আমি তখন ক্যাডেট কলেজে মাত্র আসছি ক্লাস সেভেনে, একদম প্রথম সপ্তাহর কথা। লাঞ্চের একটু পরে পরে কমন রুমের দিকে যাচ্ছিলাম। কে জানি ধোপার কাপড় নিয়ে আসতে বলছিল……। হাউজলীডারের রুমটা ক্রস করে কমনরুমে ঢোকার আগেই তৎকালীন ২৮তম ব্যাচের ডাইনিং হল প্রিফেক্ট আমাদের হাউজের জুলফিকার ভাইয়ের একদম মুখোমুখি পরে গেলাম! উনার সাথে আগে কখনো কথা হয় নাই, সাথে সাথে পাকড়াও করলেন আমাকে……
ভাই,কেউ বলতে পারবেন কি,ব্যাঙের শুক্রাণু আর সাপ এর ডিম্বাণু মিলে যে জীব সৃষ্টি হবে তা কেমন হবে?!? :dreamy:
সেই কাহিনী আজ শুনুন তাইলে……
আমি তখন ক্লাস এইটে।সবেমাএ জীববিজ্ঞানের কিছু কিছু বিষয় বুঝতেছি,আর কিছু বিষয় মাথার মধ্যে ৭০ ডিগ্রী সেলসিয়াস এর বেশি তাপমাত্রায় ফুটতো।(বি:দ্র: আমার মাথার গলনাঙ্ক কক্ষ তাপমাত্রার একটু বেশি!)।এর প্রমাণ আমি আমার বালিশ ও হাউজের বাথরুমে পেয়েছি।পাঠকগণ,কথাটাকে প্লিজ অন্যভাবে নেবেন না।মাথার চুল যে হারে উঠছিল,তাতে ঘুম থেকে উঠেই আগে বালিশ ঝাড়তে হত;আর বাথরুমে গোছলের সময় পানি যেন না আটকায় তার ব্যাবস্থা করতে হত।তবে এটুকু ঠিকই বুঝতাম,হাওয়া থেইকা ক্যামনে একটা জ্বলজ্যান্ত প্রাণী(মানুষ,বিড়াল,কুকুর,…প্রমুখ) এই সুজলা সুফলা ধরণীতে আগমণ করে।আর রিসেন্টলি সুকুমার রায়ের হাইব্রিড নামগুলার(বকচ্ছপ,সিংহরিণ…)সংস্পর্শে এসে কোনভাবেই একটা ইকুয়েশন মিলাইতে পারছিলাম না।ব্যাঙের শুক্রাণু আর সাপ এর ডিম্বাণু মিললে কি হবে?ক্লাসমেট প্রায় সবাইকে জিজ্ঞাসা করছি,কিন্তু কারো ‘লিমিটেড ব্যাঙ্ক একাউন্ট’এ আমার এই সহজ সরল চেকটা ভাঙ্গাইতে পারি নাই।অগত্যা,আমার প্রাণপ্রিয় বড় ভাই,আমার জন্ম জন্মান্তরের শুভাকাঙ্খী,আমার সব প্রশ্নের উত্তর জানা একমাএ ‘ওরাকল’,আহসান ভাইয়ের(৩৫তম ইনটেক,মকক) সরণাপন্ন হলাম।তিনি ডাইনিংয়ে আমার বাম পাশে বসেতন।একদিন ডিনারে সবাইকে ডিমের কারি দিছে।কারি বলতে,ঠান্ডা পানির সাথে বিশ্বের তাবৎ মশলার সংমিশ্রণে যে অদ্ভুত যৌগ তৈরী হয়,তা।ডিমটা ফুল সিদ্ধ,গরম তেলে একটু ভাজা।সবার সামনে প্লেট আর প্লেটের বামপাশে হাফপ্লেটে কারি থাকতো।ভেজিটেবল দিয়ে খাওয়া শেষ করে,যেইনা কাটা চামচের মাথা দিয়ে ডিমটা হাফ প্লেট থেকে ফুল প্লেটে ট্রান্সফারের উদ্যোগ নিয়েছি,রাস্তার মধ্যে কোন এক দুর্নিবার আকর্ষণে ডিমটা নিউটনের সূত্যের প্রমাণ স্বরূপ হাফপ্লেটের বুকে যেয়ে পরল।কোন যুবতী মেয়ে আমার বুকে ২০০ কিমি স্পিডে ধাক্কা খাইলেও এতটা ‘ইয়ে’
