উপহার

আমার এ গল্পটা অর্থাত্‍ কিনা আমার জীবনের এ গল্পটা এখন পর্যন্ত কাউকে বলিনি।এমনকি যাদের সাথে “বিন্দু বিন্দু জল ” থেকে শুরু করে “সাগর অতল ” সমান দুঃখগুলো শেয়ার করেছি, কলেজের সেই ক্লাসমেটগুলোকে পর্যন্ত না । হঠাত্‍ কি মনে করে গল্পটা বলতে ইচ্ছে হলো …

ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হওয়ার পর পরই একটা অদ্ভুত কারণে বাবার চাকরিটা চলে যায় ।আত্মীয়স্বজনেরা নাকি তখন হিসেব করা শুরু করেছিল , আমার ক্যাডেট কলেজে চান্স পাওয়াটা ফ্যামিলির জন্য অমঙ্গলের কি না ! বুঝতে পারছিলাম যে আমাদের জীবনযাত্রার মানে একটা পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে ।কিন্তু ছুটিতে বাসায় গেলে মা পাশের বাড়ি থেকে ধার করে হলেও আমাকে কখনো একবেলার জন্য নিরামিষাষী হতে দেন নি ।তাই ঐ বয়সে আমিও আকস্মিক জলোচ্ছ্বাসের ঝাপটা বুঝেও না বোঝার ভান করেছিলাম । তখন নতুন ক্লাস এইট ।কোন এক সামার ভ্যাকেশনের শেষ ।নতুন টার্ম শুরু ।ইন্সপেকশনের জন্য গোছগাছ করার সময় দেখি রুমমেট সিনিয়রের হাতে একটা বই , রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্পগুচ্ছ ।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ( আবুল হোসেন স্যার শিখিয়েছিলেন কখনো রবি ঠাকুর না লিখতে ,এখানে স্যারকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি ) ছোটগল্পগুলো যেখানেই পেয়েছি গোগ্রাসে গিলেছি ,কিন্তু এই অতুলনীয় সংকলনটি কোন এক অজানা কারণে বইয়ের পোকা এই আমার অনাস্বাদিত রয়ে গিয়েছিলো ।
আপা ! এইটা আপনার বই !”
আমার বই না ,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বই ।”
আপা আপনার পরে আমি সিরিয়াল ।”
গল্পগুচ্ছ তোমার কালেকশনে নাই !তুমি নাকি অনেক গল্পের বই পড় ? কি বই পড়লা জীবনে !”
এটা হয়তো মহাকালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়া অযুত কথার যে কোন একটা কথা , কিন্তু আজ ভেবে অবাক লাগে অষ্টম শ্রেণীর এক বালিকা সেদিন লাইটস অফের পর তার জানালা দিয়ে ঈদের চাঁদের মত বাঁকা চাঁদটার দিকে তাকিয়ে ছিল আর তার কানে বাজছিলো … গল্পগুচ্ছ তোমার কালেকশনে নাই … কি বই পড়লা জীবনে … ।

দুসপ্তাহ পরে ছিলো পৃথিবীতে আমার প্রথম কান্নার দিন ।
মাকে চিঠি লিখলাম , যেহেতু এটা বাসার বাইরে আমার প্রথম জন্মদিন ,তাই আমার অনেক মন খারাপ থাকবে ;কিন্তু মা যদি আমাকে এবার জন্মদিনের উপহার হিসেবে গল্পগুচ্ছ বইটা পাঠান ,তাহলে আমার জন্য দিনটা জীবনের সবচেয়ে আনন্দের দিন হবে ।
কি ,খুব বেশি চেয়ে ফেলেছিলাম বলে মনে হচ্ছে ! ভুলে যাবেন না আমি তখন অষ্টম শ্রেণীর বালিকা ।
আমাদের হাউসমাস্টার স্যার ছিলেন বাংলার শিক্ষক ,কবিগুরুর অন্ধভক্ত ।তাই জানতাম পার্সেলে গল্পগুচ্ছ দেখলে তিনি কিছু বলবেন না ।
কিছু ক্লাসমেটকে আগে থেকে বলে রাখলাম ,জানিস এবার জন্মদিনে মা কি পাঠাবে … … …
তাই ! আমি কিন্তু ফার্স্ট সিরিয়াল!”
এই আমি সেকেন্ড !”
দোস্ত তর পরে আমি ।”

