“তারা এসে পড়েছে!”
কথাটি শুনে এখন আর আগের মতন ঘাবড়ে যায় না সে।
ভয়ে তার বুক কেঁপে ওঠে না,
কিম্বা হাত-পা ঠান্ডা হয়ে কুকড়েও যায়না আজকাল।
আসলে সে অভ্যস্ত হয়ে গেছে।
শত হলেও মানুষ তো! অভ্যেসেরই দাস।
হ্যা, সে মানুষ।
হঠাত করে মনে পড়ে যায় তার,
সে মানুষ।
সৃষ্টিকর্তার নিজ হাতে গড়া রক্তমাংসের
“মানুষ”।
মনে পড়ে যায় তার জন্মের ইতিহাস।
বাবা-মায়ের একান্ত ভালোবাসার ফসল সে।
মায়ের গর্ভের নিশ্চিন্ত দরজা ভেঙ্গে সেদিন
প্রথম যখন এই পৃথিবীর বাতাসের স্পর্ষ তার
নরম তুলতুলে অবুঝ গায়ে এসে ছোয়া দিয়েছিল,
আনন্দে সে সব্বাইকে চিৎকার করে জানান দিয়েছিল,
“তোমরা দেখ, সুন্দর এই পৃথিবীতে বিধাতার সৃষ্টি আমি, দেখো আমায়”।
কিন্তু নতুন বোধটি জন্ম নিতে তার
খুব বেশী সময় বুঝি লাগেনি।
সময়ই তাকে বুঝিয়ে দিয়েছে
“মাতৃগর্ভের অন্ধকারে যে ক্ষীন আলোর ছোয়া তুমি পেয়েছিলে
তা এই পুরো কালো পৃথিবীটাকে আলোকিত করার জন্য যথেষ্ট”।
ধীরে ধীরে সে বুঝতে শিখেছে।
জেনেছে- সুন্দর আর অসুন্দরের তফাৎ।
দেখেছে, ভালো মন্দের বিচারের চাইতে
এখানে সুন্দর- অসুন্দরের বিচার হয় ঢেড় বেশী।
মেনেছে, “তুমি মেয়ে, এটা কোরোনা, ওখানে যেও না”/
রেখেছে ঘুম পাড়িয়ে “মানুষ” নামের তার স্বত্ত্বাটিকে।
“ভালোবাসি” কথাটি কেউ কখনও বলেনি তাকে,
জানেনা ভালোবাসতে কেমন লাগে।
কেউ কখনও মুগ্ধ হয়ে বলেনি,
“বনলতা সেন তুমি”, “ভিঞ্চির মোনালিসা”,
মায়া করেও কেউ বলল না, “কৃষ্ণকলি”।
শুধু বাড়ির খালা-নানী বলে এসেছে,
“কাঁচা হলুদ মাখ্ ভালো করে, দুধের সরে রঙ খুলবে”।
বিশের কোঠায় পৌছনোর আগেই
ঠোটে লাল লিপস্টিক আর গাদাগাদা সাদা মেকআপের
বস্তায় মুড়ে ড্রইং রুমের ঐ নির্দিষ্ট সোফায় বসা,
হলুদ ২০০ ওয়াটের বাতিটার ঠিক মুখোমুখি।
একই প্রশ্নের সম্মুখীন প্রতিবার।
শেষটায় তাদের বিদায় ও প্রত্যূত্তোরের জন্য
মিথ্যা ফোনের প্রতীক্ষা।
গত আট আটটি বছরে আশেপাশে কত কিছুই না বদলেছে,
সরকার বদলেছে দফায় দফায়, সংবিধান বদলেছে, বদলেছে ইতিহাসও…
কিন্তু তার দৈনন্দিন রুটিনে বদল আসেনি সামান্যও।
বাসার এই বসবার ঘরটিকে আজকাল
লাশ কাটা ঘর মনে হয়-
প্রতিনিয়তই ডিসেকশন চলে দেখবার জন্য,
“সব ঠিক ঠাক আছে তো!
হাত- পা- আঙ্গুল- চুল- দাঁত…?”
এত কিছুর পরও সে স্বপ্ন দেখে!
প্রতিবারই নতুন করে স্বপ্ন আর
প্রতিবারই কঠিন সমাজের নির্মমতার পদতলে পিষ্ঠ হয়ে
বাস্তবতার কালো পিচের সাথে মিশে যায়।
এভাই চলছে, এভাবেই চলে আসছে, হয়তো এভাবেই চলবে…
আরো কতটা সময়- সে জানে না।
শুধু জানে, আরো একটা মানুষ জন্ম নিবে,
হয়ে যাবে “মেয়ে মানুষ”!
অসাধারণ!সমাজের বেশিরভাগ মানুষই মেয়েদের বাহ্যিক সৌন্দর্যটাকে বড় করে দেখে।সে যে একটা মানুষ আর তারও যে একটা মানবিক সত্ত্বা রয়েছে এইটা কেউ দেখে না।আমিও হয়ত সেই বেশিরভাগ মানুষেরই অংশ।
বাস্তবতা বড়ই কঠিন, রিফাত।
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
:clap: (সম্পাদিত)
ধন্যবাদ, শরিফ।
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
:boss:
🙂
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
জীতু আপা, শুধু অসাধারণ বললে কম হবে :hatsoff:
আসলেই কাল একটা মানুষ জন্ম নিবে, একসময় সমাজ তাকে বানিয়ে দেবে মেয়েমানুষ
পারসেপশনটা চেঞ্জ হওয়ার দরকার।
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
:boss: :boss:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
আকশদা, এ কি কচ্চ, বল দিকিনি? মুখে কি একটা কতাও কইতে পার না?
