপুর পেরিয়ে রোমাঞ্চকর সেই বিকেলে।
তুমি কালো শাড়ি পড়েছিলে,
আর আমি পড়েছিলেম
সাদা জমিনে কমলা সুতোয় কাজ করা পাঞ্জাবী।
অথচ জানিনা আমরা দুজনের কেউই
‘কালো’ আমার আর ‘কমলা’ তোমার প্রিয় রঙ।
বড়রা তখনও সৌজন্যমূলক আলাপচারিতায় মত্ত।
আজকের এই দেখা হওয়াটাকে তারা সবাই মিলে-
নেহায়েৎ –
অবাক ভালবাসা
বাবুই-বাসা চড়ুই ছানা
সব দেখে তুই হাসতি
ঝড়ো মেঘ ভেজা বাতাস
তবুও কাছে আসতি।
থাকিস তুই চাঁদের আলোয়
দোলে নদীর ঢেউ
মৌমাছি বাঁধে তোর চুলে বাসা
দেখেনি অন্য কেউ।
বিড়াল ছানা খেলে তোর পায়ে
কচু পাতায় জমে পানি
রজনীগন্ধা তোকে পেয়ে ফোটে
সাজানো ফুলদানি।
তোর হাসিতে রংধনু ওঠে
প্রজাপতি পায় পাখা
পিচ ঢালা পথ পালের নাও
তোর স্বপ্নেই আঁকা।
ভালোবাসা বিদ্যা
তোমার মাঝে হারিয়ে গেছি তাই আর কাউকে খুঁজিনা
তুমি আমার Math,Biology অন্য কিছুই বুঝিনা
তুমি আমার laws of motion,তুমি chemistry
তুমি আমার Civics,physics তুমি History
Theory of relativity তোমার মাঝে পাই
ভালোবাসার integration এ limit তুমি তাই
তুমি আমার calculus আর তুমি Mechanics
তুমি আমার ভালোবাসার first law of thermodynamics
তুমি আমার economics আর তুমি accounting
তুমি আমার Management আর তুমি Marketing
তুমি আমার Finance আর হাজার হিসেব নিকাশ
সব হারিয়ে তোমায় পেয়ে তোমার মাঝেই বিকাশ
তুমি আমার Geography এর সাতটি মহাদেশ
আকাশ ভরা হাজার তারার দীপ্ত আলোর রেশ
(ক্লাল টুয়েলভে পড়ার সময় বাধ্য হয়ে লেখা)
ভিগো মর্টেনসেনের কবিতা
ইন্টারনেটে ঘুরতে ঘুরতে প্রিয় অভিনেতার প্রোফাইল দেখছিলাম। একটু বিস্মিত হয়ে জানলাম, ভিগো মর্টেনসেন কবিতা লেখেন। প্রকাশিত বই আর নিজের একটা প্রকাশনীও আছে তার। খুঁজে পেতে কিছু কবিতা পড়ে চমকিত, মুগ্ধ। ঝটপট বাংলা করতে ইচ্ছা করলো। কবিতার সুর আসলে ভাষান্তর করা যায় না। তাই নিচের লেখাগুলো মূল কবির প্রবল প্রভাব-আচ্ছন্ন লেখা বলা যায়। পাঠকের প্রতিক্রিয়াও হিসেবেও ধরা যায়।
(মূল লেখাগুলো পাওয়া যাবে এখানে)
সূচীর বাইরে
ফর্শা শাদা পা
দুয়েকটা জন্মদাগ।
খণ্ড কবিতা বা অকবিতা
০১।
আমি এক ফেরিওয়ালা,
ফেরি করে বেড়াই
স্বপ্নের ডালা মাথায় নিয়ে,
ওরে ছেলে-বুড়ো, মা-বোন
তোরা শোন____
যে যেখানে আছিস;
চাই কি স্বপ্ন তোদের?
আমি এক ফেরিওয়ালা
স্বপ্ন ফেরি করে বেড়াই
লাল, নীল, হলুদ, ধূসর
কিংবা কালো।
আমি এক ফেরিওয়ালা।
দেখেছিস কি তুই?
হলুদ ঘাসের উপর ফড়িং নাচে____
স্বপ্নে বিভোর।
প্রতীক্ষা
প্রতীক্ষা
—কবি রোমিও
আমার মনের আকাশে মেঘ জমে
মাঝে মাঝেই জমে
নিকষ কালো মেঘ
আমার জীবনের প্রকৃ্তি মাঝে মাঝে হয়ে যায় থমথমে
থেমে যায় আমার চলার বেগ
সাদা মেঘ ও জমে
তবে সে অনেক দেরীতে
বর্ষণের বহু পরে
তখন মন টেকেনা ঘরে
বাঁধতে পারেনা শেকল বেড়ীতে
ঘুরে বেড়াই পাড়াময়
উচ্ছাস তবেই কিছুটা কমে
মনের সমুদ্রে উথাল পাথাল ঢেউ চীর বহমান
বহু ঘুরেও মিলল না কেউ
করতে পারল না মিথ্যা প্রমান
প্রয়োজন মোর সীমাহীন ভালোবাসা
আর তাহার তরে অনন্ত প্রতীক্ষা।
মনে হয় করতলে আছি…
[প্রাককথাঃ বর্তমানের কবিতার পাঠক বর্তমানের কবিতার মতোই জটিল ও বিবিধ প্রকারের হয়ে উঠেছেন। কবিতা বিষয়টিকে নিয়ে অনেকের বিরক্তি, উপেক্ষা ও তাচ্ছিল্য আছে জানি। আমাদের কঠিন জীবনে কবিতার স্থান বা অবসর খুব কম। এজন্য মাঝে মাঝে কুণ্ঠাবোধ করি, কবিতার প্রতি অনপনেয় ভালোবাসার প্রকাশ সবার সামনে করতে কুণ্ঠা কাজ করে। আমার লেখার ভাষাকে বদলানোর চেষ্টা করছি কিছুদিন ধরে। সেই চেষ্টার চারাটিতে অনেকেই পড়ে ও মন্তব্য করে পানি ঢালছেন।
বিস্তারিত»বৃষ্টি- ১
বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর,
কোথায় গেল দগ্ধ দুপুর;
ভীষণ রোদে পোড়া ?
তোমার মনের হাজার নূপুর
কোন আবেশে আজকে পাগলপারা?
কোন সে বোধের কালবোশেখী;
করবে ছন্নছাড়া ?
কেবল বালুচরে;
চলবে ভাঙ্গা-গড়া ?
জীবন নদী যাবে বুঝি এমনি বয়ে;
কূলহারা, ঢেউহারা!