… সকালবেলা ক্লাসমেটগুলো যখন ফর্মে চিত্‍কার করে উইশ করলো ,তখন মনে হচ্ছিলো বাসার বাইরে এত গুলা ইবলিশের সাথে থাকাটা খুব একটা খারাপ না ।
দুপুরবেলা লাঞ্চ থেকে এসে দৌড় দিলাম হাউসবেয়ারার কাছে ।না ,১৩২৯ কোন পার্সেল নাই ।
দুপুরে ঘুমের মধ্যেই অনেক কেঁদেছিলাম ,এটা মনে আছে ।

রাতের বেলা সবাই কমনরুমে মুভি দেখায় ব্যস্ত ।এমন সময় হা উস মাস্টার স্যারের তলব ।এত খুশিমনে আর কোথাও কারো কাছে প্রবেশের অনুমতি নিয়েছি বলে মনে পড়ে না ।
কাঁপা হাতে পার্সেলটা খুললাম …
কি এসেছে ?’
স্ স্যার খাতা ‘।
খাতা ? দেখাও’ ।
স্যার এই যে ।’
যাও ,ভালমতো পড়াশোনা করো ।’
কিভাবে পায়ে হেঁটে রুমে এলাম জানি না । আমার মা ,আমার পড়াশোনা নিয়ে বড়ই চিন্তিত , জন্মদিনের উপহার হিসেবে পাঠিয়েছেন একটা মোটা রেজিস্টার খাতা !ইচ্ছে হল খাতাটা কুচি কুচি করে ছিঁড়ে ফেলতে ।নিতান্ত অবহেলা ভরে খাতাটা ছুঁড়ে দিলাম বিছানায় ।কি যেন একটা পড়লো খাতার ভেতর থেকে …একটা চিঠি ।

মামনি আমার ,জন্মদিনের অনেক অনেক আদর নাও ।কত্ত বড় হয়ে গেলো আমার সোনাটা ।জন্মদিনে একটা জিনিস চেয়েছো ।তোমার বাবা হঠাত্‍ অসুস্হ হয়ে পড়েছেন ,আর মাসের শেষ বলে কারো কাছে তেমন সাহায্য পাই নি ।তাই তোমার শখটা পূরণ করতে পারলাম না ।অবশ্য গত এক সপ্তাহ ধরে মিশুদের বাড়ি থেকে এনে গল্পগুচ্ছ বইটার সবগুলো গল্প তোমার জন্য একটা খাতায় লিখেছি ।জীবনে অনেক বড় হও । তোমাকে যে মানুষের মতো … …
চিঠিটার বাকি অংশ কেন আর পড়তে পারছি না আমি … লেখা গুলো এত ঝাপসা হয়ে আসছে … আমার জানালার ফাক দিয়ে তখন পূর্ণিমার চাঁদটা মিটিমিটি হাসছিলো আর পৃথিবীর সব মায়ের ভালবাসায় ভরা চিঠিটা জ্বলজ্বল করছিলো তার আলোয় ।
¤ ¤ ¤
বিশেষ দ্রষ্টব্য ॥ এই গল্পটি লিখার ব্যপারে আমার কোন কৃতিত্ব নেই । আমি যখন ক্লাস সেভেনে তখন বাংলা উপস্হিত বক্তৃতার প্র্যাকটিসের সময় ক্লাস ইলেভেনের এক আপা আমাকে এক দরিদ্র মা আর তার মেয়ের এরকম একটি গল্পের আইডিয়া দিয়েছিলেন । শোনার পর আমি গল্পটিকে ক্যাডেট কলেজের ফরমেটে সাজিয়েছিলাম । সেভেন থেকে টুয়েল্ভ পর্যন্ত আমি অপেক্ষা করেছি আমার বক্তৃতার বিষয় যেন এই গল্প সম্পর্কিত কিছু একটা হয় , কিন্তু ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয় নি ।কিন্তু এখন আমি এমন একটি প্লাটফর্ম পেয়েছি যেখানে আমি আমার মনের সব কথা প্রাণ খুলে বলতে পারি ।তাই জীবনে প্রথম গল্প লেখার আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস ।