ইতালির সিসিলির মাফিয়াদের নিয়ে অনেক গল্প-উপন্যাস, চলচ্চিত্র হয়েছে। তবে মাফিয়া সাহিত্যের সবচেয়ে বড় শিল্পী আমার মতে মারিও পুজো। আমেরিকায় অভিবাসী ইতালীয় বংশোদ্ভূত পরিবারের ছেলে তিনি। লিখেছেন উপন্যাস ও চিত্রনাট্য। তাঁর সবচেয়ে জনপ্রিয় উপন্যাস হলো ” দ্য গডফাদার”, সেবা প্রকাশনীর কল্যাণে এর অনুবাদ অনেকেই হয়তো পড়েছেন। তাঁর সেরা চিত্রনাট্য এই উপন্যাসেরই চিত্ররূপ, ফ্রান্সিস ফোর্ড কাপোলা পরিচালিত অস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র “দ্য গডফাদার”। অনেকেই এই চলচ্চিত্রটিকে এ যাবৎকালের সেরা চলচ্চিত্র বলে গণ্য করে থাকেন।
২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরের ১৯ তারিখ বোধ হয় সেইদিন। ১৮ ও হতে পারে, ঠিক মনে নেই। আমরা, মানে আই ইউ টি-র ০২ ইনটেকের সবার মনে তখন মিশ্র একটা অনুভূতি। পাস করার আনন্দ আর সেই সাথে সামনের অনিশ্চয়তার কথা ভেবে শংকা। সবার বললে হয়তো ভুল হবে, কারণ কিছু বস পোলাপান পাস করার আগেই মোটা বেতনের চাকরী বাগিয়ে বসে আছে। আর আমার মতো ক্যাবলাকান্তরা কি হবে কি হবে মনে করে মাথার চুল পাকাচ্ছে।
আমার এই মুহুর্তে এই ব্লগটা লেখার কথা ছিলোনা। লিখতে চেয়েছিলাম খুব প্রিয় একজন বন্ধুকে নিয়ে। যে আমার উষ্ণ অনুভূতিগুলোর খুব কাছাকাছি থাকে সবসময়। কিন্তু কখনো মুখ ফুটে বলা হয়নি আমি তাকে কতটা ভালবাসি। কিন্তু তা’ আর হলো কই। আমার সব ব্যাপার কিংবা ভাবনাগুলোই অনেকটা এরকম। প্রথমে ভাবি এক কিন্তু পরে হয়ে যায় অন্য কিছু। অনেকটা সিসিবির অনেক পোস্টের মত। হয়তো লেখা হয় সিরিয়াস কিছু ভেবে আর শেষ হয় মাস্ফু ভাইয়ের “আমিও কেক খাপো”তে গিয়ে।
গত বছর সেইন্ট জন’স-এ বরফ পড়া শুরু হয়েছিল ডিসেম্বরের শুরুতে। আমার প্রথম শীত ছিল সেটা কানাডায়, আর প্রথম বরফ দেখা তো বটেই। বরফ পড়া তিন রকম দেখেছি- ফ্লারিজ, ব্লিজার্ড আর ফ্রোজেন রেইন। ফ্লারিজ হলো সবচেয়ে স্বপ্নীল তুষারপাত, আকাশ থেকে পেঁজা তুলার মতো বরফ পড়ে। দেখতে ভালোই লাগে। তাপমাত্রাও থাকে সহনশীল পর্যায়ে, শূন্যের দু’এক ডিগ্রী নিচে। বরফ পড়ার এই দৃশ্যটা মাথায় ছিল আগে থেকেই। বাসায় পুরোনো বইয়ের গাদা থেকে একটা বই পেয়েছিলাম,
কলেজে যখন যাই তখন আমার উচ্চতা ছিল সাকুল্যে চার ফুট সাড়ে দশ ইঞ্চি। অন্য কলেজে গাইড বলে, আমাদের বলে স্কড। আমার স্কড ছিলেন রেদোয়ান ভাই। তিনি প্রথম দিন নূর বকস ভাইয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন আমাকে, নূর বকস ভাই তো বলেই ফেললেন, এতো খাটো কেনো? রেদোয়ান ভাই আমাকে একটু আড়াল দেবার চেষ্টা করে বললেন, পিটি প্যারেড করলে লম্বা হয়ে যাবে। রেদোয়ান ভাই মনে হয় কথাটা বলেছিলেন বদান্যতা করেই,