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
ইয়ে জিত্তুপি, সময় ছিল না তাই ইমো দিয়েই কাজ সেরেছিলাম 😛
কবিতা বুঝি না, তবে বক্তব্যটা অসাধারন। আমরা নিজেদেরকে মুখে মুখে অনেক আধুনিক বলে দাবি করলেও ভিতরে ভিতরে ঠিকই আকড়ে ধরে আছি অনেক পুরোনো ধ্যান ধারনা, এখনো আমরা সাদা চামড়া খুঁজি, ফেয়ারনেস ক্রিমের এডগুলোতে মেয়েদের জীবনের সফলতার প্রধান শর্ত হিসেবে চামড়ার রংকে ফোকাস করি।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
জিতু আপা...ভাল লাগলো লেখাটা দেখে। এরকম বেশ কিছু লেখা আসছে ইদানিং কিছুদিন আগে একটা ব্লগে আমার পরিচিত এক আপুর একটা লেখা "কালো, সে যত কালোই হোক না কেন" বলে একটা পোস্ট স্টিকি হয়েছিল...
পরিবর্তন আসবে...মানুষের ধ্যান-ধারনা অবশ্যই বদলাবে। :hatsoff:
অনিক, পরিবর্তন তো অবশ্যই আসবে, কিন্তু পরিবর্তনের ররুপটা যে ঠিক কেমন হবে, সেটা একটা চিন্তার ব্যাপার- যেমন ভাবে মিডিয়ার আগ্রাসন আর রং ফর্সা কারী ক্রম/ লোশনের প্রচারনা চলছে সবখানে...। আমাদের সমাজ পরিবররতনের ক্ষেত্রে, আমাদের মনের চিন্তা ভাবনার গরি প্রকৃতির মোড় ঘুড়াতে, আমাদের পারসেপশন বদলাতে এই মিডিয়ার ভূমিকা কিন্তু অনেক। আর বাহ্যিক চাকচিক্য দেখানোর যেই প্র্যাকটিসটা আজ চালু হয়েছে- খুব ভয় হয় এই ধারাটা আমাদের অস্থিগত হয়ে গেলে খুব বিপদ।
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
আপু,
অসাধারণ বক্তব্য আর সুন্দর পরিবেশনা। ভালো লাগলো।
অফটপিকঃ
আপনার পিটার প্যান আর বাচ্চাদের প্রজেক্ট নিয়ে আমি আর আমার বউ এর বিশেষ আগ্রহ আছে। কিন্তু আপনার সাথে যোগাযোগের উপায় পাচ্ছিলাম না। তাই এখানেই বললাম। FB এ রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছি আপু...
শহীদ, অসংখ্য ধন্যবাদ।
fb তে রিকোয়েস্ট কি নামে আছে? পেলাম না যে- আমাকে মেইল করতে পারো- jeetu301080@yahoo.com
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
অত্যন্ত দুঃখজনক বাস্তবতা তুলে ধরেছ।
আমার ধারনা, অধিকাংশ দেশেই কমবেশি একই অবস্হা।
খুবই সত্যি কথা। কিন্তু, বুঝে হোক আর না বুঝেই হোক, আমরা আসলে সেদিকেই যাচ্ছি। এবং এটাই বাস্তবতা। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম সম্ভবত এরচেয়েও খারাপ অবস্হা দেখতে পাবে।
হায়দার ভাই, ঠিক বলেছেন। পরবর্তী প্রজন্মের কথা ভাবকে ভীষন ভয় হয়।
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
প্যারেড- সাবধান, দেন দুইটা ফ্রন্টল অটো দিলাম, এখন অপটপিক কিছু কথা আপু,
একটি লিটল ম্যাক'এর জন্য, বইমেলা থেকেই যাত্রা শুরু। ১৫ জানুয়ারীর ভিতরে লেখা পাঠাবার ঠিকানা, paglaraza@gmail.com. ব্যক্তিগত যোগাযোগ- আলীম হায়দার, ০১৭১৭-৫২২২০৬।
লেখা পেলে মেইলে উত্তর জানাবো।
আপনার লেখা নারী এবং পুরুষ কবিতা দুটি নিতে আগ্রহী আমি। আপনি যদি একটু ফাইনাল চেকআপ শেষ করে একটা মেইল দিতেন তাহলে দুইদিন বুট পলিশ করে দিতাম.. আপু আমি খুবই সিরিয়াস এ দুটো লেখা নেয়ার জন্য... ১৫ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা নয়, আপনি সময় পেলেই আমাকে মেইল করবেন প্লিজ...
প্রপার শান হলাম, এখন উল্টা ঘুরে সুট দিলাম.. ভালো থাকবেন।
//cadetcollegeblog.com/alim1312/38105
https://www.facebook.com/aleeem1312
-আলীম হায়দার.1312.
কবিকন্ঠে আবৃত্তি...
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
দুই একটা জায়গা বাদে আবৃত্তিটা চমৎকার হয়েছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকও ভালো। আর কবিতাটা তো খুবই সুন্দর।
শুধু জানে, আরো একটা মানুষ জন্ম নিবে,
হয়ে যাবে “মেয়ে মানুষ”! -- খুব সুন্দর কবিতা। সমাপ্তিটা চমৎকার হয়েছে। আর আবৃত্তিও খুব ভালো হয়েছে।