১৪,০৪৮ বার দেখা হয়েছে

১০৯ টি মন্তব্য : “উপহার”

  1. সাইফ শহীদ (১৯৬১-১৯৬৫)

    জিনাত,
    তুমি কিন্তু আমার চোখ ঝাপসা করে দিলে। মনিটর দেখতে কষ্ট হচ্ছে।
    তোমার বাবা-মা বেঁচে আছেন আশা করি। দোয়া করি তুমি তাদের গর্বের ধন হও।

    জবাব দিন
  2. সামিয়া (৯৯-০৫)

    অসাধারণ! আমি একটা কথা প্রায়ই ভাবি, আমাদের কলেজের কালচারাল কম্পিটিশান গুলা আমাদের যে কি দিয়া গেছে...এইটা আসলে শুধুই বোঝার...মানে যেটাকে বলে অনুভবের।
    আমি প্রথমে ভাবসিলাম এটা বুঝি সত্যি ঘটনা, গল্প হিসাবেও কোন অংশে কম যায় না।
    লিখ না কেন আপু? বেশি করে লিখবা। ময়মনসিংহের ঝান্ডা তোমাদেরই হাতে 😀

    জবাব দিন
  3. এত বস বস লেখা পড়ে ইদানিং খুব বেশি ইনফেরিওরিটি কমপ্লেক্সে ভুগি 🙁 🙁 🙁
    ভয় পাইছি ভাই, আমি প্রথমে ভাবছিলাম, এইটা তোর কাহিনী ... 🙁 🙁 🙁
    গল্প হিসেবে চমৎকার। অসাধারণ। :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
    এরকম লেখা আরো চাই।

    জবাব দিন
  4. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    ক্যাডেট কলেজে এখন এতো সুন্দর করে সবাইকে প্রস্তুত করা হয় জেনে ভালো লাগলো।
    তোমার প্রথম গল্প বলে কোন সমালোচনার মধ্যে যাব না। শুধু বলবো চালিয়ে যাও।


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন
  5. রবিন (৯৪-০০/ককক)

    এই নিয়ে আজকে ২য় বারের মতো বলতেছি, লেখা ছেড়ে দিতে হবে সিসিবি তে। এতো সুন্দর সুন্দর লেখক।
    আমার পড়া অন্যতম সেরা গল্প। তারেকের নিমন্ত্রন আর টিটো এর বউ কথা কউ এর পর। অসাধারন। :boss:

    জবাব দিন
  6. আছিব (২০০০-২০০৬)

    ওরে......এত্ত সুন্দর লেখা!! :clap:
    আসলেই...কলেজের প্রচুর গল্পের বই পড়া আর কালচারাল কম্পিটিশনের পার্টিসিপেশনের মূল্য এখন টের পাচ্ছি। :thumbup:
    প্রিয়তে নিয়ে গেলাম। যাওয়ার আগে ৫ দাগাইতে ভুলিনি:boss:
    ছুট্টুবুন্ধুরা ভালোই লিখে, আমারই ভাব বাড়তেছে B-)

    জবাব দিন
  7. আহমদ (৮৮-৯৪)