আমার নিজের লিখা ব্লগের ঝুলিতে সিরিয়াস টাইপ পোষ্টের বড় অভাব। খুব সিরিয়াস একটা বিষয় নিয়ে লিখব লিখব করেও লিখা হচ্ছে না। ‘এখন যৌবন যার, একটা সিরিয়াস পোষ্ট দেবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ … যৌবন পার হবার আগেই তাই …
ঋণী হবার গল্প …
২০০৪ সালের জানুয়ারি। বাস্কেটবল খেলতে গিয়ে এ্যাঙ্কেল টুইস্ট করে আমি হাসপাতালে ভর্তি। ভিজিটিং আওয়ারে, শুভাকাঙ্খীদের দেখে খুব ভাল লাগে। এমনি একদিন,
গলায় ঝুলে থাকা গামছাটাকে কষে মাথায় বেঁধে ক্ষেতের আলের উপর বসে পড়েন আজিজ মিয়া। হাত বাড়িয়ে মাটিতে পড়ে থাকা হুক্কাটাকে তুলে সুড়ুক সুড়ুক করে টান দেন তিনি। এক গাল ধোঁয়া ছেড়ে ক্ষেতে হাল ধরে থাকা ছেলে রহমানের দিকে তাকিয়ে হাঁক দেন।
“চোখ কান খুইলা রাখিস রে রহমান, ওরা যে কোন সময় আয়া পড়তে পারে।”
আই ইউ টির সেকেন্ড ইয়ারে মনে হয় প্রথম কম্পিউটার কিনি। উদ্দেশ্য ছিল শুধুই গেম খেলা। গেম খেইলা খেইলা কত দিবস রজনী পার কইরা দিছি তার ইয়ত্তা নাই। ক্লাসও ফাঁকি মারতাম প্রায়ই। গেমের স্বপ্নীল জগতটাতে হারিয়ে যেতে যে কি ভালো লাগত। আর আমার গেম খেলার মেশিনটাকে আদর কইরা নাম দিছিলাম গ্যালাহাড। এই বিতিগিচ্ছিরি নামটার আদি মালিক ছিলেন কিং আর্থারের রাউন্ড টেবিলের একজন নাইট। স্যার ল্যান্সেলটের জারজ সন্তান।
কিংকু মেইল দিয়েছিল কয়েকদিন আগে একটা। তার পরিচিত এক ইন্ডিয়ান মুসলিম ইঞ্জিনিয়ার আছেন যিনি কিনা আমার ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স করছেন। তার পরিচিত কেউ সেইন্ট জন’স – এ নাই, তাই আমি যেন তার সাথে দেখা করে এখানকার কমিউনিটির লোকজনের সাথে আলাপ করিয়ে দেই। একজনের উপকারে আসা যাবে ভেবে আমিই তাকে ইমেইল দিলাম। ব্যস্ততার মাঝে সময় বের করে দেখা করলাম। ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যাফেতে বসে কফির চুমুকে চুমুকে অনেক কথা হলো।
অনেকদিন ধরে লেখা পরেই যাচ্ছি, কিছু লেখা আর হচ্ছেনা । আলসেমি কাজের চাপ বলতে গেলে কেন যেন হয়ে উঠছিলনা । আজকে মাস্ফুর পোস্টটা পরে কিছু লিখতে ইচ্ছ করছে । মুক্তিযুদ্ধের পর থেকেই মুক্তিযুদ্ধ , বংগবন্ধু , জিয়া ,আওয়ামী লীগ, বি এন পি, রাজাকার, এরশাদ সবকিছু নিয়ে কম বানিজ্য হ্য়নি । মুক্তিযুদ্ধের অনেক পরের প্রজন্ম হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমার এবং আরো অনেকেরই সম্যক ধারনা নেই ।