    আমি সিসিবিতে গল্প খুব একটা পরিনা। সিসিবিতে যে লেখাগুলো আমাকে সবচেয়ে বশি টানে তা হল স্মৃতিচারন। আমি প্রথমে এটাকে পারসোনাল স্টোরি ভেবেই পড়ছিলাম। চোখে পানি চলে আসছিল প্রায়। ঠিক সেই মুহূর্তে বুঝলাম এটা গল্প। খুবই ভাল লিখেছো। সরাসরি প্রিয়তে যোগ করলাম। এভাবে এমন একটা লেখা লিখলে যে কমেন্ট করতেই কষ্ট হচ্ছে।


    চ্যারিটি বিগিনস এট হোম

    জবাব দিন
  8. মেহবুবা (৯৯-০৫)

    আপু,একটু বেশি সুন্দর হয়ে গেলোনারে? :clap:
    এত সুন্দর করে লিখেছো :clap: :clap: :clap:
    গল্পের আদলে সত্য ঘটনা বা সত্য ঘটনার আদলে গল্প যাই লিখো তবু লিখো।আমি নিজেও উপস্থিত বক্তৃতার সময় জুলি আপার কাছে থেকে এমন টাচি কিছু আইডিয়া পেয়েছিলাম।আর আবুল হোসেন স্যার বাংলাকে ভালোবাসতে হয় কিভাবে শিখিয়েছিলেন।উনি কোথায় জানিনা তবে উনার জন্য :salute:

    জবাব দিন
  9. আন্দালিব (৯৬-০২)

    অসামান্য একটা গল্প পড়লাম। প্রথমে ভেবেছিলাম স্মৃতিচারণ, কিন্তু শেষটুকু পড়ার আগে, চোখ ঝাপসা হয়েই গেলো। এই ক্ষমতা এতো অল্প পরিসরে তৈরি করার ক্ষমতা সবার থাকে না। তোমার আছে, লিখতে থাকো। :hatsoff:

    জবাব দিন
  10. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    অসাধারন... এর থেকে বেশি আর কিছু বলার খুঁজে পাচ্ছি না... আরো নিয়মিত লেখা দাও


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  11. জিনাত (২০০২-২০০৮)

    যারা গল্পটি পড়েছেন এবং কষ্ট করে কমেন্ট করেছেন ,সবাইকে অনেক ধন্যবাদ । পিসি নাই ,তাই ফোন দিয়ে সবার কমেন্টের উত্তর দিতে পারলাম না বলে দুঃখিত ।আমার কাছে মনে হয়েছে পরিবারের নতুন সদস্য যখন হাঁটতে শেখে তখন অন্য সবাই তাকে যেভাবে উত্‍সাহ দেয় ,সিসিবি পরিবারের সদস্যরা একজন নতুন গল্পলেখক কে ঠিক সেভাবে উত্‍সাহ দিয়েছেন ।

    জবাব দিন
  12. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    দূর্দান্ত। লেখাটা পড়ে কিছুক্ষণ বসেছিলাম কি মন্তব্য করবো ভেবে। এই পিচ্চি মেয়ে এতো সুন্দর লেখো কি করে? বিশেষ করে যেভাবে তুমি গল্পটা শেষ করলে........ চোখটা তো ভিজিয়ে দিয়েছো! লিখতে থাকো।

    দেখা হলে আইসক্রিম চেয়ে খেয়ে নিও। বাবা-মা চিকিৎসক। তুমিও একই পথে গেলে? ইচ্ছে করেই?


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  13. জিনাত (২০০২-২০০৮)

    র ভাইয়া আইসক্রিম আর আপনার প্রশংসা পেয়ে বড়ই খুশি লাগছে । আসলে ভাইয়া ছোটবেলা থেকেই দেখতাম আমার মায়ের সাথে রোগীদের সম্পর্কটা চিকিত্‍সার পরেও শেষ হতো না । আমার এইচ এস সির পর আম্মুর একটা মেজর অপারেশন হয় ,তখন দেখেছি আট বছর আগের রোগীও তার খোঁজ নিতে এসেছেন । দোয়া করবেন ভাইয়া আমি যেন আমার মায়ের মত একজন চিকিত্‍সক হতে পারি ।

    জবাব দিন
  14. রাশেদ (৯৯-০৫)

    এই লেখাতে মন্তব্য করতেই লগ ইন করলাম। অনেক সুন্দর হইছে গল্পটা। তোমার লেখার হাত অনেক ভাল। এরপর থেকে বেশী বেশী গল্প লিখবা 🙂


    মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

    জবাব দিন
  15. রকিব (০১-০৭)

    কিছু লেখা আছে, যেগুলো পড়লে খানিকক্ষণ থম মেরে বসে থাকি; ঝাপসা চোখে কল্পনার জাল বুনি। এটা তেমন। আপু, শুধু ভালো লিখেছো বললে ছোট করা হবে, ওটা আর বললাম না। :boss:


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  16. ফারাবী (২০০০-২০০৬)

    তোমার নাম এখানে দেওয়া জিনাত(২০০২-২০০৮)......গল্প পড়ে মনে হলো জিনাত(১৯৯২-১৯৯৮) হলে কিছুটা মানানসই হত (প্রশংসা হিসেবে বললাম কিন্তু...)। এই বয়সে এত সুন্দর লেখা ! :thumbup: অসাধারণ !! :hatsoff:

    জবাব দিন
  17. আছিব (২০০০-২০০৬)

    জিনাত রে......আমাদের ব্যাচের তৃতীয় ভাবী তোর লেখা পড়ে ভেউ ভেউ করিয়াছেন। সে একাউন্ট পাইতেছেন না দেখিয়া আমার উপর দায়িত্ব দিয়াছেন যেন তোকে উইশ করিয়া দেই।

    ......জিনাত,খুবই সুন্দর।তোমাকে নিজে এসে কিছু বলতে পারলাম না। তোমার লেখা পড়ে আমার চোখ থেকে কয়েকটা ফোটা পানি গড়িয়ে পড়ল। ভালো থেকো।তোমার বাবা-মার মত হও।
    জবাব দিন
  18. “অবশ্য গত এক সপ্তাহ ধরে মিশুদের বাড়ি থেকে এনে গল্পগুচ্ছ বইটার সবগুলো গল্প তোমার জন্য একটা খাতায় লিখেছি ”
    …..চোখ ভিজে গিয়েছিলো। বিশেষ দ্রষ্টব্য পড়ে তাড়াতাড়ি মুছে ফেলসি! 🙂
    অনেক সুন্দর হইসে... এমনিতেই রবীন্দ্রনাথ, তার উপর এরকম টাচি ঘটনা নিয়ে লেখা।
    লেখাটার জন্য ধন্যবাদ জানাই

    জবাব দিন
  19. আপু , তোমার লেখা এই কয়েকটা লাইন জানি তোমার জীবনের কাহিনী , সতি্য অথের্ হয়ত আমাদের সবার জীবনে কাহিনী । তুমি প্রকাশ করতে পেরেছো এর জন্য অনেক মনোবল দরকার, হয়ত অনেকেরই তা নেই । সতি্য আমার চোখে পানি চলে আসছে................ :clap: :clap: :clap:

    জবাব দিন
  20. কিবরিয়া (২০০৩-২০০৯)

    কিছু লেখা আছে, যেগুলো পড়লে খানিকক্ষণ থম মেরে বসে থাকি; ঝাপসা চোখে কল্পনার জাল বুনি। এটা তেমন।
    :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:


    যেমন রক্তের মধ্যে জন্ম নেয় সোনালি অসুখ-তারপর ফুটে ওঠে ত্বকে মাংসে বীভৎস ক্ষরতা।
    জাতির শরীরে আজ তেম্নি দ্যাখো দুরারোগ্য ব্যাধি - ধর্মান্ধ পিশাচ আর পরকাল ব্যবসায়ি রূপে
    - রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

    জবাব দিন
  21. সাকিব (২০০৩-২০০৯)

    জিনাত আপু, আমি অনেক দিন আগে একটা ফ্রেন্ড এর কাছে এই গল্পটা শুনেছিলাম। তখন গল্পটা ঠিক এমন ছিল না। একটু অন্যরকম ছিল কিন্তু ভাব ও অনুভুতি একই। আমি তখন আমাদের গ্রামের বাড়িতে। নিকষ কাল অন্ধকার রাতে মুঠোফোনে এই গল্পটা শোনা যে কি অদ্ভুত পরিবেশের সৃষ্টি করেছিল তা আমি কোন দিন কাউকে বুঝাতে পারব না। আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম গল্পটির রচয়িতার কথা। সে বলেছিল তার এক সিনিয়র রুমমেট। নাম জিনাত। তাই গল্পটি পড়ার সময় আমি সিউর ছিলাম এটা আপনার নিজের গল্প। রুম এ জুনিয়রদের একটু মডিফাই করে হয়ত শুনিয়েছিলেন। পড়তে পড়তে আমার চোখে পানি আসায় একটুও অবাক হইনি আমি। আমার সেই বন্ধুটির সাথে আজ আমার আর কোনও যোগাযোগই নেই। অসাধারন গল্প আপু। আপনার এই গল্পটা অনেক আগে থেকেই আমার অনেক প্রিয়।এত্ত সুন্দর গল্পের রচয়িতাকে নিয়ে অনেক কৌতূহল ছিল। তাই তার সম্পর্কেও জিজ্ঞেস করেছিলাম আমি। যতদূর মনে পরে আমার সেই বন্ধুটা বলেছিল আপনার বাসা উত্তরবঙ্গের কোথাও। নিলফামারি অথবা দিনাজপুর।

    জবাব দিন
    • কিবরিয়া (২০০৩-২০০৯)
      একটা ফ্রেন্ড

      কোনটারে??!! :just: ফ্রেন্ড নাকি??


      যেমন রক্তের মধ্যে জন্ম নেয় সোনালি অসুখ-তারপর ফুটে ওঠে ত্বকে মাংসে বীভৎস ক্ষরতা।
      জাতির শরীরে আজ তেম্নি দ্যাখো দুরারোগ্য ব্যাধি - ধর্মান্ধ পিশাচ আর পরকাল ব্যবসায়ি রূপে
      - রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

      জবাব দিন
  22. আমি ক্যাডেট কলেজ ব্লগ প্রথমবারের মত পড়ছি। আমি নিজে ক্যাডেট নই বলেই হয়ত কখনও পড়া হয়ে উঠেনি। তবে এই লেখাটা পড়ে মনে হচ্ছে আমার নিয়মিত ক্যাডেট কলেজ ব্লগ পড়া উচিত। জিনাত, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা ব্লগ লিখার জন্য। মুহূর্তেই চোখ ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল আমার। আমাকে কাঁদানোর জন্য আপনাকে আবারো ধন্যবাদ।

    জবাব দিন
  23. আব্দুল্লাহ্‌-আল-আমীন (৯৮-০৪)

    .........ভাই, এই লেখাটা এত দিনে পড়লাম, অসাধারণ। :boss: :boss: :boss:

    অবশ্য গত এক সপ্তাহ ধরে মিশুদের বাড়ি থেকে এনে গল্পগুচ্ছ বইটার সবগুলো গল্প তোমার জন্য একটা খাতায় লিখেছি

    ......এই জায়গাটাতে যা একটা ঝাঁকি খাইছি না।

    জবাব দিন
  24. টিটো রহমান (৯৪-০০)

    ০এই গল্পটার অনেক প্রশংসা শুনেছি ...
    কিন্তু পড়ার পর েসসব প্রশংসা অনেক কম মনে হয়েছে...

    :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff: আপু.....প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিলে

    খুব শিগগির লেখা দাও...নইলে খবর আছে 🙂


    আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই

    জবাব দিন
    • আমিন (১৯৯৬-২০০২)

      ঐ ...।
      আমি অনেকবার এই গল্পটা এসে পড়ে গেছি কিন্তু কিছু বলা হয় নাই। সিসিবিতে প্রিয় কিছু ছোট গল্পের তালিকায় এইটা আর টিটো ভাইয়ের "ব্উ কথা কও " আছে। সময় পাইলেই আমি এই গল্প গুলি পড়ি।
      অফটপিক: টিটো ভাই, "আপনের আজ শ্রাবণের আমন্ত্রণে" গল্পটার ফিনিশিংটা জানতে চাইছিলাম??

      জবাব দিন
  25. মাহমুদ (৯৯-০৫)

    জিনাত আপু.........তোমার গল্প টা আমার লাইফ এর গল্পের সাথে এক্কেবারে মিলে গেছে।আমি ক্লাস সেভেন এ থাকতে একবার বাসায় একটা ম্যাথ্‌স এর গাইড বই চাইছিলাম।বইটা যদি ও আমার বিন্দুমাত্র দরকার ছিল না,তার পর ও আর একজন এর টা দেখে আমার ও লাগবে এই রকম চিন্তাভাবনা!!!........আব্বুর হাতে টাকা ছিল না।ক্যাডেট কলেজ এ ভর্তির সময় আমার আব্বুকে অনেক টাকা ধার করতে হইছে surroundings থেকে...............আমি তা জানতাম না অনেক কাল,আমি পাস করে বের হওয়ার পর আম্মু বলছে আমাকে।এই সময় আমার এইসব ফালতু আবদার মেটাতে তাদের অনেক কষ্ট হইছে।যাই হোক, আব্বু এক পরিচিত লাইব্রেরি থেকে একটা মোটা ৩০০ পেজ এর গাইড বই ধার এনে,সারা রাত জেগে,২ জনে একটু একটু করে লিখে পুরা বইটা শেষ করে অবশেষে আমাকে পাঠাইছে।আমি সেই কষ্টের কিছু ই বুঝি নাই,উল্টা রাগ করে ওই নোট টা খুলে ও দেখি নাই।ফলাফল, ক্লাস সেভেন এর ফাইনাল পরীক্ষা তে ম্যাথ্‌স এ শুন্য প্রাপ্তি............। :)) তখন হয়তো বুঝার বয়স হয় নাই,কিন্তু এখন যখন অনুধাবন করি আমাদের আব্বু আম্মু আমাদের জন্য কি পরিমাণ কষ্ট করছে তার কোন তুলনাই হয় না......আব্বু আম্মুর মনে কষ্ট দেয়ার আগে এইসব জিনিস মাথায় আসা উচিত আমাদের সবার।


    মাহমুদ

    জবাব দিন
  26. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    শেষে এসে যখন বুঝলাম, এটা গল্প, সত্য ঘটনা নয়, ততক্ষণে দেরী হয়ে গেছে।
    মাঝে একবার চশমাটা মুছে নিতে হয়েছে।
    গল্পকার হয়তো এতদিনে ডাক্তার হয়ে গেছেন। পেশাগত জীবনে তিনি এমনি আরও অনেক চোখে জল আনা গল্প লিখার উপাদান পাবেন নিঃসন্দেহে। তার সাফল্য কামনা করছি, ডাক্তার এবং লেখক হিসেবে, উভয়ক্ষেত্রেই।

    জবাব দিন
  27. টিটো রহমান (৯৪-০০)

    ফেসবুকে এক জিনাত কে টেক্সট করেছি,,,,জানি না সেটা তুমি কিনা! হলে ভালো, না হলে এখানেই জানিয়ে রাখি, তোমার এই গল্পটা কে শর্ট ফিল্ম বানানোর প্ল্যান করছি,.... :tuski: :tuski: :tuski:


    